এসব আলোচনা এখন হবার কোনো মানে নেই, কিন্তু সম্পাদক নিরুপায়। গুরুচণ্ডা৯তে প্রায় ১৪ বছর আগে প্রকাশিত একটি লেখা (https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=18135) নিয়ে সম্প্রতি কোনো কোনো গোষ্ঠী নেট মাধ্যমে প্রবল হইচই সৃষ্টি করেছেন। গুরুর সম্পাদনার সঙ্গে অতীতে বা বর্তমনে সংশ্লিষ্ট লোকজনের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। কোনো কোনো মহলে 'ফেক নিউজ' ছড়ানোর জন্যও দায়ী করা হয়েছে। গুরুতেও বিষাণ বসু, এই লেখাটি নিয়েই একটি সমালোচনাও লিখেছেন (https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=20571)। ১৪ বছর আগের কোনো ঘটনার, এই মুহূর্তে, আলোচনার অগ্রাধিকার পাবার কথা নয়। কিন্তু যেহেতু অভিযোগগুলি উঠেছে, ফলে সম্পাদকের দিক থেকে সংক্ষেপে উত্তর দেওয়া প্রয়োজন।
প্রথমে কয়েকটি খুচরো কথা।
১। লেখাটি ১৪ বছর আগের। আজকের গুরুর লোকজনের কাছে তার জবাবদিহি চাওয়া অর্থহীন। লেখাটি প্রকাশ করার পিছনে গুরুর বর্তমান বা অতীত টিমের কারো যদি কোনো দায় থেকে থাকে, সেটি এই শর্মার। ফলে অন্য কারো কাছে কোনোরকম ব্যাখ্যা চাওয়ার কোনো মানেই নেই।
২। 'ফেক নিউজ' কথাটিও সম্পূর্ণ ভুল। যাঁরা কথাটি ছড়াচ্ছেন, তাঁদের গুরুর সাইট তো নয়ই, উদার পরিসর বা লিবারাল স্পেস সম্পর্কেই ধারণা খুব সীমিত। অথবা জেনেবুঝেই করছেন। কোনটা জানা নেই। তাই জানিয়ে রাখা যাক, গুরু কস্মিনকালেও কোনো সংবাদপত্র নয়, তেমন কোনো দাবিও নেই। ইদানিং কিছু প্রতিবেদন বেরোয় বটে, কিন্তু যে সময়ের কথা, তখন তাও বেরোত না। যা বেরোত, তা প্রবন্ধ। সংবাদ নয়, নিবন্ধ। নিউজ নয়, ভিউজ। উল্লেখ্য লেখাটিও কোনো নিউজ নয়। যেহেতু গুরু একটি একটি উদার পরিসর, তাই সমস্ত পক্ষের লেখা প্রকাশিত হয়। এই লেখাটির সমালোচনাও প্রকাশিত হয়েছে। অন্য দৃষ্টিভঙ্গিও প্রকাশিত হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে। তার কোনো লেখাই নিউজ নয়, এবং লেখকের দৃষ্টিভঙ্গিজাত। নানা দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে বিরোধ থাকবে, ফলে একটি লেখা অন্যটির বিরোধিতাও করতেই পারে। পারে শুধু নয়, উদার পরিসরে সেটাই কাম্য। গুরুর একটি লেখার কিয়দংশ শেয়ার করে যাঁরা ফেক এবং নিউজ, শব্দদুটি ছড়াচ্ছেন, তাঁরা উদার পরিসর ব্যাপারটিই বুঝছেন না, বা চাইছেন না। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে ঢুকে আছে যে মৌলবাদ, গুরু সেদিনও তার বিরোধী ছিল এবং আজও।
এবার জরুরি প্রশ্নটি। যা ততটা খুচরো নয়। লেখাটি বেরিয়েছিল সম্পাদিত বিভাগে। সম্পাদকের ইচ্ছে না হলে বেরোত না। বিভিন্ন মতকে ঠিক কতটা স্থান দেওয়া যায় একটি উদার পরিসরে? এটি খুচরো কথা নয়, উদার পরিসর সম্পর্কিত যে চলমান বিতর্ক, তার অংশ। দার্শনিক আলোচনায় এখানে ঢোকা যাবেনা, শুধু ওই লেখার নির্দিষ্ট প্রেক্ষিতেই থাকা যাক। লেখা প্রকাশের সময়কাল ২০০৭। খুব সম্ভবত লেখা হয়েছিল ১৫ তারিখ রাতে। তার ঠিক একদিন আগে সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম নারকীয় একটি ঘটনা ঘটে গেছে। নন্দীগ্রামের গুলিচালনা। বাম জমানায় পুলিশের গুলিচালনা একেবারেই বিরল ঘটনা ছিলনা, কিন্তু এক্ষেত্রে সব সীমারেখাই পেরিয়ে যায়। খুব সংক্ষেপে বললে, নিরস্ত্র জমায়েতের উপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। সরকারি হিসেবে ১৪ জন মারা যান। তার কিছু অংশ পুলিশ যেদিক থেকে গুলি চালাচ্ছিল, সেদিক থেকে তোলা ঝাপসা ভিডিওয় ধরা আছে। তখনও হাতে হাতে সেলফোন আসেনি।
এরপর পুলিশ এলাকায় ঢোকে। সঙ্গে ঢোকে দলীয় কর্মীরা। তারপর সে এলাকায় কী ঘটে তার খবর আর পাওয়া যায়নি। কারণ গোটা এলাকাকে অবরুদ্ধ রেখে, সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে না দিয়ে চলছিল পুলিশি তাণ্ডব। সংবাদমাধ্যমের হাতে-গোনা যে কজন এলাকায় ছিলেন, তাঁদের বর্ণনানুযায়ীই গুলি চালনার পর তাঁরা প্রাণ হাতে পালান। সাংবাদিক সুকুমার মিত্র প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণে (https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=20569) লিখেছেন, "শ্রীকান্ত পাইকের কথা শোনার পর আর কোনও ঝুঁকি নেওয়ার কথা ভাবিনি। চোখে যা দেখেছি, কানে যা শুনেছি তা সম্বল করে প্রাণ নিয়ে পালানো... এরপর আর পাঁচ ঘন্টা ফোনে যোগাযোগ নেই। জ্যামার লাগানো হয়েছিল। যাতে ভিতরের খবর দ্রুত না বেরোতে পারে। নন্দীগ্রামে ওইদিনও গণহত্যা চালানোর সময় এলাকার চারধারে ছিল সিপিএম ও পুলিশের কঠোর নাকাবন্দী। কাউকে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকী সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদেরও না।"
পরদিন সকালে আনন্দবাজারের হেডলাইন ছিল "রক্তে দখল মুক্তাঞ্চল"। সেদিন এর চেয়ে বেশি খবর তারাও জোগাড় করতে পারেনি। সেদিন, অর্থাৎ ১৫ তারিখ হাইকোর্ট পুলিশের কাজকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেয়। জ্যোতি বসু প্রশ্ন করেন পিঠে গুলি কেন? মহিলাদের গুলি কেন? সবই পরের দিনের কাগজে বেরোয়। অর্থাৎ ১৬ তারিখ। সঙ্গে প্রথম পাতায় আরেকটি হেডলাইন ছিলঃ "হাড়হিম করা ত্রাসে নন্দীগ্রাম কার্যত বোবা"। "হাড়-হিম" শব্দবন্ধটি রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধির।
এর পরের দিন, অর্থাৎ ১৭ তারিখ বেরোয় বহু আলোচিত সৌমিত্র বসুর লেখাটি। কার্যত নন্দীগ্রাম তখনও অবরুদ্ধ। সন্ত্রাস, ক্ষয়ক্ষতি, মৃত্যুর পরিমাপ বাকি পৃথিবীর মানুষ জানেননা, জানতে দেওয়া হয়নি। লেখক নন্দীগ্রামে যাননি। যাবার কোনো উপায় ছিলনা। খবর জানারও। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান হুবহু উদ্ধৃত করেছেন মাত্র। অবশ্যই উদ্ধৃতি চিহ্নের ভিতরে। সে বয়ানে সুকুমার মিত্রর কথাও আছে, যিনি প্রাণ হাতে করে পালান নন্দীগ্রাম থেকে। বয়ানে মনে হয়না কোনো কিছু বিকৃত করা হয়েছে। কারণ এর কদিন পর সরকারি অবরোধ উঠে গেলে অমিতাভ গুপ্ত এবং বোলান গঙ্গোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম ঘুরে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে যে কথাবার্তা বলেছিলেন, তাতেও হুবহু একই চিত্র। এপ্রিলের ৫ তারিখ, আনন্দবাজারের এক উত্তর সম্পাদকীয়তে অমিতাভ গুপ্ত লেখেন "অশীতিপর বৃদ্ধা বলতে থাকেন 'পুলিশ প্রথমে গ্যাস মারল, তারপর গুলি করল। পুকুরে বিষ দিলে দেখেছেন কীভাবে পুঁটিমাছ ভেসে ওঠে? সেরকম ভাবে গাদাগাদি করে পড়ে ছিল মানুষগুলো। মেয়েদের টেনে নিল। গাছের সঙ্গে হাত বেঁধে কাপড় খুলে নিল। ইজ্জত লুটল। তারপর বুক কেটে নিল, মাংস খুবলে নিল, খুন করল।' শুনতে শুনতে শরীরের ভিতরটা গুলিয়ে ওঠে, কিন্তু তিনি বিবরণ দিয়েই চলেন... 'গুলি লেগে একটা বউ পড়ে গেল। কোলে একটা বাচ্চা ছিল, বুকের দুধ খাচ্ছিল। মা পড়ে যাওয়ায় বাচ্চাটাও মাটিতে ছিটকে পড়ল। সেই বাচ্চাটাকে তুলে নিয়ে দুপা ধরে টেনে আড়াআড়ি ছিঁড়ে ফেলল'। স্পষ্ট বুঝতে পারি, টেলিভিশনের পর্দায় ছবি দেখে আর খবরের কাগজের রিপোর্ট পড়ে এই নৃশংসতার অনেকটাই বুঝতে পারিনি এতদিন। বোঝা সম্ভব ছিলনা... উত্তর দেন বছর চল্লিশের কৃষক 'চোখ বন্ধ করলে শুধু রক্ত দেখতে পাই। ঘুমের মধ্যে দুহাত ছিটকে ওঠে, যেভাবে ওই বাচ্চাটাকে টেনে ছিঁড়ে দিয়েছিল পুলিশ, সেই ভাবে। আরও কতগুলো বাচ্চাকে যে পা দিয়ে চেপে, টেনে মারল... ঘুম হয়না...'"।
বোলান লেখেন মেয়েদের কথা। ধর্ষিতাদের বয়ান। হ্যান্ডিক্যাম দেখলেও কেঁপে উঠছেন কেউ। কারো যৌনাঙ্গে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে লাঠি। কারও রক্তস্রাব বন্ধ হয়নি তখনও। এইসব।
এ সবেরই জায়গা হয়েছিল, খবরে নয়, উত্তর সম্পাদকীয়তে। নিবন্ধ আকারে। কারণ, খবর জানার কোনো উপায় ছিলনা। একমাত্র ভরসা ছিল প্রত্যক্ষদর্শীরা। প্রশ্ন হল, কী বলবেন, এইসব বয়ানকে? বানানো? গোটা সংবাদমাধ্যম, পুরোটাই ফেক নিউজ তৈরির ফ্যাক্টরি? শুনলে সুমিত সরকার থেকে নোয়াম চমস্কি অবধি সকলে হেসে উঠবেন।
ফলে টেকনিকালি, এই সমস্ত নিবন্ধে, আনন্দবাজার হোক, বা গুরু, কোথাও ভুল নেই। খবর তো না, এগুলো উদ্ধৃতি। কিন্তু তার পরেও অবশ্যই একটি কথা আসে। যে কথা বিষাণ বসু লিখেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শীরা যা বলেন, তা মিথ্যা না হলেও, অবশ্যই নানা অতিরঞ্জন মিশে থাকে। এক্ষেত্রেও আন্দাজ করা যায় কিছু অতিরঞ্জন ছিল। টেকনিকালি উদ্ধৃতির মধ্যের বক্তব্যের সরাসরি কোনো দায় নেবার প্রয়োজন না থাকলেও (যিনি বলেছেন, সেটা তাঁর দায়), নৈতিক দায়িত্বের কিছুটা নিশ্চয়ই লেখক এবং সম্পাদকের উপর বর্তায়। সে দায়, অবশ্যই স্বীকার করা দরকার। করছিও। ভবিষ্যতে, আশা করি, যুদ্ধপরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না, হলে, অবশ্যই এই শিক্ষা কাজে লাগবে। কিন্তু একই সঙ্গে এটুকুও মাথায় রাখতে হবে, যে, পরিস্থিতিটি যুদ্ধক্ষেত্রেরই ছিল। ক্ষয়ক্ষতি, খুন-জখম, মানবিকতার বিরুদ্ধে অপরাধ, সব মিলিয়েই। যে সরকারি দল যুদ্ধক্ষেত্রের হত্যালীলার মধ্যে ঠেলে দিয়েছিল নিজের রাজ্যের অধিবাসীদের, তারও সেই ভয়াবহ অপরাধ স্বীকার করার সময় হয়েছে। এই লেখাটির যাঁরা সমালোচনা করেছেন, তাঁরা এই প্রসঙ্গটি পুনরুত্থাপন করেছেন যখন, তখন আশা করি, এই বিষয়টিও মাথায় রাখবেন।
প্রসঙ্গটি যখন উঠেছেই, তখন আরও একটি কথা এখানে বলে রাখা জরুরি। এই যুদ্ধাপরাধের বিচার এখনও হয়নি। অন্যান্য অনেক কিছুর মতই (কাশীপুর-বরানগর, ৭২-৭৭ এর খুন-জখম, মরিচঝাঁপি) সেদিনের ঘটনার পূর্ণ তদন্ত হয়নি। সেদিনের অপরাধী যাঁরা, তাঁদেরও কোনো তদন্ত বা বিচার আদৌ হবে কিনা সন্দেহ। কারণ এর মধ্যে যুযুধান দুই শিবিরের দুই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাই, লক্ষ্মণ শেঠ এবং শুভেন্দু অধিকারী, এক এক করে কেন্দ্রীয় সরকারি দলে যোগ দিয়ে দিয়েছেন, তারপর সমীকরণ আরও বদলেছে, বদলাচ্ছেও, পুলিশ আধিকারিকদের পদোন্নতি হয়েছে। চেপে দেওয়ার খেলা যে দিগন্তপ্রসারী, সে নিয়ে সন্দেহের বিশেষ কোনো অবকাশ নেই। তা সত্ত্বেও দাবিটি রেখে যেতে হবে। কারণ, সেটাই গণতন্ত্র।
তাহলে আর এখানে কে কি বললো , তাই নিয়ে ভাবছেন কেন ? যে যার মত যা ইচ্ছে বলে যাক।
হ্যা। কদিন আগে এটা নিয়ে থ্রেড শুরু হয়েছিল ফেবুতে , কিন্তু সেসব আদৌ এমন কিছু ট্রাকশন পায়নি । সেটা হয়েছে আপনাদের প্রিয় নেত্রীর মুখ ফস্কানোর পরে।
পিনাকিদা, এখানেই লিখছি।
১) বুদ্ধবাবুর জামায় কাদা লেপতে গিয়ে যে এই সাইটের ক্রেডিবিলিটি কমলো সেটা বোধয় খেয়াল করলেন না। আমার মনে হয়েছিল অন্তত সৈকতদা এবং আপনি সেকেন্ড জিনিসটা নিয়ে বেশি উৎসাহী।
২) আমি চাইনা যে কোনও লেখাই সরানো হোক, এমনকি চাড্ডীদের লেখাও। কিছুকাল তো এই সাইটের সাথে রয়েছি, তাতে যদি কিছু আসে যায়, সেক্ষেত্রে বলবো যে সিলেক্টিভ সেনসিটিভিটিতে বা সেন্সরশিপে একদমই যাবেন না। ডিসক্লেইমার দেবেন, কিন্তু কোনও লেখা সড়াবেন না।
এমনকি কালকে আমার পার্সোনাল লাইফ নিয়েও একটা পোস্ট পড়েছিল, সেটা হাইড বা ডিলিট করেছেন কেউ - আমি অনুরোধ করেছিলাম এবং এখনও করছি যে ঐটা থাকুক।
৩) আপনারা এইযে বিশেষ করে এই লেখাটি সরাবেন না টাইপের একটা গোঁ ধরে রয়েছেন, সেটা কিন্তু ইম্যাচিউরিটিই প্রমাণ করে। লোকে বছরের পর বছর এটাকে টেনে তুলবে আর গুরুর ক্রেডিবিলিটি নষ্ট করবে। একটু ভাবুন।
৪) শেষে বলি - আমি কিন্তু লেখাটাকে বিশ্বাস করেছিলাম। ঐ কুমীরের পার্টটাও। তখন বয়সও অনেক কম, এত রাজনৈতীক নোংরামো বুঝতাম না। মনে হয়েছিল যে এইধরনের মারাত্মক অ্যালিগেশান যখন করেছেন, তখন লেখক (আন্দাজ করেছিলাম বামমনষ্ক এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট) নিশ্চই জেনেশুনেই করছেন।
ইট ওয়াজ অ্যান্ড স্টিল কন্টিনিউজ টু বি দ্য লোয়েস্ট পয়েন্ট অব দিজ সাইট।
এটা সরানোর কথা আসছে কেন? ডিসক্লেমার তো দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এত রাউন্ড লেখালিখি হয়ে গেল। এটা তো একটা ইম্পর্ট্যান্ট পার্ট অফ হিস্ট্রি হয়েই গেছে। সময়ের ছাপ থাকবে আর তাতে পুরোটাই নিটোল কলকা আঁকা থাকবে, ধ্যাবড়া কালির ছিটে থাকবে না - তা তো হয় না। সেটা সিপিএমের জন্য ট্রু হলে আমাদের সবার জন্যেই ট্রু। যদি এটা ব্যবহার করে আমাদের ক্রেডিবিলিটি খাটো করতে চায় কেউ, তারা সেটা করতেই পারে, মোস্ট ওয়েলকাম। একই সাথে তাদের ক্রেডিবিলিটিরও দারুণ বিজ্ঞাপন হবে কি? ফলে লেট দ্য মহাকাল ডিসাইড। এত উতলা হচ্ছ কেন? ম্যাল ইন্টেনশন নিয়ে তো কিছু করা হয়নি, জেনুইন উদ্বেগ থেকে প্রকাশ করা হয়েছিল। ফলে এত চাপ নেওয়ার কী আছে? কুল। :-)
সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা হল, এই লেখা নিয়ে এত বছর পরও এরকম আলোড়ন চলছে সাইটে ও ফেবুগ্রুপে, অথচ লেখাটির লেখকের দিক থেকে কোনো রেসপন্স নেই! একেবারে টুঁ শব্দটি নেই। তিনি তো কিছু বলবেন অন্ততঃ!!!!
কুমীর হাঙর ইত্যাদি নিয়ে কিছু তো বলবেন লেখাটির মূল লেখক!
না সরানো নিয়ে অবশ্য আমি একমত। যা আছে থাক। তবে সেসব আদৌ ম্যাল-ইন্টেনশন নিয়ে করা হয়েছে নাকি জেনুইন উদ্বেগ থেকে করা হয়েছে , সেসব যে যার মতো ইন্টারপ্রেট করে নিলে সেসব নিয়েও আপত্তি থাকার কথা নয়।
সিপিএম কি আর আমাদের পারমিশন নিয়ে ইন্টারপ্রেট করার জন্য বসে আছে? অ্যাজ ইফ, আমরা আপত্তি করব আর সিপিএম সোনামুখ করে বলবে, থাক বাবা ওরা যখন বলছে... হাসালেন :-) কে কোন ইন্টেনশন নিয়ে কী করছে - সে তো দেখতেই পাওয়া যাচ্ছে।
"কে কোন ইন্টেনশন নিয়ে কী করছে - সে তো দেখতেই পাওয়া যাচ্ছে।"
এটা আম্মো ভাবছিলাম। কেননা বারংবার youtube এর যে ডকু দেখতে বলা হচ্ছে সেটাতে খুব জরুরী একটা তথ্য docu-maker-রা দিতে ভুলে গিয়েছে। তুলনাটা এখানেও থাক ঃ
"Nandigram Genocide: A Living Testament"এর প্রথন পর্বটি দেখলাম। (বাকিগুলো দেখছি।) প্রথম পর্বটি সম্পর্কে আমার পর্যবেক্ষন নিম্নরূপঃ
১) এই ডকু যারা বানিয়েছে তারা ঘোর SEZ বিরোধী। (হতেই পারে!!)
২) শুরুতেই তারা সরকারী বামেদের "masquarading as communist" বলে দাগিয়ে দেয়।
৩) তার পরে বেশ কয়েকটি তারিখ ও ঘটনা পর পর দেখানো হয়ঃ
২৮ সে ডিসেম্বর, ২০০৬
৪ ঠা জানুয়ারি, ২০০৭
৬ ই যানুয়ারি, ২০০৭
৮ ই জানুয়ারি, ২০০৭
১২-১৪ ই মার্চ, ২০০৭
৪) বুদ্ধবাবু জমি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার কোন উল্লেখ নেই এই ডকুতে। বোঝাই যাচ্ছে যে ইচ্ছে করে সেই প্রকাশ্য বিবৃতিটি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে । শুধু বেছে নেওয়া হয়েছে বিনয় কোঙারের "লাইফ হেল করে" দেওয়া বিবৃতিটি।
৯ ই ফেব্রুয়ারি নাকি বুদ্ধবাবু প্রথম জানিয়েছিলেন যে জমি নেওয়া হবে না? ১১ ই মার্চে প্রকাশ্যে জানাচ্ছেন। এসব জানতে পারলাম সিপিএমের দালাল অনিন্দিতা সর্বাধিকারির এই ডকুতে। সেটা থেকে আরো জানলাম যে আরো আগে থেকেই নন্দীগ্রামে খুন ধর্ষণ ইত্যাদি নাকি শুরু হয়েছিলঃ
আমি আগাগোড়াই বুদ্ধবাবুকে সমর্থন করেছিলাম। উনি পবতে ট্রেড ইউনিয়নগুলোর দাপট কমানোর চেষ্টা করেছিলেন আর খানিকটা সফল হয়েছিলেন। আর বড়ো ইনভেস্টরদের ডেকে এনেছিলেন, পবতে বড়ো ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। দুটোই ভালো পদক্ষেপ ছিল। তবে আন্দোলনগুলো সামলাতে পারেন নি, এটা ওনার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে ব্যর্থতা। নন্দীগ্রামে অনেকদিন ধরে ঘোঁট পাকানো হয়েছিল, আরও অনেক আগে পুলিশ পাঠানো উচিত ছিল। তাহলে নন্দীগ্রামে কেমিকাল হাবও হতে পারতো, সিঙ্গুরেও কারখানা হতে পারতো।
নন্দীগ্রাম এমন একটি ঘটনা, যাতে জীবিতদের অবস্থান মৃত দের মতই অনড়। এবং খুব ই বোকা বোকা ইগো ও রাজনৈতিক ক্যাম্পের কারণে অনড়। জাস্টিস বা রিকন্সিলিয়েশন কোনোটাতে আগ্রহ কারোর বিশেষ নেই, এবং যাঁদের নেই, তাঁরা সকলে পুরো সময়ের sরাজনীতিবিদ নন।
এই লেখাটির ব্যাপারে আসলে আলাদা করে কিসু বলার কোন মানে হয় না। কারণ লেখকের রিপোর্টাজ এর বিষয়ে জাজমেন্ট জিনিসটা লেজেন্ডারি বাজে এটা আর নতুন করে বলার কিসু নেই। ভয়ানক অত্যাচার সিপিএম ও বাম্ফ্রন্ট সরকারের পুলিশ করেছে, এটাই যদি প্রতিপাদ্য হত, তাহলে হলদি নদী কুমীর ইত্যাদি করে তাঁর দৃষ্টিভংগীর প্রতিপাদ্য টিকেই লঘু না করলেও চলত।
২০০৭ এও এই লেখাটা , এমনকি অস্যার্থে যদি অন্যান্য তথ্য সূত্রের অভাবে তখনকার সম্পাদক এগ্রি করেও থাকেন, আমার ঘোর সন্দেহ আছে, পুরো রেটোরিক টার কোন মূল্য তাঁর কাছে তখন ই ছিল কিনা। :-)))) অতএব ছাপানোটা তখন ই পুওর জাজমেন্ট ছিল। অথবা একটা হনেস্ট ক্রোধ থেকে তখনকার এই সিদ্ধান্ত, সেটা এমন কিসু অপরাধ না।
তারপরে অনেক জল গড়িয়েছে, নানা ভারসন, নানা অ্যানালিসিস সহজলভ্য।
যাই হোক, ২০২১ এ এটাকে নতুন করে তুলে বুলবুল ভাজা হিসেবে টাঙানো যে হয়েছে, সেটাও খুব ই , মানে প্রথমবারের তুলনাতে অনেক বেশি পুওর এডিটোরিআল জাজমেন্ট। নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গে যে কোনো মত লোকের থাকতেই পারে, কিন্তু বোগাস লেখা কে পুনঃপ্রকাশের গুরুত্ত্ব দেওয়া, পার্টিকুলারলি উইথ অ্যাডভান্টেজ অফ হাইন্ডসাইট, যেটা প্রথমবারে ছিল না, এটা খুব ই ভুলভাল বোকাবোকা সিদ্ধান্ত। অথবা হাওয়া গরম করার জন্য সিনিকাল সিদ্ধান্ত। তবে হ্যাঁ নিজের পয়সায় নিজের স্পেসে কে কি কখন ছাপবে তার বিষয়। আর এই জাজমেন্টের জন্য গুরুতে বা তার সহযোগী সংস্থায় ভীষণ ব্যুরোক্রাসি বেড়ে গেলেও লাভ নেই, যদি না সেই ব্যুরোক্রাসি টা ফ্যাক্ট চেকিং ব্যুরোক্রাসি হয়। নন্দীগ্রাম প্রসংগে নির্বাচনের মরশুমে বা অন্য সময়ে অন্য যে কোনো লেখা ছাপাই যেত। যাই হোক, এই লেখাটির থেকে খারাপ হওয়ার সম্ভাবন কম ছিল। বিষাণ বসুর লেখাটি শুধু মাত্র একই সময়ে প্রকাশিত বলেই এই স্পেস এর লিবেরালিজম এর ক্রেডেনশিয়াল ধরে রাখার পক্ষে যথেষ্ট না। ভাগ্যক্রমে এই বিষয়ে গুরুচন্ডালির অন্য ক্রেডেনশিয়াল আছে।
একটা সাইড ইসু হল, গুরুচন্ডালি তে জেনেরালি আড্ডার বা মেনলি ঝগড়ার স্পেসেও, কিছু লোকের অভ্যেস আছে, সব সময়েই আহা গুরু কি ছেল বলা। যাই থাকুক, অ্যাজ অ্যান আউটলেট, গুরুচন্ডালির একটা মানোন্নয়ন হয়েছে ওভার টাইম। এটা কন্টিনিউয়াস স্লো ইম্প্রুভমেন্ট, এটা সব সময়েই অ্যাপ্রিশিয়েট করা উচিত। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের লেখা গুরুত্ত্ব পেয়েছে, কিন্তু ওভারল কোয়ালিটির উন্নতি ওভার দ্য ইয়ার্স্ সব সময়েই হয়েছে। আরো হবে। সেই প্রসেস টা এই পুনঃপ্রকাশের সিদ্ধান্ত টার সঙ্গে যায় না, এতে গুরুচন্ডালির ক্রেডিবিলিটির ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এবার গুরু যারা চালান, তাঁদের মনে হতেই পারে, সিপিআইএম সমর্থক দের কাছে ক্রেডিবিলিটির ক্ষতি হলে বাল কিছু যায় আসে না, সেই প্রেরোগেটিভ তো তাঁদের রয়েইছে। তার উপরে নির্বাচনী মরশুম। আমাদের প্রিয় বাঙালি সংস্কৃতির ধারক বাহক , বুক অফ রেকর্ড, আবাপ তার ওয়েবসাইট খুললেই দশ পনেরো বিশ সেকন্ড ধরে দাংগাবাজ বিজেপির বিজ্ঞাপণ দেখাচ্ছেন, তাঁদের অর্থবল এর বিজ্ঞাপন ও করছেন, আর কি অসুবিধা। সব ই মায়া। যা রহিয়া যায় নাই, কেবলি চলিতে ফিরিতে টাকা কামাইয়াছে :-))))
সম্পাদক হিসেবে ওভারল , সৈকত দায় গ্রহণ করে টিম কে ডিফেন্ড করেছে, ভালো করেছে। অ্যাপ্রিশিয়েটেড।
এবার যুক্তি হিসেবে যেটা ব্যাবহৃত হয়েছে সৈকতের এই ডিফেন্সে, সেটা খুব ই কাঁচা। ওয়ার জোন এ ফ্যাকক্ট নাই, অতএব নিবন্ধ। তাতে সোর্সের সম্ভাব্য অতিরঞ্জন ইত্যাদি।
আবাপ বুক অফ রেকর্ড হয়ে উঠেছে ঠিক ই , কিন্তু তার কনফ্লিক্ট রিপোর্টিং এর রেকর্ড ঠিক কি। পুরো পজিশন টাই পোলিটিকাল। মুক্তাঞ্চল কেশপুর আর নন্দীগ্রামে যেমন সরকার বিরোধী পক্ষে এম্বেডেড রিপোর্টিং হয়েছে, তেমনি মাওবাদী প্রভাবিত অঞ্চলে , সময়ে, সরকার পক্ষের এম্বেডেড রিপোর্টিং হয়েছে, নকশাল আন্দোলনের আমলেও তাই । আন্তর্জাতিক কনফ্লিক্ট এর ক্ষেত্রে, একেবারেই বাবুসোনা সরকার পক্ষ। মানে বিদেশ মন্ত্রক এর রিপোর্ট পড়া আর আনন্দ বাজার পড়া প্রায় একই রকম। মুক্তিযুদ্ধের আমলের রিপোর্টিং e বাঙালি আবেগ ইত্যাদি তখন দেখা গেছে, যখন সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের ফরেন পলিসি হয়েছে। তার আগে না। পরেও না। নিবন্ধ ও সম্পাদকীয়তে এই বায়াস সীমবদ্ধ ঐতিহাসিক ভাবেই থাকে নি। তাই নন্দীগ্রাম কনফ্লিক্ট er আমলে তাদের রিপোর্টিং এর সমস্যা ছিল, অত বড় পেশাদারী খবর সংগ্রহের নেটওয়ার্ক সত্ত্বেও ছিল, অতএব ছোটো সিটিজেন জার্নালিস্ট সংস্থা বা ইন্ডিভিজুয়াল সিটিজেন জার্নালিস্ট কি করতে পারেন ইত্যাদি কোন যুক্তি বিশেষ না। এটা যুক্তি হত, যদি আবাপ র কনফ্লিক্ট রিপোর্টিং এর ট্র্যাক রেকর্ড কিসু পদের হত। আবাপ বরাবর ই স্বাধীনতার পর একটি দক্ষিনপন্থী থিংক ট্যাংক হিসেবে কাজ করেছে, কখনো সংহত ভাবে কখনো আলাদা করে। জাতীয়তাবাদ এর আপদ ও বলাই যায় আট , নয়ের দশকের মুক্ত হাওয়ার আমল থেকেই অবলুপ্ত। অপ এড এ নানা বিধ বাম ইনটেলেকচুয়াল রা জায়্গা পেয়েছেন, সেটা অন্য ইলেকট্রোনিক আউটলেট এ পাননা, কারণ সেখানে উত্তেজনাই, ক্ষমতার নাট্যশালার প্রচার ই মূল উদ্দেশ্য। নাগরিক প্রতিনিধিত্ত্বের দায় সেখানে খুব ই কম, এবং ঘুরে ফিরে মুনাফার যুক্তিই সেখানে ঈশ্বর। মুনাফা - বিক্রয়যোগ্য সময় -- এবং জনমত ইত্যাদি চক্রাকার আর নতুন কি।
হ্যাঁ বিপণন, কন্টেন্ট এর প্রোডাকটাইজেশন, হার্ড নিউজ সফট নিউজ এর ভাগ এবং তার ভিন্ন এডিটোরিয়াল কন্ট্রোল, এটা আবাপ তে আন্তর্জাতিক মানের ব্রডশীট গুলির মত, এতে কোন সন্দেহ নেই সে ব্যাপারে তাঁদের প্রশংসা প্রাপ্য। রিজিওনাল ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে এটা কঠিন ছিল, এখন এই সংস্থা আর রিজিওনাল নেই। যদিও কোনোটাই আমার কাছে অন্তত পাঠযোগ্যতায় আলাদা কিসু হয় নি।
যাই হোক। অতএব যেটা সাধারণ সমস্যা বলতে গিয়ে স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে, সেটার স্ট্যান্ডার্ড হবার মত বিশেষ কোন যোগ্যতা অন্তত কন্ফ্লিক্ট রিপোর্টিং এ নাই। এটা সৈকত জানে না তা না, ঐ আর কি যেমন সকলেই সব ই জানে , তাও সব ই চলে ঐ আর কি।
সিটিজেন জার্নালিজম এর কাছ থেকে কেউ "ড্রেন পরিষ্কার হয় নি", "পাড়ায় মদের আড্ডা বসেছে গোছের ফ্যাক্ট" এর বেশি কেউ কিসু আশা করেনা, কারণ খবর জোগাড়ের যে পেশাদারী পদ্ধতি প্রয়োজনীয় ইনভেস্টমেন্ট সেটা সকলের থাকে না, ট্রেনিং ও থাকে না। আর উইকিলিক্স মডেল ও টেঁকে নি, স্টেট কে ক্রিমিনাল এনটারপ্রাইজ হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে যাঁরা জাস্টিস এর পক্ষে আর যাঁরা স্টেট er দক্ষিনপন্থী দখলের পক্ষে, তাদের রাজনীতি বরাবরি আলাদা।
যেটা আশা করা যায় সেটা এডিটোরিয়াল জাজমেন্ট। সেটা এই লেখাটির প্রথম প্রকাশ এবং বিশেষত পুনঃপ্রকাশের সিদ্ধান্তে যা বেরিয়ে এসেছে সেটা হতাশাজনক।
এবার একটা কিছুটা আনরিলেটেড জিনিস। মমতার রিসেন্ট বক্তৃতার অংশ নিয়ে একট উত্তেজনা হয়েছে। ভোটের মরশুম বলেই হয়েছে। ওরকম স্টেটমেন্ট দিলে লোকে আবাজ দেবে, সেট নিয়ে কথাও হবে, সেটা মমতার অজানাও না। তবে ফ্যাক্ট নতুন কিসু বেরিয়েছে কিনা সন্দেহ আছে, তাছাড়া এগুলো কোর্ট স্টেটমেন্ট ও না।
তৃণমূল বিজেপি নিজেদের ভোটের ফল নিয়ে কন্ফিডেন্ট, তাই এই স্টেটমেন্ট দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, বা শুভেন্দু যা বলছেন বা বলে চলেছেন, সেগুলো নির্বাচনের বিষয়ে কন্ফিডেন্স এর ছাপ। কন্ফিডেন্স ন ওভারকন্ফিডেন্স সেটা তো সময় বলবে। তবে ঐ আর কি সময় যাই বলুক , নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গে মৃত বা বলা উচিত জড়ের সংখ্যা বাড়ছে মাত্র কমছে না, সেন্সিবল অপিনিয়ন বেরোনো বা সত্যিকারের ভালো ইনভেস্টিগেশন এবং ইমপার্শিয়াল প্রসিকিউশন হওয়া প্রায় অসম্ভব। হ্যা আমার দেশের জাস্টিস সিস্টেম এবং প্রসিকিউশন সিস্টেম এর উপরে আমার পোলিটিকাল ফিজিকাল কনফ্লিক্ট রিজোলিউশনের ব্যাপারে ভরসা কম। যদিও অন্য বিষয়ে কিছু প্রশংসনীয় জুরিসপ্রুডেন্স তো আছে, মানতে হবে।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত
এঃ, ওই লেখাটা কে আবার পুনঃপ্রকাশ করেছে। ও নিয়ে তো সিপিএম এর কিছু লোকজন ( দলীয় সদস্য, সেক্রেটারি ফারি ও), বেশ কিছুদিন ধরে খুঁচিয়ে চলেছে। লেখার নানা অংশের স্ক্রিনশট নিয়ে ছড়িয়ে বেরিয়ে চলেছে অনেক দিন ধরেই, বিশেষ করে ফেব্রুয়ারির মাঝখান থেকে। তারপর সেই লেখা দায়িত্ব নিয়ে লোকজনকে পড়িয়ে চলেছে। যা কিছু বলে চলেছে, এসব তার সামান্য কিছু নমুনামাত্র।
আরো চাইলে বলবেন।
<a href="https://postimages.org/" target="_blank"><img src=" alt="received-716765702355485"/></a><br/><br/>
<a href="https://postimages.org/" target="_blank"><img src=" alt="received-738676337019933"/></a><br/><br/>
মূল লেখাটা পুন:প্রকাশ হয়নি তো। ছিলোই সাইটে। এই ভোটের বাজারে লোকজনের মনে পড়েছে তাই শেয়ার কমেন্ট এইসব হয়েছে।
আর এই সম্পাদকীয় বক্তব্যটা নতুন লেখা।
তো, পুন:প্রকাশ না, পুন:প্রচার, সেটা সিপিআইএম সমর্থকরাই করেছেন মহা উৎসাহে। উদ্দেশ্য বোধয় গুরুচণ্ডা৯ কেমন খারাপ সেটা প্রমান করা ছিল, কিন্তু সে আর প্রমানের কী আছে, কিন্তু এই ভোটের বাজারে জমি অধিগ্রহনে বাম সরকারের ভূমিকার স্মৃতি ফিরিয়ে এনে বামের কী লাভ হলো তা সিপিআইএম সমর্থকরাই জানেন।
ডোমেন কেনার টাকা আসে সুদূর মার্কিন মুলুক থেকে? :d :d :d
লাভ কি হলো জানা নেই। কিন্তু পার্টিজান চিন্তা ছেড়ে কেও এইটা একটুখানি দ্যাখান না যে বড়ো শিল্প ছাড়া কর্মসংস্থানের অন্য কিছু ভিয়াবল সাস্টেনেবল বিকল্প কি গত দশ বছরে দেখা গেলো ?
নিজের আশেপাশে র বাড়িগুলোতে ২৫-৪০ এজ গ্রূপের যেসব শিক্ষিত ছেলেমেয়ে আছে , একটু সার্ভে করে বলুন না তাদের মধ্যে কতজন ভালো চাকরি পেয়েছে পব -তে গত দশ বছরে আর কতজনকে বাইরে যেতে হয়েছে বাধ্য হয়ে , বুড়ো বাবা -মা দের একা ছেড়ে ? যদি চাষিদের স্বার্থ রক্ষাই এতো গরজ ছিল , তাহলে জমির বেশি ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্দোলন হলোনা কেন ?হুড়কো দিয়ে তাড়ানোটাই তো মূল উদ্দ্যেশ্য ছিল - ?
দয়া করে আবার সেক্টর ফাইভ বা রাজারহাটের আইটি কোম্পানিগুলো দেখাবেন না যেন। ওটাও বাম আমলের। কোনোমতে এখনো চলে যাচ্ছে , নাহলে আরো হাড়ির হাল হতো।
টাকা খাওয়ার অভিযোগ!! কত কষ্ট করে, মানুষের ভলান্টারি কনট্রিবিউশন থেকে গুরু চালাতে হয়
এসব নোংরামি করে যে কী লাভ :-(
সি আই এ...হামকো দরওয়াজা তক ছোড় আইয়ে
যানে ভি দো ইয়ারো।
আমাদের মতন অভাগারা রাজ্য ছেড়েছিল গণগণে বাম রাজত্বে। সে যাক। ভস্মে ঘি ঢেলে লাভ নেই।
অন্যকথা বলি। ডোমেনের টাকা তো মার্কিন মুলুক থেকে আসে। আসে ঠিক না, মার্কিন মুলুকেই থেকে যায়। গণশক্তি-টক্তির ডোমেনের টাকাও ত ফাইনালি মার্কিনে যায়, না?
আগে আমার সার্ভে র হিসেবটাই দিয়ে দি বাকিদের জিগাচ্ছি যখন । যাদবপুরের ব্যাচের ৬০ জনের মধ্যে ৪৮ জন হোয়াটস্যাপ গ্রূপ এ আছে। বাকি দের সাথে যোগাযোগ নেই। ৪৮ জনের মধ্যে তিন জন প্রফেসর আর ১৮ জন আইটি লাইনে আছে -সবাই কলকাতায়। বাকি ২৭ জনকেই বাইরে আসতে হয়েছে (রাজ্য বা দেশ যাই হোক)- যেহেতু কোনো কাজের সুযোগ ছিলনা নিজের ইঞ্জিনিয়ারিং ফিল্ডে।
স্কুল এর ব্যাচের ৫০ জনের মধ্যে ৩৬ জন আছে হোয়াটস্যাপ গ্রূপ এ। ৬ জন কলকাতায় নিজেদের পারিবারিক ব্যবসায় আছে , ৪ জন শিক্ষক বা প্রফেসর , ৪ জন সরকারি চাকরিতে আছে , ৮ জন আইটি লাইনে -সবাই সেক্টর ফাইভে। বাকি ১৬ জন ই বাইরে।
এই তো হাল। তো বিকল্প কিছু আছে কারোর ?
আমিও পব ছেড়েছি বহু বছর হলো, বাম রাজত্বেই ছেড়েছি। মনের আনন্দে ছেড়েছি, বাড়ি থেকে বেরিয়ে অন্য কোথাও থাকার প্রথম সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছি। পবতে চাকরির সুযোগ থাকলেও অন্য জায়গায় যেতাম। পুরো জীবনটা এক জায়গায় বসে থাকার কোন কারনই দেখিনা।
আমি ত্রিপুরা ছেড়েছি বাম আমলে, পবও ছেড়েছি বাম আমলে, একেবারে ডাবল ধামাকা।
মনের আনন্দেই ছেড়েছি অবশ্য, ছাড়ার জন্যেই ছেড়েছি, নতুন জায়গায় যাওয়ার জন্যে। কিন্তু সে অন্য কথা।
সবাই বাড়ি বসে একেবারে মনের মত চাকরি করবে তার জন্যে বন জঙ্গল গাছপালা নদী নালা হিমালয় সুন্দরবন সব মুড়িয়ে কল কারখানা বানাতে হবে, এতে উন্নয়নের পরাকাষ্ঠ হয় বটে।
আর তাছাড়া কল কারখানা বানাতে কেউ না করছে না।
কত কত বন্ধ কারখানার জমি পড়ে আছে, সরকার সেসব নিতে পারবে না, সেসবে দুদ্দাড় করে আবাসন হয়ে যাবে আর জমির দরকার হলে কৃষক ঠ্যাঙাবে, এও ভালো কথা না।
তবে সিরিয়াসলি, সৈকতদা যে সব পয়সা সার্ভার কিনে কিনে খর্চা করে ফেলছে, আমরা যারা এত বচ্ছর ধরে আপিসের কাজে ফাঁকি দিয়ে টই ভাট সরগরম করে রাখছি তাদের কলাটা মুলোটা কিছুই দিচ্ছে না, এটা কোন ন্যায্য কথা হলো না।
মাইরি এ খুব অন্যায় হচ্ছে। কবে থেকে বসে আছি সিআইয়ে র পয়সা পাবো বলে, সে আর হলই না। মাঝখানে শুনলাম অয়াকাউন্টে পনেরো লাখ ঢুকবে, সে গুড়েও বালি। এ জগতে হায় সকলেই ফাঁকি দিয়ে যায়।
আচ্ছা, সিপিএম কি সত্যি সত্যি সিপিএম না কেবল মিচ্কেমি করে?
এই বন্ধ কলকারখানার হাজার হাজার একর জমিতে শিল্পের তত্ত্ব তো বাসী পুরোনো হয়ে গেলো মশাই। শুধু কথাই সার। তো এতো হাতে গরম গরম সমাধান থাকতে সেগুলো প্রাকটিক্যাল ইমপ্লিমেন্টেশন এতো বছরেও হয়না কেন ? কিসে ঠেকাচ্ছে- ? আর বাকি দেশে কি সব বনজঙ্গল ধ্বংস করে হচ্ছে সব কিছু ?
অল্টারনেটিভ তো কিছু এলোনা, শুধুই গল্প। কেউ হয়তো দেশ ঘোরার জন্যে ঘর ছেড়েছেন, কেউ বা হয়তো ঘরের লোকের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে ছেড়েছেন, তো সেসব গল্প জেনে কার কীহবে ?
বাহ বাহ, '...কেউ বা হয়তো ঘরের লোকের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে ছেড়েছেন...', এই তো, পরিচিত লাইন:)
ইয়ে আসল প্রশ্ন টাকে সাইড ট্র্যাক করে একটা ঠাট্টা ছলে বলা কমেন্ট কে তুলে অভিমান টাও চেনা লাইন। আসল প্রশ্ন তেই ফিরি বরং ? ভিয়াবল এন্ড প্রাকটিক্যাল অল্টারনেটিভ কোনো ডেমোন্সট্রেবল উদা: পাওয়া গেলো ?
বরং এর থেকেতো এলেবেলদার ফুল থেকে আবির টাও একটা অন্তত আইডিয়া ছিল। আমার পছন্দ হোক বা নাহোক।
না, পাওয়া গেল না।
আমিই যদি আইডিয়া দিই তাহলে আর অত কাঁড়ি টাকা খরচ করে সরকার কমিশন অত কিছু পোষা কেন।
তৃণমূল কেন কিছু করেনি তার উত্তর আছে - ওরা চোর। বিজেপি করবে না কারন ওরা ডাকাত। সিপিএম কী করেছে এবং কেন করেছে বা করেনি সে নিয়ে আমার কোন বক্তব্য নেই। তবে অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ন নিয়ে আমার সমস্যা আছে, আর দক্ষিন বাম দুপক্ষের উন্নয়নের ধারনা একরকম হলে তো আর ভেদাভেদ করে লাভই নেই। কেউ একটু বেশি চোর কেউ একটু কম চোর, আর বাকি নো ভোট টু বিজেপি।
যদিও আমি এবার বাম জোটকে ভোট দিতে চাই কারন আমার ধারনা নেতৃত্ব অধিগ্রহন টহন নিয়ে একটু অন্য রকম ভাবে।
ও, আর ওটা অভিমান না; এক কালের লোকাল কমিটির লোকের শোয়ার ঘরে উঁকি মারার একটা নোংরা অভ্যাসটা ছিল, 'ঘরের লোকের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে ছেড়েছেন' পড়ে সেসব মনে পড়ে গেল। উন্মার্গগামী যুবক হিসেবে ওসব একটু সামলাতে হতো :)