এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • কী মিষ্টি বুনিপ্‌ গো!

    Abhishek Mukherjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১২ জানুয়ারি ২০১৪ | ২৫৭১ বার পঠিত
  • অনেক স্পয়লর আছে কিন্তু!

    ***

    DISCLAIMER
    ALL ANIMALS USED IN THE MOVIE WERE SHOT IN SOUTH AFRICA. NO ANIMALS WERE HARMED DURING THE PRODUCTION OF THE MOVIE.

    ডিস্‌ক্লেমর দেখে হাসলে হবে? এটা কমলেশ্বরবাবুর সেন্স অফ্‌ হিউমর। হেবি দিয়েছেন, আমার তো হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে গেল।

    BASED ON A STORY BY BIBHUTIBHUSHAN BANDYOPADHYAY

    ভাগ্যিস্‌ বলেননি কোন্‌ গল্প। "আদর্শ হিন্দু হোটেল" থেকে হলেও হতে পারে। "চাঁদের পাহাড়" থেকে নিশ্চিতভাবেই নয়।

    ***

    সে যাক্‌; শুরুটা হেব্বি জমাটি। এদিকে একটা হাতি, ওদিকে চারটে, ওপর থেকে ফাঁদ নামছে, শঙ্করের বন্দুক পড়ে গেল, টুপি পড়ে গেল, যেই ভাবছি এবার স্ট্রিপটীজ শুরু হবে অমনি শঙ্করও পড়ে গেল, আর শঙ্করের ঘুমও ভেঙে গেল। সে এক হৈ হৈ রৈ রৈ ব্যাপার।

    ও মা, তারপরেই দেখি শঙ্কর সাঁতার কাটছে, বক্সিং অপোনেন্টকে চুমু খাচ্ছে, একটা ফোক সংও দেখলাম ঢুকিয়ে দিল টুক্‌ করে। তারপরেই ধাঁ করে অ্যাফ্রিকা!

    সে একশো বছর আগেকার কথা, কি তারও একটু বেশি। তখন অ্যাফ্রিকা ভারি মজার জায়গা। সবাই ইংরিজি বলে (সে মাসাই হোক্‌ বা জুলু, যদিও কোনওভাবেই তাদের তখন ইংরিজি বলার কথা নয়), আর প্যাটেল হোক্‌ বা আপ্পা, ককেশীয় হোক্‌ বা মাসাই, সব্বাই বাংলা বলতে পারে। যে যে ভাষায় পারে কথা বলে আর অন্যের ভাষা টুক্‌টাক্‌ বুঝে নেয়।

    কিন্তু কমলবাবু বলে কথা, এইসব কোনও সমস্যাই নয়। শঙ্কর দিব্যি "হে, ম্যান!" বা "ড্যাম!" বলতে পারে, কিন্তু সল্‌স্‌বেরিটা সিনেমায় কেউই বলে উঠতে পারে না - হয় সালিসবেরি, নয় স্যালিসবেরি। ভারি মজার ব্যাপার, না? মাসাইরা যে কুমিরকে "ক্রক্‌" বলে সে প্রসঙ্গে আর নাই বা গেলাম!

    সে যাক্‌, সিনেমায় ফিরি। সে কী রোমহর্ষক সিনেমা! কোথায় বিভূতিভূষণের সেই চেনা শঙ্কর আর তার বাঙালিসুলভ ভয়! কোথায় সেই রুদ্ধশ্বাসে পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে নিজেই শঙ্কর হয়ে ওঠা! কোথায় সিংহ বা সাপ বা বুনিপের ভয়ে হাড় হিম হয়ে যাওয়া!

    শঙ্কর এখানে জাস্ট ঘ্যাম - সাপ সিংহ বুনিপ্‌ সবাইকে কেলিয়ে পাট করে দিচ্ছে। কোথায় লাগে ক্রিশ? কোথায় লাগে ধূম - থ্রী? শঙ্কর এখানে একাই একশো! সেদিক থেকে দেখতে গেলে এটা টালিগঞ্জের প্রথম সুপারহিরো সিনেমা।

    সে যাক্‌, শঙ্কর তো দিব্যি থাকে, একা একটা ঘরে। তার টেবিলে একটা বাটিতে তিনটে সবুজ আপেল সাজানো থাকে। একশো বছর আগের কথা, ঠা ঠা গরমে নির্জন প্রান্তরে নিশ্চয়ই আপেলের চাষ হত সাংঘাতিক। আর সে আপেল মারাত্মক - ঐ গরমেও ফ্রিজ ছাড়া দিব্যি থেকে যায়, কিস্যু হয় না। হবে কীভাবে? এ কি আর আমাদের আপেল? এ হল কমলবাবুদের আপেল!

    তারপর তো একদিন শঙ্করের ঘোড়া দৌড় দিয়েছে, আর শঙ্কর পিছু নিয়েছে। সে কী দৌড়! ঘোড়া ছুটছে, শঙ্কর ছুটছে। ঘোড়া ছুটছে, শঙ্কর ছুটছে। তারপর শঙ্কর একসময় ঘোড়াকে ধরেও ফেলল, এক লাফে ঘোড়ার পিঠে চেপেও বসল, কিন্তু জালি, স্বার্থপর ঘোড়া তাকে দিল পিঠ থেকে ফেলে। খোঁড়াতে খোঁড়াতে শঙ্কর যেই এগোবে, অমনি সিংহ।

    খোঁড়া হলে কী হবে, শঙ্করের বুদ্ধি কম? অমনি দিয়েছে সিংহ তাক করে লণ্ঠন ছুঁড়ে।তারপর শুরু হল খোঁড়া পা নিয়ে দৌড় - শঙ্কর জিতবে না সিংহ? সিংহ, না শঙ্কর? সিংহ ছুটছে, শঙ্কর ছুটছে। সিংহ ছুটছে, শঙ্কর ছুটছে। দৌড় দৌড় দৌড় দৌড়... শঙ্কর এসে ঢুকে পড়ল নিজের ঘরে। খোঁড়া শঙ্করের সঙ্গে কখনও সিংহ পেরে ওঠে?

    পরেরদিন সকালে এসে ঘরে ঢুকলেন রেলের গার্ড মর্গ্যান ফ্রীম্যান। না, মানে, ওঁর মত দেখতে কিনা, তাই ভেবে বসেছিলাম, তবে নিখুঁত বাঙালি উচ্চারণে "শঙ্কর" শুনে বুঝলাম, যে না, ইনি ফ্রীম্যান নন্‌। এমনকী ম্যান্ডেলাও নন।

    তারপর তো সব চুকেবুকে গেছে, তিরুমল আপ্পাও মরে হেজে গেছে, এমন সময় দেখা দিল দিয়েগো অ্যালভারেজ। ও মা, অ্যালভারেজ তো আমাদের চুঁচ্‌ড়োর লোক! তাই অমন বাংলা বলে! বাঃ, দারুণ তো!

    তারপর শঙ্কর আর অ্যালভারেজ তো বুক বেঁধে বেরিয়ে পড়েছে। সিনেমা পুরো জমে ক্ষীর, এমন সময় বুনিপ্‌ দেখা দিল। পরেরদিন সকালে উঠে ওরা দেখে বুনিপের পায়ের ছাপ। ওমা, সারারাত বৃষ্টি নেই, কোথাও জলের চিহ্ন নেই, স্রেফ বুনিপের পায়ের ছাপে জল জমে। অতবড় জন্তু হলে কী হবে? ওর পা বোধহয় স্পঞ্জের!

    তারপর গুহার সামনে দেখি, এ কী, সত্যিকারের বুনিপ্‌। সে কী মিষ্টি বুনিপ্‌, দেখলেই মনে হয় পুষি! বেশ বুনিপ্‌ চড়ে রাস্তা দিয়ে যাব, মেয়েরা ঘুরে ঘুরে তাকাবে, ছেলেরা হিংসেয় জ্বলেপুড়ে খাক্‌ হয়ে যাবে, এইসব ভাবতে ভাবতে দেখি অ্যালভারেজটা মরেই গেল।

    [বিভূতিভূষণের বুনিপ্‌টা ভারি জোলো ছিল। শুধু যে গল্পে তাকে দেখানো হয়নি তাইই নয়, বর্ণনাও নেহাৎই সাদামাটা: "I am inclined to believe that the monster you saw was nothing more than a species of anthropoid ape, closely related to the gorilla, but much bigger in size and more savage than the specimen found in the Ruwenzori and Virunga Mountains." কমলবাবু জিন্দাবাদ।]

    কমলবাবু ভারি হুঁশিয়ার। হলিউড-বলিউড সব সিনেমায় কাউকে কবর দেওয়া হলেই বৃষ্টি পড়ে, তাহলে টলিউডই বা পিছিয়ে থাকে কেন? শঙ্কর গাঁতিয়ে কবর খোঁড়া শুরু করতেই ঝম্‌ঝমিয়ে বৃষ্টি নামল, আর দেবের ভিজে জামা দেখে বাচ্চা-বাচ্চা মেয়েগুলো আহা-উহু করতে লাগল। ওদেরও তো পয়সা উসুল করতে হবে, না কী?

    কিন্তু অ্যালভারেজ মরে গিয়ে হল মহা সমস্যা: শঙ্করের দাড়ি কামাবে কে? শঙ্কর তো আর নিজে কামাতে পারে না, তাই অ্যালভারেজ মারা যাওয়ার পরেই হু-হু করে দাড়ি হতে লাগল। এইবারে শঙ্কর রীতিমত হাঙ্ক্‌ হয়ে উঠল। হলে যে মেয়েগুলো বোর্‌ হয়ে গ্যাঁজাচ্ছিল তারা এবার নড়েচড়ে বসল।

    আত্তিলিও গাত্তির সমাধিটাও ব্যাপক জমেছিল। বেশ একটা আলো-ঝল্‌মলে পরিবেশ, গোল করে অনেক মশাল-টশাল জ্বলছে দেখেই একটা বেশ শিহরণ জেগে উঠেছিল। আর তারপরই দেব সব হারানো শক্তি ফিরে পেল। আত্তিলিও গাত্তিকেই বোধহয় ইংরিজিতে রেড বুল বলে।

    ওমা, আবার দেখি বুনিপ্‌টা আবার এসেছে! খট্‌খটে শুকনো জঙ্গল, কিন্তু পায়ের ছাপে জল জ্বল্‌জ্বল্‌ করছে! শঙ্কর কিন্তু এইবারে তৈরি। কাঠের খাঁচা বানিয়ে পায়ে দড়ি বেঁধে সেই দড়ি কেটে উল্টে ঝুলে ঘুরে বুনিপ্‌কে খাঁচাবন্দী করে গুলি করে মোগলাই পরোটা আর কষা মাংস খেতে খেতে মেরেই ফেলল বুনিপ্‌টাকে। সলিড রগড় হল কিন্তু!

    তারপর শুরু হল কালাহারির কেলো। কিন্তু এখন থাক্‌ সেসব কথা, নিচে বলছি।

    ***

    এর মানে এই নয় যে "চাঁদের পাহাড়" ঝুল সিনেমা। আমার জায়গায় জায়গায় হাসি পেয়েছে, কিন্তু বাংলা অ্যাডভেঞ্চর সিনেমার এত অভাব যে নেহাৎ মন্দ লাগেনি। চিত্রনাট্য মাঝেমধ্যে দুর্বল, কিন্তু ক্যামেরার কাজ নিয়ে বিন্দুমাত্রও অভিযোগ নেই। ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের দৃশ্য অনেকদিন মনে থাকবে।

    কম্পিউটর গ্রাফিক্সও বিশেষ সুবিধের নয়। বুনিপের কথা আগেই বলেছি, আর আগ্নেয়গিরি বা ব্ল্যাক মাম্বা দেখেও হাসিই পেয়েছে। তবে ঐ, হলিউডের প্রযুক্তির সঙ্গে তুলনা করতে যাওয়াটা বোকামির পর্যায়েই পড়ে। বাংলা সিনেমায় এই মানের গ্রাফিক্স বিশেষ দেখিনি বললেই চলে।

    সিনেমায় আর যাই দুর্বলতা থাকুক্‌ না কেন, দেবকে দিব্যি মানিয়েছে। কমলবাবু শঙ্করকে আদৌ বোঝেননি, কিন্তু উনি যা চিত্রনাট্য লিখেছেন সেই অনুযায়ী দেবের থেকে যথাযথ শঙ্কর পাওয়া বেশ মুশকিল হত, অন্ততঃ টালিগঞ্জে।

    কয়েকটা দৃশ্যে দেবকে রীতিমত ভাল লেগেছে, বিশেষতঃ তিরুমল আপ্পা মারা যাওয়ার পর শিকারের সিকোয়েন্সে, কালাহারির মেক-আপে আর একদম শেষে গোঁফ নিয়ে। নিঃসন্দেহে দেবের জীবনের সেরা পার্ফরমেন্স। দেব শঙ্কর নয়, তবে এই রোলে দুর্দান্ত মানিয়েছে।

    মেক-আপ বলতে মনে পড়ল, এত ভাল মেক-আপ বাংলা সিনেমায় সম্ভবতঃ এর আগে দেখিনি। ভারতীয় সিনেমাতেও খুবই কম দেখেছি। "চাঁদের পাহাড়"এর স্টার বলে যদি কেউ থেকে থাকে, তবে সে মেক্‌-আপ আর্টিস্ট (নাম সোমনাথ, যদ্দূর জানি)।

    কয়েকটা দৃশ্য চোখে লেগে থাকবে - বিশেষতঃ কালাহারি-পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকে বা গুহার মধ্যে; হাতি ঘোড়া সিংহ লেপার্ড হায়না সবই আছে; সেদিক থেকে দেখতে গেলে সিনেমাটা নিতান্তই ওয়্যাক্‌-থু নয়, বিশেষতঃ বাচ্চাদের কাছে।

    ***

    পুনশ্চ -
    কমলকাকু, বুনিপ্‌টা কী মিষ্টি! আমাকে একটা কিনে দেবে, গো?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১২ জানুয়ারি ২০১৪ | ২৫৭১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • I | ***:*** | ১২ জানুয়ারি ২০১৪ ০৪:২২74383
  • ঃ)))
  • kk | ***:*** | ১২ জানুয়ারি ২০১৪ ০৪:৩২74384
  • ওঃ, এই ভদ্রলোক এত্ত ভালো লেখেন না !!
  • Blank | ***:*** | ১২ জানুয়ারি ২০১৪ ০৪:৩৬74385
  • আমার যদ্দুর মনে পরছে ফেবু তে যখন এটা পড়ি তখন, 'মোগলাই পরোটা আর কষা মাংস খেতে খেতে" - এই কথাটা strikethrough করা ছিল।
  • রোবু | ***:*** | ১২ জানুয়ারি ২০১৪ ০৪:৩৮74386
  • ছিল। ঠিক ধরেছ। কিন্তু তুমি আবার পড়লে!!
  • Blank | ***:*** | ১২ জানুয়ারি ২০১৪ ০৪:৪১74387
  • ভাল লেখা তো কয়েকবার পড়াই যায়
  • | ***:*** | ১২ জানুয়ারি ২০১৪ ০৪:৪৭74388
  • হেব্বি লেখা। :-))
  • | ***:*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ ০২:০৭74398
  • ঃ)))

    ব্যাপক। কোন কথা হবে না।
  • Tim | ***:*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ ০২:৪৮74389
  • ঃ-))
  • Lord of the Nazgûl | ***:*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ ০৪:৫৯74390
  • জ্জিও কাকু।
  • khilli | ***:*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:১৬74391
  • ব্যাপক রিভিউ :-) একদম একমত
  • S | ***:*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:২২74392
  • তাইলে সিনেমার নাম তো চ্যালেন্জ নিবি না ব্যুনিপ বা আফ্রিকায় পাগলু দিলেই হোতো।
  • PM | ***:*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ ০৬:১৫74393
  • তাহলে অ্যাট লিস্ট শ্রাবন্তি/কোয়েল এর চকরিতে বাধা থাকতো না। টালিগন্জের নায়িকারা ভুক হর্তাল শুরু করলো বলে ঃ)
  • Sibu | ***:*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ ০৬:৫৮74394
  • এই দেখে এলাম। প্রথম কথা হল আপনারাও দেখুন। একা আমিই বার খেয়ে ঝাড় খাব এটা উচিত হয় না।

    কেমন হয়েছে জানতে চাইছেন? সিন্মার প্রথমেই লেখা আছে এটি আমাদের কালিঘাটের দিদির আশীর্বাদধন্য বই। প্রথমে ভেবেছিলাম উনি বোধহয় রবীন্দ্রনাথের মত না দেখেই আশীব্বাদ দিয়েছিলেন। দেখে উঠে বুঝলাম বইটি ওনার ছবির সাথে খাপে খাপ কোয়ালিটির। তেনার ছবির আর এই বইয়ের বক্স অফিস - মারে কে?

    আইএসআইতে পড়ার সময় থেকেই একটা হীনমন্যতা ছিল, বাঙালীর রজ্‌নীকান্ত্‌ নেই। সে দুঃখু বোধহয় এতদিনে ঘুচতে চলল। পাগলু দৌড়ে ঘোড়া, বুনিপ আর সিংহকে হারিয়ে দিয়েছে। দুই হাতির পালের মধ্যে পড়ে গিয়ে ট্রাইবদের ফাঁদে পড়ে উদ্ধার পেয়েছে (সে স্বপ্নে হলেও)। পরের বইতে পুরোদস্তুর রজনীকান্ত হয়ে বেরোবেন মনে হয়।

    এখন কুলোকে দু-চাট্টে খারাপ কথা বলবে। সিনেমাটোগ্রাফি অতি খাজা। ভিক্টোরিয়া ফলস ভাগ্যে লেখা ছিল। আফ্রিকার শটে এত বাজে কালার স্যাচুরেশন যে হতে পারে সে তো এ মালটি দেখার আগে জানতামই না। কিন্তু নিন্দুকের কথায় কান দেবেন না। ওনার আশীব্বাদে এ বই অস্কার জিতবেই জিতবে। আপনারা দলে দলে কমলেশ্বর কাকুর পকেট ভারী করুন।

    পুঃ আমার মেয়ে বুনিপের গলায় রঙীন ফ্রিল দেখে বলল এটা মনে হয় কোন ক্যানিব্যাল ট্রাইবের পোষা বুনিপ। মানুষ শিকার করে ঐ থলেতে ভরে প্রভুদের কাছে নিয়ে যায়।
  • Souva | ***:*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ ০৮:৩২74395
  • এখনো দ্যাখার সৌভাগ্য হয় নি। তবে কিছু বন্ধুলোকের মুখে কয়েকটি মজার গপ্প শুনলাম। জলপ্রপাত থেকে লাফ দেওয়ার পর ক্যামেরা যেই না নিচে ঘুরেছে, ওমা, নিচে না কি স্টান্টম্যান দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে, ওপর থেকে শঙ্কর কখন পপাত চ হয়। তারপর, মাসাইদের ইংরিজির মাঝে হঠাৎ বাংলা বিলাপ-- ওগো আমার পোলাডার কী হলো গো! তারপর, বুনিপ তো এখানে বিভূতিভূষণের বুনিপ নয়, যে anthopoid ape হবে। সে একটা মানুষ-গিরগিটি-গোরিলা মিলিয়ে মাখো-মাখো ব্যাপার। বিভূতিভূষণের উপন্যাসে বুনিপকে নিয়ে যে ভয়, যা আসলে অজানার ভয়, অদেখার ভয় (হার্ট অফ ডার্কনেস-এর horror ! horror !) , সেটা বোঝার কষ্ট কমলবাবু স্বভাবতই করেননি। ক্যাজ কাটিয়ে দিয়েছেন।

    নেটে পাওয়া গেলে নামিয়ে দেখবো, সেই অপেক্ষায় আছি।

    তবে, এটা নিশ্চিত, এই ছবির জন্যে কমলবাবুর একটা "গোল্ডেন বুনিপ" পুরস্কার পাওয়া উচিত। স্বর্ণকমল, স্বর্ণভল্লুক তো সব্বাই পায়, স্বর্ণবুনিপটা কমলবাবু ছাড়া আর কাউকে দেওয়া যায় কি? :)
  • PM | ***:*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ ০৯:৪৪74396
  • পাতার পর পাতা জুরে এখানে লোকে এককালে সাব-অলটার্ন রাজত্ব চেয়েছিল --- এখন বললে হবে? ঃ)

    তা কে দিদির অশির্বাদধন্য হলো? দেব, কমলবাবু নকি খোদ বিভুতি বাবু। প্রথম দুজনের বঙ্গ বিভুষণ কেউ এবছর আট্কাতে পার্বে না, এই বলে দিনু
  • শ্রাবণী | ***:*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ ১০:৪৬74397
  • খুব সুন্দর লেখা! ছবি দেখে হেসেছিলাম যতটা এটা পড়েও প্রায় ততটাই হাসলাম।
  • Rit | ***:*** | ১৪ জানুয়ারি ২০১৪ ০২:৩৩74402
  • সত্যযুগে মানুষ তো ২১ হাত লম্বা ছিল। এখন সাড়ে তিন। কি আর করা যাবে? দীনবন্ধু গত হয়েছেন, মাইকেলও আর নেই, কালিদাস ও নেই। ঃ(
  • Ishani | ***:*** | ১৪ জানুয়ারি ২০১৪ ১০:৪৬74399
  • একেবারে সহমত | চাঁদের পাহাড় আসলে তো রোমহর্ষক অভিযান নয় , আমার অনুভবে স্বপ্নসন্ধান . আর বুনিপ ..সেই রাস্তার একটা বিশাল ভয়ংকর প্রতিবন্ধকতা . এই সিম্বলিক ব্যাপারটাকেই কমলেশ্বর স্পর্শ করতে পারেননি | অবশ্য দোষ নেই | আগে নিজে বুঝবেন , তবে না লোকজনদের বোঝাতে পারবেন !ওনার বোধবুদ্ধি অনুযায়ী তাই একটা ঝকমকে এডভেঞ্চার ফিল্ম তৈরী হয়েছে | ছবিটা দেখেছি | তবে এই ভয়টা ছিল বলে রিস্ক নিইনি | বিভূতিভূষণকে সযত্নে মাথার ভেতরের সবচেয়ে দামী সিন্দুকে রেখে তালাচাবি বন্ধ করে তারপর নিশ্চিন্ত হয়ে কমলবাবুর গা ছমছমে চাঁদের পাহাড় দেখেছি | নিশ্চিন্ত , কারো সঙ্গে কারো বিরোধ নেই | আমরা সবাই রাজা.....
  • PM | ***:*** | ১৪ জানুয়ারি ২০১৪ ১১:৪৭74400
  • সবাই কি চালাক। কমলেশবাবুই বোকা হাঁদা। সত্যি---
  • শৌভ | ***:*** | ১৪ জানুয়ারি ২০১৪ ১২:১০74401
  • কমলেশ্বরবাবু বোকা-হাঁদা নন-- তিনি গাঁটে-গাঁটে বুদ্ধি ধরেন, আর সেই বুদ্ধি খাটিয়ে বাজার ধরেন। এতে খারাপ কিছু নেই, নিজের করা ছবি কিছু পয়সা রোজগার করুক, এ কেই বা না চায়! মাণিক-ঋত্বিক-মৃণাল সব্বাই চেয়েছেন। কিন্তু মুশকিল হলো, কমলেশ্বরবাবু বা আজকের বাংলাবাজারের বেশিরভাগ দাপুটে শিল্প-ওয়ালারাই হচ্ছেন গে সন্দীপন-কথিত বেঁটে মানুষ। ফলে, বাকি খামতি ঢাকার জন্যে বুদ্ধিটা এনাদের একটু বেশিই চালাতে হয়, ও বাঁকা-পথে। আর দোসর হিসেবে সঙ্গে রাখতে হয় মিডিয়া-ওয়ালাদের। দিন-কে-দিন, যদিও, এঁদের ছায়াই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।

    বোকা বোধহয় আমরাই, যারা অন্যরকম মাপকাঠি মাথায় রেখে ছবি দেখতে যাই। অন্ধদের রাজত্বে অন্ধ না হলে বেদম মুশকিল।
  • Swati | ***:*** | ১৭ জানুয়ারি ২০১৪ ১১:১৩74403
  • ভারী মজার মজার সব লেখা।Bunyip মরিয়া প্রমান করিল যে সে মরে নাই ( সিনেমা তে)
    সুধু ১৫ কোটি করচা করে এরম জগাখিচুড়ি।। আহা সে কোথায় পাবে? বাছারা ভারী হাসছিল বটে। আমার 5 বছরের ভাই ঝি পর্যন্ত বলল প্র্হথ্ম তা তাও ভালো ছিল শেষ তা যা তা :P
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন