লেট আস এগ্রি টু ডিসেগ্রি। ম্যানিফেস্টো বেশি জোর দিয়েছে হিস্টোরিক্যাল মেটেরিয়ালিজমে। তাতে প্রত্যেকটি স্তরে পরিবর্তনের চালিকা শক্তি হচ্ছে বিকশিত উৎপাদন শক্তির (পদ্ধতির) সঙ্গে সামাজিক মানুষের যে উৎপাদন সম্পর্ক তার সামঞ্জস্য হারিয়ে বেখাপ্পা হয়ে যাওয়ার দ্বন্দ্ব।
এটি ছিল কমিউনিস্ট লীগের জন্যে তৈরি একটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু কিঞ্চিৎ সরলীকৃত ব্যাখ্যা। পরে
ক্যাপিটালে, পুঁজিবাদী উৎপাদনের ক্রাইসিস নিয়ে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে তাতে তিন রকম সংকটের কথা বলা হয়েছে।
১ অতি উৎপাদন, ২ আন্ডার কন্সাম্পশন এবং ৩ ক্রমশঃ পুঁজির ভার্টিকাল কেন্দ্রীকরণের ফলে সমাজের স্পষ্ট পোলারাইজেশন।
একদিকে মুষ্টিমেয় লোকের হাতে সমাজের উৎপাদন শক্তি করায়ত্ত, অন্যদিকে বিশাল আনেমপ্লয়েড লেবার ফোর্স। মাঝখানে মধ্যবিত্ত শ্রেণী বা পাতিবুর্জোয়ার অবলুপ্তি। কারণ ওদের বিশাল অংশ ক্রমশঃ দরিদ্র হয়ে প্রলেতারিয়েতের ভীড় বাড়াবে। ক্ষুদ্র অংশ ওপরে উঠে হাতেগোণা পুঁজিপতিদের শিবিরে যাবে।
অতি উৎপাদনের সংকট উন্নত দেশগুলির ট্রেড সাইকেলে বেশ কয়েক বার এসেছে। তাতে বিপ্লবের সম্ভাবনা এতটুকু এগোয় নি।
কিন্তু আজ একুশে শতাব্দীতে মার্ক্সের ম্যানিফেস্টর ভবিষ্যদ্বাণী কতটুকু বাস্তবায়িত?
যেমন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল লেবার ফোর্স বাড়ছে না কমছে?
১উৎপাদন শক্তি এমন পর্যায়ে গেছে যে উন্নত দেশে এবং আমাদের দেশেও ইন্ডাস্ট্রিয়াল লেবারের ঘরে টিভি এবং মোপেড ও মোবাইল রয়েছে। যদিও তাদের কাজের সময় আট ঘন্টার জায়গায় বারো ঘন্টা হয়ে যাচ্ছে এবং রেট অফ এক্সপ্লয়টেশন কয়েকশো গুণ বেড়েছে।
২ মধ্যবিত্ত শ্রেণী হাপিস হয়নি। উলটে লেবারের থেকে বেশ কিছু মধ্যবিত্তে উন্নীত হয়েছে। সোশ্যাল ডেমোক্র্যাসি বেশ কিছু দেশে শ্রমিকের জীবনমান এবং জীবনযাত্রায় গণতান্ত্রিক অধিকারের ক্ষেত্র বিস্তৃত হয়েছে।
৩ শ্রমিক শ্রেণীর ইউনিয়নের সংগঠন মূলতঃ ফর্মাল সন্ডাস্ট্রিয়াল লেবারের মধ্যেই সীমিত রয়েছে। বিশাল ইনফরম্যাল সেক্টরের লেবার ফোর্স ইউনিয়নের চোখে অবহেলিত রয়ে গেছে।
৪ উন্নত দেশে শ্রমিক আন্দোলন আর্থিক দাবি দাওয়াতেই সীমিত।
৫ মার্ক্সের মতে উৎপাদন ব্যবস্থার দ্বন্দ্বহল পরিবর্তনের নেসাসারি কন্ডিশন। সাফিশিয়েন্ট কন্ডিশন হল পরিবর্তনের মতাদর্শগত চেতনা সম্পন্ন শ্রমিক শ্রেণীর নেতৃত্ব।
এটি আজ কোথাও নেই। চিনের কথা ছেড়েই দিলাম। যেখানে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স ক্যাপিটাল গঠন করেন এবং পার্রট ও রাষ্ট্রপ্রধান একই ব্যক্তি । তারপর আজীবন ক্ষমতায় থাকার উদ্দেশ্যে সংবিধান সংশোধন!