এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  অপর বাংলা

  • বাঙালির দ্বিধা

    খোন্দকার আশরাফ হোসেন লেখকের গ্রাহক হোন
    অপর বাংলা | ২৮ মার্চ ২০১১ | ১০২৩ বার পঠিত
  • বাঙালি জাতির নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যেই এক ধরনের বৈপরীত্য আছে বলে মনে হয়। অভিন্নতা বাঙালির স্বভাবগত; তার চেহারায়, চলনে-বলনে, ভাষিক আচরণে ও সহবতে বাঙালি কখনো এক রকম নয়। একজন পাঞ্জাবিকে চেনা যায় তার আর্যনরগোষ্ঠীসুলভ উন্নতনাসা, গৌরবর্ণ এবং দীর্ঘাঙ্গতার নিরিখে; একজন পাঠান স্বত:প্রমাণিত তার উচ্চমন্যতা ও জিগীষায়; য়ুরোপীয় নর্ডিক জনগোষ্ঠীর রক্তের ভেতরকার লোলুপতা ও দার্ঢ্য শতসভ্যতার পালিশেও পুরোপুরি ঢাকা পড়েনি; অ্যাংলো-স্যাক্সনদের স্বভাবগত স্বল্পবাকতা ভূমধ্যসাগরীয়দের উচ্ছল প্রগলভতা থেকে দর্শনীয়ভাবে পৃথক। কিন্তু বাঙালিকে এক শব্দে ধারণ করা মুশকিল; তাকে পিনচিহ্নিত করা সমাজবিজ্ঞানী-নৃতাত্ত্বিকের নাইটমেয়ার। যে কোনো যুগ্মবৈপরীত্য (binary opposition) যথা উদার/অনুদার; উচ্চমন্য/হীনমন্য; বীর/কাপুরুষ; ক্ষুদ্রস্বার্থপর/ত্যাগী-আলট্র¦য়িস্ট; সাগরসন্ধানী/ বিবরবাসী; দীর্ঘাঙ্গ/ খর্বুটে; গৌরবর্ণ/ কপিশ; প্রতিহিংসাপরায়ণ/ ক্ষমাসুশীল; কুঁদুলে/ নিরীহ; ধর্মপরায়ণ/ ধর্শশীতল; সাম্প্রদায়িক/ মানবতন্ত্রী-- পুরোপুরি খেটে যায় বাঙালির বেলায়। বস্তুত বাঙালি কী নয় এবং কী, তার অনুসন্ধান একজন সন্ধিৎসুকে কানাওলার মতো ঘুরিয়ে মারতে পারে অনন্তকাল। বহু বৈপরীত্যের গোপন সঙ্গমে তুষ্ট বাঙালির মন; তার বহু বছরের সাধনার ধনও যুগল-বৈপরীত্যের দ্বিমুখী টানাপড়েনে প্রায়শই টলটলায়মান হয়ে ওঠে।

    বাঙালি হওয়াটা শুরুতে শ্লাঘার বস্তু ছিল না, এ রকম ইঙ্গিত নাকি বাঙালির আদিকাব্য চর্যাগীতিতে প্রাপ্য- "ভুসুকু তুই বঙালি ভইলি', এই উচ্চারণ আত্মপ্রশংসার নয়, অনুশোচনার। বস্তুত বাঙালিকে বাঙালি হয়ে ওঠার সংগ্রাম করতে হয়েছে নিরন্তর; তারও চেয়ে বেশি সংগ্রাম করতে হয়েছে বাঙালি হয়ে থাকার; এই দ্বিবিধ সংগ্রামেও বাঙালি হয়েছে দ্বিধাভক্ত, নিজের সঙ্গেই নিজে যুধ্যমান কখনো, কখনো পরাজিত নিজের কাছেই। সেই সংগ্রাম আজো যে চলছে, চারদিকে তাকালে তা টের পাই। বাতাসে ভেসে আসে এক অনতি ভবিষ্যতের অজাত সম্ভাবনার আশঙ্কায় গীত এক ধরনের আগাম অনুশোচনা--বাঙালি না থাকার: "একদিন বাঙালি ছিলাম রে'। বাঙালির যৌথ-নির্জ্ঞানে এই ভীতিটি চিরকালই ছিল বলে ধারণা করি।

    বাংলা ভাষার যে হাজার বছরের ইতিহাসের কথা বলা হয়, তার মধ্যে বাঙালির নিজস্ব পরিচয় অনুসন্ধানের পর্বটা খুব দীর্ঘ মনে হয় না। ইংরেজের এদেশে আগমন, কথিত বঙ্গীয় রেনেশাঁসের আলোক-উদ্ভাস এবং ইংরেজি শিক্ষার বিস্তারের আগে বাঙালির আত্মপরিচয় সন্ধানটি তীব্র হয়ে ওঠেনি। কৌতুককর যে, ঐ এক হাজার বছরের ইতিহাস বঙ্গে তুর্কি মুসলমানদের প্রবাদপ্রতিম ঝড়ো-প্রবেশের প্রায় সমস্থানীয়। এর আগে ভারতীয় সমাজে বঙ্গীয় অঞ্চলের অধিবাসীদের স্বাতন্ত্র্যসূচক তেমন কিছু ছিল না। জায়মান বাঙালি-কৌমে প্রথম দ্বিঘাত সমীকরণটি এনে দেয় হিন্দু-মুসলমান তথা তুর্কি-বঙ্গীয় এই যুগ্ম বৈপরীত্যটি।

    এই দুই ভিন্ন সংস্কৃতির ডবলপিস্টন-ঘূর্ণনে তুঙ্গ হয়ে ওঠে বাঙালিমানসের অভ্যন্তরীণ মন্থন প্রক্রিয়া। সেই থেকে কি ভাষায় কি সাহিত্যে এক পরাক্রান্ত দ্বিমুখী উন্মন্থন চলছে। যেহেতু দ্বিঘাতবিদরুদ্ধতাই প্রগতির চালিকা, বাঙালির মানস তীব্র গতিতে এগিয়েছে সামনের দিকে। বাঙালির সৌভাগ্য এবং দুর্ভাগ্যের কালসন্ধি ঐ দ্বাদশশতক, যখন বখতিয়ারাশ্ব খুরের আঘাতে

    উড়িয়েছিল গৌড়ের পাটলবর্ণ ধূলি। সেই থেকে আবর্তিত বাঙালির দ্বৈরথমানসের চাকা; শিল্পসাহিত্যে, রাজনীতি-সংস্কৃতিতে সর্বত্র সে ছুরির ফলার মতো, শীর্ষে এক, ধারে দুই; "হিন্দু না মুসলিম'-- এই জিজ্ঞাসায় মোহ্যমান; শতবার মিলিত হতে গিয়েও রূপকথার রাজকন্যা-রাজকুমারের মতো শয্যায়-বিদ্ধ তরবারির অলঙ্ঘনীয় বিরুদ্ধতায় বিহ্বল ও ব্যর্থ।

    সুলতানি আমলে বিকশিত হয়েছে বাংলা ভাষা। তৎসম-তদ্ভব শব্দভাণ্ডারের সঙ্গে এসে মিশেছে তুর্কি-আরবি শব্দাবলী। বাঙালির প্রকাশ ক্ষমতা পেয়েছে পরিসর এবং "যাবনী মিশাল' ভাষার উত্থানে সৃষ্ট হয়েছে এক ভাষিক দ্বৈরথ, যা আবার দ্বিধাভক্ত করেছে বাঙালিমানসকে। একদল নিজেদের ধর্মপরিচয়ের সূত্র ধরে আত্যন্তিক সংরক্ষণশীলতায় নিক্ষিপ্ত হয়েছে-- নদীয়ার নিমাইয়ের ঊর্ধ্ববাহু যতোই সংকীর্তনে উৎক্ষিপ্ত হয়েছে, ততোই তথাকথিত প্রেমের নদী সম্প্রদায়বিশেষের চোরাখালে প্রবেশ করে হয়েছে রুদ্ধগতি। অন্যদিকে অন্য দল বহুকাল পূর্বে ফেলে আসা ইরান-তুরানকে পিতৃভূমি ভেবে মশগুল হতে চেয়েছে খর্জুরবীথির স্বপ্নবিলাসে; প্রকাশের ভাষা হিসেবে অবলম্বন করতে চেয়েছে অবিমিশ্র বৈদেশিকী ভাষা। এদের লক্ষ্য করে মধ্যযুগের বাঙালি কবিকে উচ্চারণ করতে হয়েছে সেই অমর ধিক্কার; "যে জন বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী/ সে জন কাহার জন্ম নির্ণয় ন' জানি'।

    বস্তুত, রোমান দেবতা জেনাসের মতো বাঙালির দুটি মুখ এবং দুদিকে ফেরানো। রোম নগরীতে জেনাসের মন্দিরটি ছিল পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা; সেখানে দুটো দরজা, দুই দরজার মাঝখানে তার মূর্তি। মূর্তিটির দুটি মুখ: একটি তরুণ, একটি বৃদ্ধ। বাঙালির দ্বিমুখ-মূর্তি কষ্টকল্পিত নয়। একান্তভাবে বাঙালির দেবী কালী; ডানহাতে তার "খড়গ জ্বলে বাঁ-হাত করে শঙ্কারহণ/দুই নয়নে স্নেহের রাশি, ললাট নিত্য অগ্নিবরণ'। বাঙালি রবীন্দ্রনাথের দেশমাতৃকা-কল্পনা এই দ্বিধাকে মহিমান্বিত করলেও এর আয়রনিসঞ্জাত অর্থকে অস্বীকার করা যায় না। বাঙালি দ্রোহে উদ্দীপ্ত হয় তাড়াতাতড়ি, বাঙালির মন সোডার বোতলের মতো--

    নিত্য উত্তেজনার বিষবাষ্পে ফেনায়িত হতে সময় নেয় না, আবার নেতিয়ে পড়ে খুব শীঘ্র; তখন তাকে দেখে মনে হয় না কিয়ৎকাল আগেই সে সাগরের চলোর্মিকে পায়ে বেঁধেছিল। চিকিৎসাবিজ্ঞানে মনোবিকলনের, সিজোফ্রেনিয়ার যে বর্ণনা, তার সঙ্গে মিলে যায় বাঙালির স্বভাব। হ্যামলেটের মতো "to be or not to be, that is the question' এর দোলাচলে দোলায়িত হলেও পরক্ষণে তরবারি হাতে সে দাঁড়িয়ে যেতে পারে "to oppose the sea of troubles.' ওথেলো যেমন বলেছিল, সে সহজে ঈর্ষান্বিত হওয়ার লোক নয়, কিন্তু একবার ঐ আবেগ জাগ্রত হলে তা তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়, পন্টিক সাগর থেকে প্রপন্টিক তথা হেলেস্পন্ট প্রণালীর দিকে গর্জমান উত্তাল ঢেউ যেন। সিজাফ্রেনিয়ার রোগীর স্বভাবে দেখা যায় এমন দ্বিরাচার-- এই মুহূর্তে সে উদ্দীপিত, কর্মমুখর, অগ্রণী ও অনিরুদ্ধ, পরমুহূতেই শ্লথ, নীরব, নিস্পন্দ ও হতাশ। বাঙালির ইতিহাসে তার সগৌরব উত্থান ও নির্বিঘ্ন পতনের ক্রমাবর্তন সে ধরনের ইঙ্গিত দেয় বলেই ধারণা করি।

    বাঙালি ঐক্যের সাধনা করেছে বিভেদের সম্ভাবনা ও বাস্তবতাকে মান্য করেই। বাংলার আউল-বাউল-ফকিরদের সাধনা ছিল ভক্তি দিয়ে বিভক্তিকে নিরসন করার। তাদের আরাধ্য যে "প্রভু নিরঞ্জন', তার ভেতরে মিলিয়ে যায় সকল বৈপরীত্য, ধর্ম-বর্ণ-শাস্ত্র-আচারের সকল ভেদ। বাউলের ভেদ-কথা এই অভেদতত্ত্বেরই মূলস্বরূপ। বাড়ির কাছে বসত করে যে পড়শি, তাকে সে দেখে না, কিন্তু অনুভব করে তার উপস্থিতি। "সে আর লালন এক ঘরে রয়/তবু লক্ষ যোজন পারে' একটি আক্ষেপ, একটি স্বীকৃতি সেই মৌলিক প্যারাডক্সের। তবু খাঁচার ভেতরে পাখিটি তো নিত্য আসে-যায়, সে কি আর অচিন থাকতে পারে? ভক্তির আন্দোলনে বাঙালি মিশিয়ে নিতে চেয়েছে তার অন্তর্গত বিভেদকে, কিন্তু কালে বোঝা গেছে সে সাধনা হয়েছে ব্যর্থ। তবু বাঙালি কখনো দুই জাতি ছিল না, কখনো হবে না দুই জাতি; সে দ্বিধাবিভক্ত জাতি, বহু অর্থে দ্বিধান্বিত জাতি, যদিও তার সংগ্রাম চলছে দ্বিধাহীন হওয়ার। ঐক্যবদ্ধ এবং দ্বিধাহীন বাঙালিত্বের স্বপ্ন দেখেছিলেন চিত্তরঞ্জন দাশ, সুভাষচন্দ্র বসু, নজরুল ইসলাম-- রবীন্দ্রনাথও। শেষোক্তজন মিলিত ভারতবর্ষের মহামানবের সাগরতীরের ঊর্মিমুখরতার মধ্যে বাঙালির মিলিত কণ্ঠস্বরটি মেলাতে চেয়েছিলেন; কিন্তু সেই রকম বিশাল ঐক্য অধরাই থেকে গেছে। পাকিস্তান আন্দোলন ছিল বাঙালির দ্বিধাকে আত্মদ্বিখণ্ডনের দিকে নিয়ে যাওয়া, জেনাসের দুই মুখকে চিরকালের জন্য দুই দিকে ফিরিয়ে দেওয়া। তখনই সামনে এসেছিল সংখ্যাগুরু/সংখ্যালঘুর দ্বিঘাত-বৈপরীত্যটি, যা কালক্রমে ঘুলিয়ে তুলেছে সাম্প্রদায়িকতার পাঁক। বাঙালি হিন্দু ও বাঙালি মুসলমান পৃথকভাবে সন্ধান করেছে আত্মউন্নতির। কিন্তু যারা ছিলেন প্রাজ্ঞ, যারা ছিলেন বাঙালি জাতির মিলনসন্ধানী, তারা মনে করিয়ে দিয়েছেন ঐক্যের কথা, কিন্তু সেও ঐ ভেদরেখাকে ধরে নিয়েই: "মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান'। কিন্তু বোঁটা ছিঁড়তে সময় লাগেনি; জন্ম নিয়েছে পাকিস্তান, শয্যায়-বিদ্ধ তরবারির দুই পাশে মিলনাকাঙ্খী বাঙালির দুই অর্ধাংশ; কিন্তু তাদের অব্যবহিত অতীতের দু:খগুলো ছিল এমন পিছল, তাদের মিলতে দেয়নি আর কখনো।

    পুরো পাক-আমলে বাঙালি মুসলমানকে বোঝানো হয়েছে, তুমি বাঙালি নও, মুসলমান। আয়রনিটা হলো, বিভাগপূর্ব বঙ্গদেশেও হিন্দুরা মুসলমানকে বলেছে, তুমি মুসলমান, বাঙালি নও। তাই বাঙালি মুসলমানকে নিরন্তর সাধনা করতে হয়েছে বাঙালি হওয়ার এবং বাঙালি থাকার। পূর্ব পাকিস্তানে এই বাঙালিত্বের সংগ্রামটি অচিরে রূপ নিয়েছে ভাষার সংগ্রামে, কেননা বাংলা ভাষাই বাঙালি পরিচয়ের জীয়নকাঠি। বাঙালিত্বের পরিচয়কে আঁকড়ে ধরার জন্য এই ভূখণ্ডের মুসলমানরা সন্তানের নাম রেখেছে আদিত্য কবির কিংবা অর্পিতা শাহরিয়ার কিংবা মানসী মনসুর। এক পর্যায়ে যখন আঘাত এসেছে বাঙালি সংস্কৃতির ওপর, আঁকড়ে ধরেছে কাণ্ডারি রবীন্দ্রনাথকে, তার গানকে। চেতনায় লালন করেছে "আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি'। আয়োজন করতে হয়েছে পয়লা বৈশাখ, বসন্ত উৎসবের মতো অসাম্প্রদায়িক মিলনানুষ্ঠানের। পশ্চিম বঙ্গের বাঙালিদের এই পরীক্ষা দিতে হয়নি: বাঙালি থাকার আদ্যোপান্ত, কোশেশ করতে হয়নি তাকে, কেননা হিন্দু বাঙালির বাঙালিত্ব যেন স্বত:সিদ্ধ ও স্বয়ম্প্রমাণিত। কিন্তু পূর্ব বাংলার মুসলিম বাঙালিকে প্রাণপণে প্রমাণ দিতে হয়েছে সে বাঙালি, নিজের কাছেও। তাই তার শহীদ মিনার, তাই তার একাত্তর, তাই অনিবার্য স্বপ্ন দেখা ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ এক বাঙালি হওয়ার। এই স্বপ্নের দ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু, এই স্বপ্নেরই বাস্তবায়ন স্বাধীন বাংলাদেশ। কিন্তু তবু দ্বিঘাতবিরুদ্ধতা যে নিরাকৃত হয়নি তার প্রমাণ তো আমরা পাচ্ছি নিত্যদিন। নতুন করে ফেনায়িত হচ্ছে সাম্প্রদায়িক ভেদচিন্তা। বাংলা ভাষা নিয়ে বাঙালির দ্বিধা দুই বাংলাতেই প্রবল হয়েছে সাম্প্রতিক; পশ্চিমবঙ্গে শুনেছি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাংলার বদলে প্রথম শ্রেণী থেকে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা প্রবর্তন করে নাকি বাঙালিরা গর্ব করে বলছে, আরেকটি ভাষা আন্দোলন সম্পন্ন করলাম! আমাদের এই দেশে আ-মরি বাংলা ভাষা গাইতে ভুল না করলেও জীবনে ও ধ্যানে মান্য করছি ইংরেজির একমেব স্বৈরাচার।

    বাঙালির দ্বিচারিতা এখন কপটতার রূপ নিয়েছে, ভাষায় যেমন, রাজনীতিতেও তেমনি, এমনকি ধর্মাচরণেও। পহেলা বৈশাখে উৎসব করি, আবার নিখাদ সাম্প্রদায়িক হিংসাতেও আমরা দড়। আমরা ধর্ম এবং জিরাফ দুটোকেই করেছি আমাদের যুগপৎ বাহন। হাজার বছরের বাঙালির মুখ এখন শুধু জেনাসের মতো দুদিকে ফেরানো নয়, সে মুখ কিম্ভূত ও কদাকার। নিজের দ্বিখণ্ডিত অস্তিত্বের সামনে নিথর হয়ে বসে আছে বিমূঢ় বাঙালি।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • অপর বাংলা | ২৮ মার্চ ২০১১ | ১০২৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন