এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • যুক্তিবাদ নিয়ে তাত্ত্বিক পড়াশোনা কীভাবে শুরু করবেন

    Debasis Bhattacharya লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০১ এপ্রিল ২০২০ | ৬৬৬২ বার পঠিত
  • করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে যখন বাড়ি থেকে নড়বার উপায় নেই, তখনই তো সুবর্ণ সুযোগ, স্রেফ চেয়ারে বসে বসেই বোধবুদ্ধিকে একটু নাড়িয়ে-চাড়িয়ে নেবার ! কাজেই, মনে করুন, আপনি জানতে চাইলেন, যুক্তিবাদ জিনিসটা ঠিক কী এবং কখন কোথা থেকে কীভাবে তা এল, এইসব ব্যাপারস্যাপার নিয়ে পড়াশোনা কীভাবে শুরু করা যায় । এ সব নিয়ে ভাল ভাল প্রবন্ধ আর বই তো বিস্তর আছে, অন্তত ইংরিজি ভাষায়, এবং বাংলাতেও হয়ত বা ছিটেফোঁটা কিছু, তার মধ্যে কোথা থেকে শুরু করবেন, আর কোনদিকে কতদূরই বা হাঁটবেন ? মনে করুন, আপনি গ্রন্থের অরণ্যে হারাতে চাইছেন না, ভয়ঙ্কর পণ্ডিতিও চাইছেন না, আবার একেবারে হালকাপলকা খেলো কথাবার্তাও চাইছেন না । যেন বেশ সিরিয়াস, গুরুত্বপূর্ণ ধরনের কিছু কথাবার্তা পড়ে ফেলা যায়, অথচ পড়বার শ্রমটি যাতে পাহাড়ের মত সামনে দাঁড়িয়ে নতুন বোধপ্রাপ্তির আনন্দটুকুকে আড়াল না করতে পারে, এইটুকু চাইছেন । স্বাভাবিক, আমি হলেও ঠিক তাই চাইতাম ।

    কিন্তু, এ জগতে চাইবার অনেক কিছুই আছে, এই বিষয়ের ধারেকাছেই । তার মধ্যে আপনি ঠিক কোনটা চাইছেন, সেটা আপনাকে নিজেকেই একটু ভাল করে বুঝে নিতে হবে । 'লজিক' বা যুক্তিশাস্ত্রের ইতিহাস চাইছেন, না 'ফিলোজফি অফ লজিক' বা যুক্তি-দর্শন চাইছেন, নাকি বিজ্ঞানের ইতিহাস চাইছেন (সেও তো যুক্তিপ্রয়োগের ইতিহাসই হল), নাকি 'সায়েন্টিফিক মেথড' বা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি-দর্শনের ইতিহাস চাইছেন, না যুক্তিবাদী দর্শনের বিকাশের ইতিহাস চাইছেন (সেটা দর্শনের ইতিহাসের এক সংকীর্ণ উপ-বিদ্যাধারা), অথবা সামগ্রিকভাবে যুক্তিমনস্কতার বিকাশের একটা ধারণাগত ইতিহাস চাইছেন ('র‍্যাশনালিটি’ অ্যাজ আ কনটেক্সচুয়াল হিস্ট্রি অফ আইডিয়াজ) ? একটু পরিষ্কার করে ভেবে নিতে হবে আপনাকে ।

    একটা নিরাশার কথা আগে থেকে জানিয়ে রাখি, এ সব ব্যাপারে বাংলা ভাষার দশা খুব শোচনীয় । তবু, ছিটেফোঁটা কিছু পাবেন কিনা, সেটা নির্ভর করবে এগুলোর মধ্যে ঠিক কোনটি চান তার ওপর । ইংরিজিতে অবশ্য সবকিছুই বিস্তর আছে, মানে, যতটা চাইবেন তার চেয়ে কিছু বেশিই আছে । আচ্ছা, ধরে নেওয়া যাক, আপনি আপাতত শেষেরটাই চান । কারণ, ওটা ‘জেনারেল’, মানে সাধারণ এবং সামগ্রিক । আর আগেরগুলো হচ্ছে ‘স্পেশালাইজ্ড্’, অর্থাৎ বিশেষায়িত ও সেইহেতু সংকীর্ণ । শেষেরটার মধ্যে আপনি আগেরগুলোও কিছু কিছু পাবেন, কাজেই এর জন্য প্রয়োজনীয় বইপত্তরের সংগ্রহটিও হতে হবে একটু সাড়েবত্রিশভাজা গোছের, মানে ছড়ানো ও বৈচিত্র্যপূর্ণ, আয়তনে যতই ছোট হোক ।

    দেখুন, বইপত্তরের তালিকাটি আমি যথাসম্ভব ছোট রাখতেই চাইব । কিন্তু তবুও, আমার কেমন যেন মনে হয়, কোনও একটি নির্দিষ্ট বই থেকে আপনি সবটা বা বেশিরভাগটাই পেয়ে যাবেন এমন সম্ভাবনা কম । অন্তত আমার তো ঠিক এই রকম একটিমাত্র সুসংহত গ্রন্থের কথা জানা নেই (তা সত্ত্বেও বাস্তবে এ রকম বই থাকতেই পারে, খুঁজে দেখতে আপত্তি নেই) । বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞান স্বভাবতই আত্ম-অতিক্রমী, অর্থাৎ, একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ক্রমাগত জানতে থাকলেই তা অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে প্রবেশ করতে থাকে । আমার মতে, এক্ষেত্রে বিষয়টির অন্তত চার-পাঁচটি দিক আছে, এবং তাদের প্রত্যেকের আবার নানা ঐতিহাসিক পর্যায় আছে । এখন, আমাদের কাজ হবে অসংখ্য বই ঝাড়াই বাছাই করে এক-একটি দিকের ঠিকঠাক প্রতিনিধিত্ব করতে পারে এই রকম ছ-সাতটি বইতে তালিকাটি নামিয়ে আনা । কীভাবে তা করা যায়, এবং তার ফলে শেষে কী দাঁড়াবে, তার একটা আন্দাজ আমি আপনাকে দেওয়ার চেষ্টা করব ।

    ইয়ে, এখানে একটা কথা বলার । একটা কথা মানে, দুটো কথা । প্রথমত, এখানে যা বলব সেটা একান্তই আমার নিজস্ব পাঠ ও অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভরশীল কিছু পরামর্শমাত্র, এর মধ্যে ঐকান্তিক সত্যতা, কার্যকারিতা এবং অনিবার্যতার কোনও দাবি নেই । নিজে যা পড়েছি শুনেছি বুঝেছি তার বাইরে কিছু তো আর বলতে পারব না । আমি নিশ্চিত যে, আরও অসংখ্য জায়গা থেকে শুরু করে, এবং আরও অসংখ্য পথ বেয়ে, যুক্তিবাদের চর্চা সম্ভব । হয়ত এখানে যা বলব তার চেয়েও অনেক ভালভাবেই সম্ভব । কিন্তু তবু, হাতে যা রসদ আছে সেগুলোকে একটু ঠিকঠাক সাজিয়ে গুছিয়ে ঝাড়াই বাছাই করে নিলে খানিকটা সংক্ষেপে ও অপেক্ষাকৃত সহজে মোদ্দা ধারণাগুলোতে পৌঁছবার একটা রাস্তা বার করা যায় কিনা, সে নিয়ে আলোচনা ও চর্চা বোধহয় হতেই পারে । দ্বিতীয়ত, এটা কিন্তু ‘যুক্তিবোধ ও কুসংস্কারবিরোধিতা কেন দরকারি’ গোছের চর্চা নয়, সে চর্চা আলাদা । ধর্ম-কুসংস্কার-অযুক্তি কেন ক্ষতিকর, ঈশ্বর-আত্মা-জ্যোতিষ-অলৌকিকতা এইসব কেন মিথ্যে, সে সব যাঁরা জানতে বুঝতে চান তাঁদের জন্য অনেক বই আছে । সুখের বিষয়, বাংলাতেও এখন সে রকম অন্তত কিছু বই আছে, অল্প হলেও । কিন্তু, সে সব বইয়ের পরামর্শ এখানে দেওয়া হচ্ছে না । যাঁরা যুক্তিবাদের স্বরূপ-উদ্ভব-বিকাশ নিয়ে এক নিবিড়তর তাত্ত্বিক চর্চা শুরু করতে চান, এ পরামর্শ মূলত তাঁদের কথা ভেবে । ঠিক আছে, এবার শুরু করি তবে ।

    প্রথমেই কয়েকটা জিনিস ভেবে দেখুন । প্রথমত, মানুষের সমাজের দীর্ঘমেয়াদি এবং স্বাভাবিক প্রবণতা হচ্ছে গোষ্ঠীচেতনা-পুরাণ-কর্তৃত্ব-ঐতিহ্য ভিত্তিক কাঠামো থেকে ক্রমশ ব্যক্তিচেতনা-যুক্তি-গণতন্ত্র-আইন ভিত্তিক কাঠামোর দিকে বিবর্তিত হওয়া (অবশ্যই মোদ্দা প্রবণতার কথা বলছি, সংকীর্ণ স্থান-কালের সীমানায় উল্টো প্রবণতাও দেখা যেতে পারে) । ফলত, অ্যানিমিস্টিক আদিম সমাজ থেকে মধ্যযুগীয় সুসংগঠিত ধর্মভিত্তিক সমাজ হয়ে আধুনিক সেক্যুলার গণতন্ত্রে পৌঁছনোর একটা ইতিহাস লাগবে । দ্বিতীয়ত, যত সময় যাবে ততই মানুষের অভিজ্ঞতা ঝাড়াই বাছাই হয়ে তার সারবস্তু সঞ্চিত হতে থাকবে, এবং অভিজ্ঞতা ঝাড়াই-বাছাই ও সমন্বয়সাধনের প্রচেষ্টা হিসেবে ধর্মতত্ত্ব ও পুরাণের জায়গা নিতে থাকবে যুক্তি-বিচারভিত্তিক দর্শনশাস্ত্র । কাজেই, দর্শনশাস্ত্রের একটি প্রামাণ্য ইতিহাস আপনার দরকার হবে। তৃতীয়ত, দার্শনিক বিচার একটা পর্যায়ে উন্নীত হলে উদ্ভব ঘটে বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞান-নির্ভর প্রযুক্তির, এবং তার মধ্যে দিয়ে আবার যুক্তি-বিচারের ক্ষমতা একলাফে অনেকটা বেড়ে যায় । এর ফলে যুক্তির প্রতি আস্থা দারুণভাবে বেড়ে যায়, ফলে কর্তৃত্বকে প্রশ্ন করা অনেক বেশি সোজা হয়ে যায়, যার রাজনৈতিক প্রভাব অপরিসীম । তাই, বিজ্ঞানের ইতিহাসটাও একটু লাগবে । চতুর্থত, বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক বিচারের রমরমা হলেই খোঁজ পড়বে, কী তবে সেই পদ্ধতি যা দিয়ে এত চমৎকার নিশ্চিত জ্ঞান পাওয়া যায়, এবং তার অনিবার্য ফল হিসেবে যুক্তি ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বিকশিত হবে । অতএব, এখানে লাগবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির অনুসন্ধানের একটি ইতিহাস ।

    অর্থাৎ, খান সাতেক বইয়ের কোটা থেকে খান চারেক ইতিমধ্যে খরচা হয়ে গেল । এটা যদি ‘কওন বনেগা ক্রোড়পতি’-র শো হত, তো বচ্চন সাহেব নিশ্চয়ই জলদগম্ভীর গলায় বলে উঠতেন, ‘চারোঁ লাইফলাইন আপনে গাওয়াঁ দিয়ে’ । তো, পড়ে রইল খান তিনেক, তাই দিয়ে কতটা কী করা যায় দেখা যাক । সাতটির মধ্যে অন্তত দুটো বাংলা বই রাখার চেষ্টা করব ।

    মোটামুটিভাবে যুক্তিমনস্কতার ইতিহাস ওই চারটেতেই শেষ হতে পারত, কিন্তু এখানে শেষে একটি মোচড় আছে, মোপাসাঁর গল্পের মত । বিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে একাধিক কারণে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে, তার মধ্যে যুদ্ধ, ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্র এবং পরিবেশ দূষণের মত বহিরাগত কারণ যেমন ছিল, তেমনি আবার বিজ্ঞান ও যুক্তিশাস্ত্রের একান্ত আভ্যন্তরীণ প্রশ্নও ছিল । অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদ আসলে খাঁটি-সত্যের নাম করে সাম্রাজ্যবাদী ও পুরুষতান্ত্রিক মগজধোলাই মাত্র । এই তথাকথিত 'পোস্ট মডার্ন ক্রিটিক অফ সায়েন্স' বিগত শতকের সাত ও আটের দশকে বিদ্যাচর্চার জগতে খুব প্রভাবশালী হয়ে ওঠে । আবার, নয়ের দশক থেকে যুক্তিবাদী বিজ্ঞানী ও দার্শনিকরা এর প্রতিবাদ শুরু করেন, এবং ওই সময় থেকেই প্রভাবশালী হয়ে ওঠা 'নিও অ্যাথেইস্ট' লেখকেরা প্রবল উদ্যমে এইসব বিজ্ঞানবিরোধী প্রবণতার বিরুদ্ধে সম্মুখ-সমরে নেমে পড়েন । এর ফলে বিশ শতকের শেষ দশক ও একুশ শতকে এই 'পোস্ট মডার্ন ক্রিটিক অফ সায়েন্স' ধারাটির মর্যাদা অনেকখানি কমে আসে । এইটাও যদি একটু পড়াশোনা করে নিতে পারেন, ব্যাপারটা সম্পূর্ণ হবে । তাহলে যোগ হল আরও দুটি বই --- বিজ্ঞানের উত্তর আধুনিক সমালোচনা, এবং তার জবাব । হাতে এখনও জায়গা আছে আরেকটা বইয়ের জন্য, অতএব কিঞ্চিৎ বিলাসিতা সম্ভব । কাজেই, একটির বদলে দুটি বই বরাদ্দ করা যাক প্রথম বিষয়টির জন্য । প্রাচীন পৃথিবীর জন্য একটা, আর মধ্যযুগ থেকে আধুনিক পৃথিবীর জন্য আরেকটা ।

    তাহলে, গোটা সাতেকই বই দাঁড়াচ্ছে শেষ পর্যন্ত, কথামতন । সেগুলো এই রকম --- (১) পৃথিবীর ইতিহাস, দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় ও রমাকৃষ্ণ মৈত্র, অনুষ্টুপ, (২) A Short History of Society : The Making of the Modern World, Mary Evans, Open University Press, (৩) History of Western Philosophy, Bertrand Russell, Routledge, (৪) ইতিহাসে বিজ্ঞান, জে ডি বার্নাল (অনুবাদ আশীষ লাহিড়ী), আনন্দ, (৫) Philosophy of Science : a very short introduction, Samir Okasha, OUP, (৬) Science : the very idea, Steve Woolgar, Horwood & Tavistock, (৭) Intellectual Impostures, Alan Sokal & Jean Bricmont, Profile Books । লেখকদের নামগুলো বাঁকা অক্ষরে রইল ।

    এই বইগুলো যদি সব এখুনি হাতে না পান, বা পেয়ে গেলেও, ইন্টারনেট-টা কিন্তু এই পড়াশোনার জন্য খুব ভালভাবে ব্যবহার করতে পারেন, এবং এই মুহূর্তে তার সুবর্ণ সুযোগ । কাজেই, সে নিয়েও দু-এক কথা বলে দিই । ইন্টারনেটে একটা প্রাথমিক পড়াশোনা খুব চমৎকারভাবে তো করে নিতে পারবেনই, আর তাছাড়া বেশ কিছু বইপত্র পড়া হয়ে যাবার পরেও আপনার ধ্যানধারণাকে ইন্টারনেট থেকে দারুণভাবে আপডেট করতে পারবেন ।

    এ কাজে, প্রথমেই ঢুকে পড়ুন --- হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন --- উইকিপিডিয়াতে । মনে হতে পারে, যুক্তিবাদের চর্চাই যখন উদ্দেশ্য, তখন এই অসাধারণ আন্তর্জালিক মুক্ত বিশ্বকোষের 'Rationalism' বা ‘যুক্তিবাদ’ প্রবন্ধটিকেই নিশ্চয়ই হতে হবে প্রথম গন্তব্য । উঁহু, তা নয় কিন্তু । আসলে, ওটা আধুনিক যুক্তিবাদী আন্দোলন সম্পর্কে লেখা নয়, ওটা হচ্ছে দর্শনশাস্ত্রের 'অ্যাকাডেমিক' বা বৈদ্যায়তনিক চর্চার প্রবন্ধ । অ্যাকাডেমিক ফিলোজফিতে 'র‍্যাশনালিজ্‌ম্‌' বলতে বোঝানো হয় সপ্তদশ শতকীয় ইউরোপের এক বিশেষ দার্শনিক 'স্কুল' বা ঘরানা, যার শিকড় ছিল প্রাচীন গ্রিসের প্লেটো, পিথাগোরাস ও আরও কিছু দার্শনিকের তত্ত্বের মধ্যে । এই চিন্তাধারায় বলা হয়, জগত সম্পর্কে যা কিছু জানবার সবই জেনে নেওয়া যায় অল্প কয়েকটি মাত্র মূলনীতি থেকে, 'ডিডাকটিভ' বা অবরোহী যুক্তি-পদ্ধতির সাহায্যে । জগতকে জানা-বোঝার উপায় হিসেবে ভক্তির বদলে যুক্তির ওপর এই যে জোর দেওয়া, এর কারণেই যে ঐতিহাসিকভাবে এই চিন্তাধারার গায়ে 'র‍্যাশনালিজ্‌ম্‌' বা যুক্তিবাদের লেবেলটি সেঁটে গেছে, সেটা বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়ই । এই চিন্তাধারা গড়ে উঠেছিল মূলত দেকার্তে-স্পিনোজা-লিবনিৎজ্‌ এই দার্শনিক-ত্রয়ীর তত্ত্বকে কেন্দ্র করে । এঁরা দর্শনশাস্ত্রে যুক্তির মাহাত্ম্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, এবং আধুনিক বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদের উদ্ভব এঁদের ছাড়া সম্ভবই হত না (দর্শন ছাড়া বিজ্ঞান, গণিত এবং যুক্তিশাস্ত্রেও এঁদের অবদান অপরিমেয়) । কিন্তু তবুও, এঁদের তত্ত্ব কোনওমতেই আধুনিক যুক্তিবাদের সঙ্গে সমার্থক নয় । আধুনিক যুক্তিবাদ ধর্ম ও ঈশ্বরতত্ত্বের ওপরে খড়্গহস্ত, কিন্তু এঁরা ধর্ম-ঈশ্বর-আত্মা এই সব কিছুই মানতেন (অবশ্যই এক দার্শনিক উচ্চমার্গে আসীন হয়ে, এবং তৎকালীন লৌকিক জীবনের রীতিনীতি ও কুসংস্কারের অনেক উর্ধ্বে উঠে) । বলা প্রয়োজন, ধর্ম-ঈশ্বর-আত্মা ছাড়াও এঁদের তত্ত্বে আরেকটি গুরুতর সমস্যা ছিল, যাকে সমস্যা না বলে 'অপূর্ণতা'-ও বলতে পারেন হয়ত । সমস্যাটা হচ্ছে, জগতকে জানতে যুক্তির দরকার তো বটেই, কিন্তু যুক্তি-টুক্তি খাটিয়ে সত্যিটা বার করে আনতে গেলে তথ্য চাই তো, যথেষ্ট তথ্য হাতে না থাকলে যুক্তিটা খাটাবেন কার ওপর ? এ প্রশ্নে ওঁরা বলতেন বটে, জগতের অল্প কয়েকটি মূলনীতির ওপর যুক্তি প্রয়োগই যথেষ্ট, কিন্তু আসলে এটা একটা সহজ কথা যে, বাস্তব জগতকে ঘেঁটেঘুঁটে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ না করলে সব যুক্তিই হাওয়ার ওপর দাঁড়িয়ে থাকবে । তাই, পুরোনো সমস্ত ধর্মতাত্ত্বিক প্রজ্ঞা ছুঁড়ে ফেলে প্রকৃতির ওপর সোজা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে হবে, হাতেকলমে ঘেঁটেঘুঁটে দেখতে হবে সবকিছু, তবেই মিলবে প্রকৃত জ্ঞান --- এ উপদেশ ষোড়শ শতকেই দিয়ে গিয়েছিলেন ফ্রান্সিস বেকন । 'ডিডাকটিভ' বা অবরোহী পদ্ধতির বদলে তিনি তুলে ধরতে চেয়েছিলেন 'ইন্ডাকটিভ' বা আরোহী পদ্ধতির মাহাত্ম্যকে । কাজেই, এঁদের 'যুক্তিবাদ' এবং বেকনের 'অবরোহবাদ' --- এ দুটো পরস্পরের পরিপূরক হয়ে মিললে তবেই পরিষ্কার হতে পারে প্রকৃত জ্ঞানের অগ্রগতির যুক্তিবাদী রাস্তা, সপ্তদশ শতকীয় বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের প্রাকশর্ত ছিল সেটাই । কীভাবে আইজ্যাক নিউটনের হাতে বাস্তবিকই দুটো ধারা মিলেমিশে সম্ভব হয়েছিল সে বৈজ্ঞানিক বিপ্লব, তা পরবর্তীকালে সবিস্তারে দেখিয়েছেন বিজ্ঞানের ইতিহাসবিদেরা । অতএব, এ ব্যাপারে মোদ্দা কথাটা হচ্ছে, যুক্তিবাদের ইতিহাস জানতে গেলে দর্শনের পণ্ডিতি চর্চায় যাকে ‘র‍্যাশনালিজ্ম্’ বলে তা আপনাকে জানতে হতেই পারে, কিন্তু বার্ট্র্যান্ড রাসেলের উপরোল্লিখিত 'হিস্ট্রি অফ ওয়েস্টার্ন ফিলোজফি' বইতেই তা যথেষ্টর বেশি পেয়ে যাবেন, উইকি-র ‘র‍্যাশনালিজ্ম্’ প্রবন্ধ ঘেঁটে আধুনিক যুক্তিবাদের প্রসঙ্গে বিশেষ কোনও আভাস-ইঙ্গিত পাবেন না ।

    এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ‘র‍্যাশনালিজ্ম্’ প্রবন্ধটি যদি গন্তব্য না হয়, তবে উইকিপিডিয়ার কোন প্রবন্ধগুলোতে গেলে কাজ হবে ! আমার মতে, শুরু করার পক্ষে সবচেয়ে ভাল জায়গা হচ্ছে পাঁচটা --- 'মডার্নিটি' (modernity), 'সেকুলার-ইজ্‌ম্‌' (secularism), 'অ্যাথেইজ্‌ম্‌' (atheism), 'নিউ-অ্যাথেইজ্‌ম্‌' (new atheism), এবং 'স্কেপ্টিক্যাল মুভমেন্ট' (skeptical movement) । 'র‍্যাশনালিটি' (rationality) এবং 'মডার্নিজ্‌ম্‌' (modernism) এই দুটো জায়গায় যাবেন না, শুনতে কাছাকাছি মনে হলেও । বুঝতেই পারছেন, আধুনিকতা, ধর্মনিরপেক্ষতা আর নাস্তিকতা হল যুক্তিবাদের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত বিষয়, অতএব এগুলো নিয়ে চর্চা যুক্তিবাদ সম্পর্কে আপনার বোধকে অতি অবশ্যই পুষ্ট করবে । আর, 'স্কেপ্টিক্যাল মুভমেন্ট' হচ্ছে যুক্তিবাদী আন্দোলনের মার্কিন নাম । সবশেষে, 'নিউ-অ্যাথেইজ্‌ম্‌' হচ্ছে আধুনিক যুক্তিবাদের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী ধারা, যার কেন্দ্রে আছেন দুই ইংরেজ রিচার্ড ডকিন্স এবং ক্রিস্টোফার হিচেন্স আর দুই আমেরিকান স্যাম হ্যারিস ও ড্যানিয়েল ডেনে । এঁদের চিন্তা ও লেখালেখি এখন আধুনিক যুক্তিবাদকে জানা-বোঝার ক্ষেত্রে অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে । এঁদের সঙ্গে যে আপনাকে সব সময়েই একমত হতেই হবে এমন নয়, এমন কি অনেক সময় অনেক কথাবার্তায় আপনি বিরক্তও হতে পারেন । কিন্তু ধর্ম, ঈশ্বর, বিজ্ঞান ও অন্যান্য নানা বিষয়ে এঁদের বলিষ্ঠ লেখালিখি অত্যন্ত কাজের জিনিস, এবং এঁদের মতামত বিষয়ে অন্তত একটা মোটামুটি ধারণা থাকাটা আজ অতি জরুরি ।

    উইকি-র এই প্রবন্ধগুলোর মধ্যে প্রায়শই নানা নাম এবং পণ্ডিতি পরিভাষা চলে আসবে, যেগুলো জানা নেই দেখবেন । লজ্জা পাবার কিছু নেই, আমারও জানা থাকেনা, এবং ওই বিশেষ বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ছাড়া আর প্রায় কারুরই জানা থাকেনা । কিন্তু, জানেনই তো, এই একুশ শতকের লোকজনের পক্ষে কম খেটে পণ্ডিত বনবার ওই এক মারাত্মক সুবিধে --- ইন্টারনেটের হাইপারলিঙ্ক । বই পড়ার সঙ্গে নেটের লেখাপত্তর পড়বার ওই এক গুণগত তফাত --- যে কথাটি জানেন না সেখানে ঘচাং করে একটা ক্লিক মেরে দিলে সেইটা সম্বন্ধে একটা আলাদা প্রবন্ধ/খবর এইসব খুলে যাবে । বলা বাহুল্য, উইকি-তেও ঠিক তাইই করবেন, তবে তার সঙ্গে আরও দু-একটা জিনিস করতে পারেন । যেমন, প্রথমত, প্রবন্ধের শেষে এন্ডনোট-এ আরও যে সব লেখাপত্তরের রেফারেন্স আছে সেগুলোর লিঙ্ক থাকলে সেগুলোও দেখে নেওয়া, এবং দ্বিতীয়ত, যে কথাটা জানা নেই সেটা কপি-পেস্ট করে সোজা গুগলে মেরে কোনও আন্তর্জালিক অভিধান বা ওই রকম কোনও জায়গা থেকে জেনে নেওয়া । এ সব অবশ্য জানেনই, আমি না বললেও করতেন নিশ্চয়ই ।

    অপেক্ষাকৃত যা অল্প জানা সেইটা তবে এবার বলি একটু ।

    যুক্তিবাদী চর্চার জন্য ইন্টারনেটে আরও তিনটে চমৎকার সাইট আছে । একটা হচ্ছে 'স্ট্যানফোর্ড এনসাইক্লোপেডিয়া অফ ফিলোজফি' বা সংক্ষেপে 'এস ই পি' । আরেকটা হচ্ছে, ‘র‍্যাশনালউইকি', অর্থাৎ অযৌক্তিক অবৈজ্ঞানিক ধ্যানধারণার মোকাবিলার জন্য তৈরি বিশেষ ধরনের ‘ইন্টারনেট এনসাইক্লোপেডিয়া’ বা আন্তর্জালিক বিশ্বকোষ । আর তৃতীয় ও শেষটি হচ্ছে, মার্কিন যুক্তিবাদী লেখক রবার্ট টড ক্যারল নির্মিত যুক্তিবাদী অভিধান 'দ্য স্কেপটিক্স ডিকশনারি' বা সংক্ষেপে 'স্কেপডিক' । এগুলোর উদ্দেশ্য সীমিত, এবং সেইহেতু আয়তনটিও । কাজেই, খুব বেশি জিনিস সেখানে পাবেন না । কিন্তু যেগুলো পাবেন তার মূল প্রবন্ধ ও রেফারেন্স --- দুইই ভয়ঙ্কর কাজে আসবে । দু-একটি বাড়তি কথা বলা দরকার প্রথমটি নিয়ে । এটি দর্শনচর্চার জন্য তৈরি একটি ভীষণ বিশেষায়িত, প্রামাণ্য ও পণ্ডিতি সাইট । সাধারণ লোকের কথা মনে করে লেখা নয় বলে এর প্রবন্ধগুলো বেশ কঠিন লাগতে পারে, যেখানে আটকাবে সেখানে ওই একই কায়দায় লিঙ্ক খুঁজে খুঁজে বোঝার চেষ্টা চালাতে হবে । তবে, উইকি-র থেকে এর একটি সুবিধে আছে । উইকিপিডিয়া যে কেউই সম্পাদনা করতে পারে, ফলে অনেক সময়ে ভুলভ্রান্তি ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা থাকে । পরে কেউ না কেউ এসে সে সব আবার ঠিক করে দেয় বটে, তবে ইতিমধ্যে যদি ওখানে ঢোকেন, তবে ভুলটাই দেখতে পাবেন । 'এস ই পি'-তে সে সমস্যা নেই । এটি ছাপা এনসাইক্লোপেডিয়ার মতই, প্রতিষ্ঠিত বিশেষজ্ঞদের দিয়ে লেখানো । ফলে, একটু যদি লেগে পড়ে থাকতে পারেন, এটা দারুণ কাজে আসবে । যে কোনও দার্শনিক ব্যাপার নিয়ে ধন্ধ হলে এখানে তার নিশ্চিত সমাধান পাবেন, এবং কোনও লেখা নিজে লিখতে চাইলে এর রেফারেন্স দিতে পারবেন (উইকি-র ক্ষেত্রে সেটা পারবেন না) ।

    আরও কিছু পড়াশোনা করে রাখলে এই চর্চাটি চালাতে সুবিধে হতে পারে । যেমন, যুক্তিশাস্ত্র এবং বিজ্ঞানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ 'কন্টেন্ট' বা অন্তর্বস্তু একটু জেনে রাখা, বা, প্রাচীন ভারতের যুক্তিবাদী ধর্মদ্রোহী চিন্তাধারা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা, এইসব আর কি । তা, সে সব হবেখন ধীরেসুস্থে । চলা শুরু করার জন্য ওপরের রসদই যথেষ্ট ।

    তবে আর কী, লেগে পড়ুন আজ থেকেই । শুভস্য শীঘ্রম !
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০১ এপ্রিল ২০২০ | ৬৬৬২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • হখগ | 14.***.*** | ০১ এপ্রিল ২০২০ ০৯:৩০91922
  • আমার দারুন লাগল। ধন্যবাদ
  • i | 108.162.***.*** | ০১ এপ্রিল ২০২০ ০৯:৩৪91923
  • খুবই ভালো লাগল। লেখা হিসেবে উৎকৃষ্ট তো বটেই, পড়াশোনা করতে অনুপ্রাণিতও করল ।
    অশেষ ধন্যবাদ।
  • Rajkumar Raychaudhuri | ০১ এপ্রিল ২০২০ ১০:৩৩91925
  • সমৃদ্ধ হলাম। আমার পরবর্তী লেখার রসদ হবে আপনার এই উপদেশময় লেখা।

  • একলহমা | ০১ এপ্রিল ২০২০ ১১:০৩91926
  • বা:! উৎসাহী পাঠকের জন্য মূল্যবান সহায়িকা। খুব সুন্দর কাজ হয়েছে এইটে।
    (বিষয় অতি গুরুতর বিধায় আমার মত চণ্ডালের পক্ষে একান্তই গুরুচণ্ডালী। সে কি আর করা যাবে! :) )
  • Debasis Bhattacharya | ০১ এপ্রিল ২০২০ ১১:১৭91929
  • হখগ, ই, Rajkumar এবং একলহমা,

    আপনাদের ভালো লেগেছে জেনে খুব আনন্দিত । লেখাটি কারুর কাজে এলে কৃতার্থ হব । একে উপদেশ হিসেবে নেবেন না, আমি বিশেষজ্ঞ বা স্কলার নই, যুক্তিবাদী আন্দোলনের কর্মী মাত্র । চিন্তার আদানপ্রদান হিসেবে দেখবেন, এই অনুরোধ । প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই করবেন । উত্তর দিতে পারবই এমন গ্যারান্টি নেই, কিন্তু চেষ্টা করব । অন্তত, সবাই মিলে উত্তর খুঁজতে পারব ।
  • সুকি | 172.69.***.*** | ০১ এপ্রিল ২০২০ ১২:৩০91936
  • খুব ভালোলাগল,

    Alan Sokal এর নাম যখন এলই, এই বইটাও থাক,



  • Debasis Bhattacharya | ০১ এপ্রিল ২০২০ ১২:৪৮91937
  • হ্যাঁ। এটিও বেশ কাজের বই । সংযোজনের জন্য ধন্যবাদ, সুকি ।
  • hkg | 14.***.*** | ০১ এপ্রিল ২০২০ ১৪:৫৫91944
  • আমার দেবাশীষ বাবু র লেখা ফ্যান্টাস্টিক লাগে। সিরিয়াস ফ্যান। কলিম খান ইত্যাদি বিতর্ক ভোলার না, এবং তাতে তাতিন গানের ব্যবহার। আশাকরি গুলোচ্ছি না। :-)))))
  • Debasis Bhattacharya | ০১ এপ্রিল ২০২০ ১৫:৩০91946
  • আরে আমিও তো ফ্যান, বৈদ্যুতিক তাড়নায় সব সময় ঘুরঘুর করছি । তবে কিনা, 'ওরিয়েন্ট ফ্যান' না, অক্সিডেন্টাল ফ্যান । গুরু-র থ্রেডে (ফেসবুকে এবং এখানেও) কলিম খান বিতর্কে যোগ দিয়েছিলাম বটে, তবে সেখানে সঙ্গীতের ব্যবহার করেছিলাম এমন মনে পড়েনা । ওই শাস্ত্রটি থেকে আমি একটু দূরে থাকি, না হলে কাছের বন্ধুরা ভয় পেয়ে যাবেন ।

    আর একবার কলিমখানভিত্তিক এক রহস্য-উপন্যাসকে তেড়ে গাল পেড়ে একটা রিভিউ লিখেছিলাম, তবে সেটা গুরু-তে না, অন্য সাইটে । আর, সেখানেও সঙ্গীতশাস্ত্র-টাস্ত্র ছেলো না কো ।
  • Rajkumar Raychaudhuri | ০২ এপ্রিল ২০২০ ০০:২৯91955
  • আচ্ছা, আপঅনারা সবাই মিলে আমার লেখাটা একটু ঘুরে আসুন না। একটু সমালোচনা করলে  মনে হয় আরো ভাল কিছু খাঁড়া হবে পরবর্তীতে।

  • প্রিয়রঞ্জন | 162.158.***.*** | ০৩ মে ২০২০ ১৯:৫১92956
  • আপনার লেখা পড়ে সবসময়ই সমৃদ্ধ হই। এখানেও তথ্য সমৃদ্ধ বই গুলি পেয়ে সমৃদ্ধ হলাম। 

  • প্রিয়রঞ্জন | 162.158.***.*** | ০৩ মে ২০২০ ১৯:৫১92955
  • আপনার লেখা পড়ে সবসময়ই সমৃদ্ধ হই। এখানেও তথ্য সমৃদ্ধ বই গুলি পেয়ে সমৃদ্ধ হলাম। 

  • Ranjan Roy | ১৩ অক্টোবর ২০২০ ০৬:৫৮98374
  • এই ফ্রেমওয়ার্কটি খুব কাজের। অনেক ধন্যবাদ। 


    সুকি'র সাজেস্টেড অ্যালান সোকাল দিয়ে 'জয় গুরু' বলে শুরু করছি।

  • Debasis Bhattacharya | ২৪ অক্টোবর ২০২০ ১৩:২৩98859
  • রঞ্জন, 


    অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা রইল । 


    ফিডব্যাক দেবেন প্লিজ । 


    আর, কোনও প্রশ্ন থাকলে বা সাহায্য লাগলে বলবেন ।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন