এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ভুখা বাংলাঃ '৪৩-এর মন্বন্তর

    I লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৮ নভেম্বর ২০১৮ | ২৩৭২ বার পঠিত
  • ( লালগড় সম্প্রতি ফের খবরের শিরোনামে। শবর সম্প্রদায়ের সাতজন মানুষ সেখানে মারা গেছেন। মৃত্যু অনাহারে না রোগে, অপুষ্টিতে না মদের নেশায়, সেসব নিয়ে চাপান-উতোর অব্যাহত। কিন্তু একটি বিষয় নিয়ে বোধ হয় বিতর্কের অবকাশ নেই, প্রান্তিকেরও প্রান্তিক এইসব মানুষজনের বেঁচে-থাকার কিস্যা, খেতে পাওয়া- না পাওয়া, রোগ হওয়া-না হওয়া, রোগ হলে ওষুধ পাওয়া-না পাওয়া, নেশা করা-না করার কাহিনীতে আমাদের, মূলস্রোতের নগরবাসীদের তেমন কিছু এসে যায় না; আমরা, নাগরিকেরা, প্রান্তের প্রতি,লালগড়-আমলাশোলের প্রতি ঠিক ততটাই উদাসীন ঠিক যতটা উদাসীন আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র।

    তবে কিনা এখনো, এত হাজার দোষ-ঘাটের পরেও আমাদের এই দেশ একটি গণতন্ত্র; খুঁতো- খোঁড়া গণতন্ত্র, কিন্তু তা-ও গণতন্ত্র। অনেক বিকিয়ে যাওয়ার পরেও সংবাদমাধ্যম লালগড় নিয়ে, আমলাশোল নিয়ে খবর করে, ছবি ছাপায়; আমরা হঠাৎ নড়েচড়ে বসি, নড়ে বসে রাষ্ট্রও। বিবেকী যুবক-যুবতীরা খবর জানতে গিয়ে, প্রতিবাদ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়ে যান, আবার সাময়িক কিছু ডোল মেলে প্রান্তিক মানুষজনের, কাঠামোগত হিংসা যাদের খুবলে খেয়েছে, খায় রোজই। এর ফলে সাময়িক একটি বিপর্যয় থেকে উদ্ধার পায় দেশ- সমাজ; প্রশাসন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে, আমরাও পাশ ফিরে ঘুম দিই আবার। খবরের কাগজে, টিভির পর্দায় নতুনতর বিনোদন উঠে আসে। আমরা মনেও রাখি না, দেশের ৪০% শিশু আজো অপুষ্টিতে ভোগে (1), প্রতি রাতে ক্ষিদে পেটে নিয়ে ঘুমোতে যান লক্ষ লক্ষ মানুষ। অন্তেবাসী মানুষের এনডেমিক ক্ষুধায় অভ্যস্ত আমরা মন্বন্তরের এপিডেমিক থেকে রক্ষা পেলেই খুশী হয়ে যাই।

    যদিও এমন দিন ছিল না চিরকাল। উদাসীনতা ছিলই, হিংসা ও নিষ্ঠুরতা ছিলই, ক্ষিদে ও ভুখমারি ছিল। ছিল না সংবাদমাধ্যমের এত তৎপরতা, তথ্যপ্রযুক্তির রমরমা।ফলে রাষ্ট্রকে কে আর খোঁচায়, আমাদের ঘুমিয়ে থাকা বিবেককে কে আর জাগায়! মন্বন্তরের বন্যার জল বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে বইতে থাকলেও তাই আমাদের ঘুম ভাঙে নি। যখন জেগেছি, তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে, শবে ভরে গেছে সারা দেশ। কার্যকরী গণতন্ত্রের অভাব, রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতার অভাব, অমর্ত্য সেন বলে গেছেন , মন্বন্তরের রাজসড়ককে প্রশস্ত করে। ভারতবর্ষের, বাংলার ইতিহাস তাই অন্তহীন মন্বন্তরের ইতিহাস। সেই ধারাবাহিক মৃত্যুমিছিলের শেষ মহাজুলুস, মহামন্বন্তর ঘটে গেছে ১৯৪৩ সালে। ২০১৮তে তার ৭৫ বছর পূর্তি। এই লেখায় তাকে স্মরণ করবার চেষ্টা।)

    ---

    "লোকে প্রথমে ভিক্ষা করিতে আরম্ভ করিল, তার পরে কে আর ভিক্ষা দেয়!-উপবাস করিতে আরম্ভ করিল। তার পরে রোগাক্রান্ত হইতে লাগিল। গোরু বেচিল,লাঙ্গল জোয়াল বেচিল, বীজধান খাইয়া ফেলিল, ঘরবাড়ি বেচিল। জোতজমা বেচিল। তার পর মেয়ে বেচিতে আরম্ভ করিল। তার পর ছেলে বেচিতে আরম্ভ করিল। তার পর স্ত্রী বেচিতে আরম্ভ করিল। তার পর মেয়ে,ছেলে,স্ত্রী কে কিনে? খরিদ্দার নাই, সকলেই বেচিতে চায়।খাদ্যাভাবে গাছের পাতা খাইতে লাগিল, ঘাস খাইতে আরম্ভ করিল, আগাছা খাইতে লাগিল।ইতর ও বন্যেরা কুক্কুর, ইন্দুর, বিড়াল খাইতে লাগিল। অনেকে পলাইল, যাহারা পলাইল, তাহারা বিদেশে গিয়া অনাহারে মরিল। যাহারা পলাইল না, তাহারা অখাদ্য খাইয়া, না খাইয়া, রোগে পড়িয়া প্রাণত্যাগ করিতে লাগিল।'

    '৪৩-এর মন্বন্তরের বর্ণনা নয়। '৪৩ তখনো ঘটতে ঢের দেরী। এ আমাদের চেনা গদ্য। ৪০-৫০ এর দশকের নয়। কিছু প্রাচীন। বঙ্কিমচন্দ্র। আনন্দমঠের প্রথম পৃষ্ঠা, উপক্রমণিকা বাদ দিলে। প্রকাশকাল ১৮৮২ খ্রীষ্ঠাব্দ। তার আরো ৬০ বছর বাদে ১৯৪৩-এর মন্বন্তর আসবে। বঙ্কিম স্বভাবতই তা দেখে যেতে পারবেন না। কিন্তু কী আশ্চর্য, ৬০ বছর আগেই প্রায় অলৌকিক ভবিষ্যতদ্রষ্টার প্রিসিশনে তিনি লিখে যাবেন ঐ পংক্তিমালা, যাকে প্রায় অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে নেওয়া যাবে ১৯৪৩-এর মন্বন্তরের বর্ণনার সঙ্গে।

    আসলে তো আশ্চর্য কিছু নয়। ভবিষ্যৎ নয়, তিনি খুঁড়ে দেখছিলেন অতীত। তিনি খুঁজে দেখছিলেন ১১৭৬ বঙ্গাব্দ, ইংরেজী ১৭৭০ সন। ছিয়াত্তরের মহামন্বন্তর। সংবাদপত্রের রিপোর্টাজকে
    তাঁর প্রতিভাবান কলম বদলে দিচ্ছিল সাহিত্যে, যেমনটা বাংলাভাষা আগে আর কখনো দেখে নি-

    "১১৭৬ সালে গ্রীষ্মকালে এক দিন পদচিহ্ন গ্রামে রৌদ্রের উত্তাপ বড় প্রবল। গ্রামখানি গৃহময়, কিন্তু লোক দেখি না।...রাজপথে লোক দেখি না, সরোবরে স্নাতক দেখি না, গৃহদ্বারে মনুষ্য দেখি না, বৃক্ষে পক্ষী দেখি না, গোচারণে গরু দেখি না, কেবল শ্মশানে শৃগাল-কুক্কুর। এক বৃহৎ অট্টালিকা-...তাহার অভ্যন্তরে ঘরের ভিতর মধ্যাহ্নে অন্ধকার,অন্ধকারে নিশীথফুল্লকুসুমযুগলবৎ এক দম্পতি বসিয়া ভাবিতেছে। তাহাদের সম্মুখে মন্বন্তর।"

    ৭৬-এর মন্বন্তর।মারা যাবেন এক কোটি মানুষ। সেসময়কার বাংলার মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ। পরবর্তী ১২৭ বছরে ভারতবর্ষ নামক কলোনিতে ঘটে যাবে কমপক্ষে আরো ২৫টি দুর্ভিক্ষ (2) । আশ্চর্য এই, গ্রামবাংলা, গ্রামভারতের মানুষ এই এতগুলো বছর ধরে রয়ে যাবে সেই একই কালে। যে কালে প্রায়ই সে খেতে পায় না, ক্ষিদের জ্বালায় ছেলে-মেয়ে-বৌ বেচে,লতা-পাতা খায়, পালে পালে ইঁদুরের মত মরে। যে কালে তার সামনে, তার ঘরের দরজা আগলে সবসময় বসে থাকে এক রুদ্রচন্ডাল । মন্বন্তর। পৃথিবী কত পাল্টে যায়, শিল্পবিপ্লব ঘটে একরকম তারই টাকায়, যোগাযোগ-যানবাহন বদলে যায়,কোম্পানীর হাত থেকে রাণীর হাতে চলে যায় দেশ, একটা মহাযুদ্ধ পেরিয়ে দু নম্বর মহাযুদ্ধে ঢুকে পড়ে মানুষ; সে তবু পাল্টায় না। পাল্টায় না তার ক্ষিদে। তার মরবার ধরণ।

    অথচ আশ্চর্য এও, যে সবদিন এমন ছিল না। একেবারেই ছিল না।ক্লিশে শোনালেও সত্যিই বাংলা ছিল এককালে সুজলা সুফলা শস্যশ্যামলা। ১৬৬৫ খ্রীষ্টাব্দে ফরাসী চিকিৎসক ফ্রাসোঁয়া বার্নিয়ের বাংলায় এসে তার সম্পদ আর প্রাচুর্য দেখে হাঁ হয়ে যাবেন। বলবেন, বাংলা হল "the finest and most fruitful country in the world... Bengale abounds with every necessary of life...(t)he rich exuberance of the country ,together with the beauty and amiable disposition of the native women,has given rise to a proverb in common use among the Portuguese,English and Dutch, that the kingdom of Bengale has a hundred gates open for entrance,but not one for departure. "(3)। ভিনদেশী ব্যবসায়ীরা বাঙ্গালী ব্যবসাদারদের সঙ্গে বানিজ্যে নামতে পারে না, কেননা বাংলার অভাব তো কোনো কিছুর নেই। বাংলার চাল যায় সিংহল ও মালদ্বীপে,চিনি যায় আরব ও মেসোপটেমিয়ায়, রেশম ইউরোপে।বাংলার তুলোর গুণমান দেখে পৃথিবীর লোকে অবাক হয়ে যায়, কুড়ি গজী একটি মসলিন কাপড় একটা নস্যির কৌটোর মধ্যে এঁটে যায়। এরকমই একটি মসলিন সমসাময়িক আরেক পর্যটক মীর্জা নাথান ৪০০০ টাকা দিয়ে কিনবেন; পাঠক, মনে রাখুন , তখন এক টাকায় কুড়িটি মুরগী কিনতে পারা যেত (4)।নিতান্ত হেঁটো মানুষেরাও ভাত খেত তিন-চার রকমের তরি-তরকারি আর ঘি-মাখন দিয়ে। মাছ-মাংস ছিল অপর্যাপ্ত।

    বার্নিয়েরের বাংলাভ্রমণের প্রায় একশো বছর বাদে ইংরেজ ভাগ্যাণ্বেষী যুদ্ধবাজ লেফটেন্যান্ট কর্নেল রবার্ট ক্লাইভ এসেও বাংলাদেশ দেখে মুগ্ধ হয়ে যাবেন, এলাকাটিকে তিনি 'ভূস্বর্গ' বলে বর্ণনা করবেন। তার পরের ইতিহাস সকলেরই জানা।১৭৬৫ সালে, বক্সারের যুদ্ধের এক বছর পরে মীর জাফর মারা গেলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাঁর এক ছেলেকে বাংলার মসনদে বসাবে ২,৩০,০০০ পাউন্ড অর্থের বিনিময়ে। এবং বাংলার শাসনভার বকলমে নিজেদের হাতে তুলে নেবে। বাংলা তখনো ভারতের সমৃদ্ধতম প্রদেশ (5) । পলাশীর যুদ্ধের পর ক্লাইভ তাঁর লুটের মাল দুই জাহাজ ভর্তি করে বিলেতে পাঠানোর পরেও।

    এবং পাঁচ বছরের মধ্যেই বাংলা ভারতের দরিদ্রতম প্রদেশে পরিণত হবে। কোম্পানির ডিরেক্টর থেকে শুরু করে সাধারণ ইংরেজ কর্মচারী সকলেই যে যতটা পারে ফুলে-ফেঁপে লাল হবে; ইংল্যান্ডে কোম্পানির শেয়ারের দাম আকাশ -ছোঁয়া হবে, মহামান্য ইংরেজ রাজসরকার বছর বছর ৪,০০,০০০ পাউন্ড মুনাফার ভাগ পাবেন। এবং খাজনা-আদায়কারীর অত্যাচারে চাষীরা প্রায়শঃ সন্তান বিক্রি করতে বাধ্য হবে; কেউ বা দেশ ছেড়ে পালাবে। আসবে ১৭৭০ সন; ১১৭৬ বঙ্গাব্দ।আসবে ভয়াবহ অনাবৃষ্টি। ক্ষেতের ফসল ক্ষেতেই শুকিয়ে যাবে। চালের দাম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় ব্রিটিশ কর্মচারীরা যত পারে চাল কিনে নেবে;খাজনা কমে যাওয়ার আশঙ্কায় জবরদস্তি খাজনা আদায় শুরু করে দেবে। দয়াহীন প্রাবৃটহীন প্রখর গ্রীষ্মে শুকিয়ে যাওয়া ধানগাছের মতই লক্ষ লক্ষ বাঙালী চাষী মরে যেতে থাকবে। বাংলার লক্ষ লক্ষ দম্পতি স্তম্ভিত হয়ে দেখবে-"তাহাদের সম্মুখে মন্বন্তর।"
    -----

    সার উইলস্টন লিওনার্ড স্পেন্সার চার্চিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ছিলেন ব্রিটিশ রয়াল নেভি'র রাজনৈতিক প্রধান (First Lord of Admirality)। তাঁর নেতৃত্বেই ব্রিটিশ নৌবাহিনী জার্মানীর বিরুদ্ধে নৌ-অবরোধ জারি করে , যাতে অবরুদ্ধ দুর্গের ভেতরে আটকে -পড়া মানুষের মত অবরুদ্ধ,অসহায় জার্মানরা ক্ষিদে সইতে না পেরে আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়। এ কাজে তিনি এত সফল হন, যে ফ্রান্সে তাঁর ডাকনাম হয়ে যায় 'ভুখমারা'-The Famisher। চার্চিল ও তাঁর সঙ্গীসাথীরা জানতেন আধুনিক সমর-বিদ্যায় ক্ষিদেকে অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ করবার মাহাত্ম্য।জানতেন যুদ্ধে যোগ দেওয়ার আগে সবচেয়ে জরুরি কাজগুলির মধ্যে একটি হল দেশের খাদ্য-সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

    ১৯৩৬ সালের গ্রীষ্মে ব্রিটেনে র‌্যাশনিংয়ের জন্য একটি সাবকমিটি তৈরী করা হল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখনো তিন বছর দূরে। কিন্তু ঈশানকোণে যুদ্ধের ছায়া ঘনিয়ে উঠতে শুরু করেছে। সে বছরের ডিসেম্বরে হিজ ম্যাজেস্টি'জ গভর্নমেন্টের একটি জরুরী খাদ্যবিভাগ চালু হয়ে গেল। অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য, যথা মাখন, চিনি, বেকন,হ্যাম ও অন্যান্য মাংসের জন্য র‌্যাশনিংয়ের পরিকল্পনা ছকে ফেলা হল। সবচেয়ে জরুরী খাদ্য রুটি ও আলুর জন্য প্রচুর ভর্তুকির ব্যবস্থা হল। একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী কেনাকাটা'র (bulk purchasing) ওপর নিষেধাজ্ঞা জারী হল। কেননা কর্তারা সঠিক ভাবেই বুঝেছিলেন, মজুতদারী-কালোবাজারী রুখতে হলে এছাড়া উপায় নেই। ঠিক করা হল যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই একটি খাদ্য মন্ত্রক কাজ করা শুরু করে দেবে।

    হলও তাই। যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পূর্বকথিত খাদ্যসামগ্রীগুলি র‌্যাশনিংয়ের আওতায় চলে গেল। চা, মার্জারিন, চীজ ও জামাকাপড়ও ক্রমে র‌্যাশনড হল। ক্যানড্‌ মাছ, শুকনো ফল, বিস্কুট, চালের ওপর পয়েন্ট্স-র‌্যাশনিং চালু হল।শ্রমিকদের জন্য প্রচুর ভর্তুকি দিয়ে ক্যান্টিন চালু করা হল। পাঁচ বছরের কমবয়সী বাচ্চাদের জন্য নিখরচায় ফলের রস আর কড লিভার অয়েলের ব্যবস্থা হল। স্কুলের ছেলেমেয়েদের দৈনিক খাবার দেওয়া হতে থাকল।
    ফল হল অদ্ভুত। নিয়মিত বোমাবর্ষণ আর কমে-আসা রসদ সত্ত্বেও যুদ্ধের শেষে দেখা গেল ব্রিটিশ জনগণের গড় স্বাস্থ্যের মান বেড়ে গেছে।(6)

    তবে কিনা কলোনি তো আর এম্পায়ার নয়। অতএব ভারতের জন্য আলাদা বন্দোবস্ত। কিম্বা বন্দোবস্তের অভাব। ১৭৭০ থেকে ক্রমাণ্বয়ে চলে আসা মন্বন্তর ঠেকাতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বা মহারাণীর সরকার কেউই বিশেষ উদগ্রীব ছিলেন একথা বললে তাঁদের নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হবে। কিন্তু মন্বন্তর চলতে থাকলে কালা আদমী মরার সঙ্গে সঙ্গে আরো একটি আনুষঙ্গিক ক্ষতি হয়- তা হল রাজস্ব শুকিয়ে আসা। কাজেই নিতান্ত অনিচ্ছাসত্ত্বেও কিছু একটা করতে হয়। ১৮৮০ সালে সরকার নড়ে বসেন; বাংলায় একটি ফ্যামিন কমিশন গঠিত হয়। এই কমিশন ঠিক কী কাজ করেছিল জানা নেই, কেননা তার ১৬ বছর পরেই বাংলা এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়ে-১৭৭০ সালের পরে সবচেয়ে ভয়ানক দুর্ভিক্ষ। ১৮৯৬-৯৭য়ের সেই দুর্ভিক্ষের সময় 'বেঙ্গল ফ্যামিন কোড' নামে একটি পুস্তিকা চালু হয়। সেটি শেষ আপডেট করা হয়েছিল ১৯১৩ সালে। তারপর দীর্ঘ সময় সেই কোডের কী হাল হল, সে নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা ছিল না।তার আবার খোঁজ পড়ে '৪৩-এর মন্বন্তরের সময়। এবং মজার কথা-দেখা যায়, সেটি তখন আউট অফ প্রিন্ট। এবং তার কোনো কপিও কারো কাছে নেই। ৪৪ সালে ফ্যামিন কমিশনের কাছে সাক্ষ্য দিতে এসে বিধায়ক কে সি নিয়োগী বলেন, তিনি যতটুকু জানেন,১৯৪১ সালে ছাপা একটি ফ্যামিন ম্যানুয়াল দিয়েই কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছিল; সেই ম্যানুয়ালটিও সহজলভ্য ছিল না। নিয়োগীমশায় কোনোমতে তার একটি কপি হস্তগত করেছিলেন। এহেন ম্যানুয়ালটির সূচনাতেই অবশ্য বলে দেওয়া ছিল-এটি কোনোমতেই বেঙ্গল ফ্যামিন কোডের বিকল্প নয়, এখানে ঐ কোডের মূল নিদের্শাবলির হদিস দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে মাত্র ।
    -----

    যুদ্ধ নিয়ে অবশ্য বাংলার গ্রামগুলিতে কারো তেমন মাথাব্যথা ছিল না। কেননা যুদ্ধ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই ১৯৩০-এর মহামন্দার জেরে বাঙালী চাষীর অবস্থা সঙ্গীন হয়ে উঠেছিল; অন্য কিছু ভাবার তার আর সময় ছিল না, সুযোগও না। ১৯৩৪ সালে পাটের দর একধাক্কায় নেমে গেল আগের দামের ৪০ শতাংশয়। ধানের দামও তথৈবচ। ৫ বছর আগের দরের আদ্ধেক দরে চাষীকে ধান বেচতে হল। এদিকে জীবনযাত্রার খরচ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার তুলনায় দেড় গুণ বেড়ে গেছে।অজস্র চাষীকে মহাজনের কাছ থেকে বিপুল ধার নিয়ে চাষ করতে হল। কিন্তু চাষ করে লাভের দেখা নেই, বরং লোকসান। অগত্যা আরো ধার, আরো লোকসান। এই বিষচক্র কেটে বেরোতে গেলে জমি-জমা, গরু-ছাগল, ঘটিবাটি অবধি বিক্রি-বন্ধক দেয়া ছাড়া উপায় নেই। কাতারে কাতারে চাষী ভূমিহীন কৃষিশ্রমিকে পরিণত হল। অবস্থা এমন যে, মহাজনেও আর ধার দেয় না।ত্রিশের দশকের শেষদিক থেকেই বাংলার অনেক চাষীর ঘরে অনাহার নিত্যসঙ্গী হয়ে গেল (7) । যদিও এমন কি '৩৩ সালে করা একটি সার্ভেতেই দেখা যাচ্ছিল ভারতের সব প্রদেশের মধ্যে বাংলাতেই অপুষ্টির হার সবচেয়ে বেশী- বাঙ্গালীদের মধ্যে ৪৭% মানুষ অপুষ্টিতে ভোগেন আর ৩১% ভয়ঙ্কর অপুষ্টির শিকার। (8)

    '৩৯ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার এক বছরের মধ্যে চালের দাম লাফ দিয়ে ৩৩% বেড়ে গেল। '৪১ সালে বাড়লো আরো ৩৬%। পাল্লা দিয়ে বাড়লো চিনি,ডাল, তেল, কেরোসিনের দাম। তাঁতের দাম এত বেড়ে গেল যে অসংখ্য তাঁতী ব্যবসা বন্ধ করে দিল। নোয়াখালি-টিপেরায় ফ্যামিন কোড অনুযায়ী Test Work ( ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য শ্রম-শিবির) চালু হল। বিশাল সংখ্যক মানুষ এসে ক্যাম্পে যোগ দিলেন। কোডের হিসেবমত এক্ষেত্রে সরকারীভাবে 'দুর্ভিক্ষ' ঘোষণা করার কথা। কিন্তু তা করা হল না। উত্তরবঙ্গে গরীব চাষী ও ভূমিহীন কৃষিশ্রমিকরা জোতদারদের ধানের গোলা লুঠ করতে শুরু করল।এলাকায় এলাকায় রিলিফের দাবীতে ভুখমিছিল শুরু হল।

    শহর কলকাতার অবস্থাও তখন খুব একটা সুবিধার নয়। মহামন্দার হাত থেকে কারোই রেহাই নেই। বাড়তি বেতন আর 'যুদ্ধ বোনাস'এর দাবীতে মহানগর উত্তাল। হুকুমচাঁদ জুট মিলে ১১,০০০ শ্রমিক ধর্মঘট করলেন। মিলমালিকদের অ্যাসোসিয়েশন সবার ১০% বেতন বাড়াতে বাধ্য হলেন(যুদ্ধের সময় বাংলার পাটজাত দ্রব্যের চাহিদা তখন তুঙ্গে)। ১৯৪০-এর মার্চে কলকাতা কর্পোরেশনের ২০০০০ শ্রমিক(ধাঙ্গড়-ঝাড়ুদাররা) ধর্মঘটে গেলেন। সেপ্টেম্বরে ট্রাম কোম্পানি আর পোর্ট ট্রাস্টের কর্মচারীরা বাড়তি যুদ্ধ-বোনাসের দাবী জানালেন। '৪১-এর ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত সরকার Essential Service Maintenance Ordinance আনলেন। এই অর্ডিন্যান্সের আওতায় যেসব শিল্প এল, তাদের 'ওয়ার ইন্ডাস্ট্রি' বলে ঘোষণা করা হল। এইসব ইন্ডাস্ট্রির শ্রমিকরা বিনা কারণে ছুটি নিলে কিম্বা চাকরি ছেড়ে দিলে তাঁদের জেল-জরিমানার বিধান দেওয়া হল অর্ডিন্যান্সে। বিনিময়ে অবশ্য সরকার তাঁদের 'অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত নাগরিক' (Priority Citizen) বলে ঘোষণা করলেন। আগামী কয়েক বছরে এই তকমা হবে দুর্ভিক্ষের মধ্যে তাঁদের বেঁচে-থাকার পরোয়ানা। সে কথা অবশ্য তখনো কেউ তাঁরা কল্পনাতেও আনতে পারবেন না।

    Notes
    1.https://www.livemint.com/Politics/OIdNvn30nqdrGQC6pARu3J/India-has-largest-number-of-malnourished-children-in-the-wor.html
    2.Janam Mukherjee, Hungry Bengal,Oxford University Press, 2015, p.28
    3.Madhusree Mukherjee, Churchill's Secret War, Penguin Random House India, 2010,prologue, p.xix (Bernier, Travels in the Mogul Empire,pp.438-39)
    4.Ibid, p. xviii
    5.Ibid, p.xxii (Dutt, The Economic History of India, Vol.1, p.21)
    6.Janam Mukherjee, p.26, (Zweiniger-Bargielowska quoting Board of Trade, Report, 1937,p.14)
    7.ibid, p.39
    8.Madhushree Mukherjee, p. 55.
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৮ নভেম্বর ২০১৮ | ২৩৭২ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ঢেকুর  - Tanima Hazra
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • aranya | ***:*** | ১৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৯:৫৯63072
  • পড়ছি
  • Du | ***:*** | ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:২৫63073
  • পড়ছি।
  • b | ***:*** | ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০৮63074
  • বঙ্কিমের ""লোকে প্রথমে ভিক্ষা করিতে আরম্ভ করিল...,

    এটা অনেকটাই হান্টারের অ্যানালস অফ রুরল বেঙ্গল থেকে অনুবাদ।
    "All through the stifling summer of 1770 the
    people went on dying. The husbandmen sold their
    cattle ; they sold their implements of agriculture ;
    they devoured their seed-grain ; they sold their
    sons and daughters, till at length no buyer of
    children could be found ; they eat the leaves of
    trees and the grass of the field; and in June 1770
    the Resident at the Durbar affirmed that the living-
    were feeding on the dead.
  • Nahar Trina | ***:*** | ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৩৫63075
  • পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
  • dd | ***:*** | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৫৬63076
  • এটা খুব ভালো লেখা হচ্ছে। এটা আরো চলবে তো ?
  • dd | ***:*** | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:০৫63077
  • পই পই করে বলেছি, Yasmim Khanর The Raj at war : A people's history of India's second waorld war বইটা পড়তে।
    তো আমার কথা শুনবে কি?
  • | ***:*** | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:২৭63078
  • ভালো লেগেছে।
    জনম মুখার্জির লেখাও ভালো লাগে। খুব লজিকাল লাগে। দাঙ্গা র ইসুতে যেমন এমন অ্যানালিসিস আছে যেগুলো অন্যত্র দেখিনি।

    কিন্তু আমার কলোনিয়াল পিরিয়ড এর ইকোনোমিক হিস্টরিকাল ডেটা অ্যানালিসিস নিয়ে দুটো কথা মনে হয়েছে।

    - সেটার কতটা ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ইভেন্ট হিসেবে স্বীকৃত তার সঙ্গে কতটা কোন কোন ক্ষেত্রে জোড়া যায় আর যায় না। এবং সেটার টাইম ভ্যারিয়েশন কতটা মেজারেবল কিনা। ধর, ১৯২০ র আগে যে ভাবে জোড়া যেত, ১৯৪০ এর পরে তার চেয়ে বেশি জোড়া যায় এটা যেমন বলা যায়, কিন্তু এর কোনো সেকটোরাল ডিফারেন্স আছে কিনা।
    কলোনীর অত্যাচার আর শোষন জোড়া না গেলেও কমে না, কিন্তু আমার এই অ্যানালিটিকাল লাইনটায় একটু কিন্তু আছে, যে অ্যানালিস্ট কোন কারণে মনে করছেন না তো, যে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ইভেন্ট এর সঙ্গে জুড়ে আলোচনা না করলে, সমস্যাটা যথেষ্ট জোরালো ভাবে বলা হহ্ছে না? আরেকটা হল, প্রোডাকশন ডেটা ইত্যাদি কত দূর অব্দি রিলায়েবল। মানে ৩০ এর দশকে জতটা রিলায়েবল, ১৯২০ র আগে কি ততটা রিলায়েবল বা যাকে বলে সারা দেশের ক্রাইসিস বোঝার জন্য যথেষ্ট কম্প্লিট?
    আমি আন্দাজ করছি ১৯২৮ এ ট্রেড ইউনিয়ন অ্যাক্ট এর স্বীকৃতির অনেক আগে কতটা কম্প্লিট সার্ভে হয়েছে, কারণ ১৯২৬ এ ইন্গ্ল্যান্ড এ জেনেরাল স্ট্রাইক সংক্রান্ত বড় বিতর্ক হচ্ছে। তার সঙ্গে এই সার্ভে গুলো লিংক্ড কিনা। হয়তো জনম এর বই য়েই সব এভিডেন্স আছে, কিন্তু আমার মনে এই প্রশ্ন গুলো রয়ে গেছে। তোর অন টপ অফ হেড কিসু মনে পড়ছে? মানে অ্যানালিটিকাল টেকনিক টা কতটা ডাইরেক্ট এভিডেন্সিং করা গেছে, আর যার ভিত্তিতে করা হচ্ছে, সেটা কতটা কম্প্লিট।
  • | ***:*** | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৭63079
  • কিন্তু ওভারল আমার জনম মুখার্জির লেখা হেবি লাগে। খ
  • | ***:*** | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:১৭63080
  • খ। না আমার ই ভুল, ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ইভেন্ট টাই আপ করাই উচিত, বিশেষত কলোনিয়াল পিরিয়ডে, বা যত টা জানলে বলা যায় , টাই আপ করা কঠিন ততটা আমি জানি না।
    আসোলে ঘটনাটা হল, ধর, আমেরিকান টোবাকো ট্রেড, বা স্লেভারি, এর শিপিং ডেটা যে ভাবে আছে বা বোস্টন টি পার্টির ডেটা যে ভাবে আছে, সেগুলো কে ধরে অ্যানালিসিস অনেক ধরে হচ্চে, পোলিটিকাল অ্যানালিসিস এর ক্ষেত্রে, এটা হতে পারে, ইকোনোমিক্স এর ক্ষেত্রে, ইকোনোমিস্ট দের পারসপেক্টিভ থেকে আমার অ্যাওয়ারনেস রাডার ফিকে ভাবে হলেও স্বাধীনতা পরবর্তী ডেটা যে ভাবে আছে বা ধর ইকোনোমিক হিস্টরি র খেত্রে মুঘল রেভিনিউ ডেটা যে ভাবে আছে, সেটা হয়তো কলোনিয়াল ইকোনোমিক ডেটা সেভাবে নেই, বা বলা ভালো সুভো বসু দের কাজ এর কারণে বা ট্রেড ইউনিয়ন হিস্টরি তে রণদিভে দের নানা লেখার কারণে লেবার ডেটা নিয়ে যে ভাবে ফ্যামিলিয়ারিটি আছে, অন্য ইকোনোমিক ডেটা নিয়ে সেভাবে নেই। এবং এই পারসেপশনের ল্যান্ড স্কেপ টাই জনম বদলাতে চাইছেন। আই স্ট্যান্ড কারেকটেড, আমি আত্ম বিস্মৃত হয়েছিলাম।
  • I | ***:*** | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:০৮63081
  • এই data -র অভাব নিয়ে জনম তেমন মুখ খুলেছেন কোথাও বলে তো মনে পড়ছে না। যদিও তিনি বেঙ্গল ফ্যামিনকে economic perspective থেকে দেখা হয় নি সেরকম, বলে দুঃখ করছেন, যেখানে বলছেন-When I began this work, it surprised me that there was such a lack of critical work on the Bengal famine to be found.Lurking in this deficit, I detect a certain bias in historiography. How many books of history have been written on the political economy of the Great Depression in the US, or on hyperinflation as a prelude to Nazism in interwar Germany?Why is it that economy is seen as so central to the socio-political dynamics of North America or Europe, whereas it is most often "culture" that is turned to in the analysis of non-western societies?

    উৎসা পট্টনায়ক একটা ইন্টারেস্টিং কাজ করেছেন দেখলাম এই সেদিন।হিসেব করেছেন , ব্রিটিশ রাজ ভারত থেকে দুশো বছরে প্রায় ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলার সম্পদ সাইফন করেছে। তুমি কি দেখেছো এই লিং টা-https://www.livemint.com/Companies/HNZA71LNVNNVXQ1eaIKu6M/British-Raj-siphoned-out-45-trillion-from-India-Utsa-Patna.html?fbclid=IwAR2fyy37QGuJRc6aE-gHGFRVH5ikYBhzA8LYx5c5_o4ZdPr5VAA4UMeLp_w?
    এই হিসেবটাই বা কী করে করা সম্ভব হল, আমার বেশ কৌতুহল জাগে। কিন্তু জেগেও লাভ নেই, কেননা গোটা ব্যাপারটাই আমার কাছে শিশি-বোতল। আমারে ইকোনমিক্স নিয়া তুমি আর খোঁচায়ো না, উ সবে হামি ক-অক্ষর গোমাংস আছি।সইত্য বলতে, আমি হিউম্যান ট্রাজেডির দিক থেকে ইতিহাসের কাছে আসি, সে তুমিও জানো, এবং এসে এই গোটা ঝামেলাঝঞ্ঝাটে জড়ায়া পড়ত্যাসি। এর পর ঋত্বিকের মত বলতে হবে, ঋত্বিক যেমন ইন্টারভিউয়ের মাঝখানে একবার বলেছিল -বাবারা, আমি আর কথা বলবো না, আমি মদ খাই, আমায় মদ খেতে দাও (কিঞ্চিৎ কিম্বা অনেকখানি প্যারাফ্রেজিত)।
  • I | ***:*** | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:৪৬63082
  • ডিডিদা,
    নেন। The Raj at War নামায়ে নেলাম। কদিন আগে নরিন্দর সারিলা নামায়েছি। ওঃ, ডিসি বইচুরির কী মোক্ষম উপায়টাই না বাতলায়ে দেসেন !

    আপনে বরং ইয়াসমিন খানের The Great Partition পইড়া ফ্যালান।
  • I | ***:*** | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:১৯63084
  • b-ok.cc

    এটায় ট্রাই করুন তো !@avi
  • avi | ***:*** | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ১০:১২63083
  • dcর পন্থা একবার শেয়ার করা হোক, কেননা লিবজেন নীরব থাকছে।
  • dd | ***:*** | ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৯63087
  • দুর। পরের কিস্তি কখনো আগেই বেরিয়ে যায়? তৃতীয় পর্ব মানে পরের কিস্তি কবে বেরুবে, শুনি?
  • প্রতিভা | ***:*** | ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৬:২৯63085
  • অসাধারণ লেখা। অপেক্ষা পরের কিস্তির জন্য।
  • I | ***:*** | ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৮:১১63086
  • প্রতিভাদি, পরের কিস্তি তো বেরিয়ে গেছে।লেখার ঠিক নিচে লিংক দেওয়া আছে।
  • I | ***:*** | ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:৫৫63088
  • নিন। একসঙ্গে তিন কিস্তি জুড়ে দিয়েছি। আবার আলাদা করেও তিন নম্বর কিস্তি বের করেছি। বাইটের অপচয়ের হদ্দমুদ্দ। কেয়া করেগা, গরীব আদমী বাবু। যার যেখান থেকে খুশী পড়ুন। বাফে আছে, পাত পেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থাও রইল।
  • সিকি | ***:*** | ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ০৯:৩৪63089
  • ধ্যার, এতগুলো দরকার ছিল না। প্রথমটার নিচেই অ্যাপেন্ড করে দিলে পারতে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন