এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • নিজভূমে পরবাসী?

    Arijit Hazra লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২২ অক্টোবর ২০১৭ | ১৮২৪ বার পঠিত
  • কালে কালে কত কিছুই হোল। ভাইফোঁটা ভাইদুজ হোল। কালীপুজো হোল দিওয়ালী। হিন্দিকে একটা যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় তৈরী হওয়া রাষ্ট্রের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপানোর প্রস্তাব দিয়ে যার শুরু, গোটা ভারতের ট্যাক্সপেয়ারের পয়সা দিয়ে তৈরী হওয়া দুরদর্শন, আকাশবাণী র "রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম", ডি ডি এক এ সপ্তাহন্তে বলিউড সিনেমা, হিন্দি ভাষা দিবস, সরকারী অফিসে হিন্দি ভাষা শেখানোর সহজ পদক্ষেপ গুলোর মধ্যে দিয়ে হিন্দি কে কার্যত পরিণত করা হোল প্যান-ইন্ডিয়ান লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা হিসেবে। অহিন্দি ভাষীরা হয়ে উঠলাম দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক।

    কতকগুলো ঘটনা গলায় কাঁটার মত বিঁধে আছে। এক এক করে বলি। এক আত্মীয়ের বাড়ি গেছি খড়গপুর। এক রেস্তোরায় (ওয়ার্ল্ড ডর্ফ) জায়গা বুক করার জন্য ফোন করলাম, উত্তর এলো "হিন্দি মে বাতাইয়ে বাংলা নাহি আতা", প্রথম যে কথাটা মাথায় এলো-এরকম পৃথিবীর কোন দেশে হয় বলে তো শুনিনি। ফ্রাঙ্কর একনায়কতন্ত্রের সময় কাতালোনিয়া, বাসকে এমন হত কি না সন্দেহ। নিজের জায়গায় ফিরে এসে এক পরিষেবার জন্য অন্য প্রদেশের ভাষায় কথা বলতে হচ্ছে। এক প্রস্থ প্রাথমিক বচসার পর অন্য একজন বাঙ্গালী কর্মচারীর মধ্যস্থতায় সমস্যার সমাধান হোল। এই ঘটনার শেষ দেখতেই রেস্তোরাটিতে গেলাম। বহুকালের বাসিন্দা নেপালি, ভুটানি রাঁধুনিদের রান্নার জন্যও সুনামও আছে। গিয়ে দেখলাম রিসেপশনে বসে এক "হিন্দি" ভাষী কর্মচারী হিন্দি তে কথা বলে চলেছেন এবং উদারমনস্ক, আন্ততর্জাতিকতাবাদী বাঙ্গালী "অ্যাকোমডেট" করে চলেছে, কেউ কেউ বাংলাতে শুরু করলেও অচিরেই "মেরেক বাংলা নাহি আতা" বলাতে দরদর বিগলিত হয়ে একাধিক ভাষায় তারা কেমন পারদর্শী, কতটা তারা "ভারতীয়" ( এটাই নতুন সংজ্ঞা ভারতীয়তার) এর একটা অবচেতন বা সচেতন সূক্ষ্ম বিজ্ঞাপন দিয়ে হিন্দিতে সংলাপ শুরু করে দিচ্ছেন । এমন এক আশ্চর্য উলটপুরাণে কেউ ভাবিত নয়। কিন্তু দেখলাম আমার মত আর এক " সংকীর্ণ" বাঙ্গালীর অনেকক্ষণ ধরে বিষয়টা গলা থেকে নামছে না । রিশেপ্সনে থাকা দ্বিতীয় জন, যিনি বাঙ্গালী, তার সঙ্গে কথা বলে কাজ চালিয়ে নিচ্ছিলেন কিন্তু উল্টোদিকটা তিনি নিতে পারছিলেন না। বিষয়টা তুললেন অবশেষে। তারপর সেই গত ৭ দশকের বহুল প্রচারিত মিথ্যাটা শুনতে হোল।" হিন্দি ভারত কা রাষ্ট্র ভাষা"। "বাঙ্গালকে বাহার বাংলা কাহা চলতা হ্যাঁয়"। আমি বললাম "হিন্দি আপনার রাষ্ট্রভাষা, আমার নয়" আর "খড়গপুর বাংলায়, বাংলার বাইরে ভাবা যাবে কি ভাষায় কথা বলবো"। আবার বাঙ্গালী কর্মচারীর মধ্যস্থতায় সমাধান হোল। খাওয়ার সময় দেখলাম পাহাড়ের যে সমস্ত মানুষ পরিবেশন করছেন রান্না করেছেন তারা খাসা বাংলা বলেন। আসার আগে রেস্তোরার মালিক কে ডেকে বললাম, "আপনার কর্মচারিদের বাংলা শেখান। লোকজনের রাগ হচ্ছে বেশিদিন সহ্য করবে না। এবার পুজোতে পারলে বর্ণ পরিচয় দিন।"

    দেখুন রিশপশনের ওই কর্মচারীর দোষ নয়। আমি নিশ্চিত পাশের ই অন্য কোন রাজ্য থেকে আসা লোকটার মাথায় ঢোকানো হয়েছে একটা মিথ্যা "হিন্দি রাষ্ট্র ভাষা"। ভারত রাষ্ট্র গঠনের বহু আগে থেকে একাধিক ভাষায় মানুষ বাক্যালাপ চালিয়ে এসেছে। হয়ত ওনার মাতৃভাষা ব্রজবুলি, অঙ্গিকা, মৈথিলী, মাগাহী, পাহাড়ি বা আবোধী। সেসব বিসর্জন দিয়ে তাকে সেখান হয়েছে সংস্কৃত শব্দ জোর করে ঢোকানো হিন্দি। তাকে শেখানো হয়েছে এই ভাষা জানলেই ভারতের সর্বত্র তার জীবন জীবিকার অধিকার সুনিশ্চিত এবং অন্যদের সেই হিন্দি শেখাটা অবশ্য কর্তব্য। এই প্রচারে দ্বিমুখী আদান-প্রদানের স্বভাবিক পথ অনেকদিন হোল বন্ধ হয়ে গেছে। এই অস্বাভাবিক অবস্থা কে ভাঙ্গার আপনার একটা দায়িত্ব রয়েছে। নিজের জায়গায় নিজের ভাষায় পরিষেবা দাবী করুন। ওটা অধিকার। দুঃখের বিষয় সেটা বারবার বলে প্রতিষ্ঠা করতে হচ্ছে। অধিকারের বোধ ভুলে কোন উদারতা হয় না। নিজের অধিকারের পক্ষে না দাঁড়ালে একদিন কিন্তু দেওয়ালে পিঠ থেকে যাবে যদি ইতিমধ্যেই তা হয়ে গিয়ে না থাকে।

    দ্বিতীয় ঘটনা তারপরের দিন । ঘাটশিলা তে গেছি। গৌরীকুঞ্জ, বিভূতিভূষণের বসতবাটি ছিল ১৯৩৮-১৯৫০ পর্যন্ত। রিনোভেট করা হয়েছে মামুলি কায়দায়। সামনে বিভূতিভূষণের একটা স্ট্যাচু। ঢুকে দেখি ঘরে পাখা নেই। অবস্থা বেশ সঙ্গিন। বাঙ্গালী টুরিস্ট দের কাছে আবেদন জানানো হচ্ছে কিছু অর্থ সাহায্যের জন্য। এবং কিছু লেখার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। বাংলায় লিখছি দেখে খুশি হলেন উপস্থিত ব্যক্তি আর এই খুশি তে আমি প্রবল অখুশি হলাম।
    কৌতুহলবশে জিজ্ঞেস করলাম, এরকম অবস্থা কেন? সরকারী অনুদান পান না? ভদ্রলোক বললেন ব্যাপারটা বলতে ৫ মিনিট সময় লাগবে। শুরু অংশটুকু হয়ত অনেকের জানা। বিভূতিভূষণ মারা যান ১৯৫০ এ মাত্র ৫৬ বছর বয়সে, অকালমৃত্যু হার্ট অ্যাটাকে। কিন্তু তার অগ্রজ, যিনি পেশায় হোমিওপ্যাথি ডাক্তার ছিলেন, তার ধারনা হয় তার ভুল চিকিৎসার জন্য বিভূতিভূষণের এই অকালমৃত্যু। এই আচমকা মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। তারপর বিভূতিভূষণের স্ত্রী রমা দেবী শিশুপুত্র তারাদাস কে নিয়ে বনগাঁয় তাদের আদি বসত বাড়িতে ফিরে যান। এই ঘটনার পর পর গৌরিকুঞ্জ দখল করেন এক প্রতিবেশী ১৯৮৫ পর্যন্ত। ১৯৮৫ তে সেই বাড়ি বিক্রির চেষ্টা করলে স্থানীয় কিছু বাঙ্গালী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সহযোগিতায় সেটা আটকান সম্ভব হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন বেশ বাজে অবস্থায় সেটা পরে ছিল। ২০০৭-০৮ নাগাদ আবার একবার দখলের চেষ্টা চললে, কিছু স্থানীয় বাঙ্গালীর উদ্যোগে রিস্টরেশনের এবং স্মৃতি মিউজিয়াম এর কাজ শুরু হয়, ২০০৯ সাল ভাষা দিবসের দিন থেকে।

    এই জায়গায় কটা কথা বলে নেওয়া দরকার মর্মর মুর্তি, স্মৃতিসৌধ-মিউজিয়াম এসব নিয়ে আমার বিশেষ উৎসাহ নেই। কিন্তু বিভুতিভূষণের কালজয়ী গল্প উপন্যাস গুলোর প্রতি আমার টান আছে। আমি চাই সেগুলো আজকের বা আগামী প্রজন্মের বাঙ্গালী বা বাংলা ভাষায় উৎসাহী পাঠকরা পড়বে, সাংস্কৃতিক উত্তারাধিকার হিসেবে গ্রহণ করবে, উপভোগ করবে (বা করবে না)। সেই অধিকারটুকু অক্ষুণ্ণ থাকবে। কোন রাষ্ট্র ব্যাবস্থা যদি সেটা হরণের চেষ্টা করে সেই ব্যবস্থা কে প্রশ্ন করাটাই কাম্য। আর ঠিক সেই জন্যেই পরের যে কথা গুলো শুনেছিলাম গুরুত্বপূর্ণ। ভারত রাষ্ট্র গঠন এবং রাজ্য পুনর্বিভাজন এর সময় থেকে বাঙ্গালার পাশের রাজ্য গুলোতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী বাঙ্গালীরা যে অনেকটা বহিরাগত এবং ততটা স্বাগত হবেন না তির্যকভাবে বা সরাসরি সেটা জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বা হয়। বা যদি থাকতে হয় ও বাঙ্গালী তার সমস্ত স্বকীয়তা এবং ডিফারেন্স নিয়ে বাঁচবে তা খুব উদার দৃষ্টিতে দেখা হবে না। একটু "অ্যাডজাস্ট করে নিতে হবে এই আর কি", যেমন ধরা যার দুর্গাপুজোতে উপোষ বা না নিদেনপক্ষে নিরামিষ ইত্যাদি। পাটনা, ধানবাদ, ভাগলপুর, পুর্ণিয়া, দারভাঙ্গা, গোরক্ষপুর এমনকি বারানসীর কয়েক প্রজন্মের প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বললে এই অভিমুখে ক্রমাগত যে চাপ তার সম্পর্কে জানতে পারবেন। বনফুল বা সুবোধ ঘোষের লেখাতেও তার ইঙ্গিত পাবেন। অর্থাৎ বাঙ্গালী হিসেবে যে উদারতা দেখিয়ে আপনি প্রবল আত্মপ্রসাদ পান সেই উদারতা যে উল্টোদিক থেকেও যে পাবেন এতটা আশাবাদী না হওয়াই ভালো।তা এর কারণ কি? সাতচল্লিশ পরবর্তী বিগত দশকগুলো ধরে ভারতবর্ষকে হিন্দিস্থান বানানোর এজেন্ডা কখনও প্রবলভাবে কখনও খুব মৃদুগতিতে হলেও ভারতের বিশেষত উত্তর ভারতের বড়ো অংশও জুড়ে রাজনৈতিক ডিস্কোর্সে সবসময় উপস্থিত থেকেছে। সমস্ত সরকার এই কাজটা করেছে। কিন্তু সাংবিধানিক রক্ষাকবচের দৌলতে বাংলা স্কুলগুলো সরকারী অনুদান পেয়েছে, টিকে থেকেছে। কিন্তু বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার এবং সেই একই দলের ঝাড়খণ্ড রাজ্য সরকার হার্ডহিটার। এসবের তোয়াক্কা না করে তারা এইসব ইশকুল গুলিকে তুলে দিতে চাইছে। এমনকি যে সময় ঝাড়খণ্ড আলাদা রাজ্য হয়ে যায়নি সেই সময়েও শতাংশের বিচারে বাঙ্গালী সংখ্যা কম হওয়া সত্ত্বেও এই ইশকুল গুলোকে বন্ধ করার কোন চেষ্টা কখনো হয়নি। এই শুনলাম ওখানকার এক কর্মীর কাছে। তারা চান এর উলটো দিকে কিছু একটা হোক।

    এর কয়েকদিন পর কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারী আমার এক বন্ধুর মুখে শুনলাম হিন্দি নিয়ে বাড়বাড়ন্তের কথা। ঘটা করে হিন্দি দিবস পালন, হিন্দি শেখার মনেটারী ইনসেন্টিভ। তার আবার ফারাক আছে উত্তর আর দক্ষিণ ভারতে। উত্তর ভারতে ২০০০ টাকা। দক্ষিণ ভারতে ৫০০০ টাকা। হিন্দি সই করতে শেখানো। আগেই শুনেছিলাম ১০০ কোটি টাকা খরচ করে হিন্দি দিবস পালন। সবটাই কিন্তু হচ্ছে আপনার আমার রাজস্বের টাকায়। আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হওয়ার প্রসেস টাকে আমরা স্পন্সর করে চলেছি রোজ। অথচ এই রাষ্ট্র কিন্তু কখনো অন্য ভাষার বই আরেকটা প্রাদেশিক ভাষায় অনুবাদ বা অন্য ভাষার সিনেমা আর একটা প্রদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে এতটা উৎসাহ দেখায় না।
    রোজ ঘটে যাওয়া অজস্র ঘটনার মধ্যে তিনটে ঘটনা মাত্র। সমীকরণ ও খুব জটিল নয় - লাভের-মুনাফার সমীকরণ, ক্ষমতার সমীকরণ। আর আমাদের দাবী হওয়া উচিত - স্বাধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণ, মর্যাদা। এবং এই দ্বন্দ্বে আমরা সবাই অংশীদার।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২২ অক্টোবর ২০১৭ | ১৮২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • রৌহিন | ***:*** | ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১২61751
  • অথচ হিন্দি আদি ভারতীগ ভাষাও নয়। ইংরেজরা চল্লে যাবার আগে ফোর্ট উইলিয়ামসে বসে তৈরী হয়েছিল হিন্দির রূপরেখা। তারপর তা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা সেই যে শুরু হল এখনো চলছে। শুধু বাংলা বা মারাঠি বা গুরমুখী নয়, মাগধি, ভোজপুরী, মৈথিলী প্রভৃতি স্থানীয় ভাষাকেও প্রায় ধ্বংস করে হিন্দির আগ্রাসন চালানো হচ্ছে।
    মূল লেখাটির সঙ্গে ভীষণই একমত হলাম
  • Arijit Hazra | ***:*** | ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫১61752
  • রেস্তরাঁটার নাম ওয়াল্ডর্ফ। টাইপো। সংশোধন করে দিলাম।
  • dd | ***:*** | ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:৫৬61753
  • লুরুতে আছি তেইশ বছর। এক লাইনও কন্নর বলতে পারি নে। বুঝিও না। দিব্যি কাজ চলে যায়। রিটায়ার করেছি, এখানেই বাসা কিনেছি। এন্তেকালেও এখানেই থাকবো। সাড়ে তিন বছর মাদ্রাজে থেকেছি/চাকরী করেছি- ঐ তামিল এক বর্ণও না বলে।

    শুধু ভাষাই নয়, কোনোরকম কন্নর সিনেমা,থেটার, গান - কিছুরই হদীশ রাখি না।

    আমি ও কি সাম্রাজ্যবাদী?
  • sswarnendu | ***:*** | ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:১৯61754
  • dd,
    আপনি সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিতে হয় এমন কোন কাজ করেন কি? তাহলে তাইই।

    আর না হলে অল্প।

    কোন ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগতভাবে আপনি সাম্রাজ্যবাদী কিনা প্রশ্নই নয়, আপনি এইটা পারেন পারছেন তার কারণ একটা সাম্রাজ্যবাদ। সেটুকুই।

    আমিও লুরুতে তিন বছর থেকেছই, এক বর্ণ কন্নড় বলতে না পেরে। তখন কিছু মনেও হয়নি। অথচ বিদেশে এক বছরেই কাজ চালিয়ে দেওয়ার মত ফরাসী শিখেছি। কেন এই তফাৎ যখন বুঝতে শিখেছি তখন নিজের ক্ষেত্রে যা উত্তর পেয়েছি, আপনাকেও ঠিক সেইটুকুই বললাম।
  • sm | ***:*** | ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:৪১61755
  • ধরুন আপনার প্রফেশন ডাক্তারি বা ওকালতি। তখন একবর্ণ না শিখে কিভাবে চালাবেন?
    এ বিলাসিতা আই টি সেক্টর ,রিসার্চ ওয়ার্ক ,মার্চেন্ট অফিসে চলতে পারে। কিন্তু কেউ প্রবাসে ছোট হোটেল বা দোকান খুললে নয়।
    কিন্তু পব তে এসব সম্ভব। বড় বাজারে চলে যান মনে হবে হিন্দি বেল্টে এসে পড়েছেন। আপনি বাংলায় কথা বলুন ,কেউ হিন্দিতে উত্তর দেবে আর কেউ হয়তো দেবেই না।
    এতেও আমার আপত্তি নেই।
    আপত্তি হয়, যখন ,বাঙালি বলেই বা বাংলা ভাষী বলে বহু লোক অত্যাচারের শিকার হন।
    ত্রিপুরা ,আসাম থেকে বাঙালিদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা ছেড়েই দিলাম।
    নিজ রাজ্য পব তেও দার্জিলিঙে বাঙালি বলে গালা গালি শুনতে হয়।
    উদারবাদীরা বলে আরে গোর্খাদের তো নিজভূমি বা রাজ্য বলে কিছু নেই তাই দার্জিলিং দিয়ে দেওয়াই যায়। কিন্তু সিকিমে যে ৬০ শতাংশ নেপালি -সেখানে গিয়ে এই আবদার করুক না কেন বললে মহান উদার ব্যক্তিরা চুপ।
    খালি বাংলায় কথা বলে বলে দিল্লি ,মুম্বাইয়ে বহু শ্রমিক শ্রেণীর লোকজন ও কাজের পরিচারক ও পরিচারিকারা সিঁটিয়ে থাকে। এই বুঝি আমাদের বাংলা দেশি বলে জেলে পুরলো বা তাড়িয়ে দিলো!
    ভারতের কম্যুনিকেশনের মাধ্যম হিসাবে ইংলিশ কেই ধরা উচিত।কারণ ইংলিশ মোটামুটি সব রাজ্যেই চলে।
  • dd | ***:*** | ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:৫৭61756
  • @SS আর SM,

    নাঃ।,পাতি চাকরি করে - সেও নেহাৎ ডেস্ক জব করতাম। তবে লুরুতে যেমন দোকান পাট চালাতে, ডাক্তার,উকিল হতে, অটো চালাতে কন্নর ভাষা না জানলে চলবেই না, উল্টোদিকে আবার এইসব পেশাদার লোকেদের ইংরাজী/হিন্দিও জানতেই হবে। শুধু কন্নর জেনে রোজগার করতে পারবেন না।

    লুরুতে যারা থেকেছেন তারা জানবেন। এখানকার বাসিন্দাদের মূল ক্ষার তামিলদের উপরে। এদের বিশ্বাস তামিলরা চাকরি থেকে শুরু করে একেবারে কালচারাল ইমেপেরিয়ালিজম চালায় কর্ণাটকে। প্রায়ই দাংগা বাঁধে। তখন ঝট করে সব কেবল অপারেটরেরা তামিল চ্যানেল বন্ধ করে দেয়। হলে তামিল মুভি আর দেখায় না। ইন্টার স্টেট বাস বন্ধ হয়ে যায়। হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না।
  • sswarnendu | ***:*** | ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:০৭61757
  • dd দা, SS নামে আর একজনকে বোধহয় লেখেন গুরুতে। এইটা আমাকেই লিখলেন সেইটা বুঝেছি। হ্যাঁ তামিলদের উপরে ক্ষারটা জানি, আমিও থেকেছই লুরুতে লিখলাম। শুধু কন্নড় শিখে চালানো যাবে না নিয়ে কিন্তু কথা হচ্ছিল না, সে যাবে না একশবার। কিন্তু স্থানীয় লোকের সাথে কথা বলতে হবে এরকম পেশায় স্থানীয় ভাষা জানব না বলাটা খুব গা-জোয়ারি বক্তব্যই।
  • Tagore | ***:*** | ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:১৩61758
  • রেখেছ বাঙালী করে ।
  • ঘনশ্যাম দাস | ***:*** | ৩০ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:০৩61759
  • দাদা কি গর্গ চাটুজ্জের ফান
  • | ***:*** | ০১ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৫২61760
  • মোটামুটি একমত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে প্রতিক্রিয়া দিন