সৌম্য, রজত যখন ঋকের বাড়ি গিয়ে পৌঁছল তখন ঘড়িতে প্রায় বারোটা। ছোট একটা গলির মধ্যে একটা দোতলা বাড়ি। পাড়াটার মধ্যে একটু মফস্বল ভাব আছে। ছোট ছোট বাড়ি, সামনে একটু জায়গা। কোথাও দু’-একটা গাছও আছে। বাড়িগুলোর বয়স বেশি না, তিরিশ-চল্লিশ। যদিও মাঝেমাঝেই গড়ে ওঠা চার-পাঁচতলার ফ্ল্যাটবাড়ি সেই মফস্বলি গন্ধে ছন্দপতন করেছে।
সারা পাড়া সুনসান। দু’-একটা বাড়ির একটা-দুটো ঘরে হয়তো আলো জ্বলছে।
ঋকদের বাড়িটাও বেশি পুরোনো না হলেও অযত্নের ছাপ স্পষ্ট। বোঝাই যায়, যে বাড়ির মালিক এখানে থাকে না। গেটের ওপরের মাধবীলতাটা অযত্নে শুকিয়ে গেলেও পুরোপুরি মরে যায়নি।
সৌম্য আর রজত মেন গেটটা খুলে ভেতরে ঢুকল। সামনে একটু কয়েক হাত জায়গা, তারপরেই সদর। রজত পকেট থেকে মোবাইল বার করে টর্চ জ্বালাল। দরজায় একটা ছোট পিতলের তালা। সৌম্য রজতকে বলল, আলোটা একটু নীচের দিকে ফেলতে। দরজার সামনে কিছু গুঁড়ো গুঁড়ো মত জিনিস পড়ে আছে। সৌম্য হাঁটু গেড়ে বসে ওই গুঁড়োগুলো আঙুলের ডগায় নিয়ে শুঁকল। তারপর রজতের থেকে মোবাইলটা নিয়ে একটু এদিক ওদিক আলো ফেলে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখল। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে ব্যাগ থেকে দু’জোড়া গ্লাভস বার করে একটা রজতকে দিয়ে বলল, “পরে নে। অকুস্থলে কোনো কিছুতে আঙুলের ছাপ লাগানো ঠিক হবে না।”
তারপর ব্যাগ থেকে বার করল একটা ক্লিপ আর পিন। একটুক্ষণ কসরতের পরই তালাটা খুট করে খুলে গেল।
দরজা খুলে প্রথম ভেতরে ঢুকল সৌম্য। পিছু পিছু রজত। দরজার পাশের সুইচবোর্ড হাতড়ে লাইট অন করতেই সৌম্য বলল “সাবধান। মেঝেতে কাচ পড়ে রয়েছে”। রজত তাকিয়ে দেখল, ঘরের মাঝখানের সেন্টার টেবিলটার পাশে পড়ে রয়েছে একটা টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া কাচের জগ। মেঝের ওপর শুকিয়ে যাওয়া জলের এবং জুতোর দাগ। যদিও দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, যে জুতোর দাগটাকে ওই জুতো দিয়েই ঘষে নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সৌম্য পকেট থেকে ফোনটা বার করে ওই দাগগুলোর ছবি তুলে নিল।
এইটুকু ছন্দপতন বাদ দিলে বাকি ঘরটা অপরূপ রুচিশীলভাবে সাজানো। দেওয়ালে টাঙানো গুজরাটি লোকশিল্পের ওয়াল হ্যাঙ্গিং, সোফায় শান্তিনিকেতনী কুশন। আরেকদিকের দেওয়ালে টাঙানো টুকরো টুকরো কাপড় জুড়ে তৈরি কোলাজ। টেবিলে রাখা ফটোফ্রেমে গান্ধীজি আর রবীন্দ্রনাথের একটা সাদা-কালো ছবি। ঘরটা শুধু ঘরের মালিকের রুচির পরিচয়ই বহন করছে না, সঙ্গে বাংলা আর গুজরাতের এক সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনও তুলে ধরছে।
বসার ঘর পার করে সৌম্য আর রজত পৌঁছল কিচেন কাম ডাইনিং-এ। এটা বেশ বড় ঘর। একদিকে খাওয়ার টেবিল, টেবিলে দুটো ম্যাট। অন্য প্রান্তে ওপেন কিচেন। দেখলে বোঝা যায় এই অংশটা সাম্প্রতিক অতীতে রিনোভেট করা। সৌম্য ফ্রিজ খুলে ভেতরটা দেখল। কয়েকটা ডিম, গোটা ছয়েক পাউরুটির স্লাইস আর খানিক দুধ বাদ দিয়ে প্রায় কিছু নেই বললেই চলে। সৌম্য স্বগতোক্তির মত বলল, “এরা খেত কী?”
রজত কিচেন থেকে দুটো খালি খাবারের প্যাকেট দেখিয়ে বলল, “এই যে, খাবার অর্ডার করে আসত।”
সৌম্য কিচেনে এল। দুটো শুকিয়ে যাওয়া খালি চাওমিনের প্যাকেট। বেসিনে দুটো থালা আর একটা কফি কাপ। সৌম্য কাপটা তুলে দেখল। তারপর চাউমিনের প্যাকেটদুটো একটু শুঁকে বলল, “একটা ভেজ আর একটা নন-ভেজ।”
কিচেন দেখা শেষ করে দু’জনে ঢুকল বেডরুমে। বসার ঘরের মতই এই ঘরটাও সুন্দর করে সাজানো। যদিও অতটা গোছানো নয়। বিছানার ওপর স্তূপ করে রাখা একগাদা জামাকাপড়। রজত ওপর দিকে তাকিয়ে বলল, “ঋক যাওয়ার সময় এসিটাও বন্ধ করে যায়নি?” সৌম্য একটু অন্যমনস্কের মতো বলল, “হুঁ, ফ্রিজটাও চলছে।”
সব দেখাটেখা শেষ হলে রজত বলল, “তাহলে, কিছুই তো তেমন পাওয়া গেল না।” সৌম্য বলল, “হুঁ। চল বাথরুমটা দেখে তারপর রাজাবাবুকে ফোন করে দেখি তিনি কখন আসেন।”
বাথরুমের দিকে এগোনোর পথেই রাখা একটা বড় সুটকেস, যেমনটা নিয়ে লোকজন বিদেশে যায়। সেটাকে সরানোর জন্য উঠিয়েই সৌম্য চেঁচিয়ে উঠল, “রজত, ক্যুইক। এদিকে আয়।”
দু’জনে মিলে সুটকেসেটাকে শুইয়ে তার ডালা খুলল। ভেতরে বুকের কাছে হাঁটু ভাঁজ করে শুইয়ে রাখা ঋকের দেহ। রাইগর মর্টিস শুরু হয়ে গেছে। গলায় একটা দড়ির ফাঁস।
****
সকালে ঘুম থেকে উঠে সৌম্য ওর আইপ্যাডটা নিয়ে ব্যলকনিতে এসে বসল। মুখ দেখলে বোঝা যায় রাত্রে ভাল ঘুম হয়নি।
এই ব্যলকনিটা ওদের দু’জনেরই খুব প্রিয় জায়গা। রজতের খুব গাছের শখ। তাই এই ছোট্ট এক টুকরো জায়গাটাকে নিজের পছন্দের গাছগাছালিতে সাজিয়েছে। সবথেকে মজার ব্যপার হল, এই টবের গাছেই আবার একটা বুলবুল দম্পতি বাসা বেঁধেছে। রোজ সকালে উঠে ওদের জল আর কিছু ফলফলারি, চাল এইসব দেয় সৌম্য। ওরাও সৌম্যকে ঘিরে কিচিরমিচির করে। কিন্তু আজ সৌম্যকে নিজের আইপ্যাডে ডুবে থাকতে দেখে সম্ভবত ওরাও আর বিরক্ত করছে না।
কাল সব মিটিয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রায় চারটে বেজে গেছিল। দু’জনেই এত ক্লান্ত ছিল, যে কখন বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে, নিজেরাই জানে না। কিন্তু হা-ক্লান্ত থাকলেও সৌম্যর ঘুম ভালো হয়নি। ছেঁড়া ছেঁড়া ঘুমের মধ্যে বারবার তুহিনের কথা মনে পড়ছিল। যতই এটা একটা প্রফেশনাল কেস হোক, আদতে তো তুহিন ওর একসময়ের বন্ধু ছিল। ছেলেটা যদি সেই সময়ে নিজের সেক্সুয়ালিটির ব্যপারে আরেকটু স্বচ্ছন্দ হত, তাহলে হয়তো ওদের মধ্যে একটা সম্পর্কও তৈরি হতে পারত।
ভোরের দিকে আধঘুমে সৌম্য স্বপ্ন দেখল, একটা খুব সরু পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে ও আর রজত হাঁটছে। হঠাৎ সামনের রাস্তাটা ধসে রজত অন্ধকার খাদের মধ্যে তলিয়ে গেল। সৌম্য ধড়মড় করে জেগে উঠে দেখল, একটা হাত সৌম্যর বুকের ওপর রেখে রজত নিশ্চিন্তে শিশুর মত ঘুমোচ্ছে। হাতটা আলতো করে সরিয়ে ঘুমন্ত রজতের কপালে একটা চুমু খেয়ে সৌম্য উঠে পড়ল। এখন আর শুয়ে লাভ নেই। ঘুম আসবে না।
সৌম্য ওর আইপ্যাডে মনে জমে থাকা প্রশ্নগুলো এক এক করে লেখা শুরু করল।
এক, ঋক আর তুহিনের মধ্যে কে আগে খুন হয়েছে?
দুই, ঋকের বাড়িতে একটা ঝটাপটি হয়েছে। সেটা কি তুহিন আর ঋকের মধ্যে? নাকি অন্য কেউ?
তিন, তুহিনই কি ঋককে রাগের মাথায় খুন করেছে? বা প্ল্যান করে? তাহলে তুহিনকে কে খুন করল? বডি সুটকেসেই বা ঢোকানোর প্রয়োজন হল কেন? তবে কি বডি পাচার করে দেয়ার প্ল্যান ছিল?
চার, তুহিন অত রাত্রে রাস্তায় কী করছিল?
পাঁচ, ঋক আর তুহিন বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করেছিল। তুহিনের খাবারে কি সেখানেই কেউ বিষ মিশিয়েছিল?
ছয়, তুহিনের সঙ্গে ওর বিজনেস পার্টনার মহেশ কুমারের গোলমালটা কী নিয়ে? মহেশ কুমারের কথামত তুহিন কোম্পানি থেকে বেশ কিছু টাকা নিয়মিত তুলেছে। কেন? মানসের কথামত ঋকের বিজনেস করোনার সময় থেকেই খারাপ চলছে। টাকাগুলো কি তবে ঋককে দিয়েছে?
সাত, পৃথার সঙ্গেই বা তুহিনের সম্পর্ক কেমন ছিল?
সৌম্য নিজের ভাবনায় এতটাই ডুবে ছিল, যে রজত কখন ঘুম থেকে উঠে পড়েছে ও লক্ষ্যই করেনি। রজত দু’-কাপ কফি বানিয়ে পাশের চেয়ারে এসে বসল। বলল, “কীরে, বাবার ওখানে যাবি না? আজকে তো ব্রেকফাস্টের নেমন্তন্ন।”
সৌম্য বলল “হ্যাঁ। কাকু তো বলল, যে আজ হয়তো পোস্টমর্টেম রিপোর্টটা পেয়ে যাবে। পুরো রিপোর্টটা পেলে কয়েকটা ব্যপারে পরিষ্কার হওয়া যাবে। ঋকের বডিও তো পোস্ট-মর্টেমে গেছে। তারই বা রিপোর্ট কবে আসবে কে জানে?”
রজত বলল, “মন্ত্রী তুষার মিত্রর কেস। বেশি সময় লাগবে না। প্রায়োরিটিতে হবে।”
“হ্যাঁ। আচ্ছা ঋকের বাড়িতে খবর গেছে?”
“গেছে তো নিশ্চই, না গেলেও যাবে। কিন্তু কেউ কি আসবে? কে জানে? যদ্দুর শুনেছি ও কাম আউট করার পরে ওর বাড়ির লোকজন ওকে এই কলকাতার বাড়ি আর হাতে বেশ কিছু থোক টাকাপয়সা দিয়ে বাড়ি থেকে বিদেয় করে দিয়েছিল। তারপর থেকে আর কোনও সম্পর্ক নেই। ওর বাড়ির লোকজন নাকি ওকে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার পর নিয়ম-রীতি মেনে ওর শ্রাদ্ধও করে ফেলেছে। নিজের ছেলে বেঁচে থাকতেই যে বাবা মা তার শ্রাদ্ধ করে ফেলল, শুধু ছেলে গে বলে – তারা কি আর আসল দাহকার্যে আসবে?”
রজত আর সৌম্য দু’জনেই খানিকক্ষণের জন্য থম মেরে বসে রইল। নিজেদের জীবনের চড়াই উতরাইগুলোর কথা মনে পড়ছিল। সেই বন্ধুর যাত্রা কি শেষ হয়েছে? এখনও আরও কত লড়াই বাকি কে জানে।
সৌম্যই প্রথম স্তব্ধতা ভাঙল। বলল, “ওঠ ওঠ। আর বসে থাকলে চলবে না। চল, তাড়াতাড়ি করে স্নান শেষ করে বের হই। এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে।”
রজত একটু ফিচেল হেসে বলল, “একসাথে করি? তাড়াতাড়ি হবে।”
সৌম্য একটু কপট রাগ দেখিয়ে বলল, “তাড়াতাড়ি হবে না আরও কিছু।”
দিব্যেন্দুবাবুর বাড়ি গিয়ে ওরা যখন পৌঁছোল, তখন ঘড়িতে প্রায় সাড়ে দশটা। ওদের দেখেই হইহই করে উঠলেন দিব্যেন্দুবাবু, “আমি তোমাদেরকেই ফোন করতে যাচ্ছিলাম। সকালেই করতাম, কিন্তু কাল অত রাত করে বাড়ি ফিরেছ বলে আর বিরক্ত করলাম না। পোস্টমর্টেমের প্রিলিমিনারি রিপোর্ট পেয়ে গেছি। চলো, ব্রেকফাস্ট করতে করতে বলছি।”
লুচি দিয়ে একটা বড় বেগুনভাজা মুখে পুরে দিব্যেন্দু বললেন, “মৃত্যুটা হয়েছে রাত দুটো থেকে সাড়ে তিনটের মধ্যে। ভোরে যখন মর্নিং ওয়াকাররা দেখতে পায়, তখনো রাইগর মর্টিস ঠিকভাবে শুরু হয়নি। মৃত্যুর কারণ তো বললামই রাইসিনের বিষক্রিয়া। তবে বিষটা শরীরে ঢুকল কী করে, সেটা খুব একটা পরিষ্কার নয়। যিনি পোস্ট মর্টেম করেছেন সেই ডক্টর সিনহা বললেন, যে খাবারের মধ্যে দিয়ে তো সম্ভবত নয়, কেননা সেক্ষেত্রে যে লক্ষণগুলো দেখা যাওয়ার কথা, যেমন বমি বা পেটে জল জমা – সেগুলো ছিল না। তুহিন মারা গেছে হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে। সেটা রাইসিন শরীরে ইনজেক্ট করলে হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি।”
রজত জিজ্ঞাসা করল, “বিষটা কখন দেওয়া হয়েছে?”
“সেইটা বলা খুব মুশকিল, বুঝলি। এটাই হল এই বিষটার মজা। সাঙ্ঘাতিক টক্সিক এই বিষটা কোনও পরীক্ষায় চট করে ধরা পড়ে না। আর কতক্ষণে কাজ করবে সেটা নির্ভর করে কীভাবে আর কতটা প্রয়োগ করা হয়েছে তার ওপর। তবে যেহেতু কয়েক ঘণ্টা আগেও পার্টিতে ও একেবারে স্বাভাবিক ছিল, তাই অনুমান করা যেতে পারে বেশ খানিকটাই শরীরে ঢুকেছে। তবে বেশ খানিকটা মানে আবার কয়েক গ্রাম ভাবিস না যেন। একটা আলপিনের মাথায় যতটুকু ধরে ততটা রাইসিনই একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষকে মেরে ফেলতে যথেষ্ট। ওই পরিমাণ বিষ যদি ইনজেক্ট করা হয়, তবে তিন থেকে ছ’ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হতে পারে।”
সৌম্য হিসেব করে বলল, “তার মানে যদি ধরি, তুহিন সাড়ে তিনটেয় মারা গেছে আর বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে তিন ঘণ্টা আগে, তাহলে সময়টা হয় রাত সাড়ে বারোটা। অর্থাৎ, পার্টি চলাকালীন কেউ বিষটা দিয়েছে। আর যদি ধরি, রাত দুটোয় মৃত্যু হয়েছে আর বিষ দেওয়া হয়েছে ছ’ঘণ্টা আগে, তবে বিষপ্রয়োগের সময় দাঁড়ায় সন্ধ্যে আটটা। অর্থাৎ, এই সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যেই যা হওয়ার তা হয়েছে।”
“একজ্যাক্টলি।” দিব্যেন্দুবাবুর গলায় তারিফের ছোঁওয়া।
রজত এতক্ষণ মন দিয়ে শুনছিল। এবার প্রশ্ন করল, “তুহিনের শরীরে কোনও ইঞ্জেকশন মার্ক বা কাটাছেঁড়া পাওয়া গেছে?”
দিব্যেন্দুবাবু বললেন, “হ্যাঁ, হাতের আঙুলে একটা সদ্য কাটা ছিল, যার ওপরে ব্যান্ড এড লাগানো।”
“ওই ব্যান্ড এইডে রাইসিন পাওয়া গেছে?”
“টেস্ট চলছে। রেজাল্ট এলে জানা যাবে।”
দিব্যন্দুবাবু আর কিছু বলার আগেই সৌম্য বলল, “সেটার আর মনে হয় দরকার নেই। ওটা কাল দুপুরের অমলেট বানানোর সময় পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে কাটা। কিচেনের ডাস্টবিনে পেঁয়াজের খোসা, ডিমের খোলা, আর ব্যান্ড এইডের র্যাপার ছিল।”
দিব্যেন্দুবাবু বললেন, “কিন্তু সেই ব্যান্ড এইডে যে রাইসিন ছিল না তার কি গ্যারান্টি?”
সৌম্য বলল, “রাত্রে ওরা বাইরে থেকে আনিয়ে থালায় ঢেলে চাউমিন খেয়েছে। বেসিনে কোনো কড়াই বা ফ্রায়িং প্যান ছিল না। অন্য কোনো থালাও ছিল না। তাই আমার ধারণা এই ওমলেটটা গতকাল সকালে বা দুপুরে বানানো হয়েছিল। আর অত আগে শরীরে রাইসিন ঢুকলে তার বিষক্রিয়া অনেক আগেই শুরু হয়ে যেত।”