আমার মতো বিজেপি-ভয়ে কম্পমান কাপুরুষদের যদি জিজ্ঞেস করা হয়, “বিজেপিকে কেন জুজু ভাবিস র্যা?”, তবে সমস্বরে উত্তর আসবে – বিজেপি ও তাদের বন্ধুবান্ধব, দেশের জন্যে যে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে—সেই ভবিষ্যত নিজেদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে কল্পনা করাও আমাদের পক্ষে দুঃসাধ্য।
আর একটু চেপে ধরে যদি জিজ্ঞেস করেন – ঠিক কোন কোন দিক নিয়ে আমরা সবথেকে বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, তবে কিন্তু নানা কিসিমের উত্তর আসবে। কেউ NRC-CAA-র প্রসঙ্গ তুলবে, কেউ হিন্দুত্বের, কেউ বলবে বাক-স্বাধীনতার অপঘাতে মরণের কথা, আবার কেউ—মেয়ে, মুসলিম, আদিবাসী, দলিত, ক্ষুদ্রশিল্প-শ্রমিক—এককথায় সমস্ত প্রান্তিক মানুষের সর্বনাশ ঘটিয়ে তৈরি এক সমসত্ত্ব জাতিগঠনের দুঃস্বপ্নের কথা। ‘সব বেচে দিয়ে’ সরকারের বাণিজ্যিকীকরণের লালসার কথাও বলবেন অনেকে। হাতে গোনা কিছু মানুষ বলবেন—কীভাবে শিক্ষায়-বরাদ্দ-বাজেট-ভগ্নাংশ সময়ের সঙ্গে ক্রমহ্রাসমান। ঐতিহ্য রক্ষার নামে সঙ্ঘ-পরিবারের নির্দেশিত ইতিহাস পড়ানো আর পাশ্চাত্য-বিরোধিতার নামে কষ্টলব্ধ বৈজ্ঞানিক তত্ত্বগুলিকে সরিয়ে রামদেব-ব্র্যান্ডের গঞ্জিকাধূম সেবন – এতেও ভয় পাবেন অনেকে।
সত্যিটা হল – ভয় এই বিচ্ছিন্ন বিষয়গুলিতে নয়, এই সবের মিলিত আঘাতে বিচিত্র এই সমাজের রঙবেরঙের দেওয়ালগুলো একেবারে ভেঙে পড়া-য়।
গত বেশ কিছুদিন ধরে এক প্রহসন চলেছে – যার খবর খুব বেশি মানুষ রাখেন না, কিন্তু এই বিভিন্ন রকমের ভয়ের এক অদ্ভুত মালা তৈরি হয়েছে এর ফলে। আজ সেই গল্পটাই বলি। মালা এখনও গাঁথা চলছে, তাই অনেক কথাই ইচ্ছাকৃত অস্পষ্ট করে বলবো, তাতে গল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে না আশা করি।
গল্পের শুরু ২০১৫-র দিল্লিতে। ‘জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া’ নামের নামজাদা প্রতিষ্ঠানটি হঠাৎ ছাত্রীদের উদ্দেশে নির্দেশ জারি করে – রাত আটটার পরে আর হোস্টেলের বাইরে থাকার অধিকার নেই তাদের। দিল্লির মহিলা কমিশন এই বোম্বাগড়ের রাজা-সুলভ নির্দেশের বিরোধিতা করে কারণ জানতে চায়। এই আপাত-উদ্ভট, আপাত নিরীহ ঘটনাটিকেই সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে দিল্লির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মেয়ে-পড়ুয়াদের নিয়ে গড়ে ওঠা দল – ‘পিঞ্জরা তোড়’। মিটিং-মিছিল-বক্তৃতা ছাড়াও তারা আর একটি কাজ করে, একটি পিটিশন ছড়ায় ইন্টারনেটে (change.org)। শুধু কলেজ-ইউনিভার্সিটির ভেতরেই নয়, দিল্লি মহানগরের সমস্ত উন্মুক্তস্থানেই যে নারীবিরোধী, শ্বাসরোধী একুশে আইন বহাল – পিঞ্জরা সেটা সামনে এনেছিল। সেসময়ের মানবসম্পদ-মন্ত্রী, স্মৃতি ইরানি এইসময় মন্তব্য করেন, “এ দেশের মেয়েরা কী পরবে, কোথায় যাবে, কার সঙ্গে দেখা করবে – এ সব তাদের ওপর কেউ চাপিয়ে দেয় না।” এর উত্তরে স্মৃতি ইরানির হাতে দিল্লির বিভিন্ন হোস্টেলের নিয়মাবলীর লিস্টি ধরায় পিঞ্জরা, মহিলা কমিশনের কাছে জমা পড়ে পিটিশন। পরের বছর, এই পিটিশনের ওপর ভিত্তি করেই দিল্লির ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে, নিজেদের বোম্বাগড়পনার ব্যাখ্যা করতে বলে, চিঠি দেয় কমিশন। একই মাসে ইউজিসি উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেয়েদের যৌন-হেনস্থার বিষয়ে একটি নির্দেশাবলী প্রকাশ করে (এই সব সময়ে সশ্রদ্ধচিত্তে মনে করবেন গুরুজনদের অমোঘ সেই বাণী – ইন্টারনেট ‘বিপ্লব’ করে কিছু হয় না)। মনে রাখবেন, এই পুরো সময় ধরে, ফোন করে (অভিযোগ), মিছিলে হট্টগোল করে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরুদ্ধ প্রচার করে, গায়ের জোর দেখিয়ে, ভয় দেখিয়ে – এই আন্দোলনের ক্রমাগত বিরুদ্ধাচরণ করে গেছে সঙ্ঘপরিবারের ছাত্র সংগঠন – ABVP।
সে না হয় হল, কিন্তু এসব তো পুরোনো কাসুন্দি! গপ্পের আধুনিক খোরাক কোথায়? আসছি। তার আগে একবার ২০২০ ঘুরে আসা যাক। CAA-NRC-র বিরুদ্ধে ঘটা আন্দোলন, আর তারপরের দিল্লি-দাঙ্গার কথা মনে আছে তো? সে নিয়ে আলোচনার পরিসর এ লেখায় নেই। আমরা বরং দেখি, মে মাসে ‘পিঞ্জরা তোড়’-এর দু-জন নেত্রী – নাতাশা নারওয়াল আর দেবাঙ্গনা কলিতাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে, দিল্লি-দাঙ্গার ‘ষড়যন্ত্র’ করার অভিযোগে। আসিফ ইকবালের নাম নিশ্চয়ই মনে আছে আপনাদের এই সূত্রে? বলাই বাহুল্য, এই অভিযোগ-টভিযোগ আসলে ঢপ। ভয় দেখানোর ইচ্ছে ছিল সরকারের। তা, সে কথা যাক। এক বছর বিনা বিচারে আটকে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান নাতাশা-দেবাঙ্গনা। কী করে সম্ভব? কারণ তাঁদের আটক করা হয়েছিল, Unlawful Activities (Prevention) Act বা UAPA-ধারায়। জামিন-অযোগ্য। এই এক বছর তাঁরা ছিলেন তিহার জেলে।
কেমন লাগে একজন নির্দোষ, কিন্তু রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় মানুষের, সরকারের হাতে শাস্তি পেতে? এই ইউএপিএ, তাদের পূর্বসূরী (ঠিক আগেরজন, সঞ্জয় দত্ত-খ্যাত, TADA)-দের থেকে কতখানি আলাদা? এদের মূল সুরটিই বা কী? এই ধারায় গ্রেপ্তার হয়ে, বিচারের আশায় কুড়ি বছর কাটিয়ে পরে নির্দোষ প্রমাণিত ভারতীয়ের সংখ্যা কত, তাদের মধ্যে মুসলিমের সংখ্যার অনুপাত কেমন, কেন তাদের গ্রেপ্তার করা হয় (যদি মনে হয়, ‘ধুশ্, এমন আবার হয় নাকি?’, তাহলে এই লিঙ্কটা দেখে নিন)? ভারতে, সমাজের সর্বত্র যদি মেয়েদের কোনো না কোনোভাবে বৈষম্যের শিকার হতে হয়, তবে জেলের ভেতরে (যেখান থেকে কথা বিশেষ ‘সভ্য’সমাজে বেরোয় না) তাদের অবস্থা ঠিক কতটা খারাপ? যেসব বিচারক এই ‘অভিযুক্ত’ কয়েদিদের ভাগ্যনিয়ন্তা, তাঁরা কি জানেন–এদের দৈনন্দিন জীবন ঠিক কেমন? জেল থেকে ফেরার পর (সে দোষী প্রমাণিত না হলেও) এসব মানুষ ‘ভদ্র’ পাড়ায় বাড়ি ভাড়া পান কী করে? কী করেই বা জীবনের এতগুলো দিন, টাকা খরচ করে এসে নতুন করে সমাজে বেঁচে থাকা সম্ভব মানুষের পক্ষে? সরকার কি এদের কোনো ক্ষতিপূরণ দেয় (রেটোরিকাল প্রশ্ন: না, দেয় না) – এ সবই জরুরি প্রশ্ন।
এইসব প্রশ্নের উত্তর, নিজেদের অভিজ্ঞতা, আর বৃহৎ পরিসরে অন্যান্য প্ল্যানের সঙ্গে এই ধারায় করা গ্রেপ্তারগুলির সম্পর্ক – এই নিয়ে বেঙ্গালুরু-র International Center for Theoretical Sciences (ICTS) এবং Indian Institute of Science (IISc)-তে গত মাসের ২৬ তারিখে নাতাশা আর দেবাঙ্গনার বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা করে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের দুটি গোষ্ঠী (বেতনভুক ও জলপানিভুক–উভয় দলের লোকই ছিল তাতে)। হালকা মেজাজের আলোচনার প্ল্যান। ICTS-এ প্রথম আলোচনাটি হয় Emmy Noether সেমিনার রুমে। অনলাইনে সেটি সম্প্রচারের ব্যবস্থাও করা হয় (ফলে আমি নিজেও সেদিন শুনেছি)। গোটা আলোচনাই হয় খুব গোছানো, ভদ্র, শান্ত ভঙ্গিতে (যেমনটা একটি ‘অ্যাকাডেমিক’ আলোচনায় আশা করা যায় আর কি)। NEP নিয়ে এক প্রশ্নকর্তা দেবাঙ্গনার বক্তব্যের সমালোচনাও করেন জোর দিয়ে, কিন্তু কেউই কখনো উত্তেজিত হননি।
সেই কারণেই, অবাক হতে হল, যখন জানা গেল—২৮ তারিখের IISc-র অনুষ্ঠানটি শেষ মুহুর্তে বাতিল করে দিয়েছেন সেখানকার রেজিস্ট্রার। “প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনের কোথাও এই অনুষ্ঠান করা যাবে না”। ছাত্রছাত্রীরা বক্তৃতা বাতিল করে এক ঘরোয়া, অনাড়ম্বর আলোচনার ব্যবস্থা করে (সঙ্গের ছবি)। সেখানেও IISc কর্তৃপক্ষ সিকিউরিটি পাঠিয়ে সকলকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে। কিছু অধ্যাপকের মধ্যস্থতায় তারা শেষমেশ পিছিয়ে যায় যদিও।
এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন পাঁচশো-রও বেশি (এই লেখার সময়ে সেই সই করা গুগল ডক খুলে দেখা যাচ্ছে ৫৭৫ জন) অ্যাকাডেমিক—তাঁদের মধ্যে IISc-র বিজ্ঞানীরাও ছিলেন (এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের একজন, পদার্থবিদ সুভরাত রাজু (ICTS)-র ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা গেছে)। তাঁরা IISc-র ডিরেক্টরের উদ্দেশে খোলা চিঠি লেখেন। খবর হয় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য হিন্দু, দ্য ওয়্যার – এমন সব খবরের কাগজে। এর বয়ান ফুটনোট হিসেবে দিয়ে রাখলাম। নিজেরাই দেখে নিন, তার বয়ান ঠিক কতটা ‘দেশদ্রোহী’। আবারও, সে যাউক গিয়া–গপ্পের এখনো বাকি আছে।
এই সই করা বিজ্ঞানীদের লিস্টিতে অনেকে আছেন: চুনোপুঁটি থেকে রাঘব বোয়াল। এরই মধ্যে IISER মোহালি-র দুই কমবয়সী (আহা, অ্যাকাডেমিক্সের তুলনায় – এ লাইনে আঠেরো মাসে বছর হয়) অধ্যাপকও ছিলেন। তাতে কী হল? কী আবার, তাঁদের শো-কজ নোটিশ ধরিয়েছেন সেখানকার ডিরেক্টর। কী, না তাঁরা ‘উপযুক্ত অথরিটি’-র থেকে পারমিশন না নিয়ে কী করে এই অনলাইন ফর্মে সই করতে পারলেন (“This letter has been signed and sent by you without seeking or obtaining the prior approval of the competent authority, which prima facie is in violation of the CCS (Conduct) Rules that are applicable to all employees.”)?
ঠিক পড়েছেন। অন্য এক প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টরের কাছে লেখা খোলা চিঠিতে সই করার ‘অপরাধে’ তাঁদের শো-কজ হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের গবেষণার খাতে বরাদ্দ সমস্ত টাকা প্রতিষ্ঠান আটকে দিয়েছে। আগামী ১৩ তারিখের মধ্যে সেই চিঠির উত্তর দিতে হবে অভিযুক্ত অধ্যাপকদের। মোহালিরই এক অধ্যাপকের মন্তব্য, “কোনো CCS (Central Civil Services) আচরণবিধি ভঙ্গ হয়েছে বলে আমি মনে করি না, … গোটা দেশে, বৃহত্তর পরিসরে যা হচ্ছে এ আসলে তারই প্রতিফলন। ‘শুধু প্রতিবাদ-ই শাস্তিযোগ্য অপরাধ’—বছরের পর বছর এই মানসিকতাই গড়ে তোলা হচ্ছে গোটা দেশে।” (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর, ১১ জুলাই)
“IISER-এর দুজন শিক্ষাবিদ, অন্য এক প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টরের উদ্দেশে লেখা একটি খুবই যুক্তিসঙ্গত বয়ানে সাক্ষর করলেই তাঁদের নিজেদের ডিরেক্টর কড়কানি দেবেন (প্যারাফ্রেজ), এ এক উদ্ভট কথা। শিক্ষার স্বাধীনতার গোড়ায় তবে কুড়ুল চালানো হয়।” – এইটে সুভরাতের বক্তব্য।
অভিযুক্তদের বক্তব্য? এখনও নেই। তাঁরা ১৩ তারিখের আগে এই চিঠির উত্তর দিতে ব্যস্ত। এঁদের বিরুদ্ধে আগেও এমন শো-কজ হয়েছে। এমনই সব আগডুম অভিযোগে। একজনকে আমি ঘনিষ্ঠভাবে চিনি। ওর নাম অন্য কারণে খবরে আসায় অভ্যস্ত। ওর মত লোককে ভয় পাওয়ানো কঠিন। অন্যজনের সম্পর্কেও যতটুকু শুনলাম, সে-ও শক্ত ধাতুতে গড়া।
কিন্তু সেসব প্রিয়জনের দুশ্চিন্তা। আপনি বুদ্ধিমান, ইতোমধ্যেই বুঝে গেছেন—আসল সমস্যা তো অন্যত্র! এই বেলেঘাস-মার্কা শিক্ষাবিদদের কে পাত্তা দেয়? এসবের উদ্দেশ্য হল, একটা ভয়ের আবহ তৈরি করা। 'সরকারি' প্রতিষ্ঠানে পড়াও? সরকারের থেকে টাকা নাও? চুপ করে থাকো। একটু আগেই ফেসবুকে সেই মর্মে লেখা দেখে এলাম (দিয়েও দিচ্ছি এখানে)। তারপর? তারপর আসবে, 'সরকারি' স্কুল-কলেজে নিজের সন্তানকে পড়াও? বেঁধে রাখো। টুঁ করলেই হুড়কো। মাওবাদী-নকশাল-আর্বান নকশাল-দেশদ্রোহী – যা প্রাণ চায় দেগে দেবো।
দোষ-গুণ নয়, প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরই আসল টার্গেট মশয়। তবে, সত্যিই কি তদ্দিনে আর ‘সরকারি’ অজুহাতটা দরকার হবে?
IISc-র ডিরেক্টরের উদ্দেশে লেখা খোলা চিঠির বয়ান:
“Prof. Govindan Rangarajan
Director
Indian Institute of Science, Bengaluru
Dear Prof. Rangarajan,
We are a group of scientists and academics. Our group includes members of IISc, alumni, and well-wishers of IISc from other institutions.
We are writing to express our dismay at the actions taken by the IISc administration to stop a discussion on the “Unlawful Activities Prevention Act, Prisons and the Criminal Justice System” that was to be led by Natasha Narwal and Devangana Kalita on 28 June.
We understand that this event was initially planned as a talk at the Centre for Continuing Education (CCE) that had been approved by the CCE chair. On 27 June, the Registrar of IISc abruptly canceled permission for the talk. This led the student organizers of the event to replace the talk with an informal interaction outside the Sarvam complex. At this point, the administration dispatched members of the security team to disperse this informal gathering. It was only after the intervention of members of the IISc faculty that the security team backtracked.
Natasha and Devangana are activists who participated in the movement against the Citizenship Amendment Act. In 2020, they were arrested under the UAPA and accused of being part of a “larger conspiracy” in the Delhi riots case. However, while releasing them on bail, the Delhi High Court noted that “in its anxiety to suppress dissent... the State has blurred the line between the constitutionally guaranteed ‘right to protest’ and ‘terrorist activity’. If such blurring gains traction, democracy would be in peril.” Their bail was recently upheld by the Supreme Court.
We believe that it is important for members of IISc to hear about Natasha and Devangana's experience and to reflect on the laws that were used to incarcerate them. Regardless of one’s perspective, such discussions are crucial in a functioning democracy, and IISc, as an academic institution, is ideally positioned to host them. Conversely, if the institute is unwilling to permit peaceful discussions on constitutional questions, it is hard to see how it can foster a spirit of critical inquiry that is necessary for scientific work.
The actions of the administration reflect poorly on its commitment to upholding academic freedom and democratic values. They have damaged IISc's reputation, both within the country and internationally. We hope that you will take urgent corrective measures and ensure that members of IISc remain free to express and discuss a range of ideas, both about science, and about the society that we live in.”