যদি জিজ্ঞাসা করেন উর্বশী বুটালিয়ার ‘দ্য আদার সাইড অব সাইলেন্স’ পড়েছেন? অঞ্চল মালহোত্রার ‘রেমন্যান্টস অব আ সেপারেশান’? কিংবা ইয়াসমিন খানের ‘দ্য গ্রেট পার্টিশান – দ্য মেকিং অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান’? প্রতিটিতেই আমার উত্তর – না, পড়িনি। আপনি বলতেই পারেন, তা হলে দেশভাগ সম্বন্ধে কিছু জানেন কি? উত্তরে বলব, জানি। আমার বুঝতে শেখা ইস্তক চারপাশে যে মানুষদের পেয়েছি, পরিবার-পরিজন-আত্মীয়-বন্ধু, তাঁদের অনেকেই দেশভাগের ফলে উদ্বাস্তু হয়ে যাওয়া মানুষেরা অথবা তাঁদের ঠিক পরের প্রজন্ম।
উদ্বাস্তু মায়ের সন্তান দময়ন্তীর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও অনুরূপ। কিন্তু যেখানে তাঁর অনুভব আমার অনুভবকে ছাপিয়ে যোজন উচ্চতায় পৌঁছে যায় সেটা হল উনি উপরে বলা ঐ লেখাগুলি এবং আরো অনেক এই সংক্রান্ত লেখা পড়েছেন, ঋদ্ধ হয়েছেন তারপর তার প্রেক্ষিতে নিজের অভিজ্ঞতাকে বিছিয়ে রচনা করেছেন এক বেদনা-বিধুর দরদী উপাখ্যান। লেখকের নিজের কথায় "পার্টিশান মানে শুধু বর্ণহিন্দুর উদ্বাস্তু হওয়া নয়, বরং উপমহাদেশ জুড়ে প্রায় চল্লিশ মিলিয়ন হিন্দু মুসলমান শিখ হরিজনের রক্তেভেজা আগুনে পোড়া কাহিনি। এই কথাটাই পাঠকের দরবারে পোঁছানোর চেষ্টা করেছি এই কাহিনীর মাধ্যমে।" বাংলা চটি সিরিজের বই – সিজনস অব বিট্রেয়াল (সিজন – ১)। ছোট বই, পড়তে সময় লাগে অনেক।
সুযোগসন্ধানী এবং অবিমৃষ্য নানা সিদ্ধান্তের ফল দেশভাগের কারণগুলি যাই থাক, ভুক্তভোগী মানুষগুলির কাছে সেই ঋতুগুলি ছিল মর্মন্তুদ বিশ্বাসঘাতকতার। রাজনীতির কুটিল, জটীল আবর্তের সাথে দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা নানা তাচ্ছিল্য আর অবিচারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশের কি বঞ্চনার প্রতিকারের আশার পথ ধরে বের হয়ে এসেছিল মানুষের স্বভাবের গভীর গোপনে লুকিয়ে থাকা লোভ-ঈর্ষা-ঘৃণা-হিংসা-রিরংসারা। ধ্বংসের আগুনে ছারখার হয়ে আর রক্তের স্রোতে ভেসে গিয়েছিল অসংখ্য পরিবার। বর্ডারের দুই পারেই। এই বই অবশ্য পুর্ব পাকিস্তান থেকে আসা স্রোতকে কেন্দ্র করেই বিধৃত।
ভারতভাগ কেন, কিভাবে হয়েছিল, কার দায় কতটা ছিল এ সব নিয়ে কোন সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে সম্ভবত কোনদিনই পৌঁছানো হবে না। দেশভাগের ফলে উদ্বাস্তু হয়ে যাওয়া নারীর কন্যা দময়ন্তী এই বইয়ে সেই চেষ্টা করেনওনি। ভুক্তভোগী মানুষদের বেদনার আর সেই বেদনাকে হারিয়ে এগিয়ে চলার এই আখ্যানে তিনি ধরেছেন সেই বিশ্বাসভঙ্গের ঋতুগুলোকে – সেই মানুষগুলোর অনুভবে।
যাঁরা সেই সময়টা কাটিয়েছেন নিজেদের যাপিত জীবনে, বিধ্বস্ত হয়েছেন, দীর্ণ হয়েছেন সেই কালান্তক দিনগুলির যাঁতাকলে তাঁরা অনেকেই দুঃস্বপ্নের মত সরিয়ে রেখেছেন সেই দিনগুলোকে। তা না হলে সেই সময়ের ভারে তাঁরা দমবন্ধ হয়ে যেতেন, উঠে দাঁড়ানোর লড়াইটা লড়া যেতনা। কিন্তু সেই সময়ের কথাগুলি তা বলে পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি। লিপিবদ্ধ হয়েছে বিভিন্ন স্মৃতিকথায়, গবেষণায়।
সেইসব নানা লেখার নিবিড় পাঠ দময়ন্তীকে সাহায্য করেছে এই বইয়ের নির্মাণে। একই সাথে গবেষণা এবং স্মৃতিকথার সমন্বয়ে গড়ে ওঠা বারোটি পরিচ্ছদের কাহিনী-মালা। প্রতিটি পরিচ্ছদ-ই এক বা একাধিক কাহিনী। ছোট ছোট স্কেচ। প্রতিটি পরিচ্ছদের শেষে উল্লেখ করেছেন সেই বই বা তথ্যের যা তাঁকে ঐ পরিচ্ছদটি সৃষ্টিতে সাহায্য করেছে। ফলে সমগ্র সৃষ্টিটি হয়েছে চুম্বকে এক বিশ্বাসঘাতক সময়ের বেদনা আর তার থেকে উত্তরণের এক মনোগ্রাহী দলিল। এ এক আশ্চর্য সমন্বয়।
দেশের মানুষ বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল দেশের মানুষের সাথে। প্রতিবেশী রাতারাতি পাল্টে গিয়েছিল লুটেরায়, ঘাতকে। বরাবরের চেনা মুখ অপরিচিত হয়ে গিয়েছিল। আবার উদ্বাস্তু হয়ে যাওয়া পরিবারগুলি নিজেদের মধ্যেও আবিষ্কার করেছিল বিশ্বাসঘাতকতাকে। ভাই বঞ্চনা করেছে ভাইকে। আত্মীয় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আত্মীয়র থেকে। আরো ভয়াবহ ঘটনাও ঘটেছে। সমস্ত বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশী মার খায় শিশুরা আর মেয়েরা। এখানেও তার অন্যথা ঘটেনি। পরিবারের মান রক্ষায় রক্ষকের হাতে নিহত হয়েছে পরিবারের সবচেয়ে অসহায় মানুষেরা – মেয়েরা আর শিশুরা।
পড়েছেন, শুনেছেন, দেখেছেন। সেই সব আহরণের ফসল এই বইটি। কিন্তু শুধু বেদনার-ই আখ্যান লেখেননি দময়ন্তী। লিখেছেন সেই বিশ্বাসঘাতকতার ঋতুগুলিতে যে মানুষগুলি তাঁদের মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলেননি তাঁদের আখ্যানও। ছিন্নমূল মানুষ হারিয়েছে অনেক, আবার পেয়েওছে কিছু আশ্চর্য সঞ্চয়। নিজের প্রাণ বিপন্ন করে তাকে সাহায্য করেছে ঘাতকের-ই ধর্মের মানুষ, চরম ঝুঁকি নিয়ে। একেবারে অপরিচিত মানুষ বাড়িয়ে দিয়েছে সাহায্যের হাত, নিজের থেকে। যে হার-না-মানা জেদ ঐ অন্ধকার দিনগুলি পার করে আলোর মুখ দেখিয়েছিল, লিখেছেন সেই জেদের গল্পও।
স্থান – কিশোরগঞ্জ ময়মনসিংহ, কাল – ১৯৫০ সালের মার্চ মাস।
এইখান থেকে গল্প শুরু হয়। পরিচ্ছদ থেকে পরিচ্ছদে দময়ন্তী গল্প বলে চলেন কখনো অতীতে ফিরে গিয়ে কখনো সামনে এগিয়ে কালের ক্রমপঞ্জী ধরে। গল্প যখন শেষ হয় আমরা তখন পৌঁছেছি ১৯৫০ সালের জুন মাসে কলকাতা আর তার থেকে কিছু দূরের এক মফঃস্বল শহরে। বিধ্বস্ত, উৎখাত জীবনের শিকড় খুঁজে নিচ্ছে নূতন মাটির আশ্রয়।
গল্পের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ভবিষ্যৎ পাঠকের পাঠের আনন্দ নষ্ট করতে ইচ্ছুক নই। একটু ধরতাই দিয়েই তাই থামতে চাই।
পরিচ্ছদ ১ - ১৯৫০ মার্চ কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ।
দময়ন্তীর মায়ের আদলে গড়া চরিত্র যুঁইকে নিয়ে গল্প শুরু হয়। পাড়ার দুই মেয়ে আর সেই মেয়েদের একজনের মামার সাথে রাতারাতি দেশ ছাড়ে যুঁই। পরে কোলের ভাইটাকে নিয়ে দেশ ছাড়বে তাদের বাবা-মা। পালাতে না পারলে সেই রাতেই লুট হয়ে যেত যুঁইরা। যারা লুট করত আর যারা তাদের হাতে লুট হওয়া থেকে বাঁচতে সাহায্য করলেন উভয়ের ধর্ম একই ছিল। বিশ্বাসঘাতকতার সেই ভয়ঙ্কর ঋতুতে প্রতিবেশী মানুষগুলি বিশ্বাস ভাঙ্গেননি। নিজেরা ঝুঁকি নিয়ে সাহায্য করেছিলেন যতটা পারেন। কিন্তু আস্তে আস্তে আমরা জানব, সবার ভাগ্যে তা ঘটেনি।
পরিচ্ছদ ২ - ১৯৫০ মে, দমদম পশ্চিমবঙ্গ।
যুঁইরা সবাই ভারতে চলে এসেছেন। শুধু সেজ কাকা মনীশ ছাড়া। মনীশদের কথা জানা যাবে দশম আর একাদশ পরিচ্ছদে। যুঁইদের নূতন জীবন শুরু হতে চলেছে, মূলত তাদের কলকাতায় থিতু হওয়া জ্যাঠামশায় রমেশের সহায়তায়। পার্শ্ব-গল্প হিসাবে যুঁইয়ের স্মৃতিচারণে কিশোরগঞ্জের কাছেই বাজিতপুরে তার দাদুর বাড়ির গল্প উঠে আসে। সে বাড়ির পাশের বাড়িতে থাকতেন অনঙ্গদাদুর দুই বালবিধবা মেয়ে, একটু মাছ খেতে চায়, দেয়না কেউ।
পরিচ্ছদ ৩ - ১৯৩০ অক্টোবর, কলকাতা || ১৯৪৮ মার্চ, কলকাতা।
গল্পকার আমাদের নিয়ে চলে যান অনেক অতীতে, ব্রিটিশ রাজত্বে, টালিগঞ্জে, রাইটার্সের সামান্য কেরানী প্রমদাকন্তের শ্বশুর বাড়িতে। সামনে কঠিন জীবনের লড়াই নিয়ে একটি শিশু আজ জন্ম নেবে সেখানে। সেখান থেকে গল্প আবার ফিরতে থাকে বর্তমানে। প্রমদাকান্তের পরিবারের বেঁচে থাকার, বাঁচিয়ে রাখার কঠিন লড়াইয়ের সাক্ষী হই আমরা। পার্শ্বগল্পে উঠে আসে শিখ পরিবারের এক টুকরো রক্তাক্ত নির্মম ইতিহাস।
পরিচ্ছদ ৪ - ১৯৪৮ জুন, কলকাতা।
বিশ্বাসঘাতকাতার আরেক রূপ দেখতে পাই আমরা। উদ্বাস্তু পরিবারগুলির এক বিরাট অংশ এর ভুক্তভোগী।
পরিচ্ছদ ৫ - ১৯৪৮ ডিসেম্বর, কলকাতা || ১৯৪৮ ডিসেম্বর, কিশোরগঞ্জ।
ডিসেম্বর ২৪-কে ঘিরে গল্প আলাদা করে একটু পাক খেয়ে নেয়। পরিচ্ছদ শেষে টীকায় জানানো থাকে ২১ থেকে ২৩-এর মধ্যে ঘটেছিল অযোধ্যা মসজিদে রামলালার মূর্তি আবিষ্কার।
পরিচ্ছদ ৬ - ১৯৪৯ মে, কলকাতা।
প্রমদাকান্তর লড়াই চলতে থাকে। এক বাচ্চা ছেলের জীবন ধরে পার্শ্বগল্পে উঠে আসে দেশের আরেকপ্রান্তের বীভৎস ধ্বংসের বিষাদচিত্র।
পরিচ্ছদ ৭ - ১৯৫০ মে, কিশোরগঞ্জ || ১৯৪৯ জুলাই, কলকাতা।
গল্প ফেরে যুঁইদের জীবনে। তার দাদারা কলকাতায় এক মেসে থেকে থিতু হওয়ার চেষ্টা করছে। সেখানে উদ্বাস্তু হয়ে আসা সব হারানো মানুষ অতি তুচ্ছ কোন বস্তুকে আঁচলে বেঁধে রাখে পরম সম্পদ করে। কিশোরগঞ্জে যুঁইদের বাড়িতে কাজ করা এক মানুষের ক্ষুব্ধ সংলাপে ধরা পড়ে আসন্ন বিপর্যয়ের উপাদানগুলির একটি – মধ্যবিত্ত মননের এক অন্ধকার দিক। কে জানে কোন অনাদি অতীত থেকে নিম্নবর্গের মানুষকে মানুষের সম্মানটুকুও না দেয়ার পুরুষানুক্রমিক অভ্যাস। বর্ডারের দুই পারেই ধিকি ধিকি আগুন জ্বলছে। দুই দেশেই সময় এক ভয়ঙ্কর হত্যাযজ্ঞের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সাধারণ মানুষ এখনও জানে না সেটার কত কাছে এসে গেছে তারা।
পরিচ্ছদ ৮ - ১৯৪৯ নভেম্বর, কলকাতা || ১৯৪৯ ডিসেম্বর, কলকাতা।
গল্প ফিরে গেছে কয়দিন আগে, ধ্বংসের শুরুর দিকের দিনে। কলকাতায় বীভৎসভাবে অত্যাচারিত এক মুসলিম মেয়ের উল্লেখে আমরা জানি দাঙ্গা কোন ধর্মকেই রেহাই দেয়নি।
পরিচ্ছদ ৯ - ১৯৪৯ ডিসেম্বর, কলকাতা || ১৯৫০ জানুয়ারি, কলকাতা।
গল্প ঘুরে আসে প্রমদাকান্তের পরিবারের জীবন যুদ্ধে।
পরিচ্ছদ ১০ - ১৯৫০ ফেব্রুয়ারি ১১, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ || ফেব্রুয়ারি ৯, কলকাতা || ফেব্রুয়ারি ১৮, কিশোরগঞ্জ।
এইখানে গল্প এসে পৌঁছেছে প্রথম পরিচ্ছদের প্রস্তুতিতে - কেন দেশ ছাড়তে হল যুঁইদের। পরিচ্ছদ শেষের টীকায় উল্লিখিত হয় - ১১ই ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে দাঙ্গা শুরু হয়। ১২ই ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা ও ময়মনসিংহের মধ্যে চালু আখাউরা ভৈরববাজার রুটের আপ ও ডাউন ট্রেন মেঘনার উপর ভৈরব ব্রিজের মাঝখানে দাঁড় করিয়ে সমস্ত হিন্দু প্যাসেঞ্জারকে মেরে ফেলা হয়েছিল। যাঁরা প্রাণ বাঁচাতে নদিতে ঝাঁপ দেন তাঁদের ইট ছুঁড়ে মাথা ফাটিয়ে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। সূত্রঃ লন্ডন ইকোনমিস্ট ও ম্যাঞ্চেস্টার গার্ডিয়ান পত্রিকার সাংবাদিক Taya Zinkin এর রিপোর্ট।
পরিচ্ছদ ১১ - ১৯৫০ মার্চ, কলকাতা || এপ্রিল, কলকাতা।
এক বাড়িতে জুঁইয়ের জ্যাঠামশায় রমেশ এক ভয়ঙ্কর খবর জেনেছেন। আরেক বাড়িতে প্রমদাকান্তর মেয়ের শ্বশুরবাড়ির দুঃসংবাদ। ধর্ম-বিদ্বেষ জাঁকিয়ে বসছে সাধারণ মানুষের মনে। বিশ্বাসঘাতক ঋতুগুলির ফল ফলছে আগামী বহু যুগের উপর তার বিষ ছড়িয়ে দিতে।
পরিচ্ছদ ১২ - ১৯৫০ জুন, মীর্জাপুর স্ট্রীট, কলকাতা || ভবানীপুর, কলকাতা || দমদম, কলকাতা || বিশালাক্ষীতলা, (রিষড়া)।
পরিচ্ছদের দ্বিতীয় অধ্যায় প্রমদাকান্তের পরিবারের। বাকিগুলি যুঁইদের। উদ্বাস্তু মানুষগুলিকে তাদের চারপাশের অনেকেই সহজভাবে নিচ্ছে না। কিন্তু তাদের ত হাল ছাড়ার উপায় নেই। চতুর্থ অধ্যায়ের দ্বিতীয় বাক্যে জানা যাচ্ছে এ জায়গার অবস্থান, রিষড়া। যুঁইরা এখানে উঠে এসেছে। বছরের মাঝখানে এসে ক্লাস নাইনে ভর্তি হয়েছে সে। আগের স্কুলের কোন সার্টিফিকেট না থাকলেও বড়দিদিমণি নিজের দায়িত্বে ভর্তি করে নিয়েছেন। এই মানুষটির স্নেহ এই প্রতিকুল পরিবেশে যুঁইয়ের মনে আশার আলো জ্বালিয়ে রাখছে। পরিবারটি আস্তে আস্তে নতুন জায়গায় মানিয়ে নিচ্ছে। প্রচলিত মূল্যবোধকে সরিয়ে নতুন দিনের মূল্যবোধ জায়গা করে নিচ্ছে। পার্শ্বগল্পে বাজিতপুর গ্রামের সেই দুই বালবিধবা সম্ভবতঃ অন্য ধর্মে অন্তরিত হয়ে তুলনায় বেশী গ্রহণযোগ্য জীবনযাপনের খোঁজ পেয়েছেন। মানুষ হার মানছেনা। বিশ্বাসঘাতকতার ঋতু আবার হয়ত কালচক্রে ফিরে আসবে একদিন, কিন্তু এখন সে সরে যাচ্ছে।
আজ যখন দুনিয়াজুড়ে বিশ্বাসঘাতকতার ঋতুদের ফিরে আশার পদধ্বনি নিকটতর হচ্ছে, সেই সময় হয়ত এই বই সেই ঋতু হতে উত্তরণের কিছুটা হলেও শক্তি যোগাবে।
দেবরাজ-এর প্রচ্ছদ এবং চিরঞ্জিত-এর নামাঙ্কণ এই বইয়ের সাথে যথাযথ।
স্বাতী, সায়ন, পার্থ, ঈপ্সিতা সৈকত আর বইদ্বীপ - সকলকে ধন্যবাদ পাঠকের কাছে এই চমৎকার প্রকাশনাটি তুলে ধরার জন্য।
প্রিয় পাঠক এই পর্যন্ত যদি এসে থাকেন তবে আর দেরী কেন? সময় করে পড়ে ফেলুন বইটি। গুরুচণ্ডালীকে অভিবাদন এই বইটি প্রকাশের জন্য। তবে তার থেকেও বেশী তাকে ধন্যবাদ জানাই সম্প্রতি এটি ই-বই করে বার করার জন্য। কিন্ডলে পড়তে না পারলে এই সময়ে আমার পক্ষে এই মূল্যবান সুপাঠ্য বইটি পড়া সম্ভব হত না।
এই গল্প সিজন-১এর। দুই পরিবার আলাদা স্রোতে চলেছে। সিজন-২-তে এসে হয়ত পরস্পরে মিলবে তারা। অপেক্ষায় থাকলাম সেই বইয়ের।
আলোচনা ভালো লাগলো। পাঠককে বইটা সম্পর্কে আগ্রহী করার মতো পাঠপ্রতিক্রিয়া।
আমাদের মতো পরবর্তী প্রজন্মের উদ্বাস্তু, যারা আজও রয়েছে শিকড়ের সন্ধানে, তাদের অতি পরিচিত চরিত্রেরা ফুটে উঠছে ছত্রে ছত্রে। অবশ্যই পড়ার আগ্রহ রইল।
ধন্যবাদ নাহার তৃণা। আশা করি আরো বেশী পাঠক বইটি কিনবেন।
ধন্যবাদ অনিন্দিতা। পড়ে ফেলুন তা হলে।
দমুদি! ঐটি টাইপো, শুধরে নিয়েছি। ধরিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। তবে টাইপোটিকেও ধন্যবাদ। ঐটি ছিল বলেই না তোমার আগমন জানা গেল। :)