এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • সমান নাগরিক সংহিতাঃ বিতর্ক হোক

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ | ৭১৪২ বার পঠিত
  • সমান নাগরিক সংহিতাঃ বিতর্ক হোক

    নান্দীমুখ

    গত ৯ ডিসেম্বর, ২০২২ বিজেপি সাংসদ কিরোড়ী লাল মীণা রাজ্যসভায় একটি প্রাইভেট মেম্বার্স বিলে পেশ করেছেন যার সার কথা হল দেশে ইউনিফর্ম সিভিল কোড বা সমান আচার সংহিতা জারি করার উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করা হোক।

    ব্যস, যাকে বলে একেবারে হল্লা বোল শুরু হয়ে গেল। সমস্ত বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের এক রায় — বিজেপি গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে বিজয়ের পর একজন সাংসদকে দিয়ে একটি ব্যক্তিগত বিল পেশ করে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে জল মাপছে।

    কারণ, তার আগে একবছর ধরে কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা, ত্রিপুরার মত ৯টি বিধানসভা নির্বাচন এবং একগাদা পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে।

    বিজেপির নেতারা মুখ ভার করে বলছেন — এসব কী? সংবিধান সভা দেশকে যে কথা দিয়েছিলেন – যা এতদিন কেউ রাখে নি — আমরা তো সেটাকেই আইনের চেহারা দেওয়ার চেষ্টা করছি মাত্র।

    আরএসএসের লোকেরা ব্যক্তিগত স্তরে বলছেন — আমরা তো কবে থেকে বলছি যে এক জাতি, এক রাষ্ট্রভাষা, এক আচার সংহিতা দেশ এবং রাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করে, সুদৃঢ় করে।

    এই শব্দকল্পদ্রুমের পরিবেশে বর্তমান প্রবন্ধে নিচের বিন্দুগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করছি। মোদ্দা কথা -- ইউনিফর্ম সিভিল কোড ব্যাপারটা কী - খায় না মাথায় দেয়? সংবিধান সভা এ নিয়ে ৩ নভেম্বর ১৯৪৮ এবং ১৯৪৯ সালে কী বলেছিল?

    এবং, এটা যদি সবার জন্যে উইন-উইন গেম হয় তাহলে আপত্তির কারণ কী? এ নিয়ে কতদূর চেষ্টা করা হয়েছে এবং কোথায় আটকাচ্ছে?

    একটা ডিসক্লেমার দিয়ে রাখি — এই আলোচনার জন্যে আমি ঠিক যোগ্য ব্যক্তি নই। আমি খালি বিতর্কের মুখ খুলে দিচ্ছি, সুস্থ তথ্যসমৃদ্ধ বিতর্ক চলুক।

    আমার একটাই যোগ্যতা — যখন ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে ২২তম ল’ কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত জাস্টিস বি এস চোপরা ইউনিফর্ম সিভিল কোডের ব্যাপারে আমজনতার মতামত জানতে চেয়ে মিডিয়ায় এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ১৬ পয়েন্ট প্রশ্নাবলী জারি করেছিলেন এবং নভেম্বর মাসের মধ্যেই প্রায় ১০,০০০ উত্তর পেয়েছিলেন তার মধ্যে একটা সেট আমারও ছিল। স্বল্পবুদ্ধিতে যা মনে হয়েছিল তাই উত্তরের খোপে ভরে দিয়েছিলাম।

    সিভিল ও ক্রিমিনাল কোড

    যে কোন দেশের আইনকানুনকে মোটামুটি দুটো ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।

    এক, ক্রিমিনাল কোড – যা রাষ্ট্র এবং সমাজের বিরুদ্ধে অপরাধ; এর আওতায় আসবে চুরি-ডাকাতি, খুনজখম, শারীরিক আক্রমণ, ধর্ষণ ইত্যাদি।

    দুই, সিভিল কোড – যার ভিত্তি হল এক দেশ বা সমাজে বাস করার আচরণ বিধির সামাজিক কন্ট্র্যাক্ট। এতে রয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠান পদ্ধতি, বিচ্ছেদ, এবং সম্পত্তির কেনাবেচা, ব্যবসার নিয়ম, উত্তরাধিকার এবং দত্তক নেয়ার নিয়ম কানুন ইত্যদি।

    ইউনিফর্ম সিভিল কোড বা সমান নাগরিক আচার সংহিতাঃ

    এইখানে এসে কি একটু গুলিয়ে যাচ্ছে?

    এক, ক্রিমিনাল কোড তো জাতিধর্ম নির্বিশেষে দেশের সমস্ত নাগরিকের জন্যে সমান। খুন-চুরি-ডাকাতির অপরাধে শাস্তি দেবার সময় আইন বা রাষ্ট্র নাগরিকের জাতধর্ম দেখে না, একই আইনে একই শাস্তি দেয়। তাহলে সিভিল কোড এক হবে না কেন?

    -- আরে সিভিল কোডের অনেকগুলো তো মূলতঃ সবার জন্যেই সমান!

    ব্যবসা করতে কন্ট্র্যাক্টের নিয়ম ও আইন, সেলস্‌ অফ গুডস অ্যাক্টের আইন, জি এস টি, ইনকাম ট্যাক্স, রেজিস্ট্রির নিয়ম, জমি বাড়ি সম্পত্তি কেনাবেচার আইন, মর্টগেজ বা সম্পত্তি বন্ধক রাখার আইন – সবই তো হিন্দু-বৌদ্ধ-শিখ-জৈন-পারসিক-মুসলমান-খ্রিস্টানী সবার জন্যে এক। তাহলে?

    -- আছে, তফাৎ আছে। ভারতবর্ষে সিভিল কোডের অন্তর্গত কিছু বিষয় বিভিন্ন ধার্মিক এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্যে আলাদা। সেগুলো হল মুখ্যতঃ তিনটি -- বিয়ের অনুষ্ঠান পদ্ধতি এবং বিচ্ছেদ; সম্পত্তির উত্তরাধিকার; এবং দত্তক নেয়ার নিয়ম কানুন।

    সমান নাগরিক আচার সংহিতার সমর্থকেরা চাইছেন - ওই তিনটে ব্যাপারেও বিভিন্ন ধর্ম সম্প্রদায়ের লোকজনের জন্যে আলাদা আলাদা নিয়ম বন্ধ হোক। সব ধুয়ে মুছে এক হয়ে যাক, ঠিক স্কুল ইউনিফর্মের মত।

    ধুয়ো উঠছেঃ এক হউক, এক হউক, এক হউক, হে ভগবান!

    আমরা সংক্ষেপে আলোচনার সুবিধের জন্যে দেশের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মভিত্তিক সম্প্রদায়ের (হিন্দু ও মুসলিম) কোড বিল নিয়ে আলোচনা করব।

    হিন্দু কোড বিলের অন্তর্গত রয়েছে তিনটে আইন — হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৯৫৫; হিন্দু সাকসেসন অ্যাক্ট; হিন্দু মাইনরিটি অ্যান্ড গার্ডিয়ানশিপ অ্যাক্ট এবং হিন্দু অ্যাডপশন (দত্তক নেয়া) এবং মেইন্টেন্যান্স (খোরপোষ) অ্যাক্ট।

    এইসব তৈরি হয়েছে ইংরেজ আমলে কিছু টুলো পণ্ডিত ডেকে বিভিন্ন স্মৃতি বা সংহিতা (মনু, যাজ্ঞবল্ক্য, পরাশর ইত্যাদি) ঘেঁটে। এ নিয়ে বিদ্যাসাগর প্রসঙ্গে গুরুর পাতায় গত বছর আমাদের এলেবেলে (দেবোত্তম চক্রবর্তী) চমৎকার আলোচনা করেছিলেন।

    তেমনই ভারতের মুসলিমদের রয়েছে মুসলিম পার্সোনাল ল (শরিয়ত) অ্যাক্ট ১৯৩৭। এতে বিয়ে, তালাক, খোরপোষ, দান-দক্ষিণা সব কিছুর ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে মুসলিম জীবনযাপন পদ্ধতির নির্দেশের ব্যাপারে চারটি উৎসকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলঃ কুরআন, সুন্না বা অহল-এ-হাদিস (হজরত মহম্মদের নিজের আচরণে যা সিদ্ধ), কিয়াস (ব্যাখ্যা টীকা ভাষ্য ইত্যাদি) এবং ইজমা (বিদ্বানদের সর্বসম্মত ব্যাখ্যা)।  

    এখন ইউনিফর্ম সিভিল কোড মানে — ওইসব বিভিন্ন আইন বাতিল করে সবার জন্য কোন ধার্মিক রেফারেন্স ছাড়া একটাই আইন চালু করা।

    আচ্ছা, তাতে অসুবিধা কী? বেশ আধুনিক এবং প্রগতিশীল শোনাচ্ছে।

    ধর্মনিরপেক্ষ আধুনিক ভারতে এরকমটা হওয়ারই কথা তো! অসুবিধেটা কোথায়?

    সংবিধান সভার আর্টিকল ৪৪ এ নেহরুজি এমনই কিছু বলেছিলেন কিনা?

    -- বলেছিলেন বটে, কিন্তু অসুবিধেটাও তখনই স্পষ্ট হয়েছিল। কন্সটিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলি বা সংবিধান প্রণয়ন সভার ২৩ নভেম্বর, ১৯৪৮ এর বিতর্কটি দেখলেই বোঝা যাবে।

    বোম্বাই থেকে কংগ্রেসের নির্বাচিত প্রতিনিধি স্বাধীন দেশের জন্যে ধর্মের অনুশাসনের উর্দ্ধে উঠে একটি সমান নাগরিকতার পক্ষে যুক্তি দেন। বিরুদ্ধে মাদ্রাজ এবং বিহারের প্রতিনিধিরা বলেন – এতে ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং বিবিধতা নষ্ট হবে। ঐক্য এবং একরূপতা এক কথা নয়।

    ওঁরা উদাহরণ দিয়ে বললেন — বিশাল দেশ ভারতবর্ষে ভৌগলিক এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য বিখ্যাত। পূবে আসামে এত বৃষ্টি হয়, কিন্তু পশ্চিমে রাজস্থানে খটখটে মরুভূমি। উত্তরে বরফ পড়ে, হাড়কঁপানো শীত। কিন্তু দক্ষিণে শীত সেভাবে টের পাওয়া যায় না।

    শেষে একবছর পরে ১৪ নভেম্বর, ১৯৪৯ সালে সংবিধান সভার এই বিষয়ে বিতর্ক সমাপ্ত করে নেহরু বললেন — তাড়াহুড়ো না করে এই প্রগতি জনতার উপর চাপিয়ে না দিয়ে ধীরে ধীরে জনতার মধ্যে চেতনার বিকাশ ঘটিয়ে ওদের সম্মতি নিয়ে ট্র্যাডিশনে পরিবর্তন আনতে হবে। এবং, ওঁর পরামর্শ মত ইউনিফর্ম সিভিল কোডের ধারণাটিকে সংবিধানের ডায়রেক্টিভ প্রিন্সিপলের (মার্গদর্শী সিদ্ধান্ত) অধীনে আর্টিকল ৪৪ এ নিচের শব্দে বাঁধা হলঃ

    Article 44. Uniform civil code for the citizens.
    The State shall endeavour to secure for the citizens a uniform civil code throughout the territory of India.

    ঠিক আছে, কিন্তু করে ফেলতে কিসের অসুবিধে? সত্তর বছর হয়ে গেল যে!

    -- দেখুন, হিন্দুদের স্মৃতিশাস্ত্রে বিহিত আট রকমের বিয়ের মধ্যে শুধু ‘প্রাজাপত্য’ই আজকাল চলছে। এতে বাবা বা তাঁর অবর্তমানে পরিবারের কোন গুরুজন ‘কন্যাদান’ করে। আর বিয়ের কার্ডে প্রজাপতির ছবি এঁকে ‘প্রজাপতয়ে নমঃ’ লেখা থাকে। প্রজাপতির নির্বন্ধে ডিভোর্সের কথাই ওঠে না, জন্ম-জন্মান্তরের বন্ধনে হাঁসফাস করলেও।

    অবশ্য আজকাল যেটাকে লাভ ম্যারেজ বলা হয় সেটা মনু’র গান্ধর্ব বিবাহের (বর কনে নিজেদের সম্মতি বা পছন্দের হিসেবে) আধুনিক রূপ মাত্র।

    তবে ইদানীং হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্টে কিছু সংশোধন হয়েছে। তাই সময়ের দাবিতে কিছু শর্ত সাপেক্ষে ডিভোর্সের সুযোগ রয়েছে। এই বিয়ের অনুষ্ঠানে সপ্তপদী গমন এবং যজ্ঞ একটি আবশ্যিক অনুষ্ঠান। আর রয়েছে (হিন্দি বলয়ে) সাতটি শপথ (সাতোঁ বচন) নেওয়ার কথা, যেমন পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকা, ভাত-কাপড়ের দায়িত্ব নেওয়া, ইত্যাদি।

    কিন্তু মুসলিম বিয়ে হল পিওর কন্ট্র্যাক্ট। বিয়ে মসজিদে না হয়ে কারও বাড়িতে (কন্যার ঘরে) হয়। পুরোহিতের স্থানে কাজি বসেন বটে, তবে পাঁচ জন সাক্ষী রেখে কন্যাকে বসিয়ে তিনবার জিজ্ঞেস করা হয় — আপনি কি অমুককে কবুলনামায় লেখা শর্ত অনুযায়ী জীবনসঙ্গী হিসেবে স্বীকার করতে রাজি? 

    কন্যা তিনবার ‘কবুল’ বললে একই কন্ট্র্যাক্টের পাঁচ কপিতে ওরা দুজন, কাজি এবং সাক্ষীদের সইসাবুদ হয়ে গেলে বিয়ে সম্পন্ন হয়। ওদের দুজন এবং সাক্ষীদের কাছেও একটি করে ওই নিকাহ্‌নামা বা চুক্তির কপি থাকে। তাতে কন্যার সিকিউরিটি হিসেবে পূর্বনির্ধারিত ‘দেনমোহর’ কত টাকা তার উল্লেখ থাকে।

    আমি এক মুসলিম কলিগের ছোট ভাইয়ের বিয়েতে সাক্ষী একজন কম পড়ে যাওয়ায় এন্ট্রি পেয়েছিলাম এবং সই করার পরে এক কপি (বেশ রঙীন কাগজে) পেয়েছিলাম।

    চুক্তি বলেই মুসলিম ম্যারেজ অ্যাক্টে তিন রকমের তালাকের প্রথা রয়েছে — আহসান, হাসান, এবং বিদ্যৎ। 

    ভাববার সময় না দিয়ে যখন মর্জি তখন তিনবার ‘তালাক’ বলে স্ত্রীকে ঘরের বাইরে করে দিলাম - এটাই ওই বিদ্যৎ তালাক। এটা প্রথাসিদ্ধ কিন্তু শরিয়ত অনুমোদিত নয়, তাই অধিকাংশ মুসলিম দেশে এই রকম তালাক উঠে গেছে।

    ভারতেও সুপ্রীম কোর্টের রায় মেনে আইন করে শুধু ওই তালাক-এ-বিদ্যৎ নিষিদ্ধ হয়েছে, বাকি নিয়ম যথাবৎ আছে।

    স্বামী তালাক দিলে ওই দেনমোহর বিবিকে ফেরত দিতে হবে। বাস্তবে কী হয় সেটা অন্য প্রসংগ।

    একটা কথা; ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী মুসলিম মেয়ে কোন অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে করতে পারে না। তবে মুসলিম ছেলে একেশ্বরবাদী ধর্মের (ক্রিশ্চান ও ইহুদী) মেয়েকে বিয়ে করতে পারে, কিন্তু কোন বহুদেববাদী ধর্মের ( হিন্দু) মেয়েকে নয় (কুর্‌আন, সুরা ৫.৫)।

    ক্রীশ্চান ম্যারেজ অ্যান্ড ডিভোর্স অ্যাক্টের (১৮৭২) অনুষ্ঠান চার্চে হতেই হবে। কিন্তু ইসলাম ও ক্রিশ্চানিটি দুটোই আব্রাহামিক ধর্ম, তাই অনুষ্ঠানে কিছুটা মিল রয়েছে। পাদ্রী সবার সামনে ব্রাইডকে তিনবার জিজ্ঞেস করে সম্মতি পেলে পরমপিতা পরমেশ্বরের আশীর্বাদে বা দৈব ইচ্ছায় ওই জোড়াকে তখন বিধিসম্মত স্বামী-স্ত্রী বলে ঘোষণা করেন। তারপর বলেন – এখন তোমরা একে অপরকে চুমো খেতে পার।

    তখন ওরা সবার সামনে একে অপরকে চুমো খায়, ব্যস্‌।

    হিন্দুদে্র শুধু মালাবদল হয়, সবার সামনে চুমো-টুমো খাওয়ার সুযোগ নেই।

    এবার বলুন, এই তিনরকমের বিয়ের আইন তুলে দিয়ে কী করতে চান? কেমন কোড আনতে চান?

    চুমো খাওয়া তুলে দেবেন? নাকি সবাইকেই ভবিষ্যতে আইন মেনে চুমো খেতে হবে?

    সাক্ষীসাবুদ-দেনমোহর করে রীতিমত চুক্তিপত্রে সই করে বিয়ে দেওয়া তুলে দেবেন? নাকি সবাইকেই ওইরকম করতে হবে?

    সপ্তপদী, যজ্ঞ, অরুন্ধতী নক্ষত্র দেখানো তুলে দেবেন? নাকি সবাইকেই তাই করতে হবে?

    আরও আছে। হিন্দু তেলুগু সম্প্রদায়ে মামাতো ভাইবোনের মধ্যে বিয়ে সবচেয়ে উত্তম সম্বন্ধ ধরা হয়। আমার এক কলিগ তিন ভাই। ওরা ওদের আপন মামার মেয়েদের বিয়ে করেছে।

    এটা কি বাদ যাবে? নাকি সবাইকে মামাতো পিসতুতো ভাইবোনের মধ্যে বিয়ে করতে হবে?

    মুসলমানদের মধ্যেও তুতো ভাইবোনের মধ্যে বিয়ে করার চল আছে। ওদের হয়তো অসুবিধে হবে না? কিন্তু আমাদের?

    মৈত্রী কড়ার (Friendship Contract):

    সত্তরের দশকের গুজরাতে কোন এক প্রাচীন ট্র্যাডিশনের ধুয়ো তুলে ঊচ্চবর্ণের হিন্দুদের মধ্যে শুরু হল মৈত্রী কড়ার। এর মানে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ে সাব-রেজিস্ট্রারের অফিসে গিয়ে ১০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে এগ্রিমেন্ট বানিয়ে একসঙ্গে লিভ টুগেদার করতে পারে — আশা এই যে ওরা কিছুদিন পরে বিয়ে করবে।

    হিন্দু কোডে কোথাও এমন কোন টেম্পোরারি বিয়ের কথা বলা নেই। কিন্তু আইন এর প্রতিবন্ধক নয়। শুধু ছ’বছর আগে দুই ছোটবেলার সাথী (ছেলে মুসলিম, মেয়ে হিন্দু) ওই কড়ার করে বাধা পেয়ে শেষে গুজরাতের হাইকোর্টে গিয়ে ২৫ নভেম্বর, ২০১৬ রায়ে অনুমোদন আদায় করায় গুজরাতে উচ্চবর্ণের হিন্দুদের টনক নড়ল। শেষে কি আমাদের ঘরের মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি গিয়ে মাছ-মাংস রান্না করতে বাধ্য হবে? [1]

    আজকে সমান আচার সংহিতা শুরু হলে মৈত্রী কড়ার বন্ধ হবে নাকি?

    তারপর অ্যান্থ্রোপলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার হিসেবে ভারতে ৪৬০০ আদিবাসী সম্প্রদায় আছে যাদের পূজার্চনা এবং বিবাহ সংস্কারের নিয়ম আমাদের থেকে ভিন্ন। ওদের সংস্কৃতিকেও কি দুরমুশ করে আমাদের মত করতে হবে?

    -- ভাল জ্বালা! তার চেয়ে বিয়ের জন্যে এমন একটা আইন করা যায় না যাতে দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেমেয়ে, নিজেদের জাত ধর্ম বাবা-মার অনুমতির তোয়াক্কা না করে ধর্মের দোহাই না দিয়ে বিয়ে করতে পারে? তাহলেই তো ল্যাটা চুকে যায়।

    সে আইন তো কবেই হয়ে গেছে — স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৯৫৪। অর্থাৎ হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্টের (১৯৫৫) একবছর আগে। তাতে শুধু ছেলের বয়েস ২১ হতে হবে, আর মেয়ের ১৮। তবে প্রধানমন্ত্রী বলছেন শিগগিরই মেয়েদের বয়েসও আইন করে বাড়িয়ে ২১ করে দেওয়া হবে, ভাল কথা।

    তফাৎ হল — হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্টে আগে বিয়ে, পরে রেজিস্ট্রি। স্পেশ্যাল অ্যাক্টে আগে দরখাস্ত দিলে রেজিস্ট্রার দেবে একমাসের নোটিস, তারপরও যদি মিয়া-বিবি রাজি থাকে, তবে একই সঙ্গে রেজিস্ট্রি এবং বিয়ে।

    তাহলে আর হৈ চৈ কিসের?

    কারণটা রাজনৈতিক, পরে আসছি। আগে সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে বলি।

    হিন্দু ও মুসলিম কোডে মেয়েদের সম্পত্তির অধিকার

    হিন্দু কোড বিলে আগো মেয়েদের পৈতৃক সম্পত্তিতে কোন অধিকার ছিল না। প্রথমে সংশোধিত হয়ে মেয়েদের বসবাসের অধিকার স্বীকৃত হল, কিন্তু মালিকানা হক নয়। পরে ২০০৫ সালের সংশোধনে ভাই এবং বোনের সমান অধিকার স্বীকৃত হল। তারপর ২০২২ সালের একটি রায়ে সুপ্রীম কোর্ট বললেন যে বিবাহিত মেয়েরাও ভাইয়ের সমান অংশীদার, সমান ভাগ পাবে।[2]

    মুসলিম কোডে কিন্তু প্রাচীন কাল থেকেই সম্পত্তিতে বাবা-মায়ের পৈতৃক এবং স্বোপার্জিত সম্পত্তিতে মেয়েদের অধিকার স্বীকৃত, সে বিবাহিত হলেও।  তবে সবসময় সেটা ছেলেদের সমান ভাগ নয়, কখনও ১/২, কখনও ১/৪।

    ব্যাপারটা বেশ জটিল। যখন আইনের স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় বসেছিলাম তখন আমরা সবাই ভয় পেতাম মুসলিম সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারার প্রশ্নকে। তাতে খেয়াল করে ভগ্নাংশের অংক কষতে হত।

    -- যাকগে, এসব জটিল ব্যাপারে আপনার আমার মত হরিদাস পালেদের মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। এর জন্যে উপযুক্ত সংস্থা হল ল’ কমিশন। ওদের দিয়েই এসব আইন ও ট্র্যাডিশনের প্যাঁচ খুলে একটি আধুনিক সিভিল কোডের খসড়া বানানো হোক। মিঃ আম্বেদকর, নেহেরুজী, প্যাটেলজী – সবার আত্মা শান্তি পাক। অসমাপ্ত কাজ পুরো করা হোক।

    ল’ কমিশন

    গোড়াতেই বলা দরকার যে ল’ কমিশন কোন সাংবিধানিক (constitutional) অথবা বৈধানিক (statutory) সংস্থা (body) নয়। এটি বিশুদ্ধ প্রশাসনিক (executive) সংস্থা যা ভারত সরকারের নির্দেশে কোন নিশ্চিত ইস্যুতে এবং নির্ধারিত সময়ের (tenure) জন্য গঠিত হয়।

    এর দায়িত্ব হল আইনের সংস্কারের ব্যাপারে রিসার্চ করে সরকার চাইলে বা স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে (suo moto) পরামর্শ দেওয়া।

    বর্তমান ভারত সরকার ইউসিসি’র বিষয়ে ২০১৬ সালে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জাস্টিস বি এস চৌহানের অধ্যক্ষতায় ২১ তম ল’ কমিশন গঠন করে।

    উনি এ’ব্যাপারে আম-নাগরিক এবং সিভিল সোসাইটির অভিমত এবং পরামর্শ জানতে চেয়ে ৩/১০/২০১৬ তারিখে এক ১৬ বিন্দু প্রশ্নাবলী  সম্প্রচারিত করেন। নভেম্বর মাসের মধ্যে প্রায় দশ হাজার উত্তর এবং মতামত পেয়ে বেজায় খুশি হয়ে প্রেসকে জানিয়েও দেন।

    কিন্তু বুঝতে পারছিলেন যে ব্যাপারটা এত সোজা হবে না। তারপর জাস্টিস চৌহান ২০১৮ তে কোন রিপোর্ট পেশ না করেই অবসর নেন।
      
    তারপর গত চার বছর ধরে কমিশনের কোন চেয়ারম্যান না থাকায় ব্যাপারটা ন যযৌ ন তস্থৌ হয়ে থেমে ছিল।

    অবশেষে ভারত সরকার গত ৮/১১/২২  তারিখে কর্ণাটক হাইকোর্টের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত চিফ জাস্টিস ঋতুরাজ অবস্থী-র অধ্যক্ষতায় ২২তম ল’ কমিশন গঠন করেছে। জাস্টিস অবস্থী কর্ণাটকের বিবাদিত হিজাব মামলার রায়দাতা।

    আশা করা যাচ্ছে আগামী মার্চ ২০২৩ নাগাদ ল’ কমিশন ইউসিসি ইস্যুতে তাঁদের রেকমেন্ডেশন বা সুপারিশ ভারত সরকারকে জানিয়ে দেবেন।

    কিন্তু তাই যদি হয় তাহলে আমরা মার্চ অব্দি অপেক্ষা না করে এখন থেকেই চেঁচামেচি করছি কেন? উত্তরটাও সহজ, রাজনীতি।

    সমান নাগরিক আচার সংহিতা বা ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি) ও রাজনীতি

    আসলে সমান আচার সংহিতা নিয়ে এত আগ্রহের পেছনে রয়েছে আরেকটি ইস্যু – মুসলিম সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ।

    মোদীজি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই বিজেপি ও আরএসএসের ঘোষিত তিনটে এজেন্ডা ছিল – রাম মন্দির নির্মাণ, সংবিধান থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল এবং ইউনিফর্ম সিভিল কোড। এর জন্যে দরকার ছিল বড় মাপের সংখ্যাগরিষ্ঠতার। সেটা পাওয়া গেল ২০১৯ সালের মে মাসের সাধারণ নির্বাচনে।

    ব্যস্‌, ব্রুট মেজরিটির জোরে ৫ অগাস্ট ২০১৯ সালে বাতিল হল আর্টিকল ৩৭০, অবশ্য নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ইত্যাদির আলাদা আইন, আলাদা পতাকা নিয়ে আর্টিকল ৩৭১ আগের মতই রয়ে গেল।

    তারপর ৯ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে অযোধ্যা মামলার রায় বেরোল। ৫ অগাস্ট ২০২০তে সংসদে মন্দির নির্মাণের জন্য বিশেষ ট্রাস্ট গঠনের ঘোষণা হল।

    বাকি রইল একটাই— সমান নাগরিক আচার সংহিতা, ইউনিফর্ম সিভিল কোড।

    এতসব চেঁচামেচির একটাই লক্ষ্য — মুসলিম আইনে যে চারটে বিয়ের অনুমোদন রয়েছে সেটা বাতিল করে সবাইকে এক পত্নীব্রতে থাকতে বাধ্য করা। বাকি সম্পত্তির অধিকার-টার যাক চুলোয়।

    ওদের যুক্তিঃ বেশি পত্নী মানেই বেশি সন্তান; এর মানে মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি। তার মানে কোন এক ভবিষ্যতে ওরা মেজরিটি হবে এবং আমাদের দেশকে ফের ভাগ করবে।

    এটা খোলাখুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় বলা হয় এবং বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতারা এটাকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মোড়কে গম্ভীর মুখে বলে থাকেন।

    বিজেপি সাংসদ এবং আরএসএসের তাত্ত্বিক নেতা রাকেশ সিনহা সংসদে জুলাই ২০১৯ সালে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি প্রাইভেট মেম্বার্স বিল পেশ করলেন।
     
    প্রধানমন্ত্রী সে’ বছর স্বাধীনতা দিবসের অভিভাষণে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বের কথা বলে এটাকে ‘a form of patriotism’ আখ্যা দেন। [3] অর্থাৎ যাদের সন্তান বেশি তারা দেশকে ভালবাসে না।

    উনি সেটা বলতেই পারেন।

    মোদীজির ভাষণের একই দিনে ১৫ই অগাস্ট, ২০১৯শের  স্বাধীনতা দিবসে আসাম সরকার ঘোষণা করে দিল যে যাদের দুটোর বেশি সন্তান রয়েছে তারা সরকারি চাকরি পাবে না এবং স্থানীয় স্তরে কোন নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবে না। [4]

    অবশ্য এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে এসে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার স্বাধীনতা দিবসের অভিভাষণে বলেছেন যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন নতুন আইনের দরকার নেই। ওঁর একটিই সন্তান।

    এদিকে প্রাক্তন মন্ত্রী এবং ইউপির মুজফফরনগর কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত সাংসদ সঞ্জীব বালিয়ান সেই ২০১৯ থেকে নিয়মিত সংসদে বলছেন ভারতে জনসংখ্যা যে হারে বেড়ে চলেছে যে রিসোর্সে টান পড়ছে, করদাতাদের উপর বোঝা বাড়ছে, এখনই ১৩৫ কোটি ছাড়িয়ে গেছে, ভবিষ্যতে কী হবে? ওঁর আবেদনে ১২৫ জন সাংসদের সই ছিল।
     
    তবে  ডঃ রাকেশ সিনহার (আরএসএস বুদ্ধিজীবি এবং রাজ্যসভার মনোনীত সদস্য) তিনবছর আগে পেশ করা বিলটিকে এ’বছর এপ্রিল মাসে স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মনসুখ মণ্ডাভিয়া অপ্রয়োজনীর বলে মতপ্রকাশ করেন।

    ওনার মতে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির দর আশংকাজনক নয়। জোর করে প্রতি পরিবার দুই সন্তানের লক্ষণরেখা টেনে দেওয়ার দরকার নেই। সরকারের প্রচেষ্টায় জনতা এখন অনেক জাগরুক, বাকিটুকু শিক্ষার আরও প্রসার হলেই হয়ে যাবে।

    তখন রাকেশ সিনহা বিলটি প্রত্যাহার করে নেন। [5]

    কিন্তু উত্তরপ্রদেশ সরকার দুই সন্তানকে বাধ্যতামূলক করার খসড়া বিল জুলাই ২০২১ এ বিধানসভায় পেশ করে।

    তবে গত বছর জুলাই মাসে সংসদে  দুই বিজেপি এমপির প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী  জানিয়েছিলেন যে NFHS III(2005-06) সার্ভে হিসেবে TFR 2.7 ছিল, তারপর NFHS IV (2015-16) [6] অনুযায়ী কমে 2.2 হয়ে গেছে। কাজেই আইন করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার দরকার নেই।

    তারপর এ’বছর জুন মাসে এক সাংবাদিককে স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে জানানো হয় যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মণ্ডাভিয়া কোনরকম জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল আনার কথা ভাবছেন না যেহেতু NFHS V অনুযায়ী ভারতের টোটাল ফার্টিলিটি রেশিও স্থায়িত্ব দর ২.১ থেকে কমে ২.০ হয়ে গেছে। [7]

    অথচ এ’বছর গত ৯ ডিসেম্বর তারিখে দু’জন বিজেপি এমপি নিশিকান্ত দুবে এবং রবিকিষণ লোকসভায়  প্রাইভেট মেম্বার্স পপুলেশন কন্ট্রোল বিল পেশ করেছেন। রবিকিষণ, ভোজপুরি লোকগায়ক এবং গোরখপুরের বিজেপি এমপি, ওঁর তিন মেয়ে এক ছেলে।

    এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উনি বলছেন এর জন্যে কংগ্রেস দায়ি। [8] ওরা যদি আগেই এই বিল আনত তাহলে নাকি  রবিকিষণ আগের থেকে সতর্ক হয়ে যেতেন।

    মুশকিলে পড়লাম, কে ঠিক বলছেন?

    প্রধানমন্ত্রী না স্বাস্থ্যমন্ত্রী, কে ঠিক?

    দুই বিপরীত মেরুর বক্তব্য বুঝতে হলে কিছু সরকারী ডেটা দেখুন। প্রথমে বিগত ২০১১ সালের সেন্সাস অনুয়ায়ী আমাদের দেশে ধর্মভিত্তিক নাগরিকদের  সংখ্যা ও অনুপাতঃ   

    তালিকা -১  

    সম্প্রদায়জনসংখ্যার প্রতিশত
    হিন্দু৭৯.৮০
    ইসলাম১৪.২৩
    খ্রীস্টান২.৩০
    শিখ১.৭২
    অন্যান্য১.৯৫
    মোট১০০.০০

    National Family Health Survey (NFHS-5) অনুযায়ী ভারতের গড় ফার্টিলিটি রেশিও ২.২ থেকে কমে ২.০ হয়েছে। আন্তর্জাতিক রিপ্লেসমেন্ট রেশিও হল ২.১। অর্থাৎ যে অনুপাতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি (নতুন জন্ম-নতুন মৃত্যুর সংখ্যা কাটাকুটি করে যা পাওয়া যায়) স্থির থাকে। তার মানে এখন ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার আশংকাজনক নয়।

    মাত্র পাঁচটি স্টেটের টিএফআর ন্যাশনাল অ্যাভারেজের এবং রিপ্লেসমেন্ট রেশিওর থেকে বেশি। তারা হল—

    বিহার (২.৯৮), মেঘালয় (২.৯১), উত্তরপ্রদেশ (২.৩৫), ঝাড়খণ্ড (২.২৬) এবং মনিপুর (২.১৭)। [9]

    এর কোনটিই মুসলিম বহুল রাজ্য নয়। অথচ, মুসলিম প্রধান জম্মু-কাশ্মীর (১.৩) এবং বঙ্গে (১.৬) টিএফআর ন্যাশনাল গড়ের থেকে অনেক কম।

    তার মানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির দর ধর্ম নির্ভর নয়, বরং শিক্ষার হার এবং জীবনযাপনের স্তরের উপর নির্ভরশীল।

    এবার ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সমস্ত জনগোষ্ঠীতে সন্তানোৎপাদনক্ষম বয়সের মহিলার সন্তান সংখ্যা কত নিচের তালিকায় দেখুন।

    তালিকা-২

    Total Fertility Rate (TFR) by Religion, average number of children by woman of reproductive age

    ReligionAverage number of children
    Hindu1.94
    Muslim2.36
    Christian1.88
    Sikh1.61
    Buddhist1.39
    Jain1.66
    Others2.15

    সূত্রঃ National Family Health Survey (NFHS-5)

    সিদ্ধান্তের ভার পাঠকের উপর ছেড়ে দিলাম। আমি অংকে কাঁচা। তালিকা একের জনসংখ্যাকে মূলধন এবং TFR  কে সূদের হার ধরে কম্পাউণ্ড ইন্টারেস্টের ফর্মূলা লাগিয়ে আঁক কষে বলুন তো এভাবে চললে কত বছর পরে মুসলিম জনসংখ্যা হিন্দুদের ছাড়িয়ে যাবে?

    শেষপাতেঃ

    বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো বসে নেই। বিশেষ করে যেখানে একের পর এক নির্বাচন। উত্তরাখণ্ডে রিটায়ার্ড জাস্টিস রঞ্জনা দেশাইকে অধ্যক্ষ করে রাজ্য ল’ কমিশন কাজ শুরু করে দিয়েছে। হিমাচলের বিজেপি সরকার দু’মাস আগে বলেছিল – নির্বাচনে জিতলে ওরা রাজ্যে ইউসিসি চালু করবে। চিঁড়ে ভেজে নি। গুজরাতে মহারাস্ট্রে মধ্যপ্রদেশে এবং গুজরাতে শোনা যাচ্ছে ইউসিসি নিয়ে কমিটির কথা এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণেরও।

    কিন্তু সুপ্রীম কোর্টের প্রখ্যাত অ্যাডভোকেট সঞ্জয় হেগড়ে বলছেন — ভিন্ন রাজ্যের ভিন্ন সংস্কৃতি। তাহলে তো কোন প্রথা, ধরুণ বিয়ে এক রাজ্যে বৈধ হবে তো অন্য রাজ্যে অবৈধ। কিন্তু এটি তো গোটা দেশের জন্যে ‘ইউনিফর্ম’ হওয়ার কথা।

    নিন্দুকে বলছে — আরে এগুলো ইলেকশনের আগে জিগির তোলা। হবে সেই মার্চে কেন্দ্রীয় ল’ কমিশনের রিপোর্ট এলে।

    দিন গুণছি।

    =======================================================================
    [1] ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬।
    [2]  সুপ্রীম কোর্ট,অরুণাচল গৌন্ডার বনাম পন্নুস্বামী, জানুয়ারি ২০২২।
    [3]  দি স্টেটস্‌ম্যান, ১৬ অগাস্ট, ২০১৯।  
    [4]  দি হিন্দু, ১৬ অগাস্ট, ২০১৯।
    [5] ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ২ এপ্রিল, ২০২২।
    [6] হিন্দুস্থান টাইমস্‌ ২৪ জুলাই, ২০২১।
    [7] টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ৯ জুন, ২০২২।
    [8] ঐ, ৯ ডিসেম্বর, ২০২২।
    [9]  টাইমস্‌ অফ ইণ্ডিয়া, ৬ মে, ২০২২।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ | ৭১৪২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:০৭514597
  • এটাই নির্বাচন এর আগে মিডিয়ার এসেছে। মায় পুলিশ দিয়ে ধমকানো অব্দি। সবাই জানতো কী হচ্ছিল। 
  • সন্তোষ ব্যানার্জী | 2401:4900:362d:5757:1:1:e9b1:***:*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:৪৯514601
  • জরুরী আলোচনা। ব্যাপারটা নিয়ে যে কুয়াশা ছিল মনে, তা অনেকটা কেটে গেলো। মনে হয়, এভাবেই Final Solution এর দিকে এগোচ্ছে ভারত!! অন্য ভাবে, অন্য মোড়কে!! 
  • Amit | 118.208.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০১:১৬514605
  • বেশ। ভালো কথা। রামপুর নিয়ে তাহলে ভুল জানতাম। বিজেপি হয়তো ভোট ম্যানিপুলেট করে জিতেছে।  কিন্তু ওটা তো আমার করা একটা সাইড কমেন্ট। মূল আলোচনার অংশ নয়। 
     
    মেন্ টপিকে ফেরা যাক ? যেখানে ইন প্রিন্সিপাল মেনে নেওয়া হচ্ছে ২১ শতকে বহুবিবাহ অচল - সেখানে ১৯৫৬ আইন পাল্টে ইউনিফর্ম এন্টি পলিগ্যামি এক্ট আনলে কার কোথায় কিসের সমস্যা ??
  • r2h | 192.139.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০১:৪৪514606
  • সংস্কৃতি, সমাজ, আইন - ইত্যাদির ক্যাচাল জটিল। বিজেপি আরেসেসের যেকোন আপাত ভালো পদক্ষেপও আমি সন্দেহের চোখে দেখা উচিত বলে মনে করি।

    তবুও, সবার জন্য একরকম ভাবে প্রযোজ্য বহুবিবাহবিরোধী আইন স্বাগত বলেই মনে করি। সাত পাক, চুমু খাওয়া ইত্যাদির কথা রঞ্জনদা বলেছেন, আইন তো পড়িনি, কিন্তু ওসব না করেও দিব্যি বিয়ে হয়, পুরসভার ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটটা লাগেই। ঈশ্বর অবতারের স্বপ্নে কী পরামর্শ দিয়েছেন তার ভিত্তিতে আইন কানুন চালানো খারাপ বলে মনে করি।

    এমনকি উত্তরাধিকার দত্তক এসবের আইনও একরকম হওয়া উচিত বলেই মনে করি। হয় কোর্ট কাছারী কেন্দ্রীয় প্রসেস থাকবে, নয়তো ছোট ছোট খাপ থাকবে। গত শতকে প্রাসঙ্গিক ছিল বলেই - এখনো প্রাসঙ্গিক তার মানে নেই। কত ফ্রিকোয়েন্ট বা কেমন ইম্প্লিমেন্টেশন সেটা প্রায়োগিক বিষয়, কিন্তু সংবিধান যখন আছে সেটা সবার জন্যে একরকম হওয়াই ভালো।

    যদিও আমার মনে হয় এই উইনিফর্ম সিভিল কোড বা অর্থনৈতিক অবস্থানের ভিত্তিতে সংরক্ষন (বর্তমান ব্যবস্থাকে না পাল্তে, তার ওপর) - এগুলো জাত ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি, যেটা করলে একটা ডিজাস্টার হবে কারন ভারতের বেশিরভাগ অংশে জাত ধর্ম অস্পৃশ্যতা উঁচু নীচু এখনো সগৌরবে।
    আর একটা জিনিস আছে - তপশীলি উপজাতিদের জমি, অরণ্যের অধিকার ইত্যাদি। ইউনিফর্মিটির কোপে সেসবওঅ পড়ে যাবে যেকোন সময়।

    কিন্তু তার পরেও, পলিগ্যামি সংক্রান্ত আইন যাই হোক, সেটা একরকম হওয়াই ভালো।
  • Ranjan Roy | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০১:৪৬514607
  • হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট এ পলিগ্যামি এখন নেই। মুসলিম ম্যারেজ অ্যাক্ট এ রিপোর্ট করলেই ল্যাজে চুকে যায়।
    তিন তালাক বন্ধ করতে কি কোন ইউনিভার্সাল অ্যাক্ট লেগেছিল?
  • r2h | 192.139.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০১:৫১514608
  • যা বুঝলাম ইউনিফর্ম সিভিল কোড ঠিক একটি আইনের ধারা না, এটি এমন একটি বিল যাতে কিছু আইনের ধারা পাল্টাবে।
    সেই ধারাগুলি তিন্টে বিষয় নিয়ে হতে পারেঃ
    1. পলিগ্যামি
    2. সম্পত্তির অধিকার
    3. দত্তক।
    তাই তো?
  • r2h | 192.139.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০১:৫৬514609
  • এবার হ্যাঁ, ঐ বিলে যদি আরও কিছু থাকে (বা নাও থাকে), আর যদি ঐ বিল না এনেও পলিগ্যামি সংক্রান্ত আইন সব নাগরিকের জন্যে একরকম করা যায় - তাহলে তাও স্বাগত।

    কিন্তু আমার মনে হচ্ছে কিছু মিস করছি।

    ওদিকে, বর্তমান প্রজন্মে যদি পলিগ্যামি বিরল হয়, তাহলে তো আরৈ ভালো - অলরেডি সমাজের বৃহত্তর অংশে মনোগ্যামিই গ্রাহ্য, তাতে আইনের সীলমোহর লাগিয়ে দেওয়ার এ প্রকৃষ্ট সময়।
  • Amit | 118.208.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০২:২৮514611
  • আরে ইউনিভার্সাল এক্ট কি কোনো ইউনিভার্সাল এনার্জি একুয়েশন এর মত অধরা ম্যাজিক কিছু যে একটা লাইনের ধারায় সমস্ত লোকের জন্ম মৃত্যু বিয়ে সব ডিফাইন করে দেবে ? আজব। এক একটা ইস্যুর ​​​​​​​জন্যে ​​​​​​​এক ​​​​​​​একটা ​​​​​​​​​​​​​​​​​আইন ​​​​​​​করা ​​​​​​​হোকনা -? কিসে ​​​​​​​আটকাচ্ছে ?
     
    আমার সিম্পল প্রশ্ন হলো সকলের জন্যে সেম এন্টি পলিগ্যামি এক্ট , সেম বিয়ের বয়স আর সেম বিয়ের রেজিস্ট্রি প্রসেস চালু হলে কার কোথায় কিসের সমস্যা ? 
     
    এবার সেটাকে ইউনিভার্সাল বলা হবে না লোকাল না ন্যাশনাল বলা হবে সেসব হ্যাজ নিয়ে কোনো কিস্যু ইন্টারেস্ট নেই। 
  • &/ | 107.77.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০২:৩২514612
  • একদম ঠিক . এটাই প্রকৃষ্ট সময় আইনের সীলমোহর লাগানোর । খুব দরকারীও 
  • Ranjan Roy | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৩:৫৬514613
  • হুতো 
    অনেকটা ঠিক।
    অর্থাৎ কোড হল একটি ফ্যামিল অফ অ্যাক্টস। যেমন লেবার কোডের অন্তর্গত -- ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিস্পিউট, মিনিমাম ওয়েজ, ডেইলি ওয়েজ, ট্রেড ইউনিয়ন -- সবগুলোর অ্যাক্টকে ধরা হবে। 
     
    তবে ইউনিভার্সাল সিভিল কোডের বিষয় শুধু পলিগ্যামি নয়, বিয়ের যোগ্যতা, পদ্ধতি সবই। 
    যেমন হিন্দু বিয়ে ঠিকমত হতে গেলে কন্যাদান, সপ্তপদী, এগুলো নেসাসারি কন্ডিশন।
     মেয়ের হ্যাঁ বা না (সম্মতি) জানার প্রশ্ন ওঠে না।
    আবার ক্রিশ্চান ও মুসলিম বিয়েতে এই সম্মতি অত্যন্ত জরুরি। মেয়ে যদি মোল্লা বা পাদ্রির সামনে শেষ মুহুর্তে 'না' বলে তো চিত্তির! বিয়ে ভেঙে যাবে। 
    এইখানেই প্রশ্ন -- ইউনিভার্সাল বিয়ের পদ্ধতি কী হবে? ধার্মিক অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে সেকুলার সরকারি বিয়ে? তার জন্যে তো সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৯৫৪ রয়েছেই।
     
    বাস্তবে একাধিক স্ত্রী এবং একগাদা সন্তান -- দুটোই বর্তমান প্রজন্মের নারীপুরুষের মধ্যে চোখে পড়ে না। চিন্তায় এই পরিবর্তনের মূল কারণটা মনে হয় আর্থিক এবং জয়েন্ট ফ্যামিলি ভেঙে যাওয়া।
     
    ভুল বললাম, মূল কারণ মনে হয় মেয়েদের বেশি বেশি করে গৃহবধূর ভূমিকা ছেড়ে বাইরের কাজে এগিয়ে আসা। ১৯৫৭ সালের সত্যজিতের মহানগর থেকে মৃণালের একদিন প্রতিদিন পেরিয়ে আজকের দুনিয়া -- যেখানে এয়ারফোর্সে মেয়েরা ফাইটার প্লেন চালাচ্ছে বা ছত্তিশগড়ের শহরে পেট্রোল পাম্পে কোম্পানির ইউনিফর্ম পরে গাড়িতে তেল ভরে দিচ্ছে। পুলিশ হয়ে ফিল্ডে তদন্তে যাচ্ছে, ট্রেন এবং বাস চালাচ্ছে। ছেলেদের পেশাদার খেলার মাঠে আম্পায়ার বা রেফারি হচ্ছে।
     
    ২০১৩ সালে নরেন্দ্রপুরের কাজের মাসি মুসলিম মেয়েটিকে বলেছিলাম -- এই দেখ, বইমেলা থেকে বাংলা কোরান কিনে এনেছি। চারটে বিয়ে তো নির্দেশ নয় -- খুব খুব ব্যতিক্রম মাত্র। একজনই নিয়ম বলা আছে, সম্মান দিতে পারলে দু'জন। তাহলে তোমরা কেন --?
    মেয়েটি হেসেই খুন।
    বলল -- দাদা, কেন এ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন? আজকাল লোকে একটা বউকে পালতেই হিমসিম খায় তো দুটো!
    দেখুন, আমার স্বামী অটো চালায় আর আমি ঘরে ঘরে কাজ করি। আমাদের একটিই মেয়ে। এরপর কোন ছেলে চাই নি তো। একটি ছেলের সঙ্গে ওর ভাব-ভালবাসা হয়েছে। ছেলেটি রাজনীতিতে এমএ করছে। আজ নয় কাল কোন চাকরি নিশ্চয়ই পেয়ে যাবে। 
    আগামী বছর ওর বিয়ে দেব। মেয়ে কুড়িতে পড়েছে।
     
    অমিত যেমন বলেছেন সেটা মেনে মেজরিটারিয়ান পলিটিক্স এড়িয়ে গিয়ে যদি পলিগ্যামি অ্যাক্ট বাতিল করে দেওয়া যায় এবং মুসলিম ম্যারেজ অ্যাক্টে সংশোধন করা যায়, যেমন আজ পোস্টাপিসে পোস্টকার্ড্‌ ইত্যাদি বাতিল হয়েছে, টেলিগ্রাম বাতিল হয়েছে -- তাহলে খুবই ভাল হয়। 
    তাই বহুবিবাহের বিরুদ্ধে আলাদা করে আওয়াজ তুললে মনে হয় ব্যাপারটা অপেক্ষাকৃত সহজ হবে এবং মেয়েদের ব্যাপক সমর্থন পাওয়া যাবে। 
  • Amit | 118.208.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৪:১৫514615
  • সিরিয়াসলি? বিয়ের পদ্ধতি নিয়ে যেখানে আজকাল ম্যাংগো লোকেরই বিন্দুমাত্তর  মাথাব্যথা নেই সেখানে সেসব নিয়ে আবার আইন আনা হবে? আবার জিগাই কোনো ড্রাফট তৈরী হয়েছে? নাকি শুধুই কল্পনার সিঁদুরে মেঘ? 
  • র২হ | 96.23.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৪:৫৬514618
  • সম্প্রদান টম্প্রদান কিছুই নেসেসারি না,  অনেক বছর ধরেই হিন্দু সামাজিক বিয়েকে অন্তত শিক্ষিত শহুরে বাঙালিরা কাস্টমাইজ করছে। পছন্দের আচার টাচার, হোমিওপ্যাথি ডাক্তার পার্টটাইম পুরুতমশাই শ্রাদ্ধের মন্ত্র পড়ে বিয়ে দিয়ে চলে যান কেউ ভ্রূক্ষেপও করে না, ঠিকঠাক ছবি উঠলেই হলো।
    রেজিস্ট্রেশনটা করতে হয়।
    বিয়ের পদ্ধতিও আইনে আছে নাকি? কী সর্বনাশ! এসব আইন এক্ষুনি ফেলে দেওয়া উচিত! 
  • &/ | 107.77.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:০২514619
  • রেজিস্ট্রেশন না হলে সর্বনাশ , যত নিয়ম আচার ইত্যাদি হোক , ক্যাঁক করে চেপে ধরলে প্রমাণ কোথায়?
  • Ranjan Roy | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১১:৩৩514621
  • দুটো কথা 
  • Ranjan Roy | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:০২514624
  • দুটো কথা আবার  বলা প্রয়োজন।
    আমরা সবাই জানি আইনে কী লেখা থাকে এবং বাস্তবে কী হয়।
    কিন্তু গোলপোস্ট সরালে চলবে না।
    যখন আইন নিয়ে কথা হবে তখন সেখানে থাকুন, যখন বাস্তবে কী হয় তখন সেখানে। দুটো গুলিয়ে ফেললে মুশকিল।
    যেমন অমিত এবং সবাই বলছেন আজকে চারপাশে তাকালে polygamy চোখেই পড়ে না। তবু তো আমরা polygamy act, 1956 বাতিলের ওপর জোর দিচ্ছি।
     
    একই ভাবে, হিন্দু ম্যারেজ act দেখুন, তাতে saptapadi is a must ।
    হতো ওটা ছুঁড়ে ফেলতে বলছেন? একই কথা কন্যাদান নিয়েও।
    যারা কোর্ট ম্যারেজ, special marriage act. 1954, তাঁরা হাতে গোনা ছোট্ট অংশ।
    আজও  দেশের অধিকাংশ ছেলেমেয়ে কন্যাদান, সপ্তপদী মেনেই বিয়ে করেন, আমরা যতই বলি না কেন যে কন্যা কোন সামগ্রী নয় যে কাউকে দান করব।
     
    একই ভাবে মুসলিম বিয়েতে কন্যার সম্মতি, দেনমোহর বা স্ত্রীর, এবং দশ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে লিখিত চুক্তি is a must ।
    এগুলোকে একটি uniform আইনে মেলাতে হবে।
    কী করে?
    সেটাই তো লাখ টাকার প্রশ্ন।
  • Amit | 118.208.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:১৩514625
  • আপনি নিজেই সামাজিক প্রথা আর দেশের আইন মিশিয়ে ফেলছেন। সপ্তপদী হ্যানা ত্যানা কি জানি না। কিন্তু আমাদের রেজিস্ট্রি ম্যারেজ। জাস্ট রেজিস্ট্রি অফিসে মালাবদল ছাড়া অন্য কিছু একগাদা নিয়ম কিস্যু মানা হয়নি। তার জন্যে আমাদের বিয়ে বা বাচ্চাদের কেও অবৈধ বলেনি আজ অবধি। কিন্তু রেজিস্ট্রি ম্যারেজ না হলে পাসপোর্ট করানো যেতো না। 
     
    গোলপোস্ট তখনি ​​​​​​​সরানো ​​​​​​​যায় ​​​​​​​যখন ​​​​​​​পোস্ট ​​​​​​​থাকে। 
     
    বিয়েতে কে কাকে চুমো খেলো আর কে কাকে জাপটে ধরল আইনে ওসব নিয়ে কারোর মাথা ব্যাথা আছে কি? দাবি গুলো সিম্পল। কম্পালসরি রেজিস্ট্রি ম্যারেজ & সেন্ট্রালাইজড ডাটাবেস বর বৌ এর ডিটেলস সহ, বিয়ের মিনিমাম বয়স সকলের জন্যে এক, পলিগ্যামি বন্ধ করার এবং অপরাধ ঘোষণা করার আইন।
     
    এর মধ্যে কোন ধর্মের কোন সামাজিক প্রথা আটকাচ্ছে? আর যদি আটকায় ও, সেক্ষেত্রে প্রথার ওপরে আইনের অধিকার থাকা উচিত। সেটাই যেকোনো সভ্য দেশের নিয়ম হওয়া উচিত। 
  • Amit | 118.208.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:১৭514626
  • আপনি তো আবার এটাও কোশ্নো তুললেন তিন তালাক তোলার জন্যে কোনো ইউনিভার্সাল আইন লেগেছিলো কিনা ? সেই প্রথাটা কি ইউনিভার্সাল ছিল ? তাহলে কেন লাগবে ?
     
    না কি আপনার মতে সক্কলের আগে  তিন তালাক এডাপ্ট করার দরকার ছিল। তাপ্পর সেটা তোলার জন্যে ইউনিভার্সাল আইন আনা উচিত হতো ? 
  • Ranjan Roy | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:৫৮514631
  • অমিত 
    এবার বলতে বাধ্য হচ্ছি - আপনি না আমার মূল লেখাটা মন দিয়ে পড়েছেন, না যা বলছি সেটা মন দিয়ে শুনছেন। নিজের বিয়ের সার্টিফিকেট মন দিয়ে দেখুন।
     
    আপনি তো হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট 1955 এর হিসেবে বিয়ে করেন নি। 
    আপনার হয়েছে কোর্টে সিভিল ম্যারেজ। অর্থাৎ সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট 1954 অনুযায়ী। এটি একটি সেকুলার বিবাহ পদ্ধতি। এতে বর কনের জাত বা ধর্ম অপ্রাসঙ্গিক। 
    আর সপ্তপদী কোন হ্যানোতানো বা লোকাচার নয়।
    আইনের অংশ। 
    আমাকে ল' পাশ করতে পড়াশোনা করে হিন্দু কোডের পেপার ক্লিয়ার করতে হয়েছে। এখানে ইয়ার্কি দিচ্ছি না।
    একই ভাবে চার্চে পাত্রীর অনুমতিতে চুমু খাওয়া কোন লোকাচার নয়, আইন অনুমোদিত অনুষ্ঠান। 
     
    আর ভারতে ১০% লোকও কোর্টে যায় না। 
    আপনি, হুতো - আপনারা ব্যতিক্রম। আপনাদের UCC নিয়ে কেন সমস্যা হবে?
    কোড প্রভাবিত করবে ব্যাপক জনতাকে -- যারা নিজের নিজের ধর্মীয় বিধান অনুসারী আইন অনুযায়ী বিয়ে করে।
  • Amit | 118.208.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:১০514632
  • হ্যা। লেখাটা পড়েছি এবং মনে হয়েছে সিঁদুরে মেঘের রেশিওটা বেশি। বেসিক হিউমান ​​​​​​​রাইটস ​​​​​​​বেসড ​​​​​​​আইনের ​​​​​​​ডিমান্ড ​​​​​​​এর ​​​​​​​বদলে প্রথা ​​​​​​​নিয়ে ​​​​​​​চিন্তা ​​​​​​​বেশি। ​​​​​​​আমার মতে সভ্য ​​​​​​​সমাজে ​​​​​​​বা দেশে ২১স্ট ​​​​​​​সেঞ্চুরিতে সবার একটা ম্যাচিউরড ​​​​​​​বিয়ের ​​​​​​​বয়স , ম্যান্ডেটরি রেজিস্ট্রেশন ​​​​​​​আর ​​​​​​​পলিগ্যামি ​​​​​​​বন্ধ ​​​​​​​হওয়া ​​​​​​​উচিত। এবার ​​​​​​​সেগুলো পাঁচটা ​​​​​​​আলাদা ​​​​​​​আলাদা ​​​​​​​আইন ​​​​​​​করে ​​​​​​​করা ​​​​​​​হলো ​​​​​​​না ​​​​​​​একখান ​​​​​​​তথাকথিত ​​​​​​​ইউনিভার্সাল ​​​​​​​আইন ​​​​​​​করে ​​​​​​​করা ​​​​​​​হলো ​​​​​​​সেসব ​​​​​​​নিয়ে ​​​​​​​আমার ​​​​​​​কোনো ​​​​​​​আগ্রহ ​​​​​​​নেই। 
     
    আপনি কি প্রস্তাবিত উসিসি র কোথাও কোনো ড্রাফট দেখেছেন ? সেখানে কি এসব প্রথা নিয়ে কিছু বলা  হয়েছে ? কোথাও কি বলা আছে ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে সাতপাক ঘুরতে হবে ? যদি না থাকে প্যানিক বাটন কেন তাহলে ​​​​​​​আগে ​​​​​​​থেকে দাবানো ​​​​​​​হচ্ছে ?
     
  • Amit | 118.208.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:১২514633
  • ও হ্যা। বিয়ের সার্টিফিকেট টা চেক করে এলাম।১৯৫৫ হিন্দু ম্যারেজ আক্টো লেখা আছে। ১৯৫৪ নয়। 
  • হজবরল | 23.137.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:১৫514634
  • সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট 1954 রেখে বাকি আইনগুলো তুলে দিলেও ম্যাক্স জনতা ঘুরেফিরে শাস্ত্রমতেই বিয়ে করবে, বিয়েটা একটা লাভজনক ব্যবসা। তার থেকে এই ভালো, যার এসব পছন্দ নয় সে সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট 1954 মেনে রেজিস্ট্রি করে নিক।  
  • Ranjan Roy | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:৩০514635
  • অমিত 
    ভারতে হিন্দু, মুসলিম,  ক্রিশ্চান,  শিখ, বৌদ্ধ সবার নিজস্ব ধর্মসম্মত বিবাহের আইন আছে। 
    আবার বলছি, লোকাচার নয় আইন। তার বাইরে যে সব অনুষ্ঠান হয় তাই লোকাচার। 
    এছাড়া আছে সেকুলার বিবাহের আইন,  কোর্টে রেজিস্ট্রি, মালা বদল। সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট 1954।
    এর কোন  একটির হিসেবে করলেই বিয়ে এবং সন্তান বৈধ, আপনার ধর্ম বিশ্বাস এখানে অপ্রাসঙ্গিক। 
    কোন আইনে বিয়ে করছেন সেটা বিবেচ্য। 
     
  • Ranjan Roy | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:৩৬514636
  • হযবরল 
    একদম ঠিক কথা,সমস্যা সেখানেই। 
    অমিত 
    তাহলে আপনি ম্যানেজ করেছেন।:))
     
    হিন্দু অ্যাক্ট আগে বিয়ে , একমাস পরে রেজিস্ট্রি।
    সিভিল বিয়ে, একমাস আগে নোটিস, পরে বিয়ে।
  • হজবরল | 146.59.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:৩৯514637
  • তবে যে কোনো আইনে বিয়ে করলেই একটা কমন খাতায় নামটা উঠে যাওয়া জরুরি। কারুর আগে বিয়ে হয়েছে কিনা সেটা জানতে গেলে এখন কিভাবে জানা যায়?
  • হজবরল | 146.59.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:৪৪514639
  • কেউ একবার হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট মেনে বিয়ে করল, তারপর বাকিদের লুকিয়ে সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট 1954 মেনে অন্য একজনকে বিয়ে করল, ধরা যাবে ?
  • হজবরল | 146.59.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:৪৫514640
  • বা কেউ ধর্ম বদল করে অন্য নামধাম নিলে ?
  • Amit | 118.208.***.*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:৪৭514641
  • এখনো বটম লাইন টা বুঝতে পারলাম না। আপনার ঠিক কিসে আপত্তি ?
     
    এগেন জিগাই- এই তথাকথিত ইউনিফর্ম সিভিল কোডের কোনো ড্রাফট কি আপনি এখনো অব্দি দেখেছেন ?
  • দীপ | 2402:3a80:1968:dbf0:a517:f65e:9bfd:***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:২৩514642
  • একটি গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ দেশে বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাসী মানুষ থাকবেন, তাঁরা বিভিন্ন আচার- অনুষ্ঠান পালন করবেন। কেউ মন্দিরে যাবেন, কেউ মসজিদে যাবেন, কেউ চার্চে যাবেন। রাষ্ট্র সেখানে কখনোই হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
    কিন্তু দেওয়ানী ও ফৌজদারি আইন সবার ক্ষেত্রে সমান হবে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এটাই কাম্য।
  • Ranjan Roy | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:০১514643
  • এক এক করে বলছি।
    অমিত, 
    ইউ সি সির ড্রাফট? লেখার  গোড়ায় বলেছি। হয়ত ঠিক স্পষ্ট হয় নি, তাই আবার  বলছি।
    ভারত সরকারের তৈরি 21 তম ল কমিশনের চেয়ারম্যান  রিটায়ার্ড জাস্টিফাই বি এস  চৌহান  UCC নিয়ে আম নাগরিকদের পরামর্শ চেয়ে বিগত 7/10/2016 তারিখের সরকারি গেজেটে এক 16টি প্রশ্নের মাল্টিপল চয়েস সম্বলিত তালিকা প্রকাশ করেন।  এক মাসের মধ্যে 10,000 উত্তর আসে, (ওঁর প্রেস কনফারেন্স)।
    সেই উত্তরদাতাদের মধ্যে আমিও একজন।  প্রথম দুটো প্রশ্নেই কমিশনের  কাজের স্কোপ  ও উদ্দেশ্য স্পষ্ট  করা আছে। 
    তাহল  বিয়ে, সম্পত্তি, উত্তরাধিকার,  দত্তক ইত্যাদির আলাদা  আইনগুলো তুলে দেওয়া?  যথাবৎ রাখা? নাকি  আংশিক সংশোধন করা?
  • দীপ | 2402:3a80:1968:dbf0:a517:f65e:9bfd:***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:৩৭514644
  • কে কিভাবে বিয়ে করবে, সেটা অবশ্য‌ই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সে ফাইভস্টার হোটেল বুক করে বিয়ে করতে পারে, আবার পাড়ার মন্দিরে পুরোহিত ডেকে বিয়ে করতে পারে। আনন্দের চোটে সাতবারের জায়গায় দশবার‌ও ঘুরে নিতে পারে। কেউ কিছু  বলতে যাবেনা। কিন্তু আইনী ব্যাপার সবার ক্ষেত্রে এক থাকবে, সেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে প্রতিক্রিয়া দিন