এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • একটি পুস্তক পাঠের ইতিবৃত্ত

    Nahar Trina লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৪ নভেম্বর ২০১৮ | ১৬৯৯ বার পঠিত
  • সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ এই লেখা পড়িয়া উত্তেজিত হওয়ার কিস্যু নাই। ইহা নিছকই এক নাদান পাঠকের হুদাই বাগাড়ম্বর।
    ---------------
    দুম করে পড়ে ফেলা যাবে এমন একটা ভাবনায় ১০৮ পাতার ছোট্ট বইটা বাছাই করা। ও আমার কপাল! কবি বলেছেন,
    ছোট বলে কারে করিলি রে হেলা?
    কত ধানে কত চাল বুঝিবি সে ঠ্যালা।

    ঘটনা খুবই সত্যি। শ্রী ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় রচিত "মোঘল বিদুষী" বইখানা পড়তে গিয়ে ভাষার যুযুৎসুতে পড়ে যে সময়ে বইটি শেষ হবার কথা তারচে' ঢের বেশি সময় লেগে গেল।
    ভাবছেন কেমন বানিয়ে বানিয়ে বলে রে মেয়েটা? ঠিকাছে একখানা নমুনা দেয়া যাক : " শের শাহ কর্তৃক সিংহাসনচ্যুত হইয়া হুমায়ূন যখন পবন চালিত ছিন্ন পত্রের ন্যায় ইতস্ততঃ বিতারিত হইতেছিলেন, রাজ-অন্তঃপরিকাগণ তাহার ছিন্নহার কুসুমের ন্যায় বিক্ষিপ্ত।" মাভৈঃ!
    বেশ একটা আগ্রহ নিয়েই বইটা পড়তে শুরু করি। বইয়ের প্রথমেই লেখক মহাশয় বিদুষী দু'জনের নাম জানান দিয়ে কাহিনির সঞ্চালন ঘটান। দুম করে তো আর এই বিদুষী দু'জন সুন্দর এই পৃথিবী প'রে আসেননি। তাঁদের জন্ম বৃত্তান্ত খুলে বলা তাই খুবই সঙ্গত। তবে তাই হোক।

    গুলবদন বাবরের কন্যা। উল্লেখ্য বাবরের মাত্তর চারজন পত্মী বর্তমান ছিলেন(যদিও পরবর্তীতে তাঁর আরো পত্মী গ্রহণের কোনো তথ্য বইটিতে নাই।)। ভারতবর্ষ আক্রমণের আগে বাবর কাবুলের এক ক্ষুদ্র অঞ্চলের ক্ষুদ্র অধিপতি ছিলেন। ভারতবর্ষকে ধন্য করার জন্য তিনি কাবুলের ক্ষুদ্র আধিপত্য ছেড়ে উড়ে এসে জুড়ে বসবার তাগিদে ইব্রাহিম লোদীর সাথে যুদ্ধে অবর্তীন হন। এই যুদ্ধ যদিও পানিতে হয়না তবুও একে পানি পথের যুদ্ধ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে ইতিহাসে। নানান সময়কালে এই যুদ্ধ মোট তিনবার ঘটে। বাবর যেহেতু এই যুদ্ধের মহান হোতা, তাই তার সাথে ইব্রাহীম লোদীর যুদ্ধকে পানি পথের প্রথম যুদ্ধ বলা হয়। এ যুদ্ধে বাবর জয়ী হয়ে ভারতে আসন গেড়ে বসেন। "মুঘল সম্রাটরা ছিলেন মধ্য এশিয়ার তুর্কি-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত। তারা চাগতাই খান ও তৈমুরের মাধ্যমে নিজেদের চেঙ্গিস খানের বংশধর বলে দাবি করতেন। ১৫৫৬ সালে আকবরের ক্ষমতারোহণের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের ধ্রুপদি যুগ শুরু হয়।" যা দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের রেঙ্গুনে নির্বাসিত ও বন্দী অবস্হায় মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চিরদিনের মত খতম হয়, সালটা ১৮৬২। তো বাবরের চার পত্মীর নাম দিলদার, মাহম্, গুলরুখ্ এবং মুবারিকা ইত্যাদি বলার সাথে সাথে তাঁদের গর্ভের সন্তানদের পরিচয়ের পালা চলে খানিক। চলুক, হাজার হোক রাজ রাজাদের কারবার। লিস্টি তো বড় হবেই। মন কে প্রবোধ দেই, তিষ্ট ক্ষণ কাল! এই এলো বলে বিদুষীদের কাহিনি। কিসের কী! গুল বদন "হুমায়ূন নামা" রচনা করেছেন এই তথ্যের মূলোখানা সামনে ধরে এই অবুঝ পাঠককে ছুটিয়ে নিচ্ছেন কেবল। তো ছুটছি, বিদুষী হওয়া কিংবা 'তাহাদের কথা' জানতে পারাটা তো চাট্টিখানি কথা না বাপু। এট্টুখানি ঘাম না ঝরালে কেম্নে কী! ইতিহাসের নানান গপ্পো ফেঁদে বই এগোচ্ছে। আমি তেমন আর আগাতে পারি কই? ভাষার কথা তো বলেইছি, সে বুঝতেও মাথাকে বেশ সময়ক্ষেপনের হ্যাপা সামাল দিতে হয়। যে কারণে এহেন ভাষার ঘায়ে মূর্ছা যাবো কী যাবো না ভাবনাটাও উঁকি দিয়ে গেছে মনে। খামোখাই ভাষাকে জটিল করে যে কী মজা পান কেউ কেউ বুঝি না বাপু! রবীন্দ্রনাথও তো সাধু ভাষায় লিখেছেন অনেক, কিন্তু কই সেসব পড়ে তো 'ত্রাহি মধুসূদন' ডাক ছাড়তে ইচ্ছে করেনি কখনো?

    তো চলমান কাহিনি থেকে জানতে পারি, হুমায়ূনের পাটরানী মাহম বড়ই হতভাগিনী নারী। তাঁর সন্তান জন্ম নিলেও বাঁচে না। তাই তিনি পাঁচ সন্তানের জননী দিলদার বেগমের কনিষ্ঠা কন্যা গুলবদন কে দত্তক হিসেবে গ্রহন করেন। সে সময় গুলবদনের বয়স মাত্র দুই বছর। শুধু তাই না, দিলদার বেগমের পুত্র আবু নাসের, ইতিহাসে যিনি হিন্দাল নামে পরিচিত, তাঁর বয়স যখন মাত্র চারদিন সে সময় তাকেও মাহম দত্তক নেন। এতে দিলদার বেগম যে খুশিতে গার্ডেন গার্ডেন হয়েছিলেন তা নয়। কিন্তু হুদাই সম্রাটের পাটরানীর সাথে ক্যাচালে জড়িয়ে বোকামী করতে চাননি। তাছাড়া এ তো আর হিন্দি টিভি সিরিয়াল না, কাহিনি টেনে হিঁচড়ে লম্বা করার জন্য রানীতে রানীতে চুলোচুলি করে দীর্ঘ স্লট মেরে দেবেন। এ ইতিহাস, আরো সব সম্রাটেরা স্পটে আসবার জন্য রীতিমত লাইনে দাঁড়াবার তোড়জোড়ে আছেন। সো, নারীর বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না প্রবাদে মুখ গুঁজে দিলদার বেগম কন্যা ও পুত্রদের মাহমের হাতে তুলে দেন।

    বইটি জানায় গুলবদন পিতার খুব আদরের ছিলেন। সেকথা তাঁর লিখিত পুস্তক "হুমায়ূন নামা"য় উল্লেখ আছে। বাবর যে কন্যা গুলকে সর্বাধিক ভালো পাইতেন তার আরেকটি নমুনা হইল সিক্রীতে অবস্হান কালে বিমাতা মুবারিকার অসাবধানতায় গুলের হাতের একটি হাড় নড়ে যায়.. তাতে বাবর সেখানকার বাস তুলে চটিবাটি গুটিয়ে আগ্রায় চলে যান। কাহিনির উপস্হাপনা চলিতেছে, কোনো থামাথামি নাই। কেবল নাই বিদুষীগণের দেখা। তবে ফাঁকফোকরে বার বার বলে নিতে কার্পূণ্য করেননি যে গুলবদন "হুমায়ূন নামা রচনা করেছেন এবং সেখানে ইত্যাদি বলেছেন। পাঠক আশায় বুক বাঁধে, "কাছে যাবো, কবে পাবো, ওগো তোমার নিমন্ত্রণ।" অজানাকে কাছে পাবার ব্যাকুলতায় সজোরে একখানা ব্রেক কষতে হয়। কারণ কাহিনিতে দুর্যোগের ঘনঘটা। চ্যাঙড়া ছেলে হুমায়ূন অসুস্হ, পিতা বাবর পেরেশান। তিনি ঠিক করলেন ঢের তো হলো, আর কেন? এবেলা কেটে পড়া যাক। আর যুদ্ধে যুদ্ধে রাজ্য বিস্তার নয়, কবরে যাবার সময় হলো। তো তিনি ঠিক করলেন ভগবদনুগ্রহ করলে পুত্র হুমায়ুন সুস্হ হইবে। এই একই কাজ তো বাপু মাহমও করেছিলেন যখন বিমাতার সাথে খেলতে গিয়ে গুলের হাতের হাড় সরে যায় তখন মাহম গ্যাঁট হয়ে ওকাজেই ধ্যানস্হ ছিলেন। তার তো প্রাণনাশের শঙ্কা হয়নি, তবে হোয়াই দিস কোলাবেরি ডি? ১৫৩০ খ্রীস্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর বাবরের মৃত্যুর কাহিনিটি বড়ই মেলোড্রামাটিক। এতদিন ভাবতেম প্রিয় ঋত্বিক ঘটকের নিকট হইতে উহা আমি কব্জা করেছি। এখন তো দেখা যায় ইহার আদি দাবীদার বাবর! যাহাদের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হয়নি, একটু স্পষ্ট করা প্রয়োজন। ঋত্বিকের বিখ্যাত একটি সংলাপ "মেলোড্রামা ইজ মাই বার্থ রাইট।" বাবর তারচে' সরেস বটে। ঘটনা কমুনা, জানতে হলে বইটি পড়ুন( নিজ দায়িত্বে)। একথার সত্যতা পরিষ্কার হবে। স্বামীর মৃত্যুর কিছুকাল পর মাহম মৃত্যু বরণ করেন। তাঁর মৃত্যু গুলবদনের বুকে বড়ই বেজেছিল। এই প্রসঙ্গে হুমায়ূন নামায় উল্লেখ করেন : "তখন আমি যেন এই সংসার অরণ্যে আপনাকে নিতান্ত নিঃসঙ্গ ও নিরাশ্রয় বোধ করিলাম। আমি দিবারাত্র তাঁহার জন্য শোক করিয়াছি, কত কাঁদিয়াছি দুঃখে হাহাকার করিয়াছি। যখন আমি দুই বৎসরের শিশু, তখন আকাম(মাহম) আমাকে কন্যারূপে গ্রহণ করেন, আর দশ বছর বয়সের সময় তিনি আমাকে পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া গেলেন। এতদিন তিনি আমাকে পরম স্নেহে পালন করিয়াছিলেন।"

    বাবা বাবর তাঁর নিজের জীবনটি যে পুত্রের জন্য স্বেচ্ছায় দান করেন বলে কথিত আছে সেই হুমায়ূন সম্রাটের আসনে বসে সেরকম সুবিধা করতে পারেননি। তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তার অভাবে পুরোনো পাঠান শত্তুর সকল মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। ভ্রাতৃবিরোধে জড়িয়ে জেরবার অবস্হায় পড়েন তিনি। ভাই কামরান তাঁর সিংহাসন গ্রহণের বিষয়টি ভালো ভাবে নিতে পারেননি বলে গোটা সিকোয়েন্সেই সম্রাটকে পেইনের মধ্যে রাখেন। ওদিকে গোঁদের উপর বিষ ফোঁড়া শের শাহ। তবে আরেক বৈমাত্রীয় ভাই হিন্দাল এবং বোন গুলবদনের আন্তরিক শুভেচ্ছা হুমায়ূন যথেষ্ট পরিমাণেই পেয়েছিলেন। ভাই হিন্দাল তো তাঁর কারণেই জীবন বির্সজন দেন। তো কামরান মিয়া সমানে বড়ভাই হুমায়ূনকে পেইন দিয়ে গেলেন। বার বার এই ঘুঘু ধান খেয়ে গেলেও(হুমায়ূনের সাথে বৈঈমানী করলেও) ক্ষমাশীল এবং পিতার আদেশ শিরোধার্য মনে করায়(পিতা বাবর বলে গিয়েছিলেন কামরানের সাথে সদ্ব্যবহার করতে - তার মানে কী পিতার মনে উঁকি দিয়েছিল তার এই পুত্রটি কালক্রমে গব্বার সিং হইবে?) তিনি ভাইকে মাফ করে দেন। কিন্তু সর্বশেষ নৈশযুদ্ধে কামরানের শোচনীয় পরাজয়, আরেক ভাই হিন্দাল যিনি ভাই হুমায়ূনের জীবন রক্ষার্থে জীবন বিসর্জন দেন, তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যু, আমত্যবর্গের স্বজন পুরঃনারীগণের করুণ পরিণতি, সর্বোপরি সম্রাটের নিজের চরম দুর্শদশার কথা স্মরণ করিয়ে তাঁরা এই বদমাইশ কামরানের যথাযোগ্য শাস্তির প্রতি সম্রাট হিসেবে তাঁর করণীয় কর্তব্য আশা করেন। তখন বাধ্য হয়ে সম্রাট কামরানকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান না করে অন্ধ করে দেবার আদেশ দেন(নাহ! লোকটা সত্যিই বড় ভালো ছিলেন)। এসমস্ত কাহিনি হুমায়ূন নামায় বর্ণিত আছে বলে উল্লেখ করেন শ্রী ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়। শের শাহ এক সময় হুমায়ূনকে পরাস্হ করে রাজ্যপাট হস্তগত করেন। হুমায়ূনের শরীরে তুর্কী রক্ত বহমান। ঠিকাছে ভাই সুখে থাকো, তোমার ভালো হোক, বলে তো চলে যেতে পারেন না। তিনি আবার এর ওর সাহায্য নিয়ে তাঁর হারানো ক্ষমতা ঠিকই ফিরিয়ে নেন। শেষমেশ, শের শাহ প্রতিষ্ঠিত শেরমণ্ডল ভবনে পাঠাগার পরিদর্শন ও শুক্রগ্রহের উদায়ণকাল নির্ণয়ের জন্য সেখানে গেলে সিড়ি বাইবার সময় পা ফসকে পড়ে যান হুমায়ুন এবং চেতনা হারান। সে চেতনা তাঁর আর ফিরে আসেনি, তিনি মৃত্যুবরণ করেন। লেখক এই ঘটনার দায়ও শের শাহের উপর চাপিয়ে সুন্দরভাবে বলেন " চিরবৈরি শের মৃত্যুতেও যেন শত্রুতা সাধন করিল।"

    তো হুমায়ূনের মৃত্যুর পর বালক আকবর সম্রাট হিসেবে রাজ্যভার গ্রহণ করেন। সেসব সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে কসুর করেননি লেখক। অতসবে যাচ্ছি না আর।
    পাঠক পরাণ "কতদূর আর কত দূর" মনে মনে কয় আর পড়ে। এর পর আরো নানান ইতং বিতং চলার পর লেখক হয়ত ভাবলেন, আরে! গুলবদন আল্লাহর বান্দা, পূণ্যপ্রাণা নারী, হজ্বব্রত পালন করলেন। কতটা ত্যাগস্বীকার পূর্বক এব্রত পালন করেন, হজ্বব্রতটি কী, ইত্যাদি সম্পর্কে কেন পাপীষ্ঠা পাঠক সকলকে খানিকটা বিদ্যা ঝেড়ে দিয়ে আখেরের অশেষ নেকী হাসিলের পথখানা পাকা করি? ব্যস শুরু হয়ে গেলে হজ্বের ব্যাখ্যান। মনে রাখিতে হবে পুস্তকটির শিরোনাম, "মোঘল বিদুষী" এবং এক্ষণে এক বিদুষীর নাম এবং তাঁহার রচিত একখানা পুস্তক "হুমায়ূন নামা"র সামান্য কিছু উল্লেখ ব্যতিত, সেসম্পর্কে আলোকপাতের বিষয়ে সেরকম আগ্রহ না দেখাইয়া ইনি তীর্থযাত্রা লইয়া পড়িলেন! বাঘা বাইনের মত ক্ষণে ক্ষণে গান কই? থুড়ি বিদুষী কই? কহিয়া মন কাঁদিয়া গেলেও, দাঁতে দাঁত চাপিয়া আপাতত লেখকের সহিত তীর্থ গমনে বাধ্য হলেম... "দরিয়ায় আইলো তুফান, আয় কে যাবি রে, হেসে হেসে যাবো ভেসে মদিনা নগরে..."

    আসলে একতরফা ভাবে সেই প্রথম থেকেই লেখক মহাশয়ের উপর ব্যাপক অন্যায় করে যাচ্ছি। আরে সেকশপিয়র তো বলেই গেছেন "হোয়াটস্ ইন অ্যা নেইম?" কাজেই বোকার মত কেন ভাবছি এখানে বিদুষীদের নিয়েই কেবলমাত্র আলোচনা হবে? আশেপাশের সব কাহিনিও তো জানাতে হবে নাকি! ইতিহাস জ্ঞান না থাকলে কোনো জাতির পক্ষে কেম্নে উন্নতি সম্ভব! ভেতরের মিচকে আমিটা ফিসফিসিয়ে বলে, "ওরে, এই জানা ইতিহাস নতুন করে জেনে কী হবে র‍্যা?" কেন? হজ্বের কাহিনি ওটা তো নতুন বটে। আরো অনেক অজানা তথ্য পাওনি বৈঈমান পাঠক? এই চুপ !চুপ! কোন বিদ্যা কখন কাজে দেয় কে জানে বাপু। তাছাড়া লেখকের কী দোষ, "হুমায়ূন নামা"র শেষের কয়েকপাতা তো গায়েব ছিল। তিনি তো তাঁর সাধ্য মত মোঘল ইতিহাস বলার চেষ্টা করেছেন, ঠিক না? খুব ঠিক। কিন্তু আমি বিদুষী দু'জন গুলবদন এবং জেব-উন্নিসা সম্পর্কে অগাধ জ্ঞানপ্রাপ্ত হবো এই আশায় বইখানা নিয়েছিলেম। মরণ!

    অবশেষে 'আমি পাইলাম, আমি ইহাকে পাইলাম'!
    _____________________________________

    ১০৮ পাতার পুস্তকের ৬৮ পাতায় গুলবদন রচিত "হুমায়ূন নামা"র দেখা পাইয়া নাদান পাঠকের ঝলমল করে চিত্ত অবস্হা। কিন্তু দুষ্টু পাঠকের অতি আদেখেলাপণা ঠিক সেভাবে পূরণ হয় না যেন। অতি সামান্য তথ্য দিয়ে অধ্যায়টি শেষ হয়। এই অধ্যায় থেকে জানতে পারি, হজ্বব্রত পালন শেষে ফিরে এসে গুলবদন "হমায়ূন নামা" রচনায় মন দিয়েছিলেন। সম্রাট আকবরের এক আদেশানুযায়ী সম্রাট বাবর এবং হুমায়ূন সম্পর্কে যে যাহা জানতেন তার উপর ভিত্তি করে লিখার এক ফরমান জারী হলে স্নেহময়ী বোন ভাই হুমায়ূন সম্পর্কে লিখবার তাগিদ পান। সম্রাট হুমায়ূন গুলবদনের বৈমাত্রীয় ভাই হলেও এই দুই ভাই বোনের সম্পর্ক ছিল অতি মধুর। হুমায়ূনের প্রতি গুলবদন ছিলেন অতিমাত্রায় শ্রদ্ধাশীল এবং তাঁর মঙ্গলের প্রতি সদা নিবেদিত। সেই ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের এক নিদর্শন এই "হুমায়ূন নামা।" ফার্সীতে লেখা এই পুস্তকটির সন্ধান যথা সময়ে না ঘটায় অনেক বিখ্যাত ঐতিহাসিকই কিছু তথ্য পরিবেশনে বিভ্রাট ঘটান বলে লেখক জানান। বিশেষ করে বিখ্যাত ঐতিহাসিক জেইনরিক ব্লকম্যান (Heinrich Blochmann) তথ্য পরিবেশনায় বেশ তালগোল পাকান, যেকারণে গুলবদনের পরিচয় হুমায়ূনের বোন হিসেবে না হয়ে তাঁর বেগম হিসেবে উল্লেখিত আছে(নাউজুবিল্লাহ মিনজালেক!)।

    হুমায়ূন নামা'র ফার্সী পুঁথিখানা কর্ণেল জর্জ্জ উইলিয়াম হ্যামিলটনের বিধবা পত্মীর কাছ থেকে ক্রয় করা হয়। যা বর্তমানে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রক্ষিত আছে। বাখরগঞ্জের ইতিহাস প্রণেতা সুপ্রসিদ্ধ বেভারিজ সাহেবের বিদুষী পত্মী এটির ইংরেজি অনুবাদ করেন। গুলবদন "হুমায়ূন নামা" রচনার সাথে সাথে বেশ কিছু ফার্সী কবিতাও রচনা করেন। তার সংগ্রহে বহু পুস্তক ছিল যা তাঁর গঠিত পাঠাগারের শোভাই শুধু বর্ধণ করেনি তার বিদুষীপণার স্বাক্ষর বহন করে। তিনি নিঃসন্দেহে একজন সাহিত্যানুরাগী ছিলেন। মীর মহদী শিরাজী রচিত "তাজ কিরাতুল খওয়াতীনে' গুল রচিত একটি কবিতার উল্লেখ আছে: "হর পরী কে উ বা আশিক্ ই খুদ্ ইয়ার নীস্ত তূ ইয়াকীন্ মীদান্ কে হেচ্ অজ্ উমর্ বর্ খুরদার্ নীস্ত।" অর্থাৎ : নিজ প্রেমিকের প্রতি বিমুখ পরী। তুমি নিশ্চয়ই জানিও যে, কেহই জীবন রূপ ফল পূর্ণরূপে আস্বাদন করে না। জীবন নশ্বর, তাহার মধ্যেই যতটুকু পার সুখভোগ করিয়া লও।"

    দ্বিতীয় বিদুষী জেব-উন্নিসা
    ____________________

    এই বিদুষী নারী সম্রাট আওরঙ্গজেবের জ্যোষ্ঠা কন্যা। আরবি ফারসি ভাষায় এঁর দক্ষতা ছিল ব্যাপক। খুব কম বয়সেই তিনি সমস্ত কোরানপাক মুখস্হ করে সেটা বাবাকে আবৃত্তি করে শুনিয়ে মুগ্ধ করেন। নস্তালিক, নসখ্ ও শিকাস্তা এই তিন ছাঁদেই তিনি ফার্সী লেখায় পারদর্শী ছিলেন। তাঁর সংগ্রহে বহু দুস্পাপ্য পুস্তক ছিল জেব-উন্নিসার নিজস্ব গ্রন্থাগারে। তিনি নিজেই যে শুধু জ্ঞানপিপাসু সাহিত্যানুরাগী ছিলেন তা না। অন্যান্য সাহিত্যানুরাগীদের পৃস্ঠপোষকতায়ও তিনি সাহায্য করেন। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় যারা কৃতিবান হন তাদের মধ্যে মুল্লা সুফী উদ্দীন্ অদ্দবের্লীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সুফী উদ্দীন "জেব উৎ তফাসির" নাম দিয়ে কোরানের আরবি মহাভাষ্যে ফার্সী অনুবাদ করেন। 'মুখফী' নামে ফার্সী গ্রন্থে জেব উন্নিসার কিছু কবিতা আছে। কিন্তু যেহেতু এই ফার্সী শব্দের অর্থ একজন নয় বহুজন তাই কোন কোন বয়াত জেব-উন্নিসার রচিত তার সঠিক উল্লেখ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। হয়ত পিতা আওরঙ্গজেব কবি ও কবিতার প্রতি বীতশ্রদ্ধ ছিলেন বলেই বাবার ডরে এমন আড়াল নেয়া। অবশ্য সেটাও স্পষ্ট নয়, ইহা পাঠকের আন্দাজে মারা একটি ঢিল বিশেষ। যেহেতু পিতা কবিদের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন না সেকারণে কোন কবি আওরঙ্গজেবের রাজদরবার আলোকিত করেননি। তবে তাই বলে কন্যা জেবের অনুগ্রহ লাভে কবিদের সমস্যায় পড়তে হয়নি এটা বলাই বাহুল্য। যেকারণে আওরঙ্গজেবে সময়কাল সাহিত্যক্ষেত্রে অনুর্ব্বর থাকার কোপে পড়েনি। আওরঙ্গজেবের পুত্র মোহাম্মদ আকবর নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে কিচ্ছুটি না জেনেই হুদাহুদি পিতার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেন। ফলে যা হবার তাই হলো।

    সম্রাটের বিশাল বাহিনীর সাথে ঢিশুম ঢাশুমে ব্যর্থ হইয়া পিঠটানপূর্বক পগারপার হয়ে গেলেন। যেহেতু জেব-উন্নিসা ভাই আকবরের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীলা ছিলেন বাবার সন্দেহ তার উপর গিয়ে পড়লো। হায়রে ক্ষমতা! কেমন অন্ধ করে তোলে মানুষকে। এই পিতা কন্যার সম্পর্ক ছিল অতি মধুর। তাঁরা পরস্পর নিজেদের মধ্যে কত চিঠি আদান প্রদান করেছিলেন অতীতে। কিন্তু ক্ষমতা হারাবার আশঙ্কায় সেসব কিছুকে তুচ্ছ করে আওরঙ্গজেব পাষাণহৃদয় পিতা, কন্যা জেব-উন্নিসাকে আমৃত্যু কারাগারে বন্দী করে রাখেন। লানত এমন ক্ষমতা এবং পিতৃত্বকে! মৃত্যুর পর অবশ্য তিনি কন্যার শোকে কেন্দে ভাসান বিছানা। কিন্তু সে শোকে কী যায় আসে, যাকে কেন্দ্র করে যে শোক যা তাকে স্পর্শই করে না! বিদুষী জেব-উন্নিসাকে যদি কারাগারের বন্দীত্ব বরণ করতে না হতো তিনি আরো অনেক বেশি জ্ঞানার্জন করতেন। তাঁর মাধ্যমে মোঘল ইতিহাসের বিদুষীর কলেবর দৈর্ঘ্য প্রস্হে বাড়তো সন্দেহ নাই। কিন্তু হটকারী ভাইয়ের হুদাই ক্ষমতার লোভ, আর পিতার অদূরশর্দিতার কারণে এই বিদুষী নারীকে অকালে জীবন বিসর্জন দিতে হয়। একজন কুমারী মেয়ে কোনোকালেই যেন নিষ্কলুষ থাকার যোগ্যতা রাখেন না। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তার কপালে ধরেবেঁধে কলঙ্ক কালি দিতে ব্যাপক মাতামাতি করে। সেটা সম্রাট কন্যাই হও আর বস্তীবাসী জরিনাবিবিই হও। এক্ষেত্রে তাদের প্রাপ্য পুরষ্কারের বাজেট মোটামুটি সমতুল্যই থাকে। তো জেব-উন্নিসাও এ থেকে রক্ষা পাননি সঙ্গত কারণেই। লেখক সে বিষয়টা ব্যাখার তাগিদে আরেক খানি অধ্যায় লিখেছেন "জেব উন্নিসা কি কলঙ্কিনী?" নামে। তবে লেখক মহাশয়ের দোষ দেখিনা। তিনি কেবল প্রাণপণ চেষ্টায় জেব-উন্নিসার কলঙ্কমোচনের জন্য কিছু যুক্তি দিয়েছেন। তবে এই অধ্যায়টি 'ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি'পূর্বক এড়িয়ে গিয়ে "মোঘল বিদুষী" পাঠের ইতি টানি। বলাই বাহুল্য, এই সুদীর্ঘ বিরক্তিকর ভ্যাজর ভ্যাজর এক আকাঠ পাঠকের "মোঘল বিদুষী" পাঠের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া।

    ***
    বি::দ্র: "মুঘল বিদূষী" ইবুক হিসেবে পাঠ করিয়াছিলেম। পুস্তকখানা পরবর্তীতে হারাইয়া ফেলায়, ইহার প্রকাশক সংস্হা ,মূল্য, প্রকাশের সন সম্পর্কিত তথ্য বিষয়ে বিনীত অপারগতা জানিয়ে রাখলেম।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৪ নভেম্বর ২০১৮ | ১৬৯৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কুশান গুপ্ত | ***:*** | ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:৪২63124
  • চমৎকার ঝরঝরে গদ্য লেখকের। মন ভরে যায়।
    অনেক অজানা তথ্য জানলাম।
    ভালো হয় লেখা এবং লেখকের সঙ্গে যদি শেষে বা প্ৰথমে প্রকাশকের নামখানি উল্লেখ করেন।
  • Nahar Trina | ***:*** | ২৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:১০63125
  • প্রশংসায় কার মন না ভাসে! আম্মো ধন্যবাদ সহযোগে খানিক ভাসলেম। কুশানদা, লেখার নীচের বাক্যগুলো হয়ত আপনার দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। আসলে ই-বইটা পড়বার পর ডিলিট করে দেয়ায় আমার পক্ষে প্রকাশকের সুলুক সন্ধান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আন্তরিকভাবে দুঃখিত সে জন্যে। লেখা পাঠের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন