গণতান্ত্রিক পরিবেশে সবসময়ই ধর্মভিত্তিক বা "আস্তিক" রাইট উইং পপুলিজমের বিকাশ ঘটার সুযোগ থাকেই। আর কোভিড ১৯ এর মত প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে পাবলিক যেখানে অনেক বেশি অনিরাপত্তায় সেখানে এর সুযোগ আরও বেড়ে যায়, রাইট উইং পপুলিস্টরাও এখানে নিজেদের সুযোগ তৈরি করে নেয়। এদিকে পরিস্থিতির মোকাবেলার জন্য পাবলিকের সাথে সম্পর্কিত যেসব সেক্টরে অনেক বেশি মনোযোগ দেবার দরকার ছিল, অর্থনীতির লিবারালাইজেশনের দরকার ছিল, জনগণের আর্থিক নিরাপত্তা, জনস্বাস্থ্য খাতে নিরাপত্তা তৈরির দরকার ছিল তা এরা করে না, করতে চায়ও না। এই পরিস্থিতিতে যে দলটিকে সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব নিতে হয় তারা হচ্ছে বুদ্ধিজীবী, এদেরই কাজ জনগণের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সম্পর্কিত হয়ে তাদের মধ্যে তাদের স্বার্থে জনমত তৈরি করা যাতে তাদের মধ্যে পপুলিজমের প্রভাব না পড়তে পারে। এই কোভিড ১৯ এর ক্ষেত্রে বুদ্ধিজীবীদের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। কিন্তু সেটা হচ্ছে না।
কেন হচ্ছে না, সেখানেই হয়তো আপনার নিওলিবারালদের প্রতি সমালোচনাগুলো সম্পর্কিত... " বড়বাবুরা কবে গলফ খেলতে মালয়েশিয়া যাবেন, থিয়েটার হল কবে খুলবে, অফুরন্ত বিনোদন-সম্ভার কবে উপুড় হবে ফের– সে’ সবের অপেক্ষায় নিওলিবারাল ভোক্তা হাপিত্যেশ"... তবে আমার মতে সমস্যাটা নিওলিবারালিজমে নয়, এই পরিস্থিতিতে নিওলিবারালরাও নিজেদের মতই বিকশিত হবেই, সমস্যাটা হল এদের একাংশের জনসমৃক্ততায় অনীহা, জনগণের থেকে দূরে নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে রেখে একরকম আধুনিকতার চর্চায় নিজেদের ব্যস্ত রাখা, যেখানে সমাজ নিজে আধুনিক নয়। আধুনিকতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেই আধুনিকতাটাকে অর্জন করতে হবে বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে, কিন্তু এরা জনসম্পৃক্ত হয়ে সেই আধুনিকতার আন্দোলন না করেই একটি ক্ষুদ্র প্রগতিশীল পকেট তৈরি করে (হয়তো রাষ্ট্রের দয়াতেই) তাতেই আধুনিকতার ফল লাভে ব্যস্ত, যেখানে সমগ্র সমাজে আধুনিকতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্র প্রতিষ্ঠা হয়নি, যার জন্য সাধারণ মানুষের ন্যুনতম আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রয়োজন ছিল। এখানেও আমি বলব সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হল সেই সব ইন্টেলেকচুয়ালদের যারা জনসম্পৃক্ত হবেন, এবং তার মধ্য দিয়েই সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন। আপনি যাদেরকে নিওলিবারাল বলছেন তাদের মত জনগণ থেকে দূরে সরে গিয়ে আধুনিকতার আন্দোলনে না গিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে আধুনিকতার ফল ভোগ করা নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন না।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। পরে খুঁটিয়ে পড়ে বক্তব্য জানাচ্ছি, তবে আপাতত আপনার প্রথম বাক্যটা নিয়ে একটা অনুযোগ রাখছি। আস্তিক্যের রাজনীতি ঠিক ধর্মভিত্তিক রাইট উইং পপুলিজম নয়। যদিও, লেখাটায় সমালোচনা করা হয়েছে মূলত সেটারই।
আস্তিক্যের রাজনীতি: অস্তি কথাটা অস্ ধাতু থেকে এসেছে। এই অস্-এর মানে হয়ে-ওঠা। এই হয়ে-ওঠা'য় একটা আশাবাদ নিহিত থাকে৷ ট্রান্সেন্ডেন্স, ইমানেন্স বা বিপ্লব– আদর্শের নানা খুপরিতে নানা ডাকনাম তার। আদর্শ আশাবাদী। কিন্তু এক জন বাস্তববাদী পেসিমিস্টের কাছে রিয়েলিটি নন-লিনিয়ার, কমপ্লেক্স, ডায়নামিক৷ কোলাপ্স থিওরির প্রণেতারা সব সময় এটাই দেখাতে চেয়েছেন। এঁদের কাছে গল্পের ক্লোজার-টা খুব অস্তিবাদের নয়। নেতি-র।