এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  সমাজ

  • এস ওয়াজেদ আলি ও বিশ শতকের উত্তরাধিকার

    gautam roy লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | সমাজ | ১০ জুন ২০২১ | ২৫৫৩ বার পঠিত
  • বাংলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য পরিসরের প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব এস ওয়াজেদ আলী হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মহকুমার জনাইয়ের কাছাকাছি বড় তাজপুর গ্রামে ১৮৯০ সালের ৪ঠা সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ওয়াজেদ আলীর পিতা শেখ বেলায়েত আলীর জন্ম ও এই গ্রামে। তাঁর মায়ের নাম ছিল খোদিজা বেগম।

    ওয়াজেদ আলীর পিতামহ শেখ জামাতউল্লাহ অষ্টাদশ শতকের সামাজিক প্রেক্ষিতে ছিলেন এক ব্যতিক্রমী পুরুষ। যে সময় বাঙালি মুসলমানকে ভাগ্যান্বেষণে ভিনদেশ মুখী হতে প্রায় দেখাই যেতো না, সেই সময়ে জামাতউল্লাহ হুগলি থেকে প্রথমে মুর্শিদাবাদ, সেখান থেকে গোয়ালন্দ, আবার সেখান থেকে সুরমা নদীর তীরে শ্রীহট্টে গিয়ে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা লাভ করেন।

    হুগলির চন্ডীতলার নবাবপুরে ছিল ওয়াজেদ আলীর মামার বাড়ি। তাঁর মাতামহ মুঙ্গের থেকে জায়গীর নিয়ে এসেছিলেন নবাবপুরে। বিয়ে করেছিলেন স্থানীয় বাঙালি পরিবারে। ধর্মীয় বিধিবিধানের পাশাপাশি সমন্বয়ী চেতনাসমৃদ্ধ পারিবারিক পরিবেশে ওয়াজেদ আলীর শৈশব কেটেছিল। ওয়াজেদ আলীর পিতার শৈশবকালে জনাই অঞ্চলের সামাজিক পরিবেশে এতটাই মুসলিম-বিদ্বেষ বলবান ছিল যে, তিনি শেষ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের কারণে বড় তাজপুরের পাশে জনাই হাইস্কুলে ভর্তি পর্যন্ত হতে পারেননি সেকালে।

    ওয়াজেদ আলীর শিক্ষা শুরু হয়েছিল বড় তাজপুরের পাঠশালাতে। সেই সময়ের গ্রাম্য প্রথা অনুযায়ী মাত্র ৭ বছর বয়সে তাঁর বিবাহ হয়েছিল। পরবর্তীতে তিনি শিলংয়ে চলে আসেন এবং পিতার তত্ত্বাবধানে শুরু হয় তাঁর আধুনিক শিক্ষা গ্রহণ। শিলংয়ের মোখার হাইস্কুলে তার ছাত্র জীবনের বনিয়াদ তৈরি হয়েছিল। সেই স্কুলটি তখন ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত। সেখান থেকে তিনি এন্ট্রান্স পরীক্ষায় স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন।

    এই সময়কালে স্মৃতিচারণ করে ওয়াজেদ আলী পরবর্তীকালে লিখেছেন:

    "আমার জন্ম বাংলাদেশে কিন্তু আসাম প্রদেশ কে আমার স্নেহময়ী ধাত্রী বললে কিছু অতিশয়োক্তি হবে না। আমি বাল্যকালে আসাম দেশে এসেছিলুম। আর এই শিলং শহরেই আমার বাল্য এবং কৈশোর জীবন অতিবাহিত হয়েছে। ..... ব্যক্তিগতভাবে আমি বলতে পারি, আমার জীবনের সমস্ত প্রেরণার, সমস্ত আদর্শের অঙ্কুর এই আসাম দেশেই হয়েছে। বঙ্গ ভাষার প্রতি আমার অনুরাগ এই আসাম দেশে প্রথম উপ্ত হয়েছিল। আমি আমার মাতৃভূমি বাংলা এবং ধাত্রী ভূমি আসামকে এক অখণ্ড দেশ হিসেবেই আজীবন দেখে এসেছি" (সাহিত্যের লক্ষ্য, সাওগাত, বৈশাখ, ১৩৫২, পৃ- ২৪৬-২৫১)।

    উচ্চশিক্ষার জন্য ওয়াজেদ আলী আলীগড় এম এ ও কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে কৃতী ছাত্র হিসেবে তাঁর যথেষ্ট খ্যাতি ছিল। ১৯০৮ সালে তিনি এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আই এ এবং ১৯১০ সালে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি এ পাস করেন। এটা খুব বিস্ময়ের ব্যাপার যে আলীগড়ের অবাঙালি পরিবেশ, উর্দুভাষীদের আধিপত্য এবং তাঁদের সংস্কৃতির প্রতি পারিপার্শ্বিকতার আকর্ষণ -- এই সবকিছুকে অতিক্রম করে, সেই সময় কাল থেকেই বাংলা ভাষা, বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি এস ওয়াজেদ আলী এক গভীর অনুরাগ নিজের উপলব্ধিতে এনেছিলেন। বাংলা ভাষাকে তিনি তখনো যথেষ্ট দক্ষ নন, এই মানসিক যন্ত্রণা এই সময়কালে তাঁকে যথেষ্ট পীড়িত করতো]।

    বিএ পাশ করার পরে নিজের গ্রাম বড় তাজপুরে ফিরে এসে, বাংলার গ্রামীণ পরিবেশ, সমন্বয়ী সংস্কৃতির নানা ধারা, বিশেষ করে কীর্তনকে ঘিরে গ্রামীণ সামাজিক পটভূমিকার যে বহিরঙ্গ, তা এস ওয়াজেদ আলী কে গভীরভাবে নাড়া দেয়।

    এরপর তিনি উচ্চশিক্ষার্থে লন্ডনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে বিএ এবং বার-অ্যাট-ল ডিগ্রি পান। লন্ডনপ্রবাসেই তিনি দ্বিতীয়বার বিবাহ করেছিলেন। এই সময়কালে তিনি গুরুতর ভাবে পিড়ীত হন এবং প্রায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। সেই সময় তাঁকে সাহায্য করেছিল ব্রিস্টলের মেয়ে মিস মিলি। তাঁকেই তিনি পরবর্তীকালে বিবাহ করেছিলেন।

    ১৯১৫ সালে দেশে ফিরে আসার পর তাঁর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদও ঘটে যায় ওয়াজেদ আলির। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদের প্রসঙ্গে তাঁর বাবার সঙ্গে তাঁর কিছুটা মনান্তর হয়েছিল। ১৯১৫ সাল থেকে ১৯২২ সাল, এই আট বছর আইন ব্যবসায় এস ওয়াজেদ আলী অত্যন্ত সুনাম অর্জন করেন। এই সময় কালেই সাহিত্যিক পরিমন্ডলের সঙ্গে তাঁর গভীর সংযোগ তৈরি হয়।

    এই সংযোগ তৈরির তাঁর যে বন্ধুমন্ডল তৈরি হয়, সেখানে উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল প্রমথ চৌধুরী, এস খোদাবক্স এবং সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়ের। ওয়াজেদ আলী নিজেই লিখছেন:

    "বঙ্গভাষার বিখ্যাত সাহিত্যিক, সবুজপত্র সম্পাদক, বন্ধুবর শ্রীযুক্ত প্রমথ চৌধুরী মহাশয়ের উপদেশেই আমি প্রথম বাংলায় লিখতে আরম্ভ করি। আমার সাহিত্যিক জীবনের প্রারম্ভে তাঁর উপদেশ ও উৎসাহ না পেলে হয়তো বাংলা সাহিত্যের জনতা বহুল আসরে কখনও নামতুম না" (দিবাচা। 'গুল দাস্তা' র অন্তর্গত। ১৩৩৪ বঙ্গাব্দে কলকাতা থেকে প্রথম প্রকাশিত। মোহাম্মদ শামসুদ্দিন এই গ্রন্থটির মুদ্রক ও প্রকাশক ছিলেন)

    'সওগাত' পত্রিকার ১৩৩৩ বঙ্গাব্দের বার্ষিক সংখ্যায় এস ওয়াজেদ আলী সম্পর্কে প্রমথ চৌধুরী স্বয়ং লিখেছিলেন:

    "তাঁহার রচনা সবুজপত্র, বঙ্গবাণী ,ভারতী, সওগাত, সাহিত্যিক প্রভৃতি পত্রিকায় প্রকাশিত হইয়া থাকে। এতদ্ব্যতীত তিনি ইংরেজি রচনায় সিদ্ধহস্ত। ক্যালকাটা রিভিউ পত্রিকায় pathshala নামক তাঁহার একটি উৎকৃষ্ট ইংরেজি রচনা প্রকাশিত হইয়াছিল। গত বৎসর তিনি বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির সভাপতি পদে বারিত হইয়াছিলেন এবং বর্তমান বর্ষেও উক্ত পদে অধিষ্ঠিত আছেন। তাঁহার বাংলা রচনা প্রশংসার্হ।"

    এই সময়কালে (১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে) এস ওয়াজেদ আলী কলকাতা প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিযুক্ত হন। এই নতুন চাকরির কালে সাহিত্যকর্মে নিজেকে সম্পুর্ণভাবে সঁপে দিয়েছিলেন ওয়াজেদ আলী।

    ১৯১৯ সালে 'সবুজপত্রে' তাঁর প্রথম বাংলা প্রবন্ধ 'অতীতের বোঝা' প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে 'ইসলাম দর্শনে' তাঁর প্রথম ছোটগল্প 'রাজা' প্রকাশিত হয়। ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। এই সংগঠনের সঙ্গে মুজফফর আহমেদের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

    সেই বছরেই বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির পঞ্চম বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতির দায়িত্ব তিনি পালন করেছিলেন এবং অভিভাষণ ও পাঠ করেছিলেন ওয়াজেদ আলি। পরের বছর, অর্থাৎ ১৯২৬ সালে, বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির সাধারণ সভায় অংশগ্রহণ করে 'তরুণের কাজ' নামক এক অসামান্য প্রবন্ধ তিনি পাঠ করেছিলেন।

    সেই বছর তিনি বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির সভাপতি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন তিনি। ১৯২৭ সালে অবশ্য বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির সভাপতির পদ থেকে নিজেকে ওয়াজেদ আলি সরিয়ে নেন। ১৯২৮ সালের এপ্রিল মাসে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির চতুর্থ অধিবেশন, যেটি অবিভক্ত চব্বিশ পরগনার বসিরহাটে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেখানে তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং প্রবন্ধ পাঠ করেন।

    ১৯২৯ সালের ডিসেম্বর মাসে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির পক্ষ থেকে, মূলত মুজফফর আহমেদের প্রচেষ্টায়, কলকাতার আলবার্ট হলে (বর্তমান কফি হাউসে) কাজী নজরুলের জাতীয় সংবর্ধনার জন্য যে কমিটি তৈরি হয়েছিল, সেই কমিটির সভাপতির দায়িত্ব এস ওয়াজেদ আলী পালন করেছিলেন। সংশ্লিষ্ট সম্বর্ধনা সভায় অভিনন্দনপত্রটিও তিনি পাঠ করেছিলেন।

    সেই মাসেই আসাম মুসলিম ছাত্র সমিতির সাহিত্যিক সম্মেলনের সভাপতি হিসেবে তিনি যোগদান করেছিলেন। ১৯৩০ সালে নোয়াখালী মুসলিম ইনস্টিটিউটের বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতি হিসেবে তিনি যোগদান করেন এবং একটি লিখিত ভাষণ পাঠ করেন। ১৯৩২ সাল এস ওয়াজেদ আলী এবং বাংলার সামাজিক আন্দোলনের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই বছরের ডিসেম্বর মাসে ওয়াজেদ আলী প্রচেষ্টায় হিন্দু-মুসলমানের মিলনের অগ্রদূত সচিত্র মাসিক পত্রিকা 'গুলিস্তাঁ' প্রকাশিত হয়।

    এই পত্রিকা প্রকাশ ছিল ওয়াজেদ আলীর জীবনের এক কর্মময় অধ্যায়। 'গুলিস্তাঁ' পত্রিকাকে কেন্দ্র করে তিনি গড়ে তুলেছিলেন একটি সমন্বয়ী চেতনায় বিশ্বাসী, সম্প্রীতির চেতনায় বিশ্বাসী, ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে অধিষ্ঠিত সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল। পত্রিকাটির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন অবিভক্ত বাংলার প্রাক্তন মন্ত্রী খান বাহাদুর হাশেম আলী খান। মুসলিম সাহিত্য সমাজের মুখপাত্র 'শিখা'-র মতোই এই 'গুলিস্তা'-র মুখপত্রের প্রচ্ছদে লেখা থাকতো, "হিন্দু মুসলমানের মিলনের অগ্রদূত" শব্দবন্ধ।

    এই পত্রিকার লেখকের তালিকায় ছিলেন কাজী নজরুল, বিজ্ঞানী কুদরত ঈ খুদা, ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, কাজী আবদুল ওদুদ, মুজফফর আহমেদ, কেদারনাথ চট্টপাধ্যায় (প্রবাসী পত্রিকার ), তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রমথনাথ বিশী, অন্নদাশঙ্কর রায়, বুদ্ধদেব বসু, সজনীকান্ত দাস, কবিশেখর কালিদাস রায়, বারীন্দ্রনাথ ঘোষ, পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়, কবি কাদের নেওয়াজ, কবি নির্মল দাস, অনুরূপা দেবী, প্রভাবতী দেবী সরস্বতী, ইন্দিরা দেবী, মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়, এ কে জয়নুল আবেদিন (নবযুগ পত্রিকার), হুমায়ুন কবির, খান মইনুদ্দিন জুলফিকার হায়দার, ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রথম যুগের অন্যতম সৈনিক আবদুল ল আজিজ, ভারতবর্ষ পত্রিকার সম্পাদক ফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, ধীরাজ ভট্টাচার্য, রাধামোহন চৌধুরী (প্রবর্তক পত্রিকার সম্পাদক), বিশ্বনাথ রায় (জনসেবা পত্রিকার সম্পাদক), সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়, আব্বাসউদ্দিন আহমেদ সহ আরও বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি।

    এই পত্রিকার 'নারী জগৎ' বিভাগ পরিচালনা করতেন অনুরূপা দেবী। অনেকেরই হয়তো জানা নেই, চলচ্চিত্রাভিনেতা ছবি বিশ্বাস এস ওয়াজেদ আলীর 'গুলিস্তা' পত্রিকায় চলচ্চিত্র সংক্রান্ত বিভাগ 'ছায়ার মায়া' পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। তাঁকে সহযোগিতা করতেন আব্বাসউদ্দিন আহমেদ এবং বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র।
    ঘোষিত ভাবে এই পত্রিকার দর্শন হিসেবে বলা হত: বাংলার জয় হোক এবং হিন্দু-মুসলমানের ঐক্যে ভিতর দিয়া স্বাধীনতাই আমাদের কাম্য।

    ১৯৪৪ সালের ভারতবর্ষের রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে এই পত্রিকার চতুর্থ বার্ষিক উৎসব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। সেই সভায় এস ওয়াজেদ আলী বলেছিলেন: "হিন্দু-মুসলমান এই উভয়কে লইয়াই বাঙালি জাতি, বাঙালিকে শক্তিশালী জাতি হিসেবে গড়িতে হইলে বাংলা কৃষ্টির উন্নতি, অর্থনৈতিক উন্নতি, শিল্পের উন্নতি করতে হইলে হিন্দু-মুসলমানের মিলন চাই। তাহা না হইলে সমগ্রভাবে জাতির উন্নতি সম্ভব নয়। হিন্দু-মুসলমান সাহিত্যের মধ্য দিয়ে দিতে পারে, গুলিস্তাঁ এর ই জন্যে প্রতিষ্ঠিত।" (গুলিস্তাঁ, অগ্রহায়ণ, ১৩৫১)

    সেই অধিবেশনেই কবি কাদের নওয়াজ বলেছিলেন :
    "গুলিস্তাঁ খাঁটি বাঙালির বাংলা মাসিক পত্রিকা; গুলিস্তাঁ তথাকথিত বাংলা উর্দু ভাষাযর প্রচলনের বিরুদ্ধে বলিয়াই আমরা গুলিস্তাঁর গুনগ্রাহী।"

    "আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হিন্দু-মুসলমানের মিলন এবং একমাত্র লক্ষ্য বৃহত্তর এক সম্মিলিত জাতির সৃষ্টি, 'বাংলার জয় হউক' এই আমাদের বাসনা", বলেছিলেন মিঃ সিদ্দিক।

    ১৯৪৪ সালের ডিসেম্বরে এই পত্রিকা আয়োজিত সাহিত্য সভায় এ কে ফজলুল হক অংশ নিয়েছিলেন। সেই অধিবেশনে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র 'যেতে নাহি দিব' এবং প্রবোধ কুমার সান্যাল 'শ্মশান' নামক কবিতা আবৃত্তি করে এক অসাধারণ সম্প্রীতির পরিবেশ রচনা করেছিলেন।

    তাছাড়াও আব্বাসউদ্দিন আহমেদ, কালিদাস চক্রবর্তী, কালিদাস রায়, দীপালি গুপ্ত, বেদারউদ্দিন প্রমূখ গান গেয়েছিলেন। স্নেহলতা চক্রবর্তীর বাঁশি বাজিয়েছিলেন। ফজলুল হক ছাড়াও খান বাহাদুর হাসেম আলী খান, মৌলানা তফেল আহমদ চৌধুরি, অধ্যাপক বিনয় সরকার, প্রমথনাথ বিশী, হরিচরণ ঘোষ, প্রবাসী পত্রিকার তৎকালীন সম্পাদক কেদারনাথ চট্টোপাধ্যায়, ভগ্নদূত পত্রিকার সম্পাদক শিশির কুমার বসু, প্রবর্তক পত্রিকার রাধারমন চৌধুরী, প্রত্যহ ও পরাগ পত্রিকার ডাক্তার অজিত শঙ্কর দে, স্বপনবুড়ো - অখিল নিয়োগী, নবযুগ পত্রিকার পক্ষে নুরুল ইসলাম খান মৌলভী মিজানুর রহমান, কবি কাদের নেওয়াজ, কবি হাতেম আলী নওরোজি, এস সিদ্দিকী, অনিল দেব প্রমূখ সেই অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

    ওয়াজেদ আলীর 'মাশুকের দরবার' গ্রন্থটি প্রকাশ হয় ১৩৩৭ বঙ্গাব্দে (১৯৩০ সালের সেপ্টেম্বরে)। এই গ্রন্থেই তাঁর বিখ্যাত 'ভারতবর্ষ' গল্পটি রয়েছে। গ্রন্থটির প্রকাশকালে গ্রন্থটির সঙ্গে সংযুক্ত ছিল ওয়াজেদ আলীর বন্ধু সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় লেখা একটি পরিচয় পর্ব। সেখানে এই গল্পটি সম্বন্ধে সৌরীন্দ্রমোহন লিখছেন :

    "ভারতবর্ষ গল্পটি অভিনব সৃষ্টি! অল্প পরিসরে এক মুদির ছোট্ট কথাটুকু - তাও তার কাজ কারবার লাভ-লোকসান বা সুখ দুঃখ লইয়া নয়। ছোট দোকানে বসে মুদি রামায়ণ পড়ে, নাতি-নাতনিরা শোনে; মুদির ছেলে অদূরে বসিয়া সওদা বেচে - দোকান ঘর খানি খোলার, ঘরে তেলের প্রদীপ জলে। পঁচিশ বৎসর পরে পাড়ার চারদিকে কত পরিবর্তন ঘটে গেল - মাঠ কোঠা ভাঙ্গিয়া প্রাসাদ উঠিল, জলা বস্তীর বুকে পার্ক দেখা দিল, মুদির দোকান কিন্তু তেমনি। বুড়া মুদির মৃত্যু হইয়াছে - তার জায়গায় তার ছেলে আজ সেই রামায়ণ খুলিয়া বসিয়াছে এবং তার নাতি নাতনীকে পড়িয়া শুনাইতেছে শুধু এইটুকু কথা।
    এমনি স্বচ্ছ অনাড়ম্বর বর্ণনাভঙ্গী, এমনি ভাবুকতা এই বইয়ের পৃষ্ঠা পূর্ণ! বাংলা ভাষায় বিলাতি সেক্স সমস্যার ধুমধারাক্কা মধ্যে এই বইখানির সরল সহজ ভাষা, তার বিচিত্র ভাব, আর সাজেস্টিভনেস আমাকে একান্ত মুগ্ধ করিয়াছে এবং আমার বিশ্বাস সেক্স তত্ত লইয়া যাঁরা মাথা ঘামাইতে বসেন নাই তারাও এই বইখানির পরিয়া আনন্দ পাইবেন। ভাবিবার অনেক কথায এ বইয়ে আছে। কিন্তু এত কথা বলিবার প্রয়োজন নাই! জোৎস্না কিরণ দেখাইতে প্রদীপ ধরা বাতুলতা।"

    এই গল্পের ভেতর দিয়ে এস ওয়াজেদ আলী যেন প্রাচ্যের জীবন-জীবিকার এক সতত প্রতিয়মান অক্ষয় চৈতন্য কে আমাদের সামনে মেলে ধরেছেন। মানব জীবন ধারা সতত পরিবর্তনশীল তাই এক ধর্ম সেই সতত পরিবর্তনশীল। তাকে অবলম্বনের ভেতর দিয়েই এক চিরন্তনতা বিরাজ করে।

    সেই চিরন্তনতাকে গ্রহণ করে প্রতিটি জাতি বেঁচে থাকে। ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু কিংবা মুসলমান, প্রত্যেকেরই মানস ভূমিতে বিশ্বাসের একটি মাধুর্য আছে। সেই মাধুর্য এবং লাবণ্য, তাঁদের রোজনামচা কে সামনের দিকে এগিয়ে দিচ্ছে।

    সময়ের পরিবর্তন হয় ঘড়ির কাঁটা ধরে। সেই কাঁটার তালে তাল রেখে মানুষের প্রকাশভঙ্গির পরিবর্তন হয়। কিন্তু চিত্তের অবলম্বনে যে শাশ্বত বিশ্বাস, তার যে কখনো পরিবর্তন হয় না - এই চিরন্তন ধ্রুবসত্যটি এস ওয়াজেদ আলী যেভাবে দেখিয়ে গেছেন, তা আজও কেবল ভারতবর্ষের মানুষদের জন্যেই নয়, গোটা বিশ্বের মানব সমাজের পক্ষেই সমান সত্য।

    সভ্যতার অগ্রগতির বিরুদ্ধে একটি শব্দ ও ওয়াজেদ আলী কখনো উচ্চারণ করেন নি। অথচ বিশ্বাসের গহীনে লালিত একটি সাধারণ মানুষের জীবন যাপনকে চরম সত্যের ভেতর দিয়ে তিনি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। তুলে ধরার এই অনুপম ভঙ্গিমা আজও ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক - নানা সমস্যার নিরিখে সমানভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে রয়েছে।

    সবধরনের রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধেই ওয়াজেদ আলী নিজের জীবন এবং কলমকে পরিচালিত করেছিলেন। ধর্মের রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে যেমন তিনি সোচ্চার ছিলেন, তেমনি তিনি সোচ্চার ছিলেন দেশপ্রেমের রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধেও। অত্যন্ত সোচ্চার ভাষাতেই তিনি বলেছিলেন :
    গোঁড়া ধার্মিক প্রকৃতপক্ষে ধার্মিক নয়, সে হল ধর্মের একটা বিকৃত প্রতিচ্ছবি। ইংরেজিতে যাকে বলে ক্যারিকেচার। সে রকম ভারতবাসী কিংবা গোঁড়া বাঙালি ও প্রকৃত দেশপ্রেমিক নয়। সে হলো দেশপ্রেমিকের বিকৃত প্রতিকৃতি।

    এখানেই কিন্তু লুকিয়ে রয়েছে এস ওয়াজেদ আলীর জীবন দর্শন। বিংশ শতকের প্রথমভাগে, অবিভক্ত ভারতের নানা সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সমস্যার ভিতরে দাঁড়িয়ে এস ওয়াজেদ আলী অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে বলেছিলেন :
    আমি মুসলমান সমাজের বটে, কিন্তু তারও উপর আমি মানুষ; আমি ভারতবাসী বটে কিন্তু তারও উপর আমি মানুষ; আমি বাঙালি বটে, কিন্তু তারও উপর আমি মানুষ;" ( 'সাহিত্য জীবনের শিল্প' শীর্ষক প্রবন্ধ )

    তিনি লিখছেন : "এ কথা ভুলবেন না যে আপনি মানুষ, আর সেই হিসেবে মানুষের বিশ্বব্যাপী সভ্যতার উত্তরাধিকারী। যুগের পর যুগ ধরে মানুষ তার জীবনের প্রয়োজনের তাগিদে বিরাট, বহুমুখী ব্যাপক এক সভ্যতা সৃষ্টি করে যাচ্ছে। সেই বিচিত্র সৃষ্টি কাব্যে সব জাতিরই দান আছে, সব ধর্মেরই দান আছে, আর সব কৃষ্টিরই দান আছে। তাদের সম্মিলিত প্রেরণা মানবজাতিকে উন্নত জীবনের নিত্যনূতন সন্ধান দিয়েছে। সেই প্রেরণা নির্দেশ যদি আমরা মেনে চলি তাহলে হিন্দু-মুসলমানের প্রগতিশীল জীবনের সন্ধান আমরা পাব, আর আশার উজ্জ্বল আলোক তাহলে আমাদের জীবনযাত্রাকে সুগম আনন্দময় করে তুলবে। তখন স্পষ্টই আমরা বুঝতে পারব যে নিজ নিজ ধর্ম হিসেবে আমরা হিন্দু কিংবা মুসলমান কিংবা খ্রিষ্টান কিংবা নাস্তিক হতে পারে বটে, কিন্তু মানুষ হিসেবে আমরা বিশ্ববাসী, নাগরিক হিসেবে আমরা ভারতবাসী ,আর জাতি হিসেবে বাঙালি।" ('বাঙালি না মুসলমান' এই প্রবন্ধটি ভারতবর্ষ পত্রিকায় আষাঢ় সংখ্যা ১৩৫১ বঙ্গাব্দে মুদ্রিত)

    ১৯৫১ সালের ১০ই জুন কলকাতার পার্ক সার্কাস অঞ্চলের ঝাউতলার নিজের বাড়িতে এস ওয়াজেদ আলী জীবনাবসান হয়। এই ক্ষণজন্মা, মুক্তচিন্তা অগ্রপথিকের 'ভারতবর্ষ' গল্পটি ছাড়া আর কোনো লেখাই এখন আর সহজলভ্য নয়। অধ্যাপক কবীর চৌধুরী বাংলাদেশের বাংলা একাডেমীর প্রধানের দায়িত্বে থাকাকালীন এস ওয়াজেদ আলীর যাবতীয় রচনাকে একত্রে সংকলিত করেছিলেন।

    বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত সেই রচনাসমগ্র এখন সহজলভ্য নয়। ভারতীয় উপমহাদেশে বৈচিত্রময় সমন্বয়ী সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে এস ওয়াজেদ আলী লেখা - জীবনের শিল্প, প্রাচ্য প্রতীচ্য, ভবিষ্যতের বাঙালি, আকবরের রাষ্ট্র সাধনা, মুসলিম সংস্কৃতির আদর্শ, ইকবালের পায়গাম; ভ্রমণকাহিনী - মোটর যোগে রাঁচির সফর, পশ্চিম ভারতে; ঐতিহাসিক উপন্যাস - গ্রানাডার শেষ বীর; গল্পগ্রন্থ - মাশুকের দরবার, দরবেশের দোয়া, ভাঙ্গাবাঁশী, গুলদাস্তা ইত্যাদি আন্তরিকতার সঙ্গে পুনঃ পুনঃ পাঠ একান্ত জরুরী।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১০ জুন ২০২১ | ২৫৫৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিপ্লব রহমান | ১১ জুন ২০২১ ০৫:০৫494831
  • এই গুণীজনকে চেনানোর জন্য ধন্যবাদ। 


    লেখায় ওয়াজেদ আলী নামে লাল কালিতে হাই লাইটস খুব চোখে লাগছে, অনুগ্রহ করে সম্পাদনা করে ঠিক করে দেবেন? 


    পারলে লেখায় তার দু একটা ছবি যোগ করুন, যদিও প্রক্রিয়াটি কিছু জটিল। 


    এছাড়া লগইন এ গিয়ে ব্যবহারকারী খোপে নিজের নাম বাংলায় করে নিতে পারেন। শুভ কামনা 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন