আমার কাছে ঠিক স্পষ্ট নয় কেন, সোমনাথ রায়ের লেখার সংগে আমার একটা অন্তরের যোগাযোগ আছে, কেন জানি মনে হয় অনেক দিনের আমাদের ওদিক কার লোক, কথা বুঝতে পারি।
আজকের লেখাটা পড়ে এক বিচিত্র ভদ্রলোকের কথা মনে পড়লো। তাও প্রায় বছর পনেরো হয়ে গেল, আমি আর বৈজয়ন্ত যে আপিসে কাজ করতাম, তার বাইরে খোকন দার দোকানের পাশে এই ভদ্রলোকের একটা ট্রাম্পের ভাষায় ফিলদি চায়ের দোকান ছিল। খোকনদার দোকানের গোছানো ব্যাপারটা একেবারেই ছিল না, কিন্তু খোকন দার ওখানে ভিড় থাকলে আমরা এঁর দোকানে আসতাম চা আর গোল্ডফ্লেকের জন্য। ইনি এমনি তে একেবারে সুরমা মেশানো উর্দু তে কথা বলতেন, বসতে বলতেন তশরিফ রাক্খিয়ে বলে, ছেলে কে যোগাড় দিতে বলতেন আপ বলে, এবং একটা বেশ ধীর স্থির ভাব যেন, ওনার এখন রাষ্ট্র বিষয়ে আলোচনা আছে গালিব এর সঙ্গে, নোংরা স্যান্ডো গেঞ্জী আর প্রিন্ট লুংগি থেকে ঐ ভাষা কি করে ও কেন বেরোতো আমরা বুঝতে পারতাম না, তো ইনি বৌ এর সংগে ঝগড়া করতেন কিন্তু একটা ভাংআ কিন্তু প্রায় তড়িতাহত ঢাকাইয়ায়। আর বৌদির মুখে বিশেষ আগল ছিল না, তার মধ্যে একটি রিফ্রেন ঐ অঞ্চলে অমর হওয়ার কথা, তুর কাইব্য তুর পুঙায় র্যাহো, কিন্তু চারিদিকে বেরসিক মোবাইলওয়ালা , কম্পিউটারওয়ালা থাকায় সেই অমৃতকথন এর ভাগ্যে জয়মাল্য জোটেনি, মোষবাথানের গ্রামে থাকতেন বোধ হয়। আমি বেশি দিন সে আপিসে টিকি নি, বৈজয়ন্ত ও অন্য দিকে চলে গেল, কিন্তু আমাকে এই বাঙাল উর্দু মেশানো নোংঅরা গেঞ্জী আমাকে বহুদিন নানা ভাবে হাতছানি দিয়েছে। অন্য আপিশে যাবার পরেও আমি বাইক নিয়ে বা গাড়ি নিয়ে ওনার দোকানে চা সিগারেট খেতে আর কপালে থাকলে বৌদির সংগে ঝগড়া শুনতে যেতাম। কিন্তু ওদের এক ছেলে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি কোথায় যেন পেয়ে গেছিল বলে ওদের আর তেমন ঝগড়া হত না, আর ভদ্রলোক ও কুটুম বাড়ির চাপে, তহজীব ভুলে বলতেন, আশছেন, বইয়া পড়েন, আপনাগো ভাইপো র আজ আবার বৈকালে ডিউটি।
এসব আনশান কথা আমার মনে পড়ছে আজ এই কবিতাটা পড়ে। বীরভূমের গ্রামীন বাঙালপাড়া গুলি নিয়ে কাজ করার ইচ্ছাটাও চাগিয়ে উঠল, বলছিলাম না, সোমনাথ রায়ের কলমের সংগে আমার একটা গভীর অচেনার যোগাযোগ আছে। ওদিককার কথা।
অন্য থিমের কবিতা। অচেনা নয় এ দুর্গা, কিন্তু অচেনা থিম - ভালো লেখা।
চিরায়তের সঙ্গে সমকাল এসে হাত ধরেছে। কবিতার ভাবনা ও শব্দচয়ন দুয়ারে এসে কড়া নাড়ে। নিঃসন্দেহে অন্যরকম কবিতা।
বোধিসত্ত্ব-দা, কমেন্টটা মিস করে যাওয়ায় দুঃখিত, উত্তর দিতে দেরি হল। ধন্যবাদ। আমি আসলে দেখতে চাইছি, রাষ্ট্র নামক প্রতিষ্ঠানের কাছে মানুষের বাকি সংগঠনগুলি (একক মানুষও) কীভাবে অসহায় হয়ে উঠেছে ও উঠছে। সেইখানে অনেককেই একজায়গায় মিলিয়ে দেওয়া যাবে। আপনার গল্পটা খুব ইন্টারেস্টিং এই নিরিখে-
বৃহত্তর কলকাতার বাইরে যে সব বাঙালপাড়া আছে সেগুলির সঙ্গে আশেপাশের লেনদেনও দেখার মতন। শুনেছি দণ্ডকারণ্যে এটা আরও আকর্ষণীয়।
আরে কোন চাপ নেই এ মানে অপূর্ব হয়েছে। আচ্ছা জানেন একটা বই বেরিয়ে ছিল মাইরি হিন্দি তে আমি বেনারসে অশোক সিংহর বিখ্যাত দোকান থেকে কিনেছিলাম,পড়া হয়নি, নাড়াচাড়া করেছিলাম মাত্র , মি বরিশাইল্যা বলে। দন্ডকারণ্যের লোকের লেখা।দমু হয়তো পড়েছে , সে তো সালা ছাপার অক্ষর বাকি রাখে না ,::--)) আপনি দেখেছেন নাকি? আচ্ছা আরেকটা খবর দেই তানভীর মোকাম্মেল রা ঢাকার বিহারি দের নিয়ে ফিল্ম করেছে। এদের কে নিয়ে সাইদ ফিরদৌস বলে একজন হিস্টোরিয়ান কাজ করছেন। আপনি এসব পড়ে আমাদের জন্য কিছু ল্যাখেন না প্লিজ। পোবোন্দ না হয় নাই লিখলেন, পড়ে রাখলেন এট্টু ঘুইরা আসলেন, তারপর যা মনে আসে লিখলেন, কোন তো তাড়া নাই। বীরভূমের বাঙাল পাড়ার ডেটা পারলে দিচ্ছি, কিছু স্মৃতি আছে।
এগুলো জানতাম না, খুঁজে পাবার চেষ্টা করব। গুরুর পাতায় বহুবছর আগে লাহোর করাচিতে আটকে যাওয়া বাংলাদেশিদের ঘেটোর ব্যাপারে পড়েছিলাম। সেইটাও খুব ইন্টারেস্টিং।