এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  রাজনীতি

  • বঙ্গভোট, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভোটারের মনদখলের লড়াই

    অর্ক দেব
    আলোচনা | রাজনীতি | ০৩ জুন ২০২১ | ২৯০৯ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (৬ জন)
  • বাংলার নির্বাচনী পালা সাঙ্গ হয়েছে রীতিমতো ঐতিহাসিক ভাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল যে পরিমাণ ভোট পেয়ে ক্ষমতায় এলো, ১৯৭২ সালের পর কোনও রাজনৈতিক দল এককভাবে এত ভোট পায়নি। নানাজনে এই নির্বাচনের তাৎপর্যকে নানা ভাবে ব্যখ্যা করছেন যার সার কথা হল, মেরুকরণের রাজনীতি এই বাংলায় কাজ করেনি। গোটা বাংলার বিজেপি বিরোধী ভোট এক জায়গায় জমা হয়েছে,জাতীয় স্তরে একটি অক্ষশক্তি তৈরির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে যা নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের ঘুম উড়িয়ে দিতে পারে। সর্বোপরি, স্বাধীনতার পরে এই প্রথম বামশূন্য একটি বিধানসভা আগামী পাঁচ বছরের জন্য সক্রিয় হচ্ছে। এর পাশাপাশি আরও একটি বিষয়ও আমার নজর এড়াচ্ছে না, গত সাত-আট বছরে বিজেপির যে অপ্রতিরোধ্য জয়রথ তার লাগামখানা ছিল অমিত মালব্যদের আইটি-সেলের হাতে। আমরা দেখে এসেছি, সোশ্যাল মিডিয়া কী ভাবে ক্রমে মগজের দখল নিতে পারে। এই ভূ-খণ্ডের আট দফা নির্বাচনই সম্ভবত প্রথম জানান দিতে শুরু করল, মোদি-শাহের হাত ধরে ভারতে ক্রমে জনপ্রিয় তথা অব্যর্থ হয়ে ওঠা মডেলটিও মুখ থুবড়ে পড়তে পারে।

    প্রথমেই বলে রাখা ভালো এই নির্বাচনে তিনটি পক্ষই নিজেদের সাধ্য মতো ব্যবহার করেছে সোশ্যাল মিডিয়াকে, ভোটপ্রচারে ফেসবুক ব্যবহারে বেশ কয়েক বছরই দলগুলির বাজেটের অংশ থাকে। তারপর করোনার হাজারো বিধিনিষেধে মানুষ ঘরবন্দি, কাজেই এবার তেড়েফুঁড়ে নেমেছিল বিজেপি-তৃণমূল। ফেসবুক অ্যাড লাইব্রেরি বলছে ৯ জানুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ে বাংলায় ফেসবুক বিজ্ঞাপনে খরচ হয়েছে ৬০ লক্ষ ৬৬ হাজার ৭২৩ টাকা। এই মেয়াদে এই ব্যয় ছিল দেশের দ্বিতীয় বড় ডিজিটাল বিজ্ঞাপনী খরচ। কথায় বলে ফেলো কড়ি মাখো তেল। আমরা এই নিবন্ধে দেখতে চাইব, ঠিক কী ভাবে মগজে কার্ফু জারি করার লড়াইয়ে নেমেছিল যুযুধান দুই শিবির।

    মোদিপাড়া

    গত ১২ ফেব্রুয়ারি অমিত শাহের উপস্থিতিতে সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে 'মোদিপাড়া' নামক অ্যাপ উদ্বোধন করে বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ডিজিটাল প্রচারে জোর দিতেই এই অ্যাপ আনে বিজেপি। দলের তরফে বলা হয়, ফেসবুক, ট্যুইটার, হোয়াটস অ্যাপের তথ্যও এই মোদিপাড়া অ্যাপে নিয়ে আসা যাবে । সেই সঙ্গে সমস্ত দলীয় কর্মসূচি সম্পর্কে বিশদে জানা যাবে। অমিত শাহের সেদিন বলে যান, এই ভোটে ২০০ আসন জয়ে সাইবার যোদ্ধাদের গুরুদায়িত্ব নিতে হবে। ঠিক কী ধরনের যোগদান, শাহই গাইডলাইন দিয়ে দেন ওখান থেকেই। তিনি বলেন, "প্রতিদিন আধ ঘণ্টায় এই অ্যাপ দেখতে হবে। ২ কোটি লোককে এই অ্যাপে যুক্ত করতে হবে। নাগরিকদের মনে ঢুকে পড়তে হবে। এখানে রাস্তায় আপনাকে দেখা যাবে না, আপনাকে কেউ রুখতে পারবে না।"

    এই বার্তা ক্রোনোলজি-প্রেমী পাঠককে মনে করিয়ে দিতে পারে ২০১৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বরের সেই জনসভা, যেখানে অমিত শাহ একটি ভাইরাল ভুল তথ্য সম্পর্কে বলেছিলেন, এই কাজটি করারই মতো, কিন্তু করবেন না। তিনি আরও বলেছিলেন, ৩২ লক্ষ লোক আমাদের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে আছেন। এ আমাদের শক্তি। আমরা চোখের নিমেষে যে কোনও কিছুই ভাইরাল করে দিতে পারি। বাংলায়, মোদিপাড়া অ্যাপের স্বেচ্ছাসেবকদের হাতেও কি তেমন দায়িত্বই এবার সঁপে গিয়েছিলেন শাহ?

    শীতলকুচি-আত্মরক্ষার 'আর্ট'

    বাংলায় নির্বাচন চলাকালীনই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিক রভীক ভট্টাচার্যর Phone screen is rally ground in Bengal: PM clip to Didi foot শীর্ষক একটি লেখা প্রকাশিত হয় (১২ এপ্রিল)। তার দুদিন আগেই শীতলকুচিতে আধাসেনার গুলিতে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। বিজেপির নেতা দিলীপ ঘোষ, সায়ন্তন বসু, রাহুল সিনহারা তখন বলতে শুরু করেছেন, জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে, চারজনকে নয় আটজনকে মারা উচিত ছিল। এরা প্রত্যেকেই রাজ্য বিজেপির নেতা। বক্তব্যগুলি ভাইরাল হতে সময় নেয়নি। রভীক দেখান শীতলকুচির ঘটনা ঘটতেই কোচবিহার এলাকায় মমতার 'ঘেরাও' বার্তার ভিডিও হোয়াটস অ্যাপে চালান করা শুরু হয়। রভীক কোচবিহার বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া কনভেনার দীপক দাসের তৎপরতার কথা তুলে ধরেন এই প্রসঙ্গে। দীপক ঘটনা ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রতিটি গ্রুপে এই ভিডিও চালান করা শুরু করেন। পাশাপাশি এই দীপক মোট ২২০৯ টি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন এবং ৩৫০০ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। রভীক আসলে দেখাতে চাইছিলেন বিজেপি কতটা ক্ষিপ্র হয়ে মুঠোফোনে ঢুকে পড়তে চাইছিল। ঠিক এই সময়েই আমরা দেখতে থাকি, ফেসবুকে সদ্য গোঁফ ওঠা যুবক থেকে দেবদেবীর ছবি দেওয়া হাজার হাজার প্রোফাইল থেকে একই বার্তা দেওয়া হচ্ছে, বার্তাবাহক সেখানে দাবি করছেন তিনি শীতলকুচি সংলগ্ন জায়গায় তিনি ভোটের ডিউটিতে গিয়েছিলেন এবং তীব্র অশান্তির মধ্যে সেনাবাহিনীই তাদের আগলে রেখেছিল। বলতেই হয়, এমন কোনও ঘটনার কথা মূলধারার সংবাদমাধ্যমে উঠে আসেনি। পাঠককের স্মৃতি ফিরিয়ে দিতে এবং সংরক্ষণের লোভে আমরা বার্তাটি এখানে রাখছি-

    "শীতলকুচি থেকে এখন ভোটের ডিউটি করে ডিসিআরসি ফিরছি। শুনলাম পাশের বুথে সিআইএসএফ জওয়ানরের গুলিতে নিহত হয়েছে চার জন। তাদের দোষ না নিহত ব্যক্তিরা দোষী আমি জানি না, আমি প্রত্যক্ষদর্শী না। এটা নিয়ে মিডিয়া আরো তদন্ত করুক, ব্যবসা করুক, ডিবেট হোক, তবে আমি আমার ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের তিক্ত অভিজ্ঞতা বলি। গতকাল সারারাত বোমার ধুমধাম শব্দে একটুও ঘুমাতে পারি নি। ভীষণ আতঙ্কে ছিলাম। ভেবেছিলাম গত পঞ্চায়েত ভোটের মতই বোধ হয় প্রাণ নিয়ে ভোটগ্রহণ যুদ্ধে নামতে হবে কিন্তু সিআইএসএফ জওয়ানরা সমস্ত পরিস্থিতিতে আমাদের নিরাপদ এবং সুরক্ষিত রাখার প্রতিশ্রুতি বার বার দিচ্ছিল। আজকে সারাদিন তারা আমাদের গন্ডগোলের মধ্যে রক্ষাকবচের মত ঘিরে ছিল এবং অবশেষে ভোট নিয়ে যাচ্ছি। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ধন্যবাদ জানানোর এটাই কারণ যে গত পঞ্চায়েত ভোটগ্রহণের সময় যখন ঝামেলার মধ্যে পড়ি তখন আমাদের জন্য যে সিকিউরিটি পাঠিয়েছিল কমিশন তাদের মত ইনারা পালিয়ে যান নি। সত্যি বলতে যখন বুথ দখল বা বন্দুকের নলের মুখে দাঁড়িয়ে থাকি বা ওই জাতীয় কোনো অসুবিধার মধ্যে পড়ি না তখন ওই মুহূর্তে সেক্টর অফিসার বা কোনো আধিকারিক থাকে না। এই ফোর্সরাই আমাদের রক্ষা করতে দায়বদ্ধ থাকে। ওনাদের নিয়ে যে যাই বলুক আজকে প্রাণ নিয়ে যে ফিরতে পারছি এর জন্য ওনাদের অশেষ ধন্যবাদ।"

    বাংলায় যদি মুখের কথার চলন্তিকা তৈরি হত তবে সেখানে "বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র" এই শব্দবন্ধ নিশ্চয়ই জুড়তে হত। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাফেরা করা ব্যক্তিমাত্রেই জানেন ২০১৯ সালে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা প্রসঙ্গে এমন হাজার হাজার ভুঁইফোড় বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্রদের জন্ম হয়েছিল এক দিনে। তখন থেকেই এই সিনড্রোমকে এইভাবে চিহ্নিত করা শুরু। শীতলকুচি কাণ্ডেও সেই মডেল ফিরে এলো।

    ক্লাবহাউজ চ্যাট ও উস্কানির নানাকাহন

    এ বার অবশ্য প্রস্তুতিটা আগে থেকেই ছিল। ২০২০ সালের নভেম্বরেই পশ্চিমবঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় কো-মেন্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে, ঘুরিয়ে বললে অপতথ্যের হাল চষার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। চেষ্টার কসুর করেননি অমিত মালব্য। শোভারানি মজুমদার নামক এক বৃদ্ধার আহত হওয়া এবং মৃত্যুকে হাতিয়ার করে ঘুঁটি সাজাতে থাকে অমিত মালব্য। নিমতার বৃদ্ধা শোভারানি মজুমদারের মৃত্যুর ঘটনাটি অস্ত্র হয়ে ওঠে টিম অমিত মালব্যের। শোভাদেবীর আহত মুখাবয়বের ছবিটি ট্যুইটারে ট্রেন্ডিং হয়ে উঠেছিলতাদের সৌজন্যেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্র্যান্ডিং করতে নেমে প্রশান্ত কিশোরের কয়েনেজ ছিল বাংলার মেয়ে। বিজেপি এই শব্দবন্ধকেই কাউন্টার ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য বেছে নেয়। শোভারানি দেবীকে বাংলার অত্যাচারিত মেয়ে হিসেবে প্রজেক্ট করা শুরু হয়। স্থানীয় মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ার কয়েক হাজার পেজকে ব্যবহার করা হতে থাকে ফেক নিউজ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। করোনাকে ব্যবহার করা হতে থাকে মুসলিম বিদ্বেষ তৈরির জন্য। একটি হিন্দু ঐক্যের বাতাবরণ তৈরি করতে ক্রমে ভোট একজোট করার চেষ্টায় ছিল বিজেপি। শুধু নেটে নয়, হেঁটে প্রচারেও এই নীতিই নিয়েছিল বিজেপি। এই কারণেই ভোটপর্বে বিশ্বহিন্দুপরিষদের পতাকায় ছেয়ে গিয়েছে নন্দীগ্রাম। অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বেলগাছিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে।

    মিথ্যে খবর প্রচারে সিদ্ধাহস্ত, অমিত মালব্য নিজেকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত। এই পর্বেই ভোটের মধ্যেই অমিত মালব্য একদিন প্রশান্ত কিশোরের ক্লাবহাউজ চ্যাট ফাঁস করেন। সেখানে তৃণমূলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ভোটকুশলীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, রাজ্যের ভোটে নরেন্দ্র মোদি, হিন্দুত্ব, মেরুকরণ, অবাঙালি ভোট বড় ফ্যাক্টর। বলতে শোনা গিয়েছে, মতুয়া ভোটের দুই তৃতীয়াংশ এবং সামগ্রিক হিন্দু ভোটের অর্ধেক বা তার বেশি বিজেপি-র পক্ষে পড়তে পারে। বিজেপি অনেক আগে থেকেই দাবি করছিল তারা এ রাজ্যে ২০০ আসন পেতে পারে।এই অডিও সামনে আসায় হাতে চাঁদ পেয়ে যায় বিজেপি । পিকে আত্মপক্ষ সমর্থনে বেশি কথা খরচ করেননি, স্রেফ বলেছিলেন খণ্ডিত সত্য না বলে গোটাটা বলা হোক। বিজেপি এই অস্ত্রে আরও শাণ দিতে চাইছিল। কিন্তু বিধি বাম, ঠিক এই সময়েই শীতলকুচিতে গুলি চলে। আক্রমণে যাওয়ার আগেই ব্যকফুটে গিয়ে আত্মরক্ষায় নামতে হয় বঙ্গবিজেপি ব্রিগেডকে। গুলিচালনার ভাইরাল ভিডিও আটকাতে এগিয়ে আসেন অমিত মালব্যই। সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর দাবি ছিল আত্মরক্ষার্থেই গুলি চলে। মৃ্ত্যুতেও সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে তিনি চাইছিলেন এমন একটি তত্ত্ব তুলে ধরতে মনে হয় যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুসলিম মৃতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন আর রাজবংশী যুবা আনন্দ বর্মণ নিয়ে চুপ থেকেছেন। এই তত্ত্বটিকে খণ্ডন করে তৃণমূল তথ্য দিয়েই। দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্মৃতিতর্পণের জন্য তৈরি করা বেদীতে পাঁচজনের নামই লিখেছেন, আমার পাঁচ ভাই বলেই কথা শুরু করেছেন। আরও একটি চেষ্টা জলে যায়।

    ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপনী দাদাগিরি

    এখানে উল্লেখ থাকা জরুরি, বিজেপির নির্বাচনী খরচখরচা ক্ষেত্রে বিজেপি শুধু ফেসবুক-ট্যুইটারই দখল করেনি, চেষ্টা করেছে ডিজিটাল স্পেসটাকেই অকুপাই করার। ডিডিটাল মিডিয়াগুলির হোমপেজে বিজ্ঞাপনী উইন্ডোগুলিকে একটা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য কিনে নিয়েছিল বিজেপি। পাতা খুললে মূল খবর পরার আগে বাধ্যতামূলক ভাবেই দেখতে হচ্ছিল বিজেপির নানাবিধ বিজ্ঞাপন। অথবা খবরের প্রতিটি প্যারাগ্রাফের ফাঁকে ফাঁকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিজ্ঞাপনের স্লাইড। মগজদখলের এ এক আনোখা পদ্ধতি, সাপও মরে লাঠিও ভাঙবে না। নির্বাচনের আগে বিজ্ঞাপনের খরচখরচার হিসেব নির্বাচন কমিশনে দেওয়া না দেওয়া ঐচ্ছিক, বাধ্যতামূলক নয়। এই সুযোগকেই সুদেমূলে কাজে লাগাতে চেয়েছে বিজেপি।

    যেমন খুশি সাজো নীতির গেরো

    কিন্তু এতদসত্ত্বেও শেষেশ বিজেপির ব্যর্থতা নিয়ে এ যাবৎ কালে বহু আলোচনা সামনে এসেছে। আদি-নব্য সংঘাত, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ঠিক করতে না পারা, মেরুকরণের তাস ঠিক মতো কাজে না আসা ইত্যাদি ইত্যাদি নানাবিধ ব্যখ্যা রয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর অতি হিন্দুত্ব, যোগী আদিত্যনাথের অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াডের হুঙ্কার ইত্যাদি নানা কিছু। আমার মনে হয়েছে এর কারণ 'আরবিট্রারি মেকানিজম', খেয়ালখুশির নীতি। ২০১৪-এর আগে থেকেই বিজেপি আর স্রেফ রাজনৈতিক দল নয়, তার কর্মপরিচালন পদ্ধতি একটা কর্পোরেট হাউজের মতোই। ভোট পরিচালনার জন্য আইটি-সেল সহ নানা বিভাগের কর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়, টার্গেট ঠিক করে দেওয়া হয়। পাখির চোখটাও সুনির্দিষ্ট থাকে। ঠিক যেমন কোনও পণ্যের বাজারিকরণের ক্ষেত্রে প্রচার অভিযান যে ভাবে হয়, বিজেপিও সেইটাই করে। এমনটাই হয়ে এসেছে এ যাবৎ। বিজেপি ঘেঁষা বুদ্ধিজীবী সম্প্রতি আনন্দবাজার পত্রিকায় সম্পাদকীয় নিবন্ধে দুঃখপ্রকাশ করেছেন বিজেপির ভোট বিস্ফোরণ না হওয়া নিয়ে। তাঁর যুক্তি, বিজেপি যথেষ্ট হিন্দুত্বের প্রচার করেনি। মোহিত রায়ের যুক্তি একরকম ভাবে ঠিকই। বিজেপির নির্বাচন পটীয়ানরা এই একটা ইস্যুতে লক্ষ্য স্থির না করে যেখানে যেমন সেখানে তেমন নীতি নিয়ে প্রচার চালিয়েছেন। কোথাও চেয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীকে মুসলিম বিরোধিতা ও হিন্দুত্বের মুখ করতে। কোথাও চেয়েছেন নতুন জেলার প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরতে। কোথাও আবার মতুয়া তাস, রাজবংশী তাস ফেলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর অভিন্নহৃদয় সহোদর। ভার্চুয়াল ক্যাম্পেনিংও হয়েছে তদনুসারী। ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে ঈষৎ জ্ঞান আছে এমন ব্যক্তিমাত্রেই বলবে, বিপর্যয়ের কারণটাই এইটাই, একটি মূল ফোকাস ঠিক করতে না পারা।

    দুয়ারে ফেসবুক

    আর এখানেই জিতেছে তৃণমূল। সুসংগঠিত ডিজিটাল ক্যাম্পেনিংয়ে তারা কাজের ঢাক যেমন পিটিয়েছে তেমনই মোদি বিরোধিতার হাওয়া বইয়ে দিতে পেরেছে। নীতিগত ভাবে তৃণমূলের বিরোধিতা যে কেউ করতে পারবে, তবে বিজেপির বিরুদ্ধে যে অপতথ্য সুকৌশলে ছড়িয়ে দেওয়ার সুসংহত নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার অভিযোগ প্রমাণ-সহ প্রতিদিনই ওঠে, তা তৃণমূলের বিরুদ্ধে করা যাবে না। এমনকি বিজেপি যেমন তৃণমূলের প্রকল্প দেখে প্রতিপ্রকল্প তৈরি করেছিল, তৃণমূলকে সেই দোষে দুষ্টও বলা যাবে না। বিজেপি তাদের যাবতীয় ছোট ছোট ভিডিওগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় এনেছে, তাতে খরচের ছাপ ছিল স্পষ্ট, অথচ সবটাই ছিল তৃণমূলের পাল্টা। অন্য দিকে সুপার মারিও ভিডিওগেমের নস্টালজিয়া ফিরিয়ে এনে রিপোর্ট কার্ড পেশ করা বা ফাইটার দিদি নামক অ্যানিমেশান ক্যাম্পেনে এক কথায় চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছে। এ সব একদিনে হয়নি। সেই ২০১৮ সাল থেকেই তৃণমূল তিলে তিলে ডিজিটাল লড়াইয়ের জন্য নিজেদের তৈরি করেছে। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ২৯৪ কেন্দ্রে ১০০ জন সাইবার এক্সপার্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। তখন উদ্দেশ্য ছিল ১২ শতাংশ ভোটবৃদ্ধি (সে সময়ে এক ডিজিটাল কনক্লেভে এই নিবন্ধ লেখক উপস্থিত ছিলেন)। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময়ে জানান তিনি চাইছেন এক একজন ডিজিটাল বেত্তার কাজ হোক মাসে ৮ জনকে তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কে যুক্ত করা, আর বিজেপির মিথ্যে প্রচার রুখে দেওয়া। ক্রমেই এই নেটওয়ার্ক ছ়ড়িয়েছে। মনে রাখতে হবে গত দশবছরে তৃণমূলের সাংগঠনিক ভিত্তি তৈরি হয়ে গিয়েছে। কাজেই অর্থবলের জোরে নয়, অনেকটা অরগ্যানিক ভাবেই তৃণমূল এই নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। এবং এর মধ্যেই ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছেন প্রশান্ত কিশোর ও তাঁর বাহিনী, ক্রমেই বাড়তে থাকে তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সংক্রান্ত দৃরদৃষ্টি। আইপ্যাক যেমন তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সংস্কার করেছে, তেমনই মানুষের অভাব অভিযোগগুলিকে বুঝতে পেরে সেই মতো পদক্ষেপ গ্রহণের পথ দেখিয়েছে। আর প্রতিটি প্রকল্প যখন বাস্তবায়িত হয়েছ তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করেছেন। মাস ট্যুইট ট্রেন্ড হয়েছে বারবার। ক্ষুব্ধ মানুষ দিদিকে বলোর মতো প্রকল্প পেয়েছে অভাব অভিযোগ জানানোর জন্য। কন্যাশ্রীর মতো একটি প্রকল্পকে সর্বাত্মক প্রচারের আলোয় আনা হয়েছে, তা যে মহিলাদের ক্ষমতায়ণের পথে যুগান্তকরী একটি পদক্ষেপ এই বার্তা দিতে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগ দুয়ারে আছড়ে পড়ছে প্রতিনিয়ত, তখনই প্রচারে এসেছে দুয়ারে সরকারের মতো প্রকল্প। আর সব শেষে বাংলা নিজের মেয়েকে চায় নামক আস্তিনের মোক্ষম তাস। একটু ভাবলেই বোঝা যাবে প্রতি ক্ষেত্রে তৃণমূলই আসলে বিজ্ঞাপণী পণ্য বাজারিকরণের ঢঙে ডিজিটাল মার্কেটিং করেছে। নিজেদের হ্যান্ডেলগুলিকে সর্বাত্মক ভাবে ব্যবহার করেছে। সাফল্যও এসেছে সবুরে ফলা মেওয়া হয়ে। বাংলার নিজের মেয়েকে চায় প্রচারটি মেয়েদের নামক প্রচারটি নারী ক্ষমতায়নের স্বপ্ন তৈরি করে আদপে ইভিএমে কাঙ্ক্ষিত চিহ্নে আঙুল টেনে নিয়েছে। এর পাশাপাশি চলেছে বিজেপির ভুলচুক ধরা। ডেরেক ও ব্রায়েন-রা নাগাড়ে বিজেপি নেতাদের লঘু-ভুল মন্তব্য কাটাছেঁড়া করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়, যখন যে সভায় বিজেপি লোক টানতে পারেনি তা তুলে ধরেছেন। প্রতিটি ব্লকে, প্রতিটি এলাকায় সামর্থ্য অনুযায়ী প্রচারের ডি‌জিটাল নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে তৃণমূল। প্রতিটি জেলার জন্য আলাদা ফেসবুক পাতা হয়েছে। ডিডিটাল যোদ্ধারা কাজ করেছেন আইপ্যাকের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে। প্রচারের রূপরেখায় প্রশান্ত কিশোরের চাণক্যনীতি তৃণমূলকে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে। এই বছর জানুয়ারি মাসে বাংলার গর্ব মমতা ফেসবুক পেজটির প্রচারের জন্য ৮ লক্ষ ৬০ হাজার ৮২০ টাকা খরচ করেছে তৃণমূল। এই একই সময়ে বিজেপির আর নয় অন্যায় প্রচারটির ফেসবুক বাজেট ছিল ৩ লক্ষ ৬০ হাজার ৫৮৪ টাকা। ফেব্রুয়ারি মাসে প্রশান্ত কিশোরের টিম এই বাংলার গর্ব মমতা পেজটির ২৭ টি বিজ্ঞাপনে ৩ লক্ষ ৯৭ হাজার ৭৯১ টাকা খরচ করেছে। এই মেয়াদে এটাই ছিল জাতীয় স্তরে কোনও রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে বেশি খরচ। ফেসবুক অ্যাড লাইব্রেরির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলার গর্ব মমতা পাতাটির সার্বিক প্রচারে ভোটের তিন মাসে তৃণমূলের খরচ হয়েছে ৩ কোটি কুড়ি লক্ষ টাকা। বিজেপি এই মেয়াদে বিজ্ঞাপন বাজারে ছেড়েছে ২০৩৩ টি। কিন্তু খরচ করেছে অর্ধেকেরও কম, দেড় কোটি টাকা। বিজেপি চাইছিল ফেসবুক অ্যা়ড লাইব্রেরিতে খরচ করে নিজেদের উপস্থিতি বাড়াতে। তৃণমূলের লক্ষ্য ছিল মহিলা, যুব ভোটারদের কাছে পৌঁছে যাওয়া।

    রাজনৈতিক নানা ব্যখ্যার পাশে, চর্চাকারী হিসেবে ব্যখ্যা যে, বিজেপি হেরেছে পরিকল্পনাহীনতায়, তৃণমূল ক্রমেই ঠিক যাকে লক্ষ্য করে এগোনো তাকে ছুঁতে পেরেছে সফল বিপণনের মাধ্যমে। যেটুকু তারা জিতেছে, খেয়ালখুশি নীতি নিয়ে তার বেশি জেতা যায় না হাতে পুলওয়ামা-বালাকোট আখ্যান আর মোদিপুজো ষো়ড়শ উপাচার না থাকলে। এখানে একটি প্রশ্ন আসতে পারে, বামেরাও তো সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় এবং মন দিয়েছিল। সাফল্যও এসেছিল আপাত ভাবে। তাহলে সাফল্য নামক আমলকি করতলে এলো না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর প্রিয় পাঠককে অন্য পরিসরে বিস্তারিত ভাবে দিতে চাই। আপাতত এটুকু স্বস্তি থাকুক, ফেসবুক ট্যুইটারকে যেমন নাগাড়ে অপতথ্য সঞ্চারে ব্যবহার করা যায়, তেমন কাঁটা দিয়ে কাঁটাও তোলা যায় তা প্রমাণ করল বাংলার ভোট। এই প্রমাণটি ভবিষ্যতের ভারতবর্ষের রাজনৈতিক লড়াইয়ে স্বতঃসিদ্ধ হিসেবে ব্যবহৃত হবে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৩ জুন ২০২১ | ২৯০৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • শুভংকর ঘোষ রায় চৌধুরী | ০২ জুন ২০২১ ১৫:২১494465
  • তথ্যসমৃদ্ধ, জোরদার আলোচনা! এবং পুরো লেখায় তথ্যবিন্যাসটিও এত গোছানো যে পড়তে পড়তে কার্যকারণ সব স্পষ্ট হয়ে ওঠে আবারও। 


    আলাদাভাবে জানতে চাইব, বামেরা অনলাইন প্রচার ব্যবহার করলেও তাঁরা কোথায় lack করলেন বলে আপনার ধারণা? এটুকু অনুমেয় যে তাঁরা শাসকদল হওয়ার সুবিধে বা সর্বভারতীয় দল হওয়ার সুবিধে, কোনোটাই পান নি। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ালো একদিকে যেমন তাঁদের বহু নীতি, collaboration প্রভৃতি, তেমন কি অনলাইন প্রচারমাধ্যমকেও সঠিক উপায় ব্যবহার না করতে পারাটাও আছে? ব্যবহার করতে পারলে ফলাফলে কি কিছু হেরফের হতো বলে মনে হয়? 

  • নাম নেই | 2409:4060:208e:1649:4b8d:938b:adaa:***:*** | ০৩ জুন ২০২১ ২৩:৪৬494522
  • দেখুন নির্বাচন একটা জিনিসকে বুঝিয়ে দিয়ে গেছে যে বামপন্থীরা গণ আন্দোলন না করে , ফেসবুক এ প্রচার করে ক্ষমতায় আসতে পারে না। বামেদের মূল সমস্যা হচ্ছে তারা তাদের শ্রেণী রাজনীতি থেকে অনেক টাই বিচ্যুত। কৃষক আন্দোলনের দীর্ঘ ঐতিহ্য শালী বাংলায় কৃষি বিলের বিরুদ্ধে কোন গণ আন্দোলন গড়ে উঠলো না। JNU এর কিছু এলিট মেধাবী ছাত্রছাত্রী কে হঠাৎ প্রজেক্ট করা হলো নতুন মুখ হিসেবে। সেটা ভালো, কিন্তু গণ আন্দোলনএর  বিকল্প নয়। আসল কথা হল কৃষক শ্রমিক শ্রেণী থেকে সিপিআইএম এর নেতৃত্বকে উঠে আসতে হবে। 

  • শুভজিৎ | 2409:4060:413:d70f:7673:33a7:41c0:***:*** | ০৪ জুন ২০২১ ০২:২৫494523
  • কি চমৎকার লেখা। 

  • Somenath Guha | ০৪ জুন ২০২১ ১৮:৫৬494549
  • নির্বাচনে সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব এখন অপরিসীম। একটা প্রধান ফ্যাক্টর যার ওপর হারজিত নির্ভর করবে। ক্ষুরধার বিশ্লেষণ।

  • | ০৫ জুন ২০২১ ২০:২৪494601
  • খুব ঠিকিঠাক বিশ্লেষণ। অনেকটাই মিলিয়ে মিলিয়ে মনে পড়ল।

  • Arka Deb | 2402:3a80:1968:fc74:578:5634:1232:***:*** | ০৭ জুন ২০২১ ০৮:১৮494684
  • যারা লেখাটি পড়ে মন্তব্য করেছেন তাদের প্রত্যেককে অসংখ্য ধন্যবাদ।  বামেদের সমস্যাটা ঠিক কোথায় হল এই নিয়ে আলাদা একটা লেখা লিখব। 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন