এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  প্রবন্ধ

  • অর্থনীতির নোবেল, ২০২৪ – দ্বিতীয় পর্ব

    Anirban M লেখকের গ্রাহক হোন
    প্রবন্ধ | ১৬ নভেম্বর ২০২৪ | ৪৮ বার পঠিত
  • দ্বিতীয় পর্ব
    প্রথম পর্বের পরে…
    কোন বেড়াল ইঁদুর মারে?
     চিনা রাষ্ট্রনেতা দেং জিয়াওপিং-এর একটা কথা খুব উল্লিখিত হয় বাজার অর্থনীতির প্রয়োগ যোগ্যতার আলোচনায় – বেড়ালের রঙ দেখে লাভ নেই যতক্ষণ সে ইঁদুর মারতে পারে। একই কথা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও খাটে। কিন্তু প্রশ্ন হল সব ধরণের প্রতিষ্ঠান কী অর্থনৈতিক বৃদ্ধির সহায়ক? এক্ষেত্রে আমি কিন্তু রাষ্ট্র বনাম বাজারের পুরোন তর্ক টেনে আনছি না। বাজারের মাধ্যমে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হতে গেলেও তাত্ত্বিক ভাবে অন্তত দু-ধরণের প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা – সম্পত্তির মালিকানার প্রতিষ্ঠান এবং চুক্তি সম্পাদনের প্রতিষ্ঠান। এর কারণ খুব সহজ এবং কিছুটা আমি আগের লেখাতেও আলোচনা করেছি। তাও আরেকবার বলছি। মালিকানা-প্রতিষ্ঠান যদি দুর্বল হয়, অর্থাৎ, আপনি যদি আপনার সম্পদের মালিকানা কেড়ে নেওয়া হতে পারে এরকম ভয়ে থাকেত,তাহলে আপনি বিনিয়োগ করবেন না এবং তার ফলে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিও কম হবে। অন্যদিকে, ব্যবসায়িক চুক্তি যেকোন অর্থনৈতিক কার্যকলাপের প্রাণকেন্দ্রে আছে। তাই আপনি যদি জানেন চুক্তির খেলাপ করে অন্যপক্ষ টাকা মেরে দিতে পারে এবং কোর্টে গিয়ে লাভ নেই, তাহলে আপনি ব্যবসাই করবেন না। এখন আচেমোগলু  এবং জনসন (হীরেনবাবু আগের লেখার নিচে কমেন্টে জানিয়েছিলেন Acemoglu র সঠিক উচ্চারণ আজেমোলুর বেশি কাছাকাছি। সেটাই হবে নিশ্চয়ই। কিন্তু আমি আপাতত কন্টিউনিটির জন্য আগের পর্বে লেখা বানান বজায় রাখলাম) তাঁদের আনবান্ডলিং ইন্সটিটিউশন নামক গবেষণাপত্রে দেখার চেষ্টা করলেন এই দুধরণের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোনটি কার্যকরী (Acemoglu and Johnson, 2005)। মনে রাখতে হবে আচেমোগলু, জনসন এবং রবিনসনের ২০০১ এর কাজে তাঁরা কিন্তু দেখিয়েছিলেন যে সম্পত্তির মালিকানার প্রতিষ্ঠান যত ভাল হবে, জাতীয় আয় তত বাড়বে। এই পেপারেও তাঁরা একই পদ্ধতি ব্যবহার করলেন এস্টিমেশনের জন্য। কিন্তু দেখা গেল, মালিকানা প্রতিষ্ঠানের প্রভাবে জাতীয় আয়ে বৃদ্ধি হলেও, চুক্তি সম্পাদনের প্রতিষ্ঠানের খুব বেশি প্রভাব নেই। শুধুমাত্র আর্থিক মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের মান ছাড়া আর কোন ম্যাক্রো-চলকের ওপরের এর কোন প্রভাব নেই। কিন্তু কেন এই তারতম্য? আচেমোগলু এবং জনসন একটি গাণিতিক মডেলের মাধ্যমে তার ব্যাখ্যা দিলেন। মালিকানার প্রতিষ্ঠান কেন কাজ করে আগেই বলেছি, চুক্তি সম্পাদনের প্রতিষ্ঠান কেন করছে সেটুকু বলছি। তাঁরা বললেন যে চুক্তি সম্পাদনের প্রতিষ্ঠান খুব খারাপ হলে কোন ব্যবসা বাণিজ্য হবে না। কিন্তু চুক্তি সম্পাদনের প্রতিষ্ঠান যদি চৌকাঠ-মান পেরিয়ে যায় তাহলে সবাই জানে যে চুক্তির খেলাপ করলে শাস্তি হবে তাই কেউ খেলাপ করে না। সেই চৌকাঠ-মানের ওপরে যেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য হয়, সেখানে চুক্তি-সম্পাদনের প্রতিষ্ঠানের অল্প উন্নতি বা অল্প উন্নতির খুব কোন প্রভাব নেই।
      আমার মতে এই ব্যাখ্যাটি সঠিক না। কেন সে কথায় আসছি।  আচেমোগলুরা যে ধরণের প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজটা করছেন তা রাষ্ট্রীয়। কারণ আন্তর্জাতিক ভাবে তারই পরিমাপ পাওয়া সম্ভব। কিন্তু তাঁরা কাজটা করেছেন পূর্বতন কলোনিদের নিয়ে। তার মধ্যে আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া জাতীয় কিছু দেশ বাদ দিলে বাকি দেশগুলি উন্নয়নশীলতার বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। সম্পত্তির মালিকানার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রভাব প্রায় সব দেশে বেশি হলেও, চুক্তি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কিন্তু আমাদের মত দেশে অ-রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রভাব অনেক বেশি। আচেমোগলুরা যখন চুক্তি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জাতীয় আয়ের সম্পর্ক মাপছেন তখন অ-রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানকে তাঁরা মাপের মধ্যে আনতে পাচ্ছেন না। কারণ আন্তর্জাতিক ভাবে সে রকম কোন তথ্য নেই। এবার মানুষ যেহেতু চুক্তি জনিত সমস্যার জন্য অ-রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের দারস্থ হন, তাই আচেমোগলুদের রিগ্রেসনে রাষ্ট্রীয় চুক্তি প্রতিষ্ঠান আর জাতীয় আয়ের সেরকম কোন সম্পর্ক পাওয়া যাচ্ছে না।  
      এই আলোচনায় আরো ঢোকার আগে রাষ্ট্রীয় এবং অ-রাষ্ট্রীয় চুক্তি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে একটু বিশদে আলোনা করে নি। চুক্তি প্রতিষ্ঠানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান মানে হল আইন, আদালত। অর্থাৎ কেউ হয়ত কোন চুক্তি খেলাপ করল, আপনি তার বিরুদ্ধে কোর্টে গেলেন। কিন্তু সত্যিই কী আমরা কোর্টে যাই যেকোন চুক্তি খেলাপের ক্ষেত্রে। ধরুন, কোন কন্ট্রাকটর আপনার থেকে কাজ করার জন্য আগাম নিয়ে কেটে পড়ল। আপনি কী করবেন? কোর্ট বা পুলিশ করাটা প্রায় অবাস্তব। আপনি প্রথমে হয়ত ক্লাবের ছেলেদের জানাবেন, পাড়ার রাজনৈতিক দাদা কে ধরবেন বা নিদেন কাউন্সিলর বা বিধায়ককে ধরবেন। এর প্রত্যেকটিই অ-রাষ্ট্রীয়, এমনকি কাউন্সিলর বা বিধায়কের দারস্থ হওয়াও। তাঁরা নিজেরা রাষ্ট্রের পদাধিকারী হলেও এই সমস্যার সমাধান তাঁরা নিজেদের প্রভাব খাটিয়েই করবেন, রাষ্ট্রের আইন-কানুন ব্যবহার করে নয়। আপনি পাড়ার গুন্ডা বা মাফিয়ার দারস্থও হতে পারেন যেমন বিভিন্ন ঋণদানকারী সংস্থা হয়। এক্ষুনি যে প্রতিষ্ঠানের কথা বললাম সেগুলি অ-রাষ্ট্রীয় হলেও কাজ করে রাষ্ট্রের মত করে। মানে কেউ এসে তাদের কাছে অভিযোগ জানায়, তারা তার প্রতিকার করে (গডফাদার সিনেমার শুরুটা মনে করে দেখুন)। এর বাইরেও আরো দুরকম অ-রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে। তার মধ্যে একটি হল রেপুটেশন মেকানিসম বা দুর্নামের ভয়। ধরা যাক আপনি কোন একটি সঙ্ঘবদ্ধ গোষ্ঠীর অংশ। কন্ট্রাক্টর জানে আপনাকে ঠকালে আপনার গোষ্ঠীর কেউ তাকে কাজ দেবে না কারণ আপনি তার দুর্নাম করে দেবেন। সেই ভয়ে সে কখনো ঠকায় না। আমাদের মত দেশে ব্যবসায়িক গোষ্ঠীগুলি কিন্তু এই নীতিতেই কাজ করে। আমি একটু অতি-সরলীকরণ করে বললাম কিন্তু এরকম একটি গোষ্ঠী বা তার কার্যপদ্ধতির নানান দিক রয়েছে এবং অর্থনীতিতে এই বিষয়ের ওপরে একটা বিরাট তাত্ত্বিক এবং এম্পিরিক্যাল গবেষণা রয়েছে।  সব উল্লেখ করা এখানে সম্ভব নয়। এপ্রসঙ্গে কাইবান মুন্সির কাজ পড়ে দেখতে পারেন, এই ধরণের কাজের দৈর্ঘ-প্রস্থের একটা আন্দাজ পাবেন (Munshi, 2014)। আমি শুধু দু’টো বই-এর কথা বলছি যা পড়ে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছিলাম। প্রথমটি হল Lawlessness and Economics, যা লিখেছেন অবিনাশ দীক্ষিত। যাঁরা অর্থনীতির প্রায়োগিক তত্ত্ব পড়তে ভালোবাসেন তাঁরা অবশ্যই পড়ে দেখবেন। কিন্তু বইটি গাণিতিক মডেল সমৃদ্ধ, তাই সে ধরণের লেখা পড়ার অভ্যেস দরকার।
     
    দ্বিতীয় বইটি এলেনর ওস্ট্রমের Governing the Commons. ওস্ট্রম প্রথম মহিলা অর্থনীতিবিদ হিসেবে নোবেল পান ২০০৯ সালে। আমরা এতক্ষণ ব্যক্তি মালিকানা রক্ষার প্রতিষ্ঠান নিয়ে কথা বলেছেন, ওস্ট্রম কিন্তু বলেছেন সাধারণ সম্পদ রক্ষার কথা। এই ব্যাপারে ট্রাজেডি অফ কমন্স এর কথা হয়ত অনেকেই জানেন। সেটা আরেকটা বড় গবেষণা ক্ষেত্র। কিন্তু ওস্ট্রম যেটা দেখিয়েছেন সেটা হল গোষ্ঠী বা কমিউনিটি, বাষ্ট্রের বাইরে দাঁড়িয়ে কীভাবে এই কাজ করে। যে নীতিতে কাজ হয় তা কিন্তু চুক্তি সম্পাদনের প্রতিষ্ঠানের মতই। উৎসাহী পাঠক পড়ে দেখতে পারেন। এই বইতে গাণিতিক মডেল কম, কিন্তু গেম থিওরির একটু বেসিক ধারণা লাগবে।
      এখন প্রশ্ন হল, ব্যবসায়িক গোষ্ঠী বা নেটওয়ার্কের গুরুত্ব চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে এত সর্বজনমান্য হয়, তাহলে আচেমোগলুরা তাঁদের রিগ্রেশনে তা নিয়ে কথা বললেন না কেন? এর অনেক গুলি সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে একটি হল, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের যেমন বিভিন্ন দেশের জন্য পরিমাপ রয়েছে,  নেটওয়ার্কের সেরকম কোন সর্বমান্য মাপ নেই। তাছাড়া নেটওয়ার্কের মাপের বিষয়টি অনেক জটিল এবং স্থানীয় ইতিহাস বা সমাজের ওপর নির্ভরশীল।  সেই কারণে এই বিষয়ে যে যে কাজগুলি আছে সেগুলি দেশ বা অঞ্চলভিত্তিক। এতক্ষণ অনেক বড়, বড় লোকের কাজের বিষয়ে জানলেন। এই প্রসঙ্গে আমার মত ছোটখাট লোকের একটি কাজের বিষয়ে কিছু কথা লিখি যা এই রাষ্ট্রীয় এবং অ-রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কটি সামনে আসে। আমরা আমাদের একটি গবেষণায় দেখেছিলাম যে কোর্টের মানের উন্নতি হলে ছোট ব্যবসার অগ্রগতি বেশি হয় কিনা (Chakraborty et al., 2023)। কোর্টের মানের উন্নতি বলতে আমরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের জেলা কোর্টের ঝুলে থাকা সিভিল কেসের সংখ্যা ব্যবহার করে একটি পরিমাপ বের করি যা থেকে বোঝা যায় জমে থাকা সব কেস বিচার হতে কত সময় লাগবে। এই মাপটির নাম Duration index. এই সময় যে কোর্টে যত কম, সেখানে চুক্তি সম্পাদনের জন্য কেউ কোর্টের দ্বারস্থ হলে তাড়াতাড়ি সুফল পেতে পারবেন যা ব্যবসার বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। আমাদের ফলাফল থেকে জানা যায় যে কোর্টের অপেক্ষার সময় কম সেখানে সবার সমান ভাবে লাভ হচ্ছে না। যেসব উদ্যোগপতিরা চিরাচরিত ব্যবসায়ী গোষ্টীর অংশ নন, তাঁরাই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নতির লাভ পাচ্ছেন। যাঁরা চিরাচরিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর অংশ, তাঁরা চুক্তি সম্পাদনের সমস্যা হলে নেটওয়ার্কের দ্বারস্থ হন, তাই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নতির প্রভাব তাঁদের উপর নেই। এই প্রোজেক্টের অংশ হিসেবে আমরা কলকাতা, ঢাকা এবং কানপুরে বিভিন্ন উদ্যোগপতিদের সঙ্গে কথা বলি। তাঁরা যে অভিজ্ঞতয়া আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেন তা কিন্তু আমাদের সার্বিক ফলাফলের সঙ্গে মিলে যায়; বেশির ভাগ চুক্তিই নেটওয়ার্ক-এর মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। আমাদের গবেষণাপত্রটি একটু সরল করে বললাম। আরেকটু বিস্তারিত কিন্তু নন-টেকনিক্যাল একটি বিবরণ আমরা প্রকাশ করেছিলাম Ideas for India তে, পড়ে দেখতে পারেন (লিঙ্ক)।

    অ্যালবুয়ি এবং আচেমোগলুঃ ডেভিড ও গোলিয়াথের গল্প
    এইবার অন্য বিষয়টিতে আসি – অ্যালবুয়ির সমালচনা এবং আচেমোগলুদের উত্তর। প্রথমে ডেভিড এবং গোলিয়াথের কথা বললাম কারণ যখন এই বিতর্ক শুরু হয় অ্যালবুয়ি (যাঁর আবার প্রথম নাম ডেভিড) তখন সদ্য চাকরিতে ঢোকা অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, আচেমোগলু ততদিনে স্টারের মর্যাদা পাচ্ছেন। কিন্তু তাতে অ্যালবুয়ি যুক্তির লড়াই থেকে পিছিয়ে যান নি। সেই কারণে আমি ওনাকে একটু বাড়তি শ্রদ্ধা করি। যাই হোক, অ্যালবুয়ির বক্তব্যে আসি। কিন্তু অ্যালবুয়ির বক্তব্যে ঢোকার আগে আমি আচেমোগলুদের মূল কার্যপদ্ধতির একটি সরলীকৃত বর্ণনা রাখছি। কিন্তু যতই সরল করি না কেন, একটু টেকনিক্যাল হবেই বিষয়টা।
      আচেমোগলুরা যে পদ্ধতিতে এস্টিমেশন করেন সেটিকে বলা হয় Two State Least Square (2SLS) অর্থাৎ দুটি স্টেজে এস্টিমেশন করা হয়। প্রথম স্টেজে তাঁরা ঔপনিবেশিকদের মৃত্যুহার (Setteler Mortality Rate) বা সংক্ষেপে মৃত্যুহার  দিয়ে সমসাময়িক প্রতিষ্ঠানের মানের একটি এস্টিমেট বের করেন এবং তারপর প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত মানের পরিবর্তে এই এস্টিমেটেড মান দিয়ে দেখান যে প্রতিষ্ঠান ভাল হলে জাতীয় আয় বাড়বে। অর্থাৎ, তাঁদের প্রতিপাদ্য ছিল, মৃত্যুহার যেসব দেশে বেশি সেখানে সাহেবরা বেশি সংখ্যায় থাকতে পারবে না, তাই তারা শোষণমূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করবে এবং সেই সব প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতার পরেও থেকে গিয়ে বিনিয়োগ এবং জাতীয় আয় কমিয়ে দেবে। মালিকানা প্রতিষ্ঠান আচেমোগলুরা মেপেছিলেন Protection against risk of expropriation বলে একটি পরিমাপের মাধ্যমে। এই পরিমাপটি আন্তর্জাতিক ভাবে প্রকাশিত হয়। কোনদেশের প্রতিষ্ঠান যত শোষণমূলক হবে এই চলকটির মান তত কম হবে। সুতরাং, আচেমোগলুদের তত্ত্ব অনুযায়ি প্রথম স্টেজের ফলাফল ঋণাত্মক হবে – মৃত্যুহার বাড়লে প্রতিষ্ঠান খারাপ হবে এবং দ্বিতীয় স্টেজের ফলাফল ধনাত্মক (মানে সমানুপাতিক) হবে অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান যত খারাপ হবে জাতীয় আয় কমবে। অ্যালবুয়ির সমালোচনা এই প্রথম স্টেজ নিয়ে বা আরও ভালো করে বললে প্রথম স্টেজে ডেটার ব্যবহার নিয়ে।
      অ্যালবুয়ির সমালোচনা বুঝতে গেলে আগে মৃত্যুহারের ডেটাটা বুঝতে হবে। এই তথ্যটা এলো কথা থেকে? আচেমোগলুরা মুলত দুটি জায়গা থেকে এই ডেটাটি নিয়েছেন। প্রথমটি হল ডেভিড কার্টিনের গবেষণা যেখানে উনি বিভিন্ন কলোনিতে সৈন্যদের রেকর্ড এবং অন্য ঐতিহাসিক তথ্যপঞ্জী থেকে এই ডেটা তৈরি করেন। এই গবেষণাতে রয়েছে তিনটি বই (The image of Africa, Death by migration, Disease and empire) এবং একটি প্রবন্ধ (Epidemiology and the slave trade).  ডেটার দ্ব্বিতীয় সূত্র হল হেক