ঝিলম,শতদ্রু,ইন্দাস,নুব্রা,রবি,ডোডা,চেনাব,নামগুলো শুনলেই মনে হয় একদল প্রাণোচ্ছল কিশোর কিশোরী , হুড়মুড় করে নেমে এল পাহাড়ের গা বেয়ে। কারো পায়ে নুপূরের বোল, কেউ গান গাইছে । তাদের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে বরফঢাকা পর্বতের উচ্চতা থেকে নেমে এসেছে চিনার আর পাইনের সবুজ ঢেউ। আলো ঝলমল চারদিক। আকাশের রঙ আর জলের রঙ মিলেমিশে একাকার। স্বর্গ যদি কোথাও থেকে থাকে, তা এইখানে।
এইগুলি সবই জম্মু কাশ্মিরের বিভিন্ন নদী। প্রাচীন বিখ্যাত নদী সব। অবাক লাগবে শুনলে যদি বলি, এই নদীগুলিকে কর্পোরেট ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতির চক্করে ফেলে শুকিয়ে মারার চেষ্টা হচ্ছে। যথেচ্ছ বালি পাথর তুলে নেওয়া হচ্ছে নদীর বুকে দৈত্যাকৃতি ট্রাক ও জেসিপি নামিয়ে। নির্বিচারে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ, যে ঢালে আগে জল দাঁড়াতোই না,সেই উপত্যকায় ঘটে যাচ্ছে বিধ্বংসী বন্যা,ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাস্তুতন্ত্র,আণুবীক্ষণিক জলজ প্রাণি থেকে শুরু করে মাছ ও অমেরুদন্ডী প্রাণি শেষ হয়ে যাচ্ছে। খাদ্যশৃঙ্খল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাচ্ছে। পাড় ধ্বসে যাচ্ছে। কেন, কেন এই মহাসর্বনাশ যজ্ঞ ?
সন ২০২৪। আর মাত্র সাড়ে তিন বছরের ওয়াস্তা। আজকের -২৩.৯ জিডিপি রেট দেখে ভয়ের কিছু নেই। কারন ওই সময়ের মধ্যেই আমাদের দেশ ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হাসিল করে নেবে। এটা কোনো বেতো ঘোড়ার মুখ থেকে শোনা কথা নয়,দেশের মহামান্য সরকার এই ঘোষণা করেছেন,এ আমরা সবাই জানি। ফলে দুরন্ত গতিতে উন্নয়ন দরকার এই অভূতপূর্ব উন্নয়নের স্বার্থে তৈরি হতে হবে নতুন নতুন ইনফ্রাস্ট্রাকচার, এনার্জি এবং শিল্পের পরিকাঠামো।
এই উন্নয়নের যজ্ঞে পরিবেশসংক্রান্ত পুরনো এবং কড়া আইনকানুন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে। পুরনো আইন বলছে কোনো প্রজেক্ট শুরুর আগে অবশ্য চাই পরিবেশ মন্ত্রকের ক্লিয়ারেন্স। তাই শুরু হল নতুন চেষ্টা। পরিবেশমন্ত্রক (The Ministry of Envioronment,Forests and Climate Change,MOEFCC) অর্থনীতির স্বার্থে আদাজল খেয়ে চেষ্টা শুরু করল কর্পোরেটের বাণিজ্যের পথ পরিষ্কার করতে। তার জন্য যতো বেশি সম্ভব প্রজেক্টকে আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে ক্লিয়ারেন্স দিয়ে দেওয়া। এই বলে বলীয়ান হয়েই জমি থেকে বেপরোয়া ভাবে খনিজ নিষ্কাশন করে নেওয়া হচ্ছে স্থানীয় ভূমিপুত্রদের হটিয়ে। জলজ্যান্ত নদীগুলোরও রেহাই নেই। চলছে লাগামছাড়া নদীখাত খনন। অনুমোদন পাচ্ছে খোলামুখ খনি, বাঁধ,রাস্তা রেলপথ। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে পরিবেশের অবশিষ্টটুকু। জম্মু ও কাশ্মিরের নদীধৌত উপত্যকা তার জলজ্যান্ত প্রমাণ।
জম্মু কাশ্মিরের ফরেস্ট এডভাইসরি কমিটি (FAC) পরিবেশের ভয়ানক ক্ষতি করে এইরকম ১২৫ টি প্রজেক্টকে অনুমোদন দিয়েছে ২০১৯ এর অগাস্ট, সেপ্টেম্বর অক্টোবর, মাত্র এই তিনমাসের মধ্যে। শেষ মিটিংটিতেই পাস হয়েছে ৪১টি প্রজেক্ট, তার আগের মিটিংয়েই ৫৪ টি। খুবই তাড়া ছিল বৈকি, কারণ ঠিক এর আগেই মহা ধুমধাম করে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ৩৭০ ধারা বাতিল হল ও জম্মু কাশ্মীরও তার বিশেষ মর্যাদা হারাল। এই বনাঞ্চল সাফাই কান্ডের হোতা কাশ্মীরী FACএর সঙ্গে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের অধীনস্থ চণ্ডীগড় রিজিওনাল অফিসের সংযুক্তিকরণ হয়ে গেল। কাশ্মীরের যা আলাদা নিয়মকানুন ছিল, সব জলাঞ্জলি গেল। এখন শোনা যাচ্ছে তার আগেই জম্মু ও কাশ্মীরের ২৭১ হেক্টার বনভূমি নানা উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আছে ট্রান্সমিশনের লাইন পাতা, ড্রিলিংয়ের জন্য টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
এই গোটা ব্যাপারটাই করা হয়েছে শিডিউল ট্রাইব এবং বনভূমিতে যারা বংশপরম্পরায় বাস করে আসছে সেই ভূমিপুত্রদের অন্ধকারে রেখে। অথচ দেশের আইন মোতাবেক স্থানীয় বসবাসকারী এবং গ্রামসভার অরণ্যের ওপর যে অধিকার আছে তাকে যথোচিত মর্যাদা দেওয়া ব্যতিরেকে এই অনুমোদন সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত বলে গণ্য হওয়া উচিত। সেসবের তোয়াক্কা না করেই উন্নয়নের কাজে বনভূমিকে নদীনালাসমেত ব্যবহার করা যাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
অবৈধভাবে নদীবক্ষ খননের জন্য কাশ্মীর এখন সংবাদের শিরোনামে। কয়েক মাস আগেই নীলামের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে শতাধিক নদীবক্ষ থেকে মিনেরালস ( বালি, পাথর, নুড়ি) ছেঁকে নেবার ব্যাপারটি। যে কম্পানিগুলি নীলামে জিতেছে তারা পরিবেশসংক্রান্ত ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা না করেই পরদিন থেকেই খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে দিয়েছে। তার কোনো বিহিত না করেই উল্টো চাপ দিয়ে সরকারি হুকুমনামা এসে গেল যে পরিবেশসংক্রান্ত ছাড়পত্র দেবার ব্যাপারটিই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেরে ফেলতে হবে। আশ্চর্য কী যে একদিনে পঞ্চাশেরও বেশি মিটিং সেরে ফেলা হবে।
নদীচুরির ক্ষেত্রে জম্মু কাশ্মীরে যা হচ্ছে তা গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় পরিবেশ লুন্ঠনের সঙ্গে একেবারে মাপসই। গত পাঁচ বছরে নদীবক্ষে অবৈধ খনন রিপোর্ট করার কাজে লেগে থাকার শাস্তি হিসেবে তিনজন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। এ রাজ্যও কোনো ব্যতিক্রম নয়। কিছুদিন আগেই এগিয়ে থাকা বড় কাগজে অনেক কিস্তিতে এ রাজ্যের নানা নদীলুন্ঠনের কথা, বালি মাফিয়াদের কথা নিয়ে লেখালিখি হল। শুধু খনন নয়, স্রেফ জনবসতির চাপে আস্ত নদী হারিয়ে গিয়েছে, এরকম উদাহরণও অজস্র। বর্ষাকালে হয়ত সেখানে ঘরে জল ঢুকে যায়, কিন্তু সেসবকে পাত্তা না দিয়ে মানুষ নদীবক্ষে নিজের সাম্রাজ্যের সীমা বাড়িয়েই চলে। যেমন কোচবিহার শহরের মধ্যে বুড়ি তোর্সা বা পুরনো তোর্সার খাত। একদিকে অনেকটা উঁচু বাঁধ অগ্রাহ্য করে মানুষ নীচু জমিতেই ঘরবাড়ি তুলে নিয়েছে। এগিয়ে গেছে মূল নদীধারা বরাবর। ফলে স্রোতহীন হয়ে সারা বছর কচুরিপানায় ভরা থাকে বুড়ি তোর্সা। বর্ষাকালে ঐ পানারই তলায় তলায় জলসঞ্চার হয়। ঘরদোর ভেসে গেলে মানুষ বাঁধের ওপর ঠাঁই নেয়। দু চারদিন বাদে আবার যে কে সেই। এই দখলী জমির কোনো পাট্টা পর্চা কিছু নেই, থাকার মধ্যে আছে ক্ষমতায় আসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বোঝাপড়া। বুড়ি তোর্সাকে নিজের চোখে দেখেছি আর শুনেছি নদীয়াতে চূর্ণি নদীকেও এইভাবে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। বরুণ বিশ্বাস হত্যার পেছনে নাকি আংশিক কারণ এই চূর্ণির হত্যাপ্রক্রিয়ার বিরোধিতা।
তবু কী কারণে নিজের রাজ্য বা অন্য কোনো রাজ্য ছেড়ে জম্মু কাশ্মিরের পরিবেশ ধ্বংসের কথা গুরুত্বসহকারে বলা দরকার? জম্মু ও কাশ্মিরের কেসটা সব দিক থেকেই অনন্য, কারণ পরিবেশ ধ্বংস করবার জন্য এখানে কাজে লাগানো হয়েছে আইনকানুনকে--স্পেশাল স্ট্যাটাস হরণ করবার পর দুরন্ত গতিতে জনবিন্যাস (demography) পরিবর্তন এবং হরির লুটের বাতাসার মত ডোমিসাইল সার্টিফিকেট (অধিবাসী শংসাপত্র) বিলানো।
জম্মু কাশ্মিরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা কেড়ে নিয়ে যেদিন থেকে তাকে ইউনিয়ন টেরিটরির মধ্যে ঠুসে দেওয়া হল, সেদিন থেকেই এই আশংকা দানা বাঁধছিল যে ভারতের এই একমাত্র মুসলিমপ্রধান ভূখন্ডে ছলে বলে কৌশলে মুসলমানকে সংখ্যালঘু করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা যাতে জনসংখ্যার বেশির ভাগ থাকতে না পারে, সেদিকে একটু বেশি মনোযোগই দেওয়া হবে। আগে বাইরের রাজ্য থেকে লোক গিয়ে কাশ্মিরে থাকবার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করতে পারত না। আইনে আটকাতো। জনবিন্যাস (ডেমোগ্রাফি) পরিবর্তন করতে হবে, তাই শুরু হল ঢালাও ডোমিসাইল সার্টিফিকেট (অধিবাসী শংসাপত্র) বিতরণের ধুম। এই সার্টিফিকেটের জোরে জম্মু কাশ্মীরের বাইরের লোকেরাও এখন কাশ্মীরের পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট বলে গণ্য হচ্ছে। এখনও তারা উপত্যকায় জমি বাড়ি প্রপার্টি কিনবার অধিকারী নয় বটে,কিন্তু একটি শিশুও জানে খুব শিগগিরই সেটা হয়ে যাবে। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে এবং এখনই বহিরাগতরা প্রাকৃতিক সম্পদগুলি নিয়ে ব্যবসা করবার এবং কাশ্মীরে থেকে চাকরিবাকরি করবার অধিকারী। পরিবেশ আইনকে পাশ কাটিয়ে যতোগুলি মিনেরাল ব্লকের নীলাম হয়েছে এ বছর, সবগুলিই কিনেছে উপত্যকার বাইরে থেকে আসা কম্পানি। অথচ ঝিলম এবং অন্যান্য নদীতে খনন হবারই কথা ছিল না, যতোদিন পর্যন্ত নদীখাত ধরে ধরে বিজ্ঞানসম্মত খনন পরিকল্পনা না হয়। নদীখাতের কোন জায়গায় খনন চলবে, কোথায় বা সংরক্ষণ হবে সে সম্বন্ধে কথাবার্তাও চলছিল। কিন্তু সবকিছুতে জল ঢেলে দিল এই জলস্রোতের মতো বহিরাগত কম্পানিগুলি। ফার্স্ট কাম ফার্স্ট সার্ভ এই মন্ত্রে তারা উদ্বুদ্ধ, হাতে তাদের অগুন্তি স্বর্ণমুদ্রা। সোনালী জলের নদীগুলিকে এবার বাঁচাবে কে!
কৌতূহলীরা জেনে রাখুন, এ অব্দি সাড়ে বার লাখ ডোমিসাইল সার্টিফিকেট ইস্যু হয়েছে। যারা পেয়েছে তাদের মধ্যে আছে কাশ্মীরী পন্ডিতরা, যারা ১৫ বছর ধরে কাশ্মীরে আছে অথবা মাত্র ৭ বছর কাশ্মীরে পড়াশুনো করেছে, বা ১০ অথবা ১২ ক্লাস এখান থেকে পাশ করেছে। সমস্ত রকম সরকারি চাকুরে,ব্যাঙ্ককর্মী,সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি এবং গবেষণা কেন্দ্রের কর্মচারীরা ১০ বছর কাশ্মীরে পার করে ফেলতে পারলেই ডোমিসাইল সার্টিফিকেট পেয়ে যাবে। এছাড়াও আছে পাকিস্তান থেকে আগত শরণার্থীরা। কাশ্মীরে কাশ্মীরিরাই সংখ্যালঘু হয়ে যাবে ,এটা ঘটা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। যারা আসছে এবং আসবে তাদের লক্ষ শুধু “শুভ লাভ”। সেজন্যই উন্নয়নের বান ডেকেছে উপত্যকা জুড়ে। কম্পানির অফিসঘর,কারখানা আপাতত নাহয় সরকারি জমিতেই হবে, কিন্তু বালি পাথর তো নির্মাণকার্যে চাইই চাই। কাচ চাই বাহারি বিল্ডিং ঘিরে দেবার জন্য বা অন্য কারণেও,তার জন্যও তো বালি অপরিহার্য।ফলে কাশ্মীরি নদীসমূহের মৃত্যুদন্ড লেখা হয়ে গেছে জম্মু ও কাশ্মীর ইউনিয়ন টেরিটরিতে ঢোকামাত্র। গত ৩০শে জুলাই জম্মু কাশ্মীর সরকার এক আদেশনামা জারি করে যে মাইনিং অপারেশনের ক্ষেত্রে পরিবেশগত সম্মতিপত্র দেবার কাজ যতটা পারা যায় ত্বরাণ্বিত করতে হবে।কারণ উন্নয়ন মূলক কাজে প্রয়োজনীয় উপাদানের বিপুল ঘাটতি এবং কোভিডজনিত পরিস্থিতি। সঙ্গে সঙ্গে বারামুলা জেলায় ফিরোজপুরা নদীতে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই কাজ শুরু হয়ে যায়,কারণ সংশ্লিষ্ট কম্পানিটি এই সংক্রান্ত নীলামে জিতেছে মাত্র।
নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করার কথা আগেও বলেছি। নদীখননের ক্ষেত্রে নিয়ম আছে যে ৫ হেক্টারের বেশি নদীখাতে খননের আগে দুই কূলে বসত করা মানুষের কথা শুনতে হবে, পাবলিক হিয়ারিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। একটি ক্ষেত্রেও তা করা হয়নি।
একথা তো বোঝাই যায় ভূমিপুত্রদের মাটির ওপর যতোটা টান থাকবে,বহিরাগত বেওসায়ী বা চাকুরিরতদের ততোটা থাকবে না। তাদের বেশিরভাগের কাছেই পাখির চোখ প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ লুটে নেওয়া বা ট্যুরিজমের বিপুল পয়সা। ভূখন্ডের ইতিহাস, ঐতিহ্য, মিথ কোনটাতেই তাদের আগ্রহ না থা্কা স্বাভাবিক।কাশ্মীরিদের অবস্থা যেন এখন সেই পৌরাণিক সময়ের মতো যখন আকাশপথে যেতে যেতে প্রফেট সলোমন দেখতে পান গোটা উপত্যকা জমা জলের তলে অবলুপ্ত। তিনি শ্রীনগরের কাছেই একটি পর্বতচূড়ায় অবতরণ করেন । সেটি এখন তক্ত-ই-সুলেমান নামে খ্যাত। তাঁর অধীনস্থ কাশু নামক জিনকে তিনি সমস্ত জল সেঁচে ফেলতে আদেশ দেন।কাশু বিনীতভাবে নিবেদন করে মিরান নামে যে পরীটিকে সে ভালবাসে তাকে পেলে সে এই কাজ হাসিমুখে করে দেবে। প্রার্থনা পূরণ হলে কাশু একেবারে উত্তরে বারামুলাতে সম্পূর্ণ পর্বতশিরাকে এমন ঝাঁকুনি দেয় যে জমা জল বার হয়ে যায় এবং কাশ্মীর উপত্যকার অস্তিত্ব বহির্জগতের কাছে উন্মোচিত হয়। ভালবাসার দেশ,ইচ্ছাপূরণের দেশ, তাই কাশু-মিরান থেকে কালে কালে নাম হয় কাশ্মীর।
এই ভালবাসার দেশের রসপ্রবাহিনী সুজলা নদীগুলিকেই মেরে ফেলার চক্রান্ত চলছে, এ কী ভোলার মত দু:খ !
জম্মু-কাশ্মীরের নদী, জল, প্রকৃতি, মানুষ, মৌলিক অধিকার প্রভৃতি সহজেই লুঠ করা যায়, কারণ এ হচ্ছে ভারতের নয়া উপনিবেশ, যেমন এপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম!
শুধু বিচ্ছিন্নভাবে প্রকৃতি হননটুকু দেখাই যথেষ্ট নয়। প্রতিভা দি'র লেখায় এতোটা ন্যারেটিভ আশা করি না।
বহুদিন ধরে নদী লুন্ঠন চলছে। গঙ্গা সংযুক্তিকরণ তার একটি অংশ। তা কি বন্ধ হয়েছে? জল লুট।সোনাই নামের এক নদী হারিয়ে গেছে সোদপুর অঞ্চলে।৷ আমি একটি উপন্যাস লিখেছিলাম সোনাই ছিল নদীর নাম। বহু কথা বলা যায়। লেখাটি খুবই ভালো।
দাক্ষিণাত্যের জঙ্গল, উত্ত-পূর্বাঞ্চলের পর্বত, উত্তর পশ্চিমের পার্বত্য উপত্যকা - কারোর রেহাই নেই এই সর্বনাশা "উন্নয়ন" যজ্ঞের হাত থেকে। আগামী প্রজন্মের জন্য শুধু ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই রেখে যাব না আমরা। এর চেয়ে বাচ্চাকাচ্চাগুলিকে গলা টিপে মেরে ফেললেই হয়
কাশ্মীর কে স্বর্গ থেকে নরকে পরিণত করতে সবাই বদ্ধপরিকর। এটার সমাধান করবে না কোনো দেশ। তালে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলাটা খেলবে কি করে। ঐ যুদ্ধগুলোতে মরে তো আমাদের স্বামী ভাই পুত্র
ভীষণ ভালো লেখা। আমাদের নননদী গুলো এভাবেই শেষ হয়ে যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে পরিবেশ। পড়লে ভয় হয় খুব