তারপর হইলো কী, সকল গুহ্যকথা ফাঁস হইয়া গেলো!
কিমতি রে বাপৈ?
কিঁউ কি, মেরে হাঁথ মে স্মার্টফোন হ্যায় রে বস্। একঠো খিঁচিক। ব্যস।
চল মেরে বুলবুল। চল, খাপ-টো বসাই!
খাপ।
বিপদজনক এক ফাঁদ। বুবিট্র্যাপ। স্ক্রিনশট স্ক্রিনশট আর স্ক্রিনশট তন্তুতে এর ঘোরঘোরেলিয়া জালবিন্যাসের বুনন চলে। একটু ভুলভাল, মানে, আপনার মতে ভুলভাল আর কী---
'ভুল-বেফাঁস' মন্তব্য পেলেন, অমনি বস্ আপনি গোষ্ঠমামা হয়ে খাপ পেতে ফেললেন।
আর, অমনি,
আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে!
রোদ্দূরকে নিয়ে খাপ বসেছিলো। উরে বাপরে বাপ! কী মহান খাপ! সব রোবিন্দপেমিরা জটলা পাকায়ে ফেল্লেন। ওঁয়ারা আবার বিশুদ্ধপন্থী মহাসাত্ত্বিক। একেবারে তামা-তুলসি ভার্চুয়ালি ছুঁয়ে ওঁয়ারা শ্লীলতা বজায়ের যুদ্ধে নেমেছেন। কিন্তু খাপ তো, না?
ফলত, কার্যকালে খাপ-পাতিয়ের মোসায়েবদের পশ্চাদ্দেশের কাপড় সরে গেল, ঘোমটা খসে গেলো। ভয়ঙ্কর রোবিন্দপেমী শ্লীলতার ধ্বজাধারীগণ রোদ্দূরকে প্রলয়ঙ্কর অশ্লীল গালাগালে ধুইয়ে দিতে লাগলেন।
এখন খাপ-পাতা গোষ্ঠমামা, সাধারণত খাপটি পেতেই সরে যান। দোহারকির দল হুণ না না না ধিন তা না না করতে করতে আসেন। আসেন আমোদগেঁড়ে বালবাচ্চা, এবং ইনোসেন্ট ন্যাকাচণ্ডীর দল, যাদের কাজই হলো 'ইসসস', 'এববাবাআ', 'ছিঃ' ইত্যাদি কপচিয়ে খাপকে ক্রমাগত ফুটেজ খিলিয়ে যাওয়া।
রোদ্দূরের ক্ষেত্রে প্রথমদিকে খাপটা আদৌ খাপ ছিল না। ভদ্রলোক আপন মনেই গাইতেন। খুবই বিদঘুটে। বলতে কী, মশাই, আমিও হেসে গড়িয়েছি। তখন রোদ্দূরের কমেন্টবক্স ছিল হাস্যরসের ভাণ্ডবিশেষ।
"দাদা কি দাঁত মাজেন না?"
"বাবা, আলজিভ পজ্জন্ত দেখা যাচ্ছে!"
"তোর আর গেঞ্জি নেই, বাঁড়া?"
এইসব ফাজলামি, মস্করাতেই রবিপ্রাপ্ত রোদ্দূরে আয়েসী গা-এলানো বিলাস।
আমার পরান যাহা চায়, চরণ ধরিতে দিও গো আমারে---
বিকট উৎকট--
কিন্তু বাঙালি দিব্যি রস নিচ্ছিলো। যারা যতো বেশি নাক কুঁচকাচ্ছিল, বলতে নেই, তাঁরা তত বেশিই রসে সিলিপ কাটছিলো।
কিন্তু রবীন্দ্রভারতীর হোলি হ্যায়-পর্বে গোষ্ঠমামাদের গোষ্ঠলীলার সুবিধে হয়ে গেলো। বালিকারা উন্মুক্ত পিঠে উন্মক্ত আবেগে চাঁদ ওঠালেন।
মোকসা গুরুদেব গগনে চন্দ্রোদয়ের আবেগ আতিশয্যে একটি 'বাঁড়া' যোগ করে দিলেন, এবং বালিকারা 'গগন', 'চাঁদ'-এর মতো মহামোনোপলিয় রাবিন্দিক শব্দে সোল্লাসে অপভাষাটিকে আক্ষরিক পৃষ্ঠপোষক করলেন।
উরি মা রে! বাঙালি এইসান চেতিয়ে উঠলো, যে ভার্চুয়াল খাপ বসিয়েই ক্ষ্যান্ত দিলো না। সই সংগ্রহ, সমর্থনে সভা, সভার সমর্থনে ভার্চুয়াল সভা, মায় একদল মাস্টারমশাই থানার সামনে রোদ্দূরের গ্রেপ্তারের দাবিতে ইস্কুল টিস্কুল শিকেয় তুলে বসে পড়লেন।
পরে অবিশ্যি খোঁজ নিয়ে জানা গেল, রাবিন্দিকগন চাঁদ গগনে ওঠার আগে যে ফুলডোরে দোলনায় দোলার একটা কলি ছিল, সেটা মোটে জানতেন না। ফলে এইটেও তাঁদের অজানাই রইলো, জনগন বহু আগেই আবেগ দিয়ে "সেদিন দুজনে হেগেছিনু বনে----- হয়ে ছুচাবার জল পেলুনা"-তে স্বকীয়তা দেখিয়ে ফেলেছে। খাপ কালচার এমন নাদুসটি হয় নি বলে সেকালে সইসাবুদীয় এপিসোড ঘটেই উঠতে পারেনি।
তারপর কী হইতে কী হইয়া গেল, করোনা ধামাকায় ওই খাপটি মুহ্যমান হইয়া মরিয়া ঝরিয়া গেলো। রোদ্দূর আরো খরতর। কিন্তু খাপারুরা লাতন খাইয়া গেছেন।
সাম্প্রতিক খাপ বিতর্কের শীর্ষে উঠে এসেছেন 'অংশুমান কর'। বেশ কয়েকটি অডিও খাপুড়ে কল্যাণে ভাইরাল হয়েছে। কারুকাজ খচিত অডিও অংশুমান-চিত্র সহযোগে ভিডিও হয়ে মশাই, তুমুল বিকিয়েছে।
নাহ্। সেসবে অংশুমান আর কোথায়! একটা বহুল প্রচারিত অডিওয় ভদ্রলোককে একটু গাঁইগুঁই করতে শুনলাম বটে, কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশটও দেখলাম, কিন্তু আসলে তিনি নেহাতই কর্মবাচ্য।
মহাকর্তৃবাচ্য তো অ্যাগনি আন্টিরা। তাঁরা বাহ্যত শিক্ষা কাব্য সমাজ সংস্কৃতি ইত্যাদি প্রভৃতি নিয়ে দমফোট উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলেন। আসলে গোটা ব্যাপারটাই নিপাট পরচর্চা। রসালো কেচ্ছাকে তরিবতী চাটন।
কার সঙ্গে কার প্যায়ার মহব্বত হচ্ছে, তাতে কার সোমসারে আগুন লাগছে, ওর'ম চিতাগ্নিবৎ সংসারে পঁয়ষট্টি হাজারী রোজগেরে গিন্নি কেনই বা তদগতচিত্তে জহর ব্রত পালন করে চলেছেন------ এসব প্রশ্ন টশ্ন রসাতলে গেলো, মানে বাস্তবিকই ক্রিস্পি কুড়মুড়ে রসালো ক্যয়ামত সে ক্যয়ামত তক মার্কা মেলাড্রামায় সকলই তলায়ে গেলো।
বেঁচে রইলো খাপ।
নেশাসক্ত খাপিনী সাপিনীর থেকেও মারাত্মক। তিনি খাপকে "লাইভে আসছি" পর্যায়ে নিয়ে গেলেন।
থানা পুলিশ আইন আদালত--- খাপজগতে সর্বত্তর আ-কোভিডিয় লকডাউন চলে, চলতেই থাকে। কাজেই, জনতা বদ্ধাঞ্জলি হয়ে নমো খাপায় বলতে বলতে নিলডাউনি কেতায় খাপাড়ুর বচনসুধা পানপূর্বক 'কেয়াবাৎ', 'ওহহ! কী দিলেন দিদি', 'ম্যাডাম আপনি সত্য জগৎ মিথ্যা' ইত্যাদি বচনে খাপাড়ু দেবীদের তুষ্ট করতে লাগলেন।
ওদিকে অডিওর পর অডিও পেশ হচ্ছে। অধ্যাপক-কবিবরের এগেনস্টে অভিযোগকারিণী তিনশো-ষাট ডিগ্রি ঘুরে গেছে।
কিন্তু খাপ-খেপীদের থামায় সাধ্য কার!
তেনারা শুদ্ধিব্রত নিয়ে চাঁদমালার মতো নীতিমালা-খান মধ্যমায় ঝুলিয়ে এথিক্সের ঝাঁটা হাতে আকাদেমির ময়দানে নেমে গেছেন।
বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়ই হয়। কাজেই খিস্তিবাজ জনগণেশ মধ্যমা বাগিয়ে অধ্যাপকবাবুর গুহ্যদেশ চুলকে দিচ্ছে। বাবুটির আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ মাত্র নেই।
আজ্ঞে হ্যাঁ। খাপ বাস্তবিক একতরফা ডিক্রি জারি কেস। বহুস্বর কাঁইকিচিরে সিঙ্গলস্বর চিপ্টে শেষমেশ সিম্পলি নেই হয়ে যায়। প্রতিস্বরের টুটি চিপে শুইয়ে দেওয়া হয়। এ এক সম্মিলিত তাণ্ডব, হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হঠাৎ হাউই, যা একক স্বর, প্রতিস্বরকে পুড়িয়ে দেয়।
আবার, কখনো 'সিঙ্গল স্বর' হয়ে যায় খাপস্য খাপ! হেব্বি মুচমুচে খাপ। চমচমে কিসসা মার্কা। যেমন, হঠাৎই জানা গেলো, শ্রীঅংশুমান করবাবুর খাপকে তোবড়াতে গিয়ে শ্রীমতী সুতপা সেনগুপ্তই অজানিতে খাপায়িত হয়ে গেছেন। আর খাপ-টার্গেট মহিলা হলে, কেস মশাই জমে পুরো মকমলি মাকোম।
এই লোতুন খাপে সেই অমোঘ ব্রহ্মাস্ত্রটির মোক্ষম প্রয়োগ হয়েছে। স্ক্রিনশট!
মানে বুইলেন কি না, ল্যাজামুড়োহীন একটি নধর গাদা কি পেটি টপাস করে ফেসবুকারদের পাতে প'লো। পাব্লিক আইঢাই হামলে খেলো।
খাপের শুরুয়াত একখান মন্তব্যখণ্ডে। সুতপা সেনগুপ্ত কমেন্টিয়াছেন, যে তাঁর বাবা তাঁকে কুমোরটুলির কোনো একটি বাড়ি দেখিয়ে বলেছিলেন, এইখানে জনৈকার সঙ্গে বিদ্যাসাগরের গতায়াতসূত্রে একটি সম্পর্ক হয়েছিলো এবং সেই সূত্রে একটি সন্তান হয়েছিল। বাবা কন্যাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে একথা শুনে তাঁর খারাপ লেগেছে কি না। শ্রীমতী সেনগুপ্ত লিখেছেন, যে তাঁর খারাপই লেগেছিল। তখন তিনি মাত্রই অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। কিন্তু বাবা বলেছিলেন যে তিনি বিদ্যাসাগরকে আরো মানবিকরূপে দেখেছিলেন, আরো ভালোবেসেছিলেন।
সম্ভবত, তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, কবি কি যশস্বীর ব্যক্তিজীবন দিয়ে তাঁর কাজকম্মোকে জাস্টিফাই করা যায় না।
তো, খাপপাতিয়েরা ওসব ফিলোজফিকাল থটের মশাই থোড়াই কেয়ার করে?
উচ্চমার্গীয় থট খাপ-খোয়াবনামায় পাতি গনফট হয়ে গেলো।
শ্রীমতী সেনগুপ্ত খাপ-খপ্পরে পড়লেন।
এবার, খাপ কিন্তু শিল্প। চপসিল্পোর মতো খাপসিল্পো। এখানে এডিট স্ক্রিনিং স্ক্যানিং--- ইত্যাদির ব্যাপক কারুকাজ চলে। তো, ওই সুচারু ইন্টেলেকচুয়াল কারুকাজে কমেন্টের 'বাবা উক্ত' শেষের 'ভালোবাসা' 'মানবিক মুখ' কথাটথা ঝড়াকসে বাদ চলে গেলো।
এবং ন্যাজাবিযুক্ত স্ক্রিনশটটি পোস্ট হইতে পোস্টান্তরে বাহিত হইতে লাগিলো।
আর কী চাই, বস্! ফেসবুকীয় জেনেগেনের কুলকুণ্ডলিনী আজ্ঞাচক্রের সার্কিট ফুল ফোর্সে চালু হয়ে গেল। খাপান্ত এবং বাপান্তের চূড়ান্ত শুরু হল।
বর্ণপরিচয়পুষ্ট বাঙালি জিভ শানিয়ে গাল পাড়তে শুরু করলো। যারা 'দেবশর্মণ'-কে 'দেববর্মণ' পড়ে তারাও কিংকং মাফিক বুক চাপড়াতে লাগলো। বীরসিংহ যে এককালে হুগলীতে ছিলো, সেইটে পজ্জন্ত যারা জানতো না, তারাও বিদ্যাসাগরের দাবিদার হয়ে গেলো।
করোনাক্রান্ত লকডাউনি মার্কেটে মাস্কায়িত বাঙ্গালি খিস্তির নায়াগ্রা নামিয়ে বুঝিয়ে দিল, বাঙালি আভিতক জিন্দা হ্যায়।
দু-একজন, মানে খুবই দু-এক জন ভদ্রমহিলার পক্ষ নিয়ে মিনমিন করে বচন দিতে গিয়েছিলো, খেউড়ের তোড়ে তারা সিম্পলি বানভাসি হয়ে গেলো।
অ্যান্ড--- খোপে খোপে তাদের নিয়েও ছোট বড় মেজো সেজো খাপায়োজন হল।
আর সেই ধুন্ধুমার খাপবন্দি খেলায় যখন প্রমাণ হয়ে হয়ে হয়েই এসেছে, যে,
বিদ্যাসাগর অযৌনজননবিশ্বাসী
সুতপা সেনগুপ কবি না ফবি
তস্যা বাবা কদাচারী কাঁচাখেগো হেগোপোঙা
তখন----
টপ্পাস করে আরো একটা স্ক্রিনশটে খাপে খাপ হারানের বাপ লঙ্কাকাণ্ড ঘটে গেলো! ফুটনোট মার্কা একপিস স্ক্রিনশট। 'কবি-অধ্যাপিকা' জনৈককে বিভাগে আসতে বলেছেন, রোমরাজিসহ শিশ্নের সার্জারি করবেন।
মেয়ে কবি। পঞ্চাশোর্ধ। অধ্যাপিকা। 'বাল', 'বাঁড়া' জানে! লেখে! ছিইইঃ! অতঃপর তোলপাড়! তাবৎ খাপুড়ে দে দে পাল তুলে দে করে সইসাবুদিয়া অভিযানে ভার্চুয়ালি ক্যাজরার বজরা ভাসায়ে দিলেন।
যারা রাম্মন্দিরোদ্বোধনে ওপেন ফোরামে মহায়ণ পোস্টিয়ে খিল্লি করছে, যারা সেই মহায়ণ পাঠে এন্তারসে এনকোর কবলিয়েছে, তারা, তারাই কবি অধ্যাপক ক্যানোওও অপভাষা বলেএএ বলে লবিতে লবিতে মিলজুল বিলকুল। সমোস্কিতি মরি গেলাআআ বলে কী হাপুস কান্দন!
তাবলে কি কেউ এ খাপের ঠাশবুনোট জালে নিদেন কড়ে আঙ্গুল ঢোকাবার চেষ্টা করেনি? করেছে। কিন্তু খাপুড়ের চ্যালাচামুন্ডা 'অ্যাইত্তো মুখোশ খুলে গেচেএএ' বলে এইসান হল্লা মাচিয়েছে, সে মানে মানে সটকে পড়েছে। করোনার ভর বাজারে কেই বা মুখোশ খোয়াতে চায় রে বাপ!
তো, মশাই, এই হল বাঙালির খাপ-সমোস্কিতি। এক্ষণে অপসমোস্কিতি বিরোধী মঞ্চ পোতিষ্ঠা করে নিজেকে জাতে তুলতে গেলে আপনাকে একবার,
অন্তত একবার অ্যাক্টা খাপ সঞ্চালনা কোত্তেই হবে। কমেন্ট বক্স, ইনবক্স খামচে খুমচে ধড় মুন্ডু বাদ দিয়ে শুধু একটা ব্যাসকূট নামায়ে দ্যান।
ব্যস বস্।
ফেবুফুটপাথে সেদিন আপনিই রাজা।
বাঙালির মরালিটির ইজারা সেইদিন তক আপনার হাতে, থুড়ি স্ক্রিনশটে।
সেই মেগামহারাজত্বি পাইবার লাগি, গুড়গুড়গুড় গুড়িয়ে হামা, খাপ-খোয়াবী গোষ্ঠমামারা করে কাড়াকাড়ি। এদানিং।
আজ্ঞে হ্যাঁ।
ছপ্পড়ফোড় খাপখোররাই আপাতত লিখছে বঙ্গসমাজ-সংস্কৃতির খেরোর খাতা। তৈরি হচ্ছে বিতত বিতংসী সংস্কৃতি। খাপ।
আসলে, আসলেই যা অন্ধের হস্তীদর্শন। আক্রোশী গিলোটিন। নির্মম হাঁড়িকাঠ। হিটলারি হল্লাবাজি। অন্ধকূপহত্যার মর্মান্তিক ভার্চুয়াল ভার্চুলেস গেম।
সঙ্গে আছি।
খাপ সংস্কৃতি চূড়ান্ত বজ্জাতি, সন্দেহ নেই। কিন্তু তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই কারো সম্পর্কে লেখা কি সমর্থন যোগ্য?
বিদ্যাসাগরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার সপক্ষে কি কোনো প্রমাণ দেখানো হয়েছে না শুধুই "বাবা বলেছে "?
আর বিদ্যাসাগর নিয়ে যেটুকু পড়াশোনা করেছি, এমন অসামান্য তথ্য কোথাও পাইনি। ইন্দ্র মিত্রের অসামান্য কাজ "করুণাসাগর বিদ্যাসাগর"। কোথাও এই অসামান্য তথ্য পাইনি। লেখিকার তথ্যের উৎস কি?
খাপ সংস্কৃতি যেমন ঘৃণ্য, নির্লজ্জ মিথ্যাচারিতা তার চেয়ে কোনো অংশে কম ঘৃণ্য নয়!
এইরকম স্পেসে প্রথম কমেন্ট করছি। খুব স্বচ্ছন্দ নই। দীপ বাবু, আপনার চোখ কি ওই একটা জায়গাতেই আটকে আছে, মান্যবর? ওইটাই কয়েছিি। অন্ধের হস্তী দর্শন
দীপ বাবু, সুতপা সেনগুপ্তের ওই বিশেষ কমেন্ট খণ্ডটি আপনি পোস্ট করবেন। কেমন!
কথার মানে কিছুই বুঝলাম না। যিনি দাবী করছেন, তাঁকে প্রমাণ দিতে হবে। অন্যের কাছে চাইছেন কেন?
আবার বলছি, বিদ্যাসাগর নিয়ে একটু পড়াশুনা করেছি। কোথাও এই অসামান্য তথ্য পাইনি। অনুগ্রহ করে উপযুক্ত প্রমাণ দেবেন।
যিনি মিথ্যাচারীকে সমর্থন করেন, তিনিও মিথ্যাচারী!
খাপ সংস্কৃতি তে কোনো আস্থা নেই। তবে শিক্ষাজগতের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে বলতে পারি, কোনো দাবী করলে তার সপক্ষে প্রমাণ দিতে হয়, "বাবা বলেছে" মার্কা গপ্প কেউ বিশ্বাস করেনা। সুতরাং যিনি দাবী করছেন, তাঁর দায়িত্ব উপযুক্ত প্রমাণ দেবার।
আর বাঙালী সমাজে বিদ্যাসাগর অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব, তাই তাঁর সম্পর্কে কটূক্তি করলে স্বাভাবিক ভাবেই তার প্রতিবাদ হবে। ন্যাকা কান্না কেঁদে লাভ নেই।
আর অন্ধের হস্তীদর্শন করতে আমি আসিনি, উপযুক্ত প্রমাণ চেয়েছি। আশা করব উপযুক্ত প্রমাণ দেবেন।
বিদ্যাসাগরের জীবদ্দশায় তাঁর বিরোধীরা তাঁকে অজস্র কটূক্তি করেছে, কিন্তু তাঁরাও এই কথা বলার সাহস পায়নি। আর ইনি নির্লজ্জের মতো সেই কথা বাবার নাম দিয়ে চালাচ্ছেন! আর কোনো মাতব্বর তা সমর্থন করতে ছুটে আসছেন!
রবীন্দ্রনাথ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলি- নিজেদের মানসিক বিকারকে এরা গবেষণা বলে চালাতে চায়। আর ইনি গবেষণা তো দূরস্থান, "বাবা বলেছে " মার্কা গল্প দিয়ে চালাচ্ছেন!
এটা খুব গোলমেলে ব্যাপার। মিডিয়া ট্রায়াল খুব খারাপ ব্যাপার, সোশ্যাল মিডিয়াও নতুন যুগের মিডিয়াই। এবার কেউ যখন সোশ্যাল মিডিয়াতে কিছু লেখেন, তার প্রতিক্রিয়া সোশ্যাল মিডিয়াতেই হবে সেটাও অপ্রত্যাশিত কিছু না।
একটা গল্প মনে পড়ল। প্রফেসর এক্স আমাদের সেকেন্ড ইয়ারের একটা সাবজেক্ট পড়ান। খুবই ভালো পড়ান আমরা মত্রমুগ্ধের মতন শুনি, খুবই পপুলার। আমাদের সঙ্গে পড়ত 'ব'। সে বলল এখানে এসে এত রোয়াব নেয় বিকেলে তো নন্দনে সাউথ পয়েন্টের এক ম্যাডামের পায়ে পায়ে ঘোরে। পরকীয়া করে আর প্রেমিকা ওকে নাচায়। আমরা সেই নিয়ে বেশ কিছুদিন হাহা হিহি করলাম। কিছু জোক্স হল কার্টুন আঁকা হল। একদিন 'ব' কে জিগেশ করা হল- তুই কী করে জানলি। ব-র অম্লানবদন উত্তরঃ আমার মনে হয়।