পাবলো নেরুদা তাঁর চুয়ান্ন বছর বয়সে প্রকাশিত ‘এস্ত্রাভ়াগারিও’ শীর্ষক কাব্যগ্রন্থের একটি কবিতায় (‘আরও কত দিন?’) লিখেছিলেন:
‘...
সারা পৃথিবী পার হয়ে
আমি ঘরে ফিরে এলাম।
এখন, কাউকে কোনও প্রশ্ন করি না।
কিন্তু, রোজ আমি আরও কিছুটা কম জানি।’
পাবলো নেরুদা। ইসলা নেগ্রা। ১৯৫৭। ছবি সেরগিও লারাইন
ওই উক্তির প্রায় পঁচিশ বছর পর, এক বিপরীত অবস্থিতি লক্ষ করা যায়। মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রচিত তাঁর অন্তিম কাব্যগ্রন্থের―‘দ্য বুক অফ্ কয়েসচেন্স’/‘প্রশ্ন-পুথি’―ছোটো-ছোটো এবং আপাতবিচারে নির্ভার চুয়াত্তরটি কবিতার, কেবল একটি নয়, সব ক-টিই, আসলে একাধিক অতিদুরূহ প্রশ্ন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, একটি লেখাতে চারটি দ্বিপদী অন্তর্ভূত, এবং প্রতিটি দ্বিপদীই, কখনও সংলগ্ন, আবার অন্য কখনও, অসংলগ্ন এক-একটি প্রশ্ন। একটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরলে কবির এই বিচিত্র গঠনপ্রণালী হয়তো কিছুটা স্পষ্ট হবে।
৩.
আমায় বলো, গোলাপ কি বিবসনা
নাকি ওটাই ওর জামা?
কেন গাছেরা লুকিয়ে রাখে
তাদের শিকড়ের জাঁক?
কারা শোনে অপরাধী গাড়িদের
পরিতাপ?
বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের থেকে
বিষণ্ণ কিছু কি পৃথিবীতে আছে?’,
[বঙ্গানুবাদ: বিকাশ গণ চৌধুরী]
এই দুই অবস্থানের মধ্যে কি তবে স্ববিরোধের সংকেত পাওয়া যাচ্ছে? আপাতদৃষ্টিতে তেমনই মনে হতে পারে; স্ববিরোধ একটা আছেই, না হলে নেরুদা-র তুল্য এক মহৎ কবিকে কেন-ই বা এত এত প্রশ্ন নিয়ে তাঁর জীবনে সমাপ্তিরেখায় উপনীত হতে হল? কবির উক্তি দু-টি আরও একটু তলিয়ে ভাবলেই স্পষ্ট হয় যে, প্রকৃতপক্ষে তাঁর ভিতর কোনো অসংগতি নেই। প্রশ্নের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিয়েই কবি বলছেন, নিজের ভিতরেই তার মীমাংসা আছে, অথবা নেই, কিন্তু নিজের বাইরে কোনো উত্তরের সন্ধান করা বৃথা। ‘দ্য বুক অফ্ কয়েসচেন্স’ সেই আত্মজিজ্ঞাসার অভিজ্ঞান।
কবি-অনুবাদক বিকাশ গণ চৌধুরী নেরুদা-র শেষ কাব্যগ্রন্থের দিকে বাঙলা কবিতার পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণের দ্বারা সকলকে তাঁর ঋণগ্রাহী ক’রে তুলেছেন। বিকাশের অনুবাদে নেরুদা এক সরলভাষী আত্মপরীক্ষকের রূপ ধ’রে আমাদের সামনে উপস্থিত; তাঁর একটিও প্রশ্ন, জ্ঞানান্বেষীর প্রশ্ন নয়, কবির প্রশ্ন। একটি পরিত্যক্ত সাইকেল দেখে কবির মনে হয়েছে, তিনি এমন কিছু দেখছেন, যা সম্পূর্ণ স্বাধীন! এবার তিনি নিজেকে প্রশ্ন করছেন, কী হতে পারে এই স্বাধীনতা-অর্জনের নেপথ্যের রহস্য?