এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • প্রাণসত্তা ও জটিল জীবদেহের অস্তিত্ব কি ভগবানের অস্তিত্বের প্রমাণ হতে পারে ?

    Debasis Bhattacharya লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৯ জুলাই ২০২০ | ৭৫৮০ বার পঠিত
  • অনেকে মনে করেন, এই যে বিচিত্র জটিল জীবদেহ এবং তার মধ্যে প্রাণ ও মনের খেলা, এ নাকি কোনও সর্বজ্ঞ ইঞ্জিনীয়ার বেশ পরিকল্পনা করে গুছিয়ে না বানালে নিজে থেকে কিছুতেই হতে পারত না । অতএব, বিবর্তন তত্ত্ব-টত্ত্ব সব ফেল, আসলে ভেতরে ভেতরে সবই ‘তাঁর’ লীলা ! দ্বাদশ শতকীয় সেন্ট টমাস অ্যাকুইনাস থেকে উনিশ শতকীয় উইলিয়াম প্যালি হয়ে বিশ শতকের শেষপ্রান্তের ‘ইরিডিউসিব্ল্ কমপ্লেক্সিটি’ তত্ত্বের উদ্গাতা মাইকেল বেহে পর্যন্ত, ‘সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে’ । এ মরীচিকা আজও প্রলুব্ধ করে পাঠমনস্ক পুরুত এবং অন্যমনস্ক বিজ্ঞান-সাক্ষরদের । যা যা বুঝিনা, সেখানেই তো …….....

    চলুন তবে, একটু ঘেঁটেঘুঁটে দেখি কেসটা ।

    আচ্ছা, জীবদেহে যদি শৃঙ্খলা ও জটিলতা থাকে, এবং আমি যদি তার কারণ না জানি, তো তার মানে তো শুধু এটুকুই দাঁড়ায় যে ওটা আছে এবং আমি তার কারণ জানিনা । এর মধ্যে আবার ভগবান-টগবান আসে কীভাবে বলুন তো ? এ যুক্তির কাঠামোটা হচ্ছে --- 'ক' কী করে হল তা জানি না, অতএব 'খ' সত্যি । স্রেফ কাণ্ডজ্ঞান খাটালেই বোঝা যায়, এ যুক্তির কোনও মানেই হয় না । বলা বাহুল্য, 'কখগ' কীভাবে হয় জানিনা, অতএব ইশ্বর আছেন --- এ রকম আজগুবি সিদ্ধান্ত মোটেই যুক্তিশাস্ত্রসম্মত নয় ।

    মনে করুন, নিশিন্দে গাঁয়ের তুখোড় মামলাবাজ ভবতারণ সরকার মহাশয় তাঁর দালানটিতে আরাম করে পা ছড়িয়ে বসে মুড়ি খেতে খেতে চোখ বুজে ভাবছেন, 'পাশের ওই সিড়িঙ্গে গাঁয়ের পুকুরপাড়ের জমিটার মালিকানা নিয়ে যখন গত পনেরো বচ্ছর ধরে রামরতন চাটুজ্জে আর প্রাণহরণ নস্করের মধ্যে আজ পজ্জন্ত কোনও মীমাংসা হল নাকো, তকন ও জমি যে আমার তাতে আর সন্দ কী ?' বলা বাহুল্য, যে যুক্তিতে মাননীয় সরকার মহাশয় ওই জমির ওপর তাঁর অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলেন, সে যুক্তি যদি আপনার কাছে গ্রহণযোগ্য না হয়, তো আগেরটাও হবে না নিশ্চয়ই । এ হল আসলে নিজের অজ্ঞতাকেই চালাকি করে জ্ঞান বলে হাজির করার চেষ্টা ।

    বাস্তব জীবনে এ রকম যুক্তিকে মানলে তার ফল দাঁড়াবে মারাত্মক । যেমন ধরুন, এই যুক্তি অনুযায়ী, যদি বলি, "আমার বগলে কীভাবে টসটসে ফোঁড়া হল জানি না, অতএব আমি আপনার থেকে লাখ খানেক টাকা পাই" --- তাহলে আপনি তৎক্ষণাৎ অধোবদনে আমাকে একলাখ টাকা দিতে বাধ্য থাকবেন । ব্যাপারটা মোটেই ভাল নয়, তাই না ?

    তার ওপর আবার ধরুন, আরও সব বখেড়া আছে । যদি কোনওমতে মেনেও নিই যে জীবদেহের সূক্ষ্মতা ব্যাখ্যা করার জন্য ভগবানকে টানতেই হবে, তাতেও আখেরে মোটেই লাভ হচ্ছে না । যখনই ওই ধরনের ‘ফেনোমেনন’ ব্যাখ্যা করার জন্য কোনও সচেতন সত্তাকে টানছেন, তখনই আসলে আপনি ঠারেঠোরে মানছেন যে, কেউ সচেতনভাবে না বানালে কোনও কিছুই ‘নিজে থেকে’ কিছুতেই ঘটতে পারত না । তা বেশ, ভাল কথা । কিন্তু গণ্ডগোলটা হচ্ছে গিয়ে, ওর পরেই প্রশ্ন আসবে, তাহলে, ঈশ্বরও তো এক বিরাট সচেতন বুদ্ধিমান সত্তা, কেউ না বানালে তিনিই বা এলেন কোত্থেকে ! এইবার ঈশ্বরকে ব্যাখ্যা করার জন্য একজন অধি-ঈশ্বর লাগবে, এবং তাঁর সম্পর্কেও একই প্রশ্ন উঠবে, সে প্রশ্নকে মোকাবিলা করার জন্য অধি-অধি-ঈশ্বরকে ডাকতে হবে, তিনিও প্রশ্ন থেকে ছাড় পাবেন না ............. এভাবেই চলতে থাকবে অনন্তকাল, সমস্যার আর সমাধান হবে না । এই ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিকে যুক্তিশাস্ত্রে বলে 'ইনফাইনাইট রিগ্রেস' ।

    আর যদি বলেন ঈশ্বরকে সৃষ্টি করতে হয় না কারণ তিনি স্বয়ম্ভূ, তাহলে প্রশ্ন উঠবে, 'স্বয়ম্ভূ' কিছু থাকতে পারে বলে যদি মানতেই হয় তো এই জীবশুদ্ধু জড়জগতটা নিজেই স্বয়ম্ভূ এমন ভাবলেই তো হয়, ভগবান ভদ্দরলোককে আর খামোখা কষ্ট দেওয়া কেন ? আর সবশেষে, এত কিছু ঘাপলাও যদি মানতে প্রস্তুত থাকেন, তাতেও লাভ নেই । ঈশ্বর তো এক অজানা বস্তু (বা সত্তা) যা দিয়ে আপনি জগতকে (বা তার অংশবিশেষ জীবকে) ব্যাখ্যা করছেন । কিন্তু, তাতে আদৌ জ্ঞানবৃদ্ধি হচ্ছে কি ? ধরুন আপনি জীবনে প্রথম বাঘ দেখলেন । আপনি নিশ্চয়ই এবার তাকে 'বন্যজন্তু', 'চারপেয়ে', 'হিংস্র', 'মাংসাশী' ইত্যাদি জানাচেনা ধারণার সঙ্গে জুড়ে আমাদের জানা জগতের কোথাও একটা স্থান করে দিতে চাইবেন, আপনার পূর্ব ধারণার সাপেক্ষে তাকে বুঝতে চাইবেন, ইতিমধ্যে যা যা জানা আছে তার সঙ্গে তাকে যুক্ত করে বুঝতে চাইবেন । অজানা জিনিসকে আমরা এভাবেই জানি বুঝি, না হলে 'জানা' ব্যাপারটার কোনও মানেই থাকেনা । এবারে ভেবে দেখুন, জীবদেহ সৃষ্টির অজানা কারণকে আপনি যদি অজানা ইশ্বর দিয়ে ব্যাখ্যা করেন, তাহলে আপনি অজানা জিনিসকে অজানা জিনিসের সঙ্গে যুক্ত করে ফেললেন, তাতে আপনার মনে ভুয়ো জ্ঞানের তৃপ্তিটা ঠিকই এল, কিন্তু প্রকৃত অর্থে জ্ঞানবৃদ্ধিটা মোটেই হল না । শিশুবেলার গল্পের সেই চালাক চরিত্র যেমন বাঘকে ভয় পাওয়াবার জন্য বলেছিল, ‘ঝপাংটা দে তো, ব্যাটাকে ভতাং করে দিই’ --- এও সেই রকম । অর্থাৎ, ভগবান মহাশয় আপনার এই জগতটাকে বুঝতে আপনাকে মোটেই সাহায্য করতে পারছেন না ।

    অষ্টাদশ দশকের স্কটিশ দার্শনিক ডেভিড হিউম আরও একটা অসাধারণ যুক্তি দিয়েছিলেন । বলেছিলেন, মানুষের বানানো যে কোনও জিনিস, এখানে ধরুন একটা ‘শার্ট’ বা জামার কথাই ধরা যাক, সে তো আর একজনে বানায় না, অনেক রকমের অনেক মিস্ত্রি মিলে বানায় (এখানে শুধু হিউমের যুক্তির কাঠামোটুকুই নিচ্ছি, দৃষ্টান্তটি আমার, হিউম জামার উদাহরণটি বলেননি)। জামার কাপড়টা কেউ বানায়, কেউ রং-টা বানায়, কেউ সেই রং-টা কাপড়ে লাগায়, কেউ কাপড়টা কাটে, কেউ সেলাই করে, কেউ পালিশ ও ইস্ত্রি করে ভাঁজটাজ করে দোকানে পাঠাবার জন্য তৈরি করে দেয় । তাহলে এই জগৎকে যদি কেউ বানিয়েই থাকে, তো সে নিশ্চয়ই একটা মাত্র ঈশ্বর নয়, অনেক সংখ্যায় এবং অনেক রকমের পুরো একদল মিস্তিরি-ঈশ্বর । তা যদি সত্যি হয়, তাহলে ব্রহ্ম-গড-আল্লা জাতীয় সমস্ত একেশ্বরই তো লাটে উঠে যাবে !

    ওপরে শুধুই দার্শনিক ‘আর্গুমেন্ট’ বা যুক্তিতর্ক দিয়েছি, এবারে বিজ্ঞানের কথাও বলি দুয়েকটা । একটা প্রধান যুক্তি হচ্ছে --- জীবদেহ মোটেই একটা সুপরিকল্পিত ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইনের মত নয়, তাতে বহু খুঁত আছে, আছে দীর্ঘদিন ধরে এলোমেলো অন্ধ 'ট্রায়াল অ্যান্ড এরর' প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সুস্পষ্ট ছাপ । তাছাড়া, অন্ধ জড় প্রক্রিয়ায় এক ধাপে সরল প্রাণ তৈরি হওয়ার পরে দ্বিতীয় ধাপে আবার সেই অন্ধ প্রক্রিয়াতেই ওই সরল প্রাণ থেকে আরেকটু জটিল প্রাণ সৃষ্টি হতে পারে, এবং বার বার এই প্রক্রিয়া চলতে চলতে শেষ পর্যন্ত প্রচণ্ড জটিল জীব সৃষ্টি হতে পারে, যাকে জড় প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হওয়া অসম্ভব বলে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে --- এ সম্ভাবনার কথাও বিজ্ঞানীরা অনেকবারই বলেছেন । এই চমৎকার এবং সুপরিচিত যুক্তি দুটির পুনরাবৃত্তি না করে এখানে আমি আরও দুয়েক কথা যোগ করতে চাইব ।

    প্রথমত, জীবদেহের রাসায়নিক 'বিল্ডিং ব্লক' বা মূল উপাদান ‘অ্যামিনো অ্যাসিড’ যে অতি সাধারণ কিছু গ্যাস থেকে আপনা আপনি তৈরি হতে পারে, এইটা সেই পাঁচের দশকেই বিজ্ঞানীরা হাতে কলমে করে দেখিয়েছেন (এবং তার পর থেকে আরও অনেকবার, আরও ভালভাবে) । রসায়নাগারে মাত্র দশ বারো দিনে যদি এটা ঘটতে পারে, তাহলে বিরাট উন্মুক্ত পৃথিবীতে কোটি কোটি বছরে কী ঘটতে পারে, সেটা সহজেই অনুমেয় (কোটি কোটি বছরের পরিসরে এমন কি মহাকাশের অসম্ভব কঠিন পরিবেশেও জৈব পদার্থ তৈরি হতে দেখা গেছে) ।

    দ্বিতীয়ত, প্রাণের যে মূল বৈশিষ্ট্যটি, অর্থাৎ পরিবেশ থেকে ক্রমাগত শক্তি ও পদার্থ আত্মসাৎ করে নিজেকে টিঁকিয়ে রাখা, এই ব্যাপারটার জড়বৈজ্ঞানিক ভিত্তি এবং সেইহেতু সম্পূর্ণ জড় প্রক্রিয়া থেকে তার উদ্ভবের সম্ভাবনাটাও আজ আমরা তাত্ত্বিকভাবে বুঝতে পেরেছি । ব্যাখ্যা করা যাক । এই যে আমরা প্রশ্ন করছি, জীবদেহের মত একটা জটিল বস্তু শুধু শুধু ‘নিজে থেকে’ কীভাবে হয়ে উঠতে পারে, তার পেছনে আমাদের একটা 'স্বাভাবিক' বোধ কাজ করে । বোধটা এই রকম যে, ধ্বংস বা নষ্ট হয়ে যাওয়াটা বস্তুর 'স্বাভাবিক' ব্যাপার, কিন্তু কোনও একটা ভাল জিনিস বানিয়ে তুলতে গেলে সবসময়েই তার পেছনে পরিকল্পিত শ্রম লাগে । যে চিনামাটির কাপটা দিয়ে আপনি চা খাচ্ছেন সেটা তৈরি করতে অনেক সুশৃঙ্খল মেহনত লেগেছে, কিন্তু হাত থেকে পড়ে গেলেই ওটা নিজে থেকে ভেঙে নষ্ট হয়ে যাবে, তখন আর পরিকল্পিত শ্রম লাগবে না । জিনিসপত্তর হাত থেকে পড়ে গিয়ে শুধুই ভেঙে চুরমার হতে পারে, কিন্তু ভাঙা জিনিস হাত থেকে পড়ে গিয়ে কখনও স্বতঃস্ফূর্তভাবে জুড়ে গিয়ে গোটা জিনিস হয়ে যেতে পারে না । যখন আমরা অবাক হয়ে প্রশ্ন করি যে, জীবন কীভাবে 'নিজে নিজে তৈরি হয়ে গেল', তখন জগৎ সম্পর্কে এই অভিজ্ঞতাজাত বোধই হয়ত বা আমাদের মনের ভেতরে কাজ করে চলে । এ বোধ কুসংস্কার নয়, এর দৃঢ় বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে । 'থার্মোডিনামিক্স' বা তাপগতিবিদ্যার নিয়ম হল, বস্তুর ভেতরকার 'এনট্রপি' নামক একটি তাপীয় ধর্ম সব সময়েই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাড়তে থাকে । বিজ্ঞানীরা অঙ্ক কষে দেখিয়েছেন, ওই 'এন্ট্রপি' নামক রাশিটি বাড়লেই তার ফলে বস্তুর অন্তর্নিহিত বিশৃঙ্খলাও কেবলই বাড়তে থাকে । এই বোধ থেকেই আমরা প্রশ্ন করি যে, প্রাণসৃষ্টির ক্ষেত্রে তবে বিভিন্ন বিচিত্র বস্তু নিজে নিজেই সুচারুভাবে পরস্পরের সাথে জুড়ে একটা জটিল ব্যবস্থা বানিয়ে তুলল কীভাবে ।

    সাতের দশকে এ প্রশ্নের অসাধারণ উত্তর নির্ণয় করেছিলেন বেলজিয়ামের বিজ্ঞানী ইলিয়া প্রিগোজিন, তত্ত্বগত এবং পরীক্ষামূলক উভয় পদ্ধতিতেই, এবং সেই সুবাদে হস্তগত করেছিলেন নোবেল পুরষ্কার । তিনি দেখিয়েছিলেন, পদার্থের অলঙ্ঘ্য নিয়মে এনট্রপি ক্রমাগত বাড়ে বটে, কিন্তু এনট্রপি বাড়লেই বিশৃঙ্খলা বাড়বে এই কথাটা আসলে খাটে শুধু বস্তুর তাপীয় সাম্যের দশায় । অথচ, যেক্ষেত্রে তাপীয় অসাম্যের দশা রয়েছে, সে ক্ষেত্রে বাইরে থেকে শক্তি সরবরাহ করা হলে ঠিক উল্টো ঘটনাও ঘটতে পারে --- বস্তুর মধ্যে উদ্ভব ঘটতে পারে নব নব জটিল শৃঙ্খলার । অর্থাৎ, জড় পদার্থের সম্পূর্ণ অচেতন অন্ধ নিয়মকানুন থেকেই উদ্ভব ঘটতে পারে প্রাণ-ব্যবস্থার !

    এই আপাত-অসম্ভব ঘটনাটি যে ঘটতে পারে সম্পূর্ণ জড় এবং অন্ধ প্রক্রিয়ার সাহায্যেই, এটা বিজ্ঞানী প্রিগোজিন দেখিয়েছিলেন অঙ্ক কষে, এবং সরাসরি হাতে কলমেও । তার পরে অন্য বিজ্ঞানীরা আরও সব চমকপ্রদ পরীক্ষানিরীক্ষা করে বিষয়টিকে ঘটিয়ে দেখান । আবদ্ধ জলপাত্রে যেমন জলে ক্রমাগত টোকা মেরে তৈরি করা যায় 'স্ট্যান্ডিং ওয়েভ' বা স্থাণু তরঙ্গ, ঠিক তেমনিই তাঁরা পরীক্ষাগারে জটিল রাসায়নিক ব্যবস্থার মধ্যে সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন 'কেমিক্যাল ওয়েভ', অর্থাৎ, রাসায়নিক বিক্রিয়া নিজেই নিজেই বেড়ে ওঠা এবং কমে যাওয়ার স্বয়ংক্রিয় অথচ স্থায়ী ঢেউ । এই সমস্ত তত্ত্ব ও পরীক্ষানিরীক্ষাগুলো ভীষণই কঠিন এবং যাকে বলে 'সফিস্টিকেটেড', কিন্তু এ প্রক্রিয়ার খুব সহজ ও পরিচিত দৃষ্টান্তও আছে । জল গরম করতে থাকলে 'স্বাভাবিকভাবে' জলের অণুগুলোর মধ্যেকার রাসায়নিক বন্ধন ক্রমশ ঢিলে হতে হতে সেগুলো নড়বড়ে ও বিশৃঙ্খল হয়ে উঠতে থাকে, অথচ একটা পর্যায়ে গিয়ে দেখা যায় সেখানে পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হচ্ছে, যা কিনা ওই ব্যবস্থার মধ্যে থেকেই এক নতুন তৈরি হওয়া জটিল শৃঙ্খলা । এভাবে, প্রিগোজিন ও তাঁর সুযোগ্য সাথীরা উন্মোচিত করেছিলেন প্রাণকে বোঝার উপযোগী এক আশ্চর্য নতুন পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও গণিত ।

    প্রাণের মত একটি ‘ইন্টের্যাক্টিভ সেল্ফ সাসটেইনিং অটোমাটা' বা 'পরিবেশের সাথে আদানপ্রদান করে নিজেকে টিঁকিয়ে রাখা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা' যে জড়ের মধ্যে থেকে নিজে নিজেই জন্ম নিতে পারে, সে উপলব্ধির দ্বার এই অসামান্য বিজ্ঞানীরা হাট করে খুলে দিয়েছেন আমাদের জন্য ।

    এবং, সেইহেতু, চিরতরে নিকেশ করে দিয়েছেন প্রাণের উৎপত্তি নিয়ে মিস্টিক জল্পনার সুযোগটিও !
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৯ জুলাই ২০২০ | ৭৫৮০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sm | 2402:3a80:a6d:3e65:0:63:7f6b:***:*** | ০৯ জুলাই ২০২০ ১০:৩৪95008
  • যদি ব্রহ্মাণ্ড দেখি বা ইউনিভার্স।তাহলে বৈজ্ঞানিক দের যুক্তি অনুযায়ী সেটি মোটামুটি চৌদ্দ বিলিয়ন বছর আগে সৃষ্টি হয়েছে।ঠিক আছে,কোন দ্বিমত নেই।

    তাহলে ঐ চৌদ্দ  বিলিয়ন বছরের আগে ওখানে কি ছিল??

    ইউনিভার্স সীমিত হলে,তার বাইরে কি আছে?? আর একটি ইউনিভার্স?তার বাইরে?তার বাইরে? কোন সন্তোষ জনক উত্তর আছে!?

    পরমাণু বিভাজন করে পেলাম ইলেকট্রন,প্রোটন।সেগুলো বিভাজন করে কি পেলাম?তাকে বিভাজন করে?

    ঈশ্বর নিয়েও প্রশ্ন গুলো এরকম,কৌতূহলোদ্দীপক। ঈশ্বর আছে বা নেই এই প্রশ্ন অবান্তর।কারণ এর উত্তর সায়েন্স এর কাজে লাগে না। সায়েন্স এর কাজ হলো সত্য অনুসন্ধান।এই সত্যও নির্দিষ্ট ফ্রেম এর স্বাপেক্ষে।

  • dc | 103.195.***.*** | ০৯ জুলাই ২০২০ ১০:৫৬95010
  • সাবজেক্টটা ভারি ইন্টারেস্টিং, কিন্তু লেখক কিছু অপ্রয়োজনীয় বিষয় ঢুকিয়েছেন মনে হলো ঃ-) প্রথমদিকে কয়েকটা প্যারায় অতো বিস্তারিত না বলে শুধু অকামস রেজরের কথা উল্লেখ করলেই বোধায় হয়ে যেত।

    তার থেকে বরং এনট্রোপি নিয়ে আরও বেশী আলোচনা করা যেত, কারন এটা সত্যিকারের ইন্টারেস্টিং বিষয়। ইলিয়া প্রিগোজিনের উল্লেখ দেখে ভালো লাগলো। এছাড়াও গ্র্যাভিটেশনাল কোল্যাপ্সের ফলে ওপেন সিস্টেমের এনট্রোপি কমা নিয়ে আলোচনা হলে ভারি ভালো লাগতো। এ ব্যপারে পেনরোজ সাহেবের বিস্তারিত চর্চা আছে, যেখানে উনি ঠিক এই প্রশ্নটার ব্যখ্যা দিয়েছেন - বায়োলজিকাল সিস্টেমের আপাত লো এনট্রোপির কারন কি। অন্যরাও এর উত্তর দিয়েছেন।

    তবে অন্য একটা রহস্য আছে, যেটা নিয়েও অনেক চর্চা চলছে, সেটা হলো ফান্ডামেন্টাল কনস্ট্যান্টগুলোর ফাইন টিউনিং আর বিগ ব্যাং এর ভয়ানক লো এনট্রোপি স্টেট নিয়ে। এই লো এনট্রোপিরও সম্ভাব্য সমাধান পেনরোজ দিয়েছেন কনফর্মাল সাইক্লিকাল কসমোলজি (সিসিসি) তত্ত্বে, যদিও সেটা আপাতত খুব একটা গ্রহনযোগ্য হয়নি।
  • Debasis Bhattacharya | ০৯ জুলাই ২০২০ ১২:০৯95013
  • বিপ্লব রহমান,

    কৃত্রিম কোষের আত্মা থাকতে পারে কিনা সে নিয়ে ভাবতে গিয়ে একটা দার্শনিক প্রবাদবাক্য মনে পড়ল --- "যে দার্শনিকরা কুকুর পোষেন তাঁরা বিশ্বাস করেন যে কুকুরের আত্মা আছে, তবে কিনা, যে দার্শনিকরা কুকুর পোষেন না তাঁরা তা মোটেই বিশ্বাস  করেন না ।"

  • Debasis Bhattacharya | ০৯ জুলাই ২০২০ ১৩:০০95015
  • sm,

    ব্রহ্মাণ্ড নিয়ে জানা অনেক বাকি আছে, কাজেই ধোঁয়াশা আর প্রশ্নও আছে বিস্তর, স্বভাবতই ।  এই কিছুকাল আগেও 'স্টেডি স্টেট থিওরি' নামক এক সমান্তরাল বিশ্বতত্ত্ব সক্রিয় ছিল, যার বক্তব্য ছিল 'বিগ ব্যাং' বলে কিছুই ঘটেনি এবং মহাবিশ্ব চিরকালই ছিল ও আছে --- এবং সে তত্ত্বের  গাণিতিক ও দার্শনিক উভয় দিকই খুব মজবুত ছিল । মহাবিশ্বের 'ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন' আবিষ্কারের পর সে তত্ত্ব এখন পিছিয়ে পড়লেও, বর্তমানে মহাবিশ্বতত্ত্বের নানা সংস্করণ চালু আছে, এবং নানা গুরুতর অসামাধিত প্রশ্নও আছে । তবে, বর্তমানের মহাবিশ্বতত্ত্বে 'বিগ ব্যাং-এর আগে কী ছিল' জাতীয় প্রশ্নের জন্য খুব বেশি পরিসর নেই । বিকাশমান চতুর্মাত্রিক মহাবিশ্বে 'বিগ ব্যাং' একটু ঘটনাবিন্দু মাত্র, এবং তার ওপারে কী আছে এ প্রশ্ন অর্থহীন । পৃথিবী গোলাকার এইটা জানার পরে যেমন 'উত্তর মেরুর উত্তরে কি আছে' এ প্রশ্নের আর কোনও মানে থাকেনা, এও অনেকটা সেই রকম ।

    আমাদের মহাবিশ্বের বাইরে আরও অসংখ্য মহাবিশ্ব আছে, অনেক বিশেষজ্ঞই আজ এটা এক গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বগত সম্ভাবনা বলে মনে করেন, কেউ কেউ এমনকি এর পরীক্ষামূলক প্রমাণও সম্ভব বলে মনে করেন ।

    উপ-পারমাণবিক কণার আরও মূলগত উপাদান তত্ত্বগতভাবে আবিষ্কৃত হয়েছে, এবং যন্ত্রেও নাকি তার দেখা মিলেছে, তার নাম 'কোয়ার্ক' বা 'কার্ক' । 'Quark' লিখে গুগল করলেই দেখতে পাবেন ।

    ঈশ্বর আছে কি নেই এ প্রশ্ন বিজ্ঞানের কাছে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ । সামাজিকভাবে তো বটেই, দার্শনিক এবং পদ্ধতিগতভাবেও । ঈশ্বর থাকলে তিনিই তো সব কিছুর কারণ, এবং সেইহেতু সব কিছুর তত্ত্বগত ব্যাখ্যাও বটেন । তাহলে আর 'কেন', 'কীভাবে' --- এইসব প্রশ্নের প্রাসঙ্গিকতা কোথায় ? কাজেই, ঈশ্বরের অনস্তিত্বই মানুষের জিজ্ঞাসাকে অর্থপূর্ণ করে তোলে । তা না হলে বিজ্ঞান ও দর্শনের কোনও মানেই থাকত না ।

  • Debasis Bhattacharya | ০৯ জুলাই ২০২০ ১৩:১৯95016
  • dc,

    অপ্রয়োজনীয় কথা লিখেছি বলে মনে করিনা, যদিও কথাগুলোর মধ্যে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বিশারদরা নতুন কিছু না-ই খুঁজে পেতে পারেন । এ তো আর বিশেষজ্ঞদের জন্য লেখা প্রবন্ধ নয় । বৈদ্যায়তনিক গবেষণাপত্রে হয়ত বা 'ওকাম'স রেজর' বা 'ইনফাইনাইট রিগ্রেস' জাতীয় পরিভাষা বলে দিলেই চলে যায়, ব্যাখ্যার দরকার পড়েনা । কিন্তু 'পপুলার রাইটিং'-এ সে সবের ব্যাখ্যা না দিলে লেখাটার কোনও মানেই থাকবে না ।

    এ প্রসঙ্গে 'গ্রাভিটেশনাল কোলাপ্স' ব্যাখ্যা করা কেন জরুরি, বুঝিনি । আপনি বুঝিয়ে দিলে হয়ত বুঝতে পারব । তবে, জীবদেহের অপূর্ব শৃঙ্খলার জন্য যে 'লো এন্ট্রপি'-র দরকার নেই, কারণ তাপীয় অসাম্যের ক্ষেত্রে মুক্ত ব্যবস্থায় এন্ট্রপি বাড়লে শৃঙ্খলা বাড়ে --- এটাই ছিল প্রিগোজিনের বক্তব্য, এবং সেটাই আমি এখানে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি ।

    হ্যাঁ, 'কসমোলজিক্যাল ফাইন টিউনিং' হল ধর্ম আর বিজ্ঞান মিশিয়ে ঘ্যাঁট রান্না করবার আরেকটি উর্বর ক্ষেত্র । এ নিয়ে পরে 'গুরু'-তে লেখার ইচ্ছে রইল । 

  • sm | 2402:3a80:a6d:3e65:0:63:7f6b:***:*** | ০৯ জুলাই ২০২০ ১৪:০০95018
  • বিতর্ক টা ভুল দিকে যাচ্ছে।প্রথমেই ধরি, ওকামস রেজর।এর অর্থ অপ্রয়োজনীয় তথ্য হাইপোথিসিস বাদ দিয়ে যুক্তিগ্রাহ্য সরল মতটি গ্রহণ।

    কিন্তু লক্ষ্যনীয় খুব কমপ্লেক্স জিনিষ বা থিওরি এই সূত্র দিয়ে মানা যায় না।পাঁচ শত বছরের পুরনো দার্শনিক ভিউ।নিউটন তার গতি সূত্র গুলি এই প্রিন্সিপল কে ভিত্তি করে নামালেন।কিন্তু আটকে গেলো রিলেটিভিটি সূত্র আবিষ্কারের পর।অর্থাৎ নিউটনের গতি সূত্র একটি নির্দিষ্ট ফ্রেমে গিয়ে আটকে গেলো।স্পেস যে দুমড়ে যায় সেটা জানা অসম্ভব ছিল।

    একটি আবিষ্কার বা থিওরি যুক্তি গ্রাহ্য হবে যদি সেটি ফলসিফিকেশন থিওরি ফলো করে।যদি সেটি রিপিটেড এক্সপেরিমেন্ট এ সফল ভাবে পরীক্ষিত হয়। অর্থাৎ কোন মতবাদ ই ধ্রুবক ন য়।সময়ের সঙ্গে পাল্টে যেতে পারে।

    দুম করে বলে দেওয়া যায় না;ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টির আগে কি ছিলো সেটি অবান্তর প্রশ্ন।ব্রহ্মাণ্ডের পরে কি আছে সেটি জানাও অবান্তর ন য় । পরমাণু বিভাজন ও ক্রম বিভাজন ও একই প্রশ্ন।

    ঈশ্বর আছে কি নেই,সেটিও ওই কোয়েস্ট এর অংশ।মন বা মনন কি সেটিও একই জিজ্ঞাসা। আম আদমি সেটি, আত্মা কি বলে জিজ্ঞাসা করে।

    কিন্তু বর্তমান ফ্রেমে ঈশ্বর কি,মন কি বা আত্মা কি সেটি বর্তমান বিজ্ঞানের ডেফিনিশন দিয়ে বাঁধা সম্ভব নয়। অর্থাৎ ফলসিফিকেষণ থিওরী এপ্লাই হবে না।এক্সপেরিমেন্ট করে প্রমাণ ও করা যাবে না।

    তাই বলেছিলাম,ঈশ্বর আছে কি নেই সেটি বর্তমান বিজ্ঞানের পরিধির বাইরে।কিন্তু কোয়েস্ট থেকে যাবেই।

  • dc | 103.195.***.*** | ০৯ জুলাই ২০২০ ১৫:১২95021
  • Debashis বাবু আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। ঠিকই বলেছেন, কোয়ার্ক আবিষ্কার হয়েছে, আবার এদের মধ্যে স্ট্রং নিউক্লিয়ার ফোর্স মেডিয়েটর হিসেবে গ্লুয়নও আবিষ্কার হয়েছে। এসবই ভারি ইন্টারেস্টিং বিষয়।

    "এ প্রসঙ্গে 'গ্রাভিটেশনাল কোলাপ্স' ব্যাখ্যা করা কেন জরুরি" - আমি বলতে চেয়েছিলাম লো এনট্রোপি স্টেটের অরিজিন গ্র্যাভিটেশনাল কোল্যাপস দিয়েও করা হয়েছে। বায়োলজির সাথে এর রিলেশান নিয়ে সময় পেলে আরও লেখার চেষ্টা করব।
  • Debasis Bhattacharya | ০৯ জুলাই ২০২০ ১৮:৪৫95031
  • sm,

    মনে হচ্ছে 'ওকামস রেজর', 'ফলসিফিকেশন থিওরি', এইসব কথাগুলো বোঝার ব্যাপারে আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে । ওসব কথা থেকে অন্যান্য যে সব কথায় পৌঁছচ্ছেন, সেখানে পৌঁছবার কথা না । আপেক্ষিকতাবাদ বা অন্য কোনও বৈজ্ঞানিক তত্ত্বই অপ্রয়োজনীয় ধ্যানধারণাকে প্রশ্রয় দেয় না, এবং সেইহেতু 'ওকামস রেজর' নীতিকেও কখনওই ভঙ্গ করেনা । আর, 'ফলসিফিকেশন' মোটেই যুক্তিগ্রাহ্যতার একমাত্র মাপকাঠি নয়, বা সব তত্ত্বকেই এক সময়ে পাল্টে যেতেই হবে এমন ফতোয়াও নয় (এর যে কোনও একটি সত্যি হলেই বিজ্ঞান বস্তুটি লাটে উঠত) ।

    যদি বলেন, মানুষ অনেক কিছুই জানে না অতএব বিগ ব্যাং-এর ওপারে ভূত আছে কিনা সে নিয়ে মাথা ঘামানো জায়েজ, তাহলে আর কথা না বাড়ানোই ভাল । শুধু এইটুকু বলি, কিছু কিছু জিনিসকে সত্যি বলে মানতে গেলে অন্য কিছু কিছু জিনিসকে মিথ্যে বলে মানতেই হয়, না হলে সত্যি-মিথ্যের তফাত থাকে না । জ্ঞানের অগ্রগতির পথে কিছু কিছু ধারণা ও প্রশ্নকে পেছনে ফেলে আসতেই হয় । না হলে নিয়ানডার্থালের সঙ্গে আমাদের বৌদ্ধিক তফাত শুধু এইটুকু দাঁড়াবে যে, আমরা ওদের থেকে কিঞ্চিৎ বেশি বিভ্রান্ত ।

    ঈশ্বর আছে কি নেই সেটি বর্তমান বিজ্ঞানের পরিধির বাইরে নয় । আমি বলছিলাম, ঈশ্বর বলে কিছু নেই --- এখান থেকেই বিজ্ঞান কাজ শুরু করে । ভাল করে ভেবে দেখবেন । 

  • Debasis Bhattacharya | ০৯ জুলাই ২০২০ ১৮:৪৮95032
  • dc,

    মহাকর্ষীয় সংকোচন ও প্রাণের সম্পর্ক নিয়ে আপনার লেখা পড়ার ইচ্ছে রইল ।

  • sm | 2402:3a80:a6d:3e65:0:63:7f6b:***:*** | ০৯ জুলাই ২০২০ ২১:০৪95040
  • Feynman writes:

    I do not believe that science can disprove the existence of God; I think that is impossible. And if it is impossible, is not a belief in science and in a God — an ordinary God of religion — a consistent possibility?

    Yes, it is consistent. Despite the fact that I said that more than half of the scientists don’t believe in God, many scientists do believe in both science and God, in a perfectly consistent way. But this consistency, although possible, is not easy to attain, and I would like to try to discuss two things: Why it is not easy to attain, and whether it is worth attempting to attain it.

    অকামস রেজর বা ফলসীফিকেশন হলো উপলব্ধির ব্যাপার। উপলব্ধি করলে,চিন্তায় পরিবর্তন আসবে।
    সায়েন্স পরিবর্তনশীল। বর্তমান সায়েন্স এর পক্ষে ঈশ্বর এর অস্তিত্ব নেই,সেটা প্রমাণ করা অসম্ভব।ফাইনম্যান কি বলেছেন,দেখা যেতে পারে।
    যেমন,বর্তমান সায়েন্স এর পক্ষে বলা সম্ভব নয়,ইউনিভার্স সৃষ্টির আগে কি ছিলো?উত্তর আসবে কিছুই ছিলো না।বা প্রশ্ন টাই অবান্তর।ইউনিভার্স এর মতই ঈশ্বর বিশ্বাসীরা স্বয়ম্ভু কথা বলে থাকে।
  • Debasis Bhattacharya | ১০ জুলাই ২০২০ ০১:১২95043
  • যদ্দুর মনে পড়ে, এটি সম্ভবত ফিইনম্যানের 'রিলিজিয়ন অ্যান্ড সায়েন্স' বক্তৃতা থেকে নেওয়া । এর গোটাটাই আমি পড়েছি, মোটেই খুব কনভিন্সিং কিছু নয় । বক্তৃতাটি ফিইনম্যান দিয়েছিলেন এক ধর্মীয় সংস্থার আহ্বানে, এবং তাদেরই দপ্তরে । কাজেই, ওখানে খুব পরিষ্কার করে কিছু বলবেন, এমন সম্ভাবনা ছিল যৎসামান্য । আপনি যদি লেখাটি পুরো পড়ে থাকেন, তবে আপনি জানবেন যে, ফিইনম্যান আসলে মোটেই স্বয়ং ঈশ্বরকে বিজ্ঞানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে করেননি । তিনি শুধু এইটুকু বলতে চেয়েছিলেন যে, ঈশ্বরবিশ্বাস নৈতিকতা রক্ষায় সহায়তা করে, এবং এই প্রশ্নে বিজ্ঞানের সাথে তার কোনও বিরোধ নেই । বলা বাহুল্য, এ যুক্তি একান্ত দুর্বল, আস্তিক বা নাস্তিক কেউই এর সাথে একমত হবেন না । উভয় পক্ষই সম্ভবত বলবেন, নিছক নৈতিকতা রক্ষার জন্য ঈশ্বরের কোনও দরকার ছিল না । 

    "বর্তমান সায়েন্স এর পক্ষে ঈশ্বর এর অস্তিত্ব নেই", সেটা প্রমাণ করা "অসম্ভব" নয়, অপ্রয়োজনীয় । কারণ, প্রথমত, বিজ্ঞান শুরুই হয় ঈশ্বরের অস্বীকৃতি দিয়ে । দ্বিতীয়ত, 'ঈশ্বর' শব্দটি আসলে অর্থহীন, এটা আজকের বিজ্ঞান ও দর্শন দেখাতে পারে ।  

  • sm | 2402:3a80:a6d:3e65:0:63:7f6b:***:*** | ১০ জুলাই ২০২০ ১০:৩২95047
  • তাহলে ঐ সিম্পল প্রশ্নটির উত্তর কি হলো?ইউনিভার্স সৃষ্টির আগে সেখানে কি ছিলো? ইউনিভার্স এর পরে কি আছে?

  • sm | 42.***.*** | ১০ জুলাই ২০২০ ১০:৪১95048
  • কার্ল সাগান কি বলেছেন
    another description of his view on the concept of God, Sagan wrote:

    The idea that God is an oversized white male with a flowing beard who sits in the sky and tallies the fall of every sparrow is ludicrous. But if by God one means the set of physical laws that govern the universe, then clearly there is such a God. This God is emotionally unsatisfying ... it does not make much sense to pray to the law of gravity.[98]
  • সাবোধান | 2a0b:f4c2:1::***:*** | ১০ জুলাই ২০২০ ১০:৫৯95049
  • দেবাশিস
    এই এসএম এর সাথে তর্কে জড়াবার আগে এই থ্রেডে চোখ বুলিয়ে এসেমের পোস্টগুলো দেখে নিলে এনার্জি আর সময় অপচয় করা উচিত কিনা সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধে হবেক।

    https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=12290&page=1
  • sm | 42.***.*** | ১০ জুলাই ২০২০ ১১:০১95050
  • সাগান এর আরো বক্তব্য -
    An atheist is someone who is certain that God does not exist, someone who has compelling evidence against the existence of God. I know of no such compelling evidence. Because God can be relegated to remote times and places and to ultimate causes, we would have to know a great deal more about the universe than we do now to be sure that no such God exists. To be certain of the existence of God and to be certain of the nonexistence of God seem to me to be the confident extremes in a subject so riddled with doubt and uncertainty as to inspire very little confidence indeed.[99]
    দেখা যাক ফ্রান্সিস কলিন্স কি বলেছেন?উনি NIH এর ডিরেক্টর ও হিউম্যান জিনোম প্রোজেক্ট এর লিড ছিলেন।স্ট্রং বিলিভার অফ দ্যা গড
    COLLINS: If God is who God claims to be, and who I believe he is, then he is not explainable in natural terms. He is outside the natural world; outside of space and time
  • Debasis Bhattacharya | ১০ জুলাই ২০২০ ১৩:৫৬95056
  • sm,

    আউটসাইড অফ স্পেস অ্যান্ড টাইম গিয়ে একটা হিউম্যানিটারিয়ান কোশ্চেন করি আপনাকে । এক কতা বার বার কয়ে কয়ে আমার মুকে যদি ফেনা উটে যায়, আর এই কোভিডের বাজারে হাসপাতালের ভালমানুষগণ যদি আমাকে ভর্তি করতে অস্বীকার করে, তো আমার যে কী দশা হবে, ভেবে দেকেচেন মোয়ায় ? 

    সাবোধান,

    sm মাঝেসাঝেই আমার থ্রেডে এসে তাঁর দ্বিধাগ্রস্ত মতামত সম্পূর্ণ নির্দ্বিধায় এবং অত্যন্ত জোরের সাথে ব্যক্ত করে থাকেন, কাজেই তাঁর অবস্থান ও শৈলি আমার অজানা নয় । তবে, ওই থ্রেড-টির সন্ধান দেবার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ । এখানে যে নাস্তিকতা নিয়ে এমন এক দীর্ঘ কথোপকথন চলছে, আদৌ জানতুম না ।

  • sm | 2402:3a80:a6d:3e65:0:63:7f6b:***:*** | ১০ জুলাই ২০২০ ১৪:১৪95057
  • আপনি খালি একটি প্রশ্নের উত্তর দেবেন,ব্যাস।ইউনিভার্স সৃষ্টির আগে ওখানে কি ছিলো আর ইউনিভার্সের পর কি আছে?

    আর এতগুলো বিজ্ঞানী দের কমেন্ট দিলাম।আরো অনেক উদাহরণ দিতে পারি।তারা অন্তত কিছুটা ইন্টেলিজেন্ট মনে করি। দৃঢ়ভাবে তাদেরকে এমন অস্বীকার করতে তো কাউকে দেখিনি।উত্তর জানা না থাকলে কোন কথা নেই।

  • r2h | 49.37.***.*** | ১০ জুলাই ২০২০ ১৪:৩১95058
  • আমার মনে হয় এগরোলের দোকান ছিল। একদিন ঠিক হলো ইউনিভার্স হবে, তাই পুলিশ এসে রোলের দোকান তুলে দিল।

    পরে কী হবে তা নিয়ে কিছু অনুমান করতে পারছি না।
  • sm | 2402:3a80:a6d:3e65:0:63:7f6b:***:*** | ১০ জুলাই ২০২০ ১৪:৪৪95059
  • আপাতত এই তিন মিনিটের ভিডিও ক্লিপস শুনলেই অনেক ভুল ভ্রান্তি শুধরে যাবে। অবিশ্যি,সব গাছ দিয়েই তো ঔষধি তৈয়ারী হয় না!
  • Debasis Bhattacharya | ১০ জুলাই ২০২০ ১৫:০২95060
  • sm,

    ভিডিও-টি আপনার মন্তব্যের মতই অতি চমৎকার । এগরোলের দোকান তুলে দিয়ে ইউনিভার্স বানাবার ব্যাপারে পুলিশের সিদ্ধান্ত পুরো ভুল ছিল, বুঝতে পেরেছি । আপনার দেওয়া ভিডিও-লিঙ্ক সত্যিই আমার ভুল-ভ্রান্তি শুধরে দিয়েছে, অনুগ্রহ করে বিশ্বাস করুন । 

  • sm | 2402:3a80:a6d:3e65:0:63:7f6b:***:*** | ১০ জুলাই ২০২০ ১৬:০৫95061
  • ভুল ভ্রান্তি শুধরে গেলে চমৎকার! মন্তব্যের আগে বক্তার পরিচিতি জানলে,এলোপাথাড়ি মন্তব্যের আগে দুবার ভাবনা আসবে।
    Kaku has had more than 70 articles published in physics journals such as Physical Review, covering topics such as superstring theory, supergravity, supersymmetry, and hadronic physics.[9] In 1974, Kaku and Prof. Keiji Kikkawa of Osaka University co-authored the first papers describing string theory in a field form.[10]

    Kaku is the author of several textbooks on string theory and quantum field theory.
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন