এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  রাজনীতি

  • ডেউচা-পাঁচামি - একটি প্রতিবেদন

    অভিজ্ঞান
    আলোচনা | রাজনীতি | ১৬ মার্চ ২০২২ | ২৬৭৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৭ (৩ জন)

  • ডেউচা-পাঁচামি হরিণ শিঙা-দেওয়ানগঞ্জে কয়লা শিল্প স্থাপনে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান সমস্যা হল - তার সিংহাসন লাভ হয়েছিল জমি অধিগ্রহণ বিরোধী, উচ্ছেদ বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। জমির সাথে গ্রামের মানুষের নিবিড় সম্পর্কের বিষয়টি তিনি কাজে লাগিয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী হিসেবে। তার দল ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন অ্যাক্ট, ১৮৯৪ এর ঘোর বিরোধিতা করেছিল সিঙ্গুরের সময়। পরবর্তীতে ১৮৯৪ এর ঔপনিবেশিক আইনের কিছু পরিবর্তন করে পার্লামেন্টে আইন পাস হয় রাইট টু ফেয়ার কমপেনশেসন অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্সি ইন ল্যান্ড অ্যাকুইজেশন, রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড রিসেটেলমেন্ট অ্যাক্ট, ২০১৩ - তৃণমূল মুখপাত্র সেই আইনেরও বিরোধিতা করেন, আইনটি কৃষক স্বার্থের বিরোধী বলে। গত দশ বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘শিল্প’বিরোধী, চপ ও মেলা শিল্পের ধারক বাহক রূপে অভিযুক্ত হয়েছেন বিরোধীদের দ্বারা। সেই কতকাল আগে লোকাল কমিটির দেওয়াল লিখনের দীর্ঘশ্বাস মনে পড়ছে - ‘কালীঘাটের ময়না, শিল্প করতে দেয় না’! হঠাৎ শিল্প-বান্ধব হয়ে ডেউচা-পাঁচামি অঞ্চলে কয়লাখনি কেন্দ্রিক শিল্প করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উচ্ছেদ, জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত সংঘর্ষের পরিস্থিতি আহ্বান করছেন, যা তার রাজত্বে নতুন ঘটনা।

    ডেউচা-পাঁচামিতে ভূগর্ভস্থ কয়লা উত্তোলনের ফলে হাজার বিশেক মানুষের (সংখ্যাগুরু আদিবাসী, এছাড়া সিডিউলড কাস্ট ও মুসলিম) উচ্ছেদ ও সেই মানুষদের সম্ভব্য প্রতিরোধের সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভারতবর্ষের ‘সেরা পুনর্বাসন প্যাকেজ’ ঘোষণা করেছেন। সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি জানিয়েছেন দশ হাজার কোটি টাকার পুনর্বাসন প্রকল্পের কথা - প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডেউচা-পাঁচামির ভূমিপুত্রদের প্রায় সকলের চাকরি হবে, ডেউচা-পাঁচামির কয়লা শিল্পকে কেন্দ্র করে মোট একলক্ষ চাকরি, এলাকার পাথরখাদান মালিকের জন্য ত্রাণ, ওখানকার পাথর খাদানে কাজ করা আদিবাসী শ্রমিকের জন্য আর্থিক ত্রাণ, কৃষি মজুরের জন্য আর্থিক প্যাকেজ, নতুন কলোনি তৈরি করে সেখানে আদিবাসীদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে - যা যা ‘ভালো ভালো’ মানবিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া যায়, তার ম্যানেজারেরা খুঁজে পেতে সবকটাই ঢুকিয়ে রেখেছিল প্রেস নোটে। বেশির ভাগই অবাস্তব, অতিরঞ্জিত কথাবার্তা, নেতা মন্ত্রীরা যা বলেই থাকেন - সেসব নিয়ে কাটাছেঁড়া এখানে আলোচ্য বিষয় নয়। প্রশ্নটি হল, কয়লা খনির জন্য যে জমি নেওয়া হবে সেটা কোন পদ্ধতিতে নেওয়া হবে - জমি অধিগ্রহণ হবে নাকি জমি কিনে নেওয়া হবে? বিষয়টি ধোঁয়াশায়।

    বিবিধ প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য ও লাভজনক নয় বলে ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লা উত্তোলনের পরিকল্পনা কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড দীর্ঘদিন আগেই পরিত্যাগ করেছিল। নানান পরিকল্পনা ও সেগুলি ভেস্তে যাওয়ার পর ২০১৮-এর সেপ্টেম্বরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হাতে আসে ডেউচা-পাঁচামির কোল ব্লক, ওয়েস্ট বেঙ্গল পাওয়ার ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (ডাবলুবিপিডিসিএল) এই ব্লকের মালিকানা পায়। আবার জানা যাচ্ছে ‘বেঙ্গল বীরভূম কোল কোম্পানি লিমিটেড’ নামক রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থা এই কয়লা খনির নির্মাণ ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকবে। ‘বেঙ্গল বীরভূম কোল কোম্পানি লিমিটেড’ এর রেজিস্টার্ড অফিস ঠিকানা বিদ্যুৎ উন্নয়ন ভবন, বিধান নগর, কলিকাতা। এবং এই কোম্পানির যাবতীয় টেন্ডার, কাগজপত্র ইত্যাদি ডাবলুবিপিডিসিএলের ওয়েবসাইট থেকেই প্রকাশিত হয়।

    প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ডাবলুবিপিডিসিএলের কয়লা উৎপাদনের প্রযুক্তি ও উপকরণ কিছু নেই, তাদের ওয়েবসাইটে স্পষ্ট ভাষায় লেখা আছে ডাবলুবিপিডিসিএলের অধীনে থাকা পাঁচটি খোলামুখ খাদানে (বড়জোড়া, বড়জোড়া নর্থ, গঙ্গারামচক, তারা, পাচড়া) কয়লা উৎপাদনের দায়িত্বে আছে বিভিন্ন প্রাইভেট মাইনিং কোম্পানি। এটা স্পষ্ট ভাবে জেনে নেওয়া দরকার, ডাবলুবিপিডিসিএল তাদের চালু পাঁচটি খনির কোথাও জমি অধিগ্রহণ করেনি, জমি মালিকের কাছ থেকে জমি কিনেছে। অর্থাৎ ১৮৯৪ সালে জমি অধিগ্রহণ আইন বা ২০১৩ সালের পরিবর্তিত আইনের পরিধির বাইরে, বাজারদরে জমির কেনাবেচা, হস্তান্তর হয়েছে। ডেউচা-পাঁচামিতেও জমি অধিগ্রহণ না হবারই কথা, জমি কিনে নেবার পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার, ‘বেঙ্গল বীরভূম কোল কোম্পানি লিমিটেড’এর নামে।

    কতকগুলি মনে রাখার বিষয়-
    ১। ১৯৭৩ সালে কোল মাইনস ন্যাশানালাইজেশন অ্যাক্ট (CMN) অনুসারে কয়লা শিল্পের জাতীয়করণ করা হয়েছিল। তার আগে কয়লা শিল্প ব্যক্তিমালিকানাধীন ছিল। ১৯৯১ সালে নিও-লিবারাল অর্থনীতির সূচনার পরে ধাপে ধাপে ফের বেসরকারিকরণের সূচনা হয়।

    ২। ১৯৯২ সালে রাজ্যগুলোকে ১৪৩ টা কয়লা ব্লক ও সিঙ্গারেনি খনি থেকে কয়লা উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। আবার ১৯৯৩ (জুন) সালে বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি, ১৯৯৬ (মার্চ) সিমেন্ট কোম্পানি ও ২০০৭ সালে বেসরকারি কোল গ্যাসিফিকেশন ও লিকুইডিফিকেশন সংস্থাকে ক্যাপটিভ কয়লা খনি করার অনুমতি দেওয়া হল। ক্যাপটিভ মাইনস এর কয়লা বাজারে বিক্রয়ের জন্য নয় -ওই কয়লা ক্যাপটিভ মাইন এর মালিক সংস্থাই ব্যবহার করবে শুধু, সংস্থার বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকলে সেখানে বা স্টিল প্লান্ট থাকলে কোক-ওভেন বা ব্লাস্ট ফার্নেসে। পরবর্তীতে মাইনস অ্যান্ড মিনারেল (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেশন) অ্যাক্ট (২০০০) সংশোধনী অনুসারে সমস্ত রাজ্যগুলোকে কয়লা খনি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এ কথাও বলা হয় যেহেতু রাজ্য সরকারগুলোর কয়লা উৎপাদনের অভিজ্ঞতা নেই, তাই রাজ্যগুলো অভিজ্ঞতা আছে এমন বেসরকারি কোম্পানিকে দিয়ে আউটসোর্সিং করতে পারবে। ২০০৬ সালে ক্যাপটিভ মাইনসে ১০০ শতাংশ বিদেশি পুঁজি আসার ছাড়পত্র পায়।

    ৩। ২০১৮ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি মোদি সরকারের মন্ত্রীসভা কয়লা শিল্পে ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (FDI) ও বেসরকারি কয়লাখনির মালিকদের বাজারে কয়লা বিক্রিতে অনুমতি দিয়েছে।

    ৪। রানিগঞ্জ অঞ্চলে কয়লাখনির জন্য এতকাল তিনটি পদ্ধতিতে জমি অধিগ্রহণ হয়েছে ক) ১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনে, রাজ্য সরকারের মাধ্যমে খ) কোল বেয়ারিং অ্যাক্ট গ) ডাইরেক্ট পারচেজ (জমি মালিকের কাছ থেকে কোল কোম্পানি সরাসরি জমি কিনে নেয়। ২০১৩ সালে কোল বেয়ারিং অ্যাক্টটি পরিমার্জনা করা হয় যেখানে কয়লার জন্য অধিগৃহীত জমি অন্যান্য ইনফ্রাস্ট্রাকচারের কাজেও ব্যবহার করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি কংগ্রেস আমলে বেসরকারিকরণের একটি পদক্ষেপ।

    পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ক্যাপটিভ মাইনসের ইতিহাসটিও খানিক স্মরণ করা জরুরি - যেহেতু ডাবলুবিপিডিসিএল ডেউচা-পাঁচামির দায়িত্ব পেয়েছে।
    ১। ১৯৯৬ সালে ডাবলুবিপিডিসিএল ও ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইলেকট্রিসিটি বোর্ড (ডাবলুবিএসইবি) তারা (ইস্ট) ও তারা (ওয়েস্ট) কোল ব্লকের অনুমোদন পায় কয়লামন্ত্রকের থেকে, তাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চাহিদা মেটাতে। নজরুলের গ্রাম চুরুলিয়ায় এই খোলামুখ খনি অবস্থিত। ডাবলুবিপিডিসিএলের প্রথম ক্যাপটিভ মাইন এই তারা (ইস্ট) ও তারা (ওয়েস্ট)।

    ২। সেসময় ডাবলুবিপিডিসিএল ও ডাবলুবিএসইবি তারা (ইস্ট) ও তারা (ওয়েস্ট) কোল ব্লকের অপারেশন ও প্রোডাকশনের জন্য ইস্টার্ন মিনারেলস অ্যান্ড ট্রেডিং এজেন্সি (এমটা) কোম্পানির সাথে একটি জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি গঠন করে, বেঙ্গল এমটা কোল মাইনস লিমিডেট। এমটার মালিক উজ্জ্বল উপাধ্যায় ছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর পুত্র চন্দন বসুর ঘনিষ্ঠ, ক্যাগের রিপোর্টে অভিযোগ ছিল এই জয়েন্ট ভেঞ্চারে কোনো টেন্ডার ডাকা হয় নি।

    ৩। তারা (ইস্ট) ও তারা (ওয়েস্ট) সহ পরবর্তী প্রতিটি ক্যাপটিভ মাইনিং প্রোজেক্ট এরিয়ায় ডাইরেক্ট পারচেজ অর্থাৎ মালিকের কাছ থেকে সরাসরি জমি কিনে মাইনস গুলি চালাচ্ছিল ডাবলুবিপিডিসিএল। ২০১৯ সালে প্রকাশিত তারা (ইস্ট) ও তারা (ওয়েস্ট) কোল মাইনিং প্রোজেক্ট এনভায়রনমেন্ট ইম্প্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট ও এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান রিপোর্টে পরিষ্কার লেখা আছে WBPDCL has decided to acquire the land as per the provisions of the National R & R Policy (whichever is more beneficial to the people) for which necessary budgetary provision has been made. The purchase of agriculture land will be made by paying appropriate mutually and voluntarily compensation agreed between agriculturist landowner and applicant - সরাসরি জমি কেনার কথা। বর্গাদার ও খেতমজুররা এক্ষেত্রে কোথাও জমির দাম বা ক্ষতিপূরণ পান নি। অন্যান্য চারটি খনি এনভায়রনমেন্ট ইম্প্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট ও এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান খুঁটিয়ে পড়লেও দেখা যাবে জমি পারচেজ করা হয়েছে প্রোজেক্টের জন্য।

    ৪। তারা (ইস্ট) ও তারা (ওয়েস্ট) কোলিয়ারিতে বেঙ্গল-এমটা স্থানীয় জমিদাতাদের মধ্যে ১২০ জনকে চাকরি দিয়েছিল, বাকি শ্রমিক ঠিকাদারের মাধ্যমে বাইরে থেকে নিয়োগ করা হয়েছিল। খোলামুখ খনিতে প্রাইভেট কোম্পানি ঠিকাদারদের মাধ্যমেই শ্রমিক নিয়োগ করে।

    ৫। জমিদাতারা বাজার দরের চেয়ে বেশি মূল্য পাবার আশায় ছোট খাটো আন্দোলন ইত্যাদি করে থাকেন, কিছুদিন আগেই বীরভূমের গঙ্গারামচকের ডাবলুবিপিডিসিএল খোলামুখ খনির সম্প্রসারণের জন্যে নতুন করে জমির প্রয়োজন হয়েছিল, এবং জমিদাতারা দর বাড়ানোর দাবিতে ক্ষীণ প্রতিবাদের চেষ্টা করেছিলেন।

    এখন প্রশ্ন হল, কোন অংশের জমি মালিক জমি দিতে আগ্রহী হচ্ছে এবং কেন? ডেউচার নিকটবর্তী রানিগঞ্জ কয়লাঞ্চলের কথা ধরা যাক, যেহেতু সেটি পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীন ও বিরাট কয়লার ব্লক, সেখানে একের পর এক খোলামুখ খনির সম্প্রসারণ হয়ে চলেছে। জমির মালিক যাদের স্থানীয় ভাবে ‘চাষি’ বলে, মধ্য জাতির (কাস্টের) অংশ অর্থাৎ পাল, ঘোষ, দাস, জমি বেচে দিতে উৎসাহী। কারণ হিসেবে বলা যায়, প্রথমতঃ, গত দু'দশকে খোলামুখ খনির আশে পাশের কৃষিজমি ভয়াবহ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, জল স্তর নেমে যাওয়া ও দূষণের কারণে - জমি টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। দ্বিতীয়তঃ রানিগঞ্জ কয়লা অঞ্চলটি ইস্টার্ন কোলফিল্ড লিমিটেডের আওতায় যাদের পুনর্বাসন প্যাকেজ মধ্য ও বড় কৃষকদের কাছে আকর্ষণীয় - দুই একর জমির বিনিময়ে একটি চাকরি মেলে, এবং টাকাও। রানিগঞ্জের একটি কোলিয়ারির নিকটবর্তী গ্রামে শুনছিলাম অঞ্চলের কৃষক সম্প্রদায়ের দ্রুত বদলে যাওয়া মানসিকতার কথা। কয়েক দশক আগে এখানে কয়লাখনিতে, বিশেষত আন্ডারগ্রাউন্ডে চাকরি করা বিষয়ে এই মধ্য-জাতির কৃষকদের ঘোর অনীহা ছিল - মাইগ্র্যান্ট বিহারী, ওড়িয়া, ছত্তিশগড়ি, সাঁওতাল, স্থানীয় বাউরি, ডোম, মাল; এরাই খালি খনির গহ্বরে নামত। এখন মধ্য, বড় ও সম্পন্ন কৃষকরা জমি দিয়ে দিতে আগ্রহী, পরিবারের কয়েকটি মাথা ইসিএলে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি পেলে সেটাই লাভজনক মনে করছেন তারা। জমির মালিকানার দখল উচ্চবর্ণের, এবং এই দখলদারি বংশানুক্রমে সামাজিক-অর্থনৈতিক লভ্যাংশ তৈরি করে। আরেকটি কোলিয়ারিতে পরিচয় হয়েছিল এক ব্রাহ্মণ সন্তানের সাথে, ইস্টার্ন কোলফিল্ড লিমিটেডের মধ্যপদে চাকরি করছেন। তার শ্বশুরের প্রায় তিরিশ বিঘা জমি ছিল, খোলা মুখ খনিতে সেই জমি ঢুকে গিয়ে আটটি চাকুরির জন্ম দিয়েছিল। শ্বশুর মশাই তিন ছেলে, দুই জামাইকে ইসিএলে চাকরিতে ঢোকানোর পরও তিনটি চাকরি বেঁচে ছিল, সেই চাকরিগুলি বিক্রি করে দেওয়া হয়। জমি ইসিএলের হাতে যাওয়ার আগে জমির দলিল লিখে দেওয়া হয় অন্য চাকরি প্রার্থীদের নামে। বছর কুড়ি আগে প্রায় পঁচিশ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছিল এক-একটি চাকরি। নিচু জাতের লোকগুলি যারা কৃষি জমিতে মুনিষ খাটত, খেতমজুর ছিল অথবা দীর্ঘদিন জমিতে চাষ করেছে কিন্তু পাট্টা পায়নি, তাদের অবস্থা সমীক্ষা করে দেখুন, সাঁওতালদের অবস্থা সমীক্ষা করে দেখুন – তারা কয়লা চুরি করে, অজয়ের বালি ঘাটে লেবারের কাজ করে, ঠিকা শ্রমের কাজ করে, লটারি বেচে আর কেনে, চোলাই গিলে লুটোপুটি খায়। মাত্র দু'দশকে কৃষি অর্থনীতিকে ধ্বংস করে একটি ক্রিমিনাল ইকোনমি, ক্রিমিনাল সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেছে খোলামুখ খনির সম্প্রসারণ, নয়া উদারীকরণের হাত ধরে। লাভবান হয়েছে উচ্চবর্ণ, বড় কৃষকের অংশ -তারা অধিকাংশই সটকে গেছে দুর্গাপুর, আসানসোলের দিকে, বাড়ি জমি কিনে। জমির উপর দখলদারি সামাজিক উত্তরণের, ক্ষমতায়নের সোপান; কোল বেল্টেও। খোলামুখ খনি ভগ্নস্তূপে পরিণত করছে রানিগঞ্জ কোল বেল্টের গ্রামগুলিকে, সেখানে পড়ে আছে নিচু জাত আর সাঁওতাল। সোশ্যাল আপওয়ার্ড মোবিলিটি, আর্বান শিফট সবই হয়েছে আপার কাস্টের, জমির দাপে।

    খোট্টাডি খোলামুখ খনির সম্প্রসারণে বিলপাহাড়ি গ্রামটি খনির গর্ভে যাবে তাই সেই গ্রামের পুনর্বাসন হয়েছে সিউড়ি হাইওয়ের ধারে। নতুন পত্তন হওয়া গ্রামে চাষিদের বাড়ি দেখলে মাথা ঘুরে যাবে, পেল্লায় তিনতলা আধুনিক প্রাসাদ। বাউরিপাড়া আলাদা গড়ে উঠেছে, একতলা বিহার-ইউপির ধাঁচে জানালা বিহীন দালান, আর মাঝিপাড়ায় (সাঁওতাল) পলেস্তারাহীন দু'কামরার ঘুপচি ঘর। উচ্ছেদ সবার হয়েছিল, পুনর্বাসন হয়েছে শ্রেণি ও জাতি বিভাগকে পুনঃ প্রতিষ্ঠা করে। সাঁওতালদের চাষের জমি ছিল না, বাস্তু-জমি চলে যাওয়ায় জন্য তারা ঘর পেয়েছে ওই দু'কামরার আর পাঁচ লক্ষ টাকা। সেই কাঁচা টাকা খুব উদ্বায়ী - বাইক কিনে, মদে, জুয়ায় ফুস করে হাওয়া হয়ে গেছে। হাইওয়ের ঠিক উল্টোদিকে মহালক্ষ্মী ও সোনপুর বাজারি খোলামুখ খনি, বিরাট আকারের, সেই গ্রামগুলির আদিবাসী ও ভূমিপুত্ররা এখনও লড়ে যাচ্ছেন পুনর্বাসনের দাবিতে।

    ডেউচা-পাঁচামিতে জমির বিনিময়ে চাকরি ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কিন্তু সেটা কী ধরণের চাকরি তাই নিয়ে প্রবল অস্বচ্ছতা রয়েছে। তবে এটা পরিষ্কার যে সেই চাকরি ইসিএলের প্রদান করা জমির বিনিময়ে স্থায়ী চাকরির বন্দোবস্ত নয়, যেখানে ডি গ্রেড কর্মীর বেতন হয় মাসিক পঞ্চাশ হাজার টাকার কাছাকাছি। আনন্দবাজার পত্রিকায় ২৩শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২এর সংবাদে জানা যাচ্ছে বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামিতে প্রস্তাবিত কয়লাখনির পক্ষে-বিপক্ষে নানা দাবির সংঘাত চলার মধ্যেই সরকারি প্যাকেজ অনুযায়ী জমি দিতে সম্মত হয়ে অঙ্গীকারপত্রে সই করেছেন ওই এলাকার বেশ কয়েক জন জমি মালিক। অঙ্গীকারপত্রে সই করা জমি মালিকদের তিনজনের নাম বুদ্ধদেব গড়াই, সনৎকুমার গড়াই, দিব্যেন্দু ঘোষাল। ঘোষালরা রাঢ়ী বামুন। এই অঞ্চলের গড়াইরা ‘হাঁড়ি’ সম্প্রদায়ের নয়, তেলি ও ওবিসি। ধরে নেওয়া যায় এনারা কিছু জমির মালিক, নিও-লিবারাল যুগে বাংলার মধ্য কৃষক, গত কয়েক দশকে যাদের কৃষির পাশাপাশি পরিবারের অন্তত একজন সদস্যের স্কুলের চাকরি করার অভিজ্ঞতা রয়েছে, উচ্চশিক্ষার সংস্পর্শে উচ্চ অভিলাষ রয়েছে, বাজারের পন্য-রতির সংস্কৃতি এদের ছুঁয়েছে। তাদের ‘কৃষক-চৈতন্য’র অভিমুখ শহরের দিকে হওয়াটা অর্থনৈতিক নিয়মেই স্বাভাবিক, জমি দিতে রাজি হওয়ার মধ্যে অস্বাভাবিকত্ব নেই। লক্ষ্য করার বিষয় হল একজনও গ্রামের আদিবাসীর নাম সংবাদপত্রের রিপোর্টে নেই, মুসলিমেরও। নাগরিক মঞ্চের রিপোর্ট বলছে, ডেউচায় প্রস্তাবিত খনির জন্য ১১,২২২ একর জমির প্রয়োজন যার মধ্যে ৮১ শতাংশ, ৯১০০ একর আদিবাসীদের জমি। দেওয়ানগঞ্জ হরিনশিঙার ভূমিহীন বা ছোট জমির মালিক আদিবাসীরা মরে গেলেও জমি দেবে না এই বয়ান রাখছেন। তারা নিও-লিবারাল উন্নয়নের প্যারাডাইমের বাইরে, নিও-লিবারাল উন্নয়নের শিকার, সেই কাঠামোয় তাদের জীবন-জীবিকা-সংস্কৃতি ধ্বংস হয়।

    কিছু মানুষ জমি দিচ্ছেন, সরকার সেটা বড় করে প্রচার করবে খুব স্বাভাবিক। সিঙ্গুরেও কয়েকশো একর জমি সরকারকে হস্তান্তর করেছিলেন ইচ্ছুক জমি মালিকরা। বামফ্রন্ট সেই অংশকে প্রগতিশীল বলে দাবি করেছিল, আজ তারাই ডেউচার অনিচ্ছুক আদিবাসী মুসলিম অংশকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে। ক্ষমতার স্বার্থে এসব করতেই হয়। আবার তৃণমূল কিছু আদিবাসী নেতাকে দালালির কাজে নামিয়েছে, বীরভূম আদিবাসী গাঁওতার দুই নেতা প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন কয়লাখনি হবেই। এমনও হতে পারে তাদের সাহায্যে, তাদের নামে জমির কাগজপত্র তৈরি করে আদিবাসীরা জমি দিতে প্রস্তুত এরকম বয়ান খাড়া করা হবে। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে জমিদাতারা ক্ষতিপূরণের চেক নেবেন বলেও প্রশাসন সূত্রের খবর। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘প্রথম তালিকা থেকে ৪০ জন এবং দ্বিতীয় তালিকা থেকে ১০ জনকে বুধবার কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে চেক নেবেন। বুধবারই জেলায় কোথাও অনুষ্ঠান করে প্রশাসনের তরফে বাকিদের সেটা দেওয়া হবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, লক্ষ্য রাখা হচ্ছে, যারা কলকাতা যাচ্ছেন তাঁদের অর্ধেক যাতে আদিবাসী মহিলা হন। (সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৩শে ফেব্রুয়ারি, https://www.anandabazar.com/west-bengal/few-land-givers-of-deucha-pachami-accepted-the-package-proposed-by-state-government/cid/1330363) যদিও এই ফটোসেশনটি মার্চের ১৩ তারিখ অবধি হয়নি, আদিবাসী জোগাড় হয়নি হয়তো।

    ডেউচা-পাঁচামি (এবং হরিণ শিঙা দেওয়ানগঞ্জ)এ প্রস্তাবিত কয়লাখনি ও শিল্পস্থাপন এর বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি বিষয়কে পুনরায় উত্থাপন করেছে যা মূলধারার রাজনীতিতে, বিশেষতঃ নির্বাচন কেন্দ্রিক রাজনীতিতে প্রায় অনুল্লেখিত থাকে। সারদা-নারদা, হিন্দু-মুসলমান, তোষণ- দুর্নীতি, অনুদান, মেরুকরণ-হিংসা ইত্যাদি নিয়ে চিল-চিৎকারের আবহে সামাজিক উন্নয়নের মডেল ও পরিকল্পনা, জমির মালিকানার প্রশ্ন, পরিবেশ, প্রকৃত কর্মসংস্থান ও উচ্ছেদের প্রসঙ্গগুলি প্রায় অনুচ্চারিত– ইচ্ছাকৃত ভাবেই মূলধারার রাজনৈতিক দলেরা উক্ত প্রসঙ্গগুলি গুরুত্ব দেয় না। শাসকদলগুলির উন্নয়নের মডেলটি খুব চেনা; নির্বাচিত সরকার জমি, খনি, সরকারি সম্পদ, সরকারী ক্ষেত্রকে প্রাইভেট সেক্টরের (মাল্টিন্যাশানাল বা দেশীয় কর্পোরেট) জন্য তুলে দেবে, কখনো প্রকাশ্যে (যেমন নির্মলা সীতারমন কেন্দ্রে করছেন) কখনো ঘুরপথে – যেমন শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করছেন ডেউচায়, যেমনটি শ্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চেষ্টা করেছিলেন সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামে। এগুলিকেই উন্নয়নের দিশা, কর্মসংস্থানের পথ বলে সাধুবাদ দেবে বাণিজ্য সংস্থাগুলি, সাধুবাদ দেবে কর্পোরেট মিডিয়া - স্বপক্ষে হাজির করবে মুক্ত বাজারের, উন্মুক্ত বিনিয়োগের, ঊর্ধ্বমুখী জিডিপির যুক্তি। নিও-লিবারাল পুঁজিবাদ (যাকে অতীতে বামপন্থীরা সাম্রাজ্যবাদ বলত) বর্তমানে পৃথিবীর অর্থনৈতিক কাঠামো, সেই কাঠামো মেনে ভারতীয় শাসকশ্রেণি প্রতিটি প্রকল্প পরিকল্পনা করছে গত তিন দশক ধরে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যত্যয় নন। আবার তিনি আঞ্চলিক শাসক থেকে কেন্দ্রীয় চরিত্র হতে চান, কর্পোরেট প্রিয় হতে চান, তার হাতে খালি সঞ্জীব গোয়েঙ্কার মত ছোট শিল্পপতি রয়েছে, বড় মাছ ধরতে তাকে ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লা শিল্প, তাজপুরে জাহাজ শিল্পের জন্য বেসরকারি বিনিয়োগের পথ মসৃণ করতে হবে। আপাতত তার প্রধান মাথাব্যথা, অঙ্গীকারপত্রে সই করতে অসম্মত, কয়লাখনি বিরোধী, জল-জঙ্গল-জমিনের আদিবাসী মানুষ।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৬ মার্চ ২০২২ | ২৬৭৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন