এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  প্রবন্ধ

  • ধ্যান ও  স্নায়ুবিজ্ঞান 

    অরিন লেখকের গ্রাহক হোন
    প্রবন্ধ | ১২ জুন ২০২৪ | ৬৫০৬ বার পঠিত | রেটিং ৩.৮ (৪ জন)
  • | |

     
    গোড়ার কথা: কি, কেন, ইত্যাদি 
     
    এই প্রবন্ধটির আলোচনার বিষয় ধ্যান এবং স্নায়ুবিজ্ঞানএর পারস্পরিক সম্পর্ক, বা বলা যেতে পারে স্নায়ুবিজ্ঞান এর "চোখ" দিয়ে ধ্যানের মতো একটি বিষয়কে বোঝার চেষ্টা করা। আজ অবধি এই বিষয়ে মোটামুটি যা যা জানা হয়েছে ও জানা হচ্ছে তার একটি অতি সংক্ষিপ্ত, হয়তো কিছুটা লঘু ধরণের অবতরণিকা পেশ করা। এখন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে হঠাৎ করে এইরকম একটি বিষয় নিয়ে, বিশেষ করে ধ্যান ও স্নায়ুবিজ্ঞান নিয়ে দু চার কথা পাড়তে গেলে যা হয়, আপনারা যারা পাঠক আপনাদের কারো কারো মনে হতে পারে যে কোথায় কি নিয়ে গপ্পো? মানে কোথায় ধ্যানের মতো গুরুগম্ভীর ধর্মীয় বিষয়, রীতিমতন সাধারণ ভাবে যার সঙ্গে নানারকমের ধর্ম কর্মের যোগ প্রবল, আর কোথায় নিউরোসায়েন্স, অতি জটিল বিজ্ঞান, বিশেষত মস্তিষ্কের জটিল অন্তর্জগতের হদিস দেওয়া যার কাজ - এই দুটো বিপ্রতীপ বিষয় কি তেল আর জল মেশানোর মতো অসম্ভব ব্যাপার নয়? এখানে আমার উত্তর "না নয় :-) ",  কিন্তু কেন নয়, ক্রমশ প্রকাশ্য । 
     
    এ নিয়ে সন্দেহ নেই যে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুবিজ্ঞান অতি জটিল বিষয়, এবং অনেকেই হয়তো ভাবেন যে যাদের ও বিষয়ে ব্যুৎপত্তি নেই, তাদের পক্ষে ও বিষয় না যায় বোঝা, না যায় বোঝানো । তার থেকে অপেক্ষাকৃত ভাবে ধ্যান ব্যাপারটি আপাতভাবে আরেকটু সোজাসাপ্টা ও হাতেকলমে করে দেখা যেতে পারে। এইটা আমার মনে হয়, তাই এই লেখাটিতে প্রথমে ধ্যান ব্যাপারটিকে নিয়ে চর্চা করা যাক। তারপর পর্যায়ক্রমে ধ্যানের সঙ্গে নানান রকমের ব্যবহারিক প্রয়োগ, এই করে আমরা স্নায়ু, মস্তিষ্ক, সেখান থেকে নির্গত সংবেদনাকে ধরার জন্য ইলেক্ট্রোএনকেফালোগ্রাফি (EEG), মস্তিষ্কের অভ্যন্তর দেখার জন্য MRI ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে, কারণ ধ্যান, এবং মনোবিজ্ঞান এবং স্নায়ুবিজ্ঞান ইত্যাদি বিবিধ বিষয়ের অবতারণা করতে গেলে এই বিষয়সমূহ আসবেই ।
     
    লেখাটার গোড়ায় এখানে একটা কৈফিয়ত দেবার ব্যাপার আছে। সেটা এই যে আমাদের এই আলোচনা কিন্তু ধ্যানের ধর্মীয় দিকগুলো নিয়ে আমরা করব না, আমরা বরং বিষয়টিকে বৈজ্ঞানিক পরিপ্রেক্ষিতে দেখার চেষ্টা করব। তার অর্থ অবশ্য এই নয় যে ধ্যানের ধর্মীয় ব্যাপারটি কম গুরুত্বপূর্ণ, বরং উল্টোটা। ধ্যানের অবশ্যই একটি ধর্মীয় দিক রয়েছে, এবং সে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এবং সে দিকটি বিভিন্ন ধর্মের ধ্যানের চর্চায় দেখা যায়। উপনিষদিক ব্রাহ্মণ্যাধৰ্মে যেমন হঠযোগ (বিশেষ করে প্রাণায়াম প্রক্রিয়া ইত্যাদিতে) এবং রাজযোগে ধ্যানের অপরিসীম গুরুত্ব, তেমনি বৌদ্ধধর্মে অনপনসতী (শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে নজর রেখে ধ্যান), বা কায়াগত সতী (শরীরের বিভিন্ন অংশে নজর রেখে ধ্যান) বা বিপাসনা (আসলে বলা উচিত বিপস্যনা), তেমনি আবার খ্রীষ্ট ধর্মেও সুপ্রাচীন কাল থেকে ধ্যানের তাৎপর্য রয়েছে (মরু যাজকদের সূত্রে, desert fathers , দেখুন, https://www.contemplativeoutreach.org/the-christian-contemplative-tradition/ ), তেমনি ইসলাম ধর্মেও ধ্যানের  ভূমিকা রয়েছে।  সেইসব জটিল পারমার্থিক বিষয়ের মধ্যে না গিয়ে আমরা আপাতত ধ্যান কি সেই দিকটায় প্রাথমিক মনোনিবেশ করি, কারণ ধ্যান কি ও কত রকমের । এছাড়াও ধ্যান বিষয়টিকে কেন্দ্র করে যে কতরকমের অদ্ভুত ধারণা আমাদের সমাজে আছে, সে সমস্ত নিয়ে দু একটি কথা আলোচনা এখানে প্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে নয়। এখানে আরেকবার লিখে রাখা যাক যে  ধ্যান মানেই ধর্ম-কর্মের ব্যাপার নয়, এই ব্যাপারটা স্পষ্ট করে না লিখলে এ আলোচনা এগোনো যাবে না। 
     
    ধ্যান বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা 

    এক কথায় ধ্যান কথার সঙ্গে  মনোনিবেশ বা মনঃসংযোগ ব্যাপারটির একটি যোগাযোগ রয়েছে, যদিও সচরাচর বাংলা ভাষায় ধ্যান কথাটি বললে সেই ব্যাপারটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে না । সে তুলনায় হিন্দি ভাষায় যদি "মন দিন" বলতে হয়, বলা হয় "কৃপয়া ধ্যান দিজিয়ে"। আমরা বাংলা ভাষায় ধ্যান বলতে অনেকটা এইরকম একটা ছবির কথা ভাবি সাধারণত :
     

    (জনৈকা ধ্যানরতা)
     
    ছবিটা "মন দিয়ে" দেখুন । ছবিতে যে মানুষটিকে দেখা যাচ্ছে তাঁর চোখদুটি বন্ধ, দুই হাত দুই হাঁটুতে রেখে, তিনি  বসে আছেন। ধ্যানরত লিখলাম বটে, তিনি কি প্রকৃত পক্ষে ধ্যান করছেন? অস্যার্থ , কারোর এই রকম ছবি দেখে কি বোঝা যায় যে  তিনি সত্যি সত্যি ধ্যান করছেন? সেটা আমরা জানছি কি করে? ধ্যান ব্যাপারটা কি শুধুই হাতের মুদ্রা আর বিশেষ রকম পিঠ টান টান  করে বসে থাকার ব্যাপার? ইনি  ধ্যান আদৌ করছেন কিনা আমরা কিন্তু জানি না, কাজেই যে কেউ তাঁর ধ্যানস্থ অবস্থায় বসে থাকার নানাবিধ ছবি দেখাতে  পারেন (আজকাল বৈদ্যুতিক সামাজিক মাধ্যমের যুগে অনেকেই সেই ধরণের ছবি পেশ করে থাকেন), তা থেকে কিন্তু প্রমাণিত হয় না যে তিনি অভিনয় করছেন, না সত্যিকারের ধ্যান করছেন । আপাত ছবি দেখে যদি সত্যিকারের ধ্যানের কথা ভাবা যায়, তাহলে ভুল হবে । একথা লিখছি কেন?  একটা সহজ উদাহরণ দিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করি । 
     
    চুপটি করে বসে থাকো, কিছু কোরো না
    যেমন ধরুন, ছোট বয়েসে  "চুপটি  করে বসে থাকো, কিচ্ছু করো না" এই কথাটা আমরা হয়তো অনেকেই শুনেছি । কিন্তু এই ব্যাপারটাই, যে কোন কাজ কর্ম না করে চুপ করে বসে থাকার ব্যাপারটি প্রাপ্ত বয়েসে কেমন হয়?   মনে করুন আপনি স্থির হয়ে বসে থাকা মনস্থ করলেন। আরো মনে করুন আপনি স্থির করলেন প্রায় ২০-২৫ মিনিট মতন ঐরকম এক ঠায় একটি চেয়ারে বা আসনে বসে থাকবেন। কাজ কর্ম কিছু করবেন না, শুধু এক জায়গায় চোখ বুজে চুপ করে বসে থাকবেন। প্রথমত ঐরকম করে বসে থাকা, নেহাত সহজ নয়, বা করলেও যেটি অবধারিত ভাবে হবে, মনে নানান রকমের চিন্তা ভিড় করে আসতে থাকবে, মন যেন জংলী বাঁদরের  মতন, এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফিয়ে বেড়ায় (বৌদ্ধ ধর্মে এই মনের অবস্থাকে বলে "কপিচিত্ত ", আমরা আপাতত ধর্মকর্ম জাতীয় আলোচনা না করা মনস্থ করেছি, অতএব এ নিয়ে কথা বাড়াবো না)। এখন "কপিচিত্ত " দশা প্রাপ্ত হলে যা হয়, মনে নানান রকমের চিন্তা ভিড় করে আসে, এক চিন্তা অন্য চিন্তায় মিশে যায় বিস্তর দিবাস্বপ্ন দেখা হয়। বাইরে থেকে আপনাকে দেখলে মনে হবে আপনি বুঝি গভীর ধ্যানে নিমগ্ন, আসলে তা তো নয়। এবং এই ব্যাপারটি ধ্যানও নয় কারণ ধ্যানের অন্যতম শর্ত  মনোনিবেশ করা, সেটি না হলে ধ্যান বলা যাবে না।
     
    এবার আমরা আরেকবার বিষয়টিকে বিবেচনা করে দেখি । এইবার, আবার, বসে থাকার একই ব্যাপার, কিন্তু আগের থেকে এবারের তফাৎ, এবার চোখ বন্ধ করে ও সুখাসনে উপবেশিত হয়ে আপনি "মনোনিবেশ" করবেন, মনকে একেবারে লাগামহীন অবস্থায় ছেড়ে দেবেন না । অতএব আবার সেই  ব্যাপার, একই রকমের বসার ভঙ্গি, এবারও ২০ মিনিট ঘড়ি ধরে একটি নরম গদিতে ধরুন আসন পিঁড়ি হয়ে বসলেন, বা একটি চেয়ারে বসলেন । চোখ বন্ধ করলেন, এবং , এইবার স্থির করলেন যে "মনোনিবেশ" করবেন, মনকে লাগামহীন ঘুরতে দেবেন না । এই অবধি তো হল, এখন মনোনিবেশ করবেন কিসে? 
     
    সব ধ্যান একরকম নয় (যে ধরণের ধ্যানের কথা আমরা এই প্রবন্ধে আলোচনা করছি না )
     

    এইখানে দুটি কথা বলার আছে। প্রথমত, মনে করুন মনোনিবেশ করবেন কোনো একটি রূপকল্পনায়, কোনো একটি  শব্দে, বা কোন একটি  মন্ত্রে ।  মহাঋষি মহেশ যোগী বলতেন শব্দের ওপর "ধ্যান দিতে", যাকে এখন বলা হয় transcendental meditation । এই ধরণের ধ্যান করার সময় অন্য কোন কিছুকে মনে স্থান দেওয়া যাবে না । অনেকে তাই এই ধরণের ধ্যান কে চিন্তাশূণ্য ধ্যান বলেন । এই জাতীয় ধ্যান বা মনোনিবেশ আমাদের এই আলোচনার বিষয় নয়, অন্য কোনো সময় একে নিয়ে চর্চা করা যাবে। দ্বিতীয়ত, আমরা যে ধরণের ধ্যান নিয়ে এই প্রবন্ধে আলোচনা করতে চাই তাকে "মুক্ত ধ্যান" (open awareness meditation) বলা যেতে পারে। সে কিরকম ধ্যান? আসছি সে কথায় ।
     
    আমাদের আলোচ্য ধ্যান: মনোনিবেশিত ধ্যান বা Mindfulness Meditation
     
    আগের বারের মতন এবারেও আপনি মনে করুন ২০-২৫ মিনিট সময় নিয়ে ঘড়ি ধরে ধ্যান করতে শুরু করেছেন। এইবার আপনি "মন" দেবেন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি, আপনার নাসারন্ধ্রে শ্বাস নেবার সময় হাওয়া প্রবেশ করছে, শ্বাস নির্গত হচ্ছে ওই পথে, আপনি তার প্রতি মনোনিবেশ করবেন । এবার দেখবেন কিছু পরে পূর্ববর্ণিত কপিচিত্তের কার্যকলাপ শুরু হবে, আপনার মনে নানান রকমের চিন্তাভাবনা আসতে থাকবে। এক্ষেত্রে আপনি সেইসব চিন্তাসমূহ দূরে কোথাও সরিয়ে রাখবেন না, বরং নিজেকে বলুন যে "আমি আর আমার মন আমার চিন্তা এক নয়, অতএব সবিশেষ কৌতূহল নিয়ে তাদের দেখি", এই বলে  নিজের শরীর থেকে মন সরিয়ে নিয়ে কৌতূহল সহকারে এই যে নানান ধরণের চিন্তা মনে আসছে, তাদের দেখতে থাকুন ।  এই ব্যাপারটা মোটেও সহজ নয়, এই কাজটি করতে আপনার সময় লাগবে, ধৈর্য্য লাগবে । আপনার ভাবনাচিন্তা এমন ভাবে  "দেখতে" থাকুন, যেন গ্যালারিতে বসে খেলা বা নাটক দেখছেন । চিন্তার উদয় হওয়া মাত্রই, তাদের একটি নাম দিন, এবং তারপর আবার পুনরায় আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি  মনোনিবেশ করুন। যেমন ধরুন, ধ্যান শুরু করেছেন, শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে নজর রাখতে শুরু করেছেন, এমন সময় মনে একটি চিন্তা উদিত হল  যে অমুকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, এখন অবধি করা হয়ে ওঠেনি । সে চিন্তা ভারী প্রবল হয়ে মনে উপস্থিত হল । এখন আপনি ধ্যান করা ছেড়ে উঠে গিয়ে অমুকবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, কিন্তু তা না করে, এই চিন্তাটির যে উদয় হয়েছে, তার প্রতি কৌতূহল প্রকাশ করে মনে মনে নিঃশব্দে নিজেকে বলতে লাগলেন "যোগাযোগ", "যোগাযোগ", এবং একাগ্র মনে আবার শ্বাস প্রশ্বাসের প্রতি নজর ফিরিয়ে আনলেন । এই ধরণের যে ধ্যান, যেখানে মনোসংযোগ করা হচ্ছে ঠিকই, তবে অন্যান্য ধারণাকে দেখে, তাদের অগ্রাহ্য করা হচ্ছে না, এই ধরণের ধ্যান নিয়ে আমাদের আলোচনা (এর ইংরেজি পরিভাষায় "open awareness meditation" বলা হয়, আমরা বাংলা করে বলতে পারি "মুক্ত চেতনার ধ্যান" ।
     
    আকাশ ও মেঘ 
     
    এবার এখানে একটা ব্যাপার নজর করুন । এই যে পদ্ধতিতে ধ্যানের কথা বলা হচ্ছে, এই যে শ্বাসের প্রতি মন নিবিষ্ট রেখে অন্যান্য যে সমস্ত চিন্তা ভাবনা মনে আসছে তাকে চিহ্নিত করতে থাকছেন, তাতে করে কিন্তু মন থেকে চিন্তা "দূর" করার কোন  ব্যাপার নেই,  মনকে "চিন্তাশূণ্য" করার কোন প্রয়োজন নেই। ক্রমাগত যদি চিন্তা ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে তাদের উদয় এবং অস্ত যাওয়া লক্ষ করতে থাকেন , তাহলে একটা ব্যাপার অচিরে বুঝতে পারবেন।  প্রতিবার এই যে চিন্তাভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করতে থাকবেন, এরা একবার করে উদিত হবে, তারপর আবার মিলিয়ে যাবে। ধ্যানের বিভিন্ন ঘরানায় (বিশেষত বিভিন্ন ধর্মে), এর একটা উপমা দেওয়া হয়, এ যেন অনেকটা নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনার মতন ব্যাপার। রবীন্দ্রনাথের পূজা ও প্রার্থনা পর্যায়ের "মাঝে মাঝে তবে দেখা পাই" গানের কথা স্মরণ করলে দেখবেন কবি লিখেছিলেন, "কেন মেঘ আসে হৃদয়-আকাশে তোমারে দেখিতে দেয় না", এও তাই । আপনার হৃদয় একটি আকাশের মতন, সেখানে নানান চিন্তা ভাবনা মেঘের মতন আসে, কিছু সময় যেন ভেসে বেড়ায়, তারপর মিলিয়ে যায় । আপনার মন আকাশ, আর চিন্তা ভাবনা, ধারণাসমূহ মেঘের মতন ভেসে বেড়ায় ।  উপনিষদেও "চিদাকাশ" কথাটির ঐরকম একটি  ধারণা পাওয়া যায় । এই রকম করে, আপনি যতক্ষণ অবধি  ধ্যান করবেন, আপনার মনে একেকবার একেকটি চিন্তা আসতে থাকবে, আপনি তাদের চিহ্নিত করবেন, তারপর আবার ধীরে ধীরে শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে মন নিবদ্ধ করতে থাকবেন । কালক্রমে ক্রমশ এলোমেলো চিন্তা ভাবনার মনে আসা যাওয়া কমে আসবে, মন পুরোপুরি শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি নিবদ্ধ হবে। আমি যেভাবে লিখলাম, কথাটা লেখা সহজ, কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটি অমন সহজ নয় । বেশ কয়েকদিন নিয়ম করে ধ্যান করতে থাকলে তখন দেখবেন এই ব্যাপারটি হয়তো কিছুটা সম্ভব হবে, তবে সে হতে দীর্ঘ সময় ধরে আপনাকে প্রায় প্রতিদিন কিছুটা সময় ধ্যানে ব্যয় করতে হবে ।

    তার পর লক্ষ  করবেন, মন হয়তো কিছুক্ষন এর জন্য শ্বাসপ্রশ্বাসে নিবেশিত হয়েছে । তারপর, শরীরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানান রকমের ব্যাথা বেদনা  সংবেদনা এসে উপস্থিত হবে। আপনি এই অবস্থায় ধ্যান করার অভ্যাসে রণে ভঙ্গ দিতে পারেন, আবার  নাও পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে হয়তো ক্ষণকালের জন্যে আপনার  মনকে শরীরের থেকে "আলাদা" করে নিয়ে ভাবতে শেখাতে হবে যে, এই সাময়িক শারীরিক সংবেদনা নেহাতই শারীরিক ব্যাপার, একে আপাতভাবে শরীরের "হাতেই" ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে । তবে এখানে একটা কথা মনে রাখবেন  বলে সব রকমের শারীরিক সংবেদন উপেক্ষা করার বিষয় নয়, কোনটা করার আর কোনটা নয় ধরে নেওয়া যেতে পারে সে বোধ আপনার রয়েছে । বেশ কিছুক্ষন যদি এইভাবে স্থির থাকেন, তখন দেখবেন ঠিক যেমন প্রাথমিক উড়ো চিন্তাভাবনা গুলো প্রথমে জড়ো হয়ে তারপর ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল (অবিশ্যি মিলিয়ে আর গেলো কোথায়, মনের গভীরে কোথাও সে রয়ে গেলো, শুধু আপনাকে আপনার ধ্যান থেকে সরিয়ে দিতে পারল না), এই শারীরিক ব্যাপারগুলো সেইরকম, উদিত হবে, কিছুক্ষন জ্বালাতন করবে, তারপর অস্তমিত হবে। তারপর আবার যখন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে মনোনিবেশ করেছেন, তখন আবার অন্য রকমের কিছু মানসিক চিন্তা ভাবনার উদয় এবং অস্ত হতে থাকবে। এরকম চলতেই থাকবে। ব্যাপারটি অনেকটা এইরকম,
     

     
    এখন, এই যে ধরুন মনের মধ্যে একেকটি ভাব চক্রাকারে চলতে থাকছে এবং একে যদি আপনি নিয়ম করে প্রতিনিয়ত ধ্যান করে যেতে থাকেন, বিশেষ করে এই যে নানান রকমের ভাব উদিত হচ্ছে, তা থেকে আপনি নিজেকে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হন, কোনো রকম আলাদা করে ভালো মন্দর বিচারবোধ দিয়ে তাকে না দেখেন, এই ব্যাপারটিই  মনোনিবেশিত ধ্যান যাকে ইংরেজি পরিভাষায় mindfulness meditation বলা হয় । একে যদি  আপনি মাস দুয়েক নিয়ম করে চালিয়ে যেতে সক্ষম হন, আপনি  "নিজের মধ্যে" দুটি ব্যাপার লক্ষ  করবেন :
     এক, আপনার শারীরিক, মানসিক বা চেতনায় যে সমস্ত সংবেদন আসবে, তার কোনটির প্রতি কতটা মনোসংযোগ করবেন, আপনি স্বয়ং তার নিয়ন্ত্রক, অর্থাৎ, ক্রমাগত আস্তে থাকা অনুভূতি গুলো আপনাকে আপনার একাগ্রতা থেকে সরাতে সক্ষম হবে না ।
    দুই, এই যে আপনার বিভিন্ন রকমের অনুভূতি, সে যা হোক, ব্যাথা,  বেদনা,মানসিক উদ্বেগ, বিষন্নতা, প্রতিটির প্রতি আপনার এক ধরণের ঔৎসুক্য বলুন, কৌতূহল বলুন, এমন একটা সম্পর্ক স্থাপিত হবে, যেন আপনি আর তারা আলাদা, আপনি ও আপনার অনুভূতি, আপনার মন এক নয়, ব্যাপারটির  উপলব্ধি হবে  । বিশেষ করে, যত দিন যাবে, তত ক্রমশ নিজের মধ্যে নজর করবেন মনের মধ্যে এক ধরণের পরিবর্তন আসছে  যে আপনি যা ছিলেন, তার তুলনায় আরো অনেক নিস্পৃহ ও শান্ত হয়ে পড়ছেন । আপনাকে বাইরে থেকে দেখলে হয়তো কেউ বুঝতে পারবে না, সে পরিবর্তন অন্তরের পরিবর্তন । আপনার উদ্বেগ, রাগ, একই  কথার চর্বিতচর্বন, এই ধরণের চিন্তা ভাবনা গুলো ক্রমশ কমতে থাকবে  ।  সে ধরণের পরিবর্তন হয়তো আপনি নিয়মিত ধ্যান না করলে হত  না, আর আপনি যদি ধরুন কয়েক সপ্তাহ ধ্যান করা বন্ধ করে দেন, আপনি আবার আপনার পুরোনো অবস্থায় ফিরে যাবেন ।  এই ব্যাপার গুলো থেকে মনে হতে পারে আপনার অন্তরের যে পরিবর্তন তাতে ধ্যানের একটা প্রভাব রয়েছে ।
     
    স্নায়ুবিজ্ঞানের কথাটা আসছে  কেন?
     
    এই  ব্যাপারগুলো যেহেতু সাধারণ মানুষের মধ্যে লক্ষ করা যায়, স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে যে কি কারণে এমন হচ্ছে? তাহলে কি ধ্যান ব্যাপারটি কোন ভাবে আমাদের চেতনায় একটা পরিবর্তন আনছে? তাই যদি হয়, তাহলে তাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে? যেহেতু মস্তিষ্ক এবং চেতনার কথা উঠছে, তাই স্নায়ু এবং সেই সূত্রে স্নায়ুবিজ্ঞানের বিষয়টিও আসছে । সেই সূত্রে যে প্রশ্নগুলো অবধারিত ভাবে আসবে, ধ্যান যদি/হয়ত "কাজ" করে, কিন্ত তার কারণ কি? এখন, চিকিৎসাবিজ্ঞানে এমন অনেকবার হয়েছে যে প্রামাণ্য তথ্য মিলেছে, কিন্তু তার মূল কারণ কি জানতে বহু সময় পেরিয়েছে । হাতের কাছে চটজলদি  উদাহরণ  ১৮৫৪ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জন স্নো সাহেবের লন্ডনে  কলেরা মহামারীর প্রতিকার । যখন তিনি প্রতিকার করেছিলেন, তখন কলেরার জীবাণু কি তাই নিয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল না,  কলেরার জীবাণু  আবিষ্কার করবেন  ১৮৮৩ তে রবার্ট কখ (তার সঙ্গে অবশ্য কলকাতার একটি যোগাযোগ আছে, এখানে সে সব আলোচনার অবকাশ নেই) । এইরকম আরেকটি আবিষ্কার, অষ্টাদশ শতাব্দীতে, ১৭৪৭ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জেমস লিন্ড স্কার্ভি অসুখের চিকিৎসা করার জন্য এর নাবিকদের লেবু খাবার পরামর্শ দেওয়া ১৯৩৩ সালে চার্লস কিং এর  ভিটামিন সি  আবিষ্কার করবেন । অতএব চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস ঘাঁটলে  এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে যেখানে ডাক্তাররা কিছু একটা লক্ষ করছেন, রোগীদের পরামর্শ দিচ্ছেন, পুরো ছবিটা তৎক্ষণাৎ  জানা যায় না, পরে জানা যাবে ।  এই ধরণের ব্যাপারগুলো কেন্দ্র করে আজকের দিনের  evidence based medicine গড়ে উঠেছে, কাজেই আজকে ধ্যান কেন কাজ করে, তার একেবারে ঠিক মূল্যায়ন যদি আমরা নাও জানি, কাল যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে না, কেউ বলতে পারেন না ।  সে সব পরের কথা, আপাতত যে বিষয়টি নিয়ে শুরু করেছিলাম,তার উত্তর খোঁজা যাক,যে, এই যে মনোনিবেশিত ধ্যান  (mindfulness meditation ) এর কথা আলোচনা করা হচ্ছে, এর সঙ্গে মনোবিজ্ঞান,  সাইকিয়াট্রি, চিকিৎসা, এমনকি স্নায়ুবিজ্ঞান কে জড়ানোর কারণটি কি? এই ধরণের ব্যাপারগুলো কারা শুরু করেছিলেন এবং কোথা  থেকে শুরু হয়েছিল? 
     
    অন্তত বাংলায় বা বাঙালির পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রশ্নগুলো অবান্তর নয় । কারণ ধ্যান ব্যাপারটা আমরা যতদূর বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ বুঝি তাতে সাধু বা ধরুন, সাধু সন্তদের ভেক ধরে  যারা ধর্মের বা ধর্মের "ব্যবসার" সঙ্গে জড়িত, এই সমস্ত লোকজন লোক দেখানো ধ্যান ইত্যাদি করে থাকেন । দুঃখের বিষয়, এদের সবাই যে সৎ , এমন বলা যাবে না, অনেকেই নানারকম অলৌকিক ব্যাপার স্যাপার নিয়ে মানুষকে হতচকিত করে ঠকিয়ে দেবার চেষ্টা করেন, শুধু তাই নয়, যুক্তির বদলে, তর্কের বদলে, এরা  চান মানুষ এদের বিশ্বাস করুন, যার জন্য এমনিতেই যুক্তিবাদী লোক এদের ব্যাপারে বিরক্ত , বিশ্বাস করার প্রশ্নই ওঠে না । আরো একটা ব্যাপার রয়েছে । মনে করুন  যদি ধ্যান ব্যাপারটায় মানুষের সত্যি সত্যি মানসিক পরিবর্তন হয়ও, যারা ধর্মের ব্যবসায়ী, তারা ব্যাপারটাকে "ধর্মীয় কীর্তি"  বলে চালিয়ে দেবেন, সে পরিবর্তনের পশ্চাৎপটে নিয়মিত  ধ্যান করার একটা "মনস্তাত্বিক" ব্যাপার আছে, সেই প্রসেস  বা সেই প্রচেষ্টাকে সেভাবে এরা গুরুত্ব দেবেন না । এই সমস্ত নানান কারণে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, যে হঠাৎ মনোবিদ, স্নায়ু বৈজ্ঞানিক, ডাক্তার, যারা পেশাগত ভাবে বিজ্ঞান চর্চা করেন, এরা  এইসব নিয়ে কেন মাথা ঘামাচ্ছেন । তো এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখতে দুটি ভিন্ন বিষয়ে লিখতে হয়, দুটিই এই ধরণের ধ্যানের সঙ্গে সম্পৃক্ত । স্নায়ুবিজ্ঞানের সূত্রে ধ্যানের তাৎপর্য নিয়ে লেখার আগে ধ্যান ও স্নায়ুগত আরো দুয়েকটা ব্যাপার দেখা যাক:  (১) একটা ধ্যান এবং Flow (জানিনা, বাংলায় ইংরেজির ফ্লো  কথাটিকে হয়তো প্রবাহ বলা যেতে পারে), (২) ধ্যান এবং আধুনিক মনোবিজ্ঞানে ও চিকিৎসায় তার তাৎপর্য ।
     
    (এর পরের পর্বে বাকিটা, চলবে  )
     
     
     
    ---
    তথ্যপঞ্জী 
    ১) Keng SL, Smoski MJ, Robins CJ. Effects of mindfulness on psychological health: a review of empirical studies. Clin Psychol Rev. 2011 Aug;31(6):1041-56. doi: 10.1016/j.cpr.2011.04.006. Epub 2011 May 13. PMID: 21802619; PMCID: PMC3679190
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | |
  • প্রবন্ধ | ১২ জুন ২০২৪ | ৬৫০৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Debasis Bhattacharya | ০২ জুলাই ২০২৪ ১৭:০১534082
  • বৌদ্ধ ধ্যানতত্ত্বের সঙ্গে কোয়ান্টাম তত্ত্বের আভাস মিশিয়ে বানানো একটি শর্ট ফিল্ম দেখুন। মাত্র সাড়ে সাত মিনিটের। এর মধ্যে কেউ বিজ্ঞান যুক্তিবাদ এইসব খুঁজবেন না প্লিজ। গুরুগম্ভীর কতাবাত্রার মধ্যে জাস্ট একটু মজা। 
     
    নো কন্ট্রোল এক্সপেরিমেন্ট, নো স্ট্যাটিসটিকাল সিগনিফিকেন্স, নো এফেক্ট সাইজ। 
     
    জাস্ট ডাইভার্শন!
     
  • প্রয়াত অশোক মিত্র | 103.249.***.*** | ০২ জুলাই ২০২৪ ১৯:২৬534087
  • ও আচ্ছা। শাক্যবাবুও একজন বড় মহাপুরুষ।
  • আনন্দম  | 173.62.***.*** | ০৩ জুলাই ২০২৪ ০১:০১534095
  • অতি চমৎকার। গত কয়েকদিন ধরে এই কোয়ান্টাম তত্ত্বের কথাই লিখব ভাবছিলাম। কেবল দ্বিধায় ছিলাম এখানে লিখে টই চটকান ঠিক হবে কিনা। এখন চন্দ্রবিন্দু ধার করে বলব ভাবছি - সেই তো কোয়ান্টাম হলে ...
    আমার প্রসঙ্গটা ছিল ধ্যান সাইকোলজি - এইসব আদৌ বিজ্ঞানের মধ্যে পড়ে কি না! এখন, কোয়ান্টাম তত্ত্ব অনুসারে, বস্তুনিচয় নাকি বহুবিধ স্টেটে একই সঙ্গে রয়েছে। কিন্তু সেইসব স্টেট কোল্যাপ্স করে কেবল একটি স্টেটে চলে আসে যেই কিনা একজন দর্শক সেই বস্তু দেখে ফেলল। 
    যেমন কিনা, বৌয়ের সাথে আমার ঠান্ডা যুদ্ধ চলছে। বৌয়ের কোন বক্তব্যের তিন রকম সম্ভাব্য পরিস্থিতি মনের মধ্য তৈরী - হুমকী দেব, না কি নরম সন্ধি প্রস্তাব, অথবা মুখ পুরো বন্ধ রাখব! আর বৌ যেই মুখ খুলল, মনের মধ্যের তিনটি সম্ভাবনা কোল্যাপ্স করে একটি মাত্র হয়ে গেল - যে অ্যাকশানটি আমি নিলাম! 
    মনের মধ্যের ধন্ধ তো হার্ড সায়েন্সে আপনার ফেলেছেন না, কিন্তু কিন্তু করে বলছেন সফ্ট সায়েন্সও বলা মুশকিল। আর ঐ সব কোয়ান্টাম বক্তব্য তো এক্কেবারে হার্ড সায়েন্স। অথচ কোন সুস্থ মস্তিষ্কের স্বাভাবিক লোক একে বিশুদ্ধ গাঁজা ছাড়া আর কিই বা বলতে পারে? কেউ দেখেনি কেউ শোনেনি, কেবল সবরকম অঙ্ক বলছে - ওরকমই হবার কথা! সুতরাং হার্ড সায়েন্স! 
    কিন্তু কেই বা দর্শক? আমাকেই শুধু দর্শক হতে হবে? আমার কুকুর দর্শক হলে হবে না? কিংবা কুকুরের চিবোবার হাড়খানি? সেটি কি দর্শক পদবাচ্য হতে পারে? আমাকে কি জ্যান্ত হতেই হবে? না কি মৃত আমিও দর্শক হতে পারি? মৃত হলে কোন কথা নাই, কিন্তু জ্যান্ত হলে দুইখান কথা আছে! ঘুমন্ত আমি হলে হবে, না কি জাগ্রত আমি হতে হবে? দেখে ফেলা মানে কি? কে দেখে? আমার চেতনা না কি অবচেতনা? 
    এইসব আপনারা বিজ্ঞানের নামে চালাচ্ছেন গত একশ বছর ধরে, আর ধ্যানকে বৈজ্ঞানিক কাঠামোয় আনার কথা বললেই কিনা ভাঁওতাবাজি বলবেন! 
    যাগ্গে! 
  • &/ | 151.14.***.*** | ০৩ জুলাই ২০২৪ ০৪:১৪534097
  • @আনন্দম, ডিটেক্টর হলেও হবে। কোনো মেজারমেন্ট ডিভাইস হলেই হবে। কনশাস অবজার্ভার দরকার নেই।
  • অরিন | ০৩ জুলাই ২০২৪ ০৬:৩১534099
  • আনন্দম, এটা দেখুন,
     
    What do you think is still to be understood about the human brain?
    It’s important to ask the right questions in order to reduce our uncertainty, to minimize our free energy. We can see that at many different levels: from viruses to vicars. And an interesting question is how do we actually generate the questions to ask? Where do these questions come from? That’s very important and outstanding.
    Another issue, of course, is consciousness, the sense of self. Why is it that we think we are a person? Is ‘selfhood’ a surprise minimizing hypothesis that provides a nice explanation for all the sensations that we have. And what does that mean for self-awareness? Is self-awareness necessary for me to realize that I am different from you – and is it necessary to even realize that I am a person? All of these philosophical issues of consciousness and self-awareness her yet to be resolved.
     
    কার্ল ফ্রীস্টোনের ইন্টারভিউ 
  • Debasis Bhattacharya | ০৩ জুলাই ২০২৪ ২০:২৬534122
  • অরিনবাবু 'নেচার' পত্রিকার রেফারেন্স দিয়ে যা বললেন, সেটা বোধহয় ধার্মিক-অধার্মিক নির্বিশেষে অনেকেই মানবে, যদিও ভিন্ন ভিন্ন কারণে। ধার্মিকেরা মানবেন এই আশায় যে, এইসব গবেষণার মাধ্যমে হয়ত ঈশ্বর, আত্মা, 'ধ্যান'-এর মত একটি প্রাচীন এবং সুপ্রষ্ঠিত ধর্মীয় আচার --- এইসবের বৈজ্ঞানিক তাৎপর্য প্রতিষ্ঠিত হবে। আর আমার মত পাষণ্ড নাস্তিকেরা মানব এই আশায় যে, কে জানে, ধর্ম জিনিসটাকে ভাল করে জানতে পারলে হয়ত অন্ধত্ব অযুক্তি বিদ্বেষ হিংসা এইসবের বিরুদ্ধে আরও ভাল করে লড়া যাবে। মানে, ম্যালেরিয়ার সঙ্গে লড়তে যে রকম ফ্যালসিপেরাম জীবাণুকে জানতে হয় --- সেই রকম আর কি।
     
    তবে, আনন্দমবাবুর প্রশ্নটা কিন্তু অন্য ছিল মনে হল। যদ্দুর বুঝলাম, তিনি জিজ্ঞেস করছেন, কোয়ান্টাম তত্ত্ব বস্তুর মধ্যে মনের ধর্ম আরোপ করা সত্ত্বেও তাকে আগমার্কা বিজ্ঞান বলে মানতে কারুর আপত্তি হয়না, অথচ, ধ্যান-গবেষণাকে বিজ্ঞান বলে দাবি করা হলে অনেকে আপত্তি করেন কেন? এখানে আমার মনে হচ্ছে, তিনি সম্ভবত কোয়ান্টামতত্ত্ব, মন এবং ধ্যান-গবেষণা --- তিনটি বিষয়েই নানা ভুল প্রচারের শিকার হয়েছেন। প্রথমত, কোয়ান্টামতত্ত্বে আদৌ বস্তুকণার ওপরে মনোধর্ম আরোপ করা হয়না (যদিও সে নিয়ে নানা উদ্ভট দাবি এবং কৌশলী প্রচার চালু আছে)। দ্বিতীয়ত, মন সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিদিনই 'হার্ড সায়েন্স' হয়ে উঠছে, এবং সে নিয়ে আপত্তি করবার লোক দিনকে দিন কমে আসছে। তৃতীয়ত, ধ্যান নিয়ে গবেষণা ব্যাপারটাই আপত্তিকর --- এ রকম কথা খুব বেশি কেউ বলছেন না, বরং এক্ষেত্রে বেশিরভাগ আপত্তিটা আসছে ধ্যান-গবেষণা বলে যা চলছে তার মান নিয়ে, এবং সে ব্যাপারে অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে যা দাবি করা হচ্ছে তার সত্যাসত্য নিয়ে। কাজেই, এই প্রশ্নগুলোকে গুলিয়ে না ফেলাই ভাল। 
  • প্রয়াত অশোক মিত্র | 103.249.***.*** | ০৩ জুলাই ২০২৪ ২১:২০534123
  • দেবাশিসবাবু, এখানে প্রশ্ন আছে। মন সংক্রান্ত গবেষণা কি হার্ড সায়েন্স হচ্ছে আদৌ? 
    যেমন ধরুন সাইকলজিক্যাল কাউন্সেলিং। এটা কি আদৌ হার্ড সায়েন্স? \
    ধরুন পড়াশুনায় মন বসছে না কারও। তাঁকে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষী শিক্ষক বা অভিভাবক কিছু পরামর্শ দিলেন, তাতে তাঁর মন বসল এটাও কি একরকম কাউন্সিলিং? যদি তাইই হয়, তাহলে কাউন্সেলিং ব্যাপারটা তো পুরোটাই আন্দাজে ঢিল মারা মার্কা। এটা হার্ড সায়েন্স কীভাবে? 
    মানে মেন্টাল হেলথ ইস্যুর ট্রিটমেন্ট নিয়ে আমি নিজেই দ্বিধান্বিত। এই টইতে যদি কিছুটা আলোকপাত করেন উপকৃত হব। 
  • Debasis Bhattacharya | ০৪ জুলাই ২০২৪ ০০:১৯534128
  • না, ঠিক ফিজিক্স কেমিস্ট্রি বায়োলজির মত করে হয়ত নয়, এখনও। মনোচিকিৎসায় তো বিস্তর হাতুড়েপনা, এখনও। কিন্তু সঠিক দিকেই এগোচ্ছে, এবং বেশ দ্রুতই এগোচ্ছে। প্রতিষ্ঠিত হার্ড সায়েন্স-গুলোর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখেই এগোচ্ছে। জটিল ও সুবিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা, জটিল ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রচুর গণিতের ব্যবহার --- হার্ড সায়েন্স-এর পরিচিত লক্ষণগুলো ক্রমশ ফুটে উঠছে, পরিষ্কারভাবেই। মনোচিকিৎসার যে দুর্বলতার কথা বলছেন, সেগুলো বাস্তব, কিন্তু সেগুলো সম্পর্কে সচেতনতা এবং প্রতিরোধও কিন্তু জেগে উঠছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। 
  • অরিন | ০৪ জুলাই ২০২৪ ০২:১২534130
  • ধ্যান গবেষণার মান নিয়ে যে প্রশ্নগুলো  উঠছে, সে অনেকটা নির্ভর করবে কি ধরণের প্রশ্ন ও উত্তর খোঁজা হয়েছে তার ওপর ।যেমন ধরুন প্রথম দিকে, ১৯৯০ এর সময়ে যারা mindfulness meditation এর stress বা anxiety র ওপর কি প্রভাব তাই  নিয়ে গবেষণা করতেন, যেমন জন কাবাত জীন প্রমুখ, তাঁদের পক্ষে mindfulness meditation  নিয়ে randomised controlled trial করা প্রায় অসম্ভব ছিল, কারন randomised কন্ট্রোল্ড trial করতে, বিশেষ করে যতজন লোক কে নিয়ে করতে হত, তার সঙ্গতি এনাদের থাকা সম্ভব ছিল না । যার জন্য এদের অনেককেই single subject  বা case series বা mindfulness meditation করলে একদল একই রকম রোগে ভোগ মানুষের ওপর কি প্রতিক্রিয়া হয়, তাই দেখে দেখে স্থির করতে হত । তাছাড়া আরো দুটো সমস্যা ছিল -- এক, meditation ব্যাপারটা বলতে ঠিক কি বোঝানো হচ্ছে, সেই সম্বন্ধে অনেকেরই ধারণা খুব স্পষ্ট ছিল না (অনেকাংশে আজও নয়) , যার typology বা factor structure ২০০০ এর পর গবেষকরা স্থির করতে শুরু করেন, যে meditation বলে যে ব্যাপারটিকে বোঝানো হচ্ছে তার দুটি component  -- self regulated attention (মানুষের স্ব ইচ্ছায় মন দেওয়া) ও orientation to experience (মানে প্রতিটি ক্ষনে ক্ষনে যে ধরণের ভাব মনে উদিত হচ্ছে তাকে কোন রকম জাজমেন্ট না করে, তাকে কোন রকম বিচার না করে "দেখে" যাওয়া ), এই ব্যাপারগুলো অনেক পরে আসবে । ততদিনে অনেকে randomised controlled trial বা মানুষের ওপর experiment করার সুযোগ পেয়েছেন, ও তার result ও বেরোচ্ছে । তা হলেও খুব বড় অনেককে নিয়ে longitudinal study এখনো সম্ভব হয়নি । না হলে যেটা করা হয়েছে প্রচুর ছোট ছোট cross sectional study হয়েছে, তাতে করে এইটা নিশ্চিত করা বোঝা যায়নি যে meditation জন্যই মানুষের মনে কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা (যেমন anxiety কম হওয়া ইত্যাদি, নাকি anxiety কম বলেই এরা ধ্যান করতে বসছে) । তখন দেখা হতে লাগলো যে যারা দীর্ঘকাল ধরে ধ্যান করে আসছেন, যেমন ধরুন মঠ মিশনের বৌদ্ধ সংঘের সন্ন্যাসীরা , তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ যারা হয় কোনোদিন ধ্যান করেন না, বা সদ্য ধ্যান করতে শিখছেন, তাদের তফাৎ কোথায়? এই ব্যাপারটা বিশেষ করে আধুনিক neuroscience নির্ভর ধ্যান গবেষণার অঙ্গ । এইরকম একটি গবেষণা পদ্ধতি অবলম্বন করলে যারা সমালোচক, তাঁরা গবেষক দের নিন্দা করবেন, কিন্তু যে ধরণের যন্ত্রপাতি আমাদের হাতে আছে, তাতে খুব detailed মাপ করা অসম্ভব রকমের খরচসাপেক্ষ (একটা উদাহরণ দিই , একেকটা ৬৪ চ্যানেল EEG cap লিড নিয়ে প্রায় ১০০০ মার্কিন ডলারের কাছাকাছি পড়ে , মানে শুধু একটা মাঝারি মাপের স্টাডি করতে গেলে শুধু একটি যন্ত্রের খরচই এক লাখের কাছাকাছি পড়বে , তার পর সেগুলো ঠিক মতন কাজ করার কাজ জানা লোক, সব সময় EEG থেকে সিগন্যাল ঠিক মতন ক্যালিব্রেটেড হয় না, এবংবিধ নানান সমস্যা ।  এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৬৪ চ্যানেল EEG দিয়ে খুব উন্নত মানের গবেষণা করা সম্ভব নয় । আমি MEG বা fMRI এর কথা ছেড়েই দিলাম । সেখানে সমস্যা হচ্ছে শুধু খরচের নয়, সে সব খুব কিছু mobile নয়, মানে ওই ধরণের স্টাডি তে দেখা যাবে না যে কেউ হাঁটতে হাঁটতে মেডিটেশন  করলে তাঁর ওপর কি প্রভাব পড়ছে । 
    কাজেই একটি নতুন, গবেষণার বিষয় শুরু হচ্ছে, প্রথমেই অনেকটা খুব উন্নত মানের গবেষণা হবে, এমনটা হবে না । তা সত্ত্বেও যা কাজ হয়েছে কিছু হেলাফেলার নয় । অন্তত কোন অবস্থাতেই অপবিজ্ঞানের তকমা দেওয়া যাবে না ।
  • Debasis Bhattacharya | ০৪ জুলাই ২০২৪ ০৯:৩২534142
  • এবং, মিডিয়া রিপোর্টিং-ও অসাধারণ! আমি একাধিক রিপোর্ট দেখেছি, যেখানে বলা হচ্ছে, ধ্যান করলে নাকি মাথা থেকে গামারশ্মি বেরোয়, এবং সেটা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় দেখা গেছে। স্পষ্টতই অজ্ঞ সাংবাদিক-প্রবর ইইজি-নিঃসৃত গামা ওয়েভের সাথে তেজস্ক্রিয় গামারশ্মিকে গুলিয়ে ফেলেছেন, কিন্তু, তাতে করে সরলবিশ্বাসী পাঠককে বিস্মিত করতে বিন্দুমাত্র সমস্যা হয়নি!
  • অরিন | ০৪ জুলাই ২০২৪ ১০:১৩534143
  • "স্পষ্টতই অজ্ঞ সাংবাদিক-প্রবর ইইজি-নিঃসৃত গামা ওয়েভের সাথে তেজস্ক্রিয় গামারশ্মিকে গুলিয়ে ফেলেছেন,"
    :-), কি বিপদ!
    এই সেনসেশনাল খবর পরিবেশন করতে গিয়ে যে পরিমান ক্ষতি ও ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয় । 
     
  • দেবাশিসবাবুকে একটা প্রশ্ন | 103.249.***.*** | ০৪ জুলাই ২০২৪ ১৪:২৬534151
  • দেবাশিসবাবু, একটু আউট অফ ট্র্যাক প্রশ্ন করছি, মার্জনা করবেন।
    বাংলায় বামপন্থী দল বা মূলধারার বামপন্থী লাইন যারা যারা আছে, তাঁদের প্রত্যেকেরই একটা করে বিজ্ঞান সংগঠন আছে। সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ, এস ইউ সি আই য়ের ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটি, নকশালপন্থীদের গণবিজ্ঞান সমন্বয় কেন্দ্র, সিপিয়াইয়ের যুক্তিবাদী বিজ্ঞান মঞ্চ। এবার এঁদের কার্যপদ্ধতি, সাফল্য, ব্যর্থতা ইত্যাদি নিয়ে সমালোচনা বা ব্যবচ্ছেদ হতেই পারে, হওয়া উচিতও, কিন্তু বিজ্ঞান আন্দোলনে এঁদের পারটিসেপেশনটা কিন্তু ঘটনা।
     
    কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন, দক্ষিণপন্থী যে যে দল বাংলায় রুল করেছে এবং করছে, তাঁদের কোন বিজ্ঞান সংগঠন আছে কি?? কংগ্রেস তো বাংলায় ১৯৭৭ এর আগে রুল করেছে, তারপরও দীর্ঘদিন প্রধান বিরোধী দল ছিল। তৃণমূল তো ২০১১ থেকে প্রায় একচ্ছত্র রাজত্ব করছে, তাঁর আগে বিরোধী রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক ছিল। কিন্তু কংগ্রেস বা তৃণমূলের কোন বিজ্ঞান সংগঠন আছে কি? 
    বিজেপিরটা আপাতত জিজ্ঞেস করে লজ্জা দিলাম না।
    ব্যাপারটা কী? দক্ষিণপন্থী দলগুলো কোন বিজ্ঞান সংগঠন করেনি কেন বাংলায়? তাঁদের লোকবল নেই বা অর্থবল নেই, এটা নিশ্চয়ই চরম অর্বাচীনও বলবে না। 
    তাহলে? 
     
    প্রশ্নটা আপনাকেই করলাম দুটো কারণে । এক, আপনি দীর্ঘদিন যুক্তিবাদী আন্দোলনের সাথে যুক্ত, দুই, আপনি কমিউনিস্ট বা মার্ক্সবাদী নন, তাই কোন কনফরমেশন বায়াস কাজ করবে না।
     
    ব্যাপারটা কী, আপনি বা অন্য কেউ, একটু বললে ভাল হয়।
  • Debasis Bhattacharya | ০৪ জুলাই ২০২৪ ১৭:০৩534153
  • যৎসামান্য যা জানি বলছি, কিন্তু, অরিনবাবুর থ্রেডে অবান্তর কথাবার্তা বলবার জন্য লেখক মহাশয় যদি আমায় ধরে ঠ্যাঙান, তখন কিন্তু বাঁচাবেন প্লিজ। 
     
    না, তৃণমূল বা কংগ্রেস বা বিজেপি --- এদের কেউই কখনও বিজ্ঞান সংগঠন গড়েছে বা তেমন উদ্যোগ নিয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। 
     
    তবে, প্রায় বছর তিরিশেক আগে একবার শুনেছিলাম, 'পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি' বা ওই গোছের একটা নাম দিয়ে একটি সংগঠন গড়া হয়েছে, তার পেছনে নাকি কংগ্রেস আছে, এবং তাদের প্রধান পুরুষ রাইটার্স বিল্ডিং-এ কাজ করেন, এবং তারা নাকি 'রেনে দেকার্তে জিন্দাবাদ' বলে রাইটার্স-এর অলিন্দে অলিন্দে পোস্টার-ও মেরেছে। সে পোস্টার স্বচক্ষে দেখে এসেছিলাম, এবং ভদ্রলোককে খুঁজে বার করে আলাপও করে এসেছিলাম। তিনি বললেন, তিনি নাকি প্রবীর ঘোষের একটি বই পড়েছেন (কোন বই তার নাম ঠিক করে পুরোটা বলতে পারেননি), তবে যুক্তিবাদ চর্চার প্রশ্নে তার বেশি এগোতে পারেননি, অন্তত তখনও পর্যন্ত। পরবর্তীকালে তাঁদের আর সন্ধান পাইনি। 
     
    নিঃসন্দেহেই, লোকবল বা অর্থবলের অভাবটা বিজ্ঞান সংগঠন না গড়বার কারণ হতে পারেনা। আসল কারণ কী, সেটা একমাত্র ওই সমস্ত দলের নেতৃত্বই নিশ্চিত করে বলতে পারবেন, যদিও সেটা অনুমান করা কঠিন না। সহজ সরল কারণটি সম্ভবত এই যে, তাঁদের বলবার বা করবার এমন কিছুই নেই, যা কিনা বিজ্ঞান সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম ছাড়া বলা বা করা যাবেনা। ফলত, ওই কাজটি তাঁদের কাছে স্রেফ সময়ের অপচয়। 
     
    তবে, বিজেপির ব্যাপারে আমি অতটা শিওর নই। বিজ্ঞান-টিজ্ঞান সবই ব্যাদে আছে --- এইটা এবং ওই ধরনের আরও সব কথাবার্তা বলবার জন্য তাদের অনেক ফোরাম আছে, যেগুলো তারা যথেষ্ট কার্যকর বলে মনে করে। যদি কোনও এক দিন সেগুলো আর যথেষ্ট বলে মনে না হয়, সেদিন অবিলম্বে কর্তব্য করে ফেলবেন। 
  • দেবাশিসবাবুকে উদ্দেশ্য করে | 103.249.***.*** | ০৪ জুলাই ২০২৪ ১৭:২০534155
  • সহজ সরল কারণটি সম্ভবত এই যে, তাঁদের বলবার বা করবার এমন কিছুই নেই, যা কিনা বিজ্ঞান সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম ছাড়া বলা বা করা যাবেনা। ফলত, ওই কাজটি তাঁদের কাছে স্রেফ সময়ের অপচয়। 
    আপনি যা বললেন, আমি তাঁকে এইভাবে বলছি, স্রেফ ভোট ব্যাঙ্ক বড়িয়ে ক্ষমতায় বসা বাদ দিয়ে বাংলার দক্ষিণপন্থী দলগুলোর বা ধারাগুলোর সমাজের প্রতি কোন অতিরিক্ত কমিট্মেন্ট নেই, এটাই দাঁড়াচ্ছে তাহলে। নাহলে একটা রক্ষণশীল রাষ্ট্রে নাগরিকদের বিজ্ঞান ও যুক্তিমনস্ক করার তাগিদ তো থাকতই। আর সেটা থাকলে তাঁর জন্য বিজ্ঞান প্ল্যাটফর্মেও দরকার পড়তই।
    অর্থাৎ, পশ্চিমবঙ্গে প্রগ্রেসিভ লিবারেলরা (বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, প্রফুল্লচন্দ্র, রোকেয়া) যে সামাজিক দায়বদ্ধতা দেখিয়েছিলেন তাঁদের কর্মকাণ্ডে, সেই ঐতিহ্য হীনবল হয়েও রাজনৈতিকভাবে বামপন্থীরাই বহন করে চলেছে, অন্তত এই বাংলায়। আপনার কথা থেকেই কনক্লুশন টানলাম কিন্তু! 
     
    আর না না, প্রসঙ্গ বহির্ভূত কোথায় কেউ রাগ করবেন বলে মনে হয় না, বরং সমৃদ্ধই হবেন।
  • দেবাশিসবাবুকে উদ্দেশ্য করে | 103.249.***.*** | ০৪ জুলাই ২০২৪ ১৭:২২534156
  • কমিট্মেন্ট --->কমিটমেন্ট
  • Debasis Bhattacharya | ০৪ জুলাই ২০২৪ ১৯:৫৪534157
  • কেন, বিজেপি-আর এস এস এদের কমিটমেন্ট নেই? দেশকে হিন্দুরাষ্ট্র বানাতে হবে, সংবিধান শিক্ষাদীক্ষা প্রশাসন এইসব হিন্দু আদর্শের ছাঁচে ফেলে নতুন করে নির্মাণ করতে হবে, এবং সেই জন্য ব্যক্তিগত স্বার্থ ত্যাগ করে নিষ্ঠার সঙ্গে এক মনে দীর্ঘদিন কাজ করে যেতে হবে --- এর মধ্যে আদর্শবাদ নেই? 
     
    সে আদর্শ সমাজের ভাল করবে বলে আমরা মনে করি কিনা, কিম্বা তা আধুনিক রাষ্ট্র চালনার উপযোগী কিনা, সে তো পরের গল্প!
  • দেবাশিসবাবুকে উদ্দেশ্য করে | 103.249.***.*** | ০৪ জুলাই ২০২৪ ২০:১৮534160
  • আমি বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, রোকেয়া, এঁদের ধারাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছি সেখানে বলেছি, বামপন্থী ছাড়া বাংলায় কোন দক্ষিণপন্থী প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সেই অবদান রাখেনি। 
     
    এঁদের বিপরীত ধারাটির প্রতি কাদের কমিটমেন্ট আছে বা নেই, সেকথা বলিনি। সেই ধারার প্রতি কমিটমেন্ট বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল সকলেই আছে। বরং সব দক্ষিণপন্থীদেরই আছে।
  • Debasis Bhattacharya | ০৪ জুলাই ২০২৪ ২১:১৯534162
  • উঁহু। ইডিয়লজিক্যাল কমিটমেন্ট বলতে আমরা যা বুঝি সেটা একদিকে কম্যুনিস্ট বা সোশ্যালিস্ট-দের আছে, আর উল্টোদিকে আছে মৌলবাদীদের। এর বাইরেও সম্ভব, যেমন জাতি/ভাষা ইত্যাদি ভিত্তিক জাতীয়তাবাদী ইডিওলজি, আধুনিকতাবাদী লিবারেল ইডিওলজি, এইসব। কিন্তু আমাদের দেশে এই ধরনের ইডিওলজি বোধহয় শুধু অল্প কিছু ব্যক্তির আছে, সেই অর্থে কোনও রাজনৈতিক দলের নেই। 
  • দেবাশিসবাবুকে উদ্দেশ্য করে | 103.249.***.*** | ০৪ জুলাই ২০২৪ ২১:৩৯534163
  • কে বলল? ভাষা/জাতি ভিত্তিক ইডিওলজির ওপর নির্মিত রাজনৈতিক দল মহারাষ্ট্রে শিবসেনা, অন্ধ্রে টি ডি পি, উড়িষ্যায় বি যে ডি আসামে অগপ, গোর্খা জনমুক্তি মোরচা। দ্রাবিড় অস্মিতার ওপর দল ডি এম কে। লোয়ার কাস্টদের আম্বেদকরপন্থী ইডিওলজির দল বি এস পি। কমিউনিস্ট আর ফ্যাসিস্ট বা মৌলবাদীদের বাইরে ইডিওলজিক্যাল দল ভারতে প্রচুর আছে। 
     
    আর তাছাড়া আপনি মূল প্রশ্নটা ধরতে পারলেন না, যাই হোক, কিছু করার নেই।
  • Debasis Bhattacharya | ০৪ জুলাই ২০২৪ ২২:৪৫534166
  • হুম, এটা ঠিকই বলেছেন, আঞ্চলিক স্তরে ভাষা/জাতি ও আত্মপরিচয়ভিত্তিক মতাদর্শের দল আছে বইকি। তবে, আমি জাতীয় স্তরে ওই রকম মূলস্রোতের দলের কথা বলছিলাম, যাদের আবেদন সারা দেশ জুড়ে থাকবে। সে রকম তেমন কিছু নেই। 
     
    আপনার প্রশ্ন বুঝিনি, তা নয়। তবে, ঠিক যেভাবে প্রশ্নটি পেশ করেছেন তাতে উত্তরটি পিছলে যেতে পারে, এইটা বোঝাবার চেষ্টা করছিলাম। বোঝাতে পারিনি। 
  • দেবাশিসবাবুকে উদ্দেশ্য করে | 103.249.***.*** | ০৪ জুলাই ২০২৪ ২৩:১৪534167
  • হ্যাঁ, এটা ঠিকই বলেছেন। 
    ভারত বহু জাতির সমন্বয়ে গঠিত রাষ্ট্র, এখানে জাতি বা ভাষাভিত্তিক দল তৈরী হলে তা সেই অঞ্চলেই তৈরী হবে, কারণ এক জাতির ইস্যু তো অন্য জাতির সাথে মিলবে না। 
     
    হমম, শেষ মন্তব্যে আপনার বক্তব্যটা বুঝলাম। 
     
    তবে মনে হচ্ছে, এই টইটা ধ্যান নিয়েই থাক। আমি অন্য একটা টই খুলছি দাঁড়ান, বিজ্ঞান আন্দোলন ও রাজনীতি নিয়ে।
  • Debasis Bhattacharya | ০৫ জুলাই ২০২৪ ০১:২৩534172
  • কাম সার্সে !!!
  • Debasis Bhattacharya | ০৫ জুলাই ২০২৪ ১১:২০534193
  • কবে কম্নে কী পোস্ট করতাসেন, টের পামু ক্যাম্বায় !!!
  • তাহলে শেষতক কী দাঁড়াল? | 103.249.***.*** | ০৭ জুলাই ২০২৪ ১৩:৩৮534319
  •  ধ্যান বিজ্ঞান না অবিজ্ঞান? অরিনবাবু ঠিক না কি দেবাশিসবাবু?
  • Debasis Bhattacharya | ০৭ জুলাই ২০২৪ ১৩:৪২534320
  • ধৈর্যং রহু। অরিনবাবু তো গোটাটা লিখবেন বলে কথা দিয়েছেন, আমরা সকলেই অপেক্ষা করছি। আমি তাঁর প্রতিপক্ষ নই। তিনি যা বলছেন তা নিয়ে প্রশ্ন/সংশয়/আপত্তি ইত্যাদি অন্য অনেকেই তুলেছেন, আমি একা না। এবং, অন্য অনেকে আবার তাঁকে সমর্থনও করেছেন। উভয়পক্ষই অপেক্ষা করছেন, আমার ধারণা। 
  • অরিন | ০৭ জুলাই ২০২৪ ১৩:৫৬534323
  • ধন্যবাদ দেবাশিসবাবু । যিনি "তাহলে শেষতক কি দাঁড়ালো" নিক নিয়ে লিখেছেন, তাঁর প্রতি বলার যে ধৈর্য ধরুন । "অরিনবাবু ঠিক না কি দেবাশিসবাবু?" কথাটা অপ্রাসঙ্গিক, কারণ দেবাশিসবাবু ও আমি আমরা উভয়ের প্রতিপক্ষ নই (আমি নিজেকে মনে করি না, দেখলাম দেবাশিসবাবুও তাই লিখেছেন)  । দেবাশিসবাবুর বক্তব্য আমি যতটুকু বুঝেছি সেটি ধ্যান বিষয়টিকে নিয়ে যে ধরণের বৈজ্ঞানিক কাজকর্ম আজ অবধি হয়েছে সেগুলো বা তাদের পদ্ধতিগত কয়েকটি প্রশ্ন ইত্যাদি উঠছে, তার কিছু প্রশ্নের উত্তর আপনি এখানে বিভিন্ন আলোচনার মধ্যেও পেতে পারেন । তবে আমি লেখাটা লিখছি, আসন্ন সপ্তাহের শুক্রবারের মধ্যে চতুর্থ পর্ব হিসেবে প্রকাশিত হবে । 
  • তাহলে শেষতক কে জিতবে? | 103.249.***.*** | ০৭ জুলাই ২০২৪ ১৪:৪৭534326
  • প্রায় সত্তর বছর র‍্যাম্পান্ট মারামারি কাটাকুটি করার পর সিপিয়েম আর কংগ্রেস অবশেষে জোটবদ্ধ হয়েছে ,দেবাশিসবাবু আর অরিনবাবুও হয়েছেন। শুভেচ্ছা রইল। তবে শূন্যতে নেমে যাবেন না যেন। আর শেষে কে ঠিক ,কে ভুল ,এটা যেন গুরুর বিচারক টিম ডিক্লেয়ার করে দেয়। 
  • অরিন | 119.224.***.*** | ০৭ জুলাই ২০২৪ ১৫:০৭534328
  • :-), 
     ঠিক ভুলের প্রশ্ন নয়, এধরণের মতানৈক্য হতে পারে, একটা অনলাইন মিডিয়া, যেখানে কেউ কাউকে চেনেন না, আমার মনে হয় যদি আইডিয়াটার দিকে ফোকাস করেন দেখবেন দেবাশিসবাবুর প্রশ্ন ছিল এই ধ্যান নিয়ে যে ধরণের ভুলভাল ব্যাপার স্যাপার চলছে মূলত তাই নিয়ে। সচরাচর বাংলা ভাষায় কাউকে ধ্যান নিয়ে সিরিয়াসলি নিউরোসায়েনস নিয়ে লিখতে দেখি নি, কারণট আমার নিজের বোঝা উচিৎ ছিল। আমারও দুম করে নিউরোসায়েনস কথাটা ড্রপ না করে ধ্যানের যে ব্যাপারগুলো নিয়ে গবেষণা করা হয় সেগুলোর কথা লেখা উচিৎ ছিল। আমার মনে হয় আমি আরেকটু বিস্তারিত লিখলে এতে দেবাশিস বাবু বা যারা অপবিজ্ঞানের বিরুদ্ধে যুক্তিবাদের পয়েন্টগুলো তুলে ধরেন তাঁদের বরং সুবিধা হবে। দেখা যাক পরের লেখাটা পড়ে দেবাশিস বাবু কি বলেন। তবে আমার মনে হয় প্রথম দিকের sparring এর ব্যাপারটা হবে না। বাকী আপনারা সব তো রইলেন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন