“লে গয়ি দিল গুড়িয়া জাপান কি”- জাপানী পুতুলের মনোমোহিনী রূপের প্রেমে পড়বে না এমন মানুষ নেই বললেই চলে। যদিও জাপান ছাড়াও বিভিন্ন দেশে পুতুল শিল্প একটি অতি সমৃদ্ধ শিল্প তবুও পুতুল সাধারণভাবে ঘর-সাজানর সামগ্রী বা ছোটদের (প্রধানত ছোট মেয়েদের) খেলনা রূপেই আমরা দেখে থাকি। কিন্তু, পুতুলকে নিজেদের জীবনের সাথে প্রকৃত অর্থেই জড়িয়ে নিয়ে তাকে লৌকিক আচারের অঙ্গ করে শতাব্দী-প্রাচীন কাল থেকে ফি-বছর তাকে বিভিন্ন উৎসবে সসম্মানে ভক্তি-শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাপানের অধিবাসীরা।
উৎসবের দেশ জাপানের পাঁচটি ঋতু-কেন্দ্রিক উৎসবের অন্যতম দুটি হল পুতুল-কেন্দ্রিক। পুতুল উৎসবের একটি ৩রা মার্চ অনুষ্ঠিত “হিনা মাৎসুরি”। এর অন্য নাম “বালিকা-উৎসব”। অন্যটি হল ৫ই মে অনুষ্ঠেয় “তানগো-নো-সেক্কু” বা “বালক-উৎসব”। জাপানের অন্যান্য উৎসবের মত এই পুতুল উৎসব দুটিরও শুরু বহুযুগ আগেই। তবে নিঃসন্দেহেই বলা যেতে পারে যে, নানা পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের পথ পেরিয়ে বর্তমানের উৎসব অন্যরূপে প্রতীয়মান।
কিন্তু বালিকা উৎসব বা পুতুল উৎসবের অথবা বালক উৎসবের বিস্তারিত বর্ণনা দেবার আগে জাপানের লৌকিক সংস্কৃতিতে এই পুতুলের উৎস সম্বন্ধে কিছু কথা:
এই যে জাপানী জীবনে পুতুলের একাত্মতা, তার ইতিহাস সেই জোমোন যুগ (আনুমানিক ১০,০০০ খৃষ্টপূর্বাব্দ থেকে ৩০০ খৃষ্টপূর্বাব্দ) থেকে চলে আসছে। সেই প্রাচীন কালে জাপানে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম হিসাবে মান্যতা পেত প্রকৃতি-পূজা। এই প্রকৃতি পূজার অন্যতম উপকরণ ছিল “দোগু” নামের এক কিম্ভুত আকৃতি ছোট্ট ছোট্ট পুতলি (ছবি-১)।