দুটি সরল প্রশ্ন।
১
ল্যাবে কৃত্রিম কোষ, মানে প্রাণ তৈরী কী খোদার ওপর খোদকারী নয়?
২
আচ্ছা, কৃত্রিম ওই প্রাণের আত্মা আছে? :ডি
যদি ব্রহ্মাণ্ড দেখি বা ইউনিভার্স।তাহলে বৈজ্ঞানিক দের যুক্তি অনুযায়ী সেটি মোটামুটি চৌদ্দ বিলিয়ন বছর আগে সৃষ্টি হয়েছে।ঠিক আছে,কোন দ্বিমত নেই।
তাহলে ঐ চৌদ্দ বিলিয়ন বছরের আগে ওখানে কি ছিল??
ইউনিভার্স সীমিত হলে,তার বাইরে কি আছে?? আর একটি ইউনিভার্স?তার বাইরে?তার বাইরে? কোন সন্তোষ জনক উত্তর আছে!?
পরমাণু বিভাজন করে পেলাম ইলেকট্রন,প্রোটন।সেগুলো বিভাজন করে কি পেলাম?তাকে বিভাজন করে?
ঈশ্বর নিয়েও প্রশ্ন গুলো এরকম,কৌতূহলোদ্দীপক। ঈশ্বর আছে বা নেই এই প্রশ্ন অবান্তর।কারণ এর উত্তর সায়েন্স এর কাজে লাগে না। সায়েন্স এর কাজ হলো সত্য অনুসন্ধান।এই সত্যও নির্দিষ্ট ফ্রেম এর স্বাপেক্ষে।
বিপ্লব রহমান,
কৃত্রিম কোষের আত্মা থাকতে পারে কিনা সে নিয়ে ভাবতে গিয়ে একটা দার্শনিক প্রবাদবাক্য মনে পড়ল --- "যে দার্শনিকরা কুকুর পোষেন তাঁরা বিশ্বাস করেন যে কুকুরের আত্মা আছে, তবে কিনা, যে দার্শনিকরা কুকুর পোষেন না তাঁরা তা মোটেই বিশ্বাস করেন না ।"
sm,
ব্রহ্মাণ্ড নিয়ে জানা অনেক বাকি আছে, কাজেই ধোঁয়াশা আর প্রশ্নও আছে বিস্তর, স্বভাবতই । এই কিছুকাল আগেও 'স্টেডি স্টেট থিওরি' নামক এক সমান্তরাল বিশ্বতত্ত্ব সক্রিয় ছিল, যার বক্তব্য ছিল 'বিগ ব্যাং' বলে কিছুই ঘটেনি এবং মহাবিশ্ব চিরকালই ছিল ও আছে --- এবং সে তত্ত্বের গাণিতিক ও দার্শনিক উভয় দিকই খুব মজবুত ছিল । মহাবিশ্বের 'ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন' আবিষ্কারের পর সে তত্ত্ব এখন পিছিয়ে পড়লেও, বর্তমানে মহাবিশ্বতত্ত্বের নানা সংস্করণ চালু আছে, এবং নানা গুরুতর অসামাধিত প্রশ্নও আছে । তবে, বর্তমানের মহাবিশ্বতত্ত্বে 'বিগ ব্যাং-এর আগে কী ছিল' জাতীয় প্রশ্নের জন্য খুব বেশি পরিসর নেই । বিকাশমান চতুর্মাত্রিক মহাবিশ্বে 'বিগ ব্যাং' একটু ঘটনাবিন্দু মাত্র, এবং তার ওপারে কী আছে এ প্রশ্ন অর্থহীন । পৃথিবী গোলাকার এইটা জানার পরে যেমন 'উত্তর মেরুর উত্তরে কি আছে' এ প্রশ্নের আর কোনও মানে থাকেনা, এও অনেকটা সেই রকম ।
আমাদের মহাবিশ্বের বাইরে আরও অসংখ্য মহাবিশ্ব আছে, অনেক বিশেষজ্ঞই আজ এটা এক গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বগত সম্ভাবনা বলে মনে করেন, কেউ কেউ এমনকি এর পরীক্ষামূলক প্রমাণও সম্ভব বলে মনে করেন ।
উপ-পারমাণবিক কণার আরও মূলগত উপাদান তত্ত্বগতভাবে আবিষ্কৃত হয়েছে, এবং যন্ত্রেও নাকি তার দেখা মিলেছে, তার নাম 'কোয়ার্ক' বা 'কার্ক' । 'Quark' লিখে গুগল করলেই দেখতে পাবেন ।
ঈশ্বর আছে কি নেই এ প্রশ্ন বিজ্ঞানের কাছে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ । সামাজিকভাবে তো বটেই, দার্শনিক এবং পদ্ধতিগতভাবেও । ঈশ্বর থাকলে তিনিই তো সব কিছুর কারণ, এবং সেইহেতু সব কিছুর তত্ত্বগত ব্যাখ্যাও বটেন । তাহলে আর 'কেন', 'কীভাবে' --- এইসব প্রশ্নের প্রাসঙ্গিকতা কোথায় ? কাজেই, ঈশ্বরের অনস্তিত্বই মানুষের জিজ্ঞাসাকে অর্থপূর্ণ করে তোলে । তা না হলে বিজ্ঞান ও দর্শনের কোনও মানেই থাকত না ।
dc,
অপ্রয়োজনীয় কথা লিখেছি বলে মনে করিনা, যদিও কথাগুলোর মধ্যে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বিশারদরা নতুন কিছু না-ই খুঁজে পেতে পারেন । এ তো আর বিশেষজ্ঞদের জন্য লেখা প্রবন্ধ নয় । বৈদ্যায়তনিক গবেষণাপত্রে হয়ত বা 'ওকাম'স রেজর' বা 'ইনফাইনাইট রিগ্রেস' জাতীয় পরিভাষা বলে দিলেই চলে যায়, ব্যাখ্যার দরকার পড়েনা । কিন্তু 'পপুলার রাইটিং'-এ সে সবের ব্যাখ্যা না দিলে লেখাটার কোনও মানেই থাকবে না ।
এ প্রসঙ্গে 'গ্রাভিটেশনাল কোলাপ্স' ব্যাখ্যা করা কেন জরুরি, বুঝিনি । আপনি বুঝিয়ে দিলে হয়ত বুঝতে পারব । তবে, জীবদেহের অপূর্ব শৃঙ্খলার জন্য যে 'লো এন্ট্রপি'-র দরকার নেই, কারণ তাপীয় অসাম্যের ক্ষেত্রে মুক্ত ব্যবস্থায় এন্ট্রপি বাড়লে শৃঙ্খলা বাড়ে --- এটাই ছিল প্রিগোজিনের বক্তব্য, এবং সেটাই আমি এখানে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি ।
হ্যাঁ, 'কসমোলজিক্যাল ফাইন টিউনিং' হল ধর্ম আর বিজ্ঞান মিশিয়ে ঘ্যাঁট রান্না করবার আরেকটি উর্বর ক্ষেত্র । এ নিয়ে পরে 'গুরু'-তে লেখার ইচ্ছে রইল ।
বিতর্ক টা ভুল দিকে যাচ্ছে।প্রথমেই ধরি, ওকামস রেজর।এর অর্থ অপ্রয়োজনীয় তথ্য হাইপোথিসিস বাদ দিয়ে যুক্তিগ্রাহ্য সরল মতটি গ্রহণ।
কিন্তু লক্ষ্যনীয় খুব কমপ্লেক্স জিনিষ বা থিওরি এই সূত্র দিয়ে মানা যায় না।পাঁচ শত বছরের পুরনো দার্শনিক ভিউ।নিউটন তার গতি সূত্র গুলি এই প্রিন্সিপল কে ভিত্তি করে নামালেন।কিন্তু আটকে গেলো রিলেটিভিটি সূত্র আবিষ্কারের পর।অর্থাৎ নিউটনের গতি সূত্র একটি নির্দিষ্ট ফ্রেমে গিয়ে আটকে গেলো।স্পেস যে দুমড়ে যায় সেটা জানা অসম্ভব ছিল।
একটি আবিষ্কার বা থিওরি যুক্তি গ্রাহ্য হবে যদি সেটি ফলসিফিকেশন থিওরি ফলো করে।যদি সেটি রিপিটেড এক্সপেরিমেন্ট এ সফল ভাবে পরীক্ষিত হয়। অর্থাৎ কোন মতবাদ ই ধ্রুবক ন য়।সময়ের সঙ্গে পাল্টে যেতে পারে।
দুম করে বলে দেওয়া যায় না;ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টির আগে কি ছিলো সেটি অবান্তর প্রশ্ন।ব্রহ্মাণ্ডের পরে কি আছে সেটি জানাও অবান্তর ন য় । পরমাণু বিভাজন ও ক্রম বিভাজন ও একই প্রশ্ন।
ঈশ্বর আছে কি নেই,সেটিও ওই কোয়েস্ট এর অংশ।মন বা মনন কি সেটিও একই জিজ্ঞাসা। আম আদমি সেটি, আত্মা কি বলে জিজ্ঞাসা করে।
কিন্তু বর্তমান ফ্রেমে ঈশ্বর কি,মন কি বা আত্মা কি সেটি বর্তমান বিজ্ঞানের ডেফিনিশন দিয়ে বাঁধা সম্ভব নয়। অর্থাৎ ফলসিফিকেষণ থিওরী এপ্লাই হবে না।এক্সপেরিমেন্ট করে প্রমাণ ও করা যাবে না।
তাই বলেছিলাম,ঈশ্বর আছে কি নেই সেটি বর্তমান বিজ্ঞানের পরিধির বাইরে।কিন্তু কোয়েস্ট থেকে যাবেই।
sm,
মনে হচ্ছে 'ওকামস রেজর', 'ফলসিফিকেশন থিওরি', এইসব কথাগুলো বোঝার ব্যাপারে আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে । ওসব কথা থেকে অন্যান্য যে সব কথায় পৌঁছচ্ছেন, সেখানে পৌঁছবার কথা না । আপেক্ষিকতাবাদ বা অন্য কোনও বৈজ্ঞানিক তত্ত্বই অপ্রয়োজনীয় ধ্যানধারণাকে প্রশ্রয় দেয় না, এবং সেইহেতু 'ওকামস রেজর' নীতিকেও কখনওই ভঙ্গ করেনা । আর, 'ফলসিফিকেশন' মোটেই যুক্তিগ্রাহ্যতার একমাত্র মাপকাঠি নয়, বা সব তত্ত্বকেই এক সময়ে পাল্টে যেতেই হবে এমন ফতোয়াও নয় (এর যে কোনও একটি সত্যি হলেই বিজ্ঞান বস্তুটি লাটে উঠত) ।
যদি বলেন, মানুষ অনেক কিছুই জানে না অতএব বিগ ব্যাং-এর ওপারে ভূত আছে কিনা সে নিয়ে মাথা ঘামানো জায়েজ, তাহলে আর কথা না বাড়ানোই ভাল । শুধু এইটুকু বলি, কিছু কিছু জিনিসকে সত্যি বলে মানতে গেলে অন্য কিছু কিছু জিনিসকে মিথ্যে বলে মানতেই হয়, না হলে সত্যি-মিথ্যের তফাত থাকে না । জ্ঞানের অগ্রগতির পথে কিছু কিছু ধারণা ও প্রশ্নকে পেছনে ফেলে আসতেই হয় । না হলে নিয়ানডার্থালের সঙ্গে আমাদের বৌদ্ধিক তফাত শুধু এইটুকু দাঁড়াবে যে, আমরা ওদের থেকে কিঞ্চিৎ বেশি বিভ্রান্ত ।
ঈশ্বর আছে কি নেই সেটি বর্তমান বিজ্ঞানের পরিধির বাইরে নয় । আমি বলছিলাম, ঈশ্বর বলে কিছু নেই --- এখান থেকেই বিজ্ঞান কাজ শুরু করে । ভাল করে ভেবে দেখবেন ।
dc,
মহাকর্ষীয় সংকোচন ও প্রাণের সম্পর্ক নিয়ে আপনার লেখা পড়ার ইচ্ছে রইল ।
যদ্দুর মনে পড়ে, এটি সম্ভবত ফিইনম্যানের 'রিলিজিয়ন অ্যান্ড সায়েন্স' বক্তৃতা থেকে নেওয়া । এর গোটাটাই আমি পড়েছি, মোটেই খুব কনভিন্সিং কিছু নয় । বক্তৃতাটি ফিইনম্যান দিয়েছিলেন এক ধর্মীয় সংস্থার আহ্বানে, এবং তাদেরই দপ্তরে । কাজেই, ওখানে খুব পরিষ্কার করে কিছু বলবেন, এমন সম্ভাবনা ছিল যৎসামান্য । আপনি যদি লেখাটি পুরো পড়ে থাকেন, তবে আপনি জানবেন যে, ফিইনম্যান আসলে মোটেই স্বয়ং ঈশ্বরকে বিজ্ঞানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে করেননি । তিনি শুধু এইটুকু বলতে চেয়েছিলেন যে, ঈশ্বরবিশ্বাস নৈতিকতা রক্ষায় সহায়তা করে, এবং এই প্রশ্নে বিজ্ঞানের সাথে তার কোনও বিরোধ নেই । বলা বাহুল্য, এ যুক্তি একান্ত দুর্বল, আস্তিক বা নাস্তিক কেউই এর সাথে একমত হবেন না । উভয় পক্ষই সম্ভবত বলবেন, নিছক নৈতিকতা রক্ষার জন্য ঈশ্বরের কোনও দরকার ছিল না ।
"বর্তমান সায়েন্স এর পক্ষে ঈশ্বর এর অস্তিত্ব নেই", সেটা প্রমাণ করা "অসম্ভব" নয়, অপ্রয়োজনীয় । কারণ, প্রথমত, বিজ্ঞান শুরুই হয় ঈশ্বরের অস্বীকৃতি দিয়ে । দ্বিতীয়ত, 'ঈশ্বর' শব্দটি আসলে অর্থহীন, এটা আজকের বিজ্ঞান ও দর্শন দেখাতে পারে ।
তাহলে ঐ সিম্পল প্রশ্নটির উত্তর কি হলো?ইউনিভার্স সৃষ্টির আগে সেখানে কি ছিলো? ইউনিভার্স এর পরে কি আছে?
sm,
আউটসাইড অফ স্পেস অ্যান্ড টাইম গিয়ে একটা হিউম্যানিটারিয়ান কোশ্চেন করি আপনাকে । এক কতা বার বার কয়ে কয়ে আমার মুকে যদি ফেনা উটে যায়, আর এই কোভিডের বাজারে হাসপাতালের ভালমানুষগণ যদি আমাকে ভর্তি করতে অস্বীকার করে, তো আমার যে কী দশা হবে, ভেবে দেকেচেন মোয়ায় ?
সাবোধান,
sm মাঝেসাঝেই আমার থ্রেডে এসে তাঁর দ্বিধাগ্রস্ত মতামত সম্পূর্ণ নির্দ্বিধায় এবং অত্যন্ত জোরের সাথে ব্যক্ত করে থাকেন, কাজেই তাঁর অবস্থান ও শৈলি আমার অজানা নয় । তবে, ওই থ্রেড-টির সন্ধান দেবার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ । এখানে যে নাস্তিকতা নিয়ে এমন এক দীর্ঘ কথোপকথন চলছে, আদৌ জানতুম না ।
আপনি খালি একটি প্রশ্নের উত্তর দেবেন,ব্যাস।ইউনিভার্স সৃষ্টির আগে ওখানে কি ছিলো আর ইউনিভার্সের পর কি আছে?
আর এতগুলো বিজ্ঞানী দের কমেন্ট দিলাম।আরো অনেক উদাহরণ দিতে পারি।তারা অন্তত কিছুটা ইন্টেলিজেন্ট মনে করি। দৃঢ়ভাবে তাদেরকে এমন অস্বীকার করতে তো কাউকে দেখিনি।উত্তর জানা না থাকলে কোন কথা নেই।
sm,
ভিডিও-টি আপনার মন্তব্যের মতই অতি চমৎকার । এগরোলের দোকান তুলে দিয়ে ইউনিভার্স বানাবার ব্যাপারে পুলিশের সিদ্ধান্ত পুরো ভুল ছিল, বুঝতে পেরেছি । আপনার দেওয়া ভিডিও-লিঙ্ক সত্যিই আমার ভুল-ভ্রান্তি শুধরে দিয়েছে, অনুগ্রহ করে বিশ্বাস করুন ।