সন্ধ্যাবেলার চম্পূ
© সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়
যেদিন আমাদের চব্বিশ ঘন্টার 'লেবার রুম' ডিউটি থাকত... এমন মেঘ মেদুর বরষা হলে তো কথাই হতো না... আলোসাঁঝালি বেলায় জরুরি তলব যেত ওয়ার্ডবয় টেনিয়া মল্লিকের কাছে।
ডাক্তারবাবুদের কনফারেন্সে পাওয়া নীল ঝোল্লা ব্যাগ নিয়ে টেনিয়া ছুটত রাণারের ভঙ্গিতে।
আধসেরটাক গরম লাল মুড়ি, দেড় কুড়ি তেলেভাজা (আলুর চপ, পেঁয়াজি, বেগুনি কম্বো), খোসা ছাড়ানো ভাজা বাদাম, পলিথিনের ডবল প্যাকেটে গোটা চারেক মশলাঠাসা মেগা সাইজের লাল লঙ্কার আচার... আর চার চামচে আচারি তেল !
তাকে ফিরতে দেখলেই আমরা কোরাসে বলতাম -- এক ব্যাগ টেনিয়া!
মেজ সিস্টার আভাদি বাগের ভিতর সযত্নে রাখা সেদিনের পত্রিকার মধ্যিখানের পরিস্কার পাতাটি বিছিয়ে দিতেন দেওয়াল লাগোয়া কাঠের টেবিলে (পাক্কা বরিশাল নন্দিনী দিদি বলতেন - টেবুল)।
একের পর এক উপচার সাজিয়ে দিতেন কাগজে। তারপর সরে দাঁড়াতেন।
"বিষম ধাতুর বিয়া" দেওয়ার (মাখা মশাই, মাখা) প্রেরগেটিভ ছিল একমাত্র বড় সিস্টার মায়াদির।
জনা পনেরো ডাক্তার-নার্স-আয়া-ওয়ার্ডবয়ের 'টিপিন' মাখতেন হাসিমুখে। একেবারে শেষ পর্যায়ে তিনি বাড়ি থেকে নিয়ে আসা 'কিছুমিছু' আচারের তেল আর পেটমোটা লংকার অন্তর্বাসী মশলা (উনি হেসে বলতেন "মশল্লা") মেশাতেন - অতো জোড়া উৎসুক, খিদে খিদে দৃষ্টির সামনে।
তারপর... যাহ্, লঙ্কা আনা হয়নি!
কমলা মাসি আয়া তার 'খুব-একটা-পরিস্কার-নয়' কাপড়ের ব্যাগ থেকে ভয়ে ভয়ে বের করে আনতেন
লাল-সবুজ - সবুজলাল কয়েকটা কাঁচালঙ্কা।
কোরাসে ধ্বনিত হতো - ইয়াক, ইয়াক !
হাতে হাতে ঘুরতে না ঘুরতেই নিউজপ্রিন্টে তেলের দাগটুকু ছাড়া অকুস্থলে আর কিছু খুঁজে পাওয়া কোন সত্যান্বেষীর পিতৃপুরুষের সাধ্য থাকত না।
এর সঙ্গে একটু চা হলে কেস লিপটন হতো... এমন আলোচনা শুরু হতে না হতেই, সদ্য পাস দেওয়া ইন্টার্ণ, গর্ভগৃহ কাঁপিয়ে বিপন্ন-বিস্ময়ে 'ফুকারিয়া' উঠত -- "দাদা , তিন নম্বর... এক্কেবারে স্টেজ-থ্রি...! Cord round the neck! এক্ষুণি... এক্ষুণি এসো।"
প্রায় প্রতিবারই কেন যে এমনটাই হতো ....!
আসলে, চপ-মুড়ি আর স্বাদ কোরকের পরিশীলিত পরকিয়া বড় রোম্যান্টিক, হয়তবা একটু স্বার্থপরও।
চা-ই হোক বা চাচা -- সেখানে কেউই বোধহয় স্বাগত নয়।
দারুন!
পাঠকদের অপার আনন্দের স্বাদ সন্ধান। অপূর্ব। অপূর্ব।
পাঠকদের অপার আনন্দের স্বাদ সন্ধান। অপূর্ব। অপূর্ব।
অনেকটা ধন্যবাদ রইল, আলপনা ।
তোকে ধন্য বাদই দিলাম , নন্দিনী।
এক্কেবারে ভিন্টেজ মডেল!
মুড়িমাখার মতো জমাটি
আহা! সেই সব দিন।
মেঘলা সন্ধ্যায় আপনাদের সঙ্গে মুড়ি মাখা দেখলাম লোভী চোখে, গর্ভ গৃহ কাঁপানো চিৎকারটাও শুনলাম, শেষকালে চা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পর তৃষ্ণা এখনো জিভে লেগে। সত্যি অসাধারণ
১
ছোট্ট কিন্তু জম্পেশ লেখা।
২
পুরো লেখা বোল্ড হয়ে গেছে, অনুগ্রহ করে সম্পাদনা করে ঠিক করে দেবেন? খুব চোখে লাগছে
৩
বিনয় করে বলি, লেখায় আরেকবার শিরোনাম ও লেখকের নাম বাহুল্য। শুভ