এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • দিন আনি দিন খাই - পর্ব ৫

    সুমেরু মুখোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১১ | ১৩৯৫ বার পঠিত
  • পূবেতে বন্দনা করলাম পুবের ভানুশ্বর।
    এক দিকে উদয়নরে ভানু চৌদিকে পশর।।
    দক্ষিনে বন্দনা গো করলাম অমিয় মজুমদার।
    যেখানে বানিজ্জি করে চান্দ সদাগর।।
    উত্তরে বন্দনা করলাম কৈলাশ পরবত।
    যেখানে পড়িয়া আছেন ত্রাতা লোকনাথ।।
    পশ্চিমে বন্দনা গো করলাম এ হেন সন্দীপন।
    উরদিশে বাড়াই সালাম, সতীনাথ নাম।
    পাতা খুইলা বইছ ভাইরে ইন্দু মুসলমান।
    সবার চরণে আমি জানাইলাম ছেলাম।
    চাইর কুনা পির্থিমি গো বইন্ধ্যা মন করলাম স্থির।
    জীবনানন্দ মধুসূদনে বন্দি, বন্দলাম লালন ফকির।।
    আসমানে জমিনে বন্দলাম চান্দে আর সুরয।
    আলাম-কালাম বন্দুম কিতাব আর কুরাণ।
    কিবা লিখা লিখিবাম আমি বন্দনা করিলাম ইতি।
    উস্তাদের চরণ বন্দলাম করিয়া মিন্নতি।।

    ভনিতা:

    সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের স্তর পার্থক্যের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চিন্তা ও বৃত্তির পরিবর্তন ঘটেছে। পৃথিবীর সর্বত্র এই পরিবর্তন সমান না হলেও লুই মরগান, ফ্রেডরিক এঙ্গেলস, ডি গর্ডন চাইল্ড বলেছেন; বন্য, বর্বর ও সভ্য এই তিনটি স্তর পর্যায়ের ক্রমবিবর্তনের ভেতর সমস্ত জাতি-প্রজাতি, গোষ্ঠী - কৌম ধীরে ধীরে এগিয়েছে। আমরা কেউই লেখক ছিলাম না। গুহার দেওয়ালে আঁকিবুকি কাটতাম। ১ ২ ৩ ৪ লিখতাম। মন্ত্র আউড়ে রোদ-বৃষ্টি ক®¾ট্রাল করতাম। নিজেকে এক্সপ্রেস করার রাস্তাই ছিলো ঐগুলো। সুতরাং আগে প্রকাশক, পরে লেখক। আমিও তাই। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে বন্যস্তরে মন্ত্রের সূত্রপাত ঘটলেও বর্বরস্তরেই এর বিকাশ। আদিম মানুষের ধর্মানুভূতির যে প্রধান তিনটি সূত্র - জাদুশক্তি, দৈবশক্তি এবং বস্তু বা প্রাণীর অন্তর্লীন শক্তি বা ক্ষমতা সম্পর্কে প্রত্যয়-প্রতীতি ও আস্থাজ্ঞাপন তা আমাদের লেখার মধ্যেও অবিচ্ছেদ্য।

    দেশ ছেড়ে আসছি, গোয়ালন্দের স্টিমারে আলাপ হল দামোদর দত্তের সঙ্গে। তিনিই বলতে গেলে আমার এ লাইনের গুরু। তার বইয়ের দোকান ছিল কলেজ স্ট্রিটে। এদিকে কলকাতায় কোথায় উঠবো, কি করবো, কিছুরই ঠিক নেই। যত পদ্মা দূরে সরে যাচ্ছে, হৃদস্পন্দন তত বাড়ছে। যাই হোক সেই পুরনো কাসুন্দি ঘেঁটে কিছু লাভ নেই। দামোদর দত্তের দোকানেই আশ্রয় পেলাম।রাতে সেখানে শুতাম কিন্তু সেই দোকানে চাকরি নিলাম না, ফুটপাতে "দাদে'র মলম বেচতে লাগলাম। দুই আনা করে দাম, ফাটাফাটি সেল। এটা আমার ঠাকুমা স্বপ্নে পেয়েছিলেন, সর্বরোগের ওষুধ। তিন-চার রকম পাতা, গোবর-ফোবর দিয়ে বানাতাম। গুরুজির কাছ থেকে টাকা ধার করে ২০০ পিস মাল বানিয়ে বসলাম। বসের নামে নাম দিলাম - দা.দ-এর মলম। দুই দিনে সব শেষ।

    অচিরেই সেল এমন বেড়ে গেল, দু'জন লোক রাখতে হল। মাল বানানোর জন্য ভবানী দত্ত লেনে একটা ছাদহীন ঘর ভাড়া করলাম, সেটা হল আমার ফ্যাক্টরি। মালটা কিন্তু আমিই বেচতাম, নানা গল্প-মন্ত্র-শ্লোক আওড়াতাম। হু হু করে মাল বিকোত। বস একদিন ধরে বসল, তোর বৌদির একটা বাচ্চার অনেকদিনের শখ, যা হোক কিছু একটা কর। যাইহোক, স্বামী-স্ত্রী শুদ্ধচিত্তে নিয়ম করে দেড়মাস কানের পিছনে দাদের মলম লাগানোর ফলও মিললো হাতে নাতে। গুরুজি মহাখুশি। বলল, তুই শালা ডাক্তার, একটা চেম্বার লাগা হ্যারিসন রোডে। আমার ঐ সব ছোটখাট ব্যপারে চিরদিনই কোন উৎসাহ ছিলো না, আমি বললাম, আমি চিকিৎসাশাস্ত্রের বই লিখব।

    গুরুদেব আমায় খুলে দিলো পাবলিশিং হাউস - মহাগুরু সাহিত্য মন্দির। সুর্য সেন স্ট্রিটে পাল বস্ত্রালয়ের উপর বিশাল ঘর নিলাম। কাঠ দিয়ে আমার আলাদা চেম্বার। আমি নিভৃতে বসে লেখালিখি করতে পারব। সামনের ঘরে বস ট্রেড সামলাবে। গুরুই বলল, তোর তো অনেকদিন লেখালিখির অভ্যেস নেই, আগে কয়টা মানে বই লিখে হাতটা সড়গড় করে নে, পরে ওষুধ-চিকিৎসা নিয়ে ৩০/৪০টা খন্ডে জাব্দা জাব্দা বই লিখিস! দেখলাম আইডিয়াটা খারাপ না। আগে লেখাটা দরকার। লেখাটা রেডি থাকলে প্রয়োজন মত ক্যারেক্টারের নাম বদলে দিলেই হল। রাম-লব-সীতা হলে রামায়ন। অনিমেষ-অর্ক-মাধবীলতা হলে কালপুরুষ। এই রকম। নাউ উই নিড ফিউ নেমস। বসই সেসব যোগাড় করে আনলেন আশেপাশের স্কুল কলেজ থেকে। ই সি বিদ্যাসাগর, আশু ভট্টাচার্য, ভূ চৌধুরী, ক্ষে গুপ্ত, পি আচার্য। ট্রিপল এম.এ.। বি.এড, বি.টি, পিএইচডি, স্বর্ণপদক। আমি চুটিয়ে মানে বই লিখতে লাগলাম, হু হু সেল। প্রকাশকের তকমার আড়ালে যে মেঘনাদের মত লেখক বসে আছে তা নিশ্চয়ই কেউ ভাবেনি। আমাদের বাঙালদের "র' আর "ড়' এ একটা চিরকালীন ঝাড় আছে, এই সময় আমার কোম্পানীতে যোগ দেয় পরিতোষ, তার দায়িত্ব হল এই বানানের ঝাড়গুলো ঠিক করা।

    ।।ইতি লেখক পর্ব সমাপ্ত।।

    ।২।

    অথর্ববেদ:

    আমার লেখালিখির পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান অথর্ববেদের। আসলে ভারতীয় সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে অথর্ববেদের মূল্য অসীম। ম্যাকডোনেল, ভিলটারনিৎস, ওয়েবার প্রমুখ পন্ডিতদের মতে ৩০০০-২০০০ খ্রীস্টপূর্বাব্দ নাগাদ অথর্ববেদ সংকলিত হয়। সেটা মিনিমাম ১১টি শাখায় বিভক্ত ছিল। ফলে যেমন ভূগোলের মানে বইও লেখা যায় তেমন ভৌতবিজ্ঞানের মানে বইও লেখা যায়। লক্ষনীয় বিষয়, বৈদিক ত্রয়ী সংহিতায় যে সকল বিদ্যা বা শক্তির কথা বলতে চেয়েও বলা হয়নি, আভাষ-ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে মাত্র - অথর্ববেদে সেই সব মেটিরিয়াল গিজগিজ করছে। অথর্ববেদে মূল আলোচ্য হল কূহক বা ইন্দ্রজাল ও ভেষজ বিজ্ঞান। মানবজীবনের বহিরঙ্গ ও অন্তরঙ্গ উভয়দিকের পরিমার্জন যদি মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির লক্ষ্য হয় তাহলে অথর্বঞ্চকে বাদ দিয়ে কিছু হতে পারে না।

    সেই সময়টায় আমি আমার ননীগোপাল বিদ্যামন্দিরে টিচার মদন শীল ও অথর্ববেদ দ্বারা খুবই ইনফ্লুয়েন্সড ছিলাম। আমার ধারনা খুব মেজর দুটো জিনিস অথর্ববেদের মধ্যে ঘাই মারছিল:

    ক. বৈদিক ও অবৈদিক সভ্যতার সহবস্থান
    খ. প্রাগৈতিহাসিক যুগের মূল্যবান দলিল ধারণ, অর্থাৎ লোকশ্রুতি, লোকাচার ও মন্ত্র।

    এই পয়েন্ট করে লেখাটা মদনস্যার শিখিয়েছিলেন। স্যার আমাদের ক্লাস ওয়ানে বাংলা, টুয়ে ইংরাজি, থিরিতে অঙ্ক, ফোরে ইতিহাস, ফাইভে বিজ্ঞান, সিক্সে ভূগোল আর সেভেনে সংস্কৃত পড়াতেন। আমি মন খুলে মানে বই লিখতে লাগলাম, জানতাম সব কিছুই সব কিছুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আর লিখতাম স্যারের কথামত পয়েন করে করে। দেশ ছাড়ার সময় স্যারের একটা বই আমার কাছে ছিল, সেই অথর্ববেদই হয়ে দাঁড়াল আমার রেফারেন্স।

    ক. অথর্ববেদ মানে - আথর্বন বা অথর্বন, যা জাদুমন্ত্রের জ্ঞান বিশিষ্ট বেদ বা সংহিতা।

    অথর্বন বুঝান হয় অগ্নি বা অগ্নি উপাসক পুরোহিত বা জাদুকরকে। অথর্বের অর্থাৎ প্রবীণদের মন্ত্রতন্ত্র ও কূহককে। প্রবীণদের উপেক্ষা করলে হবে না। তাড়া তাদের জীবনের প্রজ্ঞা লিপিবদ্ধ করে গেছেন, আমরাও করছি। সুতরাং কোটেশন দেওয়াটা খুব জরুরি। অমুকে এই বলে গেছেন, তমুকে এই লিখেছেন।

    খ. অথর্ববেদের প্রাচীন নাম "অথর্বাঙ্গিরস'- অথর্ব + অঙ্গিরা:।

    অথর্ব ও অঙ্গিরা নামক ঋষিদের বচন ও উবাচন লিপিবদ্ধ, তাই অথর্ববেদ।

    এ সকল ঋষিরা অনেক সাধনা করেছেন, অনেক ভেবেছেন, কিন্তু সবকথা তো লিখে যাননি। তাই আমাদেরই সেই গুরুদায়িত্ব বহন করতে হবে। এখন আমরা লিখলে তারা বলবেন। যথা - ঋষি কাপুর। ফলে আমাদের সকল সৎ ভাবনা ও বিশ্বাস এই বেদের অন্তর্ভুক্ত।

    গ. মূলত ইহা মন্ত্র, জাদু ও কূহক। সুতরাং আমাদের ও আমাদের পিতৃব্য তদ_ লিখিত সাহিত্য বিবিধ রচনা সম্ভার ইত্যাদির গ্রন্থনা অর্থাৎ ভাষা হল মন্ত্র, কূহক বা এক জাদু।

    "অথর্বন'এ সন্বেবেশিত শুভঙ্কর বা মঙ্গলময় মন্ত্রতন্ত্র আসলে আমাদের আদি বিজ্ঞান গ্রন্থাদি। রোগমুক্তির উপায় সেখানে লিপিবদ্ধ। অঙ্গিরসে পাওয়া যায় মারণ, উচাটন, বশীকরণ, অভিচার সমন্বিত কূহক মন্ত্র ইত্যাদি মূলত ক্ষতিকারক দিকসমূহ। এতে আছে শত্রু, প্রতিদ্বন্দ্বী, কু-প্রকৃতি বিশিষ্ট ঐন্দ্রজালিক এবং এই জাতীয় লোকের বিরুদ্ধে প্রযুক্ত অভিশাপ ও অভিচারসমূহ ও সেই কেন্দ্র করে ঘটা নানা অনুষ্ঠান। এটা আমাদের বুঝতে হবে আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে ভিলেন জিনিসটা খুব জরুরি। আমজাদ খানকে মেরে পাটপাট করে দিলে তবে হিরো অমিতাভ-ধর্মেন্দ্র। শোলে হিট। রাম তীর ছুঁড়ে ছুঁড়ে রাবনের একটা একটা করে মাথা কাটছে এখানে, ওখানে জ্বলে ওঠা চিতায় ঝাঁপ দিয়ে সতী হচ্ছে দেশের সব সেয়ানা মেয়েরা। রামায়ন হিট। এই ধর সিঙ্‌গুরে রেপ-মার্ডার করে সিপিএম হল ভিলেন, তাপসী মালিক হিট। ন্যানোই গুটিয়ে গেলো সিঙ্‌গুর থেকে, জিও মমতা। কবীর সুমনের গানে তাপসী হয়ে গেলেন কবিগুরুর নিরুপমা। কোটেশন দিতে ইচ্ছা করছিল কিন্তু লোভ সম্বরণ করলাম। ফলে এটা বোঝা যাচ্ছে বিষয়টা আদতে এক হলেও প্রকাশের ভাষাটা খুবই জরুরি এবং তাকে হতে হবে মন্ত্র, কূহক বা জাদু।

    আলোচনার সুবিধার জন্য আমরা এখান ভাষাকে চার ভাগ করে নেব।

    ক. শুভকারক।
    খ. অশুভকারক। যেমন ডাইনি বিদ্যা।
    গ. প্রতিরোধক বা আত্মরক্ষামূলক। মূলত ইংরাজি ভাষা শিক্ষা।
    ঘ. নিরাময়মূলক।
    ক. শুভ বা মঙ্গলময় ভাষা

    একে আমরা ছয় ভাগে ভাগ করতে পারি।

    i. কৃষি ও সকল উর্বরতার সঙ্গে যুক্ত।
    ii. বৃষ্টিকামনা।
    iii. প্রেম সংঘটন মূলক।
    iv. যাত্রা, ভ্রমণ, নৌকা ও চলাচল সম্মন্ধীয়।
    v. প্রকৃতির ভয়ঙ্কর লীলার আয়ত্তিকরন।
    vi. শিকার, মাছধরা সম্পর্কীত।

    প্রথম দুটি ইতিমধ্যেই ব্যাকডেটেড। আমরা শিল্পে সুপারবিপ্লব চাই, কৃষিকাজের কথা মনকে মনে মনে জিজ্ঞাসা করাই ভালো। প্রেমের ব্যপারে আমাদের সাহিত্যিকগণ চিরকালই অগ্রগণ্য। প্রতি শুক্রবার যে সকল বই হলে রিলিজ করে তার ভাষা এটি প্রেমময়। পরবর্তী তিনটি বিভাগের ভাষার মূল উপাদান সাসপেন্স। কী করে একটা একটা করে শব্দ ঢুকিয়ে থমথমে পরিবেশ রচনা করতে হবে, কোথায় কিচুক্ষণ শব্দহীন হয়ে গায়ে কাঁটা দেওয়ার উপক্রম তৈরী করতে হবে, তার জন্য প্রয়োজন নানা কৌশল।

    ... পা মনে গনানে কালী
    তুফান ভাংগায় ডালি
    দোহাই মা বদর আলী
    গাঙ্গের তুফান হয়ে যারে পানি
    দোহাই মা কালী।
    দোহাই মা কালী।
    দোহাই মা কালী।...

    বলে অমিয় নৌকার গলুইতে বসে বিক্ষুব্ধ নদীর জল নিয়ে মন্ত্রসিদ্ধ করলেন। পড়ে উক্ত জল গলুই ছুঁইয়ে নদীতে ফেলে দেন, অংশে অংশে। নদীর তুফান সহসা স্তিমিত হয়ে যায়, পশ্চিমের জটাজুটধারী মেঘ।

    আসলে ভাষার এই কায়দার সাথে সিনেমার অপূর্ব মিল আছে। তুফান শব্দের সাথে চলমান অশরীরী বা কাউবয় টুপিতে ঢাকা চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর মুখাবয়ব চলে আসা অবধারিত। অথবা ঘোড়ায় চড়া নবকুমার রুপী রঞ্জিত মল্লিক। সে কেবলই শুভ ও মঙ্গলময়ের জয়গান। ভিলেন কর্তৃক নায়িকা ধর্ষিত হওয়ার পূর্ব মুহুর্তে দরজা ভেঙ্গে নায়কের প্রবেশ ও উদ্ধার।

    খ. অশুভকারক ভাষা

    যুক্তিসম্মত অবিশ্বাস, শয়তানবাদ, ঈশ্বরদ্রোহী, ধর্মদ্রোহী মানুষের অহিৎকারী ভাষা বলে প্রচলিত। এই স্ল্যাং যারা শেখেন ও চর্চা করেন তারা সকলেই সমাজের চোখে শত্রু। একে আমরা পাঁচ ভাগে ভাগ করতে ফেলি।

    i. ঝড়, প্লাবন ডেকে আনা।
    ii. সম্পত্তি ধংস, ধংসের প্রযুক্তি।
    iii. রোগ ব্যাধির সৃষ্টি ও ছড়িয়ে পড়?।
    iv. মৃত্যু কামনা।
    v. ফসল নষ্ট।

    সন্ধ্যের মেঘের মত থতমত তখন রুবির মুখ। বাঁ হাত পেছনে এনে সন্তর্পণে খুলে দেয় ব্রা-এর স্ট্র্যাপ। চিলতে হাসিতে মৃদু কম্পন আর নাকের পাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পড়? স্বেদবিন্দুগুলি -

    ফুল তুলে মারি ফুল কুমারী
    লক্ষণের মারি বুকে।
    লক্ষণের শক্তিশেল বান পড়ে গেল
    অমুকের বুকে।
    মার মার মার ফুল মার অমুকের ঘাড়?
    কার আজ্ঞে শ্মশানবাসী শিবের দোহাই
    দোহাই মা কালীর আজ্ঞে। জয় মা।

    কোমর জল বাড়তে বাড়তে গলায় পৌছয় নি:শব্দে। আর অপেক্ষা নয়, ঝাঁপিয়ে পড়তেই হয়, আর রূবী তার অনেমিক স্তনগুলি আমার মুখের সামনে তুলে ধরে মুসান্ডাগুচ্ছের মত আর আমার মনে পড়ে নীল-সাদা স্কার্ট ব্লাউজে হেনরিয়েটা, বর্ষাস্নাত নেমে আসছে নীল পাহাড় বরাবর, ত্রাতা হে শ্রী মধুসূদন।

    পাঠকের স্নায়বিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য বা কাম উত্তেজনা আনার জন্য এই রসের অবতারণা করা হয়। দারু্‌ণ মানসিক যন্ত্রনায় নিস্তেজ দুর্বল পাঠে অরুচি পাঠক যখন নিজের জীবন-আহ্লাদ-স্বাদ সম্পর্কে অনিশ্চিত ভরসায় প্রহর গোণে তখন তা প্রয়োগ করেন শব্দবৈদ্য। এগুলি আদিরসাত্মক বা অশ্লীল না বলে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখাই উচিত।

    গ. প্রতিরোধক ভাষা

    পরিবেশ সর্বদা প্রতিকূল। খাদ্য, বাসস্থান, জীবিকা, জীবন সবেতেই সংশয়। দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিটি বেগুন, কার্বন ফুটপ্রিন্ট, এইডস। সুতরাং আত্মরক্ষা সর্বদা প্রয়োজন। লেখকেরও প্রয়োজন, পাঠকেরও প্রয়োজন। অথর্ববেদে এর প্রচুর নিদর্শন আছে। কোন সাপ কামড়ালে তার বিষক্রিয়া যাতে সমস্ত শরীরে না ছড়িয়ে পড়ে তার জন্য বাঁধা হয় তাগা বা বাঁধন।

    সুজন তাগা জাতে জানি
    তাগা ছুঁলে বিষ হয়ে যায় পানি
    ধুলার মুচটে বান্ধিলাম লাল
    যাহা যাস বিষ তুই কাল।

    তার নিজের আইডিয়ালিজম ধুয়ে সে নিজে জল খেলেও অন্যেরা তা খাবে না, এটা শান্তনু ভালভাবেই জানে, অন্তত সে এই সেক্স ওয়ার্কারদের সঙ্গে এখনো কটা কথাই বা বলে, সবই তো সে সন্ধ্যাবেলা মদ খেতে খেতে ভাবে, শেয়ারিং বলতে সেলফের সঙ্গে, আর হ্যঁ¡ এটা বোঝে আরো দ্র¦ত ছড়িয়ে পড়তে হবে, এইডসের চেয়ে দ্র¦ত; জামা-জুতো পরে শুয়ে পড়তে পড়তে ভাবে, সে অন্তত অনলাইন পিটিশন ফরোয়ার্ড করছে না, লড়াই করছে ফিল্ডে।

    এই প্রতিরোধক বা আত্মরক্ষামূলক ভাষা মূলত সাত প্রকার। প্রয়োগভেদে অভিন্ন বা বিভিন্ন হতে পারে।

    i. সাপ ও বিভিন্ন প্রাণীর দংশন বিষয়ক।
    ii. কাঁটা ফোটা, কেটে যাওয়া।
    iii. বাঘ, ভালুক, কামট, কুমির, নদী, সমুদ্র, প্রলয়।
    iv. ভূত, প্রেত, দানব-দৈত্য, ডান-ডাইনি।
    v. জলচর, স্থলচর, উভচর, খেচর।
    vi. শত্রুনিধন, নিরাপত্তা, বিবাদ এড়ান, সম্পত্তি রক্ষা।
    vii. রোগ, ব্যাধি নিবারক।

    ঘ. নিরাময়মূলক ভাষা

    প্রতিরক্ষার ভিতর আমরা এ বিষয়টি সবিস্তারে আলোচনা করেছি। আসলে বর্তমান সময়ে নিরাময়ের সম্ভাবনা প্রায় নেই, নেহাতই প্রতিরক্ষার প্রচেষ্টা। তিন ভাগে যদিও একে ভাগ করা হয়েছে, সেটা এরূপ:

    i. দুরারোগ্য ব্যাধি (কারন অজানা) - বিবিধ
    ii. ক্ষত, দংশন - (শাশুড়ি-বউ, পতি-পত্নী, হিন্দু-মুসলমান)
    iii. বানমারা, ক্ষতিকারক বিষয় যেমন কীটনাশক, যুদ্ধ ইত্যাদি।

    মূলত অবজ্ঞা, স্যাটায়ার, গাঁটুলি বা জলসা, ডায়ালগঘন মেগাসিরিয়াল। এখানে গাঁটুলি বা জলসার উদাহরন উদ্ধৃত করব। চিকিৎসার পরও কোন ক্ষত ও ঘা সারতে বিলম্ব হলে বলা হয় সেপটিক হয়েছে। সেপটিকে মৃত্যুও হয়ে থাকে। অথর্ববেদে এ জাতীয় ক্ষত প্রভূত নিরাময়ের প্রয়োগ আছে। রোগ নিরাময় না হলে বলা হয় গাঁটুলি বা কয়েদ করা হয়েছে। ডাইনি বিদ্যার জোরে গাঁটুলি করা যায়। গাঁটুলি প্রতিহত করতে বিনিয়োগ করা হয় জলসা। ধুম মচা দে, ধুম।

    শোড়া গাছের দুম দুমনী বিষের নাম পুও
    গাঁটি গাঁটুলি করিয়ে বেটা আসতে না দেয় ধেয়ে
    গাঁট ভাঙ্গি, গাঁট ভাঙ্গি ভাঙ্গি লোহার শিকল
    চৌষট্টি গাঁটুলি ভেঙ্গে বিষ তুই ঘা মুখেতে নিকল।

    যাত্রা সদৃশ জলসা বা নেহাত জলসার কোন সুপারস্টার নাইট মানুষের জ্বালা সহজেই ভুলিয়ে দেয়। কাঁচুলি পরিহিত মধ্য চল্লিশের দেবশ্রী রায়ের "আমি কলকাতার রসগোল্লা' সহজেই নগরজীবনের সকল সঙ্কটের নিরাময়ের প্রতীক হিসাবে গন্য হয়। যাত্রার অনুকল্পে বিবিধ মিস জুলি দ্বারা নৃত্য খচিত সমাজ মনস্ক শাঁখা-সিঁদুর আঁকড়ে ধরা পালাগুলি ও প্রসেনজিতের সাদা জামা ও সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি হিল পরে কিশোরকিন্নর কন্ঠে গেয়ে ওঠার মধ্যে একমাত্র নিরাময় ও ক্ষনসুখ নিহিত।

    ।।ইতি পাঠক পর্ব সমাপ্ত।।

    ।৩।

    এম এস এম:

    আমি ভেতরের চেম্বারে বসে লিখতাম, বাইরে লোকজনের খুটুর মুটুর। শুরুতেই মহাগুরুতে পরিতোষ আর তপতী জয়েন করেছিল। একজন অন্যজনকে দেখতেই পারে না। পরিতোষ ছিল প্রুফ দেখার লোক, প্রুফ দেখত। অভাবের সময় দু'চার পাতা লিখেও দিয়েছে, আসলে ঐ ফর্মা-টর্মা মেলানোর ব্যাপার থাকে তো! তড়িঘড়ি তখন লিখে দিতে হয় দুঞ্চএক পাতা। আমার আবার ভাব না এলে লেখা হয় না। পেজ মেকআপ-টেকআপে খুব ডিসিপ্লিন লাগে, আর পরিতোষ সেই সবে খুব কড়া, কোথায় দুই টাইপ বেশি, একারের উপর মাত্রা থাকবে কী থাকবে না, কোনটা বোল্ড, প্যারাগ্রাফে কতটা ছাড়, উফ। আমি এ সবে হাঁফিয়ে যাই। পরিতোষকে দেখলে বোঝা যায় না এতটা ডিসিপ্লিনড। বেহেড মাতাল - সকাল থেকে রাত - টপ টু বটম হাউসফুল। তাই নিয়েই সকাল-বিকেল ঝামেলা দুটোয়। তপতী আর পরিতোষ। কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলার লোক নয়। তপতী হিসাব রাখত, ফোন উঠাত, অর্ডার নিত। ক্যাশবাক্স টু প্রেসে দৌড়াদৌড়ি সব। এ দুটোই আমার রাইট-লেফট হ্যান্ড সব। দামোদর দত্ত বস।

    দামোদর দত্ত'র দোষটা ছিল জুয়াখেলা। সবচে মজার কথা নিজের ব্যবসা, বইপত্তর নিয়েও জুয়া খেলতে শুরু করলেন, তাস তো ছিলই। আমি যখন দেশ থেকে আসি, তখন তার ব্যবসায় খুব তেজ নেই, বৌএর প্রতি অবহেলা, দোকান কেমন মরা মরা যেন। স্রেফ তাস খেলার জন্যই এই পোড়া দেশে পড়ে আছেন। পরের তাসটা খেললেন আমাকে নিয়ে। সাকসেস। এবার জুয়া শুরু হল, এম জি এস এম বা এম এস এম। মহাগুরু সাহিত্য মন্দির। মানে বইএর পর আমি সুরু করলাম উপন্যাস, একটানে বই শেষ। বস বাজার স্টাডি করে নাম জোগাড় করে আনতেন। মানে রাইটার্স নেম। ভালো লেখকের নাম না থাকলে বাজারে কাটবে কেন? ফাল্গুনী - আশু মুখুজ্জে - নিমাই দেদার লিখেছি। বছরে ৩০-৪০টা করে বই। তখন আমার চেয়ে ইস্পিডি আর কেউ লেখত না। আজকাল শুনি সুনীল, হুমায়ুন সব নাকি ইন্ডাস্ট্রি বানিয়েছে। অফিস ভর্তি রাইটার। রাইটার্স বিল্ডিংএর কথা শুনেছি, চোখে দেখিনি, তিনতলার উপরে এই ঘরই আমার কৈলাস, শ্রীক্ষেত্র। যেদিন লিখতাম, একটানা লিখে যেতাম। শেষ হলে তপতী আর পরিতোষকে ডেকে শোনাই। যদি তপতীর চোখে জল আর পরিতোষের মুখে হাসি না দেখি তবে বুঝে নী মাল কম আছে, বাজারে চলবে না। তপতী মেয়েটা কথায় কথায় কাঁদতো, আমি জানতাম আমার লেখায় ওটাই আসল। হিউম্যান মাইন্ডই বল আর পিসাইকোলজি, ঐটা ক®¾ট্রাল করতে পারলেই হল - লেখকই বল, আর চিকিৎসক। ইটস অল গেম।

    দামোদর দত্ত মারা যাবার পর আমি মেন্টালি খুব উইক হয়ে গেছি। ব্যবসা ঝাড় খাচ্ছে। আশু-নিমাই আর কাটছে না। সমরেশ-টমরেশ নতুন নাম দরকার। আসলে লেখার চাইতে মার্কেট ইস্টাডিটাই আসল। আর সব তাই বাদ দিয়ে "চিরঞ্জীবি বিশল্যকরনী' লিখছি। ২৪টা খন্ড হয়ে গেছে, আরো কয়টা লিখতে পারলে মন্দ হয় না। কিন্তু আর পেরে উঠিনা, চোখে ভাল দেখিনা, শর্করা, রক্তচাপ - সবই তো বাসা বেঁধেছে। কলকাতায় বিশাল বইমেলা হয়। সেখানে স্টল দি কিন্তু লাভ বেশি থাকে না। বসের হিসাব আমি কোনদিন কিছু বুঝিনি, আজও ঠাউর করতে পারি না। যখন জ্ঞচি বিঞ্চ লিখতে চাইলাম, বলল এখন নয়, আগে মানে বই। গাদা গাদা মানে বই হল। এখনো ভালই বিকোয়। বই-বাচ্ছা ঐ টাকায় ভালই আছে। সে সবে আমার লোভ নেই। বসি আমায় দাঁড় করিয়েছে, আমায় নিয়ে জুয়া খেলেছে। আবার "চিবি' লিখতে চেয়েছি, তখনো দামোদর দত্ত বলেছে এখান গল্প-উপন্যাসের সময়, মেয়েদের দু:খ-কষ্টের কথা লেখ। একের পর এক লিখে গেছি। ঘোস্ট রাইটিং। চোখের সামনে তপতীকে দেখতাম আর লিখতাম। বাল্য বিধবা। তিন ভাসুরের সংসারে থাকে। অমানুষিক পরিশ্রম করে ছেলে-মেয়ে মানুষ করেছে। তিন তিনবার পেট হয়েছে। আমি দোতলায় ইউনিয়ন ড্রাগ হাউসে কথা বলে সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ইচ্ছে করলে হয়ত ওরে বিয়ে করতে পারতাম। আসলে যত এর ওর নামে উপন্যাস লিখেছি, তপতীই ছিল তার নায়িকা। এক দমে লিখে গিয়েছি তপতীর ভ্রুভঙ্গি, ঠোঁটের আগার তিল, পায়ের পুরুষ্টু গুছি আর হাল্কা শাড়ির নিচে উদ্ধত বুক। নাহ সংসার আমার জন্য নয়। আমি শুধু "চিবি' লিখতে চেয়েছি। স্বনামে। আর কিছু নয়। ঠাকুমার একখানা স্বপ্ন আর ঐ অথর্ববেদ এই তো আমার মূলধন। দামোদর দত্তের ইচ্ছে ছিল না নিজের নামে লেখাটা। কতবার বলেছে, বড় কোন ডাক্তারের নাম কিনে আনি, তুই ঘরে বসে লেখ। আমি রাজি হইনি। তপতীও না, পরিতোষও না। পরিতোষ দুম করে চলে গেল দেশে। নন্দীগ্রামে তখন ধর্মযুদ্ধ চলছে। বসও নেই। শুধু তপতী। এবার বইমেলায় ওই স্টল সাজিয়েছে, ক্যাশমেমো কেটেছে। আমি চাদর গায়ে ঘুরে বেড়িয়েছি। দেখেছি আমার নিজের নামে বইও বিকোচ্ছে। দামোদর দত্ত থাকলে দেখে যেতে পারত। বসের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই "চিবি' বার করলাম। একসঙ্গে চার খন্ড। বসের ইচ্ছা ছিল পাতলা চাট্টি চটি বই হবে, "নির্বাচিত প্রেমপত্র সংকলন', "রসে ভেজা sms ', কলকাতা গাইড (নতুন মোবাইল নম্বর সহ)এর সঙ্গে বিক্রি হবে। দশ টাকা পিস। আরে দূর, সব কিছু এক স্কেলে ভাবলে হবে? লেখা কম্পোজের পর দাঁড়াল একেক খন্ডই ৮/১০ ফর্মা। বসের মাথায় হাত। নিজের নামে এই বই! আমি নাকি সুইসাইড করতে চাই! শেষে নিমরাজি, বলল হাফ লস করতে হবে। দাম হবে ৪০/৫০ টাকা। তপতীও বলল, তাই হোক। অবশেষে লেখক হলাম। চিরঞ্জীবি বিশল্যকরনী। খন্ডে খন্ডে বেরল, বেরোতেই থাকল। জানুয়ারির হাল্কা ঠান্ডায় আমি চাদর গায়ে ঘুরি, দেখি আমার নিজের নামের বইয়ের বিক্রি। ঠাকুমার স্বপ্নের স্থিতি। অথর্ববেদের কদর।

    ।।ইতি প্রকাশক পর্ব সমাপ্ত।।

    #পরিতোষ,

    শরীরটা ক'দিন খুব খারাপ যাচ্ছে। তুই ফিরে বানানটা একটু দেখে দিস। প্যারাগ্রাফও তোর হিসেব মত করে নিস। একটু এদিক-ওদিক আছে। আর তপতী বলছিল, ওর কথা কমিয়ে দিতে। কিন্তু আমি বলছি, পুরোটাই থাকবে। আমি কিন্তু অসত্য বলি নাই। আমি আজ আছি, কাল নেই। তোরা এম এস এম'টা চালিয়ে যাস। "চিবি'র বাকি খন্ড তপতী লিখতে পারবে, ওর পরে আমার পূর্ণ আস্থা আছে। ভালো থাকিস। ভালোবাসা নিস। তপতীকে দেখিস।

    ইতি,
    মহাগুরু ভট্টাচার্য

    ঋণ:

    ১। Saratchandra Mitra, On the Silaris or Hilaris of the Eastern Bengal, Journal of the Department Letters, Vol. XV, 1927, Calcutta
    ২। Padmanath Bhattacharjee, Folklore and Folk Custom of Sylhet District in India, Man in India, Vol. X, 1930
    ৩। R.M. Sarkar, Dimensions of Folk Medicine Traditions in Human Society with Special Reference to Rural Bengal. Man in India Collection, 1993
    ৪। আশরাফ সিদ্দিকী, গুণীন, ঢাকা, ১৯৮৯
    ৫। দীনেশ চন্দ্র সেন (সম্পা:), পূর্ববঙ্গ গীতিকা, খন্ড ৪, কলকাতা, ১৯৩২
    ৬। মু. আবদুল জলিল, রাজশাহী অঞ্চলের মেয়েলী গীত: নারী জীবনের মর্মান্তিক দিক, শিল্পকলা পত্রিকা, জুন ১৯৯১
    ৭। ড: পল্লব সেনগুপ্ত, অথর্ববেদের উৎস সন্ধানে, শারদীয়া দৈনিক বসুমতী, ১৩৯২
    ৮। বঙ্গীয় শব্দকোষ, হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    ৯। সুভাষ মিস্ত্রী, মন্ত্র, লোকসংস্কৃতি গবেষনা পত্রিকা, ৯ বর্ষ ১ সংখ্যা, ১৯৯৬
    ১০। Robin Skelton, Spellcraft, A Manual of Verbal Magic, London, 1978

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১১ | ১৩৯৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন