ধর্ম হলো যা মানুষ কে ধারণ করে !
সেদিক থেকে দেখতে গেলে শুধু কমিউনিজম নয়, আজকের পৃথিবীর সব কটা রাজনৈতিক দলই এক একটা ধর্ম !
গোষ্ঠীবদ্ধতা মানুষের একটা আদিম প্রবৃত্তি ! দেশে-বিদেশে আজ কি সংখ্যাগুরু, কি সংখ্যালঘু সকলেই কৌমমানসিকতায় আক্ৰান্ত !
ভুল হলো !
আজ নয়, এটা আবহমান অসুখ !
এই গোষ্ঠীবদ্ধতা মানুষের একটা আদিম প্রবৃত্তি !
আমার রাজা ভালো,
তোমার রাজা খারাপ,
আমার দল শ্রেষ্ঠ,
তোমার দল নিকৃষ্ট,
আমার ধর্ম সেরা,
তোমার ধর্ম হেরো,
আমার বস বেস্ট,
তোমার বস ওঁচা,
এই ধরণের মাই ড্যাডি স্ট্রংগেস্ট মার্কা চিন্তাধারাই মানুষকে কোনো বিশেষ ধর্মমত বা রাজনৈতিক মতে আকৃষ্ট করে।
ধর্মান্ধ করে !
এবং সাম্প্রদায়িক !
সারা পৃথিবী জুড়েই একটা উন্মাদ মেরুকরণ।
হয় দেশভক্ত নয় দেশদ্রোহী , হয় নমো নয় রাগা, হয় তিনু নয় নাকু, হয় মাকু নয় চাড্ডি, হয় লিবটার্ড অথবা কান্টসার্ভেটিভ !
সাম্প্রদায়িকতা কিন্তু শুধু হিন্দু -মুসলমানে সীমাবদ্ধ নয় !
সিপিএম-বিজেপি, কংগ্রেস-তৃণমূল বা ইস্ট-মোহন ,ভারত-পাকিস্তান, বার্সিলোনা-রিয়েল মাদ্রিদ বা পান্ডব-কৌরব, হামাস-মোসাদ...এই সবই সেই কৌম মানসিকতার প্রতিফলন !
এই সবই এক এক ধরণের সাম্প্রদায়িকতা !
তাহলে কি ঈশ্বরবোধ আর মানসিক বদ্ধতা সমার্থক ?
তাই যদি হয় তবে 'আত্মানং বিদ্ধি’ এবং সর্বং খল্বিদং ব্রহ্ম তজ্জ্বলানিতি’ এই কথাগুলো আবার একশো কুড়ি বছর আগে এক তরুণ সন্ন্যাসী সহজ কথায় বুঝিয়ে গেছেন, বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা তুমি খুঁজিছ ঈশ্বর!'
সেটাও কি ঈশ্বরবোধ নয়?
ধর্মচেতনা কি মানুষকে সংকীর্ণ করে?
কিন্তু সেই তরুণ সন্ন্যাসীর গুরু উচ্চারণ করেছিলেন, সরল অথচ বৈপ্লবিক একটি কথা, যত মত তত পথ!
সেটা কি ধর্মচেতনা নয়?
সেই উচ্চারণে তো কোনো গোঁড়ামি নেই !
সমস্যাটা হল ব্যক্তিগত ঈশ্বরচেতনা আর ধর্মাধর্মবোধ যখন ব্যক্তি ছাড়িয়ে সমষ্টিতে পৌঁছায়!
মানুষের বানানো অর্গানাইজড ধর্মগুলি আসলে প্রাথমিকভাবে কিন্তু রাজনৈতিক দলই!
মুশকিল হলো, এই অন্ধত্ব, এই গোঁড়ামি কিন্তু সব অর্গানাইজড ধর্মের মূলকথা !
আমরাই সেরা !
অন্য সবাই খারাপ !
মক্কা-মদিনা-শবরীমালা শুধু নয়, ভ্যাটিকানও তাই বলে !
যেমন, গীতার (১৮/৬৬) মূল বক্তব্যে না গিয়েও বলতে পারি, মনুষ্যসৃষ্ট সব ধর্মেরই মূল কথা হল—
সর্বধর্মান্ পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ!
আমাদেরটাই সেরা, অতএব আমাদের শরণে এসো!
কুরআনেও তাই !
-আল্লাহ্র পথে লড়াই কর এবং জেনে রাখ, নি:সন্দেহে আল্লাহ্ সবকিছু জানেন, সবকিছু শুনেন।- ২-২৪৪
-অতএব যারা কাফের হয়েছে, তাদেরকে আমি কঠিন শাস্তি দেবো দুনিয়াতে এবং আখেরাতে-তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।- ৩-৫৬
-খুব শীঘ্রই আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করবো। কারণ, ওরা আল্লাহ্র সাথে অংশীদার সাব্যস্ত করে যে সম্পর্কে কোন সনদ অবতীর্ণ করা হয়নি। আর ওদের ঠিকানা হলো দোযখের আগুন। বস্তুত: জালেমদের ঠিকানা অত্যন্ত নিকৃষ্ট।-৩-১৫১
-কাজেই আল্লাহর কাছে যারা পার্থিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয় তাদের জেহাদ করাই কর্তব্য। বস্তুত: যারা আল্লাহ্র রাহে লড়াই করে এবং অত:পর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদেরকে মহাপুর্ণ্য দান করব।- ৪-৭৪
-আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ভ্রান্তি শেষ হয়ে যায়; এবং আল্লাহ্র সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তারপর যদি তারা বিরত হয়ে যায়, তবে আল্লাহ্ তাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করেন।-৮-৩৯
-সুতরাং যদি কখনো তুমি তাদেরকে যুদ্ধে পেয়ে যাও, তবে তাদের এমন শাস্তি দাও, যেন তাদের উত্তরসূরিরা তাই দেখে পালিয়ে যায়; তাদেরও যেন শিক্ষা হয়।- ৮-৫৭
-আর কাফেররা যেন একা যা মনে না করে যে, তারা বেঁচে গেছে; কখনও এরা আমাকে পরিশ্রান্ত করতে পারবে না।-৮-৫৯
বাইবেলের পাতায় দেখি,
2 John 1:9-11
Everyone who goes on ahead and does not abide in the teaching of Christ, does not have God. If anyone comes to you and does not bring this teaching, do not receive him into your house or give him any greeting, for whoever greets him takes part in his wicked works.
2 Corinthians 6:14
Do not be unequally yoked with unbelievers. For what partnership has righteousness with lawlessness? Or what fellowship has light with darkness
2 Chronicles 15:12-13
And they entered into a covenant to seek the Lord, the God of their fathers, with all their heart and with all their soul, but that whoever would not seek the Lord, the God of Israel, should be put to death, whether young or old, man or woman
একেবারে আদিম রাজনৈতিক প্রচারের মূলকথা!
ধর্মান্ধতা একটি মস্তিষ্কের অসুখ। স্নায়ুবৈকল্য।
সম্প্রতি ডাক্তারি গবেষণাতেও শীলমোহর পড়েছে এই ধারণায়
ডাক্তারি জার্নাল Neuropsychologia-র Volume 100, June 2017, পৃষ্ঠা ১৮-২৫।
এইবার প্রমাণিত হল ধর্মান্ধতা মস্তিষ্কের একটি অসুখ।
আমরা যতই চোখ কান বন্ধ করে রাখি আর কিন্তু চেপে রাখা যাবে না এই খবর !
মূল বক্তব্যের সঙ্গে একমত।
একদম
সম্পূর্ণ রাবিশ একটা লেখা; যা আদ্যন্ত রাজনৈতিক সমস্যা, তাকে মনস্তত্ত্বের স্তরে দেখার কোনো অর্থই হয়না। হতে পারে মূল স্টাডিতে কিছু নুয়ান্স আছে, লাইনের লোক নই, ফলে পেপার পড়ে দেখা সম্ভব নয়, কিন্তু এই লেখায় যেরকম গোদাভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে, সেটা বাজে পপসায়েন্স ট্রেন্ড।
sciencedirectএর লগইনটা শেয়ার করুন, নইলে পেপার দেওয়ার কোন মানে নেই। ওটা না পড়েই একমত হবার মত মানসিক অসুখ আমার নেই।:)
Ri, পুরো পেপারটা এখানে পাবেনঃ
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC5500821/?_escaped_fragment_=po=0.757576
এমনিতে ধর্মান্ধতা জিনিসটা তো খারাপ বটেই, অন্তত আমার তাই মনে হয়।
তবে এই পেপারটার বেসিসে "ধর্মান্ধতা মস্তিষ্কের একটি অসুখ", এরকম অ্যাসার্শান করা যাবে কি? সেরকম মনে হলো না। বরং পেপারটা পড়ে মনে হলো অ্যাসোশিয়েশানের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, ক্জালিটির ওপর না :-) লাস্ট লাইনটা পড়ে দেখুনঃ
In summary, we found that adherence to fundamentalist religious doctrine is partly mediated by diminished flexible conceptual thinking and reduced openness and that the key cortical region supporting the representation of diverse religious belief as well as flexible conceptual thinking is the dlPFC.
আমি ধর্মান্ধতা নিয়ে লিখেছি ।
ধর্ম নিয়ে নয় ।
ধর্ম যতক্ষণ একটা নিভৃত, ব্যক্তিগত, অসহায়-অবলম্বন ততক্ষণ সেটা মানবিক। সেটা দোষণীয় নয় !
কিন্তু ধর্ম যখন অর্গানাইজড রিলিজিয়ন তখন সেটা ভ্রাতৃঘাতী, রাজনৈতিক অস্ত্র মাত্র !
একেবারে সহমত।
ধর্মও আর বাকি সব কিছুর মত একটা অবলম্বন চায় তো- নিভৃত ব্যক্তিগত রা মিলেমিশে একটা সমধর্মী দল খুলে বসে, এর অন্যথা হয় না তেমন:-(