এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • বিহুঃ অসমিয়া সমাজের আয়ুরেখা নির্মাণের এক সংক্ষিপ্ত ইতিকথা

    সুশান্ত কর লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৮ এপ্রিল ২০১১ | ৯৯৪ বার পঠিত
  • বিহু: অসমিয়া সমাজের আয়ুরেখা নির্মাণের এক সংক্ষিপ্ত ইতিকথা।

    সুশান্ত কর

    অতি চেনেহর মুগারে মহুরা অতি চেনেহর মাকো।
    তাতকৈ চেনেহর বহাগর বিহুটি নাপাতি কেনেকৈ থাকো ।।


    মাঠের ফসল ফলানোর বীজ ছড়ানো থেকে ফসল ফলে উঠার প্রক্রিয়ার সঙ্গে গোটা পৃথিবীতেই মানুষের জন্ম তথা যৌন জীবনের সাদৃশ্য কল্পনা করাটা এক স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রবণতা। তার ফলে সভ্যতার উন্মেষ লগ্ন থেকেই গোটা পৃথিবীর প্রায় সমস্ত আদিম মানুষেরাই কিছু আচার সংস্কার আর উৎসবের সূচনা করেছিল। সে আমরা জানি । সূচনা লগ্নের সেই উৎসবের রেশ এখনো আমাদের উন্নত সংস্কৃতিতেও থেকে গেছে । বাংলা অসমের তান্ত্রিক আচার বা অসমের কামাখ্যা ধামের অম্বুবাচি তেমনি একটি । সারা ভারতের রঙের উৎসব হোলিও তাই । পরে যদিও এদের সঙ্গে সতীর দেহত্যাগের কাহিনি, রামায়ণের কাহিনি , ভক্ত প্রহ্লাদের কাহিনি ইত্যাদি জুড়ে দিয়ে এক ব্রাহ্মণ্য আভিজাত্য দেবার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু কৃষিই যাদের জীবিকা সেই গ্রাম ভারতে সংস্কারগুলো নানা চেহারাতে তার আদিম প্রকৃতিতে এখনো রয়ে গেছে । এখনো দীর্ঘ খরার থেকে মুক্তি পেতে লোকে বেঙের বিয়ে দেয়। কুমারি মেয়েকে নগ্ন করে মাঠে শুইয়ে রাখে বা ঘুরিয়ে নিয়ে আসে। বস্তুত জন্মান্তরবাদ থেকে শুরু করে প্রায় কোনো হিন্দু আচার ও বিশ্বাসই নিজেকে আদিম প্রকৃতি পূজোর পরম্পরা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি, কিম্বা করেনি।

    অসমের "বিহু' তেমনি এক সূচনার রূপান্তরিত শিল্পীত রূপ। অসম বললেই আজকাল প্রথমেই মনে পড়ে "বিহু'র কথা । চোখের সামনে ভেসে উঠে "ঢোল-পেঁপা-গগনা' বাজাচ্ছে একদল ছেলে আর তাদের সঙ্গে কোমর দুলিয়ে নেচে চলেছে কয়েক জোড়া তরুণ তরুণী। পরনে তাদের ধুতি পাঞ্জাবি, মাথায় লাল সুতোতে ফুলের কাজ করা গামোছা ( ওরা বলেন "ফুলাম গামোছা') বাঁধা, মেয়েদের পরণে মেখেলা চাদর আর গায়ে সোনা রূপার অসমিয়া ছাঁদের গহনা। তাই দেখে মনে হয়ে বটে এ যেন এক প্রেমের উৎসব। আর মনে হবেই না কেন, গানগুলোও তো তেমনি: "কোমোরা বগালে চালত,/জীয়নে মরণে নেরিবা লাহরী/নেরিবা বিপদর কালত।/চাইনো চাই থাকিলে হাবিয়াস নপলায়/নেখালে নুগুচে ভো্‌ক,/কিনো খায়ে যাবি বালিহাটর বেঙেনা/দলিয়াই দি যাম তোক।'(বুলজিত) কিন্তু উপমা-রূপকগুলো লক্ষ্য করুন - উঠে এসছে একেবারেই কৃষি জীবন থেকে। এবারে, কৃষি জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটা উৎসব কেবল এক নির্দিষ্ট ভাষিক গোষ্ঠীর উৎসব হতে পারে না।

    "বিহু' সম্পর্কে পূর্বোত্তরের আন্তর্জালিক অভিধান "শব্দে' লেখা হয়েছে , "বিহু অসমীয়ার জাতীয় তথা স্বকীয় উৎসয়। "বিহু' শব্দটো সংস্কৃত "বিষুবত' শব্দর পরা অহা বুলি ধারণা করা হয়। বৈদিক "বিষুবন' শব্দই এবছর ব্যাপী হোয়া "সত্র' বা "যজ্ঞ'র মাজর দিনটোক বুজায়। অর্থাৎ দিন আরু রাতি সমান হোয়া দিনটোক বুজায়। এই দিনটোক মকর সংক্রান্তি বুলি কোয়া হয়। কিছুমান পণ্ডিতে অসমীয়া "বিহু' শব্দটি সংস্কৃত ভাষার "বিষুবন' শব্দর লগত মিল থকা বুলি ধারণা করিছে। বিহু প্রধানত অসমীয়ার কৃষির লগত জরিত এটা উৎসয়।' ( বেশির ভাগ অসমিয়া অভিধানের এবং পন্ডিতদের সেরকমই মত। হতে পারে সংস্কৃত "বিষুবত বা বিষুবন' থেকে শব্দটি এসছে। বাংলাতেও "বিষুব সংক্রান্তি' কথাটা রয়েছে। আর সে শব্দও কৃষি সভ্যতার সঙ্গেই সংযুক্ত । ভোরে স্নান করে সূর্যদেবতাকে প্রণাম করা হচ্ছে সারা ভারতের সমস্ত সংক্রান্তিতে করণীয় প্রথম কাজ। এই জল আর সূর্য কৃষিকাজের জন্যেই দরকার। কিন্তু অসমে বিহু শব্দটির অন্য উৎসও রয়েছে । আর সেই উৎসগুলো দেখায় "বিহু; কেবল অসমিয়াদের উৎসব নয়। পূর্বোত্তরের প্রায় সমস্ত জনজাতির উৎসব। মায় সিলেটি কাছাড়ি বাঙালিদের পৌষ সংক্রান্তির সঙ্গে "ভোগালি' বা মাঘ বিহুর পার্থক্য অতি সামান্য। সুপরিচিত অসমিয়া ভাষাতাত্বিক ড. উপেন রাভা হাকাচাম দেখিয়েছেন বিহুর সঙ্গে সম্পৃক্ত "গগণা', পেঁপা, হুঁচরি, মেজি, হারলি ইত্যাদি শব্দগুলোর উৎস, তিব্বত বর্মী শাখার ভাষা বডো গারো, ডিমাসা, মিশিং, তাই আহোম ইত্যাদি। "বিহু' শব্দের সংস্কৃত উৎসের কথা তিনি জানেন। তারপরেও তিব্বত বর্মী ভাষাগুলোর থেকে আসা আপাত ভিন্নার্থক শব্দের উল্লেখ করেছেন। যেমন তাই আহোম পয়হু/পিহু/বিহু। এবারে, "পয়' শব্দের অর্থ কিন্তু "বিষুব' জাতীয় কিছু নয়। ঠাট্টা তামাস। রং ধেমালি । তেমনি তাই-আহোম "বৈহু'র "বৈ' অর্থ পুজো "হু' অর্থ গরু। বডো মূলীয় "বিহু' শব্দের "বি' মানে হাটা, হু মানে দেওয়া ( বি-খোজ, হু-দি)। দেউরি "বিচু' শব্দের "বি' অর্থ অতি, চু অর্থ আনন্দদায়ক । ( উপেন রাভা) বডোরা বৈশাখের বিহুকে বলেন "রংজালী বৈশাগৌ'। এতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে "হৌচৌরি হৌচৌরি বিহৌ মাগি ফুরার' প্রথা রয়েছে। অসমীয়াতে এসে সেই প্রথার নাম হয়েছে "হুঁচরি'। রাভাদের বিহুর জনপ্রিয় নাম "বাইখ', সনোয়াল কাছাড়িদের "বাইথ', মিশিংদের "আলি আই লৃগাং'। বডোদের এদের বেশির ভাগ জনগোষ্ঠীই যদিও নিজেদের অসমিয়া বলে পরিচয় দেয় তাদের উৎসবের দিন ক্ষণ আর রকম সকম মোটেও হুবহু এক নয়। বডোরা নিজদের অসমিয়া বলে পরিচয় দেয় না । তাই আহোমরা যদিও সে পরিচয় দেয় তারাও আজকাল "তাই বিহু'বলে স্বতন্ত্র আয়োজন করে থাকেন। চাকমাদের মধ্যে "বিজু', মারলাদের "সাংগ্রাই' আর ত্রিপুরিদের "বৈসুক' এর থেকে আদ্যাক্ষর নিয়ে আজ ক'বছর ধরে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের এই তিন জনগোষ্ঠী একত্রে পালন করছেন "বৈসাবি' উৎসব। সেটি নিশ্চয় অসমিয়া ব্যাপার নয়।

    বাকি ভারতের লোকেদের কাছে যে "বিহু' বললেই আজকাল অসম আর অসমিয়াদের কথা মনে পড়ে তার কারণ গেল অর্ধ শতক ধরে এরা একে সফলতার সঙ্গে লৌকিক উৎসব থেকে জাতীয় উৎসবে রূপান্তরিত করেছেন। সেটি অসমিয়া মধ্যবিত্তের এক রাজনৈতিক উদ্যোগ। রাজনীতি বললে অনেকেই দলীয় রাজনীতির কথা বুঝে থাকেন আমরা সেরকম কিছু বোঝাতে চাইছিনা । বাকি ভারতের থেকে বিশেষ করে বাঙালিদের থেকে নিজদের স্বতন্ত্র বলে তুলে ধরাটা একসময় অসমিয়া মধ্যবিত্তের অনিবার্য প্রয়োজন হিসেবে দেখা দিয়েছিল। জাতীয় উৎসব "বিহু' সেই প্রয়োজনের ফসল। নইলে একসময় অসমিয়াদের অজনজাতি অভিজাত অংশ "বিহু'কে মোটেও শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন না । ভাটি অসমে বিহু তেমন কোনো জনপ্রিয় উৎসব ছিলনা এই সেদিন অব্দি । আজো গোয়াল পাড়ার "বিষুয়া উৎসবে' আর সবই আছে, নেই শুধু কোনো নৃত্যগীত। বাংলা ভাষাতে প্রথম ইতিহাস গ্রন্থের অসমিয়া লেখক হলিরাম ঢেকিয়াল ফুকন তাঁর "আসাম বুরঞ্জী'তে লিখেছিলেন, "বিহুর গান একটা হইয়া থাকে তাহাতে সাধারণ লোকের স্ত্রীলোক ও লম্পট পুরুষসকল একত্র হইয়া জুগুপৎচিত নৃত্যগীত করিয়া থাকে।' অসমিয়া জাতীয়তাবাদের পিতৃপুরুষ আনন্দরাম বরুয়ার জীবনী লেখক গুণাভিরাম বরুয়া লিখেছেন , "অশ্লীলতা তেঁও বর ঘৃণা করিছিল। বৈশাখর বিহুত নগাঁওর স্থানে স্থানে অশ্লীল নৃত্যগীত হৈছিল সেইসকলক তেঁও নিবারণ করালে আরু এইরূপ কার্য যে অনিষ্টজনক তাক তেঁও সকলোকে বুজাই দিছিল।' (দেবব্রত) অসম সাহিত্য সভার দু'একজন প্রাক্তন সভাপতিও ছিলেন বিহু বিরোধী। এরা প্রায় প্রত্যেকেই বাংলার নবজাগরণের দ্বারা বিশেষ করে "ব্রাহ্ম ধর্ম' আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। বাংলাতে যেমন রবীন্দ্রনাথের আগে পুরোনো লোক সংস্কৃতিকে প্রত্যাখ্যানের এক আয়োজন পূর্ণোদ্যমে চলছিল। এখানেও তাই হচ্ছিল। ড. দেবব্রত শর্মা লিখেছেন অসম সাহিত্য সভার প্রাক্তন সভাপতি কমলাকান্ত ভট্টাচার্য বিহু বিরোধীতা করেছিলেন এই ভয়ে, ""জানোচাঁ "বিহুর গীতবোর বর নিলাজ অভং' শুনি সতীর মতিভ্রম হয়। তেওঁ নিলাজ (বিহু) গীতর ঠাইত বীর-গীত গাবলৈহে আহবান জানাইছিল। মন করিবলগীয়া যে অসমীয়া ভাষা-সাহিত্যর কামত একাণপতীয়াকৈ আত্মনিয়োগ করা এই সকল ব্যক্তির সম্পর্কে কোনো আঁচনি বা চিন্তা নাছিল। সংস্কৃতি সম্পর্কে কোনো আঁচনি নাছিল। সংস্কৃতি সম্পর্কে তেঁওলোকর ধারণা আছিল হয় বাংলা সংস্কৃতি কেন্দ্রিক, নহয় ব্রাহ্মণ্য/সত্রীয়া সংস্কৃতি কেন্দ্রিক।'' (দেবব্রত)

    বস্তুত মেয়েরা প্রকাশ্য বিহু নৃত্যে যোগ দিত অতি অল্পই। ছেলেরাই মেয়ে সেজে বিহুর নানা নৃত্যে যোগ দিত। আজ যখন গাছ তলার বিহুকে এক পাশে সরিয়ে দিয়ে মঞ্চ বিহু নামে এক নতুন ধারা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে, মেয়েদের যোগদান ব্যাপক ভাবে বেড়েছে, তখনো একে বিকৃত প্রথা বলবার লোকের অভাব নেই। এই সেদিন চাও দেবেন্দ্রচরণ বরবরুয়া "প্রান্তিকে' লিখেছেন: "...বুঢ়াচেওর বিহুত ছোয়ালীর ( মেয়েদের-লেখক) স্থান নাছিল । আজিকালি ডেকা ( জোয়ান ছেলে),বুঢ়া, ল'রা, চেমনীয়া ( কিশোর-লেখক) গোট খাই লগত সরু ডাঙর ছোয়ালী লৈ ঘরে ঘরে বিহু মরা বিকৃত প্রথা এটা ওলাইছে। এনে প্রথাক বিশিষ্ট সাহিত্যিক ড. নির্মলপ্রভা বরদলৈয়ে ধিক্কার দি কৈ গৈছে যে "আগতে হুঁচুরি ( বিহুর আরম্ভ অংশের এক আবশ্যিক অংগ-লেখক) গাবলৈ মানুহর ঘরলৈ যাওঁতে ল'রা লগত ছোয়ালী নানিছিল। ল'রাক কোনোয়ে ছোয়ালী সজাই নচুয়াইছিল। এতিয়া হুঁচরি গাওঁতে ছোয়ালিয়েও বিহু মারিবলৈ যায়, বা: আধুনিকতা।' বিশ শতকের ষাটের দশক অব্দি "হুঁচরি'তে- যাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাচ গান করা আর গৃহস্থকে আশীর্বাদ জানানো হয় - তাতে মেয়েরা যেমন অংশ নিতনা তেমনি গানের বিষয়েও প্রেমপ্রীতির আধিক্য ছিলনা। ষাটের দশক থেকে ছেলেদের মেয়ে সাজিয়ে নিয়ে যাবার প্রথা প্রচলিত হয়। তখন থেকেই এতে প্রেমের গানের আধিপত্য বাড়তে শুরু করে। আশির দশকে সেই সাজানো মেয়েদের প্রতিস্থাপিত করে রীতিমতো কৈশোরোত্তীর্ণ যুবতিরা।

    স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় জাতীয়তাবোধে উদ্দীপিত অসমীয়ারা যখন নানা গোষ্টীতে বিভক্ত জাতিকে একত্রে বাঁধবার প্রয়োজনে এক জাতীয় উৎসবের প্রয়োজন বোধ করছিলেন, তখন অনেকেই বাঙালি হিন্দুর আদর্শে দুর্গা পূজাকে সে জায়গা দেবার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ঢাকার থেকে প্রকাশিত কালীপ্রসন্ন ঘোষের সম্পাদিত বাংলা পত্রিকা "বান্ধবে'র অনুসরণে ডিব্‌রুগড়ের চা-বাগিচা মালিক গংগারাম চৌধুরী "আসাম বান্ধব' প্রকাশ করতেন। ঐ কাগজ দুর্গা পূজার পক্ষে জোর সওয়াল করেছিল। "আলোচনী' নামে অন্য এক কাগজের নেতৃত্বে আরো অনেকে তখনই বিহুর পক্ষে উঠে পড়ে লাগেন। লক্ষীনাথ বেজবরুয়া, রজনীকান্ত বরদলৈ, জ্ঞানদাভিরাম বরুয়া প্রমুখ লেখক বুদ্ধিজীবিরা অনেক লড়াই করে "বিহু' মতো এক ধর্ম নিরপেক্ষ উৎসবকে অসমীয়াদের জাতীয় উৎসবের মর্যাদাতে উন্নিত ও প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হন। তাঁদের লক্ষ্য ছিল এমন এক উৎসব যার ছায়াতলে নানা জনগোষ্ঠীতে বিভক্ত অসমের সমাজ মিলনের স্বাদটুকু নিতে পারে । সাহিত্য সভার ১৯৫৯সনের সভাপতি অতুল চন্দ্র হাজারিকা বলেছিলেন, "আজি কেই বছর মানর পরা অসমর বহু ঠাইত রাজহুয়াভাবে বিহু উৎসব পালন করা হ'ব ধরিছে সাংস্কৃতিক উৎসব হিচাপে। নতুন যুগর নতুন বিহুতলীক ( যেখানে বিহু উদযাপিত হয়-লেখক) উদ্দেশ্য করি আমি ক'ব পারোঁ মিকির কচারী বড়ো/আবর মিছিমি গারো/ খাচীয়া, জয়ন্তীয়া, মিরি নগা/ জনমে মরণে সতে লগা-ভগা আহাঁ আহাঁ আহাঁ/ আমার এই বিহুতলী যাউতিযুগীয়া/ সকলোরে উমৈহতীয়া ( সার্বজনীন-লেখক)।' (দেবব্রত)

    পৌষ সংক্রান্তি বা নববর্ষের মতো ব্যাপারকে নিয়ে বাংলারও এক ধর্ম নিরপেক্ষ জাতীয় উৎসব গড়ে উঠতে পারত। আধুনিক বাংলাদেশের "নববর্ষ' সেটিকে প্রমাণ করে । কিন্তু বর্ণহিন্দু বাঙালি সেরকম কোনো উদ্যোগকে প্রশ্রয় দিলনা। অথচ সেই কাজই অসমিয়াদের মধ্যে করতে সফল হলেন এক বিশাল মাপের বাঙালি ভদ্রলোক ও গণ সঙ্গীত শিল্পী হেমাঙ্গ বিশ্বাস। তাঁর সেই বিখ্যাত উক্তি, "যি নাই অসমত সি নাই বিহুগীতত' এখনো অসমিয়া সমাজে প্রবাদের মতো শোনা যায়। তাঁর "অসম আরু বংগর লোকসঙ্গীত সমীক্ষা' বইতে যা লিখেছেন তাকে বাংলা করলে দাঁড়ায় , "অসমে যা নেই তা বিহু গানেও নেই। অসম এবং অসমিয়া জনমানসের নির্ভুল দর্পণ এই বিহু। ... ধর্মপ্রভাবমুক্ত ইহজগত এবং শ্রমশীল জীবনের প্রতি অসীম মমতা - এই হলো বিহুর দর্শন। ...শারদীয় উৎসব, দীপান্বিতা, দোল এই সবগুলো হিন্দুদের উৎসবে পরিণত হয়েছে। জাতীয় উৎসবের মর্যাদা এগুলো হারিয়েছে...। বর্ণহিন্দু সমাজের বিধি নিষেধ আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদই হলো বিহুর প্রধান উপজীব্য...। দু:খের বিষয় ভারতের সবগুলো উৎসবই সাম্প্রদায়িক। বসন্ত উৎসব রূপান্তরিত হয়েছে হোলি বা চৈতন্য উৎসব ইত্যাদিতে। শারদীয় উৎসব পরিণত হয়েছে দুর্গোৎসব ইত্যাদিতে । কারবালার কাহিনীমূলক মহরম হলো মুসলমান সম্প্রদায়ের। কিন্তু বিহু তার মধ্যেও এর ধর্মনিরপেক্ষ প্রকৃতি অক্ষুন্ন রাখতে পেরেছে । এটাই বিহুর গৌরব, অসমিয়া জনগণের গৌরব। "সেই গৌরবকে সম্মানিত করে চূড়ান্ত গানটি গাইলেন হেমাঙ্গ বিশ্বাসেরই এককালের শিষ্য ভূপেন হাজারিকা: "বিহু মাথোঁ এক ঋতু নহয় , নহয় বহাগ এটি মাহ। অসমিয়া জাতির ই আয়ুস রেখা...'

    "লোক সংস্কৃতি'র থেকে "জাতীয় উৎসব' হয়ে উঠতে গিয়ে কিছু পরিবর্তনতো বিহুর মধ্যে হয়েইছে। উজান অসমের মূল স্রোতের অসমিয়াদের "বিহু'ই প্রচারের মুখ দেখেছে বেশি । আগে যেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে "হুঁচরি' গেয়ে সংগৃহীত ধনে গাছতলাতে বিহু হতো, এখন সেখানে সংগঠিত কমিটির অধীনে "দুর্গাপূজা' ও তার পরবর্তী অনুষ্ঠানের মতো চাঁদা তুলে মঞ্চে বিহু আয়োজিত হয়। জাতীয় রাজনীতির প্রয়োজনে বিহুর এই যে রূপান্তরণ তার পূর্ণ সুযোগ নিয়েছে আধুনিক রাষ্ট্র ও ব্যবসায়িক কোম্পানীগুলো। গ্রামের বিহু এখন নগর কেন্দ্রিক এবং কোটি টাকার আয়োজনে রূপান্তরিত হয়েছে । বিহুর একধরণের ব্যবসায়িক রূপান্তরো ঘটছে । যাকে বলতে পারি বিহুর পণ্যায়ন। বিহুকে পণ্য করে বিকৃত করবার অভিযোগও আজকাল সরবে শোনা যাচ্ছে। একে আটকানো কতটা যাবে সেটি বলা মুস্কিল। দেবব্রত শর্মা আক্ষেপ করে লিখেছেন , "ড. ভূপেন হাজারিকার দরে একালর গণশিল্পীয়ে (আজির গেরুয়া নির্বাচন প্রার্থী) বিহু সন্মিলনত এরাতি গোয়ার বাবদ গণি গণি আদায় লৈছে লাখর হিচাপত টকা। তার বিপরীতে গাঁওবোর নিজম পরি আহিছে। অভাব অনাটনে বিহুর হরিষ হরিছে ( আনন্দ হরণ করেছে-লেখক)।' (দেবব্রত)

    আর সমস্ত জনগোষ্ঠির লোক সংস্কৃতির বেলাতে যেমন বিহুর বেলাতেও তেমনি কোনো ধরাবাঁধা "শাস্ত্রীয়' নিয়ম নেই। না আছে তার নাচের গানের কিম্বা বাদ্যের কোনো জটিল তত্ব কথা। হাজার বছরের পরম্পরা পরিবর্তনের মধ্যি দিয়ে যেতে যেভাবে তাকে গড়ে তুলেছে সে সেভাবেই গড়ে উঠেছে । ফসল উৎপাদনের সঙ্গে মানুষের যৌনজীবনের সাদৃশ্য কল্পনার থেকে যার যাত্রা শুরু সে সেখানেই মোটেও থেমে থাকেনি কোনোদিনই। এমন কি অনেক সময় আজ বিহুর সঙ্গে যে কৃষি কাজের কোনো সম্পর্ক রয়েছে তাকেই বেশ খোঁজে বের করতে হয়। এই যেমন বিহু নাচের ব্যাপারটি। একে অসমিয়া স্বতন্ত্র নাচের শৈলী বলে গোটা বিশ্ব জানে । বড় যৌন উত্তেজক বলে মুখরোচক আলোচনাও হয়। ভাবনা ওইখানেই থেমে যায়। আসলে কিন্তু এই নাচে বৈশাখের গাছে গাছে নতুন ডাল পালা মেলা আর পাতা গজানোর উৎসব শুরু হয় তারই এক শৈল্পিক পুনস্থাপন করা হয়। পাশের ছবিটি দেখুন আর বিহু নাচের সঙ্গে তার সাদৃশ্য কল্পনা করুন। ব্যাপারটা স্পষ্ট হবে । মহিষের শিঙে তৈরি পেঁপাতে (কৃষি সমাজের জনপ্রিয় বাদ্য। বাংলাদেশের কৃষির দেবতা শিবের শিঙার থেকে আকারে সামান্য ছোট আর সুসজ্জিত) মুক্তি নাথ বরগোঁহাই লিখেছেন , "আমাক অগ্রজ তথা সমল ব্যক্তিয়ে ১৯৬০-৬১ চনতে এনেদরে শিখাইছিল...পেঁপার প্রথম লহর বজালে দুয়োখন হাত কঁকালত থৈ হাউলি ঢেঁকি খোজর দোপন দি ঢোলর তাল আরু লয়র লগত সংগতি রাখি,ঠাইতে ঘুরি ঘুরি নচা আরু পেঁপাবাদকে উশাহ সলাওঁতে ঢোলর বুলনীত থিয় হৈ হাত মেলি নচা।' অর্থাৎ ঢেঁকিতে পাড় দেবার অনুকরণ করে এক সুন্দর এক নৃত্য ভঙিমা গড়ে তোলা হচ্ছে । হাত মেলে নাচাটাও আসলে শিল্পী শিখেছেন বসন্তের নতুন পাতাভরা ডালের থেকে । এমন কি "নাচনী'রা ( নৃত্যাঙ্গনা-লেখক) যখন কোমরটাকেও একটু পেছনে ঠেলে মাথা এক পাকে উপরে আবার পরের পাকে নিচে নামিয়ে হাত মেলে নিজের চারদিকে ঘুরছে তখন আসলে ওরা বসন্তের শেষদিনগুলোতে বড় বড় গাছে স্বর্ণলতার প্যঁ¡চিয়ে ওঠাকে নৃত্যশৈলীতে রূপান্তরিত করছে। বিহুনামে ( বিহুগানে-লেখক) রয়েছে: গছত বগোয়া ক'লীয়া লতা চ'তে গৈয়ে গৈয়ে/গছত বগোয়া ক'লীয়া লতা বহাগে পালেহি/ গছত বগোয়া ক'লীয়া লতা ফুলিলে ভেবেলি লতা। কিম্বা ধরুন এই গানটি: রাঙলী মদারর পাতে ঐ নাচনী/রাঙলী মদারর পাত। কঁকাল ঘূরাই ঘূরাই নাচিবি নাচনী লগাইছো নামরে জাত।

    এই যে "নামরে জাত' - জাত কিন্তু বিহু গানের এক রকমফেরের নাম। তেমন কোনো শাস্ত্রীয় বিধিবিধান না থাকলেও স্থানে কালে বিহু নাচের যেমন তেমনি গানেরও বেশ রকমফের প্রচলিত রয়েছে । বিহু গানের ঘোষা, পদ, যোজনা, চুটি, বা খন্ড ছিগা নাম , যোরা নাম, জাত (জাত নাম), বহুয়া নাম ইত্যাদি বেশ ভাগ রয়েছে। চুটি মানে ছোট, ছিগা মানে ছেঁড়া, নাম কথাটার অসমিয়া অর্থ গীত , এসছে বৈষ্ণব পরম্পরার থেকে। এই চুটি নামই মূল বিহু। শুরুতে শুধু এগুলোই ছিল। সাধারণত এগুলো চার পংক্তির স্তবক হয়। চুটি নাম দিয়ে বিহুনাম "পকি উঠে' মানে জমে উঠে। বাংলা কবির লড়াইর মতো বিহুতে জোরানামের প্রচলন পরবর্তী ঘটনা । লোকসংস্কৃতির গবেষকেরা একে কী বলবেন জানিনা । এ হলো বিহুর মূল কারক থেকে অপসারণ বা বিস্তার। জোরানামের সময় অব্দি এসে তরুণ জিজ্ঞেস করছে, বাঁহরে আগলৈ চাই পঠিয়ালো/ বাঁহর কোনডাল পোন ( সোজা-লেখক)/ সঁচাকৈ সুধিছো মিছাকৈ নক'বা / তোমার মরমিয়াল কোন? । তরুণী যেন জলের ঘাটে দাঁড়িয়ে জলাজমিতে মহিষ চরাতে ব্যস্ত তরুণকে শুনিয়ে জবাব দিচ্ছে: তিরোতার জনম দি বিধাতাই স্রজিলে/ পুরুষর লগতে যোর/ আয়ো লোকর বোপায়ো লোকর/ তোমাকে বুলি যাওঁ মোর

    মুল কারক থেকে অপসারণ এখানেই থেমে থাকেনি। ব্যক্তি, পরিবার, গ্রাম ও স্বদেশের সংস্কৃতি, রাজনীতি, ইতিহাস সমস্ত কিছুকেই বিহু নিজের মধ্যে ধারণ করে হয়ে উঠেছে আক্ষরিক অর্থেই অসমিয়া সমাজের দর্পণ। আনন্দের উৎসব বিহুতে অসমিয়া মানুষ নিজের দারিদ্র্যের নিরানন্দের কথা জানিয়ে এও গেয়ে উঠেছে: দেউতা অ' খুজি মাগি এমুঠি রান্ধো/ মাহ হালধিরে, গরু গা ধুয়াই লৈ, তরালি পঘারে বান্ধো। কিংবা গেয়েছে: টকার সরু সরু মাত সমনীয়া /টকার সরু সরু মাত/ম'হঘূলি চাপরিত টকার মাত শুনি/এরি যাওঁ পেটরে ভাত। ( বুলজিত) ইতিহাসের স্বাক্ষর ধরে রেখেছে এমন গান: স্বর্গদেউ ওলালে বাটচরার মুখলৈ/ দুলীয়াই পাতিলে দোলা/ কাণত জিলিকিলে নরা জাংফাই/ গাতে গোমেচেঙর চোলা। কিম্বা দিখৌত গুমগুমাই কোম্পানীর জাহাজ ঐ/ঢেঁকীত গুমগুমাই থোরা/ গাত জুই জ্বলিছে সরিয়হ ফুটিছে/ তোমাক দেখিবরে পরা। সিপাহী বিদ্রোহ বা দেশের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মণিরাম দেওয়ান আর পিয়লি বরুয়া ফাঁসি কাঠে ঝুলেছিলেন। সেই ঘটনাকেও অসমিয়া শিল্পী বিহু গানে ধরে রাখতে ভুল করেনি: সোণর ধোঁয়াখোয়াত খালি ওই মণিরাম/রূপর ধোঁয়াখোয়াত খালি/ কোম্পানীর ঘরতে কিনো দায় লগালি/ ডিঙিত চিপেজরী ল'লি। সুতরাং কেউ যখন বিহুর দিনগুলোতে গেয়ে উঠে: আমি অসমীয়া গাতে মুগা-রিহা/খোপাত আমার কপৌফুল,/আমারে চিনাকি ব'হাগর বিহুটি/হাততে জেতুকা বোল। - এই কথাগুলোর ব্যঞ্জনা বিস্তর , অর্থ ব্যাপক। অন্য কাউকে খাটো না করে নিজের সমাজের এর চেয়ে সুন্দর পরিচয় আর কিসেই বা কেউ তুলে ধরতে পারে!

    *********

    তথ্যসূত্র:

    ১) বুলজিত বুড়াগোহাইর সংগ্রহ থেকে; http://buljit.blogspot.com/

    ২) ড. উপেন রাভা হাকাসাম;অসমীয়া আরু অসমর তিব্বত বর্মীয় ভাষা; পৃ:১০১।

    ৩)ড. দেবব্রত শর্মার "অসমীয়া জাতি গঠন প্রক্রিয়া আরু জাতীয় জনগোষ্ঠীগত অনুষ্ঠানসমূহ' তে ব্যবহৃত উদ্ধৃতি; পৃ: ৩২৮)

    ৪) ঐ; পৃ: ৩২৯

    ৫)অসমর লোকসমাজ লোক উৎসয় বিহুর হুঁচরি, পদ, ঘোষা। যোজনা, নাম , জাত নাচ আদির চমু মর্মকথা; প্রান্তিক; ১৬-৩০ এপ্রিল, ২০১০ সংখ্যা; পৃ:১২ ।

    ৬) ড০ প্রদীপ নেওগ; গৃহস্থর চোতালত হঁচরি মরা প্রথাটো চলি থকা প্রসংগত;প্রান্তিক; ১৬-৩০ এপ্রিল, ২০১০ সংখ্যা;পৃ:১৭ ।

    ৭) ঐ; পৃ:৩৩১)

    ৮)ঐ; পৃ:৩৩৩)

    ৯) পেঁপাবাদন আরু নাচোনশৈলী; প্রান্তিক, ১৬-৩০ এপ্রিল সংখ্যা, পৃ: ২৬

    ----------------------------------------------------------
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৮ এপ্রিল ২০১১ | ৯৯৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন