এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • পাহাড়ে, বসন্তে

    হিমাদ্রী ভট্টাচার্য
    আলোচনা | বিবিধ | ২৭ জুলাই ২০০৮ | ৭৪৪ বার পঠিত
  • এপ্রিল মাসের শুরুতে আমরা পাহাড়ে যাই। তখনও পাহাড়ে গোলমাল এতটা বেড়ে ওঠেনি। গোর্খাল্যান্ডের দাবীতে নতুন করে আন্দোলন সবে দানা বাঁধতে শুরু করেছে। খবরের শিরোনামে আসাও শুরু হয়েছে। এই উত্তাল হয়ে ওঠা পাহাড়ে খবর আমরা পাই মূলত: খবরের কাগজের মারফত। পাহাড়ের বাস্তবতা কি, সেখানে মানুষ কি ভাবছেন, রাজনৈতিক নেতারাই বা কি ধরণের চিন্তাভাবনা করছেন, সত্যি বলতে কি, এ সম্পর্কে আমাদের, সমতলের মানুষদের তেমন কোনো ধারণা নেই। পাহাড় যেন এক অজানা অঞ্চল, যার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। পাহাড়ের পটভূমিকা আমাদের অজানা, অনেকটা অবোধ্যও বটে। কলোনি আমলের মতো, পাহাড় যেন, আজও দেশের মধ্যে একটুকরো বিদেশ। ভ্যাপসা গরমের মধ্যে একটু স্বস্তির নি:শ্বাস। ছবির মতো চা বাগান, একটুকরো কাঞ্চনজঙ্ঘা, জীবনে বেড়াতে যাবার এক পশলা ঠান্ডা হাওয়া। সেখানকার বাস্তবতা আমাদের অগম্য। ইতিপূর্বে ১৯৮৬ সালে সুভাষ ঘিসিং এর নেতৃত্বে যে আন্দোলন তৈরি হয়েছিল, তার সম্পর্কেও আমরা মূলত:জেনেছি দূরে বসে। সেই দাবীর পক্ষে বা বিপক্ষের যাবতীয় মতামত মূলত: দূর থেকে ছুঁড়ে দেওয়া। অজানা উড়ন্ত বস্তু।

    এই জায়গা থেকেই আমাদের এবারের দার্জিলিং যাত্রা। মানুষ কি ভাবছেন, পাহাড়ের মানুষ কি ভাবেন, কি ভাবছেন, কিইবা বলছেন রাজনৈতিক নেতারা, সে সম্পর্কে চোখ খুলে দেখা, জানা, এই ছিল উদ্দেশ্য। যেহেতু পাহড়ের মানুষ এবং রাজনৈতিক নেতা/কর্মীদের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ বা পরিচয় নেই, তাই কথা বলার জন্য অন্য কিছু মানুষের সাহায্য নিতে হয়। মনে রাখতে হবে, যে, রাজ্যের মূল রাজনৈতিক দল সিপিআইএম এর শক্তি পাহাড়ে প্রায় শুন্য। তাই শিলিগুড়ি পৌঁছে সিপিআইএমএল লিবেরশানের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অভিজিত মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। গোর্খাল্যান্ড বিষয়ে কথাবার্তা হয়। রাজনৈতিক ভাবে তিনি এবং তাঁর দল গোর্খাল্যান্ডের দাবীকে সমর্থন করলেও পাশাপাশি কিছু প্রশ্নও তোলেন। মোর্চা প্রসঙ্গে তিনি জানান, যে, একটি পৃথক রাজ্য হিসেবে গোর্খাল্যান্ডকে দাঁড় করাতে গেলে তার অর্থনৈতিক ভিত্তি কি হবে, ব্যাপারটা আদৌ সম্ভব কিনা, এ নিয়ে মোর্চার কোনো পরিষ্কার কথা বা ধারণা নেই। পাহাড়ের নির্দিষ্ট কয়েকটি সমস্যা সম্পর্কে তিনি আমাদের নিজের বক্তব্য জানান। এক, চা বাগানের সমস্যা। বন্ধ চা বাগান গুলি এবং এখনও যেগুলি খোলা আছে, সেগুলির শ্রমিকদের সমস্যা এবং সামগ্রিক ভাবে চা-শিল্পের সমস্যাটি নিয়ে রাজ্যস্তরে বিশেষ চিন্তাভাবনা নেই। মোর্চারও এ নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট মতামত নেই। দুই, সিঙ্কোনা প্রজেক্ট। পাহাড়ে সরকারী উদ্যোগে পরিচালিত সিঙ্কোনা প্রজেক্ট বন্ধ হয়ে আছে। সেখানে এখন বেসরকারীকরণের কথা ভাবা হচ্ছে। সেই প্রস্তাবিত বেসরকারীকরণ নিয়ে মোর্চার কোনো সুনির্দিষ্ট অবস্থান নেই। এই দুটি জিনিসই যেহেতু পাহড়ের মানুষের সামগ্রিক কর্মসংস্থানের প্রশ্নের সঙ্গে যুক্ত, তাই, সামগ্রিক কর্মসংস্থান এবং প্রস্তাবিত গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের অর্থনৈতিক ভিত্তি সম্পর্কেই মোর্চার ধ্যান-ধারণা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এছাড়াও পাহাড়ের আরও কয়েকটি নির্দিষ্ট সমস্যা আছে, জল এবং ভূমি সম্পর্ক। পাহাড়ি এলাকায় অল্প কিছু কৃষিজমি আছে। বেশিরভাগটাই অকৃষিজমি। পঞ্চায়েত পরিচালনা ও ভূমিসম্পর্কের এই বিশেষ ধরণটি নিয়েও মোর্চার বিশেষ কোনো চিন্তাভাবনা নেই বলে তিনি জানান।

    দার্জিলিং এর পাহাড়ি অঞ্চলে সিপিএম নেই। সিপিএম থেকে ভেঙে বেরিয়ে আসা পার্টি সিপিআরএম এর কিছু প্রভাব আছে। অভিজিত মজুমদার আমাদের সিপিআরএম এর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। পাহাড়ে সিপিআইএম এর প্রতীকে জেতা শেষ এমপি আরবি রাই এখন সিপিআরএম এর অন্যতম নেতা। তাঁর সঙ্গে আমরা দেখা করি। দীর্ঘ কথোপকথন হয়। উনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানান, যে, গোর্খাল্যান্ডের দাবী ওঁরা সমর্থন করেন। গোর্খাদের নিজস্ব রাজ্যের দাবী আসলে খুব নতুন কিছু নয়, বরং অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির পুরাতন দাবী। পাহাড়ের বহু পুরাতন পার্টিনেতা রতনলাল ব্রাহ্মণ এই দাবীকে সামনে রেখেই নির্বাচিত হন। এবং এই দাবীকে অবিভক্ত পার্টি সমর্থন করেছিল। কিন্তু ১৯৭৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর বামফ্রন্ট সরকার এই দাবীটিকে অস্বীকার করে। আরবি রাইএর বক্তব্য অনুযায়ী তাঁরা পার্টির অভ্যন্তরে বারবার এই বিষয়টিকে উত্থাপন করেছিলেন সেই সময়, কিন্তু উর্ধ্বতন নেতৃত্ব নতুন রাজ্যের ব্যাপারটিকে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে বা এগোতে রাজি হয়নি।

    সুভাষ ঘিসিং সম্পর্কে তাঁদের কি মূল্যায়ন? রাই বলেন, ১৯৮৬ তে শুরু হওয়া আন্দোলনের ফলে পাহাড়কে যখন পার্বত্য পরিষদ দেওয়া হয়, তখন তাঁরা বলেছিলেন, পার্বত্য পরিষদ নামক প্রতিষ্ঠানটিকে প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক করে তোলা উচিত। নির্বাচকমন্ডলীর প্রতি পার্বত্য পরিষদের দায়বদ্ধতা থাকা উচিত। ঘিসিংকে পার্বত্য পরিষদের জন্য বরাদ্দ অর্থের হিসাব-নিকাশ দিতে বাধ্য করা উচিত। কিন্তু সিপিআইএম এর তৎকালীন রাজ্য নেতৃত্ব এই ব্যাপারে একমত হননি। তাঁরা চেয়েছিলেন ঘিসিংকে নিজের মতো করে পার্বত্য পরিষদ চালানোর সুযোগ দেওয়া হোক, ব্যাপক স্বাধীনতা ও ক্ষমতা দেওয়া হোক। ক্রমশ: দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে ঘিসিং জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন, এবং পৃথক রাজ্যের দাবী থেকে সরে আসতে বাধ্য হবেন, এই ছিল তৎকালীন স্ট্র্যাটেজি। ফলে দুটি জিনিস ঘটে। এক, পার্বত্য পরিষদ তৈরির পর পাহাড়ে ঘিসিং বিরোধী যে আন্দোলনের ধারাটা গড়ে উঠছিল, আন্দোলনের সেই ধারাটি চাপা পড়ে যায়। অন্যদিকে সুভাষ ঘিসিং পাহাড়ে তৈরি করে ফেলেন নিজস্ব ঠিকাদার রাজ। যার বিরুদ্ধে মানুষ বিরক্ত হতে হতে এখন ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। প্রসঙ্গত: বলে রাখা ভালো, যে, রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে সেই সময়ে (এবং এখনও) দার্জিলিং জেলার নেতৃত্বে ছিলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

    বিমল গুরুং সম্পর্কে তাঁরা কি ভাবছেন? রাই বলেন, পাহাড়ে গুরুং এর একটা রবিনহুড ইমেজ আছে। ঘিসিং একদা গুরুং এর উপরেই নির্ভরশীল ছিলেন। আজ গুরুং ঘিসিং এর ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে এসে মোর্চা তৈরি করেছেন। এই মোর্চাটির একটি নির্দিষ্ট সুষম গঠন নেই। অনেকগুলো ছোটো ছোটো সংগঠন আছে মোর্চাতে। তাদের বিভিন্নরকম মতামত আছে। বেশ কিছু বামপন্থী ঘরানার মানুষ যেমন আছেন, তেমনই দক্ষিণপন্থী শক্তিও আছে। মোর্চার সে অর্থে কোনো সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শ দানা বেঁধে ওঠেনি। পৃথক রাজ্যের দাবী নিয়ে তারা মূলত: ভাবাবেগে চলছে। তবে একটি ব্যাপারে মোর্চার একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপদ্ধতি আছে। তারা মূলত: দুটি স্তরে কাজ করছে। এক, মাটির কাছাকাছি। মানুষকে নিয়ে, সংগঠিত করে, আন্দোলনে সামিল করে। দুই, বুদ্ধিজীবীদের সংগঠিত করে। পাহাড়ের বুদ্ধিজীবীরা মোর্চার উপদেষ্টা। তাঁরা জাতীয় স্তরে যোগাযোগ তৈরি করছেন। প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছেন।

    রাই বলেন, মোর্চার দক্ষিণপন্থী অংশটার সঙ্গে তাঁদের সমস্যা আছে। তাঁরা পৃথক রাজ্যের দাবীর অংশীদার হলেও, মোর্চার সঙ্গে সরাসরি নেই।

    এখানে বলে রাখা ভালো, যে, দার্জিলিং এ আমাদের যাতায়াতের পুরো সময়টাতেই আমরা বিভিন্ন ধরণের সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। যেখানে যতটুকু সুযোগ পাওয়া যায়। সাধারণ মানুষ, স্কুল ছাত্র, স্টেশনে অপেক্ষমান মানুষ, ট্রাফিক পুলিশ, জলের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ, ট্রেকারের ড্রাইভার, যেখানেই সুযোগ পেয়েছি, সেখানেই এঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। এবং প্রত্যেকেই দ্ব্যর্থহীন ভাবে বলেছেন তাঁদের নিজস্ব মাতৃভূমি চাই। নিজস্ব আইডেন্টিটি চাই। কেন চাই, সে সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন ধারণা পোষণ করেছেন তাঁরা। যেমন ট্রেকার ড্রাইভাররা জানিয়েছেন, নতুন রাজ্য হলে টুরিজমের ভালো পরিকল্পনা তৈরি হবে, যা এখনকার রাজ্য সরকার করছেনা। যাঁরা একটু শিক্ষিত, যেমন ছাত্ররা, তাঁরা মূলত: নিজেদের হাতে ক্ষমতার দাবীতে মুখর। নতুন রাজ্য হলে নতুন পরিকল্পনা হবে। কর্মসংস্থান হবে। সুযোগ সুবিধে হবে। তৈরি হবে ভালো ইউনিভার্সিটি, কলেজ, যা এখন নেই। তৈরি হবে উন্নয়নের পরিকাঠামো। স্বপ্ন যাই হোক না কেন, এঁরা প্রত্যেকেই নতুন রাজ্যের পক্ষে। অন্তত: ভাবাবেগের দিক থেকে।

    সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলার, তাঁদের অবস্থা এবং অবস্থান বোঝার জন্য, আমরা একটি চা-বাগানেও যাই। মরিবং এলাকার বাগানটির নাম চংটং। দার্জিলিং থেকে ঘন্টাখানেকের দূরত্বে অবস্থিত। এখানে যাবার উদ্দেশ্য ছিল, চা-বাগানের বর্তমান পরিস্থিতি যতটা পারা যায় নিজের চোখে দেখা এবং বোঝা। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষের সঙ্গেও কথা বলা। দার্জিলিং থেকে ঘন্টাখানেকের দূরত্বে অবস্থিত এই বাগানটির মালিক জনৈক আগরওয়াল। স্থানীয় মানুষের ভাষ্য অনুযায়ী তিনি নাকি সোনিয়া গান্ধীর ঘনিষ্ঠ। দাবীটির যথার্থতা অবশ্য জানা নেই। বর্তমান মালিক এই বাগানটির মালিকানা পান ১৯৮৩ সালে। স্থানীয় মানুষের বর্ণনানুযায়ী, লোকটি হিন্দি সিনেমার ভিলেন বিশেষ। খুন-জখম থেকে শুরু করে, কুলি-কামিনদের ঘরের মেয়েদের জোর করে টেনে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত তার অপকর্মের বিস্তৃতি। প্রতি শীতে সে কারখানা বন্ধ করে দিত। ফলে সেই সময়টা শ্রমিকদের কাটত অর্ধাহারে অনাহারে। মালিকের দাবী ছিল কারখানা খোলা যেতে পারে, কিন্তু সপ্তাহে পাঁচদিন কাজ করলে, সেক্ষেত্রে, মজুরি দেওয়া হবে তিন দিনের। এবং সেটা মেনে নিতে হবে। ১২৫২ জন শ্রমিকের ৭০ লক্ষ টাকা মজুরি, ৯০ লক্ষ টাকা গ্র্যাচুইটি বকেয়া ছিল। এই পরিস্থিতি চলে ২০০৬ সাল পর্যন্ত। ২০০৬ সালে শ্রমিকরা তৈরি করে জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি। তারা স্থায়ী বেতন, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি সহ শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবীদাওয়া নিয়ে আন্দোলন শুরু করে।

    এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন একজন অত্যন্ত ভিন্ন ধরণের চরিত্র। তাঁর নাম বাবুরাম দেওয়ান। তিনি পেশায় ছিলেন দারোয়ান। লেখালিখি করতেন। চিন্তাভাবনায় প্রগতিশীল ধরণের ছিলেন। প্রত্যন্ত গ্রামে থেকেও তিনি নিজের চোখ ও দেহ দান করেছিলেন। অবসর নেবার পর তিনি পড়ানোর কাজে যুক্ত ছিলেন। এবং ক্রমশ: চা-বাগানের এই আন্দোলনে জড়িয়ে যান। সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। বলাবাহুল্য, আন্দোলনে বিশেষ কাজ হয়নি। ক্ষমতাশালী চা-বাগানের মালিকের সঙ্গে যুদ্ধে শ্রমিকরা জিততে পারেনি। এই নিষ্ফল আন্দোলন যখন শেষের দিকে, ঠিক সেই সময়ে, ২০০৬ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি, চা-বাগানের পাতা মাপার বারান্দায় আত্মাহুতি দেন বাবুরাম। ঝুলন্ত অবস্থায় আবিষ্কৃত হয় তাঁর মৃতদেহ। সঙ্গে পাওয়া যায় সুইসাইড নোট। যেখানে তিনি জানাচ্ছেন, "আমার মৃত্যুটি একটি প্রতিবাদ। আমার আত্মহুতি অজিত আগরওয়ালের বিরুদ্ধে। আমার পর এ সংখ্যা আরও বাড়বে। প্রশাসন অবিলম্বে সে নিষ্ঠুর লোকটির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিক, যার জন্য ৬৫০০ মানুষকে খিদের জ্বালায় দিন কাটাতে হচ্ছে'। তিনি ছেলেকেও একটি চিঠি দেন। সেখানে লেখেন, "তুমি গর্বিত হও, অন্য মানুষের জন্য এই জীবনদান'।

    এই মৃত্যুর পরে আন্দোলনে সত্যিই জোয়ার আসে।জিএনএলএফ বন্‌ধ ডাকে। আন্দোলনের চাকা আবার গড়াতে শুরু করে।

    এই ঘটনাটা এখানে লেখা হল, এই কারণে, যে, গোর্খা পার্বত্য পরিষদের আমলেও মানুষের মৌলিক সমস্যাগুলির কোথাও কোনো সমাধান হয়নি। সমাধান হবার প্রক্রিয়াটিও সেভাবে শুরু হয়নি। বাবুরাম দেওয়ানের মৃত্যু যা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। পরবর্তীকালে আমরা যখন পাহাড়ের একজন প্রথমসারির বুদ্ধিজীবী আনমোল প্রসাদের সঙ্গে দেখা করি, তিনিও এই সমস্যাগুলির দিকেই অঙ্গুলীনির্দেশ করেন। আনমোল প্রসাদ পাহাড়ের প্রথমসারির আইনজীবীদের মধ্যে একজন। জনমুক্তি মোর্চার থিংক ট্যাংকের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তিনি বলেন, যে, আলাদা রাজ্য তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবী। এবং এই দাবী কমিউনিস্ট পার্টির হাত ধরেই এসেছে। যদিও ১৯৭৭ সালের পর এই দাবীকে কমিউনিস্ট পার্টি কখনই স্বীকৃতি দেয়নি। তিনি আরও বলেন, যে ঐতিহাসিক ভাবেই পাহাড়ের মানুষের আলাদা আইডেন্টিটি আছে। কিন্তু সেই আইডেন্টিটিকে জোর করে দাবিয়ে রাখা হয়েছে। মানুষের মাতৃভূমির আকাঙ্খাকে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে উন্নয়নের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করা হয়নি। পাহাড়ের নিজস্ব সমস্যাগুলিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। অবহেলা করা হয়েছে। ষষ্ঠ তফশীলের সিদ্ধান্তও মানুষের ভাবাবেগকে আহত করেছে। পাহাড়ে উপজাতির সংখ্যা খুব বেশি হলে এক তৃতীয়াংশ। কিন্তু ষষ্ঠ তফশীল দেবার জন্য জোর করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে উপজাতি প্রমাণ করার চেষ্টা হয়, যা, পাহাড়ি জাত্যাভিমান ভালো ভাবে গ্রহণ করেনি।

    আবেগ বা মাতৃভূমির আকাঙ্খা তো ভালো, কিন্তু উন্নয়ন বা সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির প্রশ্নে নতুন এই প্রস্তাবিত রাজ্যের লক্ষ্যে তাঁদের ঘোষিত নীতি কি? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, যে, সত্যিই এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। তাঁর ব্যক্তিগত কিছু মতামত আছে, কিন্তু তা মোর্চার মতামত নয়। প্রথমে রাজ্যের দাবী স্বীকৃতি পেয়ে গেলে সেটা নিয়ে পরে আলোচনা বা চিন্তাভাবনা করা হবে।

    এর পরে মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরিও প্রায় একই ধরণের বক্তব্য আমাদের জানান। সঙ্গে আরও কয়েকটি নতুন কথাও বলেন। আপনাদের আন্দোলনের পরিণতিতে জাতিদাঙ্গা হতে পারে কি? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, যে, পাহাড়ে অনেক ধরণের লোক আছেন। বাঙালি থেকে মারোয়াড়ি পর্যন্ত। তাঁরা কখনই মনে করেন না, যে, পাহাড়ে শুধু গোর্খারা থাকবে। এই বাঙালি/মারোয়াড়িরা পাহাড়ের অংশ। খুব এক আধটি ঘটনা ছাড়া এঁদের উপর একটিও হামলা হয়নি। বরং সমতলেই পাহাড়ের মানুষের উপর আক্রমণ হয়েছে। প্রশান্ত তামাং এর ঘটনা দিয়ে যা শুরু। এবং সেই ঘটনায় পাহাড়ে মানুষ কখনই আক্রমণকারী ছিলেন না। অর্থনীতি, বা প্রস্তাবিত রাজ্যের সামগ্রিক নীতিসমূহ কি হবে, এ নিয়ে তিনিও বিশেষকিছু আলোকপাত করতে পারেন নি। আমাদের এই যাত্রার একদম শুরুতে অভিজিত মজুমদার যে কথাগুলি বলেছিলেন, যে, নতুন রাজ্যের অ্যাজেন্ডা ছাড়া সুনির্দিষ্ট কোনো অর্থনীতিবিষয়ক ধ্যানধারণা মোর্চার নেই, সেই একই কথা রোশন গিরি এবং আনমোল প্রসাদের সঙ্গে আলোচনা থেকেও বেরিয়ে আসে। তাঁরা নির্দিষ্ট কোনো অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে কোনো কথা বলেননি। ভাবনার ধরণটা অনেকটা এরকম, যে, আগে রাজ্য পাওয়া গেলে, বাকি সমস্যাগুলি নিয়ে তার পরে ভাবা যাবে।

    যাইহোক, এরপর আমরা মোর্চার প্রতিষ্ঠাতা-নেতা বিমল গুরুং এর সঙ্গেও দেখা করি। দীর্ঘক্ষণ অনেকগুলি বিষয়ে কথাবার্তা হয়। তার সবটা এখানে লেখা সম্ভব নয়। ছোটো আকারে তাঁর বক্তব্যটি এখানে রাখা হচ্ছে। বিভিন্ন ইস্যুতে। (বাক্যগুলি তাঁর নিজস্ব নয়। পুরোটা রেকর্ডও করা নেই। ছোটো করে শুধু সারসংক্ষেপটুকু তুলে ধরা হচ্ছে। প্রশ্নোত্তরের আকারে। স্মৃতি থেকে।)

    প্রশ্ন: জিএনএলএফ থেকে বেরিয়ে এলেন কেন?

    -- আমি ৮৬ সালের আন্দোলনে অংশীদার ছিলাম। ঘিসিং এর সঙ্গেই ছিলাম। ঘিসিং যখন পার্বত্য পরিষদে রাজি হয়ে যান তখন থেকেই আস্তে আস্তে আমি নিজেকে সরিয়ে নিতে থাকি। নিজের মতো করে কাজকর্ম করছিলাম। নির্দল হিসাবেই দার্জিলিং থেকে কাউন্সিলার নির্বাচিত হই। কিন্তু ঘিসিং এর উপরে আস্থা নষ্ট হয়ে যায়। ঘিসিং ঠিকেদার নির্ভর, আমলাতান্ত্রিক। তাঁর আমলে প্রাপ্তি বলতে শুধু ঠিকেদার রাজ।

    ষষ্ঠ তফশীলের ব্যাপারেও ঘিসিং আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। ঘিসিং এর সঙ্গে পাহাড়ের প্রতিনিধি হয়ে আমরা কজন এ ব্যাপারে কথা বলতে কলকাতা গিয়েছিলেম। আমাদের আলাদা জায়গায় বসিয়ে বুদ্ধবাবু ও ঘিসিং আলাদা ঘরে বসে আলোচনা করেন। আমাদের ছাড়াই আলোচনা হয় এবং সিদ্ধান্ত হয়ে যায়। তখন সেই সিদ্ধান্তের কথা আমরা জানতে পারিনি। ফেরার পথে বাগডোগরা পৌঁছে ঘিসিং বলেন পাহাড়ে বাজি টাজি ফাটাও। আমরা ষষ্ঠ তফশীল পেয়ে গেছি। আমরা অবাক হয়ে যাই। এবং এটা মেনে নিতে পারিনি। কয়েকদিন পরে আমি ব্যক্তিগতভাবে ঘিসিং এর সঙ্গে দেখা করি। বলি, আপনি যেটা করলেল আমি সেটা মেনে নিতে পারছিনা। আমি আর আপনার সঙ্গে নেই। ঘিসিং আমাকে বলেন তোমার অস্তিত্ব কিন্তু এতে বিপন্ন হয়ে যাবে। আমি জবাবে বলি, মানুষ আমার সঙ্গে থাকলে অস্তিত্ব বিপন্ন হবেনা। না থাকলে হবে। এর পরেই অন্যান্যদের সঙ্গে নিয়ে মোর্চা বানাই।

    প্রশ্ন: আপনি বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে এক মাসের মধ্যেই আপনাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী আপনাদের সঙ্গে বসেছেন। এক মাসের মধ্যেই। নতুন রাজ্য কবের মধ্যে আদায় করতে পারবেন? এরকম কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে?

    -- এখন আমাদের দাবীর যে ভিত্তি তার স্বপক্ষে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। একটি টিম তৈরি হচ্ছে। আন্দোলন সঠিকভাবে চালাতে পারলে ২০১০ এর মধ্যেই নতুন রাজ্য আদায় করতে পারব।

    প্রশ্ন: আন্দোলনের পন্থা কি হবে?

    -- অহিংস আন্দোলন। আমরা নিজেদের গান্ধীবাদী বলে মনে করি।

    প্রশ্ন: সমস্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলনই একসময় সশস্ত্র হয়। এটাকে এড়াবেন কিকরে?

    -- সারা পৃথিবীতে যে গোর্খারা ছড়িয়ে আছেন, তাদের সবার কাছে আমরা সাহায্যের আবেদন রাখছি। সারা পৃথিবীতে আবেদন জানাচ্ছি। গোর্খা বুদ্ধিজীবীরা আমাদের সঙ্গে আছেন। সরকার যদি আমাদের উপর দমন নামিয়ে আনে, সশস্ত্র আন্দোলনে যেতে বাধ্য করে, তাহলে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। আমরা সশস্ত্র পন্থায় যথেষ্ট পারদর্শী। ধরুন, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে আমাদের নিজেদের গোর্খা রেজিমেন্ট আছে। (কথার কথা), তেমন প্রয়োজনে, তারাও তো বেরিয়ে আসতে পারে।

    প্রশ্ন: প্রশান্ত তামাং নিয়ে যেভাবে দাঙ্গা হয়েছে, সেটা তো আরও বাড়বে।

    -- রাজ্যের দাবীটা শুধু গোর্খাদের দাবী নয়। সার্বিক ভাবে যারা পাহাড়ের সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন সবাই গোর্খালি। বাঙালি, গির্খালি, মারোয়াড়ি; তাদেরকেও সংগঠিত করার চেষ্টা করছি। তাদের নিয়েও সমাবেশ হচ্ছে।

    প্রশ্ন: নেপালে সদ্য যে আন্দোলন হয়ে গেল, পাহাড়ের আন্দোলনের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক আছে? সরাসরি না থাকলেও, অন্তত: এই আন্দোলন আপনাদের উৎসাহ জুগিয়েছে কি?

    -- কোনো সম্পর্কই নেই।

    প্রশ্ন: ঘিসিং এর বিরুদ্ধে আপনাদের অনেক অভিযোগ। কিন্তু আপনারাও আরেকটি ঘিসিং হয়ে উঠবেন না তার গ্যারান্টি কোথায়?

    -- আমরা নিচুতলার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। মানুষের মতামত নিয়েই চলেছি। ঘিসিং এর মতো জনবিচ্ছিন্ন হয়ে প্রাসাদে বাস করছিনা। এইটাই গ্যারান্টি।

    আমরা দার্জিলিং পাহাড়ে গিয়েছিলাম এপ্রিল মাসে। তারপরে আরও অনেক কিছু ঘটে গেছে। কিন্তু সেই এপ্রিল মাসেই আমাদের পর্যবেক্ষণ আমাদের দুটি জিনিস দেখিয়েছিল, যার উল্লেখ করাটা এখানে প্রয়োজন।

    এক। পাহাড়ের সাধারণ মানুষ নতুন রাজ্য চাইছেন। কলেজ ছাত্র থেকে চা-বাগানের শ্রমিক, গৃহবধূ থেকে ট্রেকার ড্রাইভার, সকলেই নতুন রাজ্যের, নিজের মাতৃভূমির স্বপ্ন দেখছেন। নতুন রাজ্য চাননা এরকম লোক পাহাড়ে প্রায় নেই বললেই চলে। বিমল গুরুংরা এই স্বপ্নের আন্দোলনকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন। স্বপ্ন দেখছেন ও দেখাচ্ছেন।

    দুই। স্বপ্নের বাইরে, বাস্তবের সমস্যাগুলির ঠিক কিভাবে সমাধান হবে, এ নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট ধারণা মোর্চা বা পাহাড়ের সাধারণ মানুষের নেই। বিশেষ করে অর্থনৈতিক সমস্যাগুলি নিয়ে তো নেইই। ধারণাটা অনেকটা এরকম, যে, রাজ্যের দাবীটিই আশু। সেটি পাওয়া গেলে বাকি সমস্যাগুলির সমাধান অনেকটা এমনিই বা সহজেই হয়ে যাবে।

    আমাদের স্বল্পকালীন সফরের পর্যবেক্ষণগুলি অনেকটাই খন্ডিত হতেই পারে। কিন্তু যেটুকু দেখেছি, বা বুঝেছি, সেটুকুই এই লেখায় তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। বাকি কথা ইতিহাস বলবে।

    জুলাই ২৭, ২০০৮
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৭ জুলাই ২০০৮ | ৭৪৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই প্রতিক্রিয়া দিন