নারী। সোনার ভারতবর্ষ, ঐতিহাসিক ভারতবর্ষে পৌরুষের সুমহান দাপট। কোথাও একান্তে নিভে যাওয়া, কোথাও সেভাবে জ্বলতে শুরু না করা এদেশের জেল্ডা ফিজগেরাল্ড, এলিজাবেথ ব্রাউনিং। অথবা স্বামীর সঙ্গে একই পেশায় না থেকেও নিজস্ব গুণ, প্রতিভা, চেতনা, দৃঢ়তায় অনন্যা। ঠাকুরবাড়ির মহীয়সীদের মতো সৌভাগ্যবতী বা তেজস্বিনী না হলেও নারীত্বের পরম্পরায় ভীষণ, ভীষণভাবেই উজ্জ্বল কিছু মানুষী। প্রমীলা। নেমসেক। কমন থেকে প্রপার নাউন। প্রমীলা দেবী। প্রমীলা নজরুল ইসলাম।
শুরুর গল্পটা শুরু থেকেই হোক। ১৩১৬ বঙ্গাব্দ। ১৭ বৈশাখ। ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জ মহকুমার তেওতা গ্রাম। আশালতা সেনগুপ্ত। আদরের দোলন, ছোট্ট করে ‘দুলি’। সেই আদর, সেই বাবা মা মেয়ের সংসার অল্প কয়েকদিনের। বাবা ত্রিপুরার নায়েব বসন্তকুমার কালরোগে পড়লেন। পরিণতি? চিকিৎসাহীন, টিমটিমে ভারতবর্ষে অকালে চলে যাওয়ার ট্র্যাডিশন। মা গিরিবালা। জীবনে ছোট্ট মেয়ের হাত, মুখ, ছোট ছোট দুঃখ কথা। কী করবেন? মৃত্যু মানে তো শুধুই শোক না, মৃত্যু অনিশ্চয়তা। মৃত্যুর এক কোল্যাটেরাল সমীকরণ। ড্যামেজ। শোকের সময় কোথায়? কুমিল্লা। আর সেই কুমিল্লার কান্দিরপাড়ের কোর্ট অফ ওয়ার্ডসের ইন্সপেক্টর প্রমীলার দেওর ইন্দ্রকুমার। স্ত্রী বিরজাসুন্দরী। ইন্দ্র-বিরজার ব্যতিক্রমী সংসার। স্বদেশী আন্দোলন, সংস্কৃতিচর্চা – এ পরিবার অন্যরকম। এখানেই আশ্রয় মা-মেয়ের। ফয়েজুন্নিশা বালিকা বিদ্যালয়ের আশালতার পড়াশুনো। মহাত্মার ডাকে অসহযোগ, এবং বারো বছর বয়সে পরিবারের প্রত্যক্ষ মদতে স্কুল ছাড়া সাহসিনী আশালতা। যদিও ঘরের ভেতর পড়াশুনো, লড়াই, জীবন নামক অসম্ভব এক উৎসব পালন – আশালতার এ লড়াই অন্য আরও অনেক তেজস্বিনীর মতো এগোচ্ছিল। ক্রনোলজির প্রয়োজনে এই অংশের একটু বিরতি। কারণ অনুমেয় ...
নজরুল। বিদ্রোহী, সমাজসচেতন, লেখক কবি নজরুলের কাজের সূত্রে আলাপ কলেজস্ট্রিটে কুমিল্লার পুস্তক ব্যবসায়ী আলি আকবর খানের সঙ্গে। সেনগুপ্ত পরিবারের বীরেন্দ্র অর্থাৎ ইন্দ্রকুমার-বিরজার ছেলে বীরেন্দ্রর বন্ধু আলি আকবর। পরিচয়ের সূত্রে কুমিল্লায় তাঁদের পরিবারের বাড়িতে নজরুলের কয়েকদিন যাতায়াত, থাকা। পরিবারের প্রিয় পাত্র হওয়া এবং একটা সময়ে নিজের মায়ের মতো বিরজাসুন্দরীর সাহচর্য – নজরুলকে নজরুল হতে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গেলেন এই নারী। একটা সময়ে কান্দিরপাড় ছেড়ে আলি আকবরের নিজের বাড়ি দৌলতপুরে বসবাস। সেখানেই আলি আকবরের দিদি আসমাতউন্নেশার মেয়ে সৈয়দা। নজরুলের নার্গিস। তীব্র প্রেম। সভা – মজলিস – প্রেম – বিবাহ। দিনক্ষণ ঘোষিত, বিয়ের মঞ্চে আকস্মিকতা। বিবাহের চুক্তি – নজরুল বিয়ের পর সৈয়দাকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে পারবেন না, নজরুলকেও দৌলতপুর থাকতে হবে। পৌরুষ, সম্মান বিদ্রোহ করল। আলি আকবরের চতুরতা থেকে বেরিয়ে বিয়ের ‘আকদ’ বা বিবাহ চুক্তি সাক্ষর না করেই বেরিয়ে এলেন নজরুল। নিমন্ত্রিতদের মধ্যে অন্যতম বিরজাসুন্দরী তখন কবির মসিহা। বিধ্বস্ত নজরুলের সঙ্গে দিলেন ছেলে বীরেন্দ্রকে। কাদামাখা বর্ষার রাতে কান্দিরপাড়। আঘাত, অবশ্য বড় অর্থে শাপে বর।
ঘনঘন কান্দিরপাড়ে বসবাসের মধ্যেই নজরুল-আশালতা তীব্র এক সম্পর্কের কুঁড়ি। ১৯২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস। গোমতীর তীরে দুজন মানুষ মানুষী। প্রকাশ্যে চলে এল প্রেম। অন্যরকম বিরজাসুন্দরী, সাহসিনী তেজস্বিনী মায়ের মতো এই নারী নজরুলের পাশে থাকলেন না। সামাজিকতার বেড়াজাল। ছোবল। গিরিবালা একা। সঙ্গে মেয়ে। অপমান। বাড়ি থেকে পালিয়ে বাপের বাড়ি বিহারের সমস্তিপুরে চলে এলেন মা-মেয়ে। অন্যদিকে ব্যস্ত নজরুল আশালতার সঙ্গে ভালবাসছেন দেশকে। ধূমকেতু। নিষিদ্ধ দিওয়ালি সংখ্যায় ‘ম্যায় ভুখা হু’- মতো প্রবন্ধ লিখে ফেরার। ব্রিটিশ রোষে। একটা সময়ে কুমিল্লায় গ্রেপ্তার। ক্রমশ আলিপুর সেন্ট্রাল জেল এবং কুখ্যাত হুগলী জেল – অনশন। ‘দোলনচাঁপা’ কাব্যগ্রন্থ। যার দোলন খোদ দুলি অর্থাৎ আশালতা। একটা সময়ে মুক্ত নজরুল সমস্তিপুর থেকে কলকাতায় নিয়ে এলেন গিরিবালা-আশালতাকে। বিয়ের সিদ্ধান্ত। তীব্র বিরোধিতা উগ্র মুসলিম সমাজ থেকে। স্বামী ইন্দ্রকুমারের অসম্মতি – উপায়ান্তর না দেখে প্রকৃতই পাশে থাকলেন না বিরজাও। ‘প্রবাসী’ পত্রিকার দপ্তরের প্রকারান্তরে ‘হিন্দু’ হয়ে পড়া ব্রাহ্মদের থেকেও ক্ষোভের শিকার। প্রবাসীতে নজরুলের লেখা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল। বিয়ের দিন। ১৯২৪। ২৫ এপ্রিল। বাংলায় ১২ বৈশাখ, ১৩৩১। কলকাতার ৬ নম্বর হাজী লেনে। শ্রীরামপুরের শ্রীমতি এম. রহমানের আর্থিক আনুকূল্যে। মুসলিম ‘আহলুল কিতাব’ বা ‘কিতাবওয়ালা’ মতে। বিয়ের পর আশালতাকে মুসলিম ধর্মান্তরিত করা হল না। যদিও প্র্যাকটিকালি, বাধা, লড়াই, অপমান – ট্র্যাডিশন জারি থাকল। নামটুকু বদলাল। আশালতা – কবির দেওয়া ‘প্রমীলা’ হয়ে থাকলেন।
বাড়ি কোথায়? কে আশ্রয় দেবে অসামাজিক বিবাহের কবি-কবিপত্নীকে? হুগলির কাঠঘড়া, একটা সময়ে হামিদুল মোক্তারের বাড়ি মোগলপুরা লেন। নজরুল-প্রমীলার প্রেম। মা গিরিবালার সাহসে, শ্রমে ভরপুর সংসার। আলো। প্রমীলার নিজের লেখা। পারিবারিক সংস্কৃতি ভীষণভাবে ছিল তরুণী প্রমীলার ভেতর। ‘সাম্যবাদী’ পত্রিকায় কবিতা ‘শঙ্কিতা’। ‘বেলা শেষে নীলিমায় ছেয়ে আছে অনিমিখ, কে ছড়ালে বিদায়ের সিন্দুর চারিদিক’। অথবা ‘করুণা’। ‘চিরদিন আমি থাকিব তোমার, কাঁদিবে বেহাগ কণ্ঠে আমার’। উল্টোদিকে প্রেমিক নজরুল। ‘বিজয়িনী’। ‘কবি-রানী’। ‘দোদুল দুল’। ১৯২৪। প্রথম সন্তান। কৃষ্ণ মহম্মদ। কয়েকদিনের অতিথি। পুত্রহারা প্রমীলা। একটা সময়ে বাড়ি বদল। চকবাজারের রোজ ভিলা। তীব্র রোমান্টিকতা, স্বাদেশিকতায় শোক ভোলার চেষ্টা কবির। ঘরে একাকিনী প্রমীলা। দারিদ্র। পাশে মা গিরিবালা। লড়াই। কবি সপরিবারে কৃষ্ণনগরে চলে এলেন। যদিও গরিবি পিছু নিল। ‘দারিদ্র অসহ, পুত্র হয়ে জায়া হয়ে কাঁদে অহরহ’। হেমন্তকুমার সরকারের গোয়ালপটির ঘিঞ্জি ঘর ছেড়ে গ্রেস কটেজ। দ্বিতীয় সন্তান। অরিন্দম খালেক। প্রিয় বুলবুল। ডাগর চোখ, মিষ্টি গলা, অসামান্য স্মৃতিশক্তি। অন্যদিকে নিজের যত্ন না নেওয়া ক্রমশ ক্ষীণ প্রমীলা। মুখে হাসি। ঘরে স্বামীর বন্ধু, ছেলের অন্নপ্রাশন, দায়িত্বে অটল নারী। বাড়ির পর বাড়ি বদল। কিভাবে কাটাতেন প্রমীলা? নতুন ঘর। সংসার। নতুনভাবে সাজানো। সাংসারিক স্থিরতা? ছিল না। নলিনীকান্ত সরকারের ১৫ নম্বর জেলিয়া টোলা স্ট্রিট, এন্টালির আট বাই এক পানবাগান লেন। তৃতীয় সন্তান সব্যসাচী। সানি। কালের অমোঘতা। বুলবুল। ১৯৩০-র এপ্রিলে বুলবুলের অসুস্থতা। গুটি বসন্ত। সারা গায়ে, চোখে। অসম্ভব কষ্টে ছটফট বুলবুল। সারা ঘরে দাপিয়ে বেড়ানো বুলবুল। ৭ মে। ১৯৩০। চলে গেল। কলকাতার মসজিদ স্ট্রিটের ঘরে। অন্ধকার। পাথর। গিরিবালা। ‘রুবাইয়াত-ই-হাফিজ’ অনুবাদে শোকসন্তপ্ত নজরুল। ‘আমার কাননের বুলবুলি – উড়ে গেছ। যে দেশে গেছ তুমি, সে কি বুলবুলিস্তান ইরানের চেয়েও সুন্দর?’
অথচ প্রমীলা? এখানেই অনন্যা। মায়ের যন্ত্রণা। তবু, কর্তব্যে অবিচল। চোখের জল লুকোলেন। ফাঁকা কোল আঁচল দিয়ে লুকিয়ে রান্না, স্বামীসেবা। সেবার চেয়েও বড় মানুষটার পাশে থাকা। কারণ পুত্রশোকের পাথর অবিশ্বাস্যভাবে কবির বুকে চেপে বসল। বামপন্থী, আপোষহীন নজরুল অন্যরকম হয়ে গেলেন। শোক নিতে পারলেন না। বালিগঞ্জে যোগীরাজ বরদাচরণ মজুমদারের বাড়িতে নিয়মিত যেতেন। কখনও নিজের ঘরে। বুলবুলের ব্যবহৃত জিনিস। যোগ। তন্ত্র। যদি ফিরে আসে ছেলে? যোগাযোগ। মৃত্যুপরবর্তী। অথচ মা, তীব্র ব্যথার দানে কাঠের মতো পোড়া প্রমীলা শক্ত, কঠিন। স্বামীর ভুল বুঝতে পারলেন। আটকালেন। পারলেন না। জেদি নজরুল শোকের মুখেও অটল। কে আটকাবে? যদি ছেলে আসে? যদি ...।
চতুর্থ সন্তান। অনিরুদ্ধ। অর্থাভাব। স্বামীর লেখা। এবং অন্য এক আঘাত। ১৯৩৮। পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরার মতো উপসর্গ। দুটো পা-ই অসাড় হয়ে গেল প্রমীলার। ড. বিধানচন্দ্র রায়, ড. নরেন ব্রম্ভচারী ফিরে গেলেন। বিধ্বস্ত নজরুল। আঘাতের পর আঘাত। হঠাৎ চলে গেলেন বিরজাসুন্দরী। পাশে না থাকলেও, মানসিকভাবে কবির অভিভাবিকা, মহীয়সী বিরজা চলে গেলেন। একা ভরসা প্রমীলা। অসুখ, ওষুধ। ডায়মন্ডহারবারে গুণিন, বীরভূমের আমোদপুরে লাভপুর থেকে বন্ধু লেখক তারাশঙ্করকে নিয়ে পুকুরে ডুবে মাটি তুলে আনা। ওষুধ। এসমস্তই তখন নজরুলের পৃথিবী। পুত্রশক ভুলতে ‘চন্দ্রবিন্দু’ নামের হাসির গানের বই। জীবন থেকে হাসি উধাও। রেডিও, চলচ্চিত্র, গান লেখা – এসমস্তই বিকল্প পৃথিবী। আসলে বোধহয় সবকিছুই ভুলতে। শোকের জ্বালায়। বরদাচরনের যোগবলে অদ্ভুত বিশ্বাস। সাংবাদিক কল্পতরু সেনগুপ্তের কথায় নজরুলের স্মৃতি। ‘তোদের বৌদিকে যোগবলে আমিই সারাব। মাসীমাকে সান্ত্বনা দিয়ে তিনি সত্যি সত্যি দুলি বৌদির মাথার কাছে যোগাসনে বসলেন’। একটা সময়ে জানুদেশের নিচের অংশ স্থায়ী পক্ষাঘাতে চলে গেল প্রমীলার।
১৯৪২। ৯ জুলাই। কলকাতার রেডিও স্টেশন। কবির জিভে জড়তা। প্রমীলার চলচ্ছক্তিহীন জীবনে বজ্রাঘাত। মধুপুরে হাওয়া বদল। স্ট্রেচারে করে ট্রেনে কবির সঙ্গী স্ত্রী। কিভাবে ছাড়বেন স্বামীকে? একা? চিকিৎসার খরচ। ‘নজরুল সাহায্য কমিটির’ মাসিক ২০০ টাকা শুরু হয়েই বন্ধ হয়ে গেল। একা, অসুস্থ প্রমীলা সারা রাত জেগে কবির পাশে। কল্যাণী কাজীর কথায় – ‘গভীর রাতে সবাই যখন সুপ্তির কোলে নিমগ্ন, তখন তিনি একা খেলে চলেছেন হয় লুডো নয় চাইনিজ চেকার। উদ্দেশ্য বাবাকে রাতে অতন্দ্র প্রহরীর মতো পাহারা দেওয়া। কারণ, বাবা ঠিক এক-নাগাড়ে ঘুমোতেন না – মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করতেন। তাই মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে মাঝে মাঝে শুনতে পেতাম ঠক ঠক করে ঘুঁটির আওয়াজ হচ্ছে – আর থেকে থেকে একটি কণ্ঠস্বর বলে উঠছে –‘এদিকে এসো, বাইরে যেও না। শোনো, শুয়ে পড়ো’। বিছানার পাশে একটি ছোট উনুন। স্বামী ছোট ছোট টুকরো পছন্দ করতেন। সবজি। মাংস। আধশোয়া প্রমীলা রান্না করতেন। সবজি কাটতেন। কবিকে খাওয়াতেন। একা ... সঙ্গে কুশা। পরিচারক। চুপটি করে থাকত ছেলেটি। যত্নবান, শান্ত, অসম্ভব ভালো এক কিশোর। সন্তানসম। ১৯৪৬। দুজনের যৌথ জীবনের শেষ আঘাত। হঠাৎ কাউকে না বলে ঘরছাড়া গিরিবালা। অভিমানিনী, দাঙ্গার সময়ে নিরলস খাটা, সংসারী গিরিবালার ডিসিশন। ফেটাল। একা প্রমীলা রাঁচি, ইউরোপ করলেন কবিকে নিয়ে। এই শরীর আর সঙ্গ দেয়? বেড়ে চলা অসুস্থতা। কবির ভাই কাজী আলি হোসেন পাশে ছিলেন। ১৩৫৮ বঙ্গাব্দ। চুরুলিয়ায় সেই মানুষটিও খুন। আঘাত। শোক। একা থেকে আরও একা এক নারী।
শেষ সময়। কলকাতার টালা পার্কের ১৫৬-সি মন্মথ দত্ত রোড। শেষ বাড়ি। শেষ সংসার। পাশে অসাড় স্বামী। নির্বিকার। অথচ অসুস্থ শরীরেই রান্না, হাসিমুখ। নিম্নাঙ্গে অসহ্য ব্যথা। ভেন্টিলেশন। ১৯৬২। ৩০ জুন। বাংলার ১৫ আষাঢ়। ১৩৬৯। বিকেল পাঁচটা কুঁড়ি। প্রমীলাহীন সময়। প্রমীলাহীন নজরুল। প্রমীলাহীন ঘর, লেখা, স্মৃতি। তেইশ বছরের অসুস্থতার শারীরিক চ্যালেঞ্জ। নির্বাপিত।
চুরুলিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মা-কে। লাল পাড় সাদা শাড়ি। পায়ে রক্তাভ আলতা। সব্যসাচী বাবাকে আসতে দিলেন না। তখন নিজের ঘরে বসে একমনে কাগজ ছিঁড়ছেন নজরুল। বাবাকে নিজের ঘরে নিয়ে যাবেন সব্যসাচী। তোড়জোড়। ছেলের হাত ছেড়ে বারবার শূন্য চৌকির দিকে তাকালেন। কেন যাবেন? একা? যে ছিল? সে যাবে না?
চুরুলিয়ায় প্রমীলার সমাধি। অনেক পরে ১৯৭৬ সালে ঢাকায় প্রয়াত নজরুলের সমাধি থেকে কিছুটা মাটি এনে সব্যসাচী চুরুলিয়ায় রাখেন। ওই একটু মাটিতেই চিহ্ন কবির। প্রমীলার পাশে। সঙ্গিনী। ফ্রেন্ড, ফিলোজফার, গাইড ...