এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

  • শুক্র ভারতী

    সহস্রলোচন শর্মা
    আলোচনা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ১৫ অক্টোবর ২০২৪ | ৫৭৩ বার পঠিত | রেটিং ৪.৭ (৩ জন)
  • ।। ১ : শুক্র ।।


    ২০ মে ১৯৭৮, স্থানীয় সময় সকাল ৯.১৩, ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরালের লঞ্চ প্যাড ৩৬এ থেকে শুক্র গ্রহের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমালো নাসার মহাকাশযান পাইওনিয়র ভেনাস ১। আড়াই মাস পর, ৮ অগস্ট ১৯৭৮ সালে কেপ ক্যানাভেরাল থেকেই রওনা দিল নাসার আরেক শুক্রযান পাইওনিয়র ভেনাস ২। অল্প সময়ের ব্যবধানে উৎক্ষেপণ করা এই দুই শুক্রযানকে ঘিরে ভীষণই আশাবাদী নাসার বিজ্ঞানীরা। শুক্র গ্রহের উদ্দেশ্যে যে এই প্রথম রকেট উৎক্ষেপণ করলেন তাঁরা তা নয়। সে আরও ১৭ বছর আগের কথা, ফেব্রুয়ারি ১৯৬১ সাল, ইউরি গ্যাগরিন তখনও পৃথিবীর কক্ষপথে পরিভ্রমণও (১২ এপ্রিল ১৯৬১) করেন নি আর চন্দ্র বিজয় (২০ জুলাই ১৯৬৯) তো দূর অস্ত। তখন থেকেই শুক্র গ্রহের উদ্দেশ্যে রকেট উৎক্ষেপণ করতে শুরু করে দেয় ইউএসএ ও তৎকালীন ইউএসএআর। ইউএসএসআর মূলত ভিনেরা সিরিজের (ভেনাসকে রাশিয়ান ভাষায় ভিনেরা বলা হয়) এবং ইউএসএ মেরিনার সিরিজের শুক্রযান পাঠাতে শুরু করে। চন্দ্র বিজয়ের অনেক আগে থেকেই শুক্র গ্রহের উদ্দেশ্যে রকেট উৎক্ষেপণের একটা কারণ অবশ্য আছে। চাঁদের পরই রাতের আকাশে সব থেকে উজ্জ্বলতম বস্তু হল শুক্র গ্রহ, চলতি ভাষায় যাকে আমরা শুকতারা বা সন্ধ্যাতারা বলে থাকি। সেই গ্যালিলেওর আমল থেকে সাধারণ মানের টেলিস্কোপ দিয়ে মঙ্গল, বৃহস্পতি বা শনির মতো দূরবর্তী গ্রহ সম্পর্কে অনেক নতুন নতুন তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভবপর হলেও, অত্যাধুনিক টেলিস্কোপের সাহায্য নিয়েও, পৃথিবীর সব থেকে কাছের গ্রহ, শুক্র সম্পর্কে তেমন কোনো নতুন তথ্য সংগ্রহ করে উঠতে পারেন নি বিজ্ঞানীরা। শুক্র পৃষ্ঠের সাধারণ তথ্য সংগ্রহের মূল অন্তরায় হল মেঘ। ১৯২৮ সাল নাগাদ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, শুক্রের আকাশ ঘিরে রয়েছে ঘন ও পুরু কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের আস্তরণ। মেঘের সেই স্তর ভেদ করে শুক্র পৃষ্ঠ থেকে কোনো আলোই মহাকাশের বুকে বেরিয়ে আসতে পারে না। ফলে শুক্র পৃষ্ঠের কোনো আলো এসে পৌঁছতে পারে না পৃথিবীর বুকেও। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন দাঁড়ায়, শুক্র পৃষ্ঠ থেকে যদি কোনো আলো পৃথিবীর বুকে এসে না পৌঁছয়, তাহলে শুক্র গ্রহকে আমরা দেখি কী করে? ঘোলাটে সাদা রঙের যে শুক্র গ্রহকে দেখে থাকি আমরা, আদতে তা হলো শুক্র গ্রহকে ঘিরে থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড মেঘমালার বহিঃস্তর থেকে প্রতিফলিত সূর্যালোক। শুক্র পৃষ্ঠ বা শুক্রের মাটি থেকে কোনো আলো মহাকাশের বুকে ছড়িয়ে পড়ে না বলেই, শুক্র পৃষ্ঠ বা শুক্র ভূমিকে কখনই দেখতে পাওয়া সম্ভবপর নয়। শুক্র সম্পর্কে এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর পরই বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, আলোকচিত্র নয়, একমাত্র রেডার চিত্র বা রেডিও ওয়েভই পারে শুক্র পৃষ্ঠের প্রকৃত চিত্র তুলে আনতে। কারণ, মেঘের স্তর ভেদ করে স্বচ্ছন্দে শুক্র পৃষ্ঠে পৌঁছে যেতে পারে রেডিও তরঙ্গ। শুক্র পৃষ্ঠে প্রতিফলিত হয়ে ফের মেঘের স্তর ভেদ করে বেড়িয়েও আসতেও সক্ষম সে তরঙ্গ। অথয়েব শুক্র পৃষ্ঠের খবরাখবর সংগ্রহের জন্য রেডার চিত্রই একমাত্র ভরসা। আর ঠিক সেই লক্ষ্য নিয়েই শুক্রের উদ্দেশ্যে পাইওনিয়র শুক্রযান দু’টো পাঠিয়েছে নাসা। শুক্র পৃষ্টের কাছাকাছি পৌঁছে, শুক্র পৃষ্ঠের উদ্দেশ্যে রেডিও ওয়েভ নিক্ষেপ করবে দুই শুক্রযান। শুক্র পৃষ্ট থেকে সেই তরঙ্গের প্রতিফলন সংগ্রহ করে পৃথিবীতে পাঠাবে তারা। পাইওনিয়র ভেনাস দু’টোর উপর তাই একটু বেশিই ভরসা করছেন বিজ্ঞানীরা। আর বিজ্ঞানীদের মোটেও নিরাশ করে নি পাইওনিয়র ভেনাস ১ ও ২। শুক্রের পরিমণ্ডলে প্রবেশ করে, বহু আকাঙ্খাকিত চমৎকার কিছু রেডার চিত্র পাঠিয়েছে তারা। সেই রেডিও চিত্র বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানালেন, শুক্র পৃষ্ঠের বিশাল আয়তনের দুই উচ্চভূমিকে শনাক্ত করতে পেরেছেন তাঁরা। ৫,‌৬০০ কিমি ও ১০,০০০ কিমি ব্যাসবিশিষ্ট সেই উচ্চভূমি দুটোকে সহজেই শনাক্ত করা যাচ্ছে। দুটো নতুন নাম দিয়ে এবার এই উচ্চভূমি দুটোর নামকরণের কথা ভাবলেন তাঁরা।

    গ্রহ, উপগ্রহ বা মহাকাশের কোনো নতুন অঞ্চল বা বস্তুর নতুন নামকরণের যাবতীয় দায়িত্ব থাকে ‘দ্য ওয়ার্কিং গ্রুপ অব প্লেনেটারি সিস্টেম নোমেনক্লেলেচার’ (The Working Group for Planetary System Nomenclature, WGPSN) নামের সংগঠনের উপর। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের এই সংগঠনের জন্ম হয় ১৯৭৩ সালে। জুলাই ১৯৭৫, মস্কো শহরে বসে ওয়ার্কিং গ্রুপের দ্বিতীয় অধিবেশন। এই দ্বিতীয় অধিবেশনে, শুক্র গ্রহের নতুন কোনো অঞ্চল নামকরণের প্রশ্নে নেওয়া হয় চমকপ্রদ এক সিদ্ধান্ত। প্রাচীন কাল থেকেই শুক্র গ্রহের সাথে নারী বা প্রেমের সম্পর্ক বিদ্যমান। সেই ধারা বজায় রেখে, ওয়ার্কিং গ্রুপে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, শুক্র গ্রহের সমস্ত গর্ত, পাহাড়, খাদ, সমতলাদির নামকরণ করা হবে কেবলমাত্র নারীদের নাম দিয়ে। সেইদিন থেকে শুক্র পৃষ্ঠের যাবতীয় গর্ত, পাহাড় বা সমতলকে নারীদের নাম দিয়ে চিহ্নিতকরণের প্রথা চালু হয়। এখন, পাইওনিয়র ভেনাসের পাঠানো রেডার চিত্র থেকে শুক্র পৃষ্ঠের যে দুটো উচ্চভূমিকে চিহ্নিত করা গেছে, সেই উচ্চভূমি দু’টোকেও তো তাহলে নারীদের নাম দিয়েই চিহ্নিত করতে হয়। সেই অনুযায়ী, ১৯৭৯ সালে শুক্র পৃষ্ঠের সেই দুই উচ্চভূমির নাম রাখা হয়- ইশতার টেরা (Ishtar Terra) ও এ্যফ্রোডাইটি টেরা (Aphrodite Terra)। টেরা কথাটার অর্থ- উঁচু তল। আর ইশতার হলেন প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার প্রেম, কাম, জন্ম ও যুদ্ধের দেবী। অপরদিকে, এ্যফ্রোডাইটি হলেন প্রাচীন গ্রিসের সৌন্দর্য্য, প্রেম, কাম ও জন্মের দেবী।



    এ্যফ্রোডাইটি : প্রাচীন গ্রিসের সৌন্দর্য্য, প্রেম ও কামের দেবী।



    শুক্র পৃষ্ঠের উচ্চভূমি দু’টোর এই নতুন নাম দেওয়ার পর, একটা পর্যায়ের কাজ সম্পূর্ণ হল বলেই মনে করলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু ওয়ার্কিং গ্রুপের এহেন নামকরণ পদ্ধতি দেখে বেজায় ক্ষুব্ধ হলেন মহিলা সমাজের এক অংশ। তাঁদের বক্তব্য- কেন, শুক্র পৃষ্ঠের তল দু’টোকে দেবীদের নাম দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে কেন? বাস্তব দুনিয়ায় রক্ত মাংসের নারী কি কম পড়েছে? নাকি, এই পৃথিবীতে কোনো মহীয়সী নারীর নাম খুঁজে পাননি তাঁরা? ১৯৭৯ সালেই ওয়ার্কিং গ্রুপের সদর দপ্তরে ফোন করে, চিঠি লিখে, টেলিগ্রাম করে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন বহু নারী। তাঁদের মূল দাবি, পৌরাণিক চরিত্র কিম্বা দেবীর বদলে রক্ত মাংসের নারীদের কথা বিবেচনা করতে হবে গ্রুপকে। নারীদের এই প্রতিবাদের কথা স্বীকার করে গ্রুপের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, "We immediately got letters, telephone calls and telegrams … They all said ours was a typical male response, naming features on another planet, even Venus, after myths instead of real women."

    নারী সমাজের এহেন প্রতিবাদ সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করলেন ওয়ার্কিং গ্রুপের কর্তারা। তাঁরা ঠিক করলেন, শুক্র পৃষ্ঠে ২০ কিমির থেকে বড় ব্যাসবিশিষ্ট সমস্ত গর্তের নাম দেওয়া হবে কেবলমাত্র বাস্তব অস্তিত্ব সম্পন্ন বিশিষ্ট নারীদের নামে। অন্যান্য ক্ষেত্রে অবশ্য দেবী বা যে কোনো সাধারণ নারীর নাম ব্যবহার করা যেতে পারে। বস্তুতপক্ষে মহিলাদের এই প্রতিবাদের ফলেই, দেবীদের পাশাপাশি মহীয়সী ও সাধারণ নারীদের নাম দিয়েও শুক্র পৃষ্ঠ নামকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিষয়টা আরও স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়ে ১৯৯০ সালে ম্যাগেলান প্রকল্পে সাফল্যের পর। ৪ মে ১৯৮৯, ফ্লোরিডার জন এফ কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় শুক্রযান ম্যাগেলান। ১৫ শতকের পর্তুগীজ অভিযাত্রী ফার্দিনান্দ ম্যাগেলান স্মরণে মহাকাশযানের এই নামকরণ করা হয়। ১০ অগস্ট ১৯৯০, উৎক্ষেপণের ১৫ মাস পর, শুক্র গ্রহের কাছে পৌঁছায় ম্যাগেলান। সেখান থেকে শুক্র গ্রহ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্যর পাশাপাশি চমৎকার সব রেডার চিত্র পাঠাতে শুরু করে সে। দেখা যায়, ইতিপূর্বে পাওয়া শুক্র পৃষ্ঠের সমস্ত রেডার চিত্রের তুলনায় প্রায় ২৫ গুণ অধিক সূক্ষ্ম রেডার চিত্র পাঠিয়েছে ম্যাগেলান। ম্যাগেলানের সাফল্যে যারপরনাই খুশি বিজ্ঞানীরা। ম্যাগেলানের পাঠানো রেডার চিত্রে ধরা পড়েছে শুক্র পৃষ্ঠের বিস্তারিত খুঁটিনাটি বিবরণ। বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী, সদ্য আবিষ্কৃত শুক্র পৃষ্ঠ এই সমস্ত অঞ্চল নামকরণ করতে প্রায় হাজার দুয়েকর মতো নতুন নামের প্রয়োজন তাঁদের। এই সব নতুন অঞ্চল নামকরণের প্রশ্নে আমজনতার মতামত প্রার্থনা করেন তাঁরা। ৮ মার্চ ১৯৯১, নাসার তরফ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ”Scientists of the Magellan Project … are inviting the public to propose names of notable women for the many impact craters and large volcanic vents being discovered on Venus by the Magellan spacecraft's imaging radar ”।

    নাসার আবেদনের প্রত্যুত্তরে, তাদের দপ্তরে জমা পড়তে থাকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামা ও সাধারণ মহিলাদের নাম। কিছু বিতর্কিত নাম বাদ দিয়ে, সেই সমস্ত নাম থেকে দেশ, ধর্ম, ভাষা, জাতি, উপজাতি নির্বিশেষে বিভিন্ন মহিলাদের নাম নির্বাচন করতে থাকেন ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্যরা। শুক্র পৃষ্ঠের যাবতীয় নামের তালিকা সম্বলিত ‘গ্যাজেটিয়র অব প্ল্যানেটরি নোমেনক্লেলেচার’এ (Gazetteer of Planetary Nomenclature) একবার চোখ বোলালেই বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে। ইনকা, এস্কিমো, তাতার, বান্টু, মাউড়ি, মাসাই, মায়া প্রভৃতি প্রান্তিক উপজাতির মহিলাদের নামের পাশাপাশি কামচাটকা, ঘানা, টুভা, পলিনেশিয়া, ভিয়েতনাম, মালি, হাওয়াইয়ের মতো ছোট বা আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া দেশের মহিলাদের নামও সসম্মানে বিরাজ করছে ইউনিয়নের গেজেটে তথা শুক্র পৃষ্ঠে। ওয়ার্কিং গ্রুপের নতুন নামকরণ এই পদ্ধতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন দেশের নারীবাদী সংগঠনগুলো।


    ।। ২ : ভারতী ।।



    শুক্র পৃষ্ঠ নামকরণের এই অভিনব প্রক্রিয়া থেকে কিন্তু মোটেও বাদ পড়েন নি ভারতীয় নারীরা। শুক্র পৃষ্ঠের বিভিন্ন গর্ত, পাহাড়, সমতল, আগ্নেয়গিরি নামকরণ করতে মোট ৫০ জন ভারতীয় রমণীর নাম ব্যবহার করা হয়েছে। এই ৫০ জন রমণীর মধ্যে রয়েছেন ৬ জন বিশিষ্ট ভারতীয় নারী, ৩৯ জন ভারতীয় দেবী এবং ৫ জন সাধারণ বা আম-ভারতীয় নারী। কোন্‌ ৫০ ভারতীয় নারীর নাম ব্যবহৃত হয়েছে শুক্র পৃষ্ঠ নামকরণ করতে? আসুন, একে একে এই ৫০ ভারতীয় নারীর সাথে পরিচিত হই আমরা।

    ক) ৫ সাধারণ নারীর নাম : এই তালিকায় কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো মহিলা চরিত্রকে স্থান দেওয়া হয় নি। সাধারণ ভারতীয় নারীর ডাকনামই স্থান পেয়েছে এই তালিকায়। সেই ৫ ডাকনাম হল- ১) ইন্দিরা ২) দীপা ৩) রাধিকা ৪) রানি ৫) রামপেয়ারি। এই পাঁচটা নামের কোনো একটার সাথে বিশিষ্ট কোনো ভারতীয় নারীর নামের (যেমন, ইন্দিরা গান্ধী) মিল থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে সেই বিশিষ্ট রমণীদের নামের অনুকরণে এই নামগুলো চয়ন করা হয় নি।
    খ) ৩৯ দেবীর নাম : এই তালিকা ভুক্ত সকল দেবী কিন্তু মোটেও বহুল পরিচিতা বা বহুল পূজিতা নন। এই তালিকায় এমন অনেক দেবী আছেন, অতি বড় হিন্দু পণ্ডিতও হয়তো তাঁদের নামই শোনেন নি। পরিচিতির মাত্রা অনুসারে এই ৩৯ দেবীর নামের তালিকাকে তাই ৪ ভাগে ভাগ করে নিচ্ছি আমরা (গেজেটে এমন কোনো বিভাজন নেই)। ৪ ভাগে বিভক্ত দেবীগণের নামের তালিকা এই রকম-
    অ) ৯ বহুল পূজিতা দেবী : ভারতবর্ষে বহুলরূপে পূজিতা হন, এমন ৯ দেবীর নাম রাখা হল এই তালিকায়, আলাদা করে যাঁদের পরিচয়ের প্রয়োজন পড়ে না। স্বনামধন্যা এই ৯ দেবীরা হলেন-
    ১) অন্নপূর্ণা ২) কালী ৩) গঙ্গা ৪) গৌরী ৫) চণ্ডী ৬) দুর্গা ৭) পার্বতী ৮) মনসা ৯) লক্ষ্মী।
    আ) ১১ স্বল্প পরিচিতা দেবী : হিন্দুধর্মে এমন ১১ দেবীর নাম রাখা হল এই বিভাগে, ধর্মগ্রন্থে যাঁদের উল্লেখ পাওয়া গেলেও, সামাজিক পূজার নিরীক্ষে তেমন লোকপ্রিয়া নন এঁরা। অতি সংক্ষিপ্ত পরিচয় সহ এই ১১ দেবীরা হলেন-
    ১) অদিতি- আকাশের দেবী। দক্ষরাজের কন্যা, ঋষি কাশ্যপের স্ত্রী এবং আদিত্যগণের মাতা।
    ২) অনলা- অদিতির সহোদরা, দক্ষরাজের কন্যা, ঋষি কাশ্যপের স্ত্রী।
    ৩) ইন্দ্রানী- দেবরাজ ইন্দ্রর স্ত্রী।
    ৪) ঊষা- প্রত্যূষের দেবী। অথর্ববেদে সূর্য পত্নী হিসেবেও বর্ণিতা হয়েছেন।
    ৫) কামধেনু- গোমাতা হিসেবে সুপরিচিতা। সমুদ্র মন্থনের সময়ে উঠে এসেছিলেন। মনস্কাম পূরণের দেবী হিসেবে প্রসিদ্ধা।
    ৬) জেষ্ঠ্যা- লক্ষ্মীর অগ্রজা। অশুভ শক্তির দেবী। সমুদ্র মন্থনের সময়ে উঠে এসেছিলেন। অলক্ষ্মী নামে অধিক পরিচিতা।
    ৭) তাপ্তী- নদী মাতা হিসেবে পরিচিতা। ভাগবতপুরাণে সূর্য কন্যা হিসেবে বর্ণিতা হয়েছেন।
    ৮) তাড়কা- রামায়ণ বর্ণিতা যক্ষিণী, সোনার হরিণ খ্যাত মারীচের মা। গেজেটে যক্ষিণী তাড়কাকে Indian Earth and nature goddess হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও হিন্দু শাস্ত্রে যক্ষিণী তাড়কার এমন পরিচয় পাওয়া যায় না।
    ৯) পদ্মা- পদ্ম দেবী। কমলা নামেও পরিচিতা। লক্ষ্মীর প্রতিরূপ।
    ১০) মায়া- মোহ বা বিভ্রমের দেবী। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শাক্ত, শৈব সব ধর্মেই দেবীর উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
    ১১) সরস্বতী- ইনি বাগদেবী নন। বৈদিক নদী মাতা সরস্বতীর কথাই উল্লেখ করা আছে গেজেটে।
    ই) ১২ অপরিচিতা দেবী : ধর্মগ্রন্থে উল্লেখ থাকলেও ১৩ জন এমন দেবীর নাম এই বিভাগে রাখা হল, অনেক ধার্মিক ব্যক্তি হয়তো এই সব দেবীর নামই শোনেন নি। অতি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি সহ এই ১২ দেবীরা হলেন-
    ১) অরণ্যানি- বনদেবী। ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলের ১৪৬ সুক্তের অন্তর্গত ৬টা শ্লোকই দেবী অরণ্যানীর উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয়েছে।
    ২) তুষিতা- বৌদ্ধ ও হিন্দু দেবী। বিষ্ণুপুরাণ, ভাগবতপুরাণে দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ মহাপ্রজ্ঞাপারমিতাতে দেবীর স্তুতি লিপিবদ্ধ রয়েছে।
    ৩) ধীষণা- প্রাচুর্যের দেবী। আকাশের দেবী হিসেবেও বর্ণিতা হয়েছেন। কৃশাশ্ব মুনির পত্নি ও ঋষি বেদশিরার মাতা রূপে ঋগ্বেদে বর্ণিতা হয়েছেন।
    ৪) নিষ্টিগ্রী- কেবলমাত্র ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলের ১০১ সুক্তের অন্তর্গত ১২ তম শ্লোকে এই দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। শ্লোকে দেবীকে দেবরাজ ইন্দ্রর মাতা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। হিন্দু শাস্ত্রের অন্য কোথাও এই দেবীর কোনো উল্লেখ পাওয়া যায় না।
    ৫) পৃথ্বী- পৃথিবীর দেবী। অথর্ববেদ অনুসারে দ্যুলোকের ভার্যা। হিন্দু ধর্ম ছাড়াও বৌদ্ধ, জৈন, বৈষ্ণব ধর্মেও দেবীর মাহাত্ম্য বর্ণনা করা আছে।
    ৬) পুরন্ধি- প্রাচুর্যের দেবী। ঋগ্বেদে দেবীর বর্ণনা পাওয়া যায়।
    ৭) বসুধারা- বৌদ্ধ মতে, পাঁচ ধ্যানী বুদ্ধর দ্বিতীয় জন হলেন অক্ষোভ্য। অক্ষোভ্যর স্ত্রী রূপ হলেন বসুধারা। হিন্দু মতে, যজ্ঞের সময় ধর্মদেবের স্ত্রী বসুর উদ্দেশ্যে দেয়ালে আঁকা স্বস্তিক চিহ্নের নিচে যে ঘৃত ধারা প্রদান করা হয় তাকে বসুধারা বলা হয়।
    ৮) ভূমিদেবী- বিষ্ণুপুরাণ অনুসারে বিষ্ণুর বরাহ অবতারের স্ত্রী। রামায়ণ অনুসারে সীতার মা। অন্যত্র বসুন্ধরা নামেও পরিচিতা।
    ৯) রোহিণী- কামধেনুর কন্যা। হিন্দু মতে, চন্দ্রদেবের স্ত্রীর নামও রোহিণী। আবার কৃষ্ণের মায়ের নামও রোহিণী। তবে শুক্র পৃষ্ঠে কামধেনুর কন্যাই বিরাজ করছেন।
    ১০) সামুন্দ্রা- গেজেটে Samundra, Indian river Goddess উল্লেখ করা আছে। কিন্তু কোনো ভারতীয় ধর্মগ্রন্থে এমন দেবীর নাম খুঁজে পাওয়া যায় না। গেজেটে থেকে জানা যাচ্ছে, আইরিশ-আমেরিকান লেখিকা Patricia Monaghan রচিত The Book of Goddesses & Heroines গ্রন্থ থেকে ‘সামুন্দ্রা’ নামটা চয়ন করা হয়েছে। ওই বইয়ের এক স্থানে Samundra, Goddess of rivers in India লেখা আছে। কিন্তু কোন্ মূল গ্রন্থ থেকে এই নামটা সংগ্রহ করেছেন লেখিকা, তা কিছু উল্লেখ করা নেই। ফলে এমন কোনো দেবীকে সনাক্ত করা গেল না। (এই বিষয়ে পাঠকদের মতামত প্রার্থনা করি।)
    ১১) সুরূপা- বৃষ্টির দেবী। ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ মতে, সপ্তর্ষির অন্যতম ঋষি মরিচীর কন্যা ও ঋষি অঙ্গিরসের সহধর্মিণী। শিবপুরাণ অনুসারে সুরূপা হলেন বিশ্বকর্মার দুহিতা এবং মনুপুত্র প্রিয়ব্রতর স্ত্রী।
    ১২) সুনৃতা- হিন্দুশাস্ত্রে উল্লিখিত অদিতির ১২ পুত্রর (আদিত্যর) অন্যতম হলেন ভগ। ঋগ্বেদের প্রথম মণ্ডলের ১২৩ তম সুক্তের ষষ্ঠ শ্লোকে দেবী সুনৃতাকে ভগের ভগিনী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই হিসেবে ইনি হলেন অদিতির কন্যা। ভাগবতপুরাণ মতে, ইনি ধর্মদেবের পত্নী।
    ঈ) ৭ আঞ্চলিক দেবী : দেবীগণের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন- আঞ্চলিক বা উপজাতীয় দেবী। তালিকাভুক্ত দেবীরা হলেন-
    ১) কোত্রাভেই- তামিল জনজাতির কৃষিকাজ, শিকার ও যুদ্ধের দেবী। দেবী দুর্গার প্রতিরূপ হিসেবে মান্যতা পেয়ে থাকেন। দেবী হিংলাজের সাথেও এনার তুলনা করা হয়ে থাকে।
    ২) তারি পেন্নু- ওড়িষ্যার কোন্ডা উপজাতির আদিমাতা ও ধরিত্রীদেবী হিসেবে পরিচিতা। পেন্নু কথাটার অর্থ দেবী। কেরালার বয়নাড় জেলার আদিয়ান উপজাতির দেবীর নামও তারি পেন্নু। তবে গেজেটে কোন্ডা উপজাতির নাম উল্লেখ করা আছে।
    ৩) পুলুগা- আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের এক উপজাতির আদিমাতা হলেন পুলুগা। বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের দেবী হিসেবে পরিচিতা। চুরি, খুন, ধর্ষণের জন্য কঠিন সাজা দিয়ে থাকেন বলেই কথিত।
    ৪) বিলিকু- আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের এক উপজাতির আবহাওয়া, ঋতু, বজ্রপাত ও ঝঞ্ঝার দেবী। ইনিই প্রথম অগ্নি প্রজ্জ্বলনের গুপ্ত প্রক্রিয়ার করায়াত্ত করেছিলেন বলে কথিত। দেবী মূর্তিতে মাকড়সার জাল স্থান পেয়ে থাকে। এনার স্বামীর নাম বুলুগা।
    ৫) ভূমিয়া- ঊর্বরতার দেবী। উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুন জেলায় সর্বাধিক পূজিতা হন। জাঠ অধ্যুষিত পাঞ্জাব ও রাজস্থানেও এঁনার পূজার প্রচলন রয়েছে।
    ৬) মুজামুজা- সুমি নাগা উপজাতির বনদেবী হলেন মুজামুজা। অশুভ প্রতীক হিসেবে মান্যতা পেয়ে থাকেন। বনের ভিতরে মানুষকে পথভ্রষ্ট করে দেন। বনে প্রবেশের আগে এই দেবীর উদ্দেশ্যে গান গেয়ে পূজা নিবেদন করে দেবীকে সন্তুষ্ট করে থাকেন নাগারা।
    ৭) সিমোটিং- নাগাল্যান্ডের মারাম উপজাতির আদিমাতা হিসেবে পরিচিতা। এক প্রলয়ংকর প্লাবনে সবাই ভেসে গেলেও রক্ষা পান কেবলমাত্র দেবী সিমোটিং ও দেব মেন্ডুগাসি। এই দেব-দেবী থেকেই মারাম উপজাতির জন্ম বলেই কথিত।
    গ) ৬ বিশিষ্ট ভারতীয় নারীর নাম : দেবী ও সাধারণ নারীর নাম ছাড়াও, শুক্র পৃষ্ঠে স্থান পেয়েছেন ৬ বিশিষ্ট ভারতীয় রমণী। সংক্ষিপ্ত পরিচয়সহ এই ৬ কৃতী রমণীরা হলেন-
    ১) আনন্দীবাঈ জোশী (১৮৬৫-১৮৮৭)- বম্বে শহরের কল্যাণ অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন ভারতের প্রথম মহিলা চিকিৎসক যমুনা জোশী। ভারতীয় ডাক বিভাগের কর্মী গোপালরাও জোশীকে বিবাহের পর তাঁর নাম হয় আনন্দীবাঈ গোপালরাও জোশী। আনন্দীবাঈ জোশী স্মরণে শুক্র পৃষ্ঠের একটা গহ্বরের নাম রাখা হয়েছে- জোশী। জোশী গহ্বরের ব্যাস ৩৭ কিমি।
    ২) ওবৈয়ার (জন্মকাল অজ্ঞাত)- খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দ থেকে ৬০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত, প্রায় ১০০০ বছর সময়কালের মধ্যে রচিত তামিল সাহিত্যকে সঙ্গম সাহিত্য বলা হয়। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১০০ অব্দে মাদুরাই শহরে জন্ম গ্রহণ করেন বিশিষ্ট সঙ্গম কবি ওবৈয়ার। কবি ওবৈয়ার স্মরণে শুক্র পৃষ্ঠের একটা গহ্বরের নাম রাখা হয়েছে- ওবৈয়ার। ওবৈয়ার গহ্বরের ব্যাস ২০.৬ কিমি।


    চেন্নাইয়ের মেরিনা বিচে ওবৈয়ারের মূর্তি।



    ৩) জেরুসা জেকব ঝিরদ (১৮৯১ ১৯৮৪)- কর্ণাটকের শিমোগা জেলার এক দেশি ইহুদী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বিশিষ্ট ধাত্রীবিদ চিকিৎসক জেরুসা জেকব ঝিরদ। ১৯৬৬ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করেন ভারত সরকার। জেরুসা জেকব ঝিরদ স্মরণে শুক্র পৃষ্ঠের একটা গহ্বরের নাম রাখা হয়েছে- ঝিরদ। ঝিরদ গহ্বরের ব্যাস ৫০.২ কিমি।
    ৪) মুমতাজ মহল (১৫৯৩-১৬৩১)- তাজমহল খ্যাত মোঘল সম্রাট শাহজাহানের বেগম। বেগম স্মরণে শুক্র পৃষ্ঠের একটা গহ্বরের নাম রাখা হয়েছে- মুমতাজ-মহল। মুমতাজ-মহল গহ্বরের ব্যাস ৩৮.২ কিমি।
    ৫) পণ্ডিতা রমাবাঈ সরস্বতী (১৮৫৮-১৯২২)- মহারাষ্ট্রের কোঙ্কণ অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন বিশিষ্ট শিক্ষাকর্মী ও সমাজ সংস্কারক রমা ডোংরে। সংস্কৃত ভাষায় তাঁর বুৎপত্তির জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে তাঁকে ‘পণ্ডিতা’ ও ‘সরস্বতী’ উপাধি প্রদান করা হয়। বাঙালি আইনজীবী বিপিন বিহারী মেধ্বীকে বিবাহ করেন রমাবাঈ। রমাবাঈ মেধ্বী স্মরণে শুক্র পৃষ্ঠের একটা গহ্বরের নাম রাখা হয়েছে- মেধ্বী। মেধ্বী গহ্বরের ব্যাস ৩০.৪ কিমি।
    ৬) রাজিয়া সুলতানা (১২০৫?-১২৪০)- ভারতের প্রথম সম্রাজ্ঞী, দাস বংশের পঞ্চম শাসক। রাজিয়া সুলতানা স্মরণে শুক্র পৃষ্ঠের একটা গহ্বরের নাম রাখা হয়েছে- রাজিয়া। রাজিয়া গহ্বরের ব্যাস ১৫৭ কিমি।




    এই ৫০ ভারতীয় নামের মধ্যে, শুক্র পৃষ্ঠ নামকরণের জন্য সর্বপ্রথম নির্বাচিতা হয়েছিলেন- লক্ষ্মী। ১৯৭৯ সাল থেকে শুক্র পৃষ্ঠ নারীদের নাম দিয়ে চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই বছর শুক্র পৃষ্ঠের ১৩টা স্থানকে নারীদের নাম দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সেই ১৩ নামের মধ্যে একমাত্র ভারতীয় নাম হিসেবে স্থান করে নিয়েছিলেন দেবী লক্ষ্মী। ১৯৮২ সালে দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে নির্বাচিতা হয়েছিলেন- দেবী ঊষা। নভেম্বর ২০১৯ সালে শেষ ভারতীয় হিসেবে নির্বাচিতা হয়েছেন- দেবী জ্যেষ্ঠা। তবে দেবী জ্যেষ্ঠাকে শেষ ভারতীয় নাম মনে না করাই ভাল। কারণ, ইসরোর তত্ত্বাবধানে এই বছর ডিসেম্বর মাসে শুক্র গ্রহের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিতে চলেছে শুক্রযান- শুক্রায়ণ ১। শুক্রায়নে থাকবে একটা অরবিটার যা শুক্র গ্রহকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করতে থাকবে। অরবিটার থেকে ছাড়া হবে একটা বেলুন, যা শুক্রের বায়ুমণ্ডলে ভেসে থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে। আশা করা যায়, শুক্র পৃষ্ঠের আরও কিছু নতুন অঞ্চলের হদিশ পাবে শুক্রায়ণ ১। সেই সমস্ত অঞ্চল নামকরণের প্রশ্নে প্রয়োজন হবে আরও কিছু নতুন নামের। তাহলে আর দেরি কেন? বাছতে শুরু করে দিন আপনার পছন্দের ভারতীয় নারীর নাম। তবে সময় মতো ওয়ার্কিং গ্রুপের দপ্তরে তা পাঠিয়ে দিতে ভুলবেন না যেন।




    যে সমস্ত বই, ব্লগ ও সাইটের সাহায্য নেওয়া হয়েছে

    1. Gazetteer of Planetary Nomenclature, NASA and IAU.
    2. Scientists, Feminists Dispute Names of Features on Venus By Thomas O'Toole. The Washington Post, May 29, 1980
    3. Venus exploration timeline by Emily. 25 May 2012. The European Space Agency (ESA), Blog.
    4. Dictionary of Mythology, Folklore and Symbols, by Gertrude Jobes. The Scarecrow Press, Inc. New York 1962.
    5. The book of goddesses & heroines by Patricia Monaghan. Llewellyn Publications, Minnesota, USA 1990.
    6. Life Style, Indian Tribes: Locational Practice, Volume 1, By Shiva Tosh Das. Gian Publishing House, New Delhi, 1993.
    7. Wisdom Library by Gabe Hiemstra. wisdomlib.org.
    8. Internet Sacred Text Archive. sacred-texts.com
    9. Hindupedia.com, the Hindu Encyclopedia.
    10. ঋগ্বেদ সংহিতা, অনুবাদ রমেশ্চন্দ্র দত্ত। ebanglalibrary.com
    11. জীবনীকোষ-ভারতীয়-পৌরাণিক, উইকিসংকলন।
    12. সনাতন ভাবনা ও সংস্কৃতি, হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি। Blog.
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৫ অক্টোবর ২০২৪ | ৫৭৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ২০:১৭538546
  • শুক্রে নামকরণের এই ব্যপারটা একেবারেই জানতাম না। অসম্ভব ভাল লাগল লেখাটা। 
     
    মমতাজের নামে নামকরণটা একটু অদ্ভুত। মমতাজের নিজস্ব ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে তো বিশেষ কিছু  পাই নি৷ নুরজাহান অথবা জাহানারা হলে ঠিক হত মনে হয়। তাঁরা স্ব স্ব বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল। 
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ০০:১৪538550
  • লেখাটা খুব ভালো লাগল। একটা সম্পূর্ণ নতুন বিষয়ে আলোকপাত। 
     
    তবে রোহিনী তো কৃষ্ণের মা নন, বলরামের মা ছিলেন।
  • সহস্রলোচন শর্মা | 150.129.***.*** | ১৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৪৫538574
  •  দ : গ্রহ নক্ষত্র নামকরণের প্রশ্নে তাঁদেরও যে মত প্রকাশের অধিকার আছে, এমনটা জানেনই না পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ। ভারতীয়রাও এর ব্যতিক্রম নয়। ফলে অনেক কৃতি বা জনপ্রিয় নারীর নাম বাদ গেছে। ...  তবে IAU এই সমস্ত নারীদের কৃতিত্বের ক্রম নির্ধারণ করে নাম নির্বাচন করেননি। কিছু বিতর্কিত নাম বাদ দিয়ে বাকি সব নামই তারা গ্রহণ করেছেন। বেশ তো, আপনি না হয় নুরজাহান কিংবা জাহানারা নাম প্রস্তাব করুন না। এ তো অতি উত্তম প্রস্তাব। 

    রমিত বাবু, সঠিক অর্থে, রোহিণী- কৃষ্ণ ও বলরাম, দুজনেরই সৎ মা ছিলেন।
  • কৃশানু নস্কর | 2405:201:8007:8056:f96f:ec2f:99be:***:*** | ২৯ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:১৭538968
  • ভালো লাগলো। এই নামকরণের জন‍্য নাম চেয়ে পাঠানোর ব‍্যাপারটা অনেকদিন আগে (1993-94 নাগাদ )  শুকতারায় (সম্ভবত গল্পদাদু বা ঐ জাতীয় কোনো বিভাগে ) একবার দেখেছিলাম কিন্তু আর কোথাও এ বিষয়ে কোনো তথ‍্য খুঁজে পাইনি বলে (অবশ‍্য তখন আমার খোঁজ করার ক্ষমতাও সীমিত ছিল। Internet বা Google ও ছিল না। ন‍্যাশনাল লাইব্রেরিতে কার্ড করাই আরও প্রায় তিনবছর বাদে) এটা ঠিক বিশ্বাস হয়নি। এখন দেখছি ব‍্যাপারটা সত্যি।
     
    তবে শুকতারা সম্ভবত অনেক দেরিতে জিনিসটা দিয়েছিল। তখন তো বোধহয় নামকরণ সব মোটামুটি হয়ে গেছিল।
  • কৌতূহলী | 115.187.***.*** | ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ২১:২৪538991
  • বাঃ , চমৎকার লাগল
    একটু অন্য বিষয়ে একটা প্রশ্ন আছে। গ্রহদের মধ্যে একমাত্র শুক্রই পূব থেকে পশ্চিমে আবর্তিত হয়। এঁর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা গেছে?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট প্রতিক্রিয়া দিন