হুতো অনেকটা ঠিক।
অর্থাৎ কোড হল একটি ফ্যামিল অফ অ্যাক্টস। যেমন লেবার কোডের অন্তর্গত -- ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিস্পিউট, মিনিমাম ওয়েজ, ডেইলি ওয়েজ, ট্রেড ইউনিয়ন -- সবগুলোর অ্যাক্টকে ধরা হবে।
তবে ইউনিভার্সাল সিভিল কোডের বিষয় শুধু পলিগ্যামি নয়, বিয়ের যোগ্যতা, পদ্ধতি সবই।
যেমন হিন্দু বিয়ে ঠিকমত হতে গেলে কন্যাদান, সপ্তপদী, এগুলো নেসাসারি কন্ডিশন।
মেয়ের হ্যাঁ বা না (সম্মতি) জানার প্রশ্ন ওঠে না।
আবার ক্রিশ্চান ও মুসলিম বিয়েতে এই সম্মতি অত্যন্ত জরুরি। মেয়ে যদি মোল্লা বা পাদ্রির সামনে শেষ মুহুর্তে 'না' বলে তো চিত্তির! বিয়ে ভেঙে যাবে।
এইখানেই প্রশ্ন -- ইউনিভার্সাল বিয়ের পদ্ধতি কী হবে? ধার্মিক অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে সেকুলার সরকারি বিয়ে? তার জন্যে তো সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৯৫৪ রয়েছেই।
বাস্তবে একাধিক স্ত্রী এবং একগাদা সন্তান -- দুটোই বর্তমান প্রজন্মের নারীপুরুষের মধ্যে চোখে পড়ে না। চিন্তায় এই পরিবর্তনের মূল কারণটা মনে হয় আর্থিক এবং জয়েন্ট ফ্যামিলি ভেঙে যাওয়া।
ভুল বললাম, মূল কারণ মনে হয় মেয়েদের বেশি বেশি করে গৃহবধূর ভূমিকা ছেড়ে বাইরের কাজে এগিয়ে আসা। ১৯৫৭ সালের সত্যজিতের মহানগর থেকে মৃণালের একদিন প্রতিদিন পেরিয়ে আজকের দুনিয়া -- যেখানে এয়ারফোর্সে মেয়েরা ফাইটার প্লেন চালাচ্ছে বা ছত্তিশগড়ের শহরে পেট্রোল পাম্পে কোম্পানির ইউনিফর্ম পরে গাড়িতে তেল ভরে দিচ্ছে। পুলিশ হয়ে ফিল্ডে তদন্তে যাচ্ছে, ট্রেন এবং বাস চালাচ্ছে। ছেলেদের পেশাদার খেলার মাঠে আম্পায়ার বা রেফারি হচ্ছে।
২০১৩ সালে নরেন্দ্রপুরের কাজের মাসি মুসলিম মেয়েটিকে বলেছিলাম -- এই দেখ, বইমেলা থেকে বাংলা কোরান কিনে এনেছি। চারটে বিয়ে তো নির্দেশ নয় -- খুব খুব ব্যতিক্রম মাত্র। একজনই নিয়ম বলা আছে, সম্মান দিতে পারলে দু'জন। তাহলে তোমরা কেন --?
মেয়েটি হেসেই খুন।
বলল -- দাদা, কেন এ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন? আজকাল লোকে একটা বউকে পালতেই হিমসিম খায় তো দুটো!
দেখুন, আমার স্বামী অটো চালায় আর আমি ঘরে ঘরে কাজ করি। আমাদের একটিই মেয়ে। এরপর কোন ছেলে চাই নি তো। একটি ছেলের সঙ্গে ওর ভাব-ভালবাসা হয়েছে। ছেলেটি রাজনীতিতে এমএ করছে। আজ নয় কাল কোন চাকরি নিশ্চয়ই পেয়ে যাবে।
আগামী বছর ওর বিয়ে দেব। মেয়ে কুড়িতে পড়েছে।
অমিত যেমন বলেছেন সেটা মেনে মেজরিটারিয়ান পলিটিক্স এড়িয়ে গিয়ে যদি পলিগ্যামি অ্যাক্ট বাতিল করে দেওয়া যায় এবং মুসলিম ম্যারেজ অ্যাক্টে সংশোধন করা যায়, যেমন আজ পোস্টাপিসে পোস্টকার্ড্ ইত্যাদি বাতিল হয়েছে, টেলিগ্রাম বাতিল হয়েছে -- তাহলে খুবই ভাল হয়।
তাই বহুবিবাহের বিরুদ্ধে আলাদা করে আওয়াজ তুললে মনে হয় ব্যাপারটা অপেক্ষাকৃত সহজ হবে এবং মেয়েদের ব্যাপক সমর্থন পাওয়া যাবে।