আবার প্রশাসনের নামে প্রহসন। বইমেলায় পুলিশি তাণ্ডবের জের অব্যাহত।
গত ১১ই ফেব্রুয়ারি রাতের বেলা আজিজুর রহমানকে তার কাকার মাধ্যমে খবর পাঠানো হয়, কোনো এক পরিচিত তাকে ডাকছে বলে। ঘরের বাইরে বের হতেই তাকে তুলে নিয়ে নর্থ বিধাননগর থানায় আটক করে পুলিশ। রাত বারোটার পরে খবর জোগাড় করে কোলকাতা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেশ কিছু মানুষ চলে যায় আজিজুরের খোঁজ নিতে। কোনোরকম অনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত না থাকা আজিজুরের থানায় বন্দি হওয়ার কারণ খুঁজতে থানার ভেতরেই ঢোকে তার বন্ধুস্থানীয় চার-পাঁচজন। পুলিশ যথারীতি কোনো উত্তর দিতে অস্বীকার করে। তবে একথা বলে যে আজিজুরকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, শুধু জিজ্ঞাসাবাদের উদ্দেশ্যেই নিয়ে আসা হয়েছে থানায়। বাকি খবর পরের দিন সকালে জানা যাবে বললে, উদ্বিগ্ন জনতা হাজির হয় উক্ত থানায়।
যথারীতি দেখা গেলো পুলিশের ভোলবদল। জানানো হয়, গ্রেপ্তার করা আজিজুরকে আজ (১২.০২.২০২০) দুপুর দুটোয় কোর্টে তোলা হবে৷ অতি দ্রুততার সাথে আইনি সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা চলতে থাকলো। দুপুর দুটোয় আদালত আজিজুরকে ১২ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। ডিফেন্স ল-ইয়ারের ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুলিশ নিগ্রহ, যৌন নিগ্রহ, অস্ত্র আইনের মতো সাতটি জামিন অযোগ্য ধারাসহ মোট ন'টি ধারায় অভিযুক্ত করা হয়৷ দুঃখের বিষয় ঘটনার দিন অস্ত্র তো অনেক দূরের কথা, আজিজুর কোনো ঝামেলাতেই ছিলো না। থানায় গিয়েছিলো আন্দোলনরতাদের ওপর পুলিশেরই করা শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করতে। ভাগ্যের এমন পরিহাস যে ওকেই শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে বন্দিজীবন কাটাতে হচ্ছে। আগামী ২৪.০২.২০২০ এর আগে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে আদালতে লড়ার সুযোগও আজিজুর আর পাবে না।
সত্যিই "বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদে"।
এক দিন হওয়া মানেও প্রশ্ন থেকেই যায় - এসব চলবে?
ধিক্কার জানাই!