এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বাকিসব  মোচ্ছব

  • সেলুনের সেই লোকটা ( গল্প)

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    বাকিসব | মোচ্ছব | ২২ অক্টোবর ২০২২ | ১২২৯ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)
  • সেলুনের সেই লোকটা
    সন্ধ্যাবেলায় ঘুমটা ভেঙে গেল। আজ রোববার। অনেকদিন পর দুপুরে খেয়েদেয়ে ঘুমিয়েছিলাম। বাঁশদ্রোনী বাজারের কাছের এই গলিতে দোতলার দু’কামরার ফ্ল্যাটটা মাত্র দু’মাস হল ভাড়া নিয়েছি। গোছগাছ শেষ করতে প্রায় দুটো মাস লেগে গেল। এখন আমি একা হলে কী হবে? আসবাবপত্তর কম নয়। বেশ কিছু অবশ্য শ্রাবন্তীর। প্রায় তিনসপ্তাহ আগে ও কাউকে কিছু না বলে হঠাৎ একদিন বাড়ি ফিরল না। পরে ওর দিদি, আমার বড় শালী চন্দননগর থেকে ফোন করে জানাল যে শ্রাবন্তী সেখানেই গেছে। মন মেজাজ ভাল নেই। একান্তবাস, কাজেই আমি যেন ফোন করে বিরক্ত না করি। সাতদিন পরে ও নিজেই ফিরে আসবে।
    যা বাব্বা! এ আবার কী কেলো!
    এই ফ্ল্যাটটা আমার মন্দ লাগে নি। শ্রাবন্তীর একেবারে পছন্দ হয় নি।
    কুড়ি বছরের পুরনো ফ্ল্যাট, মেজেতে টাইলস্‌ এর বদলে দানা পালিশ। দুটো বাথরুমের একটা ইন্ডিয়ান স্টাইল, রান্নাঘর বেশ ছোট। বাথরুমের কলটলগুলো মান্ধাতার আমলের, শাওয়ারের আদ্দেক ফুটো আয়রন সেডিমেন্টে বন্ধ। বাইরের দেয়ালে জলের ভিজে ভিজে দাগ। কিন্তু ভাড়া কম, সেটাই বা কম কি!
    তিন মাস আগে আমার চাকরি চলে যায়। আরও অনেকের গেছে। এই মহামারীর বাজারে সবাই কস্ট কাটিং করছে। আর আমার কাজটাও অমনই। একটা ট্যুরিজম কোম্পানিতে দশ বছর ধরে ম্যানেজার, মাইনে পত্তর আহামরি না হলেও মন্দ নয়। শ্রাবন্তী একটা মিশনারি স্কুলে মন্তেশ্বরী টিচার।
     ফুলেশ্বরী, ধলেশ্বরী, মহেশ্বরী, মন্তেশ্বরী।
    এভাবে বললে খুব রেগে যায়। বলে ওটা মন্টেস্বরি! ডঃ মারিয়া মন্টেস্বরি বলে একজন ইতালিয়ান মহিলা এই শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষাপদ্ধতি তৈরি করেছিলেন। এসব নিয়ে অশিক্ষিতের মত ফাজলেমি করবে না।
    একদিন বলেছিলাম, যে ভারতের জনৈক শিক্ষামন্ত্রীর নাম ছিল পুরন্দেশ্বরী।
    যাকগে, আমি কিন্তু একমাসের মধ্যে একটা চাকরি জোগাড় করেছিলাম— আগের তুলনায় আদ্দেক মাইনে। ট্যুরিজম ব্যবসা তো লালবাতি জ্বালছে, এটা অন্য ধান্ধা। বিজ্ঞাপনের কনটেন্ট রাইটিং। এক বন্ধুর সুপারিশে পাওয়া। এক মহিলার নতুন স্টার্ট আপ।
     আমার মত আরও দু’জন আছে। আমরা সবাই প্রবেশনে। অর্থাৎ মহিলাটি দেখছেন কাকে দুয়েক মাস বাদে এক মাসের মাইনে আগাম ধরিয়ে বাড়ি যেতে বলা যায়। ফলে আমরা  বাইরে দেঁতো হাসি হাসলেও  ভেতরে ভেতরে অন্যদের লেঙ্গি মারার মতলব আঁটি।
    গতমাসে  আমার একটা লাইন ক্লায়েন্ট বেশ খেয়েছিল—‘আমরা মাল বেচি না, সম্পর্ক গড়ি’।
    আমার চাকরি  আগামী তিনমাসের জন্যে টিকে গেল ভেবেছিলাম। কেউ কেউ মুখ বেঁকিয়ে ম্যাডামকে বলল- লাইনটা টোকা, মনোজের ওরিজিনাল নয়।
    উনি গা করেন নি, বললেন—ক্লায়েন্ট আপত্তি করে নি তো!
    কিন্তু এই সপ্তাহে যা তা হল।
    একটি বড় কোম্পানির কাজ ধরেছিলেন মহিলা। তারা ছোট ছোট শহরে আউটলেট খুলছে –তার জন্য অ্যাড ।
    ওরা চাইছে বেশ ক্যাচি স্লোগান হোক, কিন্তু তাতে ছোট থেকে শুরু করে দ্রুত বড় হওয়ার স্বপ্ন যেন ফোটে। সাতদিন ধরে কারও মাথায় কিছু আসছিল না। আমার লেখাপত্তর কিছু লিটল ম্যাগে বেরোয়। সেই সুবাদে এই চাকরি।  কিন্তু ওটাই অন্যদের গাত্রদাহের কারণ।
    মিটিং চলার সময় মালিনী বললেন— ওয়ান উইক গন। এখনও তোমরা কিছু ভেবে উঠতে পার নি? শেষে কি আমার মেয়ের থেকে আইডিয়া নেব? তাহলে আর তোমাদের মাইনে দিচ্ছি কেন?  শনিবারের মধ্যে আমার চাইই চাই।
    এই হল আমার বসের কথাবার্তার ছিরি! প্রতিপদে বুঝিয়ে দেন যে আমরা ওনার ক্রিকেট টিম নই, চাকর মাত্র।  আর ভাল ক্যাচি শ্লোগান একটা ইন্সপিরেশনের ব্যাপার। টুথপেস্টের মত যখন তখন পেট টিপলেই বেরিয়ে আসে না।  টাটা কোম্পানি বছরে ক’টা নতুন অ্যাড বাজারে ছাড়ে?
    এসব বললেই উনি একটা গা জ্বালানো হাসি হেসে বলেন—আমূল কোম্পানি? প্রতি মাসে সমসাময়িক ঘটনা থেকে কেমন সুন্দর লাইন বানায়?
    আমি মনে মনে বলি আমূল ওর কপি রাইটারকে কত টাকা মাইনে দেয়? খালি পেটে ভজন হয় না।
    বেস্পতিবারে অনুত্তমা বলল—ছোট্ট পাখির আশা, নীল আকাশে মেলবে ডানা খাসা’।
    বস শুনেও না শোনার ভান করলেন। আমরা কোন ফোড়ন কাটলাম না। কারণ, অনুত্তমা ওঁর কোন তুতো বোনের মেয়ে, সেই সুবাদে চাকরি। ওকে ঝাড় দিতে হলে উনি আলাদা করে কামরায় ডাকেন।
    শুক্রবারে সুকান্ত  বলল—“বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবে”!
    উনি হাসলেন, বললেন এটা উনি খারিজ করছেন না। তবে রিজার্ভ বেঞ্চে বসবে। এর চেয়ে ভাল কিছু না পেলে—
    শনিবারে আমার পালা। মাথায় কিস্যু আসছে না। গতকাল শ্রাবন্তীর উকিল সেপারেশনের নোটিস পাঠিয়েছে। উকিলের সঙ্গে পরামর্শ করতে একদিন ছুটি নেওয়া দরকার। কিন্তু আমার কপি জমা না দেওয়া অব্দি কোন চান্স নেই।
    ম্যাডাম আমার অবস্থা দেখে উৎসাহ দেয়ার চেষ্টা করলেন।
    --আরে একজন জলজ্যান্ত লেখক থাকতে আমাদের কিসের চিন্তা। এমন একটা ধমাকেদার স্লোগান বানাও যে আরও ছোট ছোট স্টার্ট-আপ ওটা দেখে ইন্সপায়ার হবে।
    অনুত্তমা ফুট কাটল—‘আমাদের ছোটনদী চলে আঁকে বাঁকে’।
    ম্যাডামের চোখ কপট রাগে কুঁচকে ছোট হল। এর মধ্যে বড় হওয়ার স্বপ্ন কোথায়?
    সুকান্ত বলল যে ও আমার জন্যে একটা লাইন ভেবেছে। --উম, ‘ছোটিসি বাত! চলো মেরে সাথ! অব পকড়ো মেরা হাথ’।
    --এবার পেছনে পড়বে লাথ! এসব কী ইয়ার্কি হচ্ছে? ওকে ভাবতে দে। এই কাজটা ফসকে গেলে চলবে না। যা, নীচের থেকে একরাউন্ড চা খেয়ে আয়।
    বেলা তিনটে নাগাদ উনি আমাদের তিনজনকে ফের ডাকলেন। এবার আমার আর নিস্তার নেই।
    --কী হল? ছোট থেকে শুরু করে বড় হওয়া—এই হল থীম। কিছু বল।
    আমি মরিয়া। মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল—‘ছুঁচ হয়ে ঢুকব, ফাল হয়ে বেরোব’।
    সন্নাটা! সন্নাটা!
    --কী, কী বললি? আর একবার বল?
    আমি আর একবার রিপিট করলাম, যা থাকে কপালে!
    আমাদের সবাইকে অবাক করে উনি হাসিতে ফেটে পড়লেন।
    ওরে বাবা রে! ছুঁচ হয়ে – আর ফাল হয়ে--। ছুঁচ—ফাল--! রাস্তার পাশের উঁচু বিলবোর্ডে থাকবে ছুঁচ আর কোদালের ছবি?
    এবার বিষম খেলেন। সামলাতে গিয়ে জল খেলেন আর খানিকটা ছলকে ওনার শাড়ি এবং বুকের কাছটা ভিজিয়ে দিল। ফলে উনি উঠে নিজের চেম্বারে গেলেন। কাপড়চোপড় সামলে সুমলে আসবেন আর কি!
    আমরা অপেক্ষা করছিলাম।
    অনুত্তমা বলল—এটা কী করলে মনোজদা? এবার আমাদের সবার কপালে দুঃখ আছে।
    অনুত্তমা অফিসের মধ্যে কক্ষণো বসকে মাসি বলে না। এটিকেট মেনে চলে। দেখাতে চায় না যে মায়ের জোরে চাকরিটা পেয়েছে।
    আমি কোন কথা বলি না।
    সুকান্ত সান্ত্বনার সুরে বলে—তা কেন? হাসছিলেন তো? সেটুকু ক্রেডিট মনোজদাকে দেয়া যেতেই পারে।
    আমি চিমটি গায়ে মাখি নি।
    পনের মিনিট পরে বস এলেন।
    --যা, সবাই এখন বাড়ি যা। সোমবার ক্লায়েন্টের সঙ্গে মিটিং। আমি তিনটে সাজেশনই প্লেস করব। যদি কোন একটা লেগে যায় তো আমাদের কপাল ভাল। নইলে মঙ্গলবার থেকে তোদের নিয়ে নতুন করে ভাবব।

      
     
    আজ রোববার। সারাদিন মাথা ধরা, গা ম্যাজ ম্যাজ। গলায় জ্বালা জ্বালা ভাব।
    দুপুরের দিকে একবার ঘাবড়ে গিয়ে আলমারি থেকে অক্সিমিটার বের করে অক্সিজেন লেভেল চেক করলাম। নাঃ , ঠিকই আছে, আটানব্বই। কিন্তু পালস্‌ রেট একটু বেশি। না হবার কোন কারণ নেই।
    প্যারাসিটামল খেয়ে চাদর জড়িয়ে শুয়ে পড়লাম। একটু ঘুমনো দরকার।
    মাথায় নাচছে দুটো চিন্তা। শ্রাবন্তীর উকিলের চিঠির জবাব দিতে হবে। আজ ছুটির দিনে কাজটা সেরে ফেলতে পারলে ভালো হত। কিন্তু আমার উকিল প্রভাসচন্দ্র নস্কর ওরফে হাবুল ফোনে জানিয়ে দিল—হবে না বস। আজ বৌকে নিয়ে বেলুড় মঠ যাচ্ছি, সারাদিনের আউটিং। কাল সন্ধ্যের দিকে আয়, তোর জন্যে জান লড়িয়ে দেব।
    হাবুল আমার ছোটবেলার বন্ধু, উকিল ভাল, তবে ইংরেজিটা খারাপ। নইলে হাইকোর্টে যেতে পারত। আমার সুবিধে যে ওকে আগাম পেমেন্ট করতে হবে না। তবে টাইপিং আর ডাক খরচা অবশ্যই দেব আর হাবুল তা-না-না-না করে সেটা আলগোছে পকেটে পুরবে।
    আর পরেরটা হল আসল চিন্তা, একটা ধাঁসু ঝক্কাস ওয়ান লাইনার বানিয়ে ফেলতে হবে, সম্ভব হলে কাল সকালের মধ্যে। নইলে আগামী মাস থেকে ডাল-ভাতের জায়গায় নুন-ভাত জুটবে। বড্ড চাপ।
    আচ্ছা, শ্রাবন্তীকে বুঝিয়ে সুজিয়ে এই ডিভোর্স ব্যাপারটা আরেক বছর লটকে রাখা যায় না? তাহলে অন্ততঃ এই অন্নচিন্তা চমৎকারা হাল থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তারজন্যে কী করতে হবে?
    মন্তেস্বরী ম্যামের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বলতে হবে—গিভ মি ওয়ান মোর চান্স, হানি!
    অথবা ‘ বেবি, ইউ আর দ্য বেস্ট, ইউ আর দ্য বেস্ট’ দশবার বলব? কোন একটা সিনেমায় দেখেছিলাম নায়ক হাঁটু গেড়ে তুলসিমালা জপার মত করে দশবার ওই মন্ত্র আওড়াতেই নায়িকা গলে একেবারে মাখম হয়ে গেল।
    অথবা বিনা মেলোড্রামা শান্ত ভাবে বোঝালে? লজ্জার মাথা খেয়ে ঝুলি থেকে বেড়ালটা বের করলে? মানে, বছর ঘুরতে ঘুরতে কোভিড নিশ্চয় বিদায় নেবে। বাজারের অবস্থা একটু বেটার হবে। লোকে পাশাপাশি বসে সিনেমা দেখতে পাবে। সারাক্ষণ ছ্যাকরা গাড়ির ঘোড়ার মত মুখে একটা ঠুলি পরে থাকতে হবে না। এবং ততদিনে আমিও আগের চাকরি বা ওইরকম কিছু একটা বাগিয়ে নিতে পারব।  তারপর না হয়—
    হুঁ, আমি জানি শ্রাবন্তী যদি রাজিও হয়, সে সম্ভাবনা খুবই কম, আগে একটা হুল ফুটিয়ে তবে রেহাই দেবে। মনে করিয়ে দেবে সবাইকে সাক্ষী রেখে সারাজীবন ভাত -কাপড় জোগানোর দায়িত্ব আমিই নিয়েছিলাম।
    না, মাথায় কোন অন্ত্যমিল বা চমকে দেওয়া লাইন আসছে না। তারমানে সোমবার বিকেল নাগাদ আমাকে স্লিপ ধরিয়ে দেওয়া হবে। আর যদি ভগবানের ভুলে ক্লায়েন্টের মনে ধরে যায় আমার স্লোগানটা— সেই ছুঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরনো? তাহলে তো কথাই নেই।
    এমন দিন কি হবে তারা?
    কিন্তু আমি যে ফাটা কপাল নিয়ে জন্মেছি! নইলে গড়িয়া বাজারের সবচেয়ে বড় কাপড়ের দোকান ‘রাজদরবারে’র মালিক নিবারণ চন্দ্র ঘোষের বড় ছেলে মনোজ ঘোষ আজ নিজভূমে পরবাসী!  
    আমাদের পৈতৃক নিবাস আমতার মার্টিন লাইনের পাতিহাল বলে একটা গ্রাম। কিন্তু আমার পাঁচ বছর বয়েসে আমরা গঙ্গার খালের ওপারে বোড়ালের পাশে কামডহরি বলে একটা গ্রামে চলে আসি। এখানে আমাদের একটা নতুন বাড়ি হয়। লাগোয়া অনেকখানি জমিতে ফুল আর ফলের বাগান।
    অনেক আগের কথা, সব মনে নেই। আবছামত মনে পড়ে এক শীতের ভোরে আমরা পাতিহালের বাড়িঘর ফেলে দুটো টিনের প্যাঁটরা সম্বল করে মিনিবাস ধরে কোনরকমে দাসনগরে এসে বাবার এক বন্ধুর বাড়িতে কয়েকদিন ছিলাম। তারপর কামডহরিতে নতুন বাসায়, তবে বাড়িটায় তখন টালির চাল আর মাটির দেয়াল ছিল। একটু অবাক হয়েছিলাম। কিন্তু এ নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলেই বাবা খুব রেগে যেত।
    একটা ব্যাপার ছিল। বাবা কাউকে চিঠি লিখত না। নববর্ষ বিজয়া টের পেতাম না। এরপর গড়িয়া বাজারের কাছে আমাদের দোকানঘর হল। আরও দু’বছরের মাথায় বাড়িটা ভেঙে নতুন পাকাবাড়ি হল।
    আর তারপরই বাবা নতুন মাকে নিয়ে এল।
    আমি আর মা একতলায় রান্নাঘরের পাশের ছোট শোবার ঘরে নেমে এলাম। বছর ঘুরতেই নতুন মা বাড়িতে নতুন ভাই নিয়ে এল। ছোট্ট পুতুলের মত ভাই, কী সুন্দর! ঘুম ভাঙলে বড় বড় চোখ ঘুরিয়ে চারদিক থেকে, খিদে পেলে ওয়া ওঁয়া করে কাঁদে।
    আমি স্কুলে না গিয়ে সারাক্ষণ ওর পাশে বসে থাকতে চাইতাম। মুখে জলের বোতল গুঁজে দিতাম, কোলে নিয়ে হাট্টিমাটিম টিম শুনিয়ে ঘুম পাড়াতাম। নতুন মা কিছু বলত না, বরং একটু আশকারা দিত। কিন্তু একদিন কী করে যেন কাঁথায় মোড়া ভাইটা আমার হাত ফস্কে মাটিতে পড়ে গেল। সে কী চিৎকার! আমি ভয় পেলাম।
    মা নীচের তলার রান্নাঘর থেকে হুড়মুড়িয়ে দোতলায় উঠে আমাকে দুই চড় কষালো, তারপর ভাইকে কোলে তুলে শান্ত করে নতুন মাকে বলল—ভয় নেই, বেশি লাগে নি।
    কিন্তু বাবা সন্ধ্যেয় দোকান থেকে ফিরে সব শুনে আমাকে বেধড়ক ঠ্যাঙালো। আমি নাকি হিংসুটে, ইচ্ছে করে ছোট্ট ভাইটাকে মাটিতে ফেলে দিয়েছি। আমি যেন আর দোতলায় না উঠি।
    মা বাবাকে আটকাতে গেল এবং মার খেল। সেই প্রথম বাবা মায়ের গায়ে হাত তুলল।
    তারপর সেই রাতে বাবার সঙ্গে মা’র খুব ঝগড়া হল। আমি ভয়ে ভয়ে পা টিপে টিপে সিঁড়ি দিয়ে উঠে উঁকি দিয়ে অবাক হয়ে গেলাম।
    বাবাকে দেয়ালের গায়ে চেপে ধরে বুকের কাছে গেঞ্জিটা খামচে ধরেছে মা। চোখ দুটো বড় বড়, ঠিক কালীঠাকুরের মত। আর হিস্‌হিস্‌ করে বলছে—সইবে না, এত বড় অধম্ম সইবে না। একদিন রাধাকান্ত প্রামাণিকের অভিশাপ তোমাকে গিলে খাবে, ভস্ম করে দেবে।
    বাবা দুর্বল গলায় বলল—যা যা! ও’রম অনেক দেখা আছে।
    বাবা কি ভয় পেয়েছে?
    তারপর মা বাবাকে ছেড়ে দিয়ে বড় বড় শ্বাস ছেড়ে দরজামুখো হতেই আমি চার হাতপায়ে নীচে নেমে এলাম।
    রাত্তিরে পাশে শুয়ে জিজ্ঞেস করলাম—মা, রাধাকান্ত প্রামাণিক কে?
    মা চমকে উঠে আমার মুখ চেপে ধরল।
    --ওই নাম আর কখনও মুখে আনিস না মনু। এখন ঘুমো।
    ভোরবেলা ঘুম ভেঙে দেখলাম বিছানায় মায়ের জায়গাটা খালি। একটু পরে কাজের মাসি চপলা এল। খানিক পরে চিৎকার চেঁচামেচি কান্নাকাটিতে আমাদের বাড়ি সরগরম। পড়শিরা দল বেঁধে এল।
    মা আমাদের বাড়ির বাগানের পেছন দিকের একটা পেয়ারা গাছের উঁচু ডাল থেকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে, পরনে সায়া সেমিজ।
    পুলিশ এল। আমাকে জিজ্ঞেস করল। আমি বললাম—কাল বাবার সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল। মাকে চড় মেরেছিল। ওরা বাবাকে কালো গাড়িতে তুলে নিয়ে গেল। সেই রাতে আমাকে কেউ খেতে দেয় নি।
    তিনদিন পরের বিকেলে বাবা ফিরে এল। নতুন মায়ের বাড়ি থেকে লোকজন এল।

    ঘুমটা ভাঙায় টের পেলাম গলাজ্বালা ভাবটা নেই, কিন্তু বিচ্ছিরি মাথা ধরেছে।
    কড়া করে আদা চা বানিয়ে পাতিয়ালা মগ ভরে খেলাম। খুব একটা কাজ দিল না। আর একটা প্যারাসিটামল।
    রান্না করতে ইচ্ছে করছে না। বাঁশদ্রোণী বাজারের উলটো দিকে বৌদির ধাবায় গিয়ে ছ’টা রুটি আর ডিমের কষা খেয়ে নেব’খন। কুড়ি টাকায় হয়ে যাবে।
    এই সিদ্ধান্তটা নিতে পেরে মনটা বেশ ফুরফুরে হয়ে উঠল। জামাপ্যান্ট পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আরেকটা সিদ্ধান্ত নিতে হল। চুল-দাড়ি কাটতে হবে। সেলুনে গিয়ে ভাল করে হেড ম্যাসাজ করাতে হবে। উঁহু, পার্লারে নয়,  শস্তা সেলুনে চম্পি মালিশ। তাহলেই মাথাধরাটা ছেড়ে যাবে।
    এখন সন্ধ্যে ছ’টা। অক্টোবরের শেষ, এর মধ্যেই অন্ধকার নেমেছে। ওসব সেরে খেয়েটেয়ে ন’টার মধ্যে বাড়ি ফিরে ল্যাপটপ খুলে বসব, কিছু না কিছু আইডিয়া এসে যাবে।
    দশ মিনিট হয়ে গেছে। রোব্বারে বাঁশদ্রোণী বাজার বন্ধ থাকে খেয়াল করি নি। একটাও সেলুন খোলা নেই। আজ নাকি আদ্দেক দিন খোলে। মুখটা তেতো হয়ে গেল।
    ‘গায়েন মহাশয়’ মিষ্টির দোকানটা খোলা। ওদের জিজ্ঞেস করায় আমাকে একবার আপাদমস্তক ঝারি করে বলল – বলতে পারব না।
    ফুটপাথ পেরিয়ে পানের দোকান থেকে একটা সিগ্রেট কিনে বললাম—কাছাকাছি কোন সেলুন খোলা পাওয়া যাবে?
    -- খালপাড়ের দিকে এগিয়ে যান, দু’একটা আছে। দেখুন, যদি এখনও খোলা পান।
    এই গলিটা উষা পুলে ওঠার সমান্তরাল, আলো কম, নোংরা, একদিকে আবর্জনা ডাঁই করা, কিছু কুকুরের কামড়াকামড়ি—এদিকে না এলেই ভাল হত। একটা তেলেভাজা বা মদের চাটের দোকান, একটা শস্তা জামাকাপড়,  মনিহারি –ধেত্তেরি! সেলুন কোথায়।
    আছে, প্রায় ছাড়িয়ে যাচ্ছিলাম। বাঁহাতে ছোট মত দোকানটা, রাস্তা থেকে একটু নীচে,  সাইনবোর্ডের ঠিক গায়ে অল্প পাওয়ারের হলদেটে বাল্ব। লেখা – শ্রী নবকান্ত পরামানিক। দোকানটায় লাইট নেভানো কেন? মালিক কোথায়?
    দোকানটার সামনে দাঁড়িয়ে ইতস্তত করছি দেখে একজন রোগামত ধুতি পরা লোক এসে জিজ্ঞেস করল—বাবু কি চুল কাটবেন?
    --হ্যাঁ , চুলদাড়ি সবই। তুমিই কি সেলুনের মালিক? আলো জ্বালাওনি কেন?
    --এই সময় খদ্দের কম, তাই আলোপাখা বন্ধ করে বাইরে এসে গঙ্গার ফুরফুরে হাওয়া খাচ্ছি। ইলেক্ট্রিকের বিল তো বাঁচবে।
    কথা বলতে বলতে লোকটা সেলুনের ঘুপচি কামরায় ঢুকে অভ্যস্ত হাতে আলো পাখার সুইচগুলো অন করে একটা  তোয়ালে দিয়ে আয়নার সামনের চেয়ারটাকে থাবড়ে থুবড়ে বলল -বসুন।
    স্যাঁতসেতে কামরায় একটা সোঁদা গন্ধ। যে সাদা কাপড়টা দিয়ে আমার গা ঢেকে দিল তাতে ধূলোর গন্ধ। চোখে পড়ল আয়নায় দু’একজায়গায় দাগ ধরা আর ডানদিকের মাকালীর ছবিওলা ক্যালেন্ডারের সালটা দু’বছর আগের।
    --বাবু, চুল না দাড়ি? আগে কোনটা করাবেন?
    --উম্ম্‌, আগে জম্পেশ করে মালিশ কর। মাথাটা বড্ড ধরেছে। তারপর চুলদাড়ি।
    --চিন্তা করবেন না বাবু, মাথাধরা ঠিক সেরে যাবে। আর আপনার জন্যে কোন রেট লাগাব না, কাজ দেখে  খুশি হয়ে যা দেবেন।
    লোকটা কি থট রীডিং জানে? ওটাই তো ভাবছিলাম—কত নেবে! একটু অস্বস্তি হতে লাগল। এইসব গেঁয়ো ভালোমানুষ-মার্কা লোকেরা পরে বড্ড ভোগায়!
    কিন্তু সব অস্বস্তি চলে গেল ওর হাতের ছোঁয়ায় ; ওর আঙুলগুলো যেন ম্যাজিক জানে। চোখের উপর আলতো ছোঁয়ায় পাতা বুজিয়ে দিল। পরমযত্নে কপালের উপর, কানের পাশ্‌ ঘাড়ের পেছনে ফুলে থাকা শিরাগুলোকে বশ মানালো। তারপর মাথার উপরে যেন তবলা লহরার ছন্দের জাল বিছিয়ে দিল। আমি কাঠের চেয়ারে বসেই আরামে ঘুমিয়ে পড়লাম, আর তখুনি বর্ষার মেঘের মত স্বপ্নেরা ধেয়ে এল। কত স্বপ্ন, ভুলে যাওয়া স্বপ্ন। আমি গাঢ় ঘুমে তলিয়ে গেলাম।
    কতক্ষণ কেটে গেছে জানি না। জেগে উঠলাম প্রবল অস্বস্তিতে, --কুলকুলিয়ে ঘামছি, গলা শুকিয়ে কাঠ।
     ঘুপচি দোকানঘরে গাঢ় অন্ধকার। পাখা লাইট সব বন্ধ। চেয়ার ছেড়ে ওঠার চেষ্টা করতেই দুটো হাত শক্ত করে আমার কাঁধে চাপ দিয়ে ফের বসিয়ে দিল।
    কানের কাছে ফিসফিসে কন্ঠস্বর—নড়বেন না, একদম না। হাতের ক্ষুরে গলার নলিটা দু’ফাঁক হয়ে যাবে। দাড়ি কাটছি।
    আমি ফ্রীজ, আলো নেই কেন? আর অন্ধকারে এই পরামানিক কী করছে?
    -- কারেন্ট চলে গেছে। কখন আসবে ঠিক নেই। কাজ কিন্তু বন্ধ হয় না, আমি অন্ধকারে দেখতে পাই।
    আমার শিরদাঁড়া বেয়ে বরফজল নামছে। এ কে? কী চায়!  আমি কি জেগে আছি?
    পরামানিকের হাত চলছে আমার গলার কাছে, একবার কণ্ঠনালির কাছে এসে থেমে গেল।
    এবার ক্ষুর চলছে বাঁদিকের গালে। আর ও গুনগুন করে একটা সুর ভাঁজছে, ধীরে ধীরে কথাগুলো স্পষ্ট হলঃ
    ‘পাতিহাল, বড়গাছিয়া, আমতা,
    শুনবে নাকি পুরনো এক নামতা’?
    ঘুরে ফিরে সেই একঘেয়ে সুর আর কথা।
    কিন্তু নামগুলো কেমন চেনা চেনা। মনে পড়ছে এগুলো মার্টিনের হাওড়া-আমতা লাইনের শেষ তিনটে স্টেশনের নাম। হ্যাঁ,  পাতিহালে ছোটবেলায় ছিলাম—বাবা, মা আর আমি। ওখানেও বাবার একটা ছোটমত কাপড়ের দোকান ছিল। আর বাবার একজন বন্ধু ছিল। কী যেন নাম? মনে নেই।
    গানটা থেমে গেল।
    ফিসফিস স্বরে শুনলামঃ মনে করিয়ে দিচ্ছি। পাতিহাল স্টেশনের গায়ে একটা কাপড়ের দোকান ছিল -শ্রীহরি বস্ত্রালয়। দুইবন্ধুর দোকান। নিবারণ চন্দ্র ঘোষ আর রাধাকান্ত প্রামাণিক। কাছের গড়বালিয়া হাইস্কুলে ওরা মাধ্যমিক অব্দি পড়েছিল। সেই থেকে বন্ধুত্ব। তারপর স্কুলের পড়াশোনার পাট চুকলে দুই বন্ধু মিলে খুলল কাপড়ের দোকান।
    ধারদেনা করে পুঁজি লাগিয়েছিল রাধাকান্ত, তার সঙ্গে জুটেছিল নিবারণের ব্যবসাবুদ্ধি। দোকান বড় হল।
    আরও পুঁজি দরকার। ধার করতে হবে। কিন্তু কে দেবে?
    রাধাকান্তের  পৈতৃক বসতবাটি কাছের গড়বালিয়া গ্রামে। নিবারণ থাকে পাতিহালের দোকানের পেছনে পঞ্চায়েতের জমিতে দুটো কোঠা বানিয়ে। ও  নিয়ে এল মহাজন অমৃত সাউকে, রাধাকান্তের বসতবাটির কাগজ বন্ধক রেখে সাউজি দিল পঞ্চাশ হাজার টাকা; দু’বছরে সুদসমেত ফেরত দিতে হবে।
    নিবারণ ভরসা দিল। কুছ পরোয়া নেই। মাসে আড়াই হাজার টাকা করে দিলেই হবে। রাধাকান্ত বড় বিশ্বাস করত নিবারণকে। প্রতিমাসে ওর হাত দিয়েই কিস্তির টাকা সাউজির গদিতে পাঠাত। এভাবে দেড়বছর কাটলে পরে একদিন সাউজি লোকলস্কর, গাঁয়ের মোড়ল এবং পাতিহাল থানার দুটো সেপাই নিয়ে শ্রীহরি বস্ত্রালয়ের দোরগোড়ায় হাজির।
    কী ব্যাপার? না, রাধাকান্তকে দোকান এবং বসতবাটি খালি করে চাবি সাউজির হাতে তুলে দিতে হবে। কেননা, একবছর ধরে কিস্তির টাকা জমা পড়েনি। কাজেই শর্ত অনুযায়ী---
    রাধাকান্তের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল।
    এ রকম হতেই পারে না। সাউজির কোথাও ভুল হচ্ছে। কিস্তির টাকা তো মাসে মাসে নিবারণের হাত দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
    ভুল কথা, প্রথম ছ’মাসের পর এক পয়সা জমা হয় নি।
    সে কী! নিবারণকে ডাকুন। ও নিজে মুখে পাঁচজনের সামনে বলবে।
    বেশ, ডাকো নিবারণকে।
    নিবারণ তো আজ গাঁয়ে নেই। হাওড়া ময়দানের কাছে মঙলাহাটে গেছে কিছু অর্ডার দেয়া কাপড় কিনে আনতে, রাত্তিরে ফিরবে।
    ঠিক আছে, আমরা কাল আসছি।
    নিবারণ আর ফেরে নি। কোথায় গেছে সেটা এই আমতা-বড়গাছিয়া-পাতিহাল চত্বরে কেউ জানে না।
    আমার গলায় থুতু শুকিয়ে গেছে। কোনরকমে শুধোই—আর রাধাকান্ত? ওরা কোথায়?
    --কেউ জানে না। ভিটেমাটি চাটি হওয়া লোকের খবর কে রাখে? তবে একটা কথা ছিল বাবু। বাপের পাপের প্রায়শ্চিত্ত তো ছেলেকেই করতে হয়, কী বলেন?
    এবার ওর হাত ফের আমার গলার কাছে। ক্ষুরের উলটো দিকটা আমার মসৃণ গালে ও গলায় ঘোরাফেরা করছে। আমি চোখ বুজে অপেক্ষা করি।
    কেউ আস্তে আস্তে আমার কাঁধে চাপড় মারছে।
    --বাবু, ও বাবু! উঠুন,হয়ে গেছে।
    চোখ খুলি, কারেন্ট এসে গেছে। পাখা ঘুরছে, তার হাওয়ায় জুড়িয়ে যাচ্ছে আমার ঘামে ভেজা শরীর। ট্যালকাম পাউডার আমার ঘাড়ে এবং গলায় একটা সুন্দর গন্ধের আমেজ এনে দিয়েছে।  হলদেটে বাল্বের আলোয় আয়নায় নিজের চেহারা দেখি—নিখুঁত কামানো গাল, ভাল করে ছাঁটা চুল ও জুলফি।
    চেয়ার ছেড়ে উঠে ওকে একটা পঞ্চাশ টাকার নোট দিই। ও ড্রয়ার খুলে আমাকে দশ টাকা ফেরত দেয়। আমি মাথা নাড়ি –ওটা রাখ, আমি দিচ্ছি।
    --না বাবু, বেশি লোভ করব না। যা ন্যায্য, তাই নেব।
    বেরিয়ে আসার আগে জিজ্ঞেস করলাম—তোমার বাড়ি কোথায়?
    --বোড়ালের শ্মশানের পাশে।
    --পৈত্রিক বাড়ি?
    --না বাবু, বাবার মুখে শুনেছি আমরা নাকি হুই হাওড়া-আমতা লাইনের দিকে  কোথাও থাকতাম।
    --তোমার বাবার নাম?
    --রাধাকান্ত পরামানিক।
    ==========================================================
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:80a3:2f72:2c83:***:*** | ২৩ অক্টোবর ২০২২ ০৬:২২738644
  • উরেঃসাবাশ!!
  • Nirmalya Nag | ২৩ অক্টোবর ২০২২ ২২:৫২738646
  • দারুণ
  • সম্বিৎ | ২৪ অক্টোবর ২০২২ ০৪:৫২738648
  • বাঃ। 
  • Sobuj Chatterjee | ২৪ অক্টোবর ২০২২ ১৩:১৪738652
  • সূচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরোলো!  কেয়া বাত! 
  • Kishore Ghosal | ২৪ অক্টোবর ২০২২ ২০:০২738653
  • বাঃ বেশ। 
  • শঙ্খ | 116.206.***.*** | ২৮ অক্টোবর ২০২২ ২৩:১১738693
  • সাধু ..... সাধু..... মানে একেবারে ওল্ডমংকের মত ভালো হয়েছে।
  • Ranjan Roy | ২৯ অক্টোবর ২০২২ ১৯:৩৭738705
  • যাঁরা এই অকিঞ্চিৎকর গপ্পোটি পড়ে তাঁদের ভালোলাগা জানিয়েছেন সবাইকে ধন্যবাদ।
     আরো দু'একটা গল্প লেখার উৎসাহ পেলাম।
  • সুমন | 2409:4061:183:63bd::13a3:***:*** | ০২ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৫১738746
  • অসাধারণ গল্প 
  • দুর্জয় পাড়ুই | 43.25.***.*** | ০২ নভেম্বর ২০২২ ২০:৪১738747
  • পড়তে গিয়ে শুধু নয়, শিরোনাম দেখেই এই গল্পটার কথা মনে পড়ছিল থেকে থেকেই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন