এইসময়েই সুটকেস গোছাচ্ছেন
আমি বলছি - "না"!
সাদা শার্ট ভিতরে ঢুকছে
বার করে দিচ্ছি
"না"
চুমু রদের দিন
দূর থেকে কথা বলার দিন
হাঁচিতে কাশিতে ভয় পাওয়ানোর দিন
আঁজলা আঁজলা ভাইরাস খেতে চাইছি
সান্নিধ্যে
বলছেন - "না"
আমাদের টানেলের মাঝখানে বিস্তীর্ণ আকাশ
স্ট্রাটোস্ফিয়ার
তার মধ্যে ব্যস্ত হয়ে ঘুরছে এন-নাইণ্টি ফাইভ মাস্ক
ইংরাজীতে একটা প্রবাদবাক্য আছে যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় “ চেনা শত্রু অপেক্ষা অচেনা শত্রু অনেক বেশি ভয়ঙ্কর”। তাই আসুন আমরা আমাদের অপরিচিত শত্রুকে ভালো করে চেনার চেষ্টা করি।
ভাইরাস- কাকে বলে?
করোনা ভাইরাস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার আগে আমাদের জেনে নেওয়া দরকার ভাইরাস কি বা কাকে বলে? ভাইরাস একপ্রকার অতি ক্ষুদ্র জৈব কণা বা অণুজীব। এরা এত ক্ষুদ্র যে একটা পিনের মাথায় ৫০ কোটি রাইনো ভাইরাস (যেটা সাধারণ সর্দি কাশির জন্য দায়ী) একসাথে থাকতে পারে। এরা নিজে থেকে বংশবিস্তার করে না তবে আক্রান্ত জীবিত কোষকে বাধ্য করে অসংখ্য ভাইরাসের জন্ম দিতে। পৃথিবীতে মানব জাতি সংক্রমণের ক্ষেত্রে ২১৯ প্রজাতির ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। মজার বিষয় হল, ভাইরাস না বেঁচেও শত সহস্র শতাব্দী কাটিয়ে দিয়ে আবার জীবন্ত হয়ে উঠতে পারে। তাই এরা স্বতন্ত্র্য।
করোনা ভাইরাস- নাম মাহাত্ম্য
করোনা ভাইরাসগুলি এক পরিবারভুক্ত ভাইরাস যারা স্তন্যপায়ী প্রাণী তথা পক্ষী সমাজে রোগ বিস্তার করতে পারে। মানবদেহে শ্বাসনালীতে সংক্রমণ ঘটায়। এই সংক্রমণের লক্ষণ সাধারণ ঠাণ্ডাজ্বরের মত হাল্কা হতে পারে। অন্য প্রজাতি যেমন মুরগি, গরু, শুযোর ইত্যাদির ক্ষেত্রেও এই ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে। মুরগীর ক্ষেত্রে উর্ধ শ্বাসনালী সংক্রমন, গরু বা শুয়োরের ক্ষেত্রে ডাইরিয়া দেখা যায়।
করোনা ভাইরাসের নামটির উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ করোনা থেকে যার অর্থ মুকুট বা হার। সূর্যের করোনার সাথে সাদৃশ্য রেখে এরূপ নামকরণ। এটি রাইবোভিরা পর্বের নিডোভাইরালস বর্গের করোনাভিডির গোত্রের অর্থো করোনাভিরিন্যা উপগোত্রের সদস্য।
করোনা ভাইরাসের প্রস্থচ্ছেদ
ভাইরাসের গঠন
ভাইরাসটি প্রস্থচ্ছেদ করলে দেখা যায়, সর্পিলাকার রাইবোনিউক্লিয়াস অ্যামাইনো অ্যাসিড (আর এন এ) এবং এন প্রোটিন একটি পুরু আবরণী পর্দা দিয়ে আবৃত। আবরণীর গায়ে অনেক একক সূত্রবিশিষ্ট অনেক গ্লুকোপ্রোটিন, এম প্রোটিন ইত্যাদি বর্তমান।
এই ভাইরাস ছড়ায় কি করে?
হাঁচি ও কাশির সাথে মানুষের মুখ বা নাক থেকে নিঃসৃত জলীয়কণা থেকে পাশের মানুষকে আক্রান্ত করে। করোনাভাইরাসের স্পাইকপ্রোটিন আক্রান্ত মানুষের কোষের উপর মিথঃক্রিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
করোনা ভাইরাস কি নতুন?
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কিন্ত আজকের নয়। ২০০২ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০০৩ সালের জুলাই মাসের মধ্যে সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম) করোনাভাইরাস দক্ষিণ চীন থেকে প্রাদুর্ভাব ছড়ায়। এতে ১৭ টি দেশে সর্বমোট সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৮০৯৮ এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৭৭৪ (৯.৬%)। আক্রান্তের সংখ্যা মেনল্যাণ্ড চাইনা ও হংকং এ বেশি ছিল।
এরপর ২০১২ আবার করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। প্রথম দেখা দেয় সৌদি আরবে। মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে মহামারীর আকার নেয়। সৌদি আরব, ওমান, কুয়েত, জর্ডন, লেবানন ইত্যাদি দেশ এই করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে। এর নাম দেওয়া হয়, মার্স (মীডল ঈস্ট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম) করোনা ভাইরাস। ২০১৯ সাল অবধি মোট সংক্রমণ সংখ্যা ২৪৯৪ এবং মৃতের সংখ্যা ৮৫৮ (৩৪.৪%)। এই রোগের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বাহক ছিল উট।
বর্তমান যে করোনা ভাইরাস (নোবেল করোনা ভাইরাস বা কোভিড ১৯ বা করোনা ভাইরাস ডিসিস ২০১৯) প্রাদুর্ভাব ছড়ায় উহান থেকে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু এর তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে মোট সংক্রমণ সংখ্যা ২ লাখের উর্ধে এবং মৃতের সংখ্যা ৯০০০ এর কাছে। সারা বিশ্বে মহামারীর আকার নিয়ে ভারতেও আছড়ে পড়েছে। ৩০শে জানুয়ারী ১ জন সংক্রামিত হওয়ার খবর ছিল আর ২২ শে মার্চ প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে আমরা যখন জনতা কার্ফু পালন করছি, পরিসংখ্যান অনুযায়ী সংক্রামিত সংখ্যা ৩৬৫ জন- তার মধ্যে ৩৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি এবং ২৪ জন সুস্থ হয়ে ফিরেছেন এবং মৃতের সংখ্যা ৭।
নোবেল করোনা ভাইরাস অন্য করোনা ভাইরাস থেকে আলাদা কেন?
এই ভাইরাসের আণবিক গঠন অন্য করোনাভাইরাসগুলির থেকে আলাদা হওয়ার কারণে এর সংক্রমণ প্রবণতা অনেক বেশি।
ওয়াশিন্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্রাকচারাল ভাইরোলজিস্ট ডেভিড ভিস্লারের মতে স্পাইক আবরণীর বাইরে যে শর্করা বিন্দু আছে, তার নিপুণ ছদ্মবেশ মানুষের রোগপ্রতিরোধকারী গঠনতন্ত্রকে ভাইরাস নির্ধারণ করতে বাধার সৃষ্টি করে।
নোবেল করোনা ভাইরাস ছড়ায় কি করে?
প্রধাণ সমস্যাগুলি কি কি?
১) আমাদের কাছে এখনো পর্যন্ত যা ওষুধপত্র আছে তা ব্যাক্টেরিয়া প্রতিরোধক। ভাইরাস প্রতিরোধক কোন ওষুধ বা ভ্যক্সিন নেই। রিসার্চ হয়ে যা ওষুধ আসবে তাও পেতে একবছর কমপক্ষে।
২) আগত প্রবাসী ও বিদেশিদের দ্বারা ভারতে এই ধরণের ভাইরাস সংক্রামিত হয়ে পড়ার সময় সাধারণ মানুষের কাছে ভাইরাসের লক্ষণ ও সংক্রমণের কারণ সংক্রান্ত তথ্য সকলের কাছে ছিল না। এই ধরণের ভাইরাস সংক্রমণ যে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে তা নিয়ে ভারত সরকার ও অসচেতন ছিলেন। ফলে বর্তমান উদ্ভুত সমস্যায় হু-র নির্দেশমত পর্যাপ্ত পরিমাণ মাক্স, গ্লাভস এর যোগান রাখতে পারেন নি। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ এই সকল সরঞ্জাম ছাড়াই স্বাস্থ্য কর্মীদের ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে হচ্ছে ও হবে।
৩)ভাইরাস সংক্রান্ত যে সকল টেস্ট সরঞ্জামের প্রয়োজন তা অপ্রতুল। মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সর্বদলীয় বৈঠকের ক্ষেত্রে যা জানা গেছে তা হল মাত্র ৯০ টা টেস্টিং সরঞ্জাম পশ্চিমবঙ্গের কাছে আছে। এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী উপসর্গ দেখে সংক্রমণের লক্ষণের প্রকাশ দেখলেই তবে টেস্ট করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
৪) ভাইরাস সংক্রমণের গতিপ্রকৃতির ক্ষেত্রে সচেতনতা অভাবের ফলে উচ্চ শিক্ষিত মানুষজন (ডাক্তার,গায়িকা, সরকারি কর্মচারী) এর সহজ ফাঁদে পা দিয়ে জ্ঞানান্তিকে বা অজান্তে সকলের সাথে মিশে সংক্রমণ প্রবণতা বাড়িয়ে তুলেছেন।
৪) অন্যন্য দেশের তুলনায় ভারতের পরিচ্ছন্নতার অভাব অত্যন্ত বেশি। ভারতের জনসংখ্যা ১৩০ কোটি। জনঘনত্ব অত্যন্ত বেশি। ফলে জাতিগত সংক্রমণ ঘটা খুব অস্বাবিক নয়। এই ধরণের সংক্রমণ ঘটে গেলে মহামারী ভয়াল ভয়ঙ্কর রূপ আমাদের সামনে ঘটে যেতে বেশি সময় লাগবে না।
উপায়?
উপরের আলোচনা থেকে যা দাঁড়ালো তাতে সমস্যা সত্যি জটিল এবং আমাদের অসাবধানতার সুযোগে অদৃশ্য শত্রু আমাদের অস্তিত্ব সংকটের সামনে দাঁড় করিয়েছে। কিন্ত অতি বড় শত্রুর ও দুর্বলতা আছে। সেটাই আমাদের কাছে আশার আলো। সেক্ষেত্রে গা জোয়ারির ক্ষেত্রে বুদ্ধি দিয়ে আমাদের সংকট মোকাবিলা করতে হবে। সহজ উদাহরণ দিয়ে আপনাদের বোঝাই। অবশ্য এই উদাহরণ আমার নয়, আমার এক পরিচিতের।
ফুটবল মাঠের অতিবড় স্ট্রাইকারের কাছে বল হল শক্তির প্রতীক। কিন্ত কোনভাবে বল যদি তাকে না দেওয়া হয়, তবে সেই স্ট্রাইকার যতই ভাল খেলুড়ে হোন না কেন, তাঁর জারিজুরি কোন কাজে আসবে না।
ঠিক তেমনি ভাবেই, আমরা যদি সচেতনভাবে পরষ্পর সংস্পর্শ এড়াই, স্বেচ্ছাগৃহবন্দী করে থাকি, তবে এই ভাইরাস সংক্রমণ মহামারীর আকার ধারণ করতে বাধা পাবে।
আশার আলো
মিডিয়ার দৌলতে আমরা শুধুমাত্র যেখানে অবহেলা, মানুষ মরার মিছিল সেই খবরগুলো পেয়ে আতঙ্কিত হচ্ছি। আমরা খোঁজ নিচ্ছি না, অভিজ্ঞ্র দেশগুলি কিভাবে লড়ছে এবং মহামারীর হাত থেকে রক্ষা পেয়ে আছে। আমার কাছে তথ্য অনুযায়ী দুটো দেশ আছে যারা ইতালি, ইরান, স্পেনের বিপরীতে মারণযজ্ঞের যুদ্ধে আশার আলো দেখিয়ে চলেছে। একটি দেশ হল সাউথ কোরিয়া এবং অন্যটি কানাডা।
সাউথ কোরিয়া
সাউথ কোরিয়াতে ২০১৫ সালে মার্স করোনাভাইরাস মহামারীর আকার ধারণ করার পর থেকে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে নোভেল করোনা ভাইরাসের সাথে লড়ে আশার আলো দেখিয়েছে। যেখানে চীন বা ইতালিতে সংক্রমনের সংখ্যা ৮১,০০০ ও ৬৩,০০০ এর ওপরে সেখানে সাউথ কোরিয়াতে এখন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সংখ্যা ৯০৩৭, যার মধ্যে ৩৫০৭ জন সুস্থ হয়ে ফিরেছেন আর মৃতের সংখ্যা ১২০ জন। এপিওডেমিলজিস্ট এবং সিওল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাওয়ান সেয়ান সিক এর মতে সঠিক অগ্রিম মালের মজুদ, ঠিকমতো স্বেচ্ছাগৃহবন্দী নির্ধারণ ও গণপরীক্ষা করার মাধ্যমে ভাইরাস আক্রমণ মহামারী আকার ধারণ করতে পারেনি। নীচে ওয়ার্ল্ড মিটার ইনফো থেকে লগ গ্রাফ দেখানো হল।
ফেব্রুয়ারী ১৫ থেকে সংক্রমণ সংখ্যা বাড়তে থাকলেও পরের দিকে গ্রাফের রেখা সরল রেখায় রয়ে গেছে। এর অর্থ অবস্থা স্থিতিশীলের দিকে।
কানাডা
একইভাবে কানাডাতেও প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো সারাদেশ স্বেচ্ছা গৃহবন্দী করে রেখে অবস্থাকে নিয়ন্ত্রনে এনে রেখেছেন। কানাডায় সর্বমোট সংক্রমণের সংখ্যা ২১৭৭ জন, যার মধ্যে ১১২ জন সুস্থ হয়েছেন এবং মৃতের সংখ্যা ২৪।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া সদ্য ২১ দিনের স্বেচ্ছাগৃহবন্দী ঘোষণা করার যৌক্তিকতা বুঝতে পারলাম। তিনি স্বাস্থ্য খাতে ১৫,০০০ কোটি টাকার প্যাকেজ ও ঘোষণা করেছেন। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকাও যথেষ্ট প্রসংশনীয়। এই ২১ দিনের গৃহবন্দীতে বিদ্যুত, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, প্রিণ্ট মিডিয়া, গ্যাস পেট্রলের দোকান, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, ওষুধপত্রের দোকান, সব্জীর দোকান ছাড় পাচ্ছে।
এই ঘোষণা না মানার অর্থ?
ওয়াশিন্টন ডিসি-র সেণ্টার ফর ডিসিস , ডায়নামিক্স, ইকোনমিক্স ও পলিসির অধিকর্তা রামানান লক্ষীনারায়নের মতে সেক্ষেত্রে ৩০ থেকে ৫০ কোটি ভারতীয় মানুষ এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আক্রান্ত হতে পারে এবং এর ২% অর্থাৎ ৬০ লক্ষ থেকে ১ কোটি মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। তবে যেহেতু রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশকে পরিচালনা করছেন। সেক্ষেত্রে নির্দেশ না মানার অর্থ সরাসরি আইন অমান্য করা। এতে প্রশাসন আই-পি সি ১৮৮ ধারায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারে।
বাইরে কি যাওয়া যাবেই না?
প্রয়োজনে নিশ্চয়ই বাইরে যাবেন। কিন্ত কিছু নিয়ম অবশ্যই মানা উচিত।
হাত ধোয়ার পদ্ধতি
হাত ধোয়ার পদ্ধতি (ঘড়ির কাঁটার দিকে পর পর ছবি)
লাভ ও ক্ষতি
জানি, চারিদিকে ক্ষতির খবর শুনে হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাই এই ঘটনায় শত অসুবিধা স্বত্তেও যে সুদূরপ্রসারী সকলের ভাল হয়েছে এবং ভবিষ্যতে হবে সেই খবর আগে শোনাই।
প্রথমতঃ পরিবেশ গত দিক থেকে এই ঘটনার সুফল কল্পনাতীত। চীনের উহান শহর পুরো স্তব্ধতার কারণে কার্বন ডাই অক্সাইড নিষ্ক্রমণ ২৫% কমে গেছে।এর ফলে বাতাসের গুণগত মাণও বেড়ে গেছে।নাসার গর্ডাড স্পেস ফ্লাইট সেণ্টারের বিশেষজ্ঞ ফেই লিউ-র মতে কোন একটা নির্দিষ্ট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এত বড় নাটকীয় পরিবর্তন সত্যি অবিশাস্ব্য। এখন সারা বিশ্ব স্তব্ধতার নিরীখে আমরা পরিবেশ দূষণের মান যে কম হবে, সর্বোপরি গ্রীণ হাউস এফেক্ট যে কমে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
দ্বিতীয়তঃ, তাবড় তাবড় রাষ্ট্রনায়করা যাঁরা পরিবেশবিদদের সতর্কবাণী ফুৎ কারে উড়িয়ে দিচ্ছিলেন, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সারা বিশ্ব পরিবেশ চিন্তায় মনোনিবেশ করবেন তা সহজেই অনুমেয়।
তৃতীয়তঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। তবে এই যুদ্ধে সকল মানব জাতি একদিকে এবং অন্যপক্ষে ভাইরাস।এই এক ঘটনা সারা বিশ্বকে পরষ্পর বিভেদভুলে মানবতার জয়গান গাইতে শিখিয়েছে। এই জয়গানে সবাই সবার মঙ্গল কামনা করে চলেছে।
এই ঘটনা ঘটার ফলে ভারতে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে গুণগত মাণ আশাতীত রূপে উন্নতির সম্ভাবনা লক্ষ্যণীয়। ইতিমধ্যেই ভারত সরকার ১৫০০০ কোটি টাকা স্বাস্থ্যখাতে খরচ করার কথা ঘোষণা করেছেন।
এবার ক্ষতির পালা। করোনা ভাইরাসের আক্রমণে চীনের উৎপাদন কমে যাওয়ার ফলে ভারত সরকার ব্যবসাক্ষেত্রে প্রায় ৩৫ কোটি ডলার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। হোটেল ব্যবসা, উড়ান সিনেমা, রপ্তানি ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তবে বহিঃবিশ্বে অপরিশোধিত তেলের দাম পড়ার ফলে এবং চাহিদা অনুযাযী জোগান বেড়ে যাওয়ায় দেশে পেট্রলের দাম কমতে শুরু করেছে।
পরিশেষে নচিকেতার গানের কয়েকটি কথা দিয়ে এই লেখা শেষ করতে চাই-
তথ্যপঞ্জী
https://en.wikipedia.org/wiki/Virus
https://microbiologysociety.org/why-microbiology-matters/what-is-microbiology/viruses.html
http://www.virology.ws/2013/09/06/how-many-viruses-on-earth/
https://www.washingtonpost.com/graphics/2020/health/coronavirus-sars-cov-2-structure/
https://en.wikipedia.org/wiki/Coronavirus
https://www.who.int/en/news-room/fact-sheets/detail/middle-east-respiratory-syndrome-coronavirus-(mers-cov)
https://www.sciencemag.org/news/2020/03/coronavirus-cases-have-dropped-sharply-south-korea-whats-secret-its-success
https://www.worldometers.info/coronavirus/country/canada/
https://www.cdc.gov/coronavirus/2019-ncov/prepare/transmission.html
https://caravanmagazine.in/health/india-did-not-stockpile-covid-protective-equipment-health-workers-despite-clear-who-guidelines?fbclid=IwAR1CZLSQfRGIQUBqvQj0W2QiCGcHj7LOAjIpkaN_YwMwUls38gGd0GJSxuo
https://economictimes.indiatimes.com/news/politics-and-nation/can-india-win-the-fight-against-deadly-coronavirus/articleshow/74753284.cms
https://www.wsj.com/articles/the-dos-and-donts-of-handwashing-11583952006?mod=e2fb&fbclid=IwAR1ONaxaGdyi0jjZ_XHj_voTjn7usKPK8-nqvBC51kifG9nl9kunPbtNPq0
https://www.thehindubusinessline.com/economy/trade-impact-of-coronavirus-for-india-estimated-at-348-mn-un-report/article30988253.ece#
https://economictimes.indiatimes.com/wealth/invest/coronavirus-how-it-impacts-your-money/articleshow/74147275.cms?from=mdr
https://www.politico.eu/article/6-ways-coronavirus-is-changing-the-environment/
লিঙ্কগুলো সব আছে, সেগুলো পরে সাজিয়ে গুছিয়ে দিচ্ছি। ছবি নিয়েও একটু ঘেঁটে আছি।
"এই এক ঘটনা সারা বিশ্বকে পরষ্পর বিভেদভুলে মানবতার জয়গান গাইতে শিখিয়েছে। এই জয়গানে সবাই সবার মঙ্গল কামনা করে চলেছে।"
তবে উপরের এই লেখাটা লেখকের আবেগ হিসাবে ধরতে পারেন। বা বলতে পারেন লেখক ফেবু দেশ বিদেশ নির্বিশেষে সবার যেমন খোঁজ নিচ্ছে, উলটো দিকে সবাই যেমন একই কথা জিজ্ঞাসা করছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এই লেখাটা । এটা ছাড়া আর কিছু অসংগতি চোখে পড়লে আর বললে আনন্দিত হব।