এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • রবিবারে জেরবার 

    Sukdeb Chatterjee লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ০৯ নভেম্বর ২০২৪ | ১০১ বার পঠিত
  • রবিবারে জেরবার 
    একটু আগে রমা বেড-টি দিয়ে গেছে। চা খেয়ে চোখটা আবার লেগে গিয়েছিল।
    ---কিগো, রোববার বলে কি বিছানাতেই সারাদিন কাটাবে? বাজার টাজার করবে না?
    ছন্দপতন। অমর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে আটটা বাজে। হাত মুখ ধুয়ে বাজারের ফিরিস্তিটা রমার কাছে শুনে দু তিনটে ব্যাগ নিয়ে বাজারের দিকে এগোল।
    রমেনবাবুও বাজারে এসেছেন। মজাদার মানুষ। দোকানদারের সাথে কথোপকথনটা অমরের কানে এল।
    ---হ্যাঁ রে বাবা, ওগুলো গাছপাকা তো?
    ---হ্যাঁ বাবু, এক নম্বর হিমসাগর। ঘোষেদের বাগান থেকে আজই পাড়া।
    ---আম না বাবা, পটল গুলোর কথা জিজ্ঞেস করছিলাম।
    দোকানদার হেসে বলেকি যে বলেন বাবু।
    অমরকে দেখে শুধোলেন ---ভায়া কেমন আছ ? আজকাল তো আর দেখাই হয় না।
    ---আসলে রোববার ছাড়া তো আর সময় হয় না।
    ---তা তো ঠিকই। তোমরা হলে গিয়ে কাজের মানুষ, সময় কোথায়?
    বুড়ো খোঁচা মারল কিনা অমর ঠিক বুঝতে পারল না।
    ভোলা এই সময়টায় বাজারে টহল দেয়। অনেক দোকানেই ওর জন্য দৈনিক কিছু বরাদ্দ থাকে। কিন্তু অত বড় শরীর, খিদে সহজে মেটে না। তাই বরাদ্দের পরেও পেটের তাগিদে একটু উঞ্ছবৃত্তি করতেই হয়। সুযোগ পেলেই এটা ওটা টেনে নেয়। রমেনবাবুর সাথে কথা বলার ওইটুকু সময়ের মধ্যেই ভোলা কাজ সেরে নিয়েছে। অমর ঘণ্ট খাবে বলে অসময়ের সবজি পালং শাক আর মুলো কিনেছিল। একটানে তার প্রায় সবটাই তুলে নিয়েছে। চোখ বন্ধ করে শাকগুলো চিবোতে চিবোতে পাশ দিয়ে যাবার সময় কিরকম দিলাম গোছের কিছু বোঝাবার জন্য ল্যাজের একটা ঝাপটা দিয়ে গেল। অনেকেই তারিয়ে তারিয়ে দৃশ্যটা উপভোগ করল। সাইকেলে যেতে যেতে একজন বলে গেলমন খারাপ করবেন না, আপনার আনাজে আজ মহাদেব তুষ্ট হয়েছেন। কম ভাগ্যের ব্যাপার।
    কথাগুলো বলেই খ্যাঁক খ্যাঁক করে হাসতে হাসতে চলে গেল।
    অমর খিঁচিয়ে উঠলঅতই যখন ভক্তি তখন দে না শালা ব্যাগ ভর্তি বাজার এনে ভোলার মুখে গুঁজে।
    যার উদ্দেশ্যে বলা সে তখন অনেক দূরে চলে গেছে। এরপর মাংস আর দু এক রকমের মাছ নিয়ে বাড়ি ফিরল।
    ---কিগো আনাজপাতি এত কম? আর এই দু গাছা পালং শাক দিয়ে কি হবে?
    ---আরো অনেক ছিল।
    ---ছিল তো গেল কোথায়?
    পুরো ঘটনা শোনার পর রমাও হেসে কুটিপাটি। স্বামীর বিপত্তির কথা শুনে বউয়েরই যদি এমন আনন্দ হয় তাহলে রাস্তার লোকেরা তো মজা করবেই।
    জলখাবারের প্লেটে ফুলকো লুচি আর আলুর দম দেখে মনটা আবার চাঙ্গা হয়ে গেল। খেতে বসতে না বসতেই ল্যান্ড ফোনটা বেজে উঠল। অমরই ফোনটা তুলল। রমার ঠাকুমা কিছুক্ষণ আগে গত হয়েছেন। নব্বইয়ের ওপরেই বয়স হয়েছিল। আগে বেশ ক'বার যাই যাই করেও টিকে গিয়েছেন, এবারটা আর সামলাতে পারলেন না। বিরক্ত হয়ে অমর ভাবে, সপ্তাহে সাতটা দিন, তার মধ্যে রোববারটাই ওনার পছন্দ হল।
    --কার ফোন গো? রান্নাঘর থেকে রমার গলা।
    --রেডি হও, বেরোতে হবে।
    --এখোনো রান্না শেষ হয়নি কোথায় যাব?
    --ঘুরতে নয়, তোমার ঠাকুমার শরীর খারাপ, যেতে হবে।
    রমা, ঠাকুমার আদরের নাতনী।
    উতলা হয়ে জিজ্ঞেস করল--কি হয়েছে?
    ---কি করে বলব, আমি কি ডাক্তার? তাড়াতাড়ি রেডি হও।
    ব্যাগে দু একটা জামাকাপড় ও টুকটাক কিছু জিনিস ভরে রমা তৈরি হয়ে এল। একটা বাস আসতেই রমাকে নিয়ে অমর তাড়াতাড়ি উঠে পড়ল।
    বিরক্ত হয়ে রমা বলল--- ট্যাক্সি নিলে না কেন ? তোমার কোন কাণ্ডজ্ঞান নেই।
    কাণ্ডজ্ঞান আছে বলেই তো বাসে উঠেছে। মারাই যখন গেছে তখন খামোখা ট্যাক্সিতে উঠে পয়সা নষ্ট করবে কেন?
    আশ্বাস দিয়ে বলল---রাস্তা ফাঁকা, বেশিক্ষণ লাগবে না।
    বৃদ্ধা পরিণত বয়সে মারা গেছেন। শোকে ভেঙে পড়ার মত কোন ঘটনা নয়। অমররা যখন বাড়িতে ঢুকছে তখন কান্নার সামান্যতম আওয়াজও কানে আসেনি। এসব ক্ষেত্রে সাধারণতঃ একেকবার বাইরে থেকে আত্মীয় পরিজন আসে আর শোক, সম্মিলিত ভাবে, সশব্দে উথলে ওঠে। রমা তো বাড়ির মেয়ে। ঘরে ঢুকতেই কান্নার কোরাস শুরু হল। কিছুটা সময় পরে শোকের বাতাবরণ উধাও। নিজেদের মধ্যে বেশ গল্প গুজব হচ্ছে। কিছুক্ষণ আগে যে রমা কেঁদে লুটিয়ে পড়েছিল সেও বেশ হাসিমুখে গল্পের আসরে যোগ দিয়েছে। আবার নতুন কোন লোক না আসা পর্যন্ত এই আনন্দ মুখর পরিবেশটা বজায় থাকবে।
    বেরতে তখনো ঢের দেরী। অমরের খিধে পেয়েছে। সেই কোন সকালে জলখাবার খেয়েছে। তাও কি, দুটো লুচি খাওয়ার পরেই তো ফোনটা এল। শ্বশুর বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে একটা রেস্তরাঁয় গিয়ে ঢুকল।
    ---কি আছে ?
    ---চিকেন কষা, মাটন কষা, এগ কারি, পরোটা, চাউ, ভাতের থালি... যে রকম চাইবেন স্যার। বছর তের চোদ্দর একটা ছেলে গড়গড় করে মুখস্থ বলে গেল। মাটন কষা আর পরোটার অর্ডার দিতে যাবে এমন সময়
    ---বডি কি বেরিয়ে গেছে ?
    অমর হাঁ করে লোকটার মুখের দিকে তাকায়।
    ---আপনি মুখুজ্জে বাড়ির জামাই না ?
    ---হ্যাঁ।
    আজ ভালো খাওয়া ভাগ্যে নেই, না হলে শ্বশুর বাড়ি থেকে এতটা দূরে এই আপদ এসে জুটবে কেন? শোকের বাড়িতে এসে জামাই মাংস প্যাঁদাচ্ছে এ খবর চাউর না হওয়াই ভাল।
    ---দুটো টোস্ট আর চা দাও।
    ---আমাকেও চা আর টোস্ট দে। ..আগন্তুকও একই অর্ডার দিয়ে খেঁজুরে আলাপ শুরু করল।
    ---আমি ডেকরেটার। ও বাড়ির কাজকর্ম সব আমিই করি। তোমাদের বিয়ের লাইট প্যান্ডেল সব আমারই ছিল।
    তাই মালটাকে অমরের চেনা চেনা লাগছিল। জামাই নিশ্চিত হতেই কেমন আপনি থেকে তুমিতে চলে এল। শ্রাদ্ধের কাজটা কনফার্ম করতে এসেছে। তা যেখানে গেলে কাজ হবে সেখানে যা না বাবা, এখানে মরতে এলি কেন ! যতই বিরক্ত হোক জামাই বলে কথা, ওর খাবারের দামটাও অমরই দিল।
    আত্মীয় পরিজনদের জন্য অপেক্ষা করতে করতে বেরতে বেশ দেরি  হয়ে গেল। আগে আরো তিনটে বডি। পোড়া কপাল, পাক্কা তিন ঘণ্টা অপেক্ষা। এতটা সময় শ্মশানে কাটানোটাই একটা সমস্যা। অমর গঙ্গার ধারে একটা চাতালে গিয়ে বসল। কিছুক্ষণের মধ্যেই মর্কট ডেকরেটারটাও পাশে বসে ভাট বকতে শুরু করল।
    ---জামাই, আমার আর একটা পরিচয় তো বলা হয়নি। ক্লাস ফাইভ অব্দি আমিই ছিলাম রমার গৃহ শিক্ষক।
    অমর বলল ভাবা যায় না--- একই হাতে ম্যারাপ বাঁধছেন আবার হাতে খড়িও দেওয়াচ্ছেন।
    ---হেঁ হেঁ আরো অনেক কিছুই করি তবে কিনা নিজের কথা নিজের মুখে বলতে সংকোচ হয়। জামাই তুমি বস আমি একটু আসছি।
    লোকটা উঠে গিয়ে শ্বশুর মশাইয়ের সাথে কিছু কথা সেরে ফিরে এসে বললজামাই, চলি। শ্রাদ্ধের দিন দেখা হবে।
    অমর বুঝল প্যান্ডেলের ব্যাপারটা ফাইনাল করে এল।
    শ্মশান থেকে ফিরে বাড়ি ঢুকতেই শাশুড়ি পরম স্নেহে বললেন---আহা চোখ মুখ বসে গেছে। খুব খিদে পেয়েছে তো? যাও বাবা স্নান করে আগে খেয়ে নাও।
    অমরের সত্যিই খুব খিদে পেয়েছে। হাতে মুখে জল দিয়ে তাড়াতাড়ি খাবার টেবিলে গিয়ে দেখে সাজান রয়েছে দুধ, সাবু, ফল আর মিষ্টি। খাবারের দিকে তাকিয়ে খাওয়ার ইচ্ছেটাই চলে গেল। নামমাত্র একটু মুখে দিয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ল। সারা দিনে না জুটল খাওয়া আর না হল বিশ্রাম। পাশের ঘরে তখন গল্পের মস্ত আসর বসেছে। মাঝে মাঝেই হাহা হিহি আওয়াজ ভেসে আসছে। সদ্য কাছা নেওয়া শ্বশুর মশাইও ঐ আসরে রয়েছেন। আর রমা তো মধ্যমণি। অমর শুয়ে শুয়ে ভাবে, অন্তরে যেখানে শোকের লেশমাত্র নেই সেখানে কেবলমাত্র লোকলজ্জার খাতিরে খাদ্যে আর বস্ত্রে এই কদিনের কৃচ্ছ সাধনের কি প্রয়োজন!

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ০৯ নভেম্বর ২০২৪ | ১০১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন