মাথার মধ্যে নি:শব্দে ডানা ঝাপটায় পরিযায়ী স্মৃতির ঝাঁক।
যেখানে স্নেহ মানে কাঁসার থালায় উষ্ণ সাদা ভাতে একটু ঘি, বাটিভরা লাল পায়েস, নারকেলের সাদা তক্তি।স্বপ্ন মানে আকাশে প্রাচীন শেড ট্রি র প্রশাখা বিস্তার আর দিগন্ত মানে বুকে ধ্বস চেপে রাখা নীল ভুটান পাহাড় !
ময়মনসিংহ রাজবাড়ির নায়েবমশায়ের মেয়ে, যাঁরা আবার নিজেরাও জমিদার, তাই সেযুগের রক্ষণশীল আবহে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হয়নি কখনো, কিন্তু তাতে থেমে থাকেনি শিক্ষাগ্রহণ !
গৃহশিক্ষকরা এসে বালিকাকে পড়িয়ে যেতেন বিভিন্ন বিষয়, তার মধ্যে ইংরেজি আর ক্রুশের কাজ শেখানোর জন্য মেমসাহেব যেমন ছিলেন, তেমনই ছিলেন, কী আশ্চর্য, ফার্সি পড়াতে আসা মৌলভী সাহেব আর উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিক্ষার জন্য উস্তাদজিও !
আর বিয়ের পর এর সঙ্গে যুক্ত হল নিয়মিত সংস্কৃত শাস্ত্রপাঠ, পিতৃপ্রতিম শ্বশুরমশাইয়ের কাছে ।
প্রথাগত স্কুলশিক্ষায় বঞ্চিত সেই মেয়েটির কাছ থেকে পাওয়া যাবতীয় হলদে পোস্টকার্ডে আর নীল ইনল্যান্ডে প্ৰথাভাঙা আশ্চর্য আধুনিক বাংলা বাক্যগঠনে মুগ্ধ হয়েছি বেড়ে ওঠার সারা বেলা !
শান্তিসুধা মৈত্র !
আমার গার্লফ্রেন্ড !
আমার দিদা !
আজ চলে যাবার দিন।
তিরিশ বছর হয়ে গেল!