(১৫ সংখ্যক কবিতা)। আমরা ভাবি, নেরুদা-র কবিকৃতি বহুবর্ণময়, তবু, এর আগে কখনোই তিনি তো কবিতা শেষ হওয়ার পরে কবিতা শুরু করবার পদ্ধতি ব্যবহার করেননি। প্রশ্ন উত্থাপন ক’রেই কবিতাটি শেষ হয়ে যায়; আসল কবিতার জন্ম হয় এরপর, যখন আমরা, পাঠকরা, বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে ভাবতে শুরু করি, একটি সামান্য সাইকেল স্বাধীনতা-অর্জনের মতো এক যুগান্তকারী দুঃসাধ্য কাজ কীভাবে সম্পন্ন করল! কোনো পাঠক যদি ভাবেন, সাইকেলটি আজ স্বাধীন, কারণ তাকে চালনা করবার কথা কেউ ভাবছেন না আর, তা হলে সে-পাঠককেও মান্যতা দিতে হবে। অর্থাৎ, কবি, একটি প্রশ্ন তুলে এবং প্রায় একইসঙ্গে নিজের চিন্তাজগতে জায়মান মীমাংসাসূত্র পাঠকের কাছ থেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে, পাঠকের মনকেই সক্রিয় করে তুলছেন। এমন সব বিকল্প মীমাংসাসূত্র পাঠক ভেবে বার করতে পারেন, যা হয়তো স্বয়ং কবিও বিচার করেননি। বিকল্প সমাধানসূত্রের বাইরেও কবি একটি অন্য স্তর গড়ে তুলেছেন, যা হয়তো এই বইয়ের সূক্ষ্মতম পর্যায়। ৬১ সংখ্যক কবিতায় তিনটি দ্বিপদীর তিনটি প্রশ্নের শেষ প্রশ্নটি ভয়ানক:
‘...
আমার গন্ধ, আমার ব্যথা কি আমারই থাকে
যখন আমি ঘুমে ধ্বংস হয়ে যাই?’
২৮ সংখ্যক কবিতায় কবি লিখছেন:
‘...
কোথায় খুঁজে পাবে সেই ঘণ্টা
যা তোমার স্বপ্নের মধ্যে বাজবে?’
অথবা ৩১ সংখ্যক কবিতায় ধ্বনিত হয় সেই অমোঘ জিজ্ঞাসা:
‘...
কাকে আমি জিজ্ঞেস করতে পারি
কী করতে আমার পৃথিবীতে আসা?’
‘কোথা থেকে আসি আমরা। আমরা কারা? কোথায় চলেছি আমরা’। শিল্পী পল গোগ্যাঁ। ক্যানভাসে তেল রং। ১৮৯৭
কবি নিশ্চিত রূপে জানতেন, এবং, আজকের পাঠকও হয়তো জানেন, এ-প্রশ্নের এবং এইরকম আরও অনেক প্রশ্নের সদুত্তর উদ্ঘাটন করা কতটা দুঃসাধ্য। বস্তুত, এটাই কবিতার রহস্য; সহজে যা স্পর্শ করা যায় না, কবির মনোযোগ যেন সেখানেই অধিকতর মুগ্ধ ও গভীরতর অসহায়।
এ-কথা বললে অত্যুক্তি করা হবে না যে, ‘প্রশ্ন-পুথি’ নেরুদা-র জীবনবোধের নির্যাস। প্রসঙ্গগুলি উড়ে গেছে কালের হাওয়ায়, অক্ষত রয়ে গেছে অমীমাংসা। শতচেষ্টার শেষেও মানুষ যে অনেক সংকটাবস্থার সমাধান খুঁজে পায় না, তার একটা বাঙ্ময় স্বীকৃতি আমরা পাই তাঁর এই বইয়ে। নেরুদা-র পুরোনো লেখায়, এমনকি, তাঁর জীবনবৃত্তান্তে ফিরে যাবার নতুন আগ্রহ জন্মায়, কারণ, সন্দেহ নেই, জীবনযাপনেই সমস্ত প্রশ্নের উৎসমুখ। আমাদের মনে পড়ে যায়, তিনি লিখেছেন, তাঁর ছোটোবেলার টেমুকো-য় মেয়েদের ইস্কুলের প্রধান শিক্ষয়িত্রী হয়ে এসেছিলেন গাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল (১৮৮৯-১৯৫৭), যিনি, কিশোর পাবলো-র বিবরণ অনুসারে, দীর্ঘ স্কার্ট এবং চ্যাপটা হিলের জুতো পরতেন। গাব্রিয়েলা যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতেন, তাঁর দীর্ঘ স্কার্ট বাতাসে দুলত।
পাবলো নেরুদা ও গাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল
তাঁকে দেখে কিশোর পাবলো-র ভয়ই করত, কিন্তু যেভাবেই হোক, তাঁদের মধ্যে একটা অসমবয়সী সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গেব্রিয়ালা-র বাড়ি গেলেই, তাঁরই পরামর্শ মতো, পাবলো পড়বার জন্য একটি-দুটি রুশ উপন্যাস নিয়ে ফিরতেন। আমরা ভাবি, এইরকম অগণিত বিন্দু থেকেই বুঝি চেতনার, এবং প্রশ্নেরও, শুরু। ব্যক্তির পরিচয়, নিরাপত্তায় ততটা নেই যতটা বিস্তারে, উত্তরলাভে ততটা নেই যতটা প্রশ্ন-উত্থাপনে, সমাধানে ততটা নেই যতটা অমীমাংসায়। গাব্রিয়ালা মিস্ত্রাল-এর সমাধিফলকে তাঁরই একটি পঙ্ক্তি খোদিত রয়েছে: ‘শরীরের কাছে আত্মা যেমন, একজন শিল্পীও তাঁর স্বজাতির কাছে তেমন।’
বাক্যটি কি কেবল গাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল-এর একার, ভাবে ও ভাবনায় পাবলো নেরুদা-রও নয়?
পরিশেষে, বিকাশ গণ চৌধুরী-র অনুবাদকর্ম সম্পর্কে দু-একটি কথা নিবেদন করছি। বিকাশ আমাদের জানিয়েছেন যে, মূল পাঠ্যবস্তু ছাড়াও তিনি উইলিয়ম ও’ডেলি-কৃত ইংরেজি অনুবাদের সাহায্য নিয়েছেন। মূল ভাষা এবং ইংরেজি রূপান্তর মিলিয়ে কাজ করার জন্য তাঁর বঙ্গানুবাদ যে সমৃদ্ধ হয়েছে, এ-বিষয়ে সন্দেহ নেই। বিকাশ চেষ্টা করেছেন তাঁর ব্যবহৃত বাঙলা শব্দ যেন মূল স্প্যানিশের নিকটে থাকে। এই প্রয়াস অবশ্যই অনুসরণযোগ্য, কিন্তু, বর্তমান আলোচকের বিনীত নিবেদন, ব্যঞ্জনাসৃষ্টির প্রয়োজনে স্বাধীনতা নেওয়া প্রায় ততটাই জরুরি। যেমন, ৬১ সংখ্যক কবিতায় ‘dolores’ রূপান্তরিত হয়েছে ‘ব্যথা’-য় যা এক নিখুঁত প্রয়োগ, কিন্তু মূলের খুব কাছে থাকতে গিয়ে নেরুদা-র ভাবটি ধরা পড়েনি বলে মনে হয়েছে। আমাদের মনে পড়ছে, ডব্লু এস মর্উয়িন, যিনি ‘টোয়েনটি লাভ় পোয়েমস অ্যান্ড অ সঙ অফ্ ডেস্প্যের’ ইংরেজিতে অনুবাদ করে সেই কবে আমদের চিত্তহরণ করেছিলেন, এবং যাঁর কাজ কালজয়ী বলে আজ সর্বজনস্বীকৃত, তিনিও এই স্বাধীনতা নিয়েছিলেন; ‘dolor’ তাঁর অনুবাদের এক জায়গায় ‘sorrow’ অন্য জায়গায় ‘pain’ । ১৬ সংখ্যক কবিতায় ‘ otono’ অর্থাৎ ‘autumn’ বিকাশের বঙ্গানুবাদে হয়ে গেছে ‘বসন্তে’, ফলে পরবর্তী পঙ্ক্তির― ‘কীসের ধ্যান করে পৃথিবী’― অর্থহানি ঘটেছে। খুবই সামান্য কথা এগুলি; বিকাশ তাঁর অভিনিবেশকে তির্যক দৃষ্টিতে দেখবার কোনো সুযোগ তৈরি হতে দেননি। আমরা তাঁর কাছে ঋণী রইলাম।
ভালো লাগল। একটা সময় সারা তৃতীয় বিশ্বের কবির ই, নেরুদার মত কবিতা লেখার ইচ্ছে হত। কিন্তু আমার ধারণা আর্লি ইয়ার্স এবং একদম লেট ইয়ার্স , যখন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে কম্প্রোমাইজের অভিযোগ, তখনকার ছোট লেখা গুলো আলাদা করে পড়তে ইচ্ছে করে , কিন্তু নেরুদার আত্মজীবনী পড়াটা আমার জীবনে অভিশাপ হয়েছে, অনুবাদে খুব বিখ্যাত লেখা ছাড়া বেশি পড়া হয়নি।
রোমান্টিক পদ্য বেশি না পড়াই ভালো, নিকানোর পারা পড়ুন। :)
শ্রী বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত-কে তাঁর সুচিন্তিত অভিমতের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ । বিনীত গৌতম বসু
অনুজপ্রতিম বিকাশ গণচৌধুরি কয়েক বছর আগে "প্রশ্ন পুঁথি"র প্রথম সংস্করণ প্রকাশের পর ছত্তিশগড়ের রায়পুরে আমাদের "আড্ডা" সংস্থার আমন্ত্রণে কবিতা পাঠ করতে এসে এই বইটির থেকে তিরিশটির মত কবিতা পাঠ করেন। আশংকা ছিল এই আত্মজিজ্ঞাসার কবিতা এখানকার শ্রোতাদের কতটা ভাল লাগবে?
আমাকে ভুল প্রমাণিত করে প্রায় ১০০ জনের মত নারী পুরুষ একঘন্টা বসে থেকে মন দিয়ে শুনল এবং শেষে অনুবাদক বিকাশের জূটল অনেক উচ্ছাস ও অভিনন্দন।
কিন্তু আমাদের প্রেসিডেন্ট মুখার্জি হরতাল সামনের সারিতে বইটির ইংরেজি অনুবাদ হাতে কড়া চোখে চেক করছিলেন।
আপত্তি তুললেন অটাম এর বাংলা প্রতিশব্দ হিসেবে বসন্ত চয়ন করায়, ঠিক কবি গৌতম বসুর মত।
করেকশনঃ
হবে --আমাদের 'আড্ডা'র প্রেসিডেন্ট মুখার্জি স্যার ( ইংরেজির অধ্যাপক) সামনের সারিতে বসে--
কতটা প্রাজ্ঞ হলে মানুষ আবার শৈশবের দৃষ্টি ফিরে পায়?
কবিতাগুলিও কি শিশুর দৃষ্টি ফিরে পাওয়া কিছু আশ্চর্য মানুষদের জন্য লেখা।
আপাতত একটাই বলার - Veinte Poemas De Amor y Una Canción Desesperada (বেইন্তে পোয়েমাস দে আমোর ই উনা কানসিওন দেসেসপেরাদা ) র বাংলা হওয়া উচিত - কুুড়িটি প্রেমের কবিতা ও একটি হতাশ গান । 'হতাশার গান' নয়।ইংরেজিতে song of despair না হয়ে despairing song হওয়া বান্ছ্ঞনীয়।
স্পেনীয় ভাষায় Desesperada বিশেষণ ,বিশেষ্য হল Desesperanza ,অর্থাৎ যথাক্রমে despairing (হতাশ) এবং despair(হতাশা)।
আপাতত একটাই বলার - Veinte Poemas De Amor y Una Canción Desesperada (বেইন্তে পোয়েমাস দে আমোর ই উনা কানসিওন দেসেসপেরাদা ) র বাংলা হওয়া উচিত - কুুড়িটি প্রেমের কবিতা ও একটি হতাশ গান । 'হতাশার গান' নয়।ইংরেজিতে song of despair না হয়ে despairing song হওয়া বান্ছ্ঞনীয়।
স্পেনীয় ভাষায় Desesperada বিশেষণ ,বিশেষ্য হল Desesperanza ,অর্থাৎ যথাক্রমে despairing (হতাশ) এবং despair(হতাশা)।
আপাতত একটাই বলার - Veinte Poemas De Amor y Una Canción Desesperada (বেইন্তে পোয়েমাস দে আমোর ই উনা কানসিওন দেসেসপেরাদা ) র বাংলা হওয়া উচিত - কুুড়িটি প্রেমের কবিতা ও একটি হতাশ গান । 'হতাশার গান' নয়।ইংরেজিতে song of despair না হয়ে despairing song হওয়া বান্ছ্ঞনীয়।
স্পেনীয় ভাষায় Desesperada বিশেষণ ,বিশেষ্য হল Desesperanza ,অর্থাৎ যথাক্রমে despairing (হতাশ) এবং despair(হতাশা)।
আপাতত একটাই বলার - Veinte Poemas De Amor y Una Canción Desesperada (বেইন্তে পোয়েমাস দে আমোর ই উনা কানসিওন দেসেসপেরাদা ) র বাংলা হওয়া উচিত - কুুড়িটি প্রেমের কবিতা ও একটি হতাশ গান । 'হতাশার গান' নয়।ইংরেজিতে song of despair না হয়ে despairing song হওয়া বান্ছ্ঞনীয়।
স্পেনীয় ভাষায় Desesperada বিশেষণ ,বিশেষ্য হল Desesperanza ,অর্থাৎ যথাক্রমে despairing (হতাশ) এবং despair(হতাশা)।
আপাতত একটাই বলার - Veinte Poemas De Amor y Una Canción Desesperada (বেইন্তে পোয়েমাস দে আমোর ই উনা কানসিওন দেসেসপেরাদা ) র বাংলা হওয়া উচিত - কুুড়িটি প্রেমের কবিতা ও একটি হতাশ গান । 'হতাশার গান' নয়।ইংরেজিতে song of despair না হয়ে despairing song হওয়া বান্ছ্ঞনীয়।
স্পেনীয় ভাষায় Desesperada বিশেষণ ,বিশেষ্য হল Desesperanza ,অর্থাৎ যথাক্রমে despairing (হতাশ) এবং despair(হতাশা)।
পিনাকীর মূল্যবান মতামতের জন্য ধন্যবাদ । ওঁর অনুবাদের কাজগুলি যিনিই পাঠ করেছেন তিনিই অনুমান করতে পারবেন /বুঝতে পারবেন মূলের যত কাছে নিয়ে যাওয়া যায়, সেই চেষ্টা তাঁর মনোযোগের কেন্দ্রে থাকে । ম্যরউইনের দেওয়া শিরোনামে একটি খুঁত রয়ে গেছে, এ নিয়ে পিনাকীর প্রস্তাব ঘিরে কোনও বিতর্কে প্রবেশ করবার সাধ্য আমার নেই । ম্যরউইনের পক্ষ নিয়ে একটিই কথা জানাতে চাই ,তাঁর হাত ধ'রেই নেরুদার যুগপৎ দুরূহ ও মর্মভেদী জগতে প্রবেশ করেছিলাম। আরও একটি কথা, স্বয়ং নেরুদাও বিপুল পরিমাণে স্বাধীনতা নিয়েছেন। তাঁর বইয়ের ২৬ নম্বর কবিতাটি যে আসলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা, তুমি আমার সাধের সাধনা'র পুনর্লিখন, সেটি কেবল একজন বাঙালীর চোখেই ধরা পড়বে ।
ভাল থেক ,পিনাকী।
'বেইন্তে পোয়েমাস ...' -এর ২৬ নম্বর নয় , ১৬ নম্বর লেখাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা'-র পুনর্লিখন । গুনতে ভুল করার জন্য দুঃখিত ।