ফ্যাসিবাদী উত্থান প্রসঙ্গে আমাদের মাথায় রাখতেই হবে বহুবার উচ্চারিত কথাগুলি, যেমন ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট কালপর্বে হিটলার-মুসোলিনি-ফ্রাঙ্কো-তোজোর উত্থান হয়েছিলো। পুঁজিবাদ যখন সংকটে পড়ে, তখন সে কম সময়ের জন্য হলেও একটি উগ্র ডানপন্থী মতাদর্শকে হাজির করে, যাকে আমরা ফ্যাসিবাদ নামে চিনি। এখন বেশ কিছু তাত্ত্বিক এমনও বলে থাকেন, শ্রমজীবী মানুষের তীব্র গণরাজনৈতিক আন্দোলন যখন মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে তখন তা যেন বামপন্থী বিপ্লবের পথ না ধরে, তাই ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়। জনগণের সামনে, সকলের কাজের অধিকারের সমাধানকে, সুচিন্তিত ভাবে পর্যবসিত করা হয় জাতিঘৃণায়, একটি অপর নির্মাণ করে, তাকে বিতাড়নের মাধ্যমে সব অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হবে বলে বর্ণনা করা হয়। যেমন জার্মানির সকল সমস্যার মূলে ইহুদিরা, তা খুব গভীরে প্রোথিত করা গিয়েছিলো, এবং ইহুদি নিধনের মাধ্যমেই যে সকল সমস্যার সমাধান এই লাইনটি জনপ্রিয় করা গিয়েছিলো। এখন সারা বিশ্ব জুড়ে বহু জায়গায়, যেমন ব্রাজিলের বলসোনারো, আমেরিকার ট্রাম্প, ব্রিটেনের জনসন বা ভারতের মোদী, এদের উত্থান হচ্ছে, একে অনেকেই ফ্যাসিবাদের উত্থান বলে অভিহিত করছেন। আসলে বিগত ২০ বছরে লিবারাল রাষ্ট্র মানুষের অধিকার সুরক্ষিত করতে পারেনি, সারা বিশ্ব জুড়েই সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রথম অভিযান পরাজিত, সেখানে মানুষের নতুন আদর্শের এবং ব্যবস্থার প্রতি আকাঙ্ক্ষাকেই পরিপূর্ণ করছে ফ্যাসিবাদ, এ কথা অবশ্যই স্বীকার করে নিতে হবে। পুঁজিপতিদের লাগামহীন সমর্থন, বিশ্বব্যাপী মিডিয়ার অপপ্রচার, ডেটা ম্যানুফ্যাকচার সব ধরে নিলেও এই ফ্যাসিবাদী রাজনীতির পক্ষে বুঝে না বুঝে এক বিপুল সংখ্যক মানুষ আছেন। আমেরিকায় ট্রাম্প হেরে গেলেও, তিনি সেখানে ভোটের শতকরা হিসেবে খুব পিছিয়ে ছিলেন না। তারপর হাউজ দখলের কর্মসূচিতেও ব্যাপক পরিমাণ হ্যাভনট আমেরিকান অস্ত্র হাতে ট্রাম্পের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।
পিকেটি দেখাচ্ছেন ১৯২০’তে অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং সমাজের উপর তলায় বিপুল সম্পত্তি জমায়েতের কারণে ফ্যাসিবাদের উত্থান অবশম্ভাবী হয়ে উঠেছিলো, সেই সমস্যা সমাধিত হয় দুটি বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে। তারপর ৩০ বছর দেশে দেশে কল্যাণকামী ধরনের সরকার গঠন হয়েছে, অর্থনৈতিক বৈষম্যে একটা দূর পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণেও ছিলো। আবার ৭০ পরবর্তীতে এই বৈষম্য বাড়তে শুরু করেছে, ২০১০-এ এসে সেটা চরম মাত্রা ছুঁয়েছে, এবং সেই কাল পর্ব থেকেই দেখবো দেশে দেশে এক ধরনের অতিদক্ষিণপন্থী ঝোঁক তৈরি হচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা বিচার করবো পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির উত্থানকে। এই অর্থনৈতিক কারণ ব্যতিরেকেও ফ্যাসিবাদী যাত্রাপথ কাভাবে এতোটা সুগম হলো, তা বুঝবার চেষ্টা করছি।
কর্তৃত্বের পক্ষে মনোভাব
করোনা আবহে আমরা দেখতে পাবো, নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে আহ্বান দিলেন করোনা ভাইরাস আটকাতে থালা বাজাতে, হাততালি দিতে, একদিন সন্ধ্যায় ঘোষণা করে দিলেন কাল থেকে লক ডাউন, আমরা দেখলাম সকল মানুষ কম বেশি ঘরে ঢুকে গেলেন, আসলে এর মধ্যে দিয়ে কর্তৃত্বের নির্দেশ পালনের মনোভাব কতটা গভীর সেটা বোঝা যায়। আমরা যখন বড়ো হচ্ছি তখন আমাদের পরিবারের মধ্যে, যখন স্কুলে যাচ্ছি, অফিস করছি, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে অংশ নিচ্ছি, কম বেশি সব জায়গাতেই প্রশ্নহীন আনুগত্যের বিষয়টি এখনো প্রবল। বাড়িতে আমরা মূলত বাবার বিরুদ্ধে কথা বলি না, স্কুলে মাস্টারকে প্রশ্ন করিনা, মোদ্দায় মনে করি, এঁরা আমাদের ভালোর জন্যই শাসন করছেন। এটি প্রতিটি স্তরে আছে। ফলে আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রী যা বলছেন তা মঙ্গলের জন্যই বলছেন, এমন মনোভঙ্গি থাকতে বাধ্য। সম্প্রতি আমি গিয়েছিলাম কোচবিহারে। সেখানে দীর্ঘদিনব্যাপী রাজতন্ত্র ছিল, এমনকী ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে কোচবিহারের মানুষ ব্যাপক মাত্রায় অংশ গ্রহণ করেননি, ওখানে এই রাজার (আজকের শাসক) প্রতি আনুগত্যের ভাব অন্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি। আবার যখন পাঞ্জাব আন্দোলনে যাই, যখন দেখি লাল কিল্লায় তারা নিশান সাহিবের পতাকা তোলে, সে নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে জানতে পারি, এই লাল কিল্লায় পাঞ্জাবের পতাকা উত্তোলন এই প্রথম নয়, মুঘল আমলে বহুবার সংঘর্ষে পাঞ্জাব দিল্লিতে পতাকা তুলেছে। লড়তে লড়তে একটা জাতির মানসিক গঠন একভাবে নির্মিত হয়। ৩৫ বছর এই রাজ্যে তথাকথিত বাম শাসন ছিলো, যেখানে বড় মাত্রায় সমাজের প্রায় প্রতিটি বর্গের মানুষ কোন না কোন ভাবে পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলো। রাজনৈতিক ভাবে কী হয়েছে, সে আলোচনা স্বতন্ত্র, কিন্তু আসলে গোটা সমাজ জুড়ে কোন দর্শন চারিয়ে গেছে তার দিকে নজর দিতে হবে। পার্টির সমর্থক পার্টির লোকাল কমিটির বিরুদ্ধে কথা বলতে পারবে না, পার্টির লোকাল জোনালের বিরুদ্ধে, জোনাল জেলার বিরুদ্ধে, জেলা কমিটি রাজ্য কমিটির বিরুদ্ধে, রাজ্য কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটি এবং কেন্দ্রীয় কমিটি পলিটব্যুরোর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে পারবে না। পলিটব্যুরো যা ঠিক করছেন তা স্তরে স্তরে পালন করার নির্দেশ আসছে, এর মধ্যে দিয়ে ‘কেন্দ্র’র প্রতি আনুগত্য এবং নির্ভরশীলতা তৈরি হয়, সেই সমাজে সব থেকে যা শক্তিশালী হয়, তা ফ্যাসিবাদী মনোভাব। এই মনোভাবের চাষ হতে হতেই এই পলিটব্যুরো পর্যবসিত হয় ফ্যুয়েরারে, ওখানে আপনি পলিটব্যুরোর বিরুদ্ধে কথা বলতে পারতেন না, এখানে সুপ্রিম নেতার বিরুদ্ধে আপনি আওয়াজ তুলতে পারেন না, আসলে এই সিস্টেমের জন্ম দিয়ে চলে আমাদের মধ্যে থাকা প্রশ্ন না করার মনোভাব। পরবর্তীতেও পরিবর্তন এসেছে ঠিকই, কিন্তু একধরনের ব্যক্তিকেন্দ্রিক দলের হাতে সরকার থাকায়, সেই মনোভাবের পালে হাওয়া বেড়েছে বৈ কমেনি, সবই আজকাল ‘অনুপ্রেরণা’র অংশ।
ভারতীয় সংবিধান নির্মাতারা যেটুকু অধিকার সুরক্ষিত করেছেন, তা যদিও সবটুকু নয়, তবু সেটুকুও রক্ষিত হয় না, লঙ্ঘিত হলেও মানুষের কিছু যায় আসেনা, কারণ নিম্নবর্গীয় সচেতন মানুষের আন্দোলনের চাপে তা নির্মিত হয়নি। কিছু বুদ্ধিজীবী তাঁদের মতন করে সংবিধান রচনা করেছেন, কিছু কিছু অধিকার সুরক্ষিত করেছেন, কিন্তু তা যেহেতু উপর থেকে চাপানো, ফলে কার্যকর হয়নি।
সাংস্কৃতিক শূন্যতা
ফ্যাসিবাদের যেমন কতকগুলি অর্থনৈতিক কার্যক্রম থাকে, তেমনি থাকে কতকগুলি সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, যেমন ভারতে ফ্যাসিবাদ সকল মানুষের উপর হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুত্ব চাপাতে চায়, তারা মনে করে এটিই সব থেকে শ্রেষ্ঠ মতাদর্শ। প্রশ্ন হলো এই মতাদর্শ নির্মাণ হয় কীভাবে বা কী করে এর পক্ষে এতো মানুষ দুহাত তুলে সমর্থন জানান? কয়েকটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। উত্তর বাংলায় এক বিখ্যাত লোকজ দেবতা হলেন মাসান, এ দেবতার বাস জলের ধারে ধারে, কথিত আছে, কেউ যদি চুনো মাছ ধরেন বা জলাশয়ের ক্ষতি করেন তবে তাঁকে মাসানে ধরে। নদী নালা বেশি হওয়ায় ওখানে বহু বিচিত্র রকমের মাছ পাওয়া যায়, এবং এই ২০২১ সালে দাঁড়িয়েও জানা যায়, ওখানে মাছ ধরবার ৫০ রকমের দেশিয় উপকরণ আছে, তাতে মা-মাছ রক্ষা পায়, যাদের পেটে ডিম থাকে, ছোট মাছ রক্ষা পায়। আসলে জেলে মাঝিদের মধ্যে এই রীতির প্রচলন সুপ্রাচীন, বোঝা যায় সেখান থেকেই এই মাসানের জন্ম। এর সঙ্গে ঠিক প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মকে এক করা যায় না, ওই অঞ্চলের আদিবাসী হিন্দু মুসলমান সকলেই মাসানকে মানেন। এবারে উত্তরবঙ্গ গিয়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতা হলো, মাঠের আল দিয়ে চলেছি, সামনেই এক সাঁকোর ধারে মাসানের থান, তার ঠিক পাশেই বিকালে তিন সই গল্প করছে, তাদের জিজ্ঞাসা করলাম, তোমরা কোথায় পড়াশুনা করছো, জানতে পারলাম, তারা মাথাভাঙ্গা কলেজের ছাত্রী, তাদের মাসানের কথা জিজ্ঞাসা করায় তারা বলল বাড়ির বড়’দের জিজ্ঞাসা করতে হবে। এখানেই সাংস্কৃতিক শূন্যতা টের পাওয়া যায়।
ওখানে গিয়েই শুনেছিলাম সাহেব ঠাকুরের কথা, নামটা লক্ষ করুন- তিনি বেশভূষায় মুসলমান, মাথায় ফেজ টুপি, পরনে ফতুয়া আর লুঙ্গি, ভাবলে অবাক হতে হবে যে ওই অঞ্চলের সব হিন্দু পূজা পার্বণে প্রথমে সাহেব ঠাকুরকে তিনবার সালাম জানিয়ে সব কাজ শুরু করে।
যদি বাংলার মধ্যভাগে আসা যায়, দেখা যাবে জঙ্গল মহল, বাঁকুড়া, পুরুলিয়াতে আদিবাসীদের বাস, সেখানে বহু গ্রামে আজ পুরুষ-মহিলারা দুর্গা উৎসবে ডিজে বাজিয়ে নাচছেন। এদিকে লোকগাথায় আদিবাসীরা হলেন মহিষাসুর বা অসুরের বংশ আপনি যদি ঝাড়খণ্ড ছত্তিসগড় চলে যান, দেখবেন, সেখানকার বাসিন্দাদাদের সঙ্গে দুর্গা পূজার বিরোধ নেই, কিন্তু তাঁরা মনে করেন আদিবাসী সমাজের বীর যোদ্ধা ছিলেন অসুর, সুর-অসুর বা আর্য-অনার্য যেভাবেই আখ্যায়িত করুন, তাঁরা মনে করেন অনার্য বা অসুর সম্প্রদায়ের বীর সন্তানকে হত্যা করা হয়েছিলো, তিনি শহিদ, ফলে তাঁরা ওই চার দিন অরন্ধন করেন। এখানে দেখা যাবে একটি ‘অন্য’ সংস্কৃতির রেশ, যার লেশমাত্র বেশিরভাগ পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী গ্রামে দেখা যাবে না।
মনে রাখা দরকার এই লোকজ সংস্কৃতিগুলি জন্ম নেয় স্থান বিশেষে, তার একটি অঞ্চলগত ইতিহাস থাকে, ফলে সে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মীয় আবেগের উপরে উঠতে পারে, সমগ্র জনগোষ্ঠীটি তাতে শামিল হয়। বিগত কুড়ি বছর ধরেই এই সংস্কৃতিগুলি কমে আসায় জোরালো হচ্ছে বাংলায় বজরংবলীর মন্দির, গণপতি বাপ্পা পূজা এবং জয় শ্রী রাম স্লোগান। বিগত কুড়ি বছর ধরে, বিশেষ করে কলকাতা তথা বঙ্গে জনপ্রিয় হয়েছে বলিউড ফলে আমাদের মধ্যে প্রোথিত হয়েছে হিন্দি সংস্কৃতি, আমাদের এখানের প্রগতিশীল সরকার, প্রগতিশীল বহু নকশালপন্থী দল, গণতান্ত্রিক সংগঠন, পত্রিকা গোষ্ঠী, কোনদিনই এই লোকজ সংস্কৃতিগুলি সম্পর্কে তলিয়ে ভাবেনি, মানুষকে উন্নত সংস্কৃতি দিতে তো পারেইনি, উপরুন্তু প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের সাথে এগুলিকে মিলিয়ে ফেলে সামগ্রিক বিরোধ তৈরি করেছে, ফলে নতুন সংস্কৃতির জন্ম হয়নি, যেটা হয়েছে, মানুষ তার শিকড়কে ভুলেছে, কনফিউজড বাম সরকার বা দল, দুর্গা পূজায় কমিউনিস্ট বুক স্টল দিয়েছে, সেখানে যেমন ইচ্ছা রামায়ণ-মহাভারত-মহালয়ার পাঠ-বয়ান চলেছে, মধুসূদন দত্তের একটি মাত্র মেঘনাদ বধ কাব্য বাদ দিলে কোনো দিনই ভেবে দেখতে বলা হয়নি, রাম-লক্ষণ, শূর্পনখার সঙ্গে বা ভীম ঘটোৎকচ-হিড়িম্বার সঙ্গে যেটা করলেন তা কার্যত আদ্যন্ত নারী এবং আদিবাসী-অনার্য বিদ্বেষ। তাঁদের অংশিদারিত্ব বা সম্মান না-দেওয়া। একটি জনজাতি যখন তার নিজস্ব ইতিহাস সম্পূর্ণ বিস্মৃত হয়, তখনই সে নিপীড়নের ইতিহাসকে মহিমান্বিত করতে পারে। এর বিস্তারিত তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা এডোয়ার্ড সাইদ তাঁর ওরিয়েন্টালিজম গ্রন্থে দিচ্ছেন।
আমরা এটা কখনই দক্ষিণ ভারতের ক্ষেত্রে দেখতে পাবো না, লক্ষ কোটি টাকা খরচ করেও বিজেপি আরএসএস মোদ্দায় তামিল জনগোষ্ঠীকে তাদের দিকে আনতে পারছে না, কারণ তাঁরা তাঁদের ইতিহাস চেতনা, ভাষা ভুলে যাননি, তাঁরা নির্লজ্জের মতো বলিউডের নকলনবিশি করেনি, ভেগানিজমের লজিক দেখিয়ে সেখানে জালিকাট্টু বন্ধ করানো যাচ্ছে না, সেখানে অর্ণব গোস্বামীর মতো পেয়াদা নামিয়ে এক লহমায় হিন্দু-মুসলমান বিভাজন করা যাচ্ছে না, কারণ তারা পুছতা হ্যাঁয় ভারত দেখবে না, কর্তৃত্ববাদী ভারত রাষ্ট্রের আইডিয়ার সঙ্গেই তাঁদের মৌলিক বিরোধ আছে, তাই ওই অঞ্চলে ফ্যাসিবাদী রথ বারেবারে লাট খাচ্ছে।
যেখানে যেখানে লোকজ সংস্কৃতি ভাষা ইতিহাস মানুষ ভুলবে সেখানে সেখানেই এই ফ্যাসিবাদী সংস্কৃতি ডিম পাড়বে, আস্তে আস্তে সেই ডিম দৈত্যের রূপ নেবে, যেখানে পঞ্চানন বর্মা ব্রাহ্মণ্যবাদী শোষণের বিরুদ্ধ্বে রাজবংশী ভূমি পুত্রদের ৬ গ্রন্থি পৈতা শরীরে তুলে দিয়ে লড়াইয়ে আনছেন (সেই আন্দোলন আজ সমর্থন করবো কিনা, তা স্বতন্ত্র প্রশ্ন), তা সম্পূর্ণ বিস্মৃত না হলে কোনো ভাবেই রাজবংশীদের আত্মীকরণ করা সম্ভব নয়। তেমন ভাবেই আদিবাসী মতুয়াদেরও নিজস্ব ইতিহাস আছে, বছরের পর বছর খ্রিস্টান মিশনারিরা ছত্তিসগড় ঝাড়খণ্ডে এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বাংলার আদিবাসীদের ঘরে ঘরে গিয়ে ছলে বলে তাদের ধর্মান্তরিত করেছে, তারা সামগ্রিকভাবেই তাদের প্রকৃতি উপাসনা ভুলেছে, তাদের মধ্যেও গেড়ে বসেছে হিন্দি-হিন্দু আইকন।
কেবল বিজেপিকে ভোটে হারিয়ে, বা আমাদের অসাম্প্রদায়িক বাংলা গড়তে হবে, এমন শুষ্ক ডাক দিয়ে এসব রোখা যাবে না।
রঞ্জনবাবু, মনুর চাট্টি চুনিন্দা বাণী দিয়ে দোবো নাকি এখেনে? আর বিবুরও? জমে ক্ষীর হয়ে যাবে মাইরি!
@এলেবেলে
দিন দিন।
আজ মেজর রিলিজ আছে। রাত জাগতে হবে। আমি রাতের খাওয়া সেরে কড়া কালো কফি নিয়ে বসব।
@elebele অবশ্যই দিন
মেজর রিলিজ মানে?
রঞ্জনবাবু, দ-দি ও রমিত অত্যন্ত লজ্জিত। আমি এখন পুরুলিয়ার পথে। ফিরে এসে দেব, কথা দিলাম।
কি পিটি, কে গালাগাল দেয় খুঁজছিলেন না? ধৈজ্জ ধরে বসুন।