এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বই

  • ইনেজ - কার্লোস ফুয়েন্তেস

    দময়ন্তী
    আলোচনা | বই | ০৯ জুলাই ২০০৬ | ৭৭৯ বার পঠিত
  • কার্লোস ফুয়েন্তেসের নাম আমি প্রথম শুনি এখানেই। The Crystal Frontier এর আলোচনা পড়ে আগ্রহী হই ফুয়েন্তেস সম্বন্ধে। আর ঠিক সেইসময়ই একদিন "বার্নস অ্যান্ড নোবলস" এ গিয়ে দেখি ফুয়েন্তেসের ২-৩ টি বই অসম্ভব কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ঝাঁপিয়ে পড়ে যে বইগুলি কিনলাম, এই Inez বইটি তার অন্যতম।

    দুইখানা ঠাসবুনোট লাভ স্টোরি একসাথে বুনে তৈরী এই উপন্যাসটি। যা এক কিশোরীর বিনুনীর মত ঝলমলিয়ে দুলে ওঠে, ডগায় বাঁধা অস্বছ কিন্তু স্বপ্রভ কৃস্ট্যালের দ্যুতিতে চোখ ধাঁধিয়ে দিয়ে।

    একদিকে গ্যাব্রিয়েল আটলান ফেরেরা - মিথিক্যাল অর্কেস্ট্রা কনডাকটর এবং প্রতিভাময়ী মেক্সিকান গায়িকা ইনেজ প্রাদা-র প্রেম, অন্যদিকে প্রাক ঐতিহাসিক, সম্ভবত: প্রথম মানবগোষ্ঠীর "নেহ-এল" এবং "আহ-নেল" এর গড়ে উঠতে থাকা প্রেম, ভয়, মৃত্যুর এক উপাখ্যান, দুই কাহিনীর মধ্যে যোগসূত্র হল এক কৃস্ট্যাল সীল -- opequ but luminous . আর যোগসূত্র হল সঙ্গীত --- আদিম সঙ্গীত অথবা বলা যাক আদিম প্রেমিক প্রেমিকার প্রথম সঙ্গীতের বোধ।

    "We shall have nothing to say in regard to our own death"

    বর্ষীয়ান মায়েস্ত্রো গ্যাব্রিয়েলের মাথায় উপরের এই লাইনটি ঘুরেঘুরে আসে। তাঁর সাহস হয় না তা কাগজে লিখে ফেলতে , যদি সত্যি হয়ে যায়! আবার কথাটি তো আসলে সত্যই। কোন মৃত লোক জানে না মৃত্যু কি? আবার কোন জীবিত লোকও জানে না তা। এই বিচিত্র দোলাচলে দুলতে থাকে মায়েস্ত্রোর মন ---- হাতে থাকে এক কৃস্ট্যাল সীল -- কেটে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। সম্পূর্ন গোল এক সীল। যে সীল কখনই ব্যবহার কারা যাবে না কোন নথিপত্র বা দরজা বা অন্য কোন বস্তু সীল করতে, এর সুষম গোল আকারের জন্য। তবে কি উদ্দেশ্যে এটি নির্মিত? জানে না গ্যাব্রিয়েল, শুধু হাতে নিয়ে বসে থাকে আর ভাবে। কি ভাবে? তাও মনে থাকে না সবসময়। শুধু হাতে থাকে সেই কৃস্ট্যাল সীল --- যা তারই বাড়ীর চিলেকোঠা থেকে খুঁজে এনে ইনেজ তাকে দিয়েছিল উপহার হিসাবে।

    মায়েস্ত্রো বারেবারে উচ্চারণ করে "ইনেজ" -- অদ্ভুত নাম! তার সাথেই ছন্দ মিলিয়ে আসে রিগ্রেস। "ইনেজ রিগ্রেস, ই-নেজ রি-গ্রেস"। সুর, ছন্দ, তাল, মিশে যায় গ্যাব্রিয়েলের মস্তিস্কে, ঐ কৃস্ট্যাল সীলেও হয়ত বা মিশেছে তারা। কে জানে!

    ৯৩ বছরের ফ্রেঞ্চ ইটালিয়ান মায়েস্ত্রো গ্যাব্রিয়েল, যে নত হয় শুধু তার পূর্ববর্তী কনডাকটরদের উদ্দেশ্যে, বিশেষত: Berlioz এর নামে, তাঁরই উদ্দেশ্যে। গ্যাব্রিয়েলের শ্রেষ্ঠ কীর্তি The Damnation of Faust, Berlio । এর সৃষ্ট অপেরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লন্ডনে এই অপেরা পারফর্ম করার জন্য যখন মহড়া দেওয়াচ্ছে গ্যাব্রিয়েল, তখনই এক লালচুলো গায়িকা গেয়ে ওঠে খোলা গলায়, তীব্রস্বরে। মায়েস্ত্রোর চেয়েও উঁচু স্কেলে সে গেয়ে যায়, অবলীলায় উপেক্ষা করে কিংবদন্তী মায়েস্ত্রোর ধমক। আবার সেই মেক্সিকান গায়িকাই গ্যাব্রিয়েলকে দেখে ফ্যালে চুড়ান্ত এমব্যারাসিং অবস্থায়, যখন সে এক বাড়ীর কোনায় নিজেকে হাল্কা করছিল।

    ইনেজ রোজেনউইগ -- মেক্সিকান দিভা। সমুদ্রের ধারে এক কটেজে গ্যাব্রিয়েল তাকে শোনায় তার ভাইয়ের গল্প। যে ভাইকে দেখতে একেবারে তার বিপরীত, যে হয়ত বেঁচে আছে ফ্রান্সের কোথায়ও, হয়ত বা যুদ্ধ করছে। দেখায় তাদের দুই ভাইয়ের টিনএজের ফোটো। বলে ঐ ছেলেটির মধ্যে সেও কিছুটা মিশে আছে, যেমন তার মধ্যেই কিছুটা মিশে আছে তার ভাই। গ্যাব্রিয়েল বলে চলে --
    ---- He confesses he was jealous of me, but being jealous just means making the person we'd like to have all to ourselves more important. Jealousy Inez, not envy. Envy is poisonous, pointless, because we want to be different person. Jealousy is generous, --- we want the other person to be ours.

    Jealousy আর Envy সমার্থক জানতাম। ফুয়েন্তেসের কাছে প্রথম জানলাম You are jealous means you own that person. Jealousy - not envy । নিজের অগোচরেই ভাবতে থাকি প্রতিটা jealousy আসলে jealousy ছিল নাকি envy?

    ইনেজের আগ্রহ ক্রমশ: বাড়তে থাকে সেই অনামা ভাইয়ের প্রতি, যার নাম মায়েস্ত্রো একবারও উচ্চারণ করে না। বরং বোঝাতে চায় তারই মধ্যে আছে তার ভাই। কিছু জানতে পারে না ইনেজ সেই সদ্যযুবক সম্পর্কে। ছবিটি নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে আর ঘুম থেকে উঠে দেখে ছবিতে আছে শুধুই গ্যাব্রিয়েল। তার হাত বাড়ানো, যেন কারো কাঁধে হাত রেখেছে --- কিন্তু সেখানে কোন কাঁধ নেই, নেই সেই নামহীন যুবক, উবে গেছে। সম্পূর্ণ মিলিয়ে গেছে ফোটো থেকে।
    ******************************************************************
    গাছের ডালে, পাতার ফাঁকে লুকিয়ে দেখে 'সে'---- বানরেরা মারামারি করছে। গাছ থেকে নামতে গেলে কামড়ে ধরতে পারে বিষাক্ত কীট, 'সে' ভাবতে পারে না কিছুই, কিন্তু চেষ্টা করে কিছু একটা করার। একটি বানর মেরে ফ্যালে কীট। 'সে' এবারে নামতে পারে নিশ্চিন্তে। আবছাভাবে তার যেন মনে হয় এই ঘটনা ঘটেছে আগেও। কবে? কোথায়? সেসব মনে পড়ে না, এমনকি প্রশ্নগুলো ও জাগে না --- শুধু এক বোধ, অন্ধ আদিম এক বোধ তাকে চালায়।
    "সূর্য্য"
    "চন্দ্র"
    -------
    "জঙ্গল"
    এই সবই অনেক পরে সৃস্ট এক এক শব্দ। তখন তার কাছে ছিল প্রাণ বাঁচানোর একমাত্র লক্ষ্য। আর তারই প্রয়োজনে কিছু ধ্বনিসমষ্টি সে সৃষ্টি করে চলে প্রতিদিন দেখা বস্তুসমূহের জন্য। অতীত নেই, ভবিষ্যত নেই -- সে শুধু বাঁচে এই মুহূর্তটির জন্য। এই মুহূর্ত, এই মুহূর্ত, এই মুহূর্ত ........... এর আগে পরে 'সে' জানে না।

    গাছ থেকে নেমে একদিকে গেলেই আসে সেই উত্তাল জলরাশি, জল কি "সে' জানে না ---- কিন্তু জানে সেখানে 'সে' ধুয়ে মুছে ফেলতে পারে তার গায়ের সাথে লেগে থাকা দ্বিতীয় চামড়া, পচা পাতার পুরু স্তর, যা তাকে সাহায্য করে ডালে পাতার ফাঁকে লুকিয়ে থাকতে। কখনও সেই সমুদ্রে পাড়ে গিয়ে দুই পা ফাঁক করে সমস্ত দেহ ঝাঁকিয়ে, মুচড়ে, দুই হাত শূন্যে তুলে চীৎকার করে ওঠে 'সে' --- যেন এক্ষুণি কোন শাবকের জন্ম দেবে 'সে' --- এক জান্তব চীৎকার। এ চীৎকার , এই আলোড়ন আসে তার শরীরের অভ্যন্তর থেকে। যেন কেউ তার ভেতর থেকে তাকে বাধ্য করে নিজের উপস্থিতি জানান দিতে। সে যে 'সে', এক স্বতন্ত্র অস্তিত্ব, ঐ ছোট্ট মৃত মাছ নয়, এই বোধ কোথায়ও ছুঁয়ে যায় তাকে, বাধ্য করে আত্মপ্রকাশে। সমুদ্রের গর্জনের সাথে মিশিয়ে, তাকে ছাপিয়ে আত্মপ্রকাশের প্রথম প্রচেষ্টায় সৃষ্টি হয় প্রথম স্বর --- যাকে সুর বললেও কোন ক্ষতি নেই, কারণ সুরের বোধ তখনও অনেক দূর।

    যে অন্ধ বোধ তাকে এনেছিল সমুদ্রের পাশে, সেই বোধের তাড়নায়ই 'সে' পেছন ফিরে হাঁটতে থাকে আরো গভীর জঙ্গলের দিকে। এই জল খাওয়া যায় না। তাকে যেতে হবে সেই কাদাগোলা জলের দিকে, গাছের পিছনে যা বয়ে চলে অপেক্ষাকৃত সরু ধারায়। নদীর পাশে পৌঁছে 'সে' জল পান করে প্রাণভরে। আর তারপরেই কে জানে কেন সেই নৃত্যগীতের পুনরাবৃত্তি করে চলে। কেউ কি শুনছে তার ঐ ঘড়ঘড়ে গলার চীৎকার? না। নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে থাকা, ছোট মাছেদের খেয়ে ফেলতে থাকা বড় মাছেরা কি দেখছে তার এই নাচ? না। তবু 'সে' নাচে, গায়, তাক্ষণিক কোন প্রতিক্রিয়ার বাইরেও অন্য কিছু 'সে' করতে পারে - এই বোধ তাকে দিয়ে করায়। 'সে' থাকবে -- এই জলস্থল আকাশের মাঝে "সে' থাকবে অনেক অনেকদিন -- এই সত্য প্রতিষ্ঠিত করতেই যেন 'সে' নিজের অস্তিত্ব ঘোষণা করে চলে, এযাবৎকাল মেনে আসা আত্মরক্ষার অন্যতম শর্ত, গোপনীয়তা ও লুকিয়ে থাকার প্রবণতা ত্যাগ করে। 'সে' সহসাই অনুভব করে এতদিন 'সে' খেয়েছে, ঘুমিয়েছে, চলেছে সম্পূর্ন নি:শব্দে, ঐ মাছের মত, ঐ পোকার মত, ঐ ফুলফলের মত, গাছের মত। একসময় শ্রান্ত ক্লান্ত হয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে উপস্থিত হয় আরেক অজানা ভুমিতে। চড়তে থাকে পাহাড়ে। উচ্চতার চ্যালেঞ্জ সামলাতে চোখ বন্ধ করে চড়তে থাকে, যতক্ষণ না এক প্রচন্ড চীৎকার তাকে থামতে বাধ্য করে। চমকে চোখ খুলে সে দেখে আর এক পা বাড়ালেই মৃত্যু। নীচে ধু ধু শূন্যতা। একটু দুরে আরেক পাহাড়ের থেকে বেরিয়ে আসা পাথরের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে সে, যে চীৎকার করে তাকে থামিয়েছে।

    ওদিকের 'সে'-র গলার জোর তার অনেক বেশী। শব্দের বিনিময় চলে
    eh de; eh me
    aidez; aimez
    কোনোভাবে মস্তিষ্কে বার্তা পাঠায় বনরস রষৎন ।
    সে দুই বাহু প্রসারিত করে আবার ভাঁজ করে বুকের ওপরে রেখে বারে বারে বলে "আহ নেল" , "আহ নেল"। ওদিকের সেই "সে"ও বলে "নেহ এল", "নেহ এল"
    সে ( she ) : আহ নেল ... আহ নেল ... আহ নেল।
    সে ( he ) : নেহ এল ... নেহ এল .... নেহ এল।

    এরপরে গড়ে ওঠার গল্প, বোঝাপড়ার গল্প, আকর্ষণের গল্প, হারিয়ে ফেলতেও পারে-- এই ভয়ের গল্প .......

    কালের নিয়মে কেটে যায় অনেক বছর। সমুদ্রতীরের কটেজে ইনেজকে ফেলে গ্যাব্রিয়েলের চলে যাবার বহু বছর পরে আবার তাদের দেখা হয়। ইতিমধ্যে ইনেজ রোজেনউইগ হয়েছে ইনেজ প্রাদা। অমেক্সিকানদের উচ্চারণের সুবিধার জন্য, মঞ্চে ভাল দেখাবে বলে, রোজেনউইগ পরিত্যক্ত হয়। আত্মপ্রকাশ করে
    I N E Z --- P R A D A ।

    মায়েস্ত্রো বলে সঙ্গীত এক কৃত্রিম বস্তু। মানুষের স্বাভাবিক প্যাশনকে ভাষায় রূপ দিতে সৃষ্টি হয় সঙ্গীত। যে স্বর, শব্দবন্ধ কানে শোনা যায় না, অনুভব করা যায় মাত্র, তাকে কৃত্রিম ভাষায় মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্যই সঙ্গীত।

    আবারও তাদের মাঝে আসে গ্যাব্রিয়েলের সেই রহস্যময় ভাই। একপাশ ফাঁকা হয়ে যাওয়া ছবিটা থেকে গেছে ইনেজের কাছেই। আবারও বিচ্ছেদ হয় তাদের, আবার দেখা হবে বলেই হয়ত।

    সুরে সুর, তালে তাল মিশে যায়। সঙ্গীত তাদের বাঁধে একত্রে।
    সুর কাটে, তাল কাটে। সঙ্গীত তাদের দূরে ঠেলে দেয়।

    গ্যাব্রিয়েলের হাতে থেকে যায় কৃস্ট্যাল সীল। ইনেজের কাছে গ্যাব্রিয়েল ও তার ভাইয়ের ফোটো, যে ভাই হয়ত কোনোদিন ছিলই না, অথবা এখনও আছে ....
    ..........................
    ..........................
    নেহ এল ও আহ নেলের আশেপাশে এখন তাদের মতই অনেকে থাকে। তাদের এক দলপতিও আছে। গোষ্ঠীর ধারণা এখন আর নতুন নয়। তারা শিখেছে বিভিন্ন পাখীর ডাক অনুকরণ করতে, চেষ্টা করে জলপ্রপাতের ধ্বনি গলায় তুলে আনতে। একই মায়ের সন্তানদের মধ্যে মিলিত হওয়া -- এখন অপরাধ বলে গণ্য হয়। আহ নেলের শিশুকন্যা তাকে ব্যস্ত রাখে দিনের অনেকটা সময়। আহ নেল কিন্তু ভেতর থেকে অনুভব করে এক অদ্ভুত গর্ব আবার একই সাথে এক বিষন্নতা ---- এই সময়টা সে নেই নেহ এলের সাথে, থাকতে পারে না আর সর্বদা তার পাশে পাশে।

    নেহ এল কি কিছু গোপন করছে তার কাছে? ---- তাকে নিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসে এক গুহার কাছে। অন্ধকার গুহাভ্যন্তরে থাকে এক প্রাণী। সর্বাঙ্গ লোমে ঢাকা এই প্রাণীকে দেখে আহ নেল ভয়ও পায় --- আবার কি যেন এক আকর্ষণও বোধ করে। "সে" কিন্তু ভারী খুশী হয়, উত্তেজিত হয়ে ওঠে আহ নেলকে দেখে। কতকিছু বলে যায় কিচিরমিচির করে ----- কিছুই বোঝে না আহ নেল। তাকে জড়িয়ে জাপটে চেটে চেটে আদর করে "সে"। অবশেষে দুই পা অনেকটা ফাঁক করে বসে দুপায়ের ফাঁক থেকে দুইহাতে কিছু তোলার ভঙ্গী কারে সে --- কোন শিশু তুলে ধরার ভঙ্গী। বিদ্যুচ্চমকের মতই আহ নেলের কাছে পরিস্কার হয়ে যায় "তার" পরিচয়।

    "------প্রথম মায়ের প্রসববেদনা পৃথিবীর মনে আছে"

    আহ নেলও এবারে জড়িয়ে ধরে সেই অর্ধমানবীকে। শেষে "সে" আহ নেলকে চলে যেতে ঈঙ্গিত করে। "সে" এক গাছের ডাল ধরে দোল খেয়ে চলে যায় একটু দূরে অন্য গাছে। আহ নেল দেখে টুকটুকে গোলাপী এক হাতের তালু, অমন লোমশ হাতের তালু অমন গোলাপী!! কিন্তু নেহ এলের সাথে কি সম্বন্ধ এর? সে কেন লুকিয়ে খাবার এনে দিয়ে যায় একে? এই বৃদ্ধাকে? কেন অত ভায়ে ভায়ে থাকে নেহ এল আজকাল? এ তো আর বেশীদিন বাঁচবে না ------ আর আবারও বিদ্যুচ্চমকের মতই নেহ এলের পরিচয়টাও পরিস্কার হয়ে যায় আহ নেলের কাছে।

    " একই আকাশের নীচে এক পৃথিবীর বুকে
    প্রথম মায়ের দুধের গন্ধ সব মানুষের মুখে"

    এরপরেও আছে কিছু। গ্যাব্রিয়েল এবং ইনেজের শেষ পারফরমেন্সের গল্প। অবিকল ইনেজের মত দেখতে এক লালচুলো নগ্ন গায়িকার মৃত শিশু হাতে নিয়ে আবির্ভাবের গল্প। ইনেজকে নগ্ন করার গল্প। দুই গায়িকার একে অপরের মধ্যে মিলিয়ে যাবার গল্প। The Damnation of Faust ।

    "হ্যাস হ্যাস হ্যাস হ্যাস হ্যাস হ্যাস
    হাপ হাপ হাপ হাপ হাপ হাপ হাপ"
    শোয়ের শেষে মায়েস্ত্রোর একা দাঁড়িয়ে থাকার গল্প।

    আহ নেলের পালানোর গল্প। তার কন্যাকে বাঁচাতে না পারার গল্প। তার কন্যাকে, ভবিষ্যতের কন্যাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিজ্ঞার গল্প। ইনেজের স্বপ্নে তাদের আসাযাওয়ার গল্প।

    বৃদ্ধ মায়েস্ত্রো আর তার কৃস্ট্যাল সীল - "ই-ই-নেস রি-ই-গ্রেস"
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৯ জুলাই ২০০৬ | ৭৭৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন