এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  অন্য যৌনতা

  • ভারত -- একুশে পা?

    বর্ন ফ্রি লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্য যৌনতা | ০৫ জুলাই ২০১০ | ৮৪৯ বার পঠিত
  • ৩৭৭ ধারা নিয়ে দিল্লী হাইকোর্টের রায়ের এক বছর পেরোলো। বদলেছে কি কিছু?


    প্রতিদিন একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে আমাদের চারপাশ। কাকে ভালবাসা যায় এবং কতটা সেই সব হিসেব-নিকেশ উলটে পালটে দিয়ে শিয়ালদা আর সিয়াটলের মাঝে সুতো বুনছে রাতজাগা চ্যাট-সংলাপ অথবা উড়ে যাচ্ছে কুন্ঠাহীন এস এম এস কোনো এক নাম না জানা সম্পর্কের উদ্দেশ্যে। আর এই সব কিছুর মাঝে নিজেদের কন্ঠস্বর খুঁজে নিচ্ছি আমরা, আর একদল প্রান্তিক মানুষ যারা ভালবাসি বিপরীত নয়, সমলিঙ্গের মানুষদের, যাদেরকে ভালবেসে আপনারা অনেকে ছোট্ট করে বলেন "হোমো'। অনেকদিন "কই নেই তো' হয়ে থাকার পর আজ আমরা উঠে আসছি আলোচনার পরিসরে, খবরের কাগজের পাতায়, গল্পে, সিনেমায় এবং পদযাত্রায়। আপনার অজান্তেই হয়তো আপনার ভাই, দাদা, বোন, ছোটপিসি বা পাড়ার রুমিদি খুঁজে নিচ্ছে সমলিঙ্গের সঙ্গী যাকে তাদের শরীর ও মন সত্যি সত্যি চায়। বিশ্বাস হচ্ছে না তো? ভাবছেন, আ-মা-র ভাই? ও ওসব করতেই পারে না। পারে কি না জানি না, তবে পারলেও কোনো ক্ষতি নেই কেননা আজ এই পালটানো সময়ে মিথ্যে মুখোশ খুলে রাখার সাহস দেখাচ্ছেন অনেকেই। নজর রাখা যাক কিছুদিন আগে প্রকাশিত একটি খবরে। মুম্বাই-তে পরিবার-পরিজনদের উপস্থিতিতে বিয়ে করলেন দুজন যুবক। রীতিমত অগ্নিসাক্ষী করে জীবন কাটানোর অঙ্গীকার করলেন জো সিং এবং তার সঙ্গী ওয়েসলি নোলান। ছবিসহ সেই বিয়ের বিশদ বিবরন প্রকাশিত হল ২২শে মে তারিখের টাইমস অফ ইন্ডিয়ায়।

    পাল্টাচ্ছে ভারত?

    সত্যিই কি পাল্টাচ্ছে ভারত? নাকি ভিক্টোরিয়ন নৈতিকতাকে পুষে রাখছি ইম্পোর্টেড উদারতার ক্যাপ্সুলে? কোনো এক অসতর্ক মুহূর্তে তা বেরিয়ে আসছে শিবসেনা নামে মুম্বাইয়ের ভালেন্ট্যাইন ডে শপে, রামসেনা নামে বেঙ্গালুরু-র পাব-এ কিংবা রিজওয়ান-প্রিয়াঙ্কা প্রেমকাহিনিতে বামসেনা নামে কলকাতার লালবাজারে। এই যদি হয় একুশ শতকের মুক্তচিন্তা চমৎকারা, তাহলে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে ভারতের সমকামি সমাজ? চলুন, কান পাতা যাক গত বছর দিল্লি হাইকোর্ট-এ যেখানে দাঁড়িয়ে ভারত সরকারের তরফ থেকে additional solicitor general পি পি মালহোত্রা বললেন সমকামিতা একটি অসুস্থতা। এটি চুড়ান্ত অনৈতিক এবং বিকৃত মানসিকতার লক্ষন। প্রকৃতি বিরুদ্ধ এই আচরনকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হলে সমাজের নৈতিক অবনতি ঘটবে এবং এডস ছড়িয়ে পরবে। আদালত এই বক্তব্যের স্বপক্ষে প্রামান্য নথি দাখিল করতে বললে শ্রী মালহত্রা একটি বাইবেল সংক্রান্ত গবেষনাপত্র পেশ করেন (এইখানে আমার তরফ থেকে পাঠকবৃন্দকে একটি চোখ গোলগোল করা স্মাইলি উপহার দিলাম)। এই অব্দি পড়ে যেসব ওয়েল-ইনফর্মড পাঠক পাঠিকারা shining India -র additional solicitor general -এর অসাধারণ জেনেরাল নলেজের বহর দেখে শিউরে উঠছেন, তাঁদের কাছে একটি বিনীত প্রশ্ন, এই খবরটা তখন না হয় নাই বা জানতেন, আজ তো জানলেন, মোমবাতি না হয় নাই বা জ্বাললেন, একটা প্রতিবাদপত্র পাঠাবেন কি, ভারত সরকার-এর হোম মিনিস্ট্রিতে?

    তাহলে কেটেকুটে হাতে বাঁচল কি? একদিকে খোলা হাওয়ায় সমাজ স্বীকৃতি দিতে তৈরি হচ্ছে মত ও পথের বিভিন্নতাকে, যারা এতদিন প্রান্তে অবস্থান করতেন তাদের মূলস্রোতে মিলিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে, অন্যদিকে পাহারায় দাঁড়িয়ে আছেন কট্টর নৈতিক জ্যঠামশাই বা মরাল মাসিমারা। এই দুই ভিন্ন মেরুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছি আমরা সবাই, কেউ চোখ খুলে বা কেউ বুজে। আর উদারতা এবং গোঁড়ামির এই বিচিত্র নকশি কাঁথার দিকে তাকিয়ে দিন গুনছি আমরা অসংখ্য গে এবং লেসবিয়ানরা যাদের জন্য আজ অব্দি একটা উপযুক্ত বাংলা প্রতিশব্দ খুঁজে পাওয়া গেল না (হোমোসেক্সুয়ালের বাংলা সমকামি, লেসবিয়ান-এর বাংলা কি? পারলেন না তো? আজ অব্দি আলোচনাই ত হয় নি, তাই দরকারও পড়ে নি)।

    তোমরা কে হে, তোমরা কে হে?

    কারা এই হোমো? কারা আবার, ঐ সব লেডিস মার্কা ন্যাকা ন্যাকা ছেলেরা যারা হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলে আর হ্যান্ডব্যাগ-এ ভেজা টিস্যু আর লিপগ্লস রাখে। কি করে জানলি? হুঁ হুঁ বাবা, এসব পড়তে হয়, নয়ত পিছিয়ে পড়তে হয়, জুন মাল্য উবাচ। আর লেসবি? ওদের কেসটা অন্য, বুঝলি। ছোটবেলায় কেউ উল্টোপাল্টা কিছু করে দিয়েছিল, তারপর থেকে আর ছেলেদের সহ্য করতে পারে না। তাই মদনাগ্নি নেভাতে মেয়েদের কাছে যায়। এটাও কি মাল্য উবাচ? না না, গার্লফ্রেন্ড সিনেমাটা দেখিস নি? ঐটায় দেখিয়েছে।

    অনেকেই জানেন, তবু আবার বলতে দোষ নেই, সমকামিতা এবং জেন্ডার নন-কনফর্মিটি দুটি সম্পুর্ণ ভিন্ন বস্তু। যাঁরা মনে করেন মেয়েলি মাত্রই গে এবং গে মাত্রই মেয়েলি, তাঁদের এই ধারনার সঙ্গে একমাত্র তুলনীয় জ্ঞমুসলমান মাত্রই সন্ত্রাসবাদীঞ্চ জাতীয় একরৈখিক চিন্তা-ভাবনা। এই ধারনা কতটা ভ্রান্ত তার সব থেকে ভাল উদাহরন সম্ভবত ষাট ও সত্তর দশকের সুদর্শন রোম্যান্টিক হলিউড হিরো রক হাডসন এবং পপ স্টার জর্জ মাইকেল যারা গে হওয়া সত্বেও তাঁদের পুরুষালি যৌন আবেদন হাজারো নারীর বুকে কাঁপন ধরিয়েছিল। এইখানে আরেকটা প্রশ্ন উঠে আসে, মেয়েলি হওয়া কি দোষের? এর উত্তর লুকিয়ে আছে আমাদের পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার ভেতরে। আমাদের সমাজ লিঙ্গ-নির্মাণ করে এবং ছেলেদের কাঁদতে নেই বা মেয়েদের জোরে হাসতে নেই গোছের কিছু আলাদা আলাদা লিঙ্গ-চিহ্নিত ব্যবহার পুরুষ ও নারীর জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়। এই সীমারেখা অতিক্রম করার চেষ্টা আদতে এই নিয়ম-ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানানো যা রক্ষনশীল সমাজ বরদাস্ত করে না। তাই "মেয়েলি' পুরুষ হয়ে যায় ব্যাঙ্গোক্তির চাঁদমারি আর দিনের শেষে "গেছো' মেয়েকে জানতে হয়, শুক্তুনিতে কি ফোড়ন লাগে।

    কি সব পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটছিস বাবা? কে যেন এক মেয়ে চাওলা চাঁদে পৌঁছে গেল, আর ইনি বসলেন এখানে ফোড়ন কাটতে। এসব ব্যাঙ্গোক্তি ট্যাঙ্গোক্তি আগে হত, এখন আমরা বার্গার খাই, তাই শুক্তুনিতে কি ফোড়ন লাগে তা না জানলেও চলে।

    শুচি আসন টেনে টেনে

    তাই? মাল্যোক্তি তো আগেই বলেছি, এবার দেখা যাক গত বছর টাইমস অফ ইন্ডিয়া সংবাদপত্রে আসা কিছু সম্পাদকের প্রতি চিঠির নমুনা, বাংলায় তর্জমা এবং বন্ধনীভুক্ত মন্তব্য এই অধমের। ভুললে চলবে না, এই সব চিঠির ভাষা ইংরেজি, অধিকাংশের মাধ্যম ই-মেল, অতএব অনুমেয় পত্রলেখকরা শিক্ষিত ও আলোকপ্রাপ্ত।

    ""সমকামিতা ভারত এবং প্রকৃতি উভয়ের পক্ষেই ভবহ। পুরুষেরা যদি পুরুষদের সঙ্গেই শোবে তাহলে প্রকৃতি বিপরিত লিঙ্গ অর্থাৎ মেয়েদের বানিয়েছে কেন?'' (প্রকৃতি কি ম্যানুফ্যাকচার করার সময় "শুধুমাত্র পুরুষদিগের শোয়ার নিমিত্ত' ছাপ্পা মেরে দিয়েছিল?)

    ""একজন গে বা লেসবিয়ান কি চাইবেন যে তাঁর ছেলে বা মেয়ে সমকামি হোক? না, তারা তা চাইবেন না। তাহলে তারা নিজেদের জন্য সমানাধিকার চাইছেন কেন?'' (যে কৃষক চান না যে তাঁর সন্তানও কৃষক হোক, তিনি যেন জমির জন্য লড়াই না করেন)।

    ""সমকামিতা প্রজনন সহায়ক নয়, তাই ক্ষতিকর ও বর্জনীয়''। (যেমন কন্ডম প্রজনন সহায়ক নয়, তাই বর্জনীয়। বুলাদি, শুনছেন?)

    ""সমকামিতা মানসিক অসুস্থতা। ভারত তার নৈতিক শুদ্ধতা হারাচ্ছে''। (অসুস্থতা আর ভারত নিয়ে পরে আসছি, আপাতত: একটাই প্রশ্ন, যদি অসুস্থতাই হয়, তাইলে তার কি নৈতিক শুদ্ধতা বা অশুদ্ধতা হয়?)

    ""মনবিদের সাহায্য নিয়ে ধ্যান করে এই অসুস্থতা কাটিয়ে ওঠা যায়''। (প্লীজ, ওয়ার্ল্ড হেলথ ওরগানাইজেশন অথবা মনোবিদ এবং মনস্তাত্বিকদের অন্যান্য যে সব প্রধান প্রধান সংগঠন আছে, তাঁদের জানিয়ে আসুন। বেচারারা গত তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই ভুল ধারনার শিকার যে সমকামিতা কোনও মানসিক অসুস্থতা নয়, এর কোনো চিকিৎসা নেই কেন না এর কোনও চিকিৎসার প্রয়োজনই নেই। তাঁদের মতে একজন সমকামি মানুষ মনস্তাঙ্কিÄক দিক থেকে সম্পুর্ণ স্বাভাবিক।)

    ""সমকামিতা যদি স্বাভাবিকই হত, তাহলে কি পশুদের মধ্যেও সমকামিতা দেখা যেত না?'' (অর্থাৎ এবার থেকে পশুদের দেখে জেনে নিতে হবে কি করা উচিত বা উচিত নয় (আরেকটি চোখ গোল স্মাইলি)। জানিয়ে রাখা যাক, অন্তত: পনেরশোটি বিভিন্ন প্রজাতি পাওয়া গেছে যাদের মধ্যে কিছু সদস্য হয় বাইসেক্সুয়াল অথবা সদাচারী "হোমো'। এর মধ্যে রয়েছে খোলা জঙ্গলে বসবাসকারি চিতা, সিংহ, জিরাফ, বেবুন, ওরাং ওটাং, পেঙ্গুইন, হাঁস ও অন্যান্য নানা পাখি।)

    ""যদিও সমকামিতা প্রকৃতি বিরুদ্ধ, তবু আমার মনে হয় সমকামিদের নিজের ইচ্ছামত জীবন যাপন করতে দেওয়া উচিত। তবে আমি সমলিঙ্গে বিয়ে বা গে-দের দত্তক নেওয়ার অধিকারের বিরোধী। কেন না গে মাতাপিতার সন্তানও গে হবে''। (অর্থাৎ মস্তি কর, আপত্তি নেই, কিন্তু বিয়ে করতে পারবে না। উদার ক্যাপ্সুলে ভরা হোমোফোবিয়ার একটি আদর্শ উদাহরন। এই ব্যাপারে ইন্ডিয়ার কাউন্সিল অফ মেডিকাল রিসার্চের গাইডলাইন কমিটির সদস্য ডা: কামিনী রাও কি বলেন দেখা যাক। "" Dr. Kamini Rao-one of the ICMR guidelines committee members-said "the right to procreation is fundamental". She rejected the view that a child raised by homosexual parents would not have a normal childhood. "I think it's wrong to have such views in this modern age.'' )

    ""আমার নিজের গে-দের নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু, এই সব চলতে দিলে, আরো অনেক মানুষ গে হয়ে যাবেন''। (আরেকখান স্মাইলি। পাঠক সাবধান, এই মত অনুযায়ী, এই লেখা পড়লেও কিন্তু আপনার গে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। একে আমি ফীলিং অফ ইন্সিকিওরিটির বাইরে কিচ্ছু বলতে রাজি নই)।

    ""আমি মুক্ত চিন্তা, মুক্ত ভাবনায় বিশ্বাসী। তাই আমি জাতি-ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধে মানুষে মানুষে ভালবাসায় বিশ্বাস করি। কিন্তু তাই বলে, সমলিঙ্গে ভালবাসা চলতে পারে না। ইশ্বর আদম এবং ঈভ কে বানিয়েছিলেন, আদম এবং স্টীভ কে নয়''। (তাইলে স্টীভরে বানাইলো কেডা? আরেকডা বেয়াড়া কোয়েশ্চেন, আদম ঈভের পর জেনারেশন আউগ্যাইলো কেমনে...। আদম ঈভের যুক্তি আনলে তো ইয়ে মানে ইন্সেস্টকে ছাড়পত্র দিতে হয়!)

    এই রকম আরও হাজারো উদাহরন আছে, লিস্ট বড় করে পাঠকের ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটাতে চাই না। মোদ্দা কথাটা হোলো একদিকে আমরা না পারছি পুরনো গোঁড়ামি ছাড়তে, অন্য দিকে না পারছি তথ্য, প্রমান, আধুনিক মতবাদকে ডাস্টবিন-এ ফেলতে। নিজেকে উদার প্রমান করার লোভ সামলানো তো চাট্টিখানি কথা নয়।

    এই সমস্ত কিছুর মাঝে বড় হয়ে উঠছে সেই সব সমকামি ছেলে ও মেয়েরা যাদের শৈশব-কৈশোর কাটছে এক অপরাধবোধ আর অনিশ্চয়তায়। কেমন লাগে তাদের চারপাশের এই চাপা বা খোলাখুলি হোমোফোবিয়া?

    ঘরেও নহে পারেও নহে, যে জন আছে মাঝখানে

    কেমন আছে তারা? যারা না পারছে নিজের একান্ত অস্তিত্বকে বিসর্জন দিতে না পারছে তাকে প্রতিষ্ঠা দিতে? বাবা মা প্রিয়জন সবাইকে থোড়াই কেয়ার করে অন্তরমহলের রুদ্ধসঙ্গীতকে মুক্তি দিতে?

    শোনা যাক আমার কিছু বন্ধুর কথা তাদের নিজেদেরই জবানবন্দীতে, এই লেখা যাদের সাহায্য ছাড়া সম্ভব হত না।

    -""আমার নিজেকে মনে হত বড়রাস্তার মাঝখানে গজিয়ে ওঠা একটা গাছ, যে নিজের ইচ্ছায় সেখানে গজায় নি। এখন না পারছে এদিকে যেতে না পারছে ওদিকে যেতে। আর চারপাশে গাড়ি ঘোড়া ইচ্ছেমত ধোঁওয়া ছড়িয়ে চলে যাচ্ছে। ওদের আর কি দোষ, রাস্তার মাঝখানে তো আমিই গজিয়েছি। এখন হয় আমাকে কাটতে হবে, নয়ত রাস্তাটার ডিজাইন পাল্টাতে হবে''।

    -""আমার মনে হত আমিই কেন এই রকম, কেন আর কেউ নয়। তখন জানতামও না হোমোসেক্সুয়ালিটি কাকে বলে। খালি বুঝতে পারতাম যে আমার বন্ধুরা যখন সিনেমার হিরৈনদের দেখে আমি তখন আসলে হিরোদের দেখি। কিন্তু কাকে জিজ্ঞেস করব, কার সাথে কথা বলব বুঝতে পারতাম না। ঠাকুরকে ডাকতাম আমাকে ঠিক করে দেওয়ার জন্য''।

    -""পাড়ায় সবাই পেছনে লাগত "লেডিস' বলে। একবার, তখন খুব ছোট, বছর পাঁচেক বয়স হবে, হাতে দিদির চুড়ি পরে রাস্তায় বেরিয়েছিলাম। পাড়ার এক কাকিমা মাকে বলেছিলেন "যে ছেলে হাতে একবার চুড়ি পরে, সে আর কখনো তলোয়ার তুলতে পারে না'। বাড়িতে এসে বাবার কাছে মার খেয়েছিলাম''।

    -""যখন ক্লাস নাইনে পড়ি, আমার এক বন্ধুকে বলে দিয়েছিলাম যে আমার ছেলেদের বেশি ভাল লাগে। পরের দিন স্কুলে গিয়ে দেখি সেটা ক্লাশ সুদ্ধু সবাই জেনে গেছে। তারপর পুরো দু বছর আমার সাথে কেউ ঠিক করে কথা বলত না পাশে বসতে চাইত না। আমার এক বন্ধু আমাকে বলেছিল যে আমার সাথে কথা বললে সবাই ওকে আমার মতন ভাববে''।

    -""দিন কুছ অয়য়সে গুজারতা হ্যায় কৈ, য্যায়সে এহসান উতারতা হ্যায় কৈ। আইনা দেখ কে তসল্লি হুই, ইস ঘর মেঁ হামে জানতা হ্যায় কৈ। কাউকে যদি চিরকাল, ছোটবেলা থেকে নিজের বাবা মায়ের কাছেই অভিনয় করে যেতে হয়, তার আর কি রকম লাগবে? মনে হত পুরো বাড়িতে আমি একমাত্র নিজের সাথেই মন খুলে কথা বলতে পারি। ''

    এই একাকিত্বই ভারতের সমকামি কিশোরদের সবথেকে বড় সমস্যা। এখানে সমকামিরা থেকেও নেই, কেননা আমাদের আলোচনার পরিসরে তাদের জন্য কোনও জায়গা আমরা করে দিতে পারি নি। আমাদের সিনেমা, গান, সাহিত্য, আড্ডা কোথাও তারা নেই। একটু ভাবুন, একটা চোদ্দো-পনের বছরের ছেলে, এমনকি তারও অনেক আগে, সে বুঝতে পারছে সে অন্যদের থেকে সে আলাদা অথচ তার এই বুঝতে পারাটা সে কারও সাথে শেয়ার করে নিতে পারছে না। সে যা পড়ছে, যা দেখছে, যা শুনছে কোথাও, কোত্থাও নিজের অনুভুতির প্রকাশ, প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছে না। নিজেকে একবার তার জায়গায় রাখুন, অনুভব করার চেষ্টা করুন তার এই যোগাযোগহীনতাকে, তার এই বিচ্ছিন্নতাকে। সেই পনের-ষোলতে তার যদি কাউকে ভাল লাগে, যে রকম আপনার ভাল লেগেছিল কোচিং ক্লাসের সেই মেয়েটিকে, আমাদের এই সমকামি ছেলেটির কিন্তু বলার অধিকার নেই।

    তা বলে দিলেই পারে। নিজের কথা নিজে বলবে না তো কি অন্য কেউ এসে বলে দেবে? সে তো আমিও সেই লাল দুপাট্টেওয়ালিকে মনের কথা বলে উঠতে পারি নি তার স্যন্ডাল আর দাদার সাইজ দেখে, তাই বলে কি আজকে ঘ্যানঘ্যানাতে বসেছি নাকি? এরা নিজেরা সামনে আসবে না আর বসে বসে কাঁদুনি গাইবে।

    হককথা। কিন্তু আপনি তো দিলওয়ালে আর কুছ কুছ দেখে জানতেন একটি মেয়েকে কি করে প্রোপোজ করতে হয় (মতান্তরে তুলতে হয়), এই ছেলেটি কি করে জানবে আরেকজন ছেলেকে কি করে মনের কথা বলতে হয়? আর বলার পর আপনি হয়ত স্যন্ডাল খেতেন কিন্তু এর কপালে কি জুটত? দেখা যাক দিন কতক আগে একটি ইন্টারনেট কম্যুনিটিতে এক পরিশীলিত, শিক্ষিত, পরিণত ভদ্রজনের মন্তব্য-"কেউ গে হোক আমার আপত্তি নেই, কিন্তু আমাকে গে সুলভ প্রেম নিবেদন করতে এলে, ক্যাত করে এমন একটা লাথি ঝাড়ব যে হোমোসেক্সুয়াল থেকে অয়সেক্সুয়াল হয়ে যাবে'। ভদ্রলোক লাথি ঝাড়ার উদ্দিষ্ট স্থানটিও উল্লেখ করে দিয়েছিলেন, আমি সেটা পাঠকদের অনুমান ও কল্পনাশক্তির ওপর ছেড়ে দিলাম। এরকম অ্যাসেক্সুয়াল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে আপনিও কি প্রেম নিবেদনের সাহস পেতেন, ধর্মাবতার?আরেকটি ইন্টারনেটজাত উক্তির উল্লেখ করে প্রসঙ্গান্তরে যাব।

    -""এসেছিল প্রেম করতে। হোস্টেলের বন্ধুরা মিলে দরজা বন্ধ করে এমন বেল্টপেটা করেছি, যে মালটার হোমোগিরি জন্মের মত ঘুচে গেছে''। মন্তব্য নিÖপ্রয়োজন।

    সবই তো বুঝলাম, তাই বলে আমাদের দেশে? গে সেক্স করতে হলে কানাডা যাও না কেন বাপু? ঐ সব ব্যাপার-স্যাপার বুশ সাহেবের দেশে হয়, আমাদের এই পুণ্যতীর্থ ভারতবর্ষে হয় না। এখানে বলতে গেলে আমরা ছেলেতে মেয়েতেই চোখ বুজে ঐসব করি, নেতাজী প্রেম করেছিলেন বললে খবরের কাগজের অফিসে ভাঙচুর করে দি, আর এ বলে কি না ছেলেতে ছেলেতে, মেয়েতে মেয়েতে! ছ্যা:। হয় নাকি।

    হয়, হয় জানতি পারো না।

    জো সিং-এর বিয়ের গল্প ত গোড়াতেই বলেছি। কিন্তু সিংজীই প্রথম নন। ষোল বছর আগে দিল্লীর সুরেন্দ্রনগরে আদিত্য আদবানি বিয়ে করেছিলেন তাঁর সঙ্গী মাইকেল টারকে বাবা-মা আর হরিহরের মুর্তিকে সাক্ষী রেখে। হরিহর, শিব আর বিষ্ণুর যুগলরূপ। শত্তুরের মুখে ছাই দিয়ে সে বিয়ে ষোল বছর পরে এখনও অটুট। তারও আগে ১৯৮৭ সালে মধ্যপ্রদেশের দুজন মহিলা পুলিশ বিবাহসুত্রে আবদ্ধ হন। সেই সময়ের সমাজ তাকে জন্মান্তরের প্রেম বলে শ্যাম ও কুল দুই-ই রক্ষা করেছিল। ভারতীয় পুরাণেও রয়েছে কিছু বিক্ষিপ্ত উদাহরন। শিব আর বিষ্ণুর যুগল মুর্তির কথা ত আগেই বললাম। আরও আছে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের আগের দিন এক রাত্রের জন্য কৃষ্ণ বিয়ে করেছিলেন অর্জুন পুত্র ইরাবানকে। সুর্য মিলিত হয়েছিলেন তাঁর সারথি আরুনির সাথে। আরুনি আবার তার আগে মিলিত হয়েছিলেন দেবরাজ ইন্দ্রের সঙ্গে (ইন্দ্র তার মানে বাইসেক্সুয়াল ছিলেন মনে হচ্ছে)। আরও প্রমাণ ছড়িয়ে আছে খাজুরাহো থেকে শুরু করে কোনার্কের মন্দিরে মন্দিরে। প্রমান আছে কামসুত্রে, মুঘল মিনিয়েচার পেন্টিং-এ, আর আছে কথ্য ভাষায় যেমন ""নবাবি শখ'' বা গালিগালাজে।

    কত কথা হল বলা

    তাহলে যা কিছু এতক্ষন ধরে বকলাম তাকে এক জায়গায় আনলে কি দাঁড়ায়? দাঁড়ায় এই যে বিশ্বের প্রধান প্রধান মনস্তাত্ত্বিক ও মনস্তত্ত্ববিদদের মত অনুযায়ী সমকামিতা কোনও মানসিক বিকৃতি বা অসুস্থতা নয় এবং এর কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। সমকামিতা অপরিবর্তনীয় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, হোমোফোবিয়া একটি মানসিক সমস্যা এবং এটি কাউন্সেলিং-এর সাহায্যে সারিয়ে তোলা যায়। দ্বিতীয়ত:, সমকামি পুরুষ বা নারী কোনো স্টিরিওটাইপে আবদ্ধ নন। সমস্ত পেশা, সমস্ত বয়স এবং সব রকমের মানুষদের মধ্যেই সমকামি পাওয়া যাবে। সমকামিতা ততটাই প্রকৃতি-বিরূদ্ধ যতটা কি না কন্ডোমের ব্যবহার। আর যদি না-মানুষ প্রজাতিদের দিকে তাকাই তাহলে দেখব অন্তত: পনেরশোটি প্রজাতি পাওয়া গেছে যাদের সদস্যদের মধ্যে সমকামিতা প্রচলিত। সমকামি বাবা-মায়ের সন্তানদের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, তাঁরা হেটেরোসেক্সুয়াল বাবা-মায়ের সন্তানদের থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে তো ননই বরং মুক্তমন ও উদারতার ক্ষেত্রে এগিয়েই আছেন। যারা মনে করেন যে সমকামিতা একটি লাইফস্টাইল তাদের জন্য জানাই, সমকামি কেউ হঠাৎ করে অথবা রাজকন্যে কম পড়ে যাওয়ায় হয়ে যায় না। সমকামিতা হয় জিনগত (যা হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট) অথবা খুব ছোটবেলায় তা আমাদের চরিত্রের অংশ হয়ে যায়। তাই আজ সমকামিতাকে আইনি স্বীকৃতি দিলে দলে দলে লোক সমকামি হয়ে যাবে, এবং সমাজের স্থায়িত্ব বিপন্ন হবে, এই ধারনার থেকে হাস্যকর আর কিছু হতে পারে না (আজ্ঞে হ্যাঁ, এই যুক্তিই আমাদের সরকার বাহাদুরের তরফ থেকে আদালতে দেওয়া হয়েছে)। সব শেষে, হেটেরোসেক্সুয়ালিটির যেমন দেশ কাল পাত্র হয় না, তেমনই সমকামিতাও দেশ-কালের গন্ডিতে আটকানো নয়। সব দেশে, সব কালে সমকামিতা ছিল আছে এবং থাকবে, সমাজ ও আইন স্বীকৃতি দিক বা না দিক।

    কত কথা তবু বাকি

    তবু বাকি থেকে গেল কেরালার সেই লেসবিয়ান জুটির কথা যারা সমাজের চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করার থেকে আত্মহত্যাকে শ্রেয় বলে মনে করেছেন। বাকি থেকে গেল কলকাতার সেই ছেলেটির কথা যে আজ বড় হয়ে তার স্কুলের বন্ধুদের কাছে জানতে চায় দু-দুবার তাকে মেন্টাল ডিপ্রেশনে ঠেলে দিয়ে তারা কি আনন্দ পেয়েছিল। বাকি থেকে গেল আমার এক বন্ধুর সেই দাদাটির কথা যে বাড়ির চাপে বিয়েতে সন্মতি দিয়েও শেষ মুহুর্তে একটি মেয়ের ক্ষতি করবে না বলে ঘুমের ওষুধকে বেছে নিয়েছিল। আর বাকি থেকে গেল সেই সব মেয়েদের দুর্ভাগ্যের কথা যাদের নিজের অজান্তে বিয়ে হয়ে যায় কোনও সমকামি পুরুষের সঙ্গে। তাই যারা মনে করেন সমকামিতার সমস্যা একটি শৌখিন সমস্যা মাত্র, তারা আর একবার ভেবে দেখবেন। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী যা আমাদেরই এক সহনাগরিকের সমানাধিকারকে চুড়ান্তভাবে খর্ব করে, তাকে কি জ্ঞশৌখিন সমস্যাঞ্চ বলে পাশ কাটানো যায়?

    সব কথা একদিনে বলা যায় না। তাই আজ এখানেই থামব একজন মার্কিন সেনাকে উদ্ধৃত করে। একাধিক পদকপ্রাপ্ত এই সৈনিকের সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশান জানাজানি হয়ে যাওয়ার পর এনার কোর্ট মার্শাল হয় ও চাকরি চলে যায় কেননা মার্কিন সেনাবাহিনীতে সমকামিরা সামরিক আইন অনুসারে যোগদানের অধিকারি নন। নিজের বিচারসভায় দাঁড়িয়ে ইনি বলেছিলেন, যে সমাজ আমাকে বহু মানুষকে ( Men ) হত্যা করার জন্য পুরস্কৃত করে আর একজন মানুষকে ( Man ) ভালবাসার জন্য শাস্তি দেয়, সেই সমাজের মুল্যবোধে কোথাও না কোথাও বড় রকমের গলদ রয়েছে।

    একবার ভেবে দেখবেন।

    পুনশ্চ:

    যেতে যেতে আবার ফিরে আসতে হল। যবে এই লেখাটা লিখেছিলাম তার পর গঙ্গা যমুনা কাবেরী দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গেছে। আর তার মাঝখানে দিল্লী হাইকোর্ট তার ঐতিহাসিক রায়ে গে সেক্সকে অপরাধের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক দুজন মানুষের পারস্পরিক সহমতিতে অন্য কারোর অসুবিধে না করে যৌনক্রিয়ার অধিকার দিয়েছে এই রায়। তবে কিছু লোকের আমি নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে কাজকম্ম করলেও অসুবিধে বোধ হয়। তারা একজোট হয়েছে। ঠিক যেমনটা অনুমান করা হয়েছিল। বাবা থেকে শুরু করে মৌলভি সাহেব, পাদ্রি সাহেব, অকাল তখত, কে নেই সেই সর্ব ধর্ম সমন্বয় জোটে? মিলে সুর মেরা তুমহারা। আমি আনন্দিত। কেননা, আরও একবার দেখা গেল, গোঁড়ামির কোনো ধর্ম হয় না। দেখা গেল, যৌনতার অধিকারের জন্য এই আন্দোলন আসলে সমানাধিকারের আন্দোলন, মুক্তির লড়াই। তাই বিরোধিপক্ষও সমস্ত বিভেদ ভুলে একজোট।

    এই বিরোধিতা সঙ্কেÄও পাল্টেছে অনেক কিছু। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি এই রায়ের ফলে একটা বড় বদল এসেছে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে। যে বিষয়টা এতদিন ট্যাবু হয়ে ছিল তাকে নিয়ে খুল্লামখুল্লা আলোচনা চলছে বেম্মদার চায়ের টেবিল থেকে কলেজ ক্যান্টিনে। ""তোমরা'' জানছো, ""আমরা'' আছি। এই রায়-ই শেষ নয়। এখনও অনেক পথ চলার বাকি। তবুও, সেই চলার পথে এই রায় অনেকখানি অক্সিজেন।
    তথ্যসূত্র-

    ১। Bruce Bagemihl, Biological Exuberance: Animal Homosexuality and Natural Diversity, published in 1999.
    ২। Shakuntala Devi, The world of Homosexuals, 1977.
    ৩। Against Nature? Exhibit, The Natural History Museum, University of Oslo, Norway.
    ৪। http://timesofindia.indiatimes.com/India/Gay-couples-marry-with-parents-approval-hawan-and-priests/articleshow/4504260.cms
    ৫। http://timesofindia.indiatimes.com/India/Delhi-HC-to-govt-Homosexuality-is-not-a-disease/articleshow/3620183.cms
    ৬। http://timesofindia.indiatimes.com/Cities/Hyderabad/13-recent-lesbian-suicide-cases-in-city-/articleshow/4239924.cms
    ৭। http://timesofindia.indiatimes.com/India/ICMR-rules-allow-gays-to-become-parents/articleshow/3225084.cms
    ৮। http://news.bbc.co.uk/2/hi/europe/6066606.stm
    ৯। http://psychology.ucdavis.edu/rainbow/HTML/facts_mental_health.HTML
    ১০। American Psychological Association, http://www.apa.org/topics/sorientation.html
    ১১। Vivien Ray and Robin Gregory, School experiences of Lesbian and Gay, Australian Institute of Family Studies, Family Matters, 59 Page28. Web link: http://www.aifs.org.au/institute/pubs//fm2001/fm59/vr.pdf

    *বর্ন ফ্রি (নাম পরিবর্তিত): বয়স তিরিশ; পেশায় গবেষক। জন্ম কলকাতায়। শখ লেখালিখি, ছবি আঁকা।
    ২৭শে জুন, ২০১০
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • অন্য যৌনতা | ০৫ জুলাই ২০১০ | ৮৪৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • নবনীতা | ***:*** | ০৮ মে ২০১২ ০২:৪৭89286
  • নিজেদের কাম দমনে যারা নিজ নিজ লিঙ্গের প্রজাতিকেই সময়ে জোরপূর্বক ব্যবহার করে এমন মানুষেরাই দলে ভারী আর তাই সমকামীদের বিরুদ্ধে তাদের এত সোচ্চার কন্ঠ। কেননা, সমকামীরা in a sense প্রাকৃতিকভাবে এই মানসিকতায় শুদ্ধ। তাদের মেনে নিলে এই মুখোশধারীদের মনোভাবকে বিকৃত বলে স্বীকৃত দেয়া হয়! বা, রিপু তৃপ্তির এমন ঘটনায় পর সভ্য সমাজে লিঙ্গ ধরে ঘুরে বেড়ানোর ক্ষমতা হারাবার ভয় থাকে, সমকামী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যেতে হয়..... সে কারণেই এত তৎপরতা সমকামিতাকে না মেনে নেবার.....
  • Born free | ***:*** | ২৪ জুলাই ২০১৩ ০৪:৫৩89287
  • নবনীতা ইটা awesome বলেছেন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন