এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • ভোকাট্টাআআআআ

    Somnath mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৩৪৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ভোকাট্টাআআআ, ভো….কাট্টাআআ, ভোম মারাআআ। সকাল থেকেই চারিদিক কাঁপিয়ে একেবারে গগনবিদারী উল্লাস। সঙ্গে কাঁসর, ঘন্টা, ভেঁপুর ঐকতান। সেপ্টেম্বর মাস,আগমণীর পদধ্বনি, বিশ্বকর্মার আরাধনা আর আকাশ জুড়ে ঘুড়ির মেলা। দিনকয়েক থেকেই পাড়ার বাড়ির ছাদে ছাদে কালো কালো মাথার ভিড়। চলছে মহারণের প্রস্তুতি পর্ব। শেষমেষ ঘুড়ির পালে লাগিয়ে হাওয়া, আজ মন ভাসিয়ে স্বপ্ন উড়ানের দিন। পাড়ায় পাড়ায় এ ক’দিনের কৈশোরক ব্যস্ততা। কাজ তো নেহাৎ কম নয় - দেখেশুনে সুতো কেনা, তাতে সাবু জ্বাল দিয়ে কাঁচ গুঁড়ো আর আঠা মিশিয়ে মাঞ্জা চড়ানো, পছন্দসই মার্কা মারা সব ঘুড়ি কিনে আনা,আর তারপর মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য অপেক্ষা করা। সপ্তাহের অন্যান্য দিন বিছানায় লাট মেরে গড়াগড়ি দেওয়া বাবলা, পল্টু, ছেনো পেনোরা এই একটা দিনে একেবারে সাতসকালেই বিছানা ছেড়ে উঠে পড়েছে,যেন যুদ্ধে যাবার ডাক এসেছে। দাঁত ব্রাশ করে মুখ ধোয়ার‌ও সময় নেই আজ।

    শুধু কি বয়সের মাপকাঠিতে দেগে দেওয়া কিশোর দলের এমন মাতন? মোটেই তেমন নয়। ঐ একটু তফাতে দেখা যায় সোনামণির দাদুকে। এককালের জাঁদরেল পুলিশকর্তা এখন গোটা সেপ্টেম্বর মাস জুড়েই ঘুড়িদাস। কি উৎসাহ তাঁর! দুই নাতি সোনা আর হীরাকে নিয়ে আজ তাঁর উল্লাসী ছাদযাপন। বাদ নেই হুপে আর দোপে দা’রা। আমাদের কিশোর বেলার পাড়াতুতো হীরো। মাঞ্জার‌ও যে গোপন অনুপান আছে তা আমাদের শেখা দোপে দার কাছ থেকেই। একরাশ স্মৃতি পেছনে ফেলে এই মানুষটি সেই কবেই অসময়ে ‘পতঙ্ লোকে’র ঠিকানায় পাড়ি দিয়েছেন। দোপে - হুপের যুগলবন্দি নতুন রঙে জমে উঠতো তাঁদের তিন সাকরেদের সৌজন্যে -- চন্দু - নন্দু আর রঞ্জু তিন সহোদর। নন্দু আর রঞ্জু এখন সুদূর আমেরিকায় পরবাসী। ওদের মন‌ কি আজ‌ও উদাসী হাওয়ায় ভেসে যাওয়া ঘুড়ির খোঁজ করে? জানা নেই।

    আরও ওস্তাদ ঘুড়ি উড়িয়ে ছিল আমার চেনাজানা মুখের চৌহদ্দির পরিসীমায় – কুণ্ডু বাড়ির তপু দা, ধোপা পাড়ার বেচন -সেচন-ফনিয়া, সরকার বাড়ির মনীষ আর কেষ্ট, বোস বাড়ির বুকুন আর নোটনদা, নার্সারি বাগানের ঘোষ বাড়ির উত্তম ও বাপি। কার কথা ছেড়ে কার কথা বলবো ! সবাই সামিল এই আশ্চর্য দিন আকাশ দখলের মহোৎসবে। শুধু একটা দিনের জন্য ছাদ দখল নয়। সেই সময় বাড়ির ছাদ ছিল সবার কাছেই এক আশ্চর্য মুক্তির আঙিনা, কত উচ্ছ্বাস উদ্দীপনা, সুখ দুঃখ আর গোপনীয়তার আখ্যান জড়িয়ে আছে এই ছাদ আর লাগোয়া চিলেকোঠাকে ঘিরে। শহর আর শহরতলির আকাশ রেখা অসম্ভব রকম বদলে গেছে ফেলে আসা দেড় দুই দশকে। শুধু একদিন নয়, ছাদ নিয়ে যে গভীর অনুভব জড়িয়ে ছিল আমাদের শৈশব আর কৈশোরে তা আর নেই। অথচ ছাদ নিয়েই লেখা যায় এক আশ্চর্য দিবারাত্রির কাব্য। সেইসব কথা অন্য কোনো অবসরের শোনাবো বলে তোলা র‌ইলো।

    আজ কত কতদিন পর ঘুড়ি নিয়ে কথা ক‌ইতে বসেছি। ঘুড়ির অনুষঙ্গেই আকাশের ক্যানভাসে ভেসে উঠছে আরও কত কত কথা, কত কত মানুষের ঝাপসা হয়ে আসা মুখ। ফেলে আসা কিশোরবেলার ঘুড়িকথা যাঁদের কীর্তি কথা ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যাবে তেমন‌ই তিন মানুষের কথা বলি। এই দুজন হলেন মন্টুদা আর নিতাইদা - দুই দোকানি, আমাদের স্বপ্নিল কিশোর বয়সের বিচিত্র সব খেয়ালের প্রধান দুই রসদদার।

    আগে নিতাইদার কথা বলি। ছয় ছোট্ট পাতলা শরীর, অথচ আশ্চর্য টিকালো নাক। যশোর রোড থেকে নাগের বাজারে ঢোকার রাস্তা যেখানে সোজা এসে ডাইনে বেঁকে দমদম রোডের দিকে চলে গেছে তার‌ই কোণে ছিল নিতাই দার ভ্যারাইটি স্টোর্স। এতদিন পর বুঝি যে নিতাইদা ছিলেন আদ্যন্ত এক মরশুমী ব্যবসায়ী। প্রসাধনী সামগ্রীর ব্যবসা সেভাবে জমাতে পারেননি একরোখা বদমেজাজি স্বভাবের জন্য, তাই উৎসবের সময় বাড়তি আয়ের আশায় নানান উপকরণের পশরা বেচাকেনা করতেন। যতদিন না নিজেরা সুতোয় মাঞ্জা দিতে শিখেছি,ততদিন নিতাই দার ওপরেই ভরসা করতে হতো সকলকে। “নিতাইদা সুতো লাগবে”, বলে দোকানের সামনে দাঁড়ালেই খেনো গলায় নিতাইদা প্রশ্ন করতেন - “টাইনা খেলবি না ছাইড়া?” উত্তর শুনে নির্দিষ্ট লাটাই থেকে বিঘত মেপে মেপে সুতো দিতেন। আমরা সামনে দাঁড়িয়ে হাত ঘোরানোর সংখ্যা গুনতাম আর নামতা আওড়ানোর মতো করে বলতাম বড়ো বিঘত এক, বড়ো বিঘত দুই, বড়ো বিঘত তিন…….।

    দমদম রোডের দিক থেকে বাজারে ঢোকার ঠিক মুখেই ডানহাতে ছিল মন্টু দার পাঁচমিশালি সম্ভারের দোকান। নিতাই দার মতো মন্টুদা যখন যেমন তখন তেমন জিনিসের কারবারি ছিলেন না। সারাবছর কমবেশি একই রকম জিনিসের বিক্রেতা ছিলেন তিনি। অবরেসবরে অবশ্য রাখী, দোলের সময় রং, আর ঘুড়ির সময় ঘুড়ি, লাটাই, মাঞ্জা সুতো পাওয়া যেত তাঁর কাছে। ঘুড়ির সিজন এগিয়ে এলেই সুতোয় মাঞ্জা দেবার জন্য বড়ো বড়ো খানদুই চাকা লাটাই এনে হাজির করতেন দোকানে। অনেকটা চরকার চেহারার এই চাকা লাটাইয়ের সাহায্যে ঘরে বসেই সুতোয় মাঞ্জা দেবার কাজ সেরে ফেলা যেত। এমন অনেকদিন হয়েছে যে আমরা ঘুড়ি কিনতে গিয়েছি আর মন্টুদা আমাদের বলছেন – “চাকার হাতলডা ঠিকমতো ঘুরাইতে পারবি? হুড়াহুড়ি করন যাইবো না।” - এমন অনুরোধ শুনেতো আমরা কৃতার্থ হতাম। কে চরকার হাতল ঘোরাবে তা নিয়ে আমাদের মধ্যেই কাড়াকাড়ি পড়ে যেতো। গুরুকে তোয়াজ করা আর কি!

    মন্টুদা আমাদের মতো নবিশ ঘুড়িয়ালদের মাঞ্জার ‘টিপ্পি’ ধরার কায়দা শিখিয়েছেন নিজের সন্তানের মতো করে। মাঞ্জার মাড়ের ঘনত্ব কেমন হবে তাও ছিল মন্টু দার সিলেবাসে। “এক টুকরা ত্যানা নিয়া দুই আঙ্গুলের মাঝে ( বুড়ো আঙুল ও তর্জনী) এমন ক‌ইরা টিপা ধরবা। যদি টাইনা প্যাঁচ খ্যালোস তা হইলে ত্যানাডারে একটু চাইপ্পা ধরতে হ‌ইবো, আর যদি সূতা ছাইড়া খ্যালোস তা হ‌ইলে ত্যানাডারে একটু হালকা ক‌ইরা ধরতে হ‌ইবো। বুঝছো?” এমন হাতেকলমের শিক্ষা কেউ ভোলে? মন্টু দার গোপন সাকসেস টেকনিক জেনে আমরা খুশিতে ডগমগ হয়ে কাশফুলের মতো মাথা দোলাতাম। মন্টুদা ফিক্ করে হেসে উঠতেন।

    এই দুজনের পাশাপাশি আমাদের আরও একজন খিদমতদার ছিলেন - দত্তদা। ব্যস্ত বড়ো রাস্তা পার হয়ে যেতে হতো বলে তাঁর দোকানে সবসময় যাওয়া হতো না। দত্ত দার বাড়ির দুই ছেলে সলিল আর সমীর ছিল আমাদের‌ই সমবয়সী। আমরা দোকানে গেলেই তিনি বোধহয় ত্রস্ত হয়ে থাকতেন। পার মোহনবাগানী দত্তদা আমাদের মতো ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্যদের বোধহয় একটু সমঝে চলতেন। ফড়িয়াপুকুরের ঘুড়ির আড্ডার কথা দত্ত দাই প্রথম আমাদের জানিয়েছিলেন।
    ঘুড়ির মধ্যে রবার স্ট্যাম্প দিয়ে ছাপানো থাকতো এই কথা কটি – সবার সেরা দত্তের ঘুড়ি। সত্যিই সেরা ছিল ঘুড়িগুলো।

    এভাবেই নানান মানুষের কাছ থেকে আমরা শিখেছি ঘুড়ির রকমারি পাঠ। এই শেখার মধ্যে অন্যরকম রোমাঞ্চ ছিল।গত শতকের সত্তরের দশকের একেবারে গোড়ার দিকে পদ্মা পাড়ের ভূখণ্ড উত্তাল হয়ে উঠলো। ওপার থেকে জলস্রোতের মতো করে ভেসে এলেন অনেক অনেক মানুষ। আমাদের‌ই বন্ধু স্থানীয় ছিল জীবু। জীবেনকে ছেঁটে কেঁটে ছোট করে নেওয়া আরকি! জীবুর এক তুতো দাদাও এসে হাজির হলেন সেই তোলপাড়ানি সময়ের মধ্যে। পায়ে সমস্যা থাকায় একটু খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতেন। আমরা অমন ছোট ছোট ঘুড়ি ওড়াই দেখে তিনি বানিয়ে ফেললেন এক ঢাউস সাইজের ডাক ঘুড়ি। মোটা দড়ি দিয়ে বেঁধে তাকে ওড়ানো হতো। বাঁশের পাতলা চটা দিয়ে একটা ফ্রেম তৈরি করে তার ওপর মোটা কাগজ লাগিয়ে তৈরি হয়েছিল সেই ঘুড়ি। আকাশে উড়লে বো বো করে আওয়াজ উঠতো। আমরা তো বটেই আশেপাশের পাড়া থেকেও বহু ছেলে ছোকরা এসে হাজির হতো এই আজব ঘুড়ির উড়ান দেখতে।

    এছাড়াও বাক্স ঘুড়ি বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন জীবুর সেই দাদা। আমাদের পাড়ার অপূর্বদা এমন ঘুড়ি তৈরির কায়দা শিখে নিয়ে নিজেই বানিয়ে ফেললেন লন্ঠন ঘুড়ি। রাতের আকাশ উজ্জ্বল করে পতপতিয়ে সেই ঘুড়ি ওড়ানোর পর্ব চলতো। তা দেখতেও জমতো মেলা মানুষের ভিড়। লন্ঠন ঘড়ির মজা অনেক ঘুড়িয়ালকেই মজিয়ে দিয়েছিল তা টের পাওয়া গেল রাত আকাশে আলোর ঘুড়ি, আলোর ফুলকি দেখে। সন্ধের ঠিক মুখে উড়িয়ে দেওয়া হতো ঘুড়ি, আর তারপর সুতোর সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হতো কাগজের লন্ঠন। একটু হাওয়ার দোল পেতেই ঘুড়ি উঠতে শুরু করতো ওপরে, আরও ওপরে। তবে মুশকিল হলো জোরে হাওয়া পেতেই সেই বাটি মোম যেত নিভে, তখন ঘুড়িকে আঁধার হাতড়ে ফিরিয়ে আনার কাজটা জটিল হয়ে পড়তো। এভাবে রাত ঘুড়ি ওড়ানোর ব্যাপারটা দীর্ঘমেয়াদি না হলেও সমান্তরাল চিন্তনের প্রচেষ্টা অমলিন হয়ে র‌ইলো আমাদের স্মৃতিতে।

    প্যাঁচ লড়ে প্রতিপক্ষের ঘুড়ি কেটে দেওয়া আর সেই কাটা ঘুড়ি লুটে নেওয়াও ছিল পরম রোমাঞ্চের বিষয়। আকাশে উড়লে ঘুড়ির জগত অনেক অনেক বড়ো হয়ে যায়। তাই সব কাটা ঘুড়িই আর চেনা পরিসীমার গণ্ডিতে বাঁধা থাকেনা।তাও ঘুড়ি ধরার জন্য অনেক অনেক ছেলেপুলে জড়ো হতো। এই দলের বেশিরভাগ‌ই ছিল ভিন্ এলাকা থেকে আসা। এদের হাতে থাকতো একটা ছোট কঞ্চি লাঠি, তার ডগায় বাঁধা থাকতো কিছু শুকনো ঝোপের মতো গাছ - অনেকটাই ঝুলঝাড়ুর মতো। কোনো ঘুড়ি কাটলেই তার পেছনে পাইপাই করে ছুটতো ছেলের দল। হাতে ধরা লগা ঠেকিয়ে ঘুড়িকে নিজের কব্জায় আনার মধ্যে প্রকাশ পেত আদিম শিকারিদের জয়োল্লাস। এ এক আশ্চর্য খেলা, কাটা ঘুড়ি ধরার খেলা।

    আর এক কায়দায় ঘুড়ি ধরতো আমাদের পাড়ারই ‘ থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’ - বুলগা, টুবলু, অষ্টু। বয়সের মাপকাঠিতে এরা আমাদের থেকে কিছুটা বড়ই ছিল। আসলে এরা ছিল স্বভাব দামাল। এদের বাগ মানানো সহজ ছিলনা। সাধারণ ঘুড়ি ধরিয়েদের থেকে এরা ছিল হাতেপায়ে অনেকটাই বড়োসড়ো। ঘুড়ি কেটেছে দেখলেই তারা হৈহৈ করে ছুটে যেত। দূর থেকেই কর্কশ গলায় হাঁক দিত - ‘এই আমি ধরেছি, আমি ধরেছি’ বলে। ওদের বাজখাই আওয়াজ শুনে অন্যরা সরে যেতেই ঘুড়ি টিকে নিজেদের কব্জায় আনতো। একেবারে ঠ্যাঙারে বাহিনীর কায়দায়। এর পরেও যদি অন্য কেউ ঘুড়িটা আগে ধরতো তাহলে ছিঁড়ে দিতে কোনো কুন্ঠাবোধ করতো না এরা। এমন‌ই দুর্বিনীত স্বভাবের ছিল। তবে এদের মধ্যেও ছিল নরম এক একটা মানুষ। এটাই স্বাভাবিক।

    ঘুড়ির সাথে উড়তে উড়তে অনেক দূরের আকাশ পাড়ি দিয়ে ফেললাম। কবেই পেরিয়ে এসেছি সেই সব দিনগুলো। আজ জীবনের সুতো কেটে ভেসে যাবার আগে, সময়ের লাটাইয়ে সংগোপনে গুটিয়ে রাখা পুরনো স্মৃতিসুতোর কিছুটা ভাগ করে নিলাম সবার সঙ্গে, ঘুড়ি উৎসবের মুহূর্তটিকে মাথায় রেখেই।

    * ঋণ স্বীকার
    এই নিবন্ধের সব চরিত্রের সঙ্গেই কেটেছে আমার কিশোর বেলার উজ্জ্বল দিনগুলো। আমার নির্মিতি এদের‌ই স্পর্শে, নিবিড় সখ্যতায়, অনাবিল আনন্দে। অনেকেই আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। এঁদের সকলকেই জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Rajib Das | 2409:4060:2e31:5206::fbca:***:*** | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:০৪537707
  • Khub Sundor Hoyeche Dada.
    Chele bela r anek kotha e mone pore gelo.
     
    Jakhon ami o sikhchi tene khela halka chal e khela sei samay r anek kotha mone pore গেলো। 
     
    R Ekta kotha bolte chai .. sei ekta din bodhoy guru sishyo ek hoye jeto....o
    amader takhon ektala bari r pashe doctor dadu r bari chilo dotola. Oi bari r chele ra bachchu da jini aj nije o doctor 60+ age takhon ekdam young. 
     
    Oder chad e ghuri orate jetam...sekhane dekhechilam bachchu da r unar teacher jini pore amar o english tutor hoyechilen 9-12 e motijheel boys school r Samar স্যার। 
    Uni o ghuri orate ashten.
     
    Seidin sab mile mishe ekakar.
     
    Aonar lekha pore anek kichi mone pore gelo. Ashonkhyo Dhannobad Dada.
     
    Chaliye jan. 
    Pronan nebe . Rajib.
  • পলি মুখার্জি | 2405:201:8000:b1a1:2543:29dd:a203:***:*** | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:৫৬537710
  • ফেলে আসা সময় যেন আটকে আছে এই নিবন্ধটিতে। লেখককে ধন্যবাদ।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:ad37:f3fd:50d6:***:*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:৪৬537717
  • কাল রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এই লেখাটা পড়ছিলাম, তখন আর কিছু লেখা হয়নি। ভীষন ভালো লাগলো। আমি ছোটবেলায় ঘুড়ি ওড়ানো শিখেছিলাম ছোট মামার কাছে। লাটাই ধরা থেকে শুরু হয়েছিল, তারপর টেনে খেলা, ঢিল দেওয়া, প্যাঁচ কষা, সব একে একে শিখেছিলাম। আমার একটা পিসতুতো দাদাও ছিল, আর পাড়ার বন্ধুরা তো ছিলই। মাঞ্জা দেওয়ার নানান ফর্মুলা, চীনে কাগজ কিনে এনে ঘুড়ি বানানো, কান্নিক দেওয়া, কতো কি শিখেছিলাম! একবার ছোটবেলায় খুব বায়না ধরেছিলাম বোম লাটাই কিনে দেওয়ার জন্য, কিন্তু মাবাবা দেয়নি, সে কথাও মনে পড়লো :-)
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১১537721
  • পড়ে গিয়ে বিপদ ঘটানোর ভয়ে আমাদের তিন ভাইয়ের জীবনে ছাদে উঠে ঘুড়ি ওড়ানো নিষেধ ছিল। তার সাথে আরও নানা কারণ জুড়ে গিয়ে তেমন করে আর ঘুড়ি নিয়ে মেতে ওঠা হয়নি। তবে তার মধ্যেও কিছু রঙিন দিন ছিল অবশ্যই। আপনার চমৎকার লেখাটি সেই দিনগুলো থেকে ঘুরিয়ে আনল।
  • Rajib Das | 2409:4060:2e31:5206::fbca:***:*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:০৪537728
  • Khub Sundor Hoyeche Dada.
    Chele bela r anek kotha e mone pore gelo.

    Jakhon ami o sikhchi tene khela halka chal e khela sei samay r anek kotha mone pore গেলো। 

    R Ekta kotha bolte chai .. sei ekta din bodhoy guru sishyo ek hoye jeto....o
    amader takhon ektala bari r pashe doctor dadu r bari chilo dotola. Oi bari r chele ra bachchu da jini aj nije o doctor 60+ age takhon ekdam young. 

    Oder chad e ghuri orate jetam...sekhane dekhechilam bachchu da r unar teacher jini pore amar o english tutor hoyechilen 9-12 e motijheel boys school r Samar স্যার। 
    Uni o ghuri orate ashten.

    Seidin sab mile mishe ekakar.

    Aonar lekha pore anek kichi mone pore gelo. Ashonkhyo Dhannobad Dada.

    Chaliye jan. 
    Pronan nebe . Rajib.
  • sarmistha lahiri | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৪৫537729
  • ব ই এ পড়েছিলাম ঘুড়ি ওড়ানো ছিল বাবু কালচারের অঙ্গ।ঘুড়ি উড়িয়েই বাবু রাত নিজেদের আভিজাত্যের পরিচয় দিতেন। কিন্তু আমাদের শৈশব ও কৈশোরে আমরা সেই ঘুড়ি উৎসবের সাক্ষী।ধনী-নির্ধন, ছোট -বড়  সবাইকে অন্ততঃ একদিন এই উৎসবে মেতে উঠতে দেখেছি। আমার ছোট বেলায় দুই ভাই য়ের কল্যাণে আমাকেও বিশেষ কিছু দায়িত্ব পালন করতে হতো। প্রায় দশদিন আগে থাকতেই এর প্রস্তুতি শুরু হতো। বেশ একটা রোদ ঝলমলে দিনে হতো সুতোয় মাঞ্জা দেওয়ার কাজ।।পড়াশোনা বা স্কুলে যাওয়া নিয়ে কোনো দ্বৈরথ হতো না।সব কিছুই চলতো সাথে সাথে।           হামল দিস্তা য় কাঁচ গুঁড়ো করা থেকে লাটাই হাতে মাঞ্জা র দিন পাল্লা দেওয়া থাকতো আমার দায়িত্ব।                                পূজোর দিন সাতসকালে ই  আমরা ছাদে হাজির হতাম। আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ঘুড়ি ওড়ানো দেখতে দেখতে  ক্ষুধা তৃষ্ণা সব জলাঞ্জলী দিতাম। আমার দাদা আবার অতি উৎসাহে ছাদের উপরে ট্যাঙ্কের পাশে আস্তানা গাড়তো। নিজের ঘুড়ি ওড়ানোর চাইতে কেটৈ যাওয়া ঘুড়ি ধরার আকর্ষণ ছিল আরো বেশী।সন্ধে বেলায় ঘরে সেইসব লুটে পাওয়া ঘুড়ি দেখে এক অসীম আনন্দ উপলব্ধি হত।                         চোখের সামনে আস্তে আস্তে সেই সোনালী দিন গুলো কোথায় হারিয়ে গেল।বড়বড় বাড়ির ছাদ গুলো এখন সেই নীরব উপস্থিতি র সাক্ষী। আজ কদিন বাদে বেশ রোদ উঠেছে কান পেতে রয়েছি কখন শুনবো সেই ভোকাট্টা্ শব্দটা।                                                                                    আজ সেই  স্মৃতি  মধুর দিন  গুলো  আবার  স্মরণে  এনে দেবার জন্যে   লেখক কে ধন্যবাদ ।      
  • সৌমেন রায় | 2409:40e1:f:942a:8000::***:*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:০৯537731
  •  অসামান্যস্মৃতিচারণ। মনে করিয়ে দিলেন ছোটবেলাটা।আমাদের ছাদ ছিলনা কিন্তু ঘুড়ি ছিল। ঘুড়ির লাটাই,সুতো,মাছ ধরার কাঁটা, ফাতনা বিক্রি করা দোকানদারদের মনে হত আশ্চর্য প্রদীপের দৈত্য। সুতো কাটার এখন অনেক দেরি।ততদিন আমাদের সেই সব স্বপ্নময় দিনের গল্প বলুন।
  • Sandip | 80.157.***.*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫৯537732
  • শৈশবের সোনালি দিনগুলি মনে পড়ে গেলো। -সন্দীপ 
  • Nandu Chakraborty | 73.248.***.*** | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০০:৩৫537747
  • Ami nandu,  লেখা ta খুব  ভালো লাগলো.
  • সুমিত মুখার্জী | 2401:4900:314a:fd86:0:52:119b:***:*** | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:১৩537769
  • ফেলে আসা দিনগুলো পিছু ডাকে। আমাদের পাড়ায় অবশ্য সরস্বতী পুজোয় ঘুড়ি ওড়াতাম। অভিজ্ঞতা গুলো একই ছিলো। 
  • অভ্রদীপ | 240a:61:56:94ed:ee76:7ae5:c1e1:***:*** | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:২৯537777
  • আপনার স্মৃতিচারণা পড়ে আমার ছোটোবেলার স্মৃতিগুলো একের পর এক ভিড় করে এলো দাদা।
    কোনোদিনই ঘুড়ি ওড়াতে পটু হয়ে উঠতে পারিনি। খুব ছোটবেলায় তো বিশ্বকর্মা পুজোর সপ্তাহটা কাটতো কেবল মেজদার পেছনে লাটাই ধরে আর কাটা ঘুড়ি কুড়িয়ে। মাঞ্জাও দিয়েছি। কিন্তু কেউ শেখায়নি ঘুড়ি ওড়ানোর কায়দা। মেজদা বাড়ি ছেড়ে আইআইটি তে পড়তে চলে যাওয়ার পর আমার নিজের ঘুড়ি ওড়ানোর প্রচেষ্টা শুরু!
  • অভ্রদীপ | 240a:61:56:94ed:ee76:7ae5:c1e1:***:*** | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৪537778
  • প্রায় তিন বছর চেষ্টা করে প্রথমবার যখন দূর আকাশে ঘুড়ি পাঠাতে পেরেছিলাম! সে ঘুড়িটা ফেরাতে পারিনি, কিন্তু সেটা আমার জীবনে একটা মাইলস্টোন বলা চলে! সবার উদ্দেশ্য অন্যের ঘুড়ি ঘুড়ি কাটার খেলা। আর আমার উদ্দেশ্য থাকতো কোনোভাবে ঘুড়িটা ওড়াতে পারা। তাই সাধারণত বিকালের বদলে সকালে ওড়াতাম, যাতে অন্য ঘুড়ি আকাশে না থাকে! কাটা না যায়। বড়োই বেমানান! একদিন বিকালে ওড়াতে গিয়ে ভুল করে অন্য ঘুড়ি কেটে ফেলেছিলাম। তারপরই অবশ্য যার ঘুড়ি, সে নতুন ঘুড়ি উড়িয়ে প্রতিশোধ নিয়ে গেলো! সেই ২০১৭ তে বাড়ি ছাড়ার পর আজ অব্দি ঘুড়ি ওড়ানোর চেষ্টা করার সুযোগ হয়নি। কবে হবে জানিনা। মার কাছে শুনলাম এবছরও বিশ্বকর্মা পুজোয় আকাশে ঘুড়ি নাই বললেই চলে! রাস্তায় ঘুড়ি সুতো বিক্রিও নাই। ঘুড়ি ওড়ানোও কি তাহলে নতুন প্রজন্মের কাছে ব্যাকডেটেড? এরকম চললে আর কয়েক বছরের মধ্যে ঘুড়িও কেবল স্মৃতির পাতায়ই বেঁচে থাকবে।
  • বিপ্লব রহমান | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:২৯537906
  • কি দারুণ শৈশব! এই লেখনীর জাদুময় প্রভাবে যেন ফিরে গেলাম সেই যশোর রোডের রংগিলা ঘুড়ির দিনগুলোতে heart
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি প্রতিক্রিয়া দিন