এই সাইটটি বার পঠিত
অবশেষে এসে পড়েছে গুরুর নিজস্ব ঠেক ও ঠিকানা - ১৫ বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট, কলেজ স্কোয়ার! ফোন/ হোয়াটসঅ্যাপঃ +৯১৯৩৩০৩০৮০৪৩
- হরিদাস পাল অন্যান্য
-
টক্সিক কর্মক্ষেত্র ও বার্গেইনিং পাওয়ার
সুদীপ্ত পাল লেখকের গ্রাহক হোন
অন্যান্য | ১১ জুন ২০২৩ | ১৩৪২ বার পঠিত - টক্সিক কর্মক্ষেত্র - শেষ অবধি আলোচনা হচ্ছে এই বিষয়ে, একটা ব্যাংকের ভাইরাল ভিডিওর দৌলতে। অনেকেই নিজের অতীত অভিজ্ঞতার কথা বলছেন। প্রশ্ন হল, এর প্রতিকার কী? একেকটা ইন্ডাস্ট্রির বাস্তবতা একেকরকম, প্রতিকারও একেকরকম। আমি যে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করি সেখানে কর্মীরা টক্সিক পরিবেশের প্রতিবাদ করে ইস্তফা দিয়ে। তার কারণ এটা হাই-গ্ৰোথ ইন্ডাস্ট্রি যেখানে প্রতি সপ্তাহেই নূতন নূতন ভেকেন্সি তৈরি হয়, তাই উপযুক্ত ট্যালেন্ট এবং ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম থাকলে নূতন চাকরি নিজে থেকেই এসে ডেকে নিয়ে যায়। সমস্যা তাদের হতে পারে যারা নূতন চাকরি পায় না, তবে খেয়াল রাখতে হবে ম্যানেজমেন্টের মাথায় যেহেতু সবসময়ই একটা চাপ থাকে- কে কখন সারপ্রাইজ দিয়ে ইস্তফা দেবে- তাই তারা চেষ্টা করে ভদ্রস্থ কর্মপরিবেশ রক্ষা করার।
এটা ছিল টেক ইন্ডাস্ট্রির কথা। ব্যাংকিং এখন খুব একটা হাই গ্ৰোথ ইন্ডাস্ট্রি নয়, তাই সেখানে ইস্তফা দিয়ে প্রতিবাদ মুশকিল ব্যাপার। ইস্তফার মাধ্যমে প্রতিবাদ হল একক প্রতিবাদ, নিঃশব্দ প্রতিবাদ। এর উল্টোটা হল সংঘবদ্ধ প্রতিবাদ। তাহলে সংঘবদ্ধ প্রতিবাদ মানে কি গণ-ইস্তফা? ইন্ডাস্ট্রির গ্ৰোথ ধীরগতিতে হলে গণপদত্যাগ মুশকিল ব্যাপার। আরেকটা সংঘবদ্ধ প্রতিবাদ হতে পারে ইউনিয়ন। সেখানেও সমস্যা। বেসরকারি ব্যাংকে ট্রেড ইউনিয়ন বৈধ হলেও, ভারতে সেটা খুব একটা কার্যকরী নয়। তার কারণ আছে। ভারতে ট্রেড ইউনিয়ন আসলে রাজনীতি করার একটা জায়গা। সেখানে লোকে প্রভাব খাটিয়ে নেতা হয়। ট্রেড ইউনিয়নে নির্বাচন হয়, কিন্তু ভারতে যেকোনো নির্বাচনেই জেতে হোমরা চোমরা লোকেরা। অতএব সেখানেও দেখবেন HDFCর ঐ বসের মতো লোকেরাই নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে নেতা হয়ে বসে আছে। এখানেই সফল ইউরোপীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে ভারতের পার্থক্য।
তাহলে আরেকটা সমাধান হতে পারে ম্যানেজার আর অ-ম্যানেজারদের ইউনিয়ন আলাদা রাখা। সেটা হয়ও। ব্যাংকিঙে AIBOC হল অফিসার ও ম্যানেজারদের ইউনিয়ন আর AIBEA অন্যদের। আর আধা-সরকারি ব্যাংকগুলোয় ইউনিয়নগুলো কিছুটা সফল হয়েছেও। কিন্তু বেসরকারি ব্যাংকগুলির মাত্র ২% কর্মী এই দুটি ইউনিয়নের সদস্য। অর্থাৎ কর্মীরা ইউনিয়ন জিনিসটার উপর ভরসা পায় না।
এই দুরকম ইউনিয়নের পদ্ধতিটাও সমস্যার। কারণ অ-ম্যানেজারদের ইউনিয়নে ভালো নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষমতা আছে এরকম লোক পাওয়া স্বাভাবিক ভাবেই মুশকিল। এছাড়া ইউরোপে ইউনিয়নগুলো যেরকম বিকেন্দ্রীভূতভাবে সংগঠিত ভারতে সেটা নয়। ভারতে ইউনিয়ন জিনিসটা একটা সমান্তরাল ব্যুরোক্রেসি।
বেসরকারি ব্যাংকিং সেক্টরে ইউনিয়নের কম প্রসারের একটা কারণ এটাই, আর অন্য একটা বড় কারণ হল ইউনিয়ন সমষ্টিগত বার্গেইনিংএ জোর দেয়, আর অন্যদিকে একটা হাই-গ্ৰোথ ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যক্তিগত বার্গেইনিং অনেক বেশি ফলপ্রসূ। বেসরকারি ব্যাংকিং দীর্ঘদিন হাই গ্ৰোথ ইন্ডাস্ট্রি ছিল, এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই তখন অধিকাংশ কর্মীর কাছেই ইউনিয়ন ব্যাপারটা আকর্ষণীয় ছিল না। যে কারণে আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে ইউনিয়ন আকর্ষণীয় নয়। তাই তামিলনাড়ু আর কর্ণাটকে আইটি ইউনিয়ন বৈধ হওয়া সত্ত্বেও সদস্যতা সামান্যই। ইউনিয়নের রাজনীতির পিছনে অহেতুক সময় ব্যয় না করে সেই সময়টা লেখাপড়া করে নূতন চাকরি জোগাড় করে নেয়াটা অনেক কাজের। এখানেই একক আর সংঘবদ্ধের দ্বন্দ্বটা দৃশ্যমান হয়।
তবে আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে দুতিনটে জিনিসের জন্য সমষ্টিগত বার্গেইনিং প্রয়োজন আছে। এক হচ্ছে ভারতে তিন মাসের নোটিশ পিরিয়ড বৈধ, আর দুই হচ্ছে ভারতে নন-পোচিং এগ্ৰিমেন্ট বৈধ অর্থাৎ যেখানে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি একে অপরের থেকে কর্মী নিয়োগ না করার জন্য এগ্ৰিমেন্ট করতে পারে। দুটি জিনিসই আমেরিকায় অবৈধ, কারণ এগুলো দাসপ্রথার পরিচায়ক আর প্রতিযোগিতা-বিরোধী। এগুলোকে অবৈধ করার জন্য ভারতে শ্রম আইনের পরিবর্তন দরকার আছে। এখানেও ইউনিয়ন কতখানি কার্যকরী হবে সেটা সন্দেহজনক। এছাড়া প্যাটার্নিটি লিভ আরেকটা বিষয় যেখানে সমষ্টিগত বার্গেইনিং কাজে দিতে পারে।
একটা বিষয়ের উদাহরণ দিচ্ছি যেখানে সমষ্টিগত বার্গেইনিং প্রয়োজন কিন্তু ইউনিয়নের মাধ্যমে অসম্ভব।সেটা হল কর্মক্ষেত্রে যৌন সংখ্যালঘুদের অধিকার সুনিশ্চিত করা। এটা ইউনিয়নের মাধ্যমে অসম্ভব কারণ ইউনিয়নের নেতৃত্ব ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়, ফলে ইউনিয়ন স্বাভাবিকভাবেই সংখ্যাগরিষ্ঠবাদী (majoritanist)। অতএব সংখ্যালঘুদের বার্গেইনিং পদ্ধতি সম্পূর্ণ আলাদা। এই বিষয়ে পুরোনো লেখা https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=25012 ।
ভারতের অনেক ইন্ডাস্ট্রিতেই শ্রমের জোগান শ্রমের চাহিদার চেয়ে বেশি, আর তার ফলে শ্রমের দাম আর শ্রমিকের দাম কমে যায়। দ্রুতগতিতে বর্ধমান শিল্পগুলোতে এর উল্টোটা হয় কারণ সেখানে নূতন নূতন কাজ তৈরি হয়, কিন্তু ভারতে এই মুহূর্তে এরকম দ্রুত বৃদ্ধি পাবার মতো ইন্ডাস্ট্রি খুব কম। ফলে কর্মীদের বার্গেইনিং পাওয়ার কমছে।একেকটা ইন্ডাস্ট্রিতে বার্গেইনিং একেকরকম। নির্ভর করে সেই ইন্ডাস্ট্রি কত দ্রুত বাড়ছে আর কতটা স্পেশালিস্ট শ্রমের প্রয়োজন তার উপর। এই বাস্তবতা গুলো মাথায় রেখে চলা প্রয়োজন।
এ তো গেল বার্গেইনিং পাওয়ারের কথা। এছাড়া অনেক ত্রুটি আছে ভারতের শ্রম আইনেও যার কয়েকটা আমরা আলোচনা করেছি।এছাড়া কিছু সমস্যা কিন্তু আমাদের সংস্কৃতিতেই আছে। ভারতের ভক্তিবাদী সংস্কৃতিতে। ভারতীয় কর্পোরেটের একটা বড় সমস্যা হল সেখানে নেতৃত্বগুণ (Leadership quality) বলতে আগ্ৰাসী মনোভাবকে বোঝায়। আমেরিকা ও ইউরোপ-কেন্দ্রিক একাধিক বহুজাতিক সংস্থায় সতেরো বছর কাজ এবং নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি- পাশ্চাত্যে গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বগুণের মধ্যে রাখা হচ্ছে - empathy, active listening এগুলোকে। অর্থাৎ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলার ক্ষমতা। এই পরিবর্তন অবশ্য গত এক-দুই দশকে হয়েছে। আর গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে adaptability, resilience- অর্থাৎ ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির জটিল ও অদৃষ্টপূর্ব পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষমতা। এই গুণগুলো অধিকাংশ দেসি কর্পোরেটের ম্যানেজারদের মধ্যে থাকে না। সেইজন্য তাদের আচরণ ওরকম উদগ্ৰ প্রকৃতির হয়। আমেরিকাতে সুন্দর পিচাই, স্যাম অল্টম্যান, টিম কুকের মতো স্বল্পবাক, অন্তর্মুখী ও মিতভাষী লোকেদের সিইও হতে দেখবেন, কিন্তু ভারতে কর্পোরেট লিডারদের অধিকাংশই বাকসর্বস্ব ও বাচাল স্বভাবের।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত। - আরও পড়ুনফাঁকি - Sukdeb Chatterjeeআরও পড়ুনদোষটা সময়ের - Samir Karmakarআরও পড়ুনবোতল ভূত! - কিংবদন্তিআরও পড়ুনপ্রসঙ্গ রাজনীতি - দীপআরও পড়ুনজিমি আর কলতান ৮ - Anjan Banerjeeআরও পড়ুনডাংকি! - কিংবদন্তিআরও পড়ুনকুকুর পাঁচালী - সমরেশ মুখার্জীআরও পড়ুনদিলদার নগর -৯ - Aditi Dasguptaআরও পড়ুনরুটিন - মোহাম্মদ কাজী মামুনআরও পড়ুনভয় - অমলেন্দু বিশ্বাসআরও পড়ুনবাড়ি বৃত্তান্ত - শক্তি দত্ত রায়
- মতামত দিন
-
বিষয়বস্তু*:
দীমু | 182.69.***.*** | ১২ জুন ২০২৩ ০১:১২520374- ভারতে ইউনিফর্ম নোটিস পিরিয়ড না থাকাটা একটা বড় সমস্যা। ইপিএফও তে একাউন্ট থাকলেই সবার নোটিস এক হওয়া উচিত। আর নন-পোচিং এগ্ৰিমেন্ট হয়ত কাগজে কলমে থাকলেও কাজের জায়গায় প্রয়োগ হতে দেখিনি , ওটা নিয়ে মনে হয় কোম্পানিরা তেমন মাথা ঘামায় না।
- Amit | 163.116.***.*** | ১২ জুন ২০২৩ ০৪:৫০520375
- ইন্ডিয়ার কোম্পানি গুলোর আর একটা সমস্যা হলো ম্যানেজার এর সংখ্যা অত্যধিক। বাইরের দেশে ম্যানেজমেন্ট স্ট্রাকচার অনেক লিন-সেই জন্যে রোল অনেক স্পেসিফিক। লোকে জানে তাকে কোন লেভেলে কি ডিসিশন নিতে হবে আর কোন লেভেলে ওপরে পাঠাতে হবে। ম্যানেজার এর আসল কাজটা যে নিজের নিজের লেভেলে ক্রিটিকাল বা এনালিটিক্যাল ডিসিশন মেকিং , মাইক্রো ম্যানেজমেন্ট নয় - সেটাই আদতে ইন্ডিয়ায় হতে দেখা যায়না। এখানে বেশির ভাগ ম্যানেজার এর রোল আসলে ওভারপেড পোস্ট-বক্স ছাড়া কিচ্ছু নয়। ওপর থেকে নিচে মেসেজ চালাচালি করে দেখানো যে আমিও আছি - ব্যাস। আর অদরকারি মাইক্রো-ম্যানেজমেন্ট। অবশ্য শুধু কর্পোরেট নয় , ইন্ডিয়ায় সবক্ষেত্রে এটাই দেখা যায়। রাজনৈতিক দলগুলো যেমন। ছোট থেকে ছোট ডিসিশন ও সেই এক হাই কম্যান্ড ই নেয়। বাকিরা শুধু সেটার ঢাক বাজায়। ম্যানেজার দের নিজের কাজ সম্মন্ধে টেকনিকাল ধারণা কম থাকায় আর সেটার জন্যে ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্স আর জব ইনসেক্যুরিটি থাকায় আরো বেশি করে এগ্রেশন দেখিয়ে সেগুলো ঢাকার চেষ্টা করে। আর বেড়াল যেমন নরম মাটি দেখলে আঁচড়ায় , তেমন ই সাবমিসিভ টীম মেম্বার্স দের ওপর আরো বেশি দেখায়। যারা সামনে পাল্টা গালাগাল দেয়, তাদের সাথে কিন্তু বেশি ডাইরেক্ট লাগতে সাহস করে না- তাদেরকে অন্যভাবে আড়ালে চুকলি কেটে পেছনে লাগার চেষ্টা করে।
- a | 14.2.***.*** | ১২ জুন ২০২৩ ০৭:৫০520377
- অমিতবাবু, সেই সমস্যা এদেশেও আছে। কার্যকারণ সম্পর্কগুলো খুব আলাদাও নয়। ভারতে পারিবারিক ব্যাব্সা বেশি - যাকে বলে লালা কম্পানি - আর ভারত কালচারাল স্কেলে টপ ড্রিভেন বাই নেচার। এই সব ব্যাভার তারই প্রতিফলন।যেটা হাস্যকর আর আশ্চর্যের যে এই জাতীয় কালচার খুব নতুন নয় বা অশ্রুতপূর্ব নয়। আর এটা শুধু পশ্চিমবঙ্গের সমস্যা নয়। আমি ২০০৯ সালে খুব কাছের বন্ধুদের কাছ থেকে এরকম বহু গল্প শুনেছি, বেঙ্গালুরুতে। আর এটা কমন নলেজ যে সেই অবস্থা ক্রমশ খারাপ i হয়েছে যেমন যেমন প্রতিযোগিতা আর টার্গেট বেড়েছে।
- Amit | 163.116.***.*** | ১২ জুন ২০২৩ ০৭:৫৮520378
- হ্যা - ওভারঅল ইন্ডিয়া ম্যানেজমেন্ট কালচার র কথাই বলছিলাম । এইটা শুধু পব র সমস্যা নয়।
-
যোষিতা | ১২ জুন ২০২৩ ০৯:৩৭520379
- কোলকাতার আইটি সেক্টরে কিন্তু অনেকেই এই টক্সিসিটিতে বেশ তৃপ্ত। তাদের এরকমই ভাল লাগে। সারাদিন সারাসন্ধে কন্টিনিউয়াসলি কাজ করে যায়। সবাই ম্যানেজার। কে কাকে ম্যানেজ করছে বোঝা দায়।
- এক্স-ব্যাঙ্কার | 2601:5c0:c280:d900:7c4a:94a6:8046:***:*** | ১২ জুন ২০২৩ ১০:৩৬520381
- খুব ভালো লিখেছো। একদম অন পয়েন্টঃ
> "ভারতে কর্পোরেট লিডারদের অধিকাংশই বাকসর্বস্ব ও বাচাল স্বভাবের।"
আমার সামান্য কর্পোরেটে (ব্যাঙ্কে) কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে এইটা একেবারে হাড়ে-হাড়ে জানি। ঐ অত অ্যাগ্রেসিভ না হলে এই লাইনে একেবারে চূড়ান্ত অ্যাবিউজড হবো বুঝে জাস্ট ছেড়ে পালিয়েছিলাম।
আর একটু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও যোগ করি যে কিছুদিন ব্যাঙ্কের চাকরির সময়েই সেলস ডিপার্ট্মেন্টে রোটেশনের সূত্রে দিল্লীতে একটা কল সেন্টারে একমাস যেতাম প্রায় রোজ। আমাকে কেন খামখা সেলসে পাঠানো হয়েছিল সে অবশ্য জানি না, আমার কাজ বলতে দেখা কোথায় কি হচ্ছে - কোনোভাবে কিছু উন্নতি করা যায় কি না, টার্ন-অ্যারাউণ্ড ইত্যাদি। তা সেখানে যা জঘন্য গালিগালাজ আর অত্যাচার দেখেছি যা বলে বোঝানোর নয়।একটা হলঘরে সারি-সারি প্লাস্টিকের চেয়ার-টেবিল আর ল্যাণ্ডলাইন রাখা পাশাপাশি - তা প্রায় জনা তিরিশেক কল-সেন্টারের কর্মী - অধিকাংশ মহিলা*। ঢোকার মুখে একটা খুপরিতে চাবুক-হস্ত ম্যানেজার মদন (সত্যিকারের নাম) আর ঘরের বাইরে ছাদের উপর পাশাপাশি একটা জলের জায়গা আর দুটো বাথরুম। সকাল-সকাল ভোডাফোন বা অন্যান্য জুয়েলারী বা বড়ো ব্যবসা থেকে কাস্টমারদের ফোন-নাম্বারের লিস্ট আসে, সবার হাতে একটা একটা করে ধরানো হয়। যাদের নাম্বার তারা অবভিয়াসলি জানেন না যে নাম্বারের লিস্ট ব্যাঙ্কের কাছে বেচা হয়। এবার এই কল-সেন্টারের কর্মীদের কাজ সারাদিন এই-ওই লিস্ট দেখে লাগাতার পোটেনশিয়াল কাস্টমারদের ফোন করো আর অকথ্য গালাগালি খাও (দিল্লীর, বিশেষ করে ঐ গুরগাঁওএর দিকের লোকের তো ব্যাভার-ই আলাদা, সে মানে ফোন ধরেই বলে বেঞ্চো নাম্বার কেইসে মিলা?), আর তারপর টার্গেট না মিটলে ছুটকো ম্যানেজারের খিস্তি আর চাকরি-কাট। যা হোক করে মাসে তিরিশটা কার্ড না বেচলেই চাক্রি-নট। রোজ-ই দেখতাম পাশের বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলো কার্ড অ্যাপ্লিকেশন বেচার আশায় যা পারে তাই মিথ্যে বলেই চলেছে আর রোজ, রোজ ডেস্কে মাথা গুঁজে কাঁদছে। কেউ কেউ ফোনেই কেঁদে ফেলে। ঐ হেল-হোল থেকে পালানোর কোনো উপায় দেখিনি।
সে অবশ্য ২০০৮ সাল। এখন কি অবস্থা কে জানে? এর থেকে খারাপ বই ভালো বলে তো মনে হয় না।
-
amitkumar pal | ২২ জুন ২০২৩ ২৩:১১520646
- একদম। দীর্ঘ ৩০ বছর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করার জন্যে দেখেছি যে যত নিচের কর্মচারিদের গালাগালি করতে পারবে সে তত তাড়াতাড়ি উপরে উঠবে। তাকে ভালো ম্যানেজার বলে স্বীকার করা হয়।
- মতামত দিন
-
বিষয়বস্তু*:
-
গুরুচণ্ডা৯-র গ্রাহক হোন
কোনোরকম কর্পোরেট ফান্ডিং ছাড়া সম্পূর্ণরূপে জনতার শ্রম ও অর্থে পরিচালিত এই নন-প্রফিট এবং স্বাধীন উদ্যোগটিকে বাঁচিয়ে রাখতে গুরুচণ্ডা৯-র গ্রাহক হোন।
- ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
এই সাইটটি
বার পঠিত
- বুলবুলভাজা : সর্বশেষ লেখাগুলি
হাঙ্গেরি দুই : হীরেন সিংহরায়(লিখছেন... Ranjan Roy, রমিত চট্টোপাধ্যায়, হীরেন সিংহরায়)
অন্য দেশের পাখি - ১৯,২০ : শেখরনাথ মুখোপাধ্যায়(লিখছেন... )
কাদামাটির হাফলাইফ - ইট পাথরের জীবন : ইমানুল হক(লিখছেন... )
বিপ্লবের আগুন - পর্ব বত্রিশ : কিশোর ঘোষাল(লিখছেন... )
ক্যালিডোস্কোপে দেখা - আলো-আঁধার : অমিতাভ চক্রবর্ত্তী(লিখছেন... রমিত চট্টোপাধ্যায়, অমিতাভ চক্রবর্ত্তী, অমিতাভ চক্রবর্ত্তী)
- হরিদাস পালেরা : যাঁরা সম্প্রতি লিখেছেন
আসুন এবার অন্তত কলাগাছকে কলাগাছ আর বেগুনকে বেগুন বলে ডাকি : সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়(লিখছেন... dc, dc, dc)
বিচার ব্যবস্থা বনাম সংবিধানের আত্মা : Barnali Mukherji(লিখছেন... )
হেলেনা নর্বার্গ-হজ, সোনম ওয়াংচুক এবং লাদাখের পরিবেশ : দ(লিখছেন... পাপাঙ্গুল, দ, ar)
দিলদার নগর -৯ : Aditi Dasgupta(লিখছেন... পাপাঙ্গুল, Santosh Kumar Pal, Aditi Dasgupta)
ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ (৫) : Ranjan Roy(লিখছেন... বিশ্বজিত বন্দ্যোপাধ্যায়।, Ranjan Roy, Nirmalya Nag)
- টইপত্তর : সর্বশেষ লেখাগুলি
বাংলাদেশ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় : দীপ(লিখছেন... )
বাংলাদেশ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় : দীপ(লিখছেন... দীপ)
একটি দুর্ঘটনা ও কিছু কথা : দীপ(লিখছেন... )
এবার ঝাড়গ্রামে চিকিৎসকের আত্মহত্যা : দীপ(লিখছেন... )
কবি ও সন্ন্যাসীর দৃষ্টিতে শক্তিতত্ত্ব : দীপ(লিখছেন... )
- কি, কেন, ইত্যাদি
- বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
- আমাদের কথা
- আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
- বুলবুলভাজা
- এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
- হরিদাস পালেরা
- এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
- টইপত্তর
- নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
- ভাটিয়া৯
- যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
- টইপত্তর, ভাটিয়া৯, হরিদাস পাল(ব্লগ) এবং খেরোর খাতার লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব, গুরুচণ্ডা৯র কোন দায়িত্ব নেই। | ♦ : পঠিত সংখ্যাটি ১৩ই জানুয়ারি ২০২০ থেকে, লেখাটি যদি তার আগে লেখা হয়ে থাকে তাহলে এই সংখ্যাটি সঠিক পরিমাপ নয়। এই বিভ্রান্তির জন্য আমরা দুঃখিত।
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক।
অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি।
যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।
মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি
বার পঠিত