এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • আলী ও কাঠবিড়ালী

    Muradul islam লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৪ জুন ২০১৮ | ২১১৩ বার পঠিত
  • এক

    শাফাকাত আলী অনেক আগে গ্রাম ছেড়েছিলেন। এখন ষাটোর্ধ্ব বয়সে তিনি আবার গ্রামে ফিরলেন। না ফিরে উপায় ছিল না। শহুরে দুনিয়ার অবস্থা ভালো না। যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি চারিদিকে। বিশ্ব পরিস্থিতিও খারাপ, একেক দেশ তাদের মানববিধ্বংসী অস্ত্র নিয়ে উন্মত্ত শিং উঁচানো ষাঁড়ের মতো লাফাচ্ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন আরেকটা বড় যুদ্ধ এবার হবেই।

    শাফাকাত আলী ভয়ে ফিরে এসেছেন প্রত্যন্ত গ্রামে এমন ভাবার কোন কারণ নেই। ভয়ে তিনি আসেন নি। এসেছেন সামাজিক ও পারিবারিক অমানবিকতায় ক্ষুব্ধ হয়ে। তার পুত্র কন্যা সবাই বিদেশ পাড়ি জমিয়েছে। শহুরে সমাজের কারো সাথে সত্যিকার আন্তরিক কোন সম্পর্কও শাফাকাত আলী গড়ে তুলতে পারেন নি। তাই তিনি শেষ বয়েসে নিজের গ্রামেই ফিরে এলেন। এখন থেকে এখানেই থাকবেন।

    শহুরে অস্থিরতা থেকে সবুজ প্রাকৃতিক আচ্ছাদনে আবৃত গ্রামখানি প্রায় মুক্তই বলা যায়। শাফাকাত আলীর পৈত্রিক বাড়ি দেখাশোনা করতো মজিদ মিয়া। আলী সাহেবের আগমনে সে বিশেষ খুশি হলো।

    গ্রামে এসে কয়েকদিনের মধ্যেই শাফাকাত আলী কাজে লেগে পড়লেন। বাড়ির সামনের জায়গাটায় তিনি বাগান করবেন ঠিক করলেন। সেই অনুযায়ী বীজ সংগ্রহ, রোপন, মাটি তৈরি ইত্যাদি কাজে লাগলেন তিনি। এইসব কাজ টাজের মধ্যেই কাঠবিড়ালীদের তার নজরে পড়ে, অনেক অনেক দিন পর। পুকুরে হাত ধুতে গিয়ে নারিকেল গাছে তিনি দেখতে পান দশ বিশটা কাঠবিড়ালী, অবাক বিস্ময়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। প্রথমে আলী সাহেব একটু হকচকিয়ে গিয়েছিলেন। এতগুলো প্রাণী অবাক হয়ে, চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে দেখলে হকচকিয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিকই।
    আলী সাহেব মজিদ মিয়াকে ডেকে বললে, ও, মজিদ! এতো কাঠবিড়ালী কেনো এইখানে?
    মজিদ হেসে বলল, স্যার, এইগুলা এইখানেই থাকে। কোন ঝামেলা করে না, নির্বিবাদে।
    সেই কথাবার্তার মধ্যেই দেখা গেলো চটের বস্তা হাতে একটা লোক পুকুরের পাড়ে পাড়ে হাঁটছে। মুখ দিয়ে শিস দেয়ার মত অদ্ভূত শব্দ করছে। তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি পুকুরের পাড়ে থাকা নারিকেল গাছদের মাথার দিকে।

    আলী সাহেব মজিদ মিয়াকে জিজ্ঞেস করলেন, এই লোকটা কে? কী করে?

    মজিদ মিয়া বলল, ইনি জসিম সদাগর। গ্রামে সবে তুকতাক কবিরাজ বইলা ডাকে। কী করেন তার নাই ঠিক।

    আলী সাহেব নামটা শুনে লোকটার মুখের দিকে খেয়াল করলেন। এবং তিনি তাকে চিনতে পারলেন। আলী সাহেবের বাল্য বন্ধু জসিম সদাগর। এইভাবে অনেকদিন পরে জসিম সদাগর ও কাঠবিড়ালীদের সাথে শাফাকাত আলীর দেখা হয়েছিল। তিনি তখন ঘূনাক্ষরেও বুঝতে পারেন নি এদের সাথে এই স্বাক্ষাতের পরবর্তী সময়ে কী এক জটিল অবস্থার ভেতর দিয়ে তাকে যেতে হবে।

    দুই

    জসিম সদাগর ও শাফাকাত আলীর সেদিন কথাবার্তা হলো বেশ। শাফাকাত আলী লক্ষ করলেন তার বন্ধুটি বেশ অন্যমনস্ক, সেই আগের দুরন্তপনার কিছুমাত্র আর অবশিষ্ট নেই তার মাঝে।

    গ্রামের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তারা কথা বলছিলেন। একসময় বিরাট এক বট গাছের সামনে এসে জসিম সদাগর বললেন, এইখানে আমি ক্ষান্ত দিব আলী। এইটা আমার সাধনার স্থল। এই জাগা কি চিনতে পারো, বন্ধু আমার?

    শাফাকাত আলী বললেন, না। মনে পড়ছে না।

    জসিম সদাগর বললেন, এইটা সেই জাগা, যেইখানে আমার দাদা ধনু কবিরাজ ওলা বিবিরে বর্শা দিয়া গাঁইথা থুইছিলেন। এইটা বড় পূণ্যের গাছ। এই বিরিক্ষই আমাদের বাঁচাবে, নিদানের কালে।
    জসিম সদাগর গিয়ে গাছের নিচে বসলেন।

    তিন

    গ্রামের অন্যান্যদের সাথে কথা বলে আলী সাহেব বুঝলেন জসিম সদাগরের মাথা অল্প বিগড়ে গেছে, এটা সকলেই মানে। তিনি মেট্রিক পর্যন্ত পড়েছিলেন। তারপর পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়াতে থাকেন। কিছুদিন নিরুদ্দেশ ছিলে, চলে গিয়েছিলেন এক তান্ত্রিকের আস্তানায়। গ্রামে এমন কথা প্রচলিত আছে কামরূপ কামাক্ষ্যা থেকে অনেক মারাত্মক সব যাদু শিখে এসেছেন জসিম সদাগর। তাই সবাই তাকে সমীহ করে চলে, ভয় পায়।

    গ্রামের পথে ঘাটে, বনে জঙ্গলে জসিম সদাগর যখন ঘুরে বেড়ান তখন তিনি পছন্দ করেন না কেউ তার পিছু লাগুক বা দেখুক তিনি কী করছেন। প্রথম প্রথম না জেনে অনেকে আগ্রহী হয়েছিল। কিন্তু জসিম সদাগরের বান মারার হুংকার শুনে দ্বিতীয়বার তার কর্মকান্ড দেখার ইচ্ছা কারো কখনো হয় নি। তাই লোকেরা আসলে জানে না গ্রামে ঘুরে ঘুরে জসিম সদাগর আসলে কী করেন।

    চার

    কয়েকদিন গেল আরো। আলী সাহেব বাগান গুছিয়ে এনেছেন। দিনে বেশ পরিশ্রম হয়। তাই রাত্রে ঘুম হয় ভালো। সে রাত্রে আলী সাহেব গভীর ঘুমের মধ্যেই ছিলেন। আকাশে উঠেছিল বড় এক চাঁদ। সেই চাঁদের রূপালী আলোতে দেখা গেল কিছু ছোট ছোট জীব খুব গম্ভীর পায়ে হেঁটে হেঁটে চলে গেলো শাফাকাত আলী সাহেবের বাড়িতে। আলী সাহেবের ঘরের দরজা অদ্ভূত এক ক্যাচ ক্যাচ শদ করতে করতে খুলে গেল। জীবেরা সুশৃঙ্খল ভাবে হেঁটে আলী সাহেবের ঘরের খোলা দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করল।

    আলী সাহেব শব্দটি শুনতে পেয়েছিলেন, এবং তিনি দেখছিলেন ব্যাখ্যাতীত এক ভয়ংকর স্বপ্ন। তিনি ঘেমে উঠেন, তার ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ভেঙে তিনি যা দেখতে পান তা তার স্বপ্নের মতোই অবাস্তব। তিনি দেখলেন খোলা দরজা দিয়ে কটকটে চাঁদের আলো এসে ঘরে প্রবেশ করছে, এবং দরজার মুখে দাঁড়িয়ে আছে পাঁচটি প্রাণী।

    পাঁচটি কাঠবিড়ালী।

    গম্ভীরভাবে একটি আগে। বাকী চারটি পেছনে।

    শাফাকাত আলীর গলা শুকিয়ে গেলো ভয়ে। তিনি চিৎকার করার চেষ্টা করে দেখলেন গলা থেকে কোন শব্দ বের হচ্ছে না। কেবল গো গো জাতীয় একটি শব্দ তৈরী হচ্ছে।

    শাফাকাত আলী দেখলেন সামনে থাকা কাঠবিড়ালীটি শান্ত এবং ধীর পায়ে এগিয়ে আসলো। ভাঙ্গা এবং খসখসে গলায় সে কথা বললো, যেন একজন অতিবৃদ্ধ লোক কথা বলছে।

    কাঠবিড়ালীটি বলল, ভয় পেয়ো না শাফাকাত। ভয় পেয়ো না। আমরা তোমায় মারবো না, কোন ক্ষতি করবো না। সে ক্ষমতাও আমাদের নেই অবশ্য। ভয় পেয়ো না।

    শাফাকাত আলী কিছু একটা বলার চেষ্টা করলেন। কিন্তু তার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হলো না।

    কাঠবিড়ালীটি বলল, শান্ত হও শাফাকাত। আমাদের এই হঠাৎ আগমনে তুমি সন্ত্রস্থ হয়ে উঠেছো। তাই কথা বলতে পারছো না। শান্ত হও শাফাকাত।

    কাঠবিড়ালীটি বলল, তুমি হয়ত আমাদের চিনতে পারবে না শাফাকাত। কিন্তু আমরা তোমাকে চিনি। বেশ ভালোভাবেই চিনি। এই ঘরে তোমার মা যেদিন বউ হয়ে এলো সেদিনও আমরা ছিলাম। সেই উৎসবের দিন, আজো মনে পরে আমাদের।

    কাঠবিড়ালীটি বলতে থাকলো, আর যেদিন তুমি ঐ পুকুরে পড়ে গিয়েছিলে, তোমার তখন ছ সাত বছর বয়স, মনে কি পড়ে শাফাকাত?

    শাফাকাত আলী মনে করার চেষ্টা করতে লাগলেন। হ্যা, একবার তিনি ছোটকালে ঐ পুকুরে পড়ে গিয়েছিলেন। সব স্মৃতি মনে নেই, বেশ আবছা আবছা ভাবে মনে পড়ছে ঐ দিন কেউ একজন দ্রুত পানিতে নেমে তাকে উদ্ধার করেছিল। প্রচুর পানি খেয়েছিলেন তিনি। জ্বর হয়েছিল ঠান্ডায়। কিন্তু প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন।

    এই পুকুরকে অনেকে বলতো দোষী পুকুর। নানা ধরণের কথা এই পুকুর নিয়ে প্রচলিত ছিল। বিভিন্ন সময়ে বাড়ির তিন চারজন বাচ্চা এই পুকুরে ডুবে মারা গিয়েছিল। ফলে শাফাকাত আলীর বেঁচে আসা এক সৌভাগ্যের লক্ষণ বলে ধরে নিয়েছিলো সবাই। লোকে বলতো, দেওলা নিয়ে গিয়েছিল কিন্তু ধরে রাখতে পারে নি। কোন এক অজ্ঞাত কারণে শাফাকাত আলীকে ধরে রাখতে পারে নি দেওলা, জলের নিচে, খুব গভীরে থাকা অলৌকিক অস্তিত্ব বিশেষ। সেই কারণটি কী জানা না থাকায় বাড়ির লোকেরা শাফাকাত সাহেবকে ভিন্ন চোখে দেখতেন, মনে করতেন কোন গোপন ক্ষমতা আছে তার মধ্যে।

    শাফাকাত আলীর এইসব মনে পড়লো কাঠবিড়ালীটির কথায়। কাঠবিড়ালী বলতে থাকলো, শাফাকাত, সেইদিন তুমি ডুবে মরতে। কখনো কি ভেবে দেখেছো কেন তুমি বেঁচে ফিরেছিলে? হয়ত ভাবো নি। তোমরা মানুষেরা বড় অস্থির শাফাকাত আলী। তোমরা অনেক কিছুই ধীরে সুস্থে ভেবে দেখো না। যদি ভাবতে তাহলে বুঝতে পারতে আমরাই বাঁচিয়ে ছিলাম তোমাকে। আমরা তোমাকে ডুবতে দেখে চিৎকার করতে থাকি। আমাদের চিৎকার শুনেই একজন লোক এগিয়ে আসেন। তিনি এসে দেখতে পান পুকুরে তুমি হাবুডুবু খাচ্ছো। তিনি পানিতে নেমে পড়েন ও তোমাকে উঠিয়ে আনেন।

    শাফাকাত আলী এতক্ষণে একটু স্থির হয়েছেন। তার ভয়ার্ত ভাবটা কমেছে। তিনি অনেক কষ্টেই বলতে পারলেন, আপনারা...আপনারা এখানে কী চান?

    কাঠবিড়ালী বলল, হ্যা, আমরা চাইতেই এসেছি। আমরা তোমার কাছে আমাদের জীবন চাইতে এসেছি। একদিন আমরা তোমার জীবন বাঁচিয়ে ছিলাম। এখন সময় এসেছে তোমার সেই ঋণ শোধ করার। তুমি আমাদের জীবন বাঁচাও শাফাকাত। আমরা বিপন্ন।

    শাফাকাত আলী শুষ্ক কন্ঠে জিজ্ঞেস করলেন, কীভাবে? আমাকে কী করতে হবে?

    বৃদ্ধ কাঠবিড়ালী বলল, তান্ত্রিক যাদুকর জসিম সদাগর আমাদের ধরে ধরে খুন করছে। ভাতের সাথে বিষ মিশিয়ে সে নারিকেল গাছে রেখে দেয়। সাধারন কাঠবিড়ালীরা তা খেয়ে মারা যায়। এভাবে সে আমাদের সমূলে বিনাশ করতে চায়।

    শাফাকাত আলী জিজ্ঞেস করলেন, কেন?

    কাঠবিড়ালীটি বলল, সে ডাকিনী বিদ্যার অনুশীলন করে। আমাদের রক্ত তার দরকার হয় তন্ত্র মন্ত্র ও আনুসাঙ্গিক কাজের সময়। এবং সে আমাদের মনে করে তার কালো যাদু বিদ্যার বিরুদ্ধ শক্তি হিসেবে। তুমি তার হাত থেকে আমাদের বাঁচাও শাফাকাত।

    শাফাকাত আলী কী বলবেন ভেবে পেলেন না। কাঠবিড়ালীটি বলল, বিদায় শাফাকাত। আমরা আজ চলে যাচ্ছি। কিন্তু আবার আসবো।

    কাঠবিড়ালীটি ঘুরে আবার অন্যদিকে সবার আগে চলে গেল। বাকীরা তার পিছনে। এইভাবে তারা নির্দিষ্ট ছন্দে হেঁটে হেঁটে চলে যেতে লাগলো উজ্জ্বল চাঁদের আলোতে। বিছানার উপরে বসা শাফাকাত আলী। তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না কী হলো তার সামনে।

    পাঁচ

    পরদিন শাফাকাত আলী ঠিক করলেন কাঠবিড়ালীদের বাঁচাতে হবে। তিনি জসিম সদাগরের সাথে দেখা করতে পুরনো বটগাছের কাছে গেলেন, কিন্তু তাকে পেলেন না।

    মজিদ মিয়াকে নিয়ে তিনি পুকুর পাড়ের নারিকেল গাছগুলি পরীক্ষা করে বিষ মাখানো ভাত পেলেন। এগুলো ফেলে দেয়া হলো।

    সন্ধ্যায় লাল টকটকে চোখ নিয়ে হাজির হলেন জসিম সদাগর। তিনি আলী সাহেবের বাড়িতে এসে রাগান্বিত ভাবেই শাফাকাত আলীকে বলতে লাগলেন, এইসব কী শাফকাত? তুমি নাকি আমার ভাতগুলা সরাই ফেলছো গাছ থেকে?

    আলী সাহেব নরম সুরে বললেন, দেখো জসিম, কাঠবিড়ালীগুলো এতে খামকা মারা যায়। ওরা আছে, থাকুক না। ক্ষতি তো করছে না আমাদের।

    গর্জে উঠেন জসিম সদাগর, ক্ষতি করছে না মানে? কী কইতে চাও তুমি? কাঠবিড়ালীদের কী জানো তুমি মিয়া? এরা আমাদের শত্রু। এদের জন্য দুনিয়া আজ ধ্বংসের পথে।

    আলী সাহেব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এদের জন্য দুনিয়া ধ্বংসের পথে কীভাবে?

    জসিম সদাগর রাগত গলায় বলেন, এরা সাধারন জীব না। কালো যাদুর জগত থিকা টপকে আসা অশুভ আত্মা। এরা নিরন্তর আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করে। আমাদের ধ্বংসের জন্য সব আয়োজন এরাই করে। আমার তন্ত্রবিদ্যা এদের শেষ করার নিমিত্তে। আমি এদের ধ্বংস কইরাই ছাড়বো।

    আলী সাহেব বুঝতে পারলেন জসিম সদাগরের মাথা কাজ করছে না, এর সাথে কথা বলে লাভ নেই। তিনি বললেন, আচ্ছা, ঠিক আছে ভাই। তুমি শান্ত হও।

    জসিম সদাগর বিরক্তির সাথে বললেন, ধুর মিয়া! রাখো তোমার শান্ত হওয়াহওয়ী। আমার কাজে হাত দিবা না। প্রথমবার তাই কিছু কইলাম না। পরের বার আর হাত আস্ত থাকবো না। এই জসিম, ধনু কবরেজের নাতি, জবান কিলিয়ার।

    আলী সাহেব এই কথায় সামান্য রেগে গেলেন। প্রায় সারাজীবনই বড় পদে চাকরি করেছেন। অনেক ঘাগু লোক এসে তার কাছে ধর্না দিয়েছে নানা কাজে। কারণে অকারণে তিনি কখনো কখনো তাদের ঘুরিয়েছেন। কিন্তু এই সাধারণ এক কবিরাজ তার সামনে এমন অহংকার দেখায়! আলী সাহেব বললেন, মুখ সামলে কথা বলো জসিম। তুমি আমার বাল্যবন্ধু, তাই আমি সহ্য করছি তোমাকে।
    এখান থেকে মানে মানে কেটে পড়ো। আর এখন থেকে একটা কাঠবিড়ালীও তুমি মারতে পারবে না। দরকার পড়লে নারকেল গাছ পাহাড়া দেবার জন্য আমি লোক রাখবো আরো।

    জসিম সদাগর এমন কথা প্রত্যাশা করেন নি শাফাকাত আলীর কাছ থেকে। তিনি ভেবেছিলেন হয়ত অন্যদের মতো শাফাকাত আলীও ভয় পাবেন তার কথায়। কিছুটা অবাক হয়েই জসিম সদাগর কিছুক্ষণ দেখলেন শাফাকাত আলীকে, তার লাল লাল দুই চোখ মেলে। অতঃপর উগ্র কন্ঠে বললেন, বুঝতে পারছি আমি কী হইছে এখানে। শত্রুরা খেইড় খেলাইতেছে।

    গাছের দিকে এগিয়ে গিয়ে চিৎকার দিয়ে বললেন জসিম সদাগর, তোদের খেলা আমি ধইরা ফেলছিরে। দিন তোদের শেষ। এইবার হবে আসল খেলা।

    কয়েকটা লাফ দিয়ে, উঠানে দ্রুত তিনটা চক্কর দিয়ে জসিম সদাগর চলে গেলেন।

    ছয়

    ঐদিন রাতে আবার এলো কাঠবিড়ালীরা শাফাকাত আলীর কক্ষে। তারা প্রথমে ধন্যবাদ জানালো তাকে। এরপর বুড়ো কাঠবিড়ালীটি বলল, কিন্তু বিপদ শেষ হয় নি শাফাকাত। কালো যাদুকরটি বুঝে গিয়েছে আমরাই তোমার সাথে কথা বলেছি। এবার সে অন্য পন্থা নিবে।

    শাফাকাত আলী তাদের আশ্বস্ত করলেন। সাধারন এক কবিরাজ তার সাথে পেরে উঠবে না। দরকার হলে তিনি প্রশাসনের সহায়তা নিবেন জানালেন।

    কয়েকদিন এইমত চললো। জসিম সদাগরের দেখা নেই। কাঠবিড়ালীও আসে না শাফাকাত আলীর কক্ষে।

    প্রায় চারদিন পরে শাফাকাত আলী সকালে ঘুম থেকে উঠে তার দরজার সামনে একটি মৃত কাঠবিড়ালী দেখতে পান। ঐদিনই আবার দেখা গেল জসিম সদাগরকে গ্রামের বাজারে। তিনি উন্মত্ত কন্ঠে বলে বেড়াচ্ছিলেন, বইন্যা হবে রে, বইন্যা হবে। তলাইয়া যাবে, দেশ ভাইস্যা যাবে। দুইন্যা ভাইস্যা যাবে। সব ভাইস্যা যাবে রে মনা।

    এই বলে বলে তিনি লোক জড়ো করলেন। তারপর গম্ভীর কন্ঠে তার ভাষণ দিলেন, বন্ধুগণ, আপনারা আমারে চিনেন, জানেন। আমি ধনু কবরেজের নাতি, যেই ধনু কবরেজ ওলা বিবিরে গাঁইথা রাখছিলেন বটগাছের সাথে। আমি সেই লোক, যে কামরূপের সব যাদু বিদ্যা গিইল্যা খাইছি। আমি একাধারে দেশ বিদেশ এবং দূর অন্তরীক্ষ পর্যন্ত সবখানে ছড়াইয়া থাকা জ্ঞাত অজ্ঞাত সব জিনিসরে রাখি নিজের অন্তরে। আমার তন্ত্র মন্ত্র বিদ্যা আমারে দিছে সেই জ্ঞান। এই জ্ঞান অর্জনে লাগে বড় সাধনা, মহাশয়েরা।

    সাধারণত জসিম সদাগর বেশী কথা বলেন না। ফলে হঠাৎ করে তার এই ভাষণ লোকেরা উৎসাহী হয়ে শুনতে থাকলো।

    জসিম সদাগর বলতে থাকলেন, বন্ধুগণ, এই কয়দিন আমি ছিলাম না অত্র অঞ্চলে। আমি গিয়াছিলাম বহুদূরে, সুদূরে। আমি গিয়াছিলাম পাহাড়ে, পর্বতে, নদীতে, দূর হিমালয়ে। সেই সবের বাতাসে কী কানাকানি হয়, কী গোপন সংবাদের বার্তা বইয়া যায় তা আমি জানছি এইবার।

    বন্ধুগণ, বড়ই খারাপ সংবাদ আমাদের দুইন্যার জন্য। বড়ই দুঃসংবাদ। বড় এক বইন্যা হবে, বান ডাকবে বান। আসমান থিকা ঝরবে খালি পানি আর পানি। সেই বৃষ্টিধারায় সব যাবে ভাইস্যা। প্লাবন হবে ভাইয়েরা, হবে আরেক মহাপ্লাবন।

    আর এই সময়ে আপনারা যদি বাঁচতে চান, তাহলে আসেন, আমার সাথে আসেন। আমি নৌকা বানাবো। বড় এক নৌকা। যে বটগাছটায় আমার দাদা ধনু কবরেজ ওলা বিবিরে গাঁইথা থুইছিলেন ঐ গাছের কাঠ দিয়াই আমি নৌকা বানাবো। আপনারা বাঁচতে চাইলে আমার সাথে আসেন।

    এইসব কথা বলতে থাকলেন জসিম সদাগর।

    সাত

    কাঠবিড়ালীর মৃতদেহ পাওয়ায় শাফাকাত আলীর মনে শান্তি ছিল না। তিনি ভেবে পেলেন না কীভাবে এই মৃতদেহ তার দরজার সামনে এলো।

    উত্তর মিললো ঐদিন রাতে। সে রাতে আবার কাঠবিড়ালীরা শাফাকাত আলীর কক্ষে দেখা দিল। শাফাকাত আলী জেগেই ছিলেন, তার মন বলছিলো আজ ওরা আসবে।

    কাঠবিড়ালীগুলো এসেছিল মৃত এক কাঠবিড়ালীর শরীর নিয়ে। সামনে মৃতদেহ নামিয়ে রেখে শান্তভাবে বুড়ো কাঠবিড়ালীটি বলল, শাফাকাত, আমরা এভাবেই মারা পড়ছি। যাদুকর কবিরাজ আমাদের ছাড়বে না। সে আমাদের তীর্থস্থান প্রাচীন বটগাছটি কেটে ফেলার পরিকল্পনা করেছে। ওটা কেটে ফেললে আমরা আমাদের সব কিছু হারাবো। ওখানেই আমাদের অস্তিত্বে সবচাইতে বড় অংশ রয়েছে।

    শাফাকাত আলী বললেন, আপনারা ভাববেন না। জসিম ওই গাছ কাটতে পারবে না। এটা গ্রামের সম্পত্তি।

    কাঠবিড়ালীটি বলল, সাধারন কেউ হলে পারতো না শাফাকাত। কিন্তু ও সাধারন কেউ নয়। ওর সাথে আছে কালো যাদুবিদ্যা। তুমি আমাদের বাঁচাতে চাইলে গাছটিকে বাঁচাও।

    কাঠবিড়ালীগুলো আর বেশী কথা বললো না। মৃতদেহটি নিয়ে আস্তে আস্তে চলে গেল।

    সে রাতে অনেক ভাবলেন শাফাকাত আলী। কীভাবে কী করা যায়, পুলিশের সাহায্য নেয়া কি উচিত হবে, নাকী গ্রামের লোকদের তিনি বুঝাবেন?

    আট

    জসিম সদাগর সবখানেই তার নৌকার গল্প বলে বেড়িয়েছেন। কিছু কিছু লোক এই গল্প বিশ্বাসও করেছে। বটগাছটি কাটার জন্য করাত টরাত সহ লোকজন নিয়ে এসেছেন জসিম সদাগর এমন দেখলেন শাফাকাত আলী। জসিম সদাগর কারো অনুমতির তোয়াক্কা করছেন না।

    শাফাকাত আলী গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে গেলেন। ভদ্রলোক বয়স্ক লোক, হাসানুজ্জামান ইদ্রিস তার নাম। হাসানুজ্জামান সহ গ্রামের অন্যান্য মুরুব্বীরা আলী সাহেবের অনুরোধে একবার বুঝাতে গেলেন জসিম সদাগরকে। কিন্তু জসিম সদাগর বুঝার পাত্র নন। তিনি পারলে তেড়ে আসেন এমন অবস্থার তৈরী হলো।

    তিনি শাফাকাত আলীকে উদ্দেশ্য করে বললেন, যা তুই যা। শালা, তুই একটা বিভীষণ। আমার চক্ষের সামনে থিকা দূর হ। নাইলে তোরে জুতাবো।

    নিজের পায়ে জুতা ছিলো না। জসিম সদাগর জুতাবো বলে তাই অন্যদের পায়ে জুতা খুঁজতে লাগলেন।
    আলী সাহেব অবস্থা বেগতিক দেখে সরে আসলেন বাড়িতে।

    পুলিশকে বলেও কোন কাজ হবে না বুঝলেন আলী সাহেব। কারণ থানা জেলা সদরে। সেখানকার পুলিশ এই উদ্ভট সমস্যায় নাক গলাতে চাইবে না।

    আলী সাহেব পড়লেন মহা সমস্যায়।

    গাছ কাটা শুরু হলো। যেদিন গাছে করাত লাগলো সেদিন সকালে আলী সাহেব তার দরজার সামনে পেলেন পাঁচটি কাঠবিড়ালীর মৃতদেহ। সে রাতে তার কক্ষে বুড়ো কাঠবিড়ালী এসে আবার সাহায্য প্রার্থনা করে গেল।

    প্রাচীন বটগাছটি এত বড় যে কাটতে কিছুদিন লাগবে। যারা কাটছে তাদের হাতে যেহেতু উন্নত যন্ত্রপাতি তেমন নেই তাই সময় বেশী লাগা স্বাভাবিক।

    আলী সাহেব বুঝতে পারলেন যে করেই হোক গাছ কাটা তার বন্ধ করতেই হবে। কাঠবিড়ালীর প্রসঙ্গ বাদ দিলেও পরিবেশগত কারণ রয়েছে। তাছাড়া এই উন্মাদ কর্ম কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।

    অনেক ভেবেচিন্তে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন কোনভাবে জসিম সদাগরকে বুঝানো যায় কি না দেখবেন। শেষ চেষ্টা করে দেখবেন তিনি। এতে না হলে সোজা সদরে চলে যাবেন। পরিবেশ রক্ষা আইনে মামলা করবেন।

    ওই রাতে জসিম সদাগরের বাড়িতে যেতে তার যে হালকা ভয় হয় নি এমন নয়। যাদু বিদ্যায় তিনি বিশ্বাস করেন না। জসিম সদাগরের বানোয়াট গল্পে তিনি বিশ্বাস করেন না। যে দাদার গল্প জসিম সদাগর করে বেড়ায় সে লোককে ছোটবেলায় খেতে কাজ করতে পর্যন্ত দেখেছেন আলী সাহেব।

    কিন্তু, বিশ্বাস না করলেও নিরাপত্তা নিয়ে চলা আবশ্যক মনে করেন শাফাকাত আলী। তাই তার পুরনো পিস্তলটি তিনি পকেটে নিয়েই জসিম সদাগরের বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করলেন।

    জসিম সদাগরের বাড়িকে বাড়ি বললে বাড়িরা লজ্জা পেতে পারে। ভাঙ্গা মাটির দেয়াল, উপরে ছনের ছাউনিসহ কোন মতে ঠিকে আছে একস্তুপ আবর্জনা সদৃশ। এর ভিতরে কীভাবে কোন মানুষ থাকতে পারে আলী সাহেব কল্পনা করতে পারলেন না।

    তিনি বাইরের দরজায় কয়েকটা ঠুকা দিয়ে ডাকলেন, জসিম, ও জসিম!

    কোন শব্দ এলো না। দরজার ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে প্রদীপের আলো। অর্থাৎ, ভেতরে আলো জ্বলছে।
    শাফাকাত আলী আরো কয়েকবার ডাকলেন। কিন্তু কোন সাড়া এলো না।

    অগত্যা তিনি দরজায় হালকা ধাক্কা দিলেন। তাতেই দরজাটি খুলে গেল।

    শাফাকাত আলী দেখলেন ঘরের মাঝখানে বেদীর মতো জায়গা। সেখানে একটি ভিনদেশী চেহারার মূর্তি। তার সামনে কেটে রাখা হয়েছে কয়েকটি কাঠবিড়ালী, কিছু লাল জবা ফুল। শাফাকাত আলী একটু এগিয়ে গিয়ে দেখলেন মূর্তিটির সামনে একটি শাদা পাত্রে রাখা আছে লাল রক্ত। মূর্তিটির মুখেও লেগে আছে রক্ত।

    আলী সাহেবের গা কেমন যেন ছমছম করে উঠল। তিনি পকেটে হাত দিয়ে পিস্তলটা ধরে ঠিক করলেন এখনই ফিরে যাবেন বাড়িতে। এইরকম কাজ করছে যে লোক, সে আরো ভয়ংকর কাজ করে ফেলতে পারে।

    শাফাকাত আলী ঘুরে দাঁড়াবেন এমন সময় বিকট হাসির শব্দে তিনি চমকে উঠলেন। দেখলেন দরজার একদিকে লম্বা রামদা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন জসিম সদাগর। তার পরনে একটি জরির পোষাক। প্রদীপের আলোতে চকচক করছে।

    আলী সাহেব কিছু বুঝে উঠার আগেই জসিম সদাগর ঝাঁপিয়ে পড়লেন তার উপর। উন্মত্ত রামদার আঘাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন আলী। কিন্তু তিনি বুঝতে পারছিলেন মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার একটা মাত্র উপায়ই আছে তার কাছে। তিনি আক্রমনোদ্যত ক্ষুব্ধ পিশাচ চেহারার জসিম সদাগরের দিকে তার পিস্তল তাক করে গুলি করলেন। দু’টি গুলি।

    নয়

    জসিম সদাগরের মৃত্যুর খবর গ্রামে জানাজানি হলো পরদিন। লোকেরা মনে করলো প্রাচীন বটগাছের অভিশাপে এই মৃত্যু। যারা গাছ কাটতে এসেছিল তারা পালালো।

    প্রত্যন্ত গ্রামে জসিম সদাগরের মতো এক কবিরাজের মৃত্যু নিয়ে থানা পুলিশ আর হলো না। একদিনেই কাহিনী শেষ।

    উপরন্তু, বিরাট বটগাছটি অর্জন করলো গ্রামবাসীর ভয়মিশ্রিত সমীহ।

    আলী সাহেব প্রথমদিকে একটু ভয়ে ভয়ে ছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যার দিকে তার ভয় কেটে যায়।

    ঐ রাতে তিনি দরজা খুলে দিয়ে কাঠবিড়ালীদের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু তারা এলো না।

    পরদিন সকাল থেকে শুরু হয় আকাশ ভেঙে বৃষ্টি। শাফাকাত আলী বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরে গাছের পাতায় পাতায় পড়তে থাকা বৃষ্টিধারা দেখছিলেন। সতর্ক দৃষ্টিতে দেখতে চেষ্টা করছিলেন নারিকেল গাছে থাকা কাঠবিড়ালীরা বের হয়েছে কি না। এইসময়ে মজিদ মিয়া এসে বলল, স্যার, দেখেন অকালে কীরকম মেঘ বৃষ্টি! আইজ কি ভুনা খিচুরি করবো?

    আশফাক আলী অকালে পড়ন্ত বৃষ্টিধারা দেখতে দেখতে, মেঘগর্জন শুনতে শুনতে ভাবছিলেন এই বৃষ্টি যদি আর বন্ধ না হয়, যদি জসিম সদাগরের কথাগুলি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে কী হবে?

    তার ভাবনায় ছেদ পড়লো কয়েকটি কাঠবিড়ালী দেখে। এরা নারিকেল গাছ থেকে নেমে এসেছে শাফাকাত আলী সাহেবের বাড়ির উঠানে। উঠানের দূর্বাঘাসের স্তরের উপর লাফাচ্ছে তারা। অকালের বৃষ্টিতে কাঠবিড়ালীদের আনন্দ হয় শাফাকাত আলীর জানা ছিল না। তিনি ভ্রু কুঁচকে, সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে তাদের দেখতে থাকলেন।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৪ জুন ২০১৮ | ২১১৩ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    হেলেন - Muradul islam
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিপ্লব রহমান | ***:*** | ২৪ জুন ২০১৮ ০১:০৪63461
  • বটগাছের কাঠে নৌকা! মুসলিম কবিরাজের দেবী পূজা!
    পিস্তলের দুই গুলিতে খুন হলেও তদন্ত হলো না!

    বেশ অবিশ্বাস্য ঠেকছে।

    তবে ওয়ালি উল্লাহর আমল থেকেই মজিদ মোল্লা বা জসিম সওদাগরের মতো কুসংস্কার উস্কে দেওয়ার লোকের অভাব নেই।

    "শস্যের চেয়ে টুপি বেশী, ধর্মের চেয়ে ধর্মের আগাছা বেশী।"
  • Muradul islam | ***:*** | ২৪ জুন ২০১৮ ০৮:৩১63462
  • যাক, কাঠবিড়ালীর কথা বলা বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে তাহলে।
  • aranya | ***:*** | ২৪ জুন ২০১৮ ১০:২৬63463
  • শেষের টুইস্ট-টা ভাল। কাঠবিড়ালী-রাই হয়ত আসল ভিলেন, এটা অবিশ্যি আগেও মনে হচ্ছিল
  • বিপ্লব রহমান | ***:*** | ২৫ জুন ২০১৮ ০৪:১৫63464
  • কাঠবেরালির কথাবলাটা স্বপ্নদৃশ্য, প্রতীকী মনে হয়েছে। বাকীসব অবিশ্বাস্য। আর পুরো প্যাকেজটা চলনসই নই। :/
  • | ***:*** | ২৫ জুন ২০১৮ ০৫:০৬63465
  • গল্প - যদি একটা পিস ওব ক্রিয়েশান, একটা নির্মাণ হিসেবে ধরি তাহলে চমৎকার। আপনার আগের কয়েকটা একটু প্রেডিক্টেবল লেগেছিল। এটা সেরকম নয় অনেক ভাল্লেগেছে।

    কিন্তু একটু কি তাড়াহুড়ো হল? অরেকটু সময় দিয়ে জসীমের চরিত্রটা, পরিণতি নির্মাণ করা দরকার ছিল?

    আবার বলি ভাল লেগেছে।
  • T | ***:*** | ২৫ জুন ২০১৮ ০৬:০১63466
  • দুর্দান্ত।
  • Muradul islam | ***:*** | ২৫ জুন ২০১৮ ০৮:১৩63467
  • @বিপ্লব রহমান-

    সবই অবিশ্বাস্য।
  • বিপ্লব রহমান | ***:*** | ২৬ জুন ২০১৮ ১১:২৫63468
  • @ মুরাদুল ইসলাম,

    সে তো বটেই। গল্পটির মূলভাব বেশ ভাল, কিন্তু এটি আরো গোছানো হলে ভাল হতো, পাঠকের দাবি এইটুকু মাত্র। শুভ
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন