এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • প্রেম দেহ মন - পর্ব ১৩

    Sukdeb Chatterjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৯৯ বার পঠিত
  • প্রেম দেহ মন - পর্ব ১৩

    অমিত

    রিপোর্টটা দেখার পর আনন্দে কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। অর্চনাকে কনফার্ম নিউজটা জানাতে ও খুশি  হওয়ার সাথে সাথে একটু লজ্জা পেয়ে বলল, “ইস লোকে  বলবে বছর না  ঘুরতেই  বাচ্চা।” বললাম, “এত ফার্স্ট খেলেও তো তুমি তোমার ফ্রেন্ডের থেকে পিছিয়ে আছ। স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, সব একসাথে হলেও সন্তানের ক্ষেত্রে কিন্তু ও দেড় বছর এগিয়ে থাকবে।” শুনে বলল, “ওর টাতো একটা অ্যাকসিডেন্ট। আর এ সব কি কখোনো একসাথে  হয়!।”   অর্চনার মা, কমল কাকুদের, আর  আমার বাড়িতে শুভ সংবাদটা জানালাম। বিদিশা  আর পিসিকে অর্চনা নিজেই জানাল। অর্চনা সকলেরই খুব প্রিয় তাই এই খবরে সকলেই খুব খুশি হল। একজনই হয়ত মনে মনে একটু রুষ্ট হয়ে থাকতে পারে, সে হল অর্চনার দাদা। তার কারণ, অর্চনার সম্ভাব্য ডেলিভারির সময় আর ওর দাদার বিয়ের সম্ভাব্য সময় প্রায় গায়ে গায়ে। দাদার বিয়েতে আদৌ  ওই সময় ওই অবস্থায় যোগ দিতে পারবে কি না তাই নিয়ে অর্চনাও একটু চিন্তায় ছিল। হুল্লোড়ে মেয়ে, বাড়ি গিয়ে সকলের সাথে কথা  বলে কয়েকদিনের মধ্যেই দাদার বিয়ের হুল্লোড়ে নিজের যোগদানের ব্যাপারটা নিশ্চিত করে এল। বিয়ের দিন প্রায় ছ মাস  এগিয়ে এল আর এতে যারপরনাই খুশি হল অর্চনার দাদা অরূপ।

    আমার সিনিয়র এক ম্যাম  ডঃ মনীষা চৌধুরীর কাছেই অর্চনাকে নিয়মিত চেক আপ করাতাম। আমাদের ফ্ল্যাটের কাছেই একটা নার্সিংহোমের সাথে উনি যুক্ত। গাইনি হিসেবে নাম আছে, এ ছাড়া ব্যক্তিগত পরিচয় তো আছেই। প্রথম দিকে উনি অর্চনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় কিছু বিধি নিষেধের কথা বলেছিলেন। অর্চনা কিছু মানত কিছু ক্ষেত্রে অবাধ্য হত। ওর দাদার বিয়ের সময় তো প্রায় সব নিষেধই শিকেয় তুলে দিচ্ছিল।  আমার আর ওর মার ধমক খেয়ে কিছুটা পথে এসেছিল। বিয়ে বাড়ি থেকে আমি যখন ফিরেছি ওকে সঙ্গে নিয়ে ফিরেছি। আমোদের হাটে অমন আমুদেকে একা রেখে আসতে  সাহস পাইনি। শেষের দিকে কাকিমা এসে মেয়ের কাছে মাস খানেক ছিলেন। আমি চাইতাম মেয়ে হোক আর অর্চনার ইচ্ছে ছেলে। আমার ইচ্ছেই পূর্ণ হল, যথাসময়ে অর্চনা আমায় একটা ফুটফুটে সুন্দর পরী উপহার দিল। বাচ্চাকে দেখার পর আমার  বাবা হওয়ার যে স্বর্গীয় অনুভূতি তা বলে বোঝান সম্ভব নয়। আনন্দে চোখে জল এসে গিয়েছিল। আবেগ বিহ্বল হয়ে  অর্চনাকে ওই অবস্থাতেই অনেক আদর করে বললাম, “এই দুর্মূল্য উপহার দিয়ে তুমি আমার জীবন ধন্য করলে।” বিদিশা ওর  বন্ধুকে দেখতে রোজই আসত। তন্ময়ও এসেছিলো। ওকে সেদিন ভেতরে অর্চনার কাছে নিয়ে গিয়ে ওদের ঘেঁটে যাওয়া সম্পর্কটাকে কিছুটা মেরামত করে দিয়েছিলাম। বাচ্চা নিয়ে বাড়ি ফেরার পর আমার মা বাবা,  অর্চনা আর বাচ্চাকে দেখাশোনার জন্য বেশ কিছুদিন আমার কাছে এসে রইল। কমল কাকুদের কথা আর আলাদা করে কি বলব, ওঁরা সব সময় সব ব্যাপারেই আমাদের পাশে থাকেন।
    বাচ্চাকে বিচিত্র বিচিত্র সব শব্দে আদর করে ডাকা হয়। একদিন অর্চনা বলল, “বাচ্চার নাম নিয়ে ভেবেছ কিছু?” আমি বললাম, “তিন চারটে নাম ভেবে রেখেছি, ওর থেকে একটা বেছে নেব।”

    --তা কি ভেবেছ শুনি!
    --তুষারক্ষেত্রে মেয়ে তোমার গর্ভে এসেছে তাই ‘তুষারসিক্তা’ নামটা বেশ অর্থবহ।
    --হাঁ, বাড়ির নাম ‘মিলন তীর্থ’ এর মত। তোমার কি সব কিছু গোদাভাবে না বোঝালে চলে না! কেউ যখন জিজ্ঞেস করবে যে মেয়ের নাম ‘তুষারসিক্তা’ রাখলে কেন তখন তাদের কারণটা বুঝিয়ে বলতে পারবে তো! আর তা ছাড়া এত বড় নাম আজকাল চলে না। নেকস্ট অপশন বল।
    --‘হিমানী’, অর্থ তুষারপুঞ্জ। জন্মের সাথে লিঙ্ক আছে।
    --ওটা তো প্রসাধনী সামগ্রীর কোম্পানি। চলবে না। আর অপশন আছে না ফুরিয়ে গেছে। ফুরিয়ে গেলে বল আমি একটু ভেবে দেখি।
    --অদ্রিকা?
    --অপ্সরা টপ্সরা নয়, বাস্তব কিছু থাকলে বল।
    --এবারে লাস্ট অপশন, অর্চিশা। ওই আমদের জীবনের আলোর রশ্মি। তা ছাড়া মায়ের নামের সাথে একটু ছন্দগত মিলও থাকবে, অর্চনা আর অর্চিশা।
    --এটা চলতে পারে।
    মেয়ের নাম রাখা হল অর্চিশা। আমি ডাকি ‘অলি’ বলে, এটাও মায়ের ‘বুলি’ নামের সাথে ছন্দ মিলিয়ে রাখা। মেয়ে  ঘরে আসার পর বুঝতে পারলাম মানুষের জীবনে সন্তান কতখানি জুড়ে থাকে। বাড়িতে যতক্ষণ থাকি অলিকে নিয়েই কেটে যায়। একদিন তো অর্চনা থাকতে না পেরে বলেই ফেলল, “এখন তো দেখছি আমি আর কেউ না, মেয়েই সব।” আমি ওকে আদর করে  বললাম, “তুমি তো উৎস। তুমি না থাকলে অলিকে পেতাম কোথায়?”
    সময়ের সাথে সাথে হামা পর্ব পার করে অলি হাঁটতে শিখে গেল। টাল মাটাল পায়ে এঘর ওঘর দৌড়ে  বেড়ায়। কমল দাদুর ঘরে তো রাম রাজত্ব। যা খুশি টানে ফেলে কিন্তু মেয়েকে কিছু বলার উপায় নেই বলতে গেলেই দাদুর কাছে মা বাবা বকা খাবে। এটা ওই একরত্তি  মেয়ে খুব ভাল করে বোঝে, তাই বিপদ বুঝলেই দাদু বা ঠাকুমার কাছে পালায়।  বাবা মা দাদু দিদা ছাড়াও আরো অনেক কথা বলে। কিছু বোঝা যায়, কিছু বোঝা যায় না। নিজের তৈরি ভাষাতে তার মত করে ভাব প্রকাশ করার চেষ্টা করে। আদো আদো কথাগুলো শুনলে মন জুড়িয়ে যায়।
    পিসির বাড়িতে আমি নিয়মিতই যেতাম, দেখাশোনাও হত সাথে সাথে একটু ডাক্তারি ফলানোও হত। পিসির ‘আমার বাড়ি’র অনাথ বাচ্চাগুলোকে প্রথম দেখার পর থেকেই খুব মায়া পড়ে গিয়েছিল।  এদের ব্যাপারে পিসির পাশে থাকার সাধ্যমত চেষ্টা করতাম, তাই সময় পেলেই একবার ঘুরে আসতাম। বাচ্চাটা একটু বড় হবার পর সুযোগ সুবিধে পেলে অর্চনাও মাঝে সাঝে পিসির বাড়িতে যেত। নানা রকম ডিউটি থাকায় ওদের সাথে আমার যাওয়া হয়ে উঠত না, ওরা মা মেয়েতেই যেত।  একদিন বিদিশার কাছে আমরা তিনজনে একসাথে গেলাম।  সারাদিন খুব আনন্দ হল। খেলার সাথী পেয়ে অলি সারাটা দিন অয়নের সাথে  হুড়োহুড়ি করে কাটাল। খেলার ফাঁকে ফাঁকে আমাদের কাছে দৌড়ে  এসে একবার ‘পাপা’ একবার ‘মাম্মা’ বলে  আমাদের জড়িয়ে ধরে মাঝে মাঝে  একটু আদর খেয়ে যাচ্ছিল।  অলির তখন বছর আড়াই  বয়স আর অয়নের   চারের আশেপাশে। অলিকে আমাদের কাছে আসতে দেখে অয়নও ওর মা আর ঠাকুমার কাছে মাঝে মাঝে  আদর খেতে যাচ্ছিল।  আমি ওই শিশুর চোখে একটা অভাব বোধ লক্ষ করেছিলাম। অলি যখন  আমাকে  জড়িয়ে ধরে আদর খাচ্ছে তখন অয়ন ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকেছে আমাদের দিকে। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আমি দৌড়ে গিয়ে অয়নকে কোলে তুলে নিয়ে একটু আদর করতে ফিরে এসেছে ওর হাসি। তবু একটু ফাঁক থেকেই গিয়েছে।  পরেও যখনই আমরা সপরিবারে ওদের ওখানে গিয়েছি, এই করুণ দৃশ্যটা আমাকে হজম করতে হয়েছে। অয়ন তখন স্কুলে পড়ে,  শুনেছি স্কুলের সুত্রেই  বাবার সাথে মাঝে মাঝে ওর দেখা  হয়।  কিন্তু বাবাকে পায় অতিথির মত, বাবার মত  নয়। ওইটুকু বাচ্চার কাছে এই বিরহ অত্যন্ত বেদনার। আমারও খুব কষ্ট হত তাই একটা সময় পরে ওই  বাড়িতে আগের মত একাই যেতাম  আর অলিকে নিয়ে যেতাম না। অলি ওর মায়ের সাথে যেত। 
    অর্চনার সাথে বিদিশা আর তন্ময়কে নিয়ে  একদিন অনেকক্ষণ আলোচনা হল।
    ওকে বললাম, “আমার মতে  বিদিশা ঠিক করছে না। তন্ময়ের ওপর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ও তন্ময়ের তো বটেই সাথে সাথে নিজের আর বাচ্চাটার জীবনটাও নষ্ট করছে।” 
    অর্চনা বন্ধুকে সমর্থন করে বলল—আমি হলেও একই কাজ করতাম। যাকে ভালবাসিস তাকে তুই জোর করে ভোগ করবি! শরীরটাই কি সব হল?
    বুঝতে পারলাম এতদিন পরেও তন্ময়ের ব্যাপারে অর্চনার মনোভাব খুব একটা পাল্টায়নি। আমাদের প্রেম পর্বের প্রসঙ্গ টেনে বললাম--বিয়ের আগে আমাদের কি একে অপরকে পেতে ইচ্ছে হয়নি? কখনো আমার ডাকে তুমি সাড়া দিয়েছ আবার কখনো তোমার ডাকে আমি। ভালবাসায় শরীরটা সব নয় এটাও যেমন ঠিক তেমনই আবার শরীরী আকর্ষণকে সম্পূর্ণ  উপেক্ষা করে কোন প্রেম ভালবাসা পূর্ণতা পায় না। ফ্রয়েডের মতে তো প্রেমের উৎসই শরীরী আকর্ষণ বা যৌনতা। প্লেটোনিক কামগন্ধহীন  ভালবাসার মত তাত্ত্বিক কথা  বইয়ের পাতাতেই থাকে বাস্তবে হয় না।
    --তত্ত্ব কথায় আমারও সায় নেই।  প্রেম ভালবাসার একটা পর্যায়ের পরে উভয়ের শারীরিকভাবে  কাছাকাছি আসাটাই স্বাভাবিক। আমরাও  অনেক বারই এসেছি। আমার আপত্তি জবরদস্তিতে। তনু বিদিশার ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে ওকে ভোগ করেছে। আর তার থেকেও বড় অন্যায় করছে বিদিশা কনসিভ করার পর ওর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে। পিসির বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা না হলে ও তো চরম সমস্যায় পড়ে যেত। ঘটনা জানার পর নিজের বাড়ি থেকে ওর মাও তো ওকে একরকম  চলেই যেতে বলেছিলেন। একবার ভেবে দেখো ত  বিদিশাকে তনু কতটা বিপদে ফেলেছিল। এমন মানুষকে কখনো ক্ষমা করা যায়! কেন জানি না তোমার ওর প্রতি একটু বেশি সহানুভূতি দেখছি। 
    হেসে বললাম--তন্ময়ের নিজের প্রেমিকাকে একটু কাছে পেতে ইচ্ছে করেছিল। এটা আমার কাছে কোন অপরাধ নয়। বিদিশা সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি, দিতে পারত। দুর্বল মুহূর্তে নিজেকে সামলাতে না পেরে কিছুটা শক্তি প্রয়োগ করে তন্ময় তার কামনা চরিতার্থ করে। পর মুহূর্তেই কিন্তু ও ক্ষমা চায় এমনকি বিদিশার পাও ধরে। একবার ভেবে দেখ ত, বিয়ের  কদিন আগে দরকারি কথা আছে বলে এই একই কারণে তুমি চরমভাবে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে যখন আমার ফ্ল্যাটে এসেছিলে তখন যদি আমি তোমাকে বিমুখ করতাম তোমার মনের কি অবস্থা হত। তুমি কি আমায় ছেড়ে দিতে? 
    সেদিন আমি উলটো সূর গাইলে এতদিনে অর্চনাকে যতটুকু  চিনেছি   দাবি আদায় না করে ও সহজে ছাড়ত না।  মেয়ে হয়ে যতটা আদায় করা যায় আর কি।
    একটু চুপ করে থাকার পর আমার পিঠে কয়েকটা কিল মেরে  বলল—তুমি ব্যাটা শেষে আমাকে আর তন্ময়কে একই রকম ঠাঊরালে।
    বড় মোক্ষম জায়গায় ঘা পড়ে গেছে। বাস্তব যাই হোক একটু ফাউল করে ফেলেছি।
    কাছে টেনে আদর করে বললাম--ছিঃ ছিঃ কি যে বল।  তন্ময় পুরুষ আর তুমি নারী, এক কখনো  করা যায়! দুটি ক্ষেত্রে সমাজের সংস্কার ভিন্ন, বিচার ভিন্ন। আমি বলতে চাইছি  দুটো প্রায় একই রকম পরিস্থিতি অথচ একটায় সম্পর্ক আরো গভীর হল আর অন্যটায় ভেঙে গেল। তুমি আমার আদরের বৌ, আমার অনন্যা, তোমার সাথে কারো তুলনা চলে! 
    আমার দু হাতের মাঝে নিজেকে সঁপে দিয়ে বলল—ওসব মন ভোলান কথা রাখ। তবে তোমার আগের কথাটা একেবারে ফেলে দিতেও পারছি না। সেদিন যদি তুমি আমায় পাত্তা না দিতে তাহলে রাগের মাথায় যে কি করে বসতাম জানি না। ঠিক আছে, সেদিনে বিদিশার ওপর তন্ময়ের জবরদস্তিটা তর্কের খাতিরে না হয় আংশিক মেনে নিলাম। কিন্তু  নিজের প্রেমিকাকে চরম  বিপদে ফেলে  পাশ থেকে সরে যাওয়াটাকে নিশ্চয়ই তুমি সমর্থন করবে না, নাকি সে ব্যাপারেও তুমি কোন অন্যায় দেখতে পাচ্ছ না।
    --অন্যায়, অবশ্যই অন্যায়। সেদিন তন্ময়ের নিঃশর্তভাবে বিদিশার পাশে থাকা উচিৎ ছিল। মানসিকভাবে হয়ত ছিল কিন্তু বাস্তবে থাকতে পারেনি। বাড়ির প্রতিকূল পরিবেশকে সম্পূর্ণরূপে অগ্রাহ্য করে নিজের মত প্রকাশ করার মত মানসিক দৃঢ়তা সেই মুহূর্তে  উপার্জনহীন তন্ময়ের ছিল না। তোমার কাছে ওদের বাড়ির ব্যাপারে যা শুনেছি তাতে আমার ধারণা ছোটবেলা থেকে নানান বিধি নিষেধ ওর ব্যক্তিত্বের স্বাভাবিক বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ও কিন্তু একেবারে পালিয়ে যায়নি। বিদিশাকে ভালবাসে বলেই অচিরে  সমস্ত ভয় দ্বিধা দ্বন্দ্ব কাটিয়ে আপনজনদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে কপর্দকহীন অবস্থায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে মুখোমুখি হয়েছিল এক চরম অনিশ্চিত জীবনের। মানছি একটু দেরী করে ফেলেছিল, সময়ে সিদ্ধান্তটা নিতে পারলে বিদিশার ওপর দিয়ে এত ঝড় বইত না। অনুশাসনের বেড়াজাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে কিছুটা সময় লেগেছিল। তবু এসেছিল, আমাদের মত খোলামেলা  আবহাওয়ায় বড় হওয়া ছেলে মেয়েরা ভাবতেও পারব না যে কাজটা কত কঠিন।
    ওই কঠিন সময়ে  বিদিশার মাও কিন্তু মেয়েকে দূরে ঠেলে দিয়েছিল অথচ যতদূর জানি এখন মায়ের সাথে বিদিশার সম্পর্ক মোটামুটি স্বাভাবিক। শুধু তন্ময়কে এখনো স্বভাবিক ভাবে গ্রহন করতে পারল না। কেবল ছেলের স্কুলের প্রয়োজনে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু স্বামী স্ত্রীর অভিনয় করে।  বিদিশা তোমার এত ঘনিষ্ঠ বন্ধু, দেখনা চেষ্টা করে যদি দুজনের মিলমিশ করিয়ে দিতে পার। তোমার কথা ও চট করে ফেলতে পারবে না। বাচ্চাটার জন্যে বড় খারাপ লাগে।
    অর্চনা খানিকক্ষণ চুপ করে রইল। আমি জানি ওই ঘটনার পর থেকে অর্চনাও তন্ময়কে চরম অপছন্দ করে তাই বিদিশাকে এ ব্যাপারে কিছু বোঝাতে গেলে আগে নিজেকে বোঝাতে হবে।
    কিছুটা সময় পরে নীরবতা ভঙ্গ করে বলল— তন্ময়ের জন্য তোমার মনের কোনে যে সহানুভূতি আছে আমার তা নেই, অমন ঘটনার পরে তা থাকার কথা নয়। তবে তোমার মত করে কখনো ভেবে দেখিনি, বিশেষ করে বাচ্চার  ব্যাপারটা। একটু চিন্তা ভাবনা করি তারপর বিদিশার সাথে কথা বলব। তবে আমি বললেই যে সব মিটে যাবে এমনটা ভাবলে ভুল হবে।
    --ওদের সম্পর্কটা এখন আগের মত অত গরম নেই, অনেকটাই নরম হয়েছে। তুমি বোঝালে বাকিটাও মিটে যাবে। একবার চেষ্টা  করে দেখই না।
    এরপর কেটে গেল অনেকটা সময়। অর্চনার চিন্তা ভাবনাটা চিন্তা ভাবনার স্তরেই রয়ে গেল,  মীমাংসার ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নিতে দেখিনি। হয়ত মনস্থির করতে পারেনি বা হয়ত ভুলে গেছে। এর মাঝে তন্ময় বিদেশে চলে যাওয়ায়  বিষয়টা নিয়ে নাড়াচাড়া করার আর  তেমন একটা  সুযোগ ছিল না। পিসির বাড়িতে মাঝে মাঝেই যেতাম তাই অয়ন শিশুকাল থেকেই আমায় দেখছে। যে কোন কারণেই হোক ও আমাকে পছন্দ করে, দেখতে পেলেই ছুটে এসে জড়িয়ে ধরত। ও আমাকে কাকু বলে ডাকত আর অর্চনাকে ডাকত মাসি বলে। এই বিধিবহির্ভূত ডাকে আমরা বেশ মজা পেতাম।  একটু বড় হবার পর আমার সাথে অনেক গল্প করত। কথা এগোলেই বাবার প্রসঙ্গ তুলত, “জানো কাকু, বাবা প্রায়ই  আমায় ফোন করে কত গল্প করে। বলেছে, এবার যখন দেশে আসবে আমার জন্যে দারুণ দারুণ সব জিনিস নিয়ে আসবে। কাকু জানো বাবা কবে আসবে?  আমার বাবাটা না খুব ভাল, বাবার জন্যে বড্ড মন কেমন করে।”
    আমি সান্ত্বনা দিয়ে বলি, “মন খারাপ করে না সোনা। ও সব দেশে অফিসে অনেক কাজ তো, সেগুলো একটু সামলে  নিয়েই বাবা আসবে।”
    বড় হয়ে ডানা গজাবার আগে পর্যন্ত সন্তানের বাবা মা দুজনকেই  প্রয়োজন। এদের কারো অভাবই সন্তান মেনে নিতে পারে না। অন্তরে ও বাইরে নিরন্তর কাছে পেতে চায় দূরে থাকা আঁতের মানুষটাকে।
    বিদেশে যাওয়ার পর তন্ময় অনেকবার এসেছে গেছে কিন্তু বেশ কয়েক বছর কাটানর পরেও কোম্পানি পাকাপাকিভাবে ওকে দেশে ফিরতে দিচ্ছিল না। দায়িত্বপূর্ণ পদে কাজ করে, মোটা মাইনে দিয়ে ওকে আটকে রেখেছিল। দেশে এলে আর ওর ফিরতে মন চাইত না। ছেলের যেমন বাবার জন্যে মন খারাপ হত, বাবাও তেমনি বাইরে গিয়ে ছেলেকে খুব মিস করত। দুজনে কেউ কারো কাছে থাকে না ঠিকই তবু এখানে থাকলে একটু দেখা তো হয়। ওইটুকু সম্বল করেই গড়ে উঠেছে ওদের ভালবাসার সাঁকো। দেশে এলে তন্ময়ের সাথে আমার মাঝে মাঝে গল্প গুজব হত। নিজের চাওয়া পাওয়া আর না পাওয়া গুলো আমার সাথে শেয়ার করত। এগুলো শোনার মত তেমন  আপনজন তো ওর কেউ ছিল না তাই আমাকে বলে মন হাল্কা করত। কথাবার্তায় বুঝতে পারতাম যে  কেবল অয়নই নয়  বিদিশাকেও ও তখনও  একই রকম ভালবাসত। ওদের  বিচ্ছেদের জন্য ওর মনে গভীর বেদনা ছিল কিন্তু  ওকে কখনো কারো বিরুদ্ধে অনুযোগ করতে শুনিনি।
    খারাপ লাগত, চোখের সামনে নৈরাশ্যে ভরা তিনটে অসম্পূর্ণ জীবন দেখতে খুব খারাপ লাগত। সব সময়েই মনে হত কিছু একটা করা দরকার। এই নড়বড়ে সম্পর্কের মেরামতির জন্য আদর্শ স্থপতি ছিল অর্চনা। সেইজন্য তাকে নানাভাবে বুঝিয়ে অনুরোধ করেছিলাম কিছু একটা করতে। যতটুকু বোঝাতে পেরেছিলাম তা হয়ত তন্ময়কে মার্জনা করার পক্ষে যথেষ্ট নয় তাই ওকে এই ব্যাপারে তেমন  কোন উদ্যোগ নিতে দেখিনি। অবশ্য আমার অগোচরে ওদের মধ্যে এ নিয়ে কোন কথা  হয়ছে কিনা জানিনা। পিসির সাথেও এই নিয়ে আমার আলোচনা হয়েছে। উনিও আভাষে ইঙ্গিতে বিদিশাকে মিলমিশের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু পাছে বিদিশা ভাবে যে উনি আশ্রয় দিয়েছেন বলে নির্দেশ দিচ্ছেন তাই সাহস করে জোর দিয়ে কিছু বলতে পারেননি।
    সেই সময়  বিদিশার কথাবার্তা শুনে আমার মনে হত সময়ের সাথে সাথে তন্ময়ের প্রতি ওর মনোভাবের অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। আগের বিদ্বেষ তখন অনেকটাই প্রশমিত। তন্ময়ের ব্যাপারে ওর সাথে হাল্কা আলোচনায় যতটুকু বুঝেছি রাগ অভিমান স্তিমিত হয়ে গেলেও  চারপাশে নিজের তৈরি করা প্রাচীরের বন্ধ দরজা খুলে বেরিয়ে আসতে পারছিল না।  হয়ত জীবনযাপনের দীর্ঘদিনের অভ্যাস বা হয়ত  লোকলজ্জা,  এমন  কিছু বাস্তব আর কিছু কাল্পনিক সমস্যার আবর্তে পাক খেতে খেতে প্রাচীরের বাইরে পা রাখতে বিদিশা শঙ্কিত, দ্বিধাগ্রস্ত। কেটে গেছে অনেকগুলো মূল্যবান বছর। ঠিক করলাম এবার একটা হেস্তনেস্ত করেই ছাড়ব। বন্ধ দরজা খুলে বিদিশাকে নিয়ে আসতে হবে সুস্থ  স্বাভাবিক জীবনে, প্রয়োজন হলে দরজা ভাঙতে হবে। না, আমি বা অর্চনা কেউ নয়, সেবার সঠিক জনকেই সঠিক  সময়ে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটা করার দায়িত্ব সঁপেছিলাম ।
    অলি বাচ্চাবেলা থেকেই আমাদের  দেশের বাড়িতে থাকতে খুব ভালবাসে। স্কুলে লম্বা ছুটি পেলেই গিয়ে বেশ কিছুদিন   থেকে আসত। বাড়ির আশে পাশে বেশ কিছু বন্ধু বান্ধবও জুটিয়ে ফেলেছিল। দাদু, ঠাকুমা, কাকার আশকারায়  সময়টা মহানন্দে কাটে তাই একবার গেলে আর ফিরতেই চাইত না। বিশেষ করে তো দাদুর সাথে ভীষণ ভাব। মুখ থেকে কথা খসালেই হল, নাতনির হুকুম তামিল করার জন্যে দাদু সদা প্রস্তুত।  অলি যখন ক্লাস এইটে পড়ে, আমার বাবা চলে গেল। 
    সেই প্রথম স্ট্রোকের পর থেকে  বেশ ভালই ছিল। ধরাকাটে থাকত, নিয়মিত ওষুধ খেত, কোন সমস্যা ছিল না। সেদিন রাতে খাওয়া দাওয়াও ঠিকঠাক করেছিল। পাশে শুয়ে মা পর্যন্ত কোন রকম কিছু বুঝতে পারেনি। ঘুমের মধ্যেই  চলে গেল। বাবাকে হারিয়ে আমরা সকলেই খুব কষ্ট পেয়েছিলাম কিন্তু সবথেকে বেশি ভেঙে পড়েছিল অলি।  অলিকে  কিছুতেই সামলান যাচ্ছিল না। দাদুকে হারিয়ে ও কেমন যেন হয়ে গিয়েছিল। বাধ্য হয়ে অর্চনাকে বললাম অলিকে নিয়ে কিছুদিন পিসির বাড়িতে থেকে আসতে। অয়ন ওর ছোটবেলার সঙ্গী, দুজনের মধ্যে খুব ভাব। সাথীকে পেয়ে অলি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছিল। ভালয় মন্দয় মিশিয়ে দেখতে দেখতে কেটে গেল আরো ক’টা বছর।
    অলি এবার মাধ্যমিক দিয়েছে আর অয়ন উচ্চমাধ্যমিক। লেখা পড়ায় দুজনেই ভাল, স্কুলে প্রথম দু তিন জনের মধ্যেই থাকে। অয়ন হচ্ছে অলির ফ্রেন্ড, ফিলজফার আর গাইড। তন্ময় মাঝে একবার দেশে ফিরেছিল কিন্তু কিছু সময় পর আবার বাইরে চলে যেতে হয়। এই এক বছর মত  হল অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আবার দেশে ফিরে এসেছে। ও এখানে থাকলে ছেলে মেয়ে দুটোর লেখা পড়ায় খুব হেল্প হয়। খুব  ভাল শিক্ষক,  ভাল বোঝায় আর ভীষণ ধৈর্য। অলির মত চঞ্চল মেয়েও ওর কাছে চুপটি করে বসে পড়াশুনো করে।  অয়ন মেডিক্যালের জন্য পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষা ভালই হয়েছে, চান্স পেয়ে যেতে পারে। এই ব্যাপারে অলি অয়নদার ফলোয়ার নয়, ওর ইচ্ছে স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিট্যুটে পড়ার। অবশ্য সবটাই নির্ভর করছে সুযোগ পাওয়ার ওপর।
    এই তো সেদিন অর্চনাকে নিয়ে ঘর বাঁধলাম  আর দেখতে দেখতে আজ প্রৌঢ়ত্বের দরজায় কড়া নাড়ছি। না  তন্ময় আর নয়, এবার তোমার একটা হিল্লে করেই ছাড়ব।

    (চলবে) 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৯৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন