রাম যদি হেরে যেতো রামায়ণ লেখা হতো , রাবণ দেবতা হতো সেখানে। এই করোনা যুদ্ধে হেরে যারা বিদায় নিয়েছে পৃথিবী থেকে তাহলে কি তারা অন্য রামায়ণ পড়েছে। করোনা কি তাহলে সেই নতুন ধর্ম ? নতুন চিন্তা ভাবনা? নতুন ইসম ? এ কি অন্য এক মহাশক্তি যা সমস্ত মানব জাতির টাইমপাস রিলিজিওনকে কলা দেখাচ্ছে। হয়তো অন্য কিছু। হয়তো অন্য মসীহা , অন্য শক্তি যে আমাদের একটা টানেলের মধ্যে ঢুকিয়ে লকডাউন করে দিয়েছে। আর সেই টানেলের শেষে আমরা , মানুষ হয়ে বেরোবো।
যদি ধর্মান্ধদের নিম্নমেধার সমকক্ষ হয়ে ধর্ম ও করোনার বিচার করতে হয়। তাহলে বলতে হবে ইনি সর্বভূতেহিতেরতাঃ। যেকোনো জীবেই নাকি ইনি বিরাজমান। ধর্মগুরু আর বিজ্ঞানীদের ছাড়া চর্মচক্ষু দিয়ে এনাকে দেখা যায় না। বিশ্বাস করতে হবে যে ইনি আছেন আর আমাদের সমস্ত কিছুকে কন্ট্রোল করছেন। এনার জন্যেই আমরা ঘরে থাকছি। এনার জন্যেই আমরা ঘর ছেড়ে বেরোচ্ছি। ইনি মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করেন না। জন্ম , জনন শেষ করে জরার পরিত্রাণে মুখিয়ে আছেন। মানুষকে বলছেন , “তোমার দ্বারা কিস্যু হবে না। তোমরা ইয়ে বা ইশে।”
করোনা সবথেকে দ্রুত প্রচারিত দেববাণী যা worldometer বা জন হপকিন্স এর দ্বারা সারা পৃথিবীতে প্রচন্ড বেগে ছড়িয়ে পড়ছে। ইনি নিরাকার ব্রহ্ম তাই একটা পি এন জি ছবির ওপর ভরসা করে বাড়িতে বাড়িতে পুজো হচ্ছে। বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এনার সাথে দেখা করতে গেলে মাথায় কাপড় দেওয়ার মতো মুখে কাপড় দিয়ে যেতে হচ্ছে। পরিচ্ছন্নতা যে কোনো ধর্মের মূল স্তম্ভ। কিন্তু ইনি সবাই কে সত্যি সত্যি পরিষ্কার ধবধবে করে ছেড়ে দিচ্ছেন। এমনকি স্বয়ং প্রকৃতি পরিষ্কার হয়ে এনাকে থ্যাংকু বলছে।
মানুষ যেরকম ভাবে দোজখের আগুনে পুড়ে মরার ভয়ে সারা জীবন ঘ্যান ঘ্যান করে , সেরকম বাজার করতে যেতে ঘ্যান ঘ্যান করছে এই দেবীর ভয়ে। ইনি আত্মার মতো পোষাক পরিবর্তন করে সবার আট কুঠুরি নয় দরজা দিয়ে ঢুকে নিজের অস্তিত্ব বিস্তার করছে। ইনি পাপ পুন্য বিচার করে , দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন করছেন। যেহেতু ধর্মান্তকরণ ধর্ম বিস্তারের এক অস্ত্র তাই বেছে বেছে নাস্তিক চায়না , ক্রিষ্টান ইতালি , মুসলিম ইরান কে ধ্বংস করে এখন হিন্দুদের দিকে এগোচ্ছে। এমনকি ছাড়া হচ্ছে না আমেরিকাকেও যে অর্থ কে ধর্ম হিসেবে মানে।
ধর্ম প্রচারকদের ঘুলিয়ে দেওয়া ধর্মবাণীর মতো মিথ্যা প্রচারে করোনা ধর্মের জুড়ি নেই। সোশ্যাল মিডিয়া নামক অবতার ছেড়ে দিয়ে ভুল ভাল মিথ্যা ছড়িয়ে দেওয়াতে এর জুড়ি নেই। সত্যের যে অ্যাঙ্গেল থেকে দেখলে সত্য কে মিথ্যা লাগে সেই ভেলায় ভর করে পৃথিবীকে মুরগি করতে এর জুড়ি নেই। যখন এই ধর্মনাশে সবাই হাতে হাত দিয়ে লড়ছে তখন ছেড়ে দেওয়া হলো এমন এক প্রতিষেধকের নাম যা উচ্চারণ করতে ফাটে - হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন।
এর তপস্যায় কেউ প্রচুর খেয়ে ভুঁড়ি বাড়িয়ে কোলেস্টোরেল হয়ে মরবে , কেউ কচুপাতা সেদ্ধ খেয়ে অনাহারে মারা যাবে। সবাই কবরে পরে থাকবে প্লাস্টিকের মধ্যে। ঐসব পঞ্চভূতে বিলীন , সত্তর হুরী, স্বর্গ-নরক , জান্নাত-জাহান্নাম এই সব বাদ দিয়ে এখন তপস্যা একটাই বরপ্রাপ্তির উদ্যেশ্যে - “স্যার আমি ঘর থেকে বেরোতে চাই। “
এতো এর দ্রুতি - গতি - প্রগতি যে আর কিছুদিন পর থেকে মাঝে মাঝেই দেখা যাবে যাবে মন্দির - মসজিদ - গির্জা থেকে “সব ঝুট হ্যায় - সব ঝুট হ্যায়” বলতে বলতে উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটে বেরিয়ে আসছে পুরুত , পাদ্রী , মোল্লা। তারা খুঁজে বার করছে সেই করোনা বাহক মানুষগুলোকে যে জানেই না তার মধ্যে ভগবান রুপি করোনা বিরাজ করছে। তারপর সোজা তাদের পায়ে ঢিপ করে বলবে , “ত্রাহিমাম , ত্রাহিমাম , তুমিই আমার সিরিজ প্রেমের শেষটা।”