জোনাকির গ্রামে আজ পর্যন্ত বাসের রাস্তা তৈরি হয়নি। কোথাও যেতে হলে বেশ খানিকটা হেটে বড় রাস্তায় এসে বাসের জন্যে গাছের তলায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। ধুলো ও বর্ষার কাদামাখা পা খানা বট গাছের তলায় চাপা কলের জলে ধুতে ধুতে বার বার ঘাড় উঁচু করে দেখতে হয় জোনালি নামে গুয়াহাটি যাওয়ার বাসটা আসছে কি না ! কোন কারনে জোনালি এসে না পৌঁছালে ম্লানমুখে বাড়ি ফিরে যেতে হয়। বাসে বসার কথা কেউ ভাবে না। হাঁস-মুরগি,শুকনো মাছ ,মাগুর-কই মাছের টিন, শুকনো পাটের দম বন্ধ করা বাসে দাঁড়াতে পারাটাই পরম সৌভাগ্যের বিষয়। অবশ্য বিশেষ কাজ না থাকলে কেউ ই গ্রামের বাইরে যাওয়ার কথা চিন্তাও করে না।
জোনাকিও গ্রাম থেকে কোথাও যাবার কথা ভাবে না। ওর মা মারা গেছেন। বাবার থাকা না থাকা একই কথা। হাঁপানিতে জাবড়ে ফেলা মানুষটা সিড়িতে বসে থাকে ও হাপরের মত শ্বাস ফেলে। দাদার তিনটি ছেলে মেয়ে। জোনাকির পর ভাইবোন চারটি ,বাড়ির উপার্জন বলতে তো ঐ এক টুকরোএক ফসলি জমি। ছাগল, হাঁস, মুরগি, মাঠ–দেখাশোনা করতে করতে ও ভুলে গেছে যে সে একটি পুর্ণ যুবতী হতে চলেছে। ওর আঁটো সাঁটো শরীরে ভরা বর্ষার উজান। চাঁপা রং-এ ঔজ্জ্বল্য এসেছে। জোনাকিদের গ্রামের রাস্তায় ধুলোতে বা কাদায় ভোটের সময় চাকার দাগ পড়ে। এবার কিন্তু ভোটের দামামা বাজতেই একদিন দুপুরে হুম হুম করে ছ খানা মিলিটারি ট্রাক ঢুকে পড়ল গ্রামে। ঠায় তিনদিন দাড়িয়ে রইল তারা গ্রাম আলো করে। গাড়িগুলো উগরে দিল একঝাক মিলিটারি সৈন্য। তাঁবু খাটিয়ে ওরা দিব্য সংসার পাতল। সারা দিনরাত জুতোর খট খট আওয়াজ তুলে গ্রাম পাহারা দেয়া চলল।
সেদিন জোনাকি রাতে খাবার জন্য ঢেঁকি শাক তুলতে বাড়ির পেছনে কলা বাগান ছাড়িয়ে পুব দিকের জঙ্গলে গিয়ে ঢুকেছিল। চাল কম , কোন সব্জিও নেই – কী দিয়ে সকলের পাতে ভাত দেবে? একবার খাওয়া শেষ হলেই আর একবারের চিন্তা। শাকগুলো খুঁটে খুঁটে তুলে আনছিল। শাক খুঁজতে খুঁজতে অনেকদূর চলে গিয়েছিল সে। এতগুলো হাঁ মুখ জোগান দিতে হবে তো? বেশ অন্ধকার হয়ে এসেছে, দ্রুত পা চালাল সে। পেছনে একটি অচেনা আবছা অবয়ব দেখে প্রায় ছুটতে লাগল সে। কিন্তু ওর পা আর কতটা গতি পেতে পারে? ও কিছু বোঝবার আগেই যা ঘটবার ঘটে গেল, মুহূর্তে ওর সতের বছরের কোমল শরীর লুটিয়ে পড়ল অন্ধকার কলা বাগানে। কারোর পায়ের ত্রস্ত শব্দ শুনে শয়তানটি দৌড়ে পালিয়ে গেল। আর মাটির ঘাসকে খামচে ধরে নিশ্চল বসে রইল জোনাকি। নিকষ কাল অন্ধকার , মাথার ওপর শা শা করে উড়ে গেল বাদুড় ,শেয়াল কঁকিয়ে উঠল – পেঁচার কর্কশ স্বরে কেঁপে উঠল বিশ্ব চরাচর।
বড়দাদা আরও কিছু মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে খুজতে খুঁজতে সেখানে উপস্থিত হয়ে নিশ্চল পাথর প্রতিমার দিকে তাকিয় রইল অবাক হয়ে। সঙ্গের লোকজনের পায়ে পড়ে দাদা বলল –‘এই কথা যেন কিছুতেই পাঁচ কান না হয়।’
দাদা যতই বলুক, আর যতই মানুষের পায়ে পড়ুক, খবর আগুনের মত ছড়িয়ে পড়ল গোটা গ্রামে। ঘরে ঘরে ফিস্ ফিস্। বউ-ঝিদের ঘর থেকে বেরনো বন্ধ হল। দাদা-বউদির শাপ শাপান্ত অতিষ্ঠ করে তুলল জোনাকির জীবন। ভাই-বোন, ভাইঝি-ভাইপোরা দূর থেকে ওকে দেখে সরে যায়।
সেদিন হঠাৎ- ই ওর কাছে এসে দাঁড়াল বড়দাদা, ‘এক কাপ চা দিবি রে।’ কৌটোয় এক ফোঁটাও চা-পাতা নেই। সকালবেলায় ফোটান চা-পাতার ওপরে জল ঢেলে দাদাকে চা করে দিল, চিৎকার করে উঠল দাদা---‘এটা কী দিয়েছিস?’ পাগলের মত চিৎকার করে এক ঘা বসিয়ে দিল জোনাকির পিঠে। কঁকিয়ে উঠল সে, ‘বনে জঙ্গলে গিয়ে মরেছিলি কী করতে?’ দিনে রাতে এই শাপ শাপান্ত ওর বুকে পিঠে কালশিটে দাগ এঁকে দিচ্ছিল। হঠাৎ সদর দরজায় খট খট শব্দে শুনে চোখ তুলে তাকিয়ে দেখল মহাজন বাড়িতে ঢুকছে।
সমস্ত গ্রামের মধ্যে সবচেয়ে অর্থবান ব্যক্তি হল মহাজন। গ্রামে একটি বড় দোকান, তাতে সুঁচ থেকে তাঁতের সাজ-সরঞ্জাম সব কিছুই পাওয়া যায়। শহরেও দুটো দোকান আছে। পরিবার-পরিজন শহরেই থাকে, গ্রামের বাড়িতে ধান বপন করার সময় কিছুদিন এসে থাকে। এইরকম একটি লোক বাড়িতে আসায় বাড়িতে আশঙ্কার ছায়া পড়ল। কেন এসেছে মহাজন? এই প্রশ্ন সকলের মনে ঘুরতে লাগল ! কী কারণে এল ?
মহাজন এসে চাতালে বসল। গৌরচন্দ্রিকা না করেই সে বলল, ‘...তোর বোনের কথা শহরের যে জায়গাগুলোতে জানানো দরকার সব জায়গাতেই জানিয়েছি।’
ভেতরে জোনাকি ও বড়-বউ ,বাইরে উঠানে মহাজনের পায়ের কাছে বসে থাকা দাদা চম্কে উঠল এই কথা শুনে। হাত জোড় করে দাদা বলল, ‘মহাজন, যা হয়েছে হয়েছে। গলা পচা ঘা আর খুঁটবেন না। মেয়েমানুষ। ভগবান জানে ওর কপালে কী আছে!'
মহাজন স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বড়দাদার কাছে এসে ফিশ ফিশ করে বলল, ‘কী আকাটের মত কথা বলিস? সরকারের কাছে দরবার করা হয়েছে। জানানো হয়েছে।’
‘বস, বস, তুই এত বুঝবি না। শুধু এটুকু জেনে রাখ, শহরের বড় বড় লোকেরা তোর বোনের অপমান নিজের অপমান বলে মনে করছে।’
- ‘না, না , এরকম করবেন না। কথাটা এখন গ্রামের মানুষের মধ্যে আছে, আর বেশি জানাজানি হলে আমার কপালে কী ঘটবে জানি না।’
এবার গঙ্গা মহাজন দাদার পিঠের কুঁজে হাত রেখে। চোখ টিপে বলল, ‘বুঝেছিস, সরকারের কাছ থেকে টাকা পয়সা পাবি। বুঝেছিস তো? ভাল টাকাই আদায় করতে পারবি।’ যাওয়ার আগে মহাজন দাদার হাতে একশটা টাকা গুঁজে দিয়ে বলল, ‘শহরের থেকে মানুষজন আসবে – বসার জন্যে দু-একটা মোড়া, জলচৌকি জোগাড় করে রাখিস।’
বড়দাদা দুটো মোড়া পাশের বাড়ি থেকে চেয়ে আনার আগেই সত্যি শহর থেকে দু-তিনটে যুবক এসে হাজির হল – বসার জন্য চাতালে পাটি পেতে দিয়ে বড়দাদা বিব্রত হয়ে দাড়িয়ে রইল, হাতজোড় করে। যেন মহা অপরাধী। শান্ত, ভদ্রভাবে কিছু কথা জিজ্ঞেস করার পর ওরা জোনাকিকে ডাকল। ওরা জোনাকির ফটো তুলবে। ঘরের ভেতর জোনাকি কেঁপে উঠল। ছবি তুলবে? গতবার মেলায় গিয়ে কমলা, ভাদৈ, রূপাদের সঙ্গে কথা ছিল ছবি তোলার। কত যত্ন করে হাঁস–মুরগি বিক্রির টাকা কটা জমিয়ে রেখে ছিল। বড় ভাইপোটার পেট খারাপ হওয়ায় জমান পয়সা সব কটা বেরিয়ে গিয়েছিল। বড় কষ্ট হয়েছিল ওর। ভাদৈদের কাছে ওদের তোলা ছবি কতবার চেয়ে চেয়ে দেখেছে।
ছেলেগুলো সত্যি ক্যামেরা বার করে খটাখট ছবি তুলতে লাগল। ওরা নানা রকম প্রশ্নও করতে লাগল, জোনাকি হ্যাঁ ,না করে কোনমতে এড়িয়ে গেল। বেশির ভাগ উত্তরই দিয়ে দিল মহাজন।
জোনাকি কিছুই বুঝতে পারছে না। সকালের খাবারের পর রাতে কতটা চাল রইল সেই চিন্তাতেই দিন কাটে ওর --- এর বাইরে অন্য কথা চিন্তা করার সময় কোথায় ওর ! বড়দাদা দুটো মোড়া কিনে আনার তিন দিনের মধ্যে শহর থেকে চারজন মহিলা সাদা গাড়িতে করে মহাজনের সঙ্গে এসে উপস্থিত হল। সেই মহিলাদের দল যেদিন এলো সেদিন বৌদি, জেতুকি দিদির ঘর থেকে ওষুদ এনে খাইয়েছিল জোনাকিকে – কী জানি কী হয় ?
মাথাটা কেমন ঘুরছে। আলুথালু ভাবে সে এসে দাঁড়িয়েছিল লোকগুলোর কাছে। আগেরদিনের মতই মহাজন সব উত্তর দেয়ার দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছিল। ওরা জোনাকিকে একশ টাকা ও একটি মেখলা চাদর দিল। যাবার সময় ওরা ওকে একটি খবরের কাগজ দিয়ে গেল। খবরের কাগজ পড়ার মত বিদ্যে ওর নেই , পাঠশালায় এক বছরও পুরো যেতে পারেনি। খবরের কাগজের প্রথম পাতাতেই বড় করে ওর ছবি দেয়া। কি ফর্সা লাগছে, চোখ দুটো দীঘল টানা–টানা, কী সুন্দর! নিজেই নিজেকে দেখে মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছে। গালের আঁচিলটি না থাকলে ও নিজেকে চিনতেই পারত না। ও কি এত সুন্দর! আয়নায় নিজেকে কখনো দেখেছে কি?
এর পর এলেন কয়েকজন ধুতিপরা লোক ও তিনজন বয়স্ক মহিলা। ক্যামেরা বের করে ছবি তুললেন। কথা বললেন । আবারও মহাজন ওর হয়ে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিল । এদের মধ্যে একজন ভদ্রমহিলা - ও শহরে যেতে ইচ্ছুক কিনা জানতে চাইল। কোন একটা সংস্থায় ওর কাজের ব্যবস্থা করে দেবার কথাও বলল। বউদি, আট মাসের পোয়াতি, এই অবস্থায় ওকে ছেড়ে যাওয়ার উপায় নেই ওর।
বউদির একটা ছেলে হল। অশৌচ ঘর তোলা, ঘরদোর, মাঠের কাজ করতে করতেই দাদার শূন্য ধানের গোলা আবার কী করে ভরে উঠল সেটা আর জিজ্ঞেস করা হল না! জিজ্ঞেস করলেই বা কে ওর কথার জবাব দেবে? আর জবাব দিলেই বা ওর কি বোঝার সাধ্য আছে? ওর ঘটনাটা নিয়ে কোর্টে কেস দায়ের করা হয়েছে। যদি জিতে যায় তবে জয়ী দলটির ভাগ্য খুলে যাবে। গঙ্গা মহাজনের, দল থেকে টিকিট পাওয়া আটকায় কে? ওর কাছে আসা মহিলার দল ওর ছবি বুকে ঝুলিয়ে মৌন মিছিল করেছে শহরে। ওর কথা নিয়ে গল্প কবিতাও লেখা হয়েছে। ওর ঘটনা নিয়ে টিভিতে একটি মর্মস্পর্শী চিত্রায়নও হয়েছে।
অশৌচ শেষ, বউদি আবার পাকঘরে ঢুকল। ছেলেটি একমাস দুমাস পেরিয়ে তিন মাসে পড়ল। সে হাসতে শিখল। একদিন উপুড়ও হল। জোনাকির কাছে কেউ আর আসে না। মহাজনের দেওয়া ধানের চুবড়িতে ধান তলানিতে এসে ঠেকেছে।
ও আস্তে আস্তে দেখল জল আনতে গেলে বড় পুকুরের পাশে ছেলে মেয়েরা সুড়ুৎ করে পালিয়ে যায়। সেদিন সীতার বিয়েতে ওকে বাইরে পিঁড়ি পেতে খেতে দেয়া হল। ওর তো ছোঁয়াচে রোগ হয়েছে। কুমারি মেয়েরা সব সময় পালা করে নামঘর মোছে – সেখানেও ও বাতিলের খাতায়। বউদিদির খুড়তুতো ভাইয়ের সাথে ওর বিয়ে ঠিক হয়েছিল --- সেটাও নাকচ হয়ে গেছে।
এই খবরের কাটাছেঁড়ার মাঝখানেই দাদার চাতালে বড় নামঘরের ভোজ দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করার পরামর্শ দিয়ে গেল কেউ কেউ। দাদাও এই প্রস্তাব পেয়ে যেন বাঁচার পথ খুজে পেল। এই যে এতসব, সবই তো গঙ্গা মহাজনের জন্য। মহাজন সঙ্গে থাকলে কে কোন ছার? একদিন গ্রামের ভোগরাম খপ করে ওর হাত ধরে বলল, ‘গঙ্গা মহাজনই এগুলোর উদ্যোক্তা।’ দাদা খোঁচা খাওয়া সাপের মত ফোঁস করে উঠল!
এক ভীষণ ভয় জ্বরের মত কাঁপুনি দিল ওর শরীরে। বড়পুকুর কেন বাড়ির পেছনের চাঁপাকলার বাগানে যেতেই ওর বুক কেঁপে ওঠে। ভয় যেন ওকে তাড়া করে বেড়াতে লাগল। দাদা বউদির শাপ শাপান্ত বেড়েই চলল। ছোট ভাই বোনেরা হোক না হোক, কথায় কথায় ওকে গালাগালি করতে লাগল। চিন্তা করে কূল পায়না কী করে দাদা জরিমানা দেবে? কী করে দাদা মানুষকে ভোজ খাওয়াবে? খুদকুঁড়ো আছে বলে একবেলা হলেও সকলের পেটে খাওয়া যাচ্ছে , আর কদিন পর ঝুড়িতে থাকা তলানিটুকুও ফুরিয়ে যাবে। ও ঠিক কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না। তবে এ টুকু বুঝতে পারছে কিছু একটা পথ খুঁজে বার করতেই হবে। শহর থেকে যে দয়ালু লোকগুলো এসেছিল ওদের খুঁজে বার করতে হবে। ওর ফটো তুলছিল যে নম্র শান্ত যুবকগুলো ওদের সহমর্মিতার কথা ওর মনে পড়ল। ধুতিপরা বয়স্ক লোকেদের মা-জননী ডাক ওর কানে ভেসে এল। যে ভদ্রমহিলারা এসেছিলেন তারাই বা কোথায়? এবার গঙ্গা মহাজনকে আর দরকার নেই, ও-ই বলবে সব কথা, অন্তর উজাড় করে বলবে! যে দীর্ঘাঙ্গি মহিলাটি ওকে শহরে নিয়ে যেতে চেয়েছিল, উপযাচক হয়ে, তার সাথে ও যোগাযোগ করবে – এবং বলবে ও শহরে যেতে চায়। ও গ্রাম ছেড়ে চলে গেলে দাদাকে আর কেউ অত্যাচার করবে না ।
জোনাকি খুঁজে বার করতে চাইল ওদের সন্ধান – কোথায় থাকে ওরা – ওদের ঠিকানাই বা কী? গাড়িতে চড়ে যে মানুষগুলো এসে উদয় হয়েছিল তারাই বা কে? সারাদিন না খেয়ে পিড়িতে মাথা গুঁজে বসে থাকে জোনাকি। সন্ধে নামতেই ও খুঁজে খুঁজে মহাজনের বাড়িতে পৌছাল। মহাজনের ঘরে নেপালি চৌকিদার ছাড়া আর কেউ নেই। ঠিকই তো, এখন তো ধান পাকার সময় নয়। গঙ্গা মহাজন কেন থাকবে? সে শহরের বাড়িতে আছে। শহরে মহাজনের বাড়ি – কোথায় সে তো জানে না।
টাউনের বাসের হেণ্ডিম্যানের সঙ্গ ধরল সে। বাসে সারা শহর চষে বেড়ায় পরিমল। জোনাকির ধারনা ছিল ও নিশ্চয় জানবে ঠিকানা, গঙ্গা মহাজনের ঠিকানা। পরিমল যখন বলল ও গঙ্গা মহাজনের ঠিকানা জানে না তখন জোনাকি একটু দমে গেল।
একদিন ভোরের আকাশে আলো ফোটার আগেই ত্রস্ত পায়ে জোনাকি শহরের বাস ধরার জন্য গ্রাম ছাড়ল।
[ এরকম অচেনা জায়গায় একা একা যাওয়াটা যে কত ভয়ঙ্কর সেটা বোঝাবার জন্য জোনাকির কেউ ছিল না। আর কেউ বোঝালেই সে শহরে না গিয়ে আর কোথায়ই বা যাবে? ]
ছবি ঃ মৃগাঙ্কশেখর গাঙ্গুলি