ঘুড়ি ও তান্ত্রিক : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ | ২৩৩৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ২১
তিনি এইখানে বলেছিলেন ঘুড়ি ওড়ানোর খেলার কথা। ঘুড়ির চল এলো এই বাংলাতে। যে ঘুড়ি আসলে এক অপদেবতা। সেই অপদেবতাকে সুতোয় বেঁধে ওড়ানোর উৎসব হল বৌদ্ধদের। প্রথমে প্রকাশ্যে, তারপরে গোপনে। ব্রাহ্মণ্যবাদ এবং বৈষ্ণবভাবধারার সঙ্গে তখন তুমুল বিবাদ। যে কারণে চর্যার উদ্ভব সান্ধ্য ভাষায়, সেই একই কারণে বৌদ্ধদের ঘুড়ি ওড়ানো বন্ধ। কিন্তু এ ঘুড়ি ওড়ানোর যে মজা তা তো ছাড়া যাবে না! অতএব ঘুড়ির কারিগরী মাথায় রেখে বিশ্বকর্ম্মার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হল তাকে। মাটিতে তুমি অনেক কিছুই করতে পার। কিন্তু আকাশে না পারলে আর পারলে কি? ওটাই তো আসল কেদ্দানি! সে কেদ্দানির জন্যই বাছা হল স্থপতিগুরুর পূজোর দিনকে। বৌদ্ধদের ঘুড়ি ওড়া এদেশে থেমে গেলেও, বিশ্বকর্ম্মার শ্রমশীল ভক্তদের ঘুড়ি উড়তেই থাকলো।।
এসপ্ল্যানেড : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব ২০১৩ | ০২ নভেম্বর ২০১৩ | ২৩৯৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৮
সৌমিত্র, এম ডি-র লোক। এম ডি অফিসে ডিরেক্টরদের লোক আছে এটা পছন্দ করেনা। নিজেও স্বস্তিতে থাকেনা। প্রচুর গরমিল থাকে হিসেবে তাদের। সময় মতো কোনো ডাটা এক্সেল শিট-এ ওঠেনা। ভাউচারে সই হয়ে যায় কিন্তু সেই ভাউচার হারিয়ে যায় আবার। অডিট এসে ধরলে বলে আসলে খুচরো মাছ বিক্রি করে যে টাকা হয় তার বিল আর কে দেবে! অথচ কোটি কোটি টাকা মাছের বিক্রিতে নাকি আসে। এমন সব গল্পের মধ্যে বেশ কিছু টাকা চলে যায় এম ডি-র পকেটে। তার লোকদের খেয়ে-খাইয়েও তার ভালই থাকে। কিছু করার নেই। কোম্পানিটাই জালি। ব্রিটিশ একটা কোম্পানির এক বড় মাথা আছে এই কোম্পানির বোর্ডে। তার মামাশ্বশুর আছেন ব্রিটিশ কোম্পানিটিতে। তারা কেউ কারোর সঙ্গে এমনিতে ব্যবসা করেনা, অথচ দুই কোম্পানির দুই বড় মাথা পরস্পরের কোম্পানির বোর্ডে আছে। কি হয়? দুজনে দুজনের জন্য ঘুরিয়ে টাকা কামায়। এখানকার বাজারে সরকার চাষের জন্য যে মাল কেনে, যেমন বীজ,সার ইত্যাদি, সেই মাল কেনা প্রভাবিত করে মামাশ্বশুর। মন্ত্রী-সান্ত্রী নেতাদের সঙ্গে তার ভালই যোগাযোগ। আবার ওখান থেকে সমাজসেবার জন্য ফান্ড আসে মামাশ্বশুরের এন জি ও-তে। কোটি কোটি টাকা আসে। মাঝে মাঝে পাঁচড়া, তালদি, ধুবুলিয়াতে পোলিও শিবির, এইডস সচেতনতা, হুইলচেয়ার দানের আসর বসে। ব্যাস্! দুপক্ষই আরামে আছে। এম ডি এসব সামলায়। তাই তাকে সরায় না মামাশ্বশুর। ইদানীং হাতের বাইরে যেতে পারে বলে কৌশিককে বসিয়ে রেখে চাপ সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। তাছাড়া এম ডি-র যে পার্সোনাল সেক্রেটারি, কৌশিকের বৌ বলেছে সেটাও মামাশ্বশুরের ফিট করে দেওয়া। এম ডি তাকে নিয়ে এখানে ওখানে লীলা করে, সে সব রেকর্ড করা থাকে। এম ডি আবার এই বোর্ডের একজন ডিরেক্টরের জামাই এবং বর। মানে তার শ্বশুর এবং বৌ দুজনেই আছে বোর্ডে। লে ক্যাচাল!
