এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • কিউবান বিপ্লবঃ একটি  প্রহেলিকার উৎসসন্ধানে  

    Sandipan Majumder লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ৩০ জুলাই ২০২১ | ২৪৬৬ বার পঠিত | রেটিং ৩ (১ জন)
  • প্রথম পর্ব
    কিউবান বিপ্লব : এক আধুনিক রূপকথা

    সম্প্রতি কিছুদিন আবার খবরের শিরোনামে এসেছে কিউবা। তার কারণ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখানো হয়েছে যে কিউবায় সরকারের বিরুদ্ধে কিছু গণবিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু অতিরঞ্জিত ও ফেক খবরও ছড়ানো হয়েছে আমেরিকার বড় বড় সংবাদমাধ্যম থেকে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যথারীতি মার্কিনি গণতন্ত্র ও ধনতন্ত্রর জয়গান গেয়ে কিউবার ‘অবদমিত’ মানুষদের প্রতি তাঁর সংহতি প্রকাশ করেছেন। আবার গত ২৬ শে জুলাই ‘মনকাডা দিবস’ যেটা কিউবায় জাতীয় বিপ্লব দিবস হিসেবে পালিত হয় তার প্রতি সংহতি জানিয়ে ঠিক এই মাসেই গোটা বিশ্বে অনেক সংগঠন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। এই উপলক্ষেই কিউবান বিপ্লবকে ফিরে দেখতে গিয়ে অনেকগুলি জরুরী কথা ভিড় করে এলো যেগুলি সাধারণভাবে আমরা হয়তো মনে রাখি না। সেইজন্যই এই লেখার নামকরণে প্রহেলিকা শব্দটির অবতারণা করা হয়েছে। এই প্রহেলিকার সমাধানে আমরা যতদূর অগ্রসর হব, কিউবান বিপ্লবকে আমরা ততদূর বুঝতে পারবো। শুধু তাই নয়, ভারতবর্ষে সমাজ পরিবর্তনের লড়াইয়ের সঙ্গে তাকে প্রাসঙ্গিক করে তুলতে পারবো। নয়তো কিউবা শুধু বামপন্থীদের বাৎসরিক রিচ্যুয়ালের অংশ হিসেবেই থেকে যাবে। তাকে আমাদের চিন্তনপ্রক্রিয়ার অংশ করে তোলা যাবে না।

    প্রথমেই দরকার ইতিহাস ও ভূগোলের দ্বিবিধ স্থানাংকের মধ্যে কিউবাকে স্থাপিত করা। আমরা জানি আমেরিকা নামে দুটি মহাদেশের কথা – উত্তর ও দক্ষিণ। কিন্তু এই বিভাজনে সমস্যা হয় মেক্সিকো, নিকারাগুয়া, বা হণ্ডুরাসের মত মধ্য আমেরিকার দেশগুলিকে নিয়ে। তাই লাতিন আমেরিকা বললে বরং বিস্তৃত এক ভূখণ্ডের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতি সুবিচার করা হয়। তা, এই লাতিন আমেরিকার অন্তর্গত কুড়িটি দেশের মধ্যে আঠারোটি দেশের ভাষা স্প্যানিশ, ব্রাজিলের ভাষা পর্তুগীজ, হাইতির ভাষা ফরাসি। বোঝাই যাচ্ছে এগুলো যে যে দেশের উপনিবেশ ছিল, তাদের ভাষাই এখন মাতৃভাষা এই সমস্ত দেশের। আমরা কিউবাকে এই লাতিন আমেরিকার অংশ হিসেবেই জানবো। কারণ লাতিন আমেরিকান সংস্কৃতির সঙ্গে উত্তর আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর কানাডার সংস্কৃতির যে তফাত তাতে কিউবা ‘আমাদের আমেরিকা’র (Nuestra America) মধ্যেই পড়ে যার কথা বলেছিলেন কিউবার কবি ও বিপ্লবী, জাতীয় মুক্তির অগ্রদূত শহীদ হোসে মার্তি।

    উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের খাঁড়ির কাছে, পূর্ব পশ্চিমে ১২০০ কিমি দীর্ঘ একটি দ্বীপরাষ্ট্র কিউবা যার থেকে মার্কিন যুক্ত্ররাষ্ট্রের নিকটতম প্রদেশ ফ্লোরিডার দূরত্ব মাত্র ১৪৫ কিমি। আর একটি নিকটতম দেশ মেক্সিকোর দূরত্ব মাত্র ১৬১ কিমি। স্পেনের রানীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে অভিযানে বেরিয়ে কলম্বাস কিউবাতে আসেন ১৪৯২ সালে। ১৫১১ সালে স্পেন থেকে সশস্ত্র তিনশ লোক এসে কিউবা দখল করে নেয়। এরপর শুরু হয় স্পেনের অধীনে প্রায় চারশ বছরের ঔপনিবেশিক শাসন। কিউবার আদিম অধিবাসীরা ঔপনিবেশিক শাসনের প্রথম পর্বেই হারিয়ে যান। কিন্তু এখানে যে জনজাতি কিউবান হিসেবে বাস করতে থাকেন তারা একটা মিশ্র চরিত্রের ডেমোগ্রাফি গড়ে তোলেন। কিউবার প্রধান ফসল হল আখ আর প্রধান রপ্তানিযোগ্য ফসল হল চিনি। আখের ক্ষেত আর চিনির কলে কাজ করার জন্য প্রচুর কৃষ্ণাঙ্গকে দাস হিসেবে আনা হয়। সপ্তদশ থেকে উনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত দাসপ্রথা চলে। এদের সঙ্গে শ্বেতাঙ্গদের বর্ণসংকরে তৈরি হয় মুলাটো বা মেস্তিজো যাঁরা কিউবার ১ কোটি ১০ লক্ষ জনসংখ্যার ৫১ শতাংশ। এছাড়া শ্বেতাঙ্গ ৩৭, কৃষ্ণাঙ্গ ১১ এবং অন্যান্য ১ শতাংশ। উনবিংশ শতক থেকে এরা সবাই নিজেদের কিউবান বলে গণ্য করতে থাকেন এবং এদের মধ্যে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ হয়।

    ১৮৬৮ থেকে ১৮৯৮ সাল জুড়ে কিউবার স্বাধীনতা যুদ্ধ চলতে থাকে স্পেনের বিরুদ্ধে। ১৮৯১ সালে হোসে মার্তি কিউবান রেভোলিউশনারি পার্টি গঠন করে নূতন করে স্বাধীনতার জোরদার আহ্বান জানান এবং ১৮৯৫ সালে তিনি যুদ্ধে শহীদ হন। ১৮৯৮ সালে আমেরিকার যুদ্ধজাহাজ ‘মাইনে’ কিউবার উপকূলে বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়। এই ঘটনাকে উপলক্ষ করে আমেরিকা স্পেনের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং স্পেন পরাস্ত হয়। ফলে কিউবায় স্প্যানিশ আধিপত্যের অবসান ঘটে। ১৯০২ সালে কিউবা সরকারীভাবে স্বাধীন ঘোষিত হয়। কিন্তু আমেরিকা তার আধিপত্য বজায় রাখে প্রোটেক্টরেট রাষ্ট্র হিসেবে প্লাট অ্যামেন্ডমেন্টকে কিউবার সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করে। এর দ্বারা আমেরিকা যে কোনো সময় মনে করলে কিউবার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারে প্রত্যক্ষভাবে। পরবর্তী কুড়ি বছরের মধ্যে তারা অন্তত তিনবার সেটা করেও। শেষবার ১৯২২ সালে আমেরিকার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপের পর জেরার্দো মাচাদোর নেতৃত্বে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯৩৩ সালে এই স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়, যাতে রামন গ্রাউ প্রেসিডেন্ট হন। আমেরিকা তাঁকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে। ১৯৩৪ সালে আমেরিকার সহায়তায় জেনারেল বাতিস্তা ক্ষমতা দখল করে। প্লাট সংশোধনীকে বাতিল করা হয় কিন্তু আমেরিকা নতুন করে বাণিজ্য চুক্তি করে যার সব ধারাগুলিই আমেরিকার স্বার্থের অনুকূল। এই সময় কিউবার বুকে আমেরিকা নৌ ঘাঁটি তৈরি করে গুয়ান্তানামো বে তে যার অধিকার এখনও তার হাতে। এরপর বাতিস্তার হাতেই দীর্ঘসময় ক্ষমতার চাবিকাঠিটি ন্যস্ত থাকে তা প্রেসিডেন্টের চেয়ারে যেই বসুন না কেন। ১৯৫২ সালে অপছন্দের প্রেসিডেন্ট কার্লোস প্রিয়োকে সামরিক অভ্যুথ্বানের মাধ্যমে হঠান বাতিস্তা। ততদিনে গোকুলে নয়, হাভানা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির অঙ্গনে এবং অর্থোডক্স পার্টির বামপন্থী অংশের ছত্রছায়ায় বাড়ছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো। স্বচ্ছল শ্বেতাঙ্গ পরিবার থেকে আসা, সুদর্শন, বাগ্মী, আদর্শবাদী এই যুবক যিনি দেশের সর্বব্যাপ্ত দুর্নীতি আর স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, সমমনস্ক আদর্শবাদী ১৬৫ জন সহযোদ্ধাকে নিয়ে ওরিয়েন্তি প্রদেশে মনকাডা সামরিক ব্যারাক আক্রমণ করেন। উদ্দেশ্য ছিল সামরিক অস্ত্রভাণ্ডারের দখল নেওয়া। পরিকল্পনা ঠিকমত কার্যকর না হওয়ায় অভিযান ব্যর্থ হয়। ৭০ জন সামরিক বাহিনীর হাতে খুন হন। অনেকে পালিয়ে যান। ফিদেল এবং তাঁর ভাই রাউল কাস্ত্রো সহ ৩২ জনের ১৫ বছর কারাদণ্ড হয়। বিচারের সময় ফিদেল নিজেই সওয়াল করেন এবং সেই অপূর্ব সওয়াল কিউবার ইতিহাসের অংশ হয়ে যায়। ফিদেলের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হয় এবং তাঁদের মুক্তির দাবিতে যে আন্দোলন গড়ে ওঠে তার চাপে বাতিস্তা বাইশ মাস পরেই ফিদেল, রাউল সহ সব রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেন। ফিদেল ও রাউল মেক্সিকো যান ১৯৫৫ সালে এবং সেখানে চে গেভারার সঙ্গে তাদের সখ্য স্থাপিত হয়। ১৯৫৬ সালের নভেম্বর মাসে একটি ছোট্ট জাহাজ গ্রানমা তে চেপে ফিদেল, রাউল, চে, ক্যামিলো সিনেফুয়েগস সহ ৮২ জন বিপ্লবী উত্তাল সমুদ্রে তীব্র সি সিকনেস সহ অজস্র প্রতিকূলতা ভোগ করে ওরিয়েন্তি প্রদেশের যে জায়গায় নোঙ্গর ফেলার চেষ্টা করেন সেখানে তার ৬১ বছর আগে এসেছিলেন কবি ও বিপ্লবী হোসে মার্তি। কাদায় অনেক আগেই আটকে যায় গ্রানমা, জলাভূমির মধ্য দিয়ে পায়ে হেঁটে এগোতে থাকেন বিপ্লবীরা, অস্ত্রশস্ত্র বেশির ভাগটাই ফেলে দিতে বাধ্য হন, খবর পেয়ে মাথার ওপর থেকে বোমাবর্ষণ করতে থাকে বাতিস্তার হেলিকপ্টার আর প্লেন। মাত্র বারো জন সেই নারকীয় অভিজ্ঞতার মধ্যে নিজেদের বাঁচাতে পারেন। তাঁরা পৌঁছোন গাছে গাছে আচ্ছাদিত সিয়েরা মায়েস্ত্রা পাহাড়ের মাথায়। সেখান থেকেই শুরু হয় গেরিলা যুদ্ধের নতুন পর্ব। রেডিও মারফত কাস্ত্রোর ডাক পৌঁছে যায় পরিবর্তনকামী ছাত্র,যুবক ও কৃষকদের মধ্যে। তাঁদের অনেকে কাস্ত্রোর সঙ্গে এসে যোগ দেন। বাতিস্তার বাহিনী পিছু হঠতে থাকে। ১৯৫৯ সালের ১লা জানুয়ারি সান্তা ক্লারার যুদ্ধে চের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হাতে পরাজয়ের পর বাতিস্তা দেশ ছেড়ে পালান। কিউবান বিপ্লবের বিজয় অর্জিত হয়। এই বিপ্লবের নায়করা যদি রূপকথার নায়কে পরিণত হন তাহলে ইতিহাসের আর দোষ কী?

    দ্বিতীয় পর্ব
    কিউবান বিপ্লব : প্রহেলিকার উৎসসন্ধানে

    এরকম কি পৃথিবীতে দেখা গেছে যে একটা দেশে বিপ্লব হয়েছে, সেই দেশটি নিজেকে সমাজতান্ত্রিক পথের যাত্রী বলে ঘোষণা করেছে কিন্তু সেই বিপ্লবের কর্ণধার কম্যুনিস্ট পার্টির সদস্য নন? এমনকি কোথাও হয়েছে যে আগে বিপ্লব হয়েছে, পরে কম্যুনিস্ট পার্টি গঠন হয়েছে? এই ঘটনাগুলো কিউবাতে ঘটেছে কিন্তু তার তাৎপর্য কি? সেটা খতিয়ে দেখাই আমাদের এই পর্বের বিচার্য।

    সিয়েরা মায়েস্ত্রা পাহাড়ের মাথায় যে বারো জন বিপ্লবী আশ্রয় নিয়ে গেরিলা যুদ্ধের সংকল্প নিয়েছিলেন তার মধ্যে ফিদেল যে কম্যুনিস্ট ছিলেন না সেকথা আগেই বলা হয়েছে। চে গেভারা মার্কসবাদী ছিলেন, ফিদেলকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রেও তাঁর বিরাট ভূমিকা ছিলো, কিন্তু তিনিও কোনো কম্যুনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন না। ক্যামিলো সিনেফুয়েগস ছিলেন উদারপন্থী গণতন্ত্রী। একমাত্র রাউল কাস্ত্রো মার্কসবাদী ছিলেন বরাবর। আবার পরবর্তীকালে ফিদেলের ডাকে সাড়া দিয়ে যাঁরা গেরিলা যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন তাদের অধিকাংশের মধ্যেও মার্কসবাদের প্রভাব বা পড়াশোনা কিছু ছিলো না। ১৯৯৬ সালে কিউবার সরকারের পক্ষ থেকে এই গেরিলা যুদ্ধের ৪১ জন সেনাপতির পরিচিতি বের করা হয়। সেখানে দেখা যায় তাঁদের মধ্যে মাত্র পাঁচ জনের বিপ্লবের আগে মার্কসবাদ সম্পর্কে কমবেশি জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা ছিল। আসলে সেই সময় কিউবায় মার্কসবাদের প্রভাব বা ব্যাপ্তি যথেষ্ট সীমিত ছিল। তাই কাস্ত্রো যে মার্কসবাদের পথে যাবেন সেকথা আমেরিকাও প্রথমে বুঝতে পারে নি, বিপ্লবের পরেও। যে ভদ্রলোক তখন কিউবায় আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ছিলেন, তিনি তাই প্রবল আশাবাদী ছিলেন যে ফিদেলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাকে আমেরিকার দিকে রাখা যাবে। কিন্তু কাস্ত্রো ভূমিসংস্কার, আখের ব্যবসার জাতীয়করণ ইত্যাদি শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকার পালে বাঘ পড়ে। এরপর আমেরিকার সঙ্গে যত বৈরিতা বাড়ে কাস্ত্রো ততই বামদিকে ঝুঁকে পড়তে থাকেন। তবে কাস্ত্রো একবার বলেছিলেন, আমরা যদি সিয়েরা মায়েস্ত্রা পাহাড়ের মাথায় বসে ঘোষণা করতাম, আমরা মার্কসবাদী-লেনিনবাদী তাহলে আমাদের আর পাহাড়ের মাথা থেকে নামা হত না।

    কিউবাতে কি কম্যুনিস্ট পার্টি ছিলো না? অবশ্যই ছিলো এবং তাঁরা ছিলেন মস্কোপন্থী। কিউবার শ্রমিক শ্রেণীর (মূলত প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার সহ) মধ্যে তাদের ভালো সংগঠনও ছিলো। কিন্তু সামগ্রিকভাবে অন্য দলগুলির তুলনায় দুর্নীতির প্রসঙ্গে অনেক স্বচ্ছ হওয়া সত্ত্বেও তাদের গ্রহণযোগ্যতা ছিলো কম। বিশেষত বাতিস্তার সঙ্গে ত্রিশের দশকের শেষের দিকে একবার জোট করায় তাঁদের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো। বিভিন্ন নির্বাচনের সংখ্যাতত্ত্ব অনুযায়ী তাঁরা সর্বোচ্চ যা ভোট পেয়েছেন তা ছিলো সাত শতাংশ। ফিদেল কাস্ত্রোর বিপ্লবে তাঁদের ভূমিকা ছিলো প্রান্তিক। প্রথমত কাস্ত্রোকে তাঁরাও বুঝে উঠতে পারেন নি। ১৯৫৩ সালে মনকাডা আক্রমণের সময় বা তার পরে তাদের ধারণা হয়েছিলো যে ফিদেল আসলে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেণ্ট প্রিয়োকেই আবার ক্ষমতায় ফেরানোর চেষ্টা করছেন। তার মানে এটা শাসক শ্রেণীর অভ্যন্তরীণ লড়াই যেখানে কম্যুনিস্ট পার্টির কোনো ভূমিকা নেই। ফিদেলের দ্বিতীয় দফা লড়াইয়ের শেষের দিকে কিউবার কম্যুনিস্ট পার্টি তাঁকে সমর্থন করে ১৯৫৭ সালের পর থেকে।বিপ্লবের পর কাস্ত্রোর আর্থিক নীতিকে বামমুখী রাখার দাবিতে তাঁরা কাস্ত্রোর সঙ্গে ছিলেন। সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে কথাবার্তা চালোনো এবং সাহায্য আদায় করার ক্ষেত্রেও কাস্ত্রো কম্যুনিস্ট পার্টির (তখন নাম ছিলো পিএসপি) তৎকালীন সম্পাদক আনিবাল এসকালেন্তের সহায়তা নিয়েছিলেন। আমেরিকা যখন প্রতিবিপ্লবীদের জড়ো করে বে অব পিগসে আক্রমণ করল ১৯৬১ সালে, তখন দুদিনের মাথায় যুদ্ধজয় করে ফিদেল ঘোষণা করলেন কিউবা এবার সমাজতান্ত্রিক পথ ধরবে। সোভিয়েত ইউনিয়ন এতদিন লাতিন আমেরিকা মহাদেশ সম্পর্কে উদাসীন থাকলেও, এবার কিউবার পাশে এসে দাঁড়ালো। অন্যদিকে আমেরিকা, যে ছিলো কিউবার এতদিনের চিনির সবচেয়ে বড় ক্রেতা (যদিও নিজের শর্তে), সে নিজে তো চিনি কেনা বন্ধ করলোই, অন্য দেশকে বেচার ক্ষেত্রেও নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে শুরু করলো। অর্থনৈতিক অবরোধের সেই শুরু। তারপর ষাট বছর ধরে এই অমানবিক ও অগণতান্ত্রিক অবরোধ চলছে বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে। ট্রাম্প এই চলমান অবরোধে আরো ২৪৩টি ধারা সংযুক্ত করেন। বাইডেন এসে তার একচুলও পরিবর্তন করেন নি যদিও ১৯৯২ সাল থেকে প্রতিবার রাষ্ট্রসংঘে এই অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়ার প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাস হয়েছে। এবছরও ইজরায়েল ছাড়া কেউ আমেরিকার পক্ষে ভোট দেয় নি। যাই হোক, কিউবার এই কম্যুনিস্ট পার্টি ১৯৬৫ সালে ফিদেল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত কম্যুনিস্ট পার্টির মধ্যে মিশে যায়। তার মানে কিউবা সমাজতন্ত্রের পথে চললেও যে পরিবর্তনকামীরা সেখানে বিপ্লব এনেছিলেন সেখানে স্বৈরতন্ত্র বিরোধী, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী, দুর্নীতি বিরোধী বহু মানুষের সমর্থনের সঙ্গে শ্রেণী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলা বামপন্থীরা সহযোগী শক্তি নিয়ে ছিলেন। নির্ণায়ক জায়গায় ছিলেন না। এই বৈশিষ্ট্য, একুশ শতকে আমরা লাতিন আমেরিকায় যে বামপন্থার উথ্বান দেখছি বা যাকে বামপন্থা বলে উল্লেখ করছি সেখানে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি চিলি ও পেরুতে নির্বাচনের ফলেও সেটা দেখা গেছে। এই সমস্ত দেশে আমরা যাদেরকে বামপন্থী বলছি বা তাঁদের নির্বাচনী সাফল্যে খুশি হচ্ছি তারা কেউ প্রচলিত শ্রেণীভিত্তিক মতাদর্শের কম্যুনিস্ট পার্টি করেন না। অনেক ক্ষেত্রেই এই পার্টিগুলি একদম নতুন যেমন পেরুতে কাস্টিজোর পার্টি মাত্র তিন বছরের পুরোনো। এই সব দেশে এখন পুরোনো কম্যুনিস্ট পার্টিরা সহযোগী ভূমিকায় আছেন বড়জোর, কিন্তু সমাজ পরিবর্তনের লড়াইতে নেতৃত্বে নেই। কিউবাতেও কিন্তু তাই ছিলো।

    শুধু ফিদেল কাস্ত্রো নন, চে গেভারার মার্কসবাদের মধ্যেও তত্ত্বনির্ভর, ছককষা মার্কসবাদের সঙ্গে, তথাকথিত বৈজ্ঞানিক রণকৌশল প্রণয়নের সঙ্গে সচেতন দূরত্বনির্মাণের প্রয়াস ছিলো। চে এক মানবতাবাদী মার্কসবাদের ধারণায় বিশ্বাসী ছিলেন যেখানে বিশ্লেষণের কেন্দ্রে স্থান পাবে মানুষ। এই নিয়ে চার্লস বেটেলহেইমের মত মার্কসবাদী পণ্ডিতের সঙ্গে তাঁর বিতর্কও হয়ে ছিল যেখানে বেটেলহেইম মনে করতেন মার্কসবাদী বিশ্লেষণের কেন্দ্রবিন্দু হবে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। বেটেলহেইমরা মনে করেন উৎপাদন সম্পর্কর স্তরকে মাথায় না রেখে, শুধু আদর্শবাদ দিয়ে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করলে তা ব্যর্থ হতে বাধ্য। কিন্তু চে মনে করতেন নতুন মানুষ তৈরির কাজ আগে করতে হবে। তারজন্য বস্তুগত প্রণোদনা (Material Incentive) নয়, স্বেচ্ছাশ্রমের ওপর নির্ভর করতে হবে। অর্থনীতির একক হিসেবে পণ্যদ্রব্য, সুদের হার, মুনাফা প্রভৃতি ‘পুঁজিবাদের ফেটিশ’ কে সমাজতন্ত্রে ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও চের আপত্তি ছিলো। কে ঠিক, কে ভুল আমরা জানি না। এমন নয় যে চের বক্তব্য বা রণনীতিই সর্বত্র অভ্রান্ত প্রমাণিত হয়েছে। তবু চে গেভারার যে বৈশিষ্ট্য তা নিরূপণের ক্ষেত্রে এই কথাগুলি আমাদের স্মরণে রাখতে হবে।

    কিউবার বিপ্লব আমাদের এই শিক্ষাই দেয় যে সমাজ পরিবর্তনের লড়াই কোনো বাঁধাধরা পথে এগোয় না। যাঁরা শ্রেণীকে অগ্রাধিকার দেন তাঁরা সেটা বজায় রেখেই ভিন্নমার্গী শুভচিন্তকদের সঙ্গেও জোট বাঁধতে পারেন যদি সেই ভিন্নমার্গীরা স্বৈরতন্ত্র বিরোধী, দুর্নীতি বিরোধী বা অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরোধী বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিবাদী হন। যদি তাঁরা আত্মত্যাগ এবং পরার্থপরতার আদর্শকে সম্মান করেন। এই উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে পুঁজিবাদী সভ্যতার অসুখ গভীরে প্রবেশ করেছে। সেখানে আলোর দিকে মুখ ফিরিয়ে বাঁচা এবং মরাটাই শেষ কথা।হোসে মার্তি যেমন চেয়েছিলেন বিশ্বাসঘাতকের মত তাঁর মৃতদেহের মুখ যেন অন্ধকারে আবৃত না থাকে। আলোর প্রত্যাশাটা বুঝি সর্বজনীন, সর্বদেশীয়, সর্বকালিক।

    তথ্যসূত্র:
    (১) লাতিন আমেরিকা ও কিউবাঃবিপ্লবী সংগ্রামের ধারা, সুজিত সেন সম্পাদিত
    (২) The Origins of the Cuban Revolution Reconsidered , Samuel Farber, The University of North Carolina Press.
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ৩০ জুলাই ২০২১ | ২৪৬৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ৩১ জুলাই ২০২১ ১৭:০৯496249
  • এই লেখায় সব আছে, কিন্তু কেন বহুদলীয় গ্ণতন্ত্র নেই, সাধারণ মানুষের কেন হাঁড়ির হাল, নীতি নির্ধারণে শ্রমিক কৃষকের সক্রিয় অবদান করটুকু-- সেসব কিছুই নেই। আর যদি কিউবান মানুষের দুঃখ কষ্ট এবং প্রতিবাদকে সবটাই আমেরিকান ্য  চক্রান্ত বলে উড়িয়ে দিই তাহলে ল্যাঠা চুকে গেল। খালি মোদীভক্ত আর আমাদের মধ্যে বিশেষ ফারাক থাকবে না।


    একদলের মুখে বামমার্গী শ্লোগান অন্য দলের ডানমার্গী।  কিন্তু "ভক্ত" দুজনেই।


    খালি ম্যাঙ্গো পাবলিকের হাতে হ্যারিকেন!!

  • Sandipan Majumder | ৩১ জুলাই ২০২১ ১৭:৫৯496252
  • @Ranjan Roy এই লেখার  উপজীব্য  তো সেটি নয়। তাহলে  আলাদা একটা  লেখা ফাঁদতে হবে। এই লেখায়  শুধু কিউবান  বিপ্লবের  বৈশিষ্ট্য  যে প্রথাগত  সমাজতান্ত্রিক  বিপ্লবের  রোডম্যাপ অনুসারী  নয় সেটাই জোর দিয়ে দেখানো হয়েছে


    লাতিন আমেরিকার  অন্য দেশগুলোতে  যে সামাজিক  পরিবর্তনগুলিকে অনেকসময়  আমরা বামপন্থীদের  জয় বলি,যেমন ভেনেজুয়েলায়,সেখানেও কম্যুনিস্ট  পার্টির ভূমিকা পরিবর্তনের সাপেক্ষে প্রান্তিক, এই সাযুজ্য টুকু কিউবার সঙ্গে  রয়েছে।এখন সেখানে  বহুদলীয়  গণতন্ত্র  নেই কেন,এসব প্রশ্নে আলাদা আলোচনা  হতেই পারে। আর কিউবা তথা লাতিন আমেরিকায় আমেরিকার  ভূমিকা  নিয়ে লিখতে  গেলেও চট করে শেষ হবে না।

  • Ranjan Roy | ৩১ জুলাই ২০২১ ১৮:২২496254
  • সন্দীপন বাবু 


     ঠিকই বলেছেন। আমার বোঝার ভুল;  আগের পোস্ট প্রত্যাহার! 

  • Sandipan Majumder | ৩১ জুলাই ২০২১ ২০:৩৯496261
  • @Ranjan Roy 


    কেউ  সমাজমাধ্যমে চট করে ভুল স্বীকার করেন না,আপনি করলেন,এটা আপনার  ঔদার্যের পরিচয়।  ধন্যবাদ।

  • Ranjan Roy | ০১ আগস্ট ২০২১ ১৩:৩১496273
  • সন্দীপনবাবু


    না না; ঔদার্য নয়। আমার চাকরি জীবনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি ভুল টের পেলে স্বীকার করলে বা ক্ষমা চাইলে -- সে নিজের ছেলেমেয়ে হোক বা অফিসের কোন কলিগ বা  অধস্তন কর্মচারি --- আমি ছোট হয়ে যাই না, বরং আমার মনের শক্তি বাড়ে।


    আসলে আমি কাউকে তর্কে হারাতে চাইনে, বরং কনভার্সেশন জারি রাখতে চাই। শেষ কথা যে আমরা কেউ জানিনে, শুধু এক্সপ্লোর করতে পারি। সব সত্যই তো কন্টিঞ্জেন্ট ট্রুথ।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন