খন্যান থেকে ইরান (দ্বিতীয় পর্ব)
বাস থামল শেষে পুরোপুরি। চাবাহার এসে পৌঁছেছে বাস। বাস যেখানে দাঁড়াল, সেখান থেকে কিছু দূর - তারপর উঁচু একটা জায়গা। উঠতে হবে ওখানে। ওখানে থাকার ঘর ওদের। পিঠে, কাঁধে, হাতে ব্যাগ-বাক্স। চার দিনের লম্বা জার্নির শেষ। ক্লান্ত শরীর। কিছুদূর উঠেই ঘরখানা। খুলে গেল দরজাটা। অবাক। এত বড় একটা ঘর! এই বিস্ময়কর বস্তুটির থেকে আরও কিছু বিস্ময়কর জিনিস যে অপেক্ষা করছে সেদিকে ওদের চোখ পড়েনি তখনও।
এ তো প্রায় পঞ্চাশ ফুট-বাই-একশ ফুট! খন্যানের আট-দশ ফুটের ঘর, ইন্দোরের বোম্বে বাজারের ঘুপচি ঘর ছেড়ে আসা মানুষটার থাকার জন্য এত বড় একটা জায়গা! ঢুকে পড়ল। ভেতরে আর ওরা এগারোজন নয় শুধু। প্রথমে এতসব নতুন কিছুর মধ্যে গুনে উঠতে পারেনি। পরে গুনে বুঝেছিল এক ঘরে তেত্রিশ-জন। তেত্রিশ-জনের একটা বাথরুম।
ভেতরে কিছু মুখের আদল অন্যরকম। ঠিক চেনা চেনা মুখের আদলের মতো নয়। ফর্সা টিকালো নাক। লম্বা। কারা এরা? ওই বেশি টিকালো নাকের পাঁচজন পাকিস্তানের। চাবাহারের কাছেই পাকিস্তান-ইরানের বর্ডার। পাকিস্তানের করাচি দিয়ে বর্ডার পেরিয়ে এসেছে ওরা। অন্য দু’জনকে আবার অন্যরকম দেখতে। তারা ফিলিপাইনের। তাছাড়া কেউ কেরালা, কেউ অন্ধ্র - আর বাদবাকি পশ্চিমবঙ্গের। সবাই সোনার কাজে এসেছে। এই ঘরে। এই কোম্পানিতে। এখন থেকে সবাই থাকবে একসঙ্গে। আর কাজ করবে ওয়ার্কশপে।
দাস ব্যবসা বোধয় অন্যতম আদিম ব্যবসা। মানুষ যবেথেকে সভ্য হয়েছে তবে থেকেই অপেক্ষাকৃত দুর্বল আরো কিছু মানুষকে দাস বানিয়ে বিজ্রি করতে শুরু করেছে। কোনও আইনই তাকে আটকাতে পারে না।
ভালো
ভালো