মহাভারত - ষড়বিংশতি পর্ব : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ০৭ জানুয়ারি ২০১৩ | ২৩০৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১
তিনটি কিশোর, একই গ্রামের ছেলে। প্রায় সমবয়স্কও বটে। কিন্তু তিনটে জীবন পৃথক হবে। শিক্ষালয়ের ছাঁচে পড়ে দুটি কাছাকাছি থাকবে, আরেকটির সঙ্গে তাদের দূরত্ব খুব কমবে না। এ কি শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্যা? নাকি কিশোরদের যে বংশে জন্ম তার শিক্ষা-দীক্ষার সুবিধা-অসুবিধে? নাকি আদতে শাসনই শিক্ষাকে সেই ছাঁচটাই বানাতে সাহায্য করছে যা খুব বেশি গভীরে যেতে অসমর্থ? এই দুই প্রাজ্ঞ ঋষি মেনে নিয়েছেন একে সত্য বলে যে দুটি বীজ পৃথক বলে দু-তরফের শিক্ষাও পৃথক হবে। শিক্ষা পৃথক হলে সমাজে তাদের অবস্থানও পৃথক হবে।
কিন্তু পাঞ্চালের আর এক গুরু কৃপবর্মার ভগিনীপতি নিজে কিন্তু তা মানেননি। তাই তাঁর সঙ্গে বিরোধ হয়েছে পাঞ্চালের রাজার। সেই বিরোধ তাঁর জীবনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এখন। তিনি অসম অবস্থাকে অতিক্রম করে পাঞ্চালের রাজার সমতায় পৌঁছে দেখাতে চান এ সত্য না। তাই তাঁর কাছে যখন গাঙ্গেয়র দূত পৌঁছল তখন কালবিলম্ব না করেই তিনি রওনা দিলেন হস্তিনাপুরের পথে। পাঞ্চালে তিনি গুরু-ও নন এখন, আর হস্তিনাপুরে তাঁর করায়ত্ত্ব হতে পারে সব। গো শকটে সমস্ত তল্পিতল্পা তুলে দিয়ে, নিজে চললেন পায়ে হেঁটে। অন্তত পাঞ্চাল দেশ তিনি হেঁটেই পেরোবেন। এ তাঁর জন্মভূমি। আজ যাচ্ছেন, কবে ফিরবেন তা তাঁর জানা নেই। হাতে একমুঠো ধুলো নিয়েছেন নিজের পৈতৃক ভিটের।
টিকিটের দাম ও আমার থিয়েটারঃ কাটাকুটি খেলা : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ১৮০৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
মঞ্চে যা ঘটছিল তখন তাতে কাহিনীর পর কাহিনী অত্যন্ত দুর্বল, আরোপিত ও ন্যূনতম সাহিত্য পদবাচ্য না। একদিকে বিপ্লবের প্যামফ্লেটধর্মী উৎকট নাটক, অন্যদিকে প্রাণান্তকর ভাঁড়ামো। এমনকি নান্দীকারের করা জাতীয় নাট্যোৎসবে বাইরে থেকে আসা নাটকগুলোও সাঙ্ঘাতিক প্রেডিক্টেবল হয়ে উঠেছিল। মনোজ মিত্রের অলকানন্দার পুত্রকন্যা, সুমনের কোরিওলেনাস, নর্মান বেথুন, উষা গাঙ্গুলির কোর্টমার্শাল, মহাভোজ এমন কিছু নাটক এদিক ওদিক আগে বা পরে আসবে সে সময়ে। কিন্তু এগুলো ব্যতিক্রম। তাছাড়া নিষিদ্ধ একটা সম্পর্কের স্বাদকে আন্ডারলাইন করে একটি পত্রিকাগোষ্ঠী তীব্র প্রচার চালিয়েছিল ওই নাটকটি নিয়ে। বহুপঠিত সেই পত্রিকা পড়েই তখন বেশিরভাগ দূরের দর্শক আসতেন কলকাতায় নাটক দেখতে। হ্যাঁ, তখনো আসতেন! কলকাতাতেও বাংলা সিনেমায় অঞ্জন চৌধুরী, স্বপন সাহার যুগ চলছে। শহুরে মধ্যবিত্ত দর্শকেরা হলে যাচ্ছেন না। গ্রামের দিকে ভিডিও পার্লারে তিন ধরণের সিনেমা হয়। একটা পর্নোগ্রাফি, অন্যটা হিন্দি এবং কখনো-সখনো বাংলা। সিঙ্গল স্ক্রিন-ই তখন সব। সেখানে বাংলা সিনেমা চলে এবং লোকজন দেখতে আসেন। কিন্তু তাঁরা কেউই নাটকের দর্শক না। ফলে নাটকের সঙ্গে এর প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে ওঠেনি। নাটকের সঙ্গে তখন কিছু প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়েছে সিরিয়ালের।
মহাভারত : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ১৫ এপ্রিল ২০১১ | ৩৯০৪ বার পঠিত
এই কি ধর্মগ্রন্থ? এই কি ধর্ম? এ যদি ধর্ম হয় তাহলে অধর্ম কি? অগঠিত একটা দেশকে নিয়ে লেখা খুব কঠিন কাজ। গার্সিয়া মার্কেজের ভূমিটির ইতিহাস এখনো নবীন। আমাদের ঘাড়ে কয়েক হাজার বছরের দায়। একশো না দশ সহস্র বছরের নির্জনতায় আমরা স্থাপিত। কন্ঠস্বর খুঁজে পেতে গেলে নির্মাণ চাই। সেই নির্মাণ আমাকে দিতে পারে একমাত্র মহাভারত, মহা ভারবাচ্য চ বলে না, দর্শন-রাজনীতি-অর্থনীতির যুদ্ধক্ষেত্র বলে। সেই ক্ষেত্র থেকে কি পাই তা জানতেই এই প্রয়াস। ভূমিকা তাই ভূমিকার মতন হল না, আমার মতন অপন্ডিতের ব্যাক্তিগত পাঠের সামান্য খসড়া। মার্জনা করবেন পাঠক আমার এ অক্ষমতা। এই মহাকথাকে জানতে বসেছি। তার লিখিত-অলিখিত সকল চেহারায়। তাই আমার গমনাগমন ডায়নামিক ইতিহাসের ক্ষেত্রে। কল্পনার পাখায় একটি লৌকিক পাঠ নির্মাণ আমার উদ্দেশ্য মাত্র। মহাভারতের এবং মহা ভারতের বিপুল পরিসরের ব্যাস বংশের নির্মিত এবং সংগৃহিত আখ্যানের প্রতিটি প্রান্তকে যথাসাধ্য মন্থন করেই চেষ্টা করেছি এই রূপ প্রস্তুত করতে। কোনো নির্দিষ্ট পাঠের এটি ব্যাখ্যা না, টিকা-টিপ্পনী না, স্বতন্ত্র মহাভারত রচনাই এ ক্ষুদ্রের বিপুল স্পর্ধা। আসন পেতে বসলে পাঠারম্ভ। সর্বশেষ তিরস্কার-পুরস্কার নতমস্তকে স্বীকার্য।
মহাভারত -- উনবিংশতি পর্ব : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ | ২০৪৯ বার পঠিত
কুন্তী রুদ্ধনিশ্বাসে শুনছেন। এই জন্যই যাননি তিনি আমন্ত্রণে। এই বোঝাপড়া তাঁর দরকার। অন্যদের উপস্থিতিতে হবেনা। কাল রাত্রে ব্যাসদেব রাজনীতি, ভবিষ্যৎ এসব নিয়ে যা বলেছেন তার জন্য সকলের আগে চাই এই বোঝাপড়া। এই যুদ্ধটা করতে গেলে গৃহের মধ্যে শত্রু থাকলে চলবে না। না, যা ভেবেছিলেন তা নয়। কম কথা বলা সর্বাণী যখন বলে তখন সত্যি সত্যি বলে। শোনা ছাড়া কোনো উপায় থাকেনা। নরম, সহজ গলায় কঠিনকে এমন করে বলা কি তাঁর পক্ষেও সম্ভব ছিল? এবারে মুখ তুলে তাকালো তাঁর দিকে সর্বাণী ...
মহাভারত - দ্বাবিংশতি পর্ব : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১২ | ২২২৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
এই তো।দুঃশাসনকে চকিত আক্রমণ করেছে ভীম।এর আগে আক্রমণ করে করে ফিরে যাচ্ছিল বলে দুঃশাসন ধরেই নিয়েছে সে এবারো তাই করবে।ক্লান্তি এবং অসতর্কতার ফসল নিল ভীম। হাঁটুর পিছনের দিকে একটা হাত,আরেকটা হাত বুক আর পেটের সীমান্তে দিয়ে দুঃশাসনকে মাটি থেকে তুলে ফেলেছে।নিজের পা গেঁথে নিয়েছে মাটিতে।যুধিষ্ঠির সমেত বাকী পান্ডবরা উল্লাসে চিৎকার করছে।দুর্যোধনের মুখ গম্ভীর।বাকী কৌরবরাও উৎসাহ দিচ্ছে দুঃশাসনকে হাত দিয়ে ভীমের মাথাটাকে সাপটে ধরার জন্য।বারবার হাত বাড়াচ্ছে দুঃশাসন।কিন্তু ভীম মাথা সরিয়ে নিচ্ছে ওই অবস্থাতেই।দুটো পক্ষ এখানেও স্পষ্ট।ক্রমশ নিজের উপরের হাতের জোর বাড়িয়ে দুঃশাসনকে নিজের হাঁটু থেকে মাটিতে আছড়ে ফেললো ভীম।একই সঙ্গে বাঁ-পাটা বাড়িয়ে প্রথমে কোমরে,তারপরে চেপে বসলো তার বুকের উপরে।প্রশংসনীয় দক্ষতা বটে এই মধ্যম পান্ডবের।শক্তি এবং বুদ্ধির মিশেল আছে এর কৌশলে।তবে এই কৌশল উত্তরাখন্ডের কৌশল না।দুঃশাসনরা কুস্তির এই ধারার সঙ্গে এখনো পরিচিত হয়নি।এ হল পূর্ব দেশের ধারা।নিষাদ,শবর,নাগেরা এই ধারায় লড়ে।জঙ্গলে বাঁচার মতন নিয়ম এই ধারায়।শত্রু নিজের থেকে অনেক দুর্বল হলেই একমাত্র সরাসরি আক্রমণ।না হলে তাকে প্রথমে শক্তিক্ষয় করাতে হবে।তারপরে হানতে হবে অতর্কিতে আক্রমণ।জঙ্গলের যুদ্ধের নিয়ম এ সব।কোথায় ভীম শিখলো জানতে হবে!
আসুন পারলে, এখানে একটা কান্ড ঘটছে - প্রথম কিস্তি : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব ২০১২ | ০২ নভেম্বর ২০১২ | ১৫৭১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
৮ মার্চ, ১৯৬৭: ক্রিস মার্কে SLON (Service de lancement des oeuvres nouvelles)-এর প্রথম প্রজেক্ট Loin du Vietnam (1967)-এর সম্পাদনা করছেন। Godard, Ivens, William Klein, Claude Lelouch, Alain Resnais এবং Agnès Varda এঁদের সকলের নিজস্ব নির্মাণ দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রতিবাদ রয়েছে এতে। মার্কেরা একে বলছেন cinéma ouvrier। কোনোরকম ব্যক্তিগত নেতৃত্ব ও অথরশিপকে বাদ দিয়েই হবে নতুন সিনেমার নির্মাণ। এমন সময়ে Rhodiaceta থেকে চিঠি হাজির René Berchoud-এর। রেনে-রা তিন হাজার শ্রমিক ওখানে Rhône-Poulenc-এর মালিকানায় থাকা কারখানাটিতে ধর্মঘট করেছেন এবং দখল করে নিয়েছেন সেটা। একমাসের দীর্ঘ্য ধর্মঘট হয়েছে ২৫ শে ফেব্রুয়ারী থেকে। ১৯৩৬ সালের পরে সেই প্রথম কোনো কারখানা মজুররা দখল করে রাখলো। মালিক কোম্পানিটি সে আমলের ফ্রান্সের অন্যতম বড় কোম্পানি।
মহাভারত - দশম পর্ব : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ১১ জুন ২০১২ | ২১১১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
সংসারে উচ্চতম আদর্শ কি ব্রহ্মচর্য্য?পরাশরকে এ প্রশ্ন করেছিলেন সত্যবতী।তাঁর কৌতুহল ছিল খুব স্বাভাবিক।সাধারণভাবে এই ব্রহ্মচর্য্য নিয়ে এত কথা বলা হয়।তাহলে যাঁরা সংসারত্যাগী তাঁদের মধ্যে একাংশ কেন স্ত্রী-পুত্রাদির অভিলাষ রাখেন?অন্য অংশটা,যাঁরা দুরূহ পাহাড় বা জঙ্গলে চলে যান সাধনা করতে সেই অংশটা অতি ক্ষুদ্র।পরাশরের কাছে নানান কাহিনী শুনতে শুনতে তাঁর কৌতুহল জেগেছিল যে এত এত মহা ঋষি বা মুনি কেন সংসার করলেন? তারই সঙ্গে ধীমতি আরেকটি প্রশ্নও করেছিলেন!এই যে যাঁরা সংসার ত্যাগ সত্যি করেন,নারী সংসর্গকেও অনাচার বলে গণ্য করে এক দীর্ঘ্য সময় সাধনা করতে থাকেন বারেবারে দেখা যায় দেবরাজ তাঁদের ভয়ে ভীত,অথবা দেবকূল চূড়ামণি ব্রহ্মা বা বিষ্ণু বা মহাদেব স্বয়ং তাঁকেই বর দিয়ে সন্তুষ্ট করছেন।এই আখ্যানের মধ্যখানে থাকে দেবরাজ ইন্দ্র বা অন্যান্য দেব অপ্সরা পাঠিয়ে নারীর প্রলোভনে ভাঙতে চাইছেন তপস্যা।কেন?নারী কি শুধুই পাপ?...
মহাভারত - একাদশ পর্ব : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ২৬ জুন ২০১২ | ২৬১৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
দুর্যোধনকেও এই খেলা দেখাতে বসেন ধৃতরাষ্ট্র। তাঁর বক্তব্য এটা ক্ষত্রিয়দের দেখাই দরকার। যুদ্ধ, মৃত্যু, রক্তপাত এসব তার জীবনের অঙ্গ। কাজেই এ তার শিক্ষার অংশ। ধৃতরাষ্ট্র শোনেন আর্তচিৎকার আর দুর্যোধন দেখে। গান্ধারী বলতে পারেন না কথাটা ভুল। তাঁরা ক্ষত্রিয় বলেই তো শাসন করছেন! কিন্তু শাসন যখন অসহায়কে হত্যা করে, তা সে বিচার বা যুদ্ধ যে নামেই হোক, তা তিনি সহ্য করতে পারেন না। সারাজীবন এত অধর্মাচরণ দেখে এসেছেন যে আর ভাল লাগেনা তাঁর। এ খেলা কোথায় নিয়ে যেতে পারে মানুষকে তা তিনি হাড়ে-মজ্জায় বুঝেছেন। নিজের দেশের কথা মনে পরে তাঁর। এই উপমহাদেশের প্রত্যন্ত অংশে থাকা অঞ্চল।কিছুকাল অন্তরই বাইরে থেকে যাযাবর, দস্যু বা অন্য গোষ্ঠী আক্রমণ করে এসেছে। বারেবারে রাজ্য শাসন পাল্টে গেছে। কত যে মিশ্রণ হয়েছে তার শেষ নেই। আর সেই রাজ্য সুরক্ষিত রাখতে প্রতিদিনই শাসনতন্ত্র বহু বহু অধর্ম আচরণ করে চলেছে। এই দোয়াব এবং উত্তরাপথের অন্যত্র প্রচলিত ধর্মের-আচরণের সঙ্গে কোনো মিল নেই তার। এ নিয়ে কম কথাও শোনেননি তিনি, এই হস্তিনাপুরে বধূ হিসেবে আসার পর থেকে। মাঝে মাঝে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তাঁকে করুণা করে আনা হয়েছে এখানে, একথাটা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে অহরহ। ধৃতরাষ্ট্রই বেশী করেছেন। সত্যবতী তুলনায় এত নির্মম না। তাঁর ভয় নেই যে গান্ধারী হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। কিন্তু ধৃতরাষ্ট্রের আছে বিলক্ষণ।
টোবা টেক সিং-এর স্বাধীনতা : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৬ আগস্ট ২০১২ | ১১১৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
আমিও জানি, একদিন টোবা টেক সিং-এর মতন আমাকেও খসে পড়তে হবে নিজের পায়ের থেকে। প্রশ্ন করলে বলা হবে এজেন্ট প্রোভোকাটুর। আগেও বলেছে অন্য সরকার। অন্য দল। দরকারে জেলে দেবে, গুলি করবে, অসম্মান করবে নানা ভাবে। কিন্তু আমার নামও টোবা টেক সিং। সমস্ত দলের সীমানার বাইরের এক নো-ম্যানস ল্যান্ড-এ দাঁড়িয়ে আমি জানতে চাইছি আমার দেশটা ঠিক কোথায়? আপনাদের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আমার দেশটা কোথায়? কোথায় প্রশাসন মনে করবে না আমি তার কেনা গোলাম? মনে করবে না যে আমাকে বন্দুক আর ভয় দিয়েই শেষ করা যায়? কোথায় তার সময় থাকবে আমার প্রার্থনার উত্তর দেবার, আমার কথা শোনবার? আমার সঙ্গে কথা বলবার? কোথায় সে উন্মাদ ঈশ্বর সেজে থাকবে না আমারই সঙ্গে পাগলা গারদে?
মহাভারত -- সপ্তদশ পর্ব : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ২১ আগস্ট ২০১২ | ১৪৭৫ বার পঠিত
কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন তাঁর সন্তান। কিন্তু সেও বোধহয় মনে করে তিনি বহুকাল ধরেই এই বংশের বিষয়ে অযথা ব্যস্ত। কুরুকূলের সমস্যার সমাধান তাদের বা বিশেষ করে পুরুষদের হাতে ছেড়ে দেওয়াই উচিত ছিল। কখনো মুখে না বললেও তিনি বুঝেছেন। কোথাও তাঁর পুত্রও মনে করে যে নারীরা যেহেতু তিনিও জানেন যে মহারাজ শান্তনুকে ধরেও এই বংশ গাঙ্গেয়র মতন শাসক কখনো পায়নি। মহারাজ কুরু যেমন ধার্মিক, নিষ্ঠ শাসক, তেমনই একজন হতেন গাঙ্গেয়। কিন্তু তাঁর পিতা হতে দেননি, শান্তনু হতে দেননি, তিনিও হতে দেননি। বাকী দুজনেই এখন জাগতিক উত্তরের সীমার বাইরে। তিনি যে আছেন! তাই না এতকাল...। হায় রে, হায় রে! সুখের ছদ্মবেশে কখন যে দুঃখ এসে দাঁড়ায় মানুষ তা টেরও পায় না। সুখের মালা গলায় দুলিয়ে চলতে গিয়ে অকস্মাৎ অনুভব করে, এ মালা সুখের না, এ মালার বড় ভার। তিনিও ব্রাহ্মণ ঋষি পরাশরের সঙ্গিনী হতে না পারার দুঃখকে রাজরাণী হবার সুখ দিয়ে একদিন ঢাকতে গিয়েছিলেন। শান্তনুকে প্রত্যাখ্যান করতে গিয়েও মনে হয়েছিল সঙ্গোপনে, এও একরকম প্রতিশোধ হবে। পরাশর, দূরগামী পরাশরের বংশ যে বংশের কূলগুরু তাদেরই প্রাসাদে তিনি দাঁড়াবেন। রাজেন্দ্রাণী হয়ে পরাশরকেও বুঝিয়ে দেবেন তিনি এতটাও ফেলনা ছিলেন না।
মহাভারত -- ষোড়শ পর্ব : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ০৬ আগস্ট ২০১২ | ১৩৭৬ বার পঠিত
হস্তিনাপুর কোন পথে চলবে তার উপরেই দুই নারীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করে আছে। একজন যাবেন বাণপ্রস্থে, অন্যজন নগরের মধ্যেই থাকবেন, কিন্তু প্রাসাদে নয়। প্রাসাদের মতিগতি তাহলে নিয়ন্ত্রণের রাস্তা কিছুই থাকলো না কি? আছে। সত্যবতীর নিজস্ব চরেরা থাকবে। তারা থাকবে অলকার অধীনে। তার জন্য নির্দিষ্ট মাসোহারার বাইরেও সে অর্থ পাবে। সেই অর্থ আসবে সত্যবতীর নিজস্ব সম্পদ থেকে। মহারাজ শান্তনু জীবৎকালে তাঁকে যে গহনা ও ভূসম্পদ দান করেছিলেন সেই সম্পদ তিনি গচ্ছিত রাখছেন গাঙ্গেয়র কাছে। সেই সম্পদের থেকে আহরিত অর্থে এই বিশেষ বাহিনীর ব্যয় নির্বাহ হবে। এই বাহিনীতে বয়স্কা স্ত্রী লোক, সেই ঋষিপত্নীরা যাঁদের যাতায়াত থাকে অন্দরমহলে বিভিন্ন কারণে, নাপিতানি, ধাই-এরাই মূলত নিযূক্ত হত। এদের কাজ ছিল রাজপ্রাসাদের অন্দরমহল ও রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে কি ঘটছে তাও জানানো রাণীকে!
মহাভারত -- অষ্টাদশ পর্ব : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ৩০ আগস্ট ২০১২ | ১৭২৫ বার পঠিত
মাদ্রী এই খেলাতেই মেতেছিল একদিন। রোগগ্রস্ত পাণ্ডুকে নিয়ে কুন্তীর সঙ্গে সেই খেলাতে সে জিততে চেয়েছিল। পাণ্ডুকে বশ করে কুন্তী ক্রমাগত পুরুষসঙ্গ করে চলেছে। জন্ম দিয়ে চলেছে সন্তানের। কুন্তীর সন্তান জ্যেষ্ঠ। রাজ্যাধিকারের প্রশ্নটি মীমাংসিত। কিন্তু কেন? বারেবারে কেন হার হবে মাদ্রীর? ঋষি বা রাজন্যের আতিথ্য করা এক পালিতা রাজকুমারী তাঁর চেয়েও সুখী হবে? তিনি শল্যাধিপতির ভগ্নী, তাঁকে বিয়ে করতে রীতিমত পণ দিতে হয়েছিল পাণ্ডুকে, গাঙ্গেয় সে পণ মেনে নিয়েই বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন, সেই মাদ্রী, মদ্রসুন্দরী পরাজিত হবে কেন বারেবারে? শোধ নেবার খেলায় মেতেছিলেন তিনি। এক পুরুষের সাহচর্য্য পেয়েছিলেন। সেও কুন্তীই আয়োজন করেছিল পাণ্ডুর আদেশে। তাতে কি শরীর শান্ত হয়? কুন্তী বহু সংসর্গ করবে আর তিনি এক?
মহাভারত - দ্বাদশ পর্ব : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ০৩ জুলাই ২০১২ | ১৬৩৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
মধ্যযামে যখন সূর্য তখনই তার প্রখর তেজ সবচেয়ে কাজে লাগার কথা।কিন্তু লাগেনা। সে তেজ-এ সব শুকিয়ে যায়। মানুষের জীবনও এমন। মধ্যযামেই সে সবচেয়ে বেশী তীক্ষ্ণ আর তীব্র। কিন্তু তার সেই তীব্রতা তাকে ক্রমশ সংঘাতসংকূল করে তোলে। প্রথম জীবনের স্বপ্নগুলো ধীরে ধীরে মরীচিকার মত মিলিয়ে গিয়েছে তখন। যা কিছু একদিন সম্ভব মনে হচ্ছিল তা আজকে বোঝা যাচ্ছে অসম্ভব প্রায়। ভবিষ্যৎ একটি অসার প্রস্তাবনা। তখন ক্রমশ জেগে ওঠে ক্রোধ, আক্ষেপ, ক্ষোভ। আরো কিছু সময় গেলে একদিন সেই সব ক্ষোভ মিলিয়ে যাবে। আপন নশ্বর জীবন এ সকল ক্ষোভ-ক্রোধ-আক্ষেপকে বর্ণহীন করে দেবে। তখন মনে হবে অনর্থক বিবাদ সব। যে যা করছে সে তা করবেই। কাউকেই কিছুই বোঝানো যাবেনা। তাহলে কী ফল? ব্যাস শুনছিলেন সায়নাচার্য্যের কথা। এমন কথা তিনি আগেও শুনেছেন,কিন্তু বক্তা কেউ-ই সায়নাচার্য্যের মত আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গীর অধিকারী ছিল না। গম্ভীর ভরাট গলায় সায়নের কথা খুবই বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়। ব্যাসের বাম দিকে বসেছিলেন অশ্বল। সায়নের কথা শেষ হতেই তীব্র হাস্যে ভরিয়ে দিলেন কক্ষ। সকলে তাঁর দিকে উৎসুক হয়ে তাকালো। অশ্বল কোনোক্রমে হাসি সামলালেন।
মহাভারত - চতুর্দশ পর্ব : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ১৮ জুলাই ২০১২ | ২৬৩৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
দীর্ঘ্য শরীরটি চলে গেল দ্বার অতিক্রম করে। হস্তিনাপুর সাম-দান-দন্ড-ভেদের অতিকুশলী এক শাসককে এই ভাবেই যেতে দিয়েছে। কি কৌতুক জীবনের! এই প্রথমবার ব্যাসের নিজেকে কিছুটা খর্ব লাগছে ওই দীর্ঘ্য দেহের তুলনায়। তিনি যাই করুন, যতই করুন, হস্তিনাপুরের শাসকরা তাঁর রক্তপ্রবাহ বলেই পরিচিত। তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় থাকবেই। কিন্তু দেবব্রত একমাত্র হস্তিনাপুরের কাছেই দায়বদ্ধ। দীর্ঘ্যনিঃশ্বাস ফেললেন ব্যাস। কৃষ্ণদ্বৈপায়ন অনেক কীর্তির অধীশ্বর হবেন হয়তো, কিন্তু তিনি দেবব্রত ভীষ্ম হবেন না। এই সত্য! এই অমোঘ সত্য।
মহাভারত - পঞ্চবিংশতি পর্ব : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ১৮ ডিসেম্বর ২০১২ | ১৭৩৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
বিদুর বালকের চোখে দেখলেন এক ঝলসানো ক্রোধ! অর্জুন সোজা তাকিয়ে আছে তাঁর দিকে। রেখাটা গাঢ় হল মাত্র। বিভাজন ঠেকানো সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। কৌরব বংশ একত্রিত হলে যা হতে পারতো তা শুধু কষ্টকল্পনা এখন থেকে। ওই বালকের ক্রোধ বলে দিচ্ছে গৃহযুদ্ধের দামামা বেজে গেল। এখন এই বালককে আপ্তবাক্য শুনিয়ে লাভ কি? অথচ তিনি বিদুর। দুর্যোধন তাঁরও ভ্রাতুষ্পুত্র, ঠিক এঁদেরই মতন। মহারাজ পাণ্ডু আর মহারাজ ধৃতরাষ্ট্রের বিবাদেও তিনি কিন্তু পক্ষ নেননি কোনো। শুধু পাণ্ডবদের ন্যায্য অধিকারের জন্যই কুরুসভায় দাঁড়িয়েছিলেন। তাহলে এখন তাঁকেও কি পক্ষ নিতেই হবে? গাঙ্গেয়র মতন তিনি যে এড়িয়ে যেতে পারছেন না। গাঙ্গেয় তাঁর মতন সম্পর্কের, মোহের অথবা প্রেমের বাঁধনে যে বাঁধা নেই। তিনি, ধর্মবেত্তা বিদুর যে প্রথম প্রেমের কাছে সদা সমর্পিত, তাঁর কী হবে?
মহাভারত -- ত্রয়োবিংশতি পর্ব : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ১২ অক্টোবর ২০১২ | ১৮৪৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
সেই শুরু। তারপরে দীর্ঘ্য সময় গর্গ ভ্রমণ করেছেন মথুরা রাজ্যের প্রতিটি অংশ। যাদবদের রাজনীতি কেন্দ্রীভূত ছিল গণসভার অস্তিত্বের মধ্যে। সেই অস্তিত্বকে যখন কংস উপড়ে ফেলে দিল, রাজা উগ্রসেনকে বন্দী করলো, বন্দী করলো নিজ ভগিনী দেবকী এবং বান্ধব বসুদেবকে তখন মথুরা নগরে কোনো বিরোধী কেন্দ্র রইলো না। কংস ভেবেছিল বসুদেব তাকে সমর্থন করবে। কিন্তু তা না হওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়। এই সূত্রটা ধরলেন গর্গ। বসুদেবের মিত্রতা ছিল গোপেদের সঙ্গেও। সে বৈষ্ণবদের ‘বাসুদেব’ হতে চলেছে তখন এবং গোপেরা মূলত বৈষ্ণব। তাছাড়া সে স্বভাব বশতই মিষ্টভাষী। শ্বশুর উগ্রসেন রাজা থাকাকালীন গোপেদের রাজনৈতিক এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধার প্রতিনিধিত্ব সেই করতো মথুরাপুরে। প্রথমে গর্গ গোপেদের মধ্যে নিজের অবস্থান শক্ত করলেন। কণাদের পরমাণুবাদ ছাড়লেন। নিজেকে রূপান্তরিত করলেন বৈষ্ণবে। একমাত্র ধর্মই সমাজকে চালনাকারী রাজশক্তির সমকক্ষ হতে পারে। আর সেই ধর্ম বেদ, ন্যায়, সাংখ্য এ সব দিয়ে চললে হবে না। ধর্মের জনপ্রিয়তা ও শক্তির মূল ভিত্তি যে মানুষ তার কাছে সহজ হতে হবে ধর্মকে। বৈষ্ণব ধর্মের মধ্যে আছে সে বীজ। তাই পরিবর্তিত গর্গ বৈষ্ণব হলেন। তারপরে মথুরাপুরে খুঁজে বের করলেন কংস বিরোধী গণসভ্যদের। দ্বিতীয় কাজে তাঁর সাহায্য করেছেন কদম। যেহেতু কংসের নজর বেশী থাকবে গর্গের উপরে, তাই তিনি রাজধানীতে আসতেন না। আসতো কদম। অক্রুর, পৌল সাত্যকীরা ধীরে ধীরে মেনে নিয়েছেন একমাত্র উপায় অভ্যুত্থান। কিন্তু সামরিক অভ্যুত্থান হওয়া অসম্ভব। কংস নিজের হাতে রেখেছে সৈন্যবাহিনীকে। তাদের প্রতিপালনে সে যথেষ্ট মনোযোগীও। সাধারণ মানুষ সেই বাহিনীর সঙ্গে সমরবিদ্যায় পেরে উঠবে না। তাহলে? রাস্তা ছিল একটাই। কংসের দম্ভকে কাজে লাগানো। ঠিক সেই কাজটাই হয়েছে।
যোদ্ধা : শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বুলবুলভাজা | অন্য যৌনতা | ০২ অক্টোবর ২০১১ | ১১২৮ বার পঠিত
আমি তখন যুদ্ধক্ষেত্রে উঠে দাঁড়িয়েছিলাম। পায়ের একদিক থেকে রক্ত ঝরে যাচ্ছে তখনো, তবে বেশ কমে এসেছে। বাঁধন দিয়েই আটকেছিলাম। চারপাশে শুধু মানুষের স্তুপ। তার মধ্যেই আমার মত কয়েকজন ছটফট করছে। কারোর হাত, কারোর পা, কারোর মাথা চোট পেয়েছে। আর বাকি যারা পড়ে আছে, উঠছেনা, তারা সব মৃত মানুষ। মাঠটার চারপাশে কিছু গাছ ছিল। গাছগুলোতে এখন পাখির দল কিচমিচ করছে। মানে সন্ধ্যা হয়ে এল। এছাড়া সন্ধ্যা বোঝার উপায় এখনো নেই। আকাশটা লালচে হয়ে আছে। কনে দেখা আলো না কী বলে যেন! বেশ কিছু লোক হাতে গড়া মাচা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।