এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • তেলের দামের আর্থ-রাজনীতি

    দেবর্ষি দাস, দীপঙ্কর বসু, পানাইয়োটিস টাকি ও শিব শেঠী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০২ আগস্ট ২০১০ | ১৫০০ বার পঠিত


  • ২০১০ সালের ২৫ জুন কিরিত পারিখ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ভারত সরকার দুই গুরুত্বপূর্ণ পেট্রলিয়াম পণ্য, পেট্রল ও ডিজেলের, দামের পূর্ণ বিনিয়ন্ত্রণ (ডিরেগুলেশন) ঘোষণা করে (১)। অত:পর এদের দাম সম্পূর্ণভাবে বাজারের গতিপ্রকৃতি দিয়ে নির্ধারিত হবে। সরকারি আয়ব্যয়ের সমতা সর্বনাশকারী সরকারি ভর্তুকি বাতিল হবে (২)। মাত্র এক ঝটকায় এই দুটো পণ্যের দাম ঠিক করার দায়িত্ব সরকারের হাত থেকে বাজারের কাছে সমর্পণ করে দেওয়া হল। শোনা গেল এর ফলে দাম আরো বেশি যুক্তিসঙ্গত ( price rationalisation ) হবে, সরকারি অয়েল মার্কেটিং কম্পানিগুলোর ( OMC ) ২২,০০০ কোটি টাকার লোকসান বন্ধ হবে।

    মোটামুটি তিন ধরনের প্রতিক্রিয়া ইংরিজি খবর মাধ্যমগুলোতে দেখা গেল। প্রথমত, বাজার পেট্রল ও ডিজেলের দামের বিনিয়ন্ত্রণকে উল্লাসের সাথে গ্রহণ করল, প্রতিফলন দেখা গেল তেলের শেয়ারের চড়া দামে (৩)। দ্বিতীয়ত, জোরালো অভিযোগ উঠতে থাকল যে এই নীতিপরিবর্তন যথেষ্ট নয়। কেরোসিন ও এলপিজির দামের ওপর ন্যূনতম সরকারি নিয়ন্ত্রণ আছে। তেল ও ডিজেলের বিনিয়ন্ত্রণের পরও তাই OMC গুলোর লোকসান এই আর্থবছর ২০১১-তে ৫৩০০০ কোটি টাকা হতে চলেছে ( ৪)। তৃতীয়ত, বিভিন্ন বিরোধী দল নিয়মমাফিক রীতিতে একটি "ভারত বনধ' পালন করে।

    ভারতবর্ষের তেলের দামের আর্থ-রাজনীতিকে খুঁটিয়ে দেখার আগে তিনটি প্রশ্নের জবাব খুঁজে নেওয়া যাক। এক, পেট্রল ডিজেলের দামের বিনিয়ন্ত্রণ নিয়ে লগ্নি বাজার ( financial market ) ও বাজারি সংবাদ মাধ্যমগুলো এতো আনন্দিত কেন? একটি বড় কারণ হল তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যে দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধ চলছিল তার প্রেক্ষাপটে এই নীতিপরিবর্তন পুঁজিবাদী স্বার্থের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয়। ভর্তুকি আর সরকারি খরচের মীথ রচনা করে পুঁজীবাদী পক্ষ অনেকদিন ধরে তেলের দামের বিনিয়ন্ত্রণের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে। প্রথম বিজয় ২০০২ সালে, যখন সরকার administrative price mechanism (APM) বাতিল করে। ফলে পেট্রল ও ডিজেলের 'ভর্তুকি' কমানো হয় কিন্তু কেরোসিন, এলপিজিতে অক্ষুণ্ন থাকে। ২০০৫ সালে রঙ্গরাজন কমিটি নিযুক্ত করা হয় পেট্রলিয়াম পণ্যের দাম ও কর নিরীক্ষা করার জন্য (৫)। কমিটি একরকমের মধ্য পন্থা নির্দেশ করে - সুপারিশ করে রিফাইনারি গেটে দামের (যা তথাকথিত ট্রেড প্যারিটি ফর্মুলা দিয়ে হিসেব করা হবে) ওপর ঊর্ধসীমা (সিলিং) বসানোর আরা খুচরো দাম ঠিক করার জন্য OMC -গুলোকে স্বাধীনতা দেওয়ার। তবে এইটুকুতে তুষ্ট হবার বান্দা কর্পোরেট কম্পানিরা নয়। ফলে ২০০৯- সালে আরেকটা কমিটি, কিরিত পারিখ কমিটি, নিযুক্ত হয় ঠিক একই বিষয়গুলোকে খতিয়ে দেখার জন্য (৬)। ২০১০ ফ্রেব্রুয়ারি মাসে তার রিপোর্ট জমা পড়ে, পুঁজিপতিরা এতদিন ধরে যার জন্য তদ্বির করে আসছিল সেই সেই সুপারিশই সরকারের কাছে জমা পড়ে। ডিজেল পেট্রলের দামের সম্পূর্ণ বিনিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয় (৭)। শুনেছিলাম executive of the modern state is but a committee for managing the common affairs of the whole bourgeoisie । এরপর হয়তো বলতে হবে, the committees of the Indian state are but committees for managing the affairs of the big bourgeoisie under neoliberalism.

    যাইহোক, দ্বিতীয় যে প্রশ্নটি এরপরই উঠে আসছে, কিরিত পারিখের পরের কমিটি কী সুপারিশ করবে আশা (আশঙ্কা?) করা যায়? কিরিত পারিখ কমিটি কেরোসিন এলপিজির দামে ন্যূনতম সরকারি নিয়ন্ত্রণ রেখেছে। স্মরণ করুন এর দরুণ OMC -গুলোর ৫৩০০০ কোটি টাকার লোকসানের হচ্ছে বলে বেসরকারি ক্ষেত্র দারুণ উদ্বিগ্ন।

    অতএব যদিও আমরা জানি না এরপরের তেলের দামের কমিটি কবে বসবে একটি ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলা যায় যে কমিটি কেরোসিন ও এলপিজির দামের বিনিয়ন্ত্রণের কড়া সুপারিশ করছে। নইলে সেইসব সুপারিশ চেপে দেওয়া হবে বা পাতি অবজ্ঞা করা হবে।

    তৃতীয় প্রশ্নটি ভারতবর্ষের তেলের দাম নিয়ে সযত্নে তৈরি করা রূপকথা সম্পর্কিত। এই রূপকথাটির একটি জরুরি উপাদান হল তেলের (মানে পেট্রল, ডিজেল, কেরোসিন, এলপিজি) দামে সরকার বাহাদুর আমাদের বিপুল পরিমানে ভর্তুকি দিয়ে থাকেন। সরকারি ঘোষণা, সরকারি নীতি চর্চা বা সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করা হয় যে এই ভর্তুকি সরকারি OMC গুলোর ' under recovery ' হিসেবে দেখা দেয় ও সরকারি বাজেট ঘাটতিকে (আয় ও ব্যয়ের পার্থক্যকে) বাড়িয়ে তোলে। এই তর্কের পরের ধাপ হল, তেল ভর্তুকি দেশের মূল্যবান সম্পদের অপচয়। সরকারি আয় ব্যয়ের দিক থেকে দেখতে গেলে দীর্ঘকালীন পরিপ্রেক্ষিতে একে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ভর্তুকির কাট ছাঁট তাই দরকার। কীভাবে করা হবে? পেট্রোÌপণ্যের দামের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ সরিয়ে দিয়ে, যাতে মূল্য বাজারের চাহিদা-যোগান দিয়ে নির্ধারিত হয়।

    তেলের দাম নিয়ে মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার খবরের ওপর শুধু চোখ বোলালেই এই রূপকথাটি কত জনপ্রিয় মালুম হয়। গত বছরের Business Standard কাগজের একটি খবর বলছে OMC গুলোর ২৫০০০ কোটি টাকা under recovery হয়েছে। অঙ্কটিকে নাটকীয় করে তোলার জন্য লেখা হল, প্রতিদিন ৭৫ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে (৮)। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমেও একই ধরনের খবরের অভাব নেই (। বছরের প্রথমদিকে রয়টার্সের খবরে বিনিয়ন্ত্রণের গুরুত্বের কথা বলা হয় কেননা under recoveries -এর ভার নাকি বেদম হয়ে উঠছে (৯) । ২০০৮ সালে এক বিশেষ রিপোর্টে বিবিসি একই কথা বলে, প্রতিদিন ভারতীয় তেল কম্পানিগুলো ১০০ মিলিয়ন আমেরিকান ডলার লোকসান করছে বলে অনুমান করে (১০) । জুলাই ৬, ২০১০-এর সম্পাদকীয়তে The Financial Times ভর্তুকি ধীরে ধীরে সরিয়ে দিয়ে তেলের দামে সরকারি নিয়ন্ত্রণ হটানোর জন্য বলে (১১)। এধরনের সুপারিশ শুধু মিডিয়া রিপোর্টে নয়, বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার সরকারের নীতি বিশেষজ্ঞরা একই কথা পুনরাবৃত্তি করে যাচ্ছেন। Organization for Economic Cooperation and Development (OECD) -এর International Energy Association (IEA) ২০০৬ থেকে গবেষণা পত্রের একটি সিরিজ প্রকাশ করছে (১২) যাতে under recoveries জন্য OMC গুলোর বাড়তে থাকা খরচের ভারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় ও তেলের দামের বিনিয়ন্ত্রণের জন্য ওকালতি করা হয় (১৩) ।

    তেলের দামের জটিল বিষয়টিকে ভালভাবে পরীক্ষা নীরিক্ষা করার জন্য নীচের প্রশ্ন কয়েকটিকে বিচার করে দেখা দরকার। সরকার কি সত্যিই পেট্রলিয়াম পণ্যে ভর্তুকি দিচ্ছে? OMC গুলোর under recoveries কে কি ভর্তুকি হিসেবে ধরা যায়? Under recoveries -এর মানে ঠিক কী? পেট্রল ডিজেল দামের বিনিয়ন্ত্রণের পরে বেসরকারী ক্ষেত্রের মহোৎসবের কারণ কী? প্রশ্নগুলো বোঝার জন্য আমরা আর্থ-রাজনীতিক দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করে এগোবো, মানে বিশেষজ্ঞদের মতামত, সরকারী নীতিপরিবর্তন, সংবাদ মাধ্যমের সংবাদ পরিবেষণের পেছনে অন্তর্নিহিত শ্রেণীস্বার্থকে বোঝার চেষ্টা করব। বিভিন্ন দিকগুলো পরীক্ষা করলে দেখা যাবে নীতি পরিবর্তনের জটিল কাঠামো ও বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের পেছনে একটি সহজ কারণ কাজ করছে: বেসরকারী ক্ষেত্রের আরো বেশি মুনাফা (১৪)।

    তেল শিল্প: কাঠামো ও দাম
    OMC গুলোর তথাকথিত under recoveries -এর মানে বোঝার জন্য ভারতের তেল শিল্পের কাঠামো বুঝে নেওয়া দরকার। শিল্পটি শুরু হয় যাকে বিশেষজ্ঞরা বলেন upstream -এ। সব পেট্রলিয়াম পণ্যের মূল অপরিশোধিত তেলের ( crude oil ), এখানে খোঁজ ও উৎপাদন হয়। Upstream ক্ষেত্রে যে প্রধান সরকারী মালিকানার কম্পানিগুলো আছে তারা হল ও এন জি সি (Oil and Natural Gas Corporation Ltd.) , ও আই এল (Oil India Ltd.) ; বেসরকারি ক্ষেত্র কম্পানিগুলি রয়েছে, রিলায়েন্স, কেয়ার্ন এনার্জি, এইচ ও ই সি (Hindustan Oil Exploration Company Ltd.) , প্রিমিয়ার অয়েল।

    Upstream ক্ষেত্রের উৎপাদন, অপরিশোধিত তেল, downstream ক্ষেত্রে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়। Downstream ক্ষেত্রের কাজ তেল পরিশোধন করে পেট্রোÌপণ্য (পেট্রল, ডিজেল, কেরোসিন, এলপিজি) তৈরি করা, সেগুলো বিক্রীর ব্যবস্থা করা, তেলের পাইপলাইন বসানো ও রক্ষণাবেক্ষণ। প্রধান সরকারী downstream কম্পানিগুলো হচ্ছে, আই ও সি এল( Indian Oil Corporation Ltd. ), এইচ পি সি এল ( Hindustan Petroleum Corporation Ltd. ), বি পি সি এল ( Bharat Petroleum Corporation Ltd. ), এম আর পি এল ( Mangalore Refinery and Petroleum Ltd. )। বেসরকারী কম্পানীগুলোর মধ্যে আছে রিলায়েন্স, এসার, শেল।

    Upstream ও downstream ক্ষেত্রের এই বিভাজন একগুচ্ছ বিভিন্ন ধরনের দামের সৃষ্টি করে। যেমন অপরিশোধিত তেলের দাম ও রিফাইনারি গেটের দাম। প্রথমটি রিফাইনারির মালিক অপরিশোধিত তেলের জন্য দিচ্ছে (বিদেশ থেকে আমদানী করা ক্রুড বা দেশীয় ক্রুডের জন্য)। রিফাইনারি দ্বিতীয় দামে পরিশোধিত তেল পরের পর্যায়ে বিক্রি করছে। ২০০৮-০৯ সালে ভারতবর্ষের মোট ক্রুড চাহিদার ৮০% আমদানী দিয়ে মিটেছিল। এই পথ দিয়ে আন্তর্জাতিক দাম দেশীয় অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে।

    শিল্পের শেষ পর্যায়ে আছে ক্রেতার সাথে যোগরক্ষাকারী ক্ষেত্র, যা খুচরো ব্যবসার জন্য পেট্রোËপণ্যের পরিবহণ ও বিতরণের ভার নেয়। প্রধান সরকারী কম্পানিগুলো হচ্ছে গেইল ইন্ডিয়া লিমিটেড (GAIL) , আই ও সি এল; প্রধান বেসরকারী কম্পানি হল পেট্রোনেট ইন্ডিয়া লিমিটেড, যদিও রিলায়েন্স, এসার, শেল বাজারে ঢুকেছে। এই প্রসঙ্গে তৃতীয় দফা দামের কথা আমরা বলতে পারি, যাকে বলে প্রাক-কর দাম ( pre-tax price )। মার্কেটিং, মজুত ও পরিবহণ খরচ রিফাইনারি গেটের দামের সাথে যোগ করে এই দামটি বার করা যায়। এক্সাইজ ডিউটি (কেন্দ্র সরকারের বসানো একটি কর) এবং বিক্রয় কর (রাজ্য সরকারের) প্রাক-কর দামের সাথে যোগ করে অন্তিম দাম মানে খুচরো দাম আসে। খুচরো দামই আমরা পেট্রল পাম্পে দিয়ে থাকি।

    সংক্ষেপে: পেট্রপণ্যের খুচরো দাম = অপরিশোধিত তেলের দাম + মুনাফা + বিপণন, মজুত খরচ + মুনাফা + বিতরণ খরচ + ডিলারের মুনাফা + বিভিন্ন কর।

    পেট্রল: দামের উপাদান
    বিষয়টিকে পরিস্কার করার জন্য ও বিভিন্ন দামের হিসেবপত্র বোঝানোর জন্য একটি উদাহরণ নেওয়া যাক। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে অপরিশোধিত তেলের আন্তর্জাতিক গড় দাম ( FOB ) ছিল ৬৪.৬১৮ মার্কিন ডলার প্রতি ব্যারেল, মানে ১৯.৮৭ প্রতি লিটার। এখানে আমরা সেই সময়ের ডলার ও ভারতীয় টাকার বিনিময় মূল্য: ৪৮.৮৩ টাকায় এক ডলার ব্যবহার করেছি (১৫) । দুটো জিনিষ মনে রাখতে হবে। এক, ২০০৮-০৯-এ ভারত তার মোট অপরিশোধিত তেল চাহিদার ৮০% আমদানী করে। দুই, অপরিশোধিত তেলের আমদানীর ওপর কোনো সীমা কর (কাস্টমস ডিউটি) নেই (১৬)। তাই অপরিশোধিত তেলের দাম ১৯.৮৭ প্রতি লিটার ধরে নেওয়া যেতে পারে (১৭) ।
    আগস্ট, ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়াম মন্ত্রী মুরলী দেওরা লোকসভাকে একটি লিখিত বিবৃতিতে জানান, 'দিল্লীতে প্রতি লিটার ৪৪.৬৩ টাকা পেট্রলের দামের মধ্যে ১৩.৭৫ টাকা এক্সাইজ ডিউটি ও ৭.৪৪ টাকা বিক্রয় কর রয়েছে (১৮)।' সুতরাং দিল্লীর খুচরো দামের (৪৪.৬৩ টাকা প্রতি লিটার) ও প্রাক-কর দামের (২৩.৪৪ টাকা প্রতি লিটার) একটা ধারণা পাওয়া গেল।

    যতদূর আমরা জানি, পেট্রোÌপণ্যের রিফাইনারি গেটের দামের তথ্য সাধারন মানুষের কাছে নেই, তাই এর নিখুঁত ধারনা দিতে পারব না। তবে জনসমক্ষে যা তথ্য আছে তার ভিত্তিতে একটা মোটামুটি আন্দাজ করা যেতে পারে। নভেম্বর ২০০৬ সালে প্রকাশিত OMC -গুলোর খরচের কাঠামো সম্পর্কিত একটি রিপোর্ট থেকে পাচ্ছি OMC -গুলোর গড় পরিচালন খরচ ( operational and function cost, excluding labour cost ) প্রতি লিটার ১.৯ টাকা পড়ে। যদি এই খরচকে পেট্রলের প্রাক-কর দাম (২৩.৪৪ প্রতি লিটার) থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয় তাহলে রিফাইনারি গেটে দামের একটা আন্দাজ পাওয়া যাবে যা এক্ষেত্রে আসছে ২১.৫৪ প্রতি লিটার। প্রথম ও দ্বিতীয় চিত্রে এই তথ্যগুলো সাজিয়ে দেওয়া হল।

    Under recoveries -এর মানে কী ও তার তাৎপর্য কী ? থাকবে পরের পর্বে।
    সূত্র:
    (1) http://www.pib.nic.in/release/release.asp?relid=62834
    (2)কয়েকটি খবরের কাগজ লিখছে যে ডিজেলের দাম পুরোপুরি বিনিয়ন্ত্রণ হয়নি (http://timesofindia.indiatimes.com/business/india-business/Diesel-prices-will-also-be-decontrolled-Manmohan-Singh/articleshow/6105123.cms)। এটা আমাদের মতে ভুল। সরকারি প্রেস বিজ্ঞপ্তীর (http://www.pib.nic.in/release/release.asp?relid=62834) প্রথম প্যারাগ্রাফ জানাচ্ছে,“In the light of Government’s budgetary constraints and the growing imperative for fiscal consolidation , and the need for allocating more funds to social sector schemes for the common man , the Government has decided that the pricing of Petrol and Diesel both at the refinery gate and the retail level will be market-determined.”। পরের বাক্যটিকে খবরের কাগজওয়ালারা তুলে নিয়েছে : “However , in respect of Diesel , the initial increase in retail selling price of Diesel will be Rs. 2 per litre at Delhi , with corresponding increases in other parts of the country. Further increases will be made by the Public Sector Oil Marketing Companies ( OMCs ) in consultation with the Ministry of Petroleum & Natural Gas.” অর্থাৎ এটা সত্যি যে ২ টাকার বেশি ডিজেলের দাম বাড়লে সরকারি সম্মতি দরকার পড়বে। কিন্তু এটা নিছক কথার কথা কেননা তেলের বাজার নির্ধারিত খুচরো দামের নীতি ইতিমধ্যে গ্রহণ করে নেওয়া হয়েছে।
    (3) http://blogs.wsj.com/indiarealtime/2010/05/20/governments-price-rise-gives-gas-to-oil-stocks/
    (4) http://www.deccanherald.com/content/77473/under-recoveries-remain-high-despite.html
    (5) http://petroleum.nic.in/Report1.pdf
    (6) http://petroleum.nic.in/reportprice.pdf
    (7)এই বছরের বাজেট নিয়ে লিখতে গিয়ে দেবর্ষি দাস লক্ষ্য করেছিলেন সরকার পেট্রপণ্যের বিনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পুঁজীপতিদের মুনাফাবৃদ্ধি করতে বেশি উৎসাহী: http://sanhati.com/excerpted/2205/
    (8) http://www.business-standard.com/india/news/psu-oil-companies-may-lose-rs-25000-crunder-recovery/369561/
    (9) http://in.reuters.com/article/idINIndia-48367020100510
    (10) http://news.bbc.co.uk/2/hi/7430784.stm
    (11) http://www.ft.com/cms/s/0/44586cac-8930-11df-8ecd-00144feab49a,s01=1.html
    (12) http://www.iea.org/work/2006/gb/papers/petroleum_product_pricing.pdf
    (13) http://www.iea.org/papers/2009/petroleum_pricing.pdf
    (14)এই প্রবন্ধে উল্লেখিত কয়েকটি বিষয় সূর্য সেঠি তাঁর বাজেট বিশ্লেষণে ইতিমধ্যে তুলেছেন (“AnalysingtheParikhCommitteeReportonPricingofPetroleumProducts,”EconomicandPoliticalWeekly, March27, 2010)
    (15)আন্তর্জাতিক অপরিশোধিত তেলের দাম ও পেট্রপণ্যের মূল্যের তথ্য এখানে পাওয়া যাবে: http://www.eia.doe.gov/emeu/international/prices.html#Motor
    (16)প্যারাগ্রাফ ৪.৪৩, কিরিত পারিখ কমিটি রিপোর্ট।
    (17)আরেকটু নিখুঁতভাবে বলতে গেলে মালের বীমাখরচ, ভাড়া, পরিবহণ বাবদ লোকসানকেও ধরা উচিত। তবে এসব খরচ মিলে মোট ৫০ টাকা প্রতি টন পড়ে (http://www.projectsmonitor.com/detailnews.asp?newsid=9540)।] যেহেতু বর্তমান হিসেবের পক্ষে খুব বড় অঙ্ক নয় তাই বাদ দিচ্ছি।
    (18) http://www.expressindia.com/latest-news/Kerosene-LPG-prices-lowest-in-India-Govt/498859/




    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০২ আগস্ট ২০১০ | ১৫০০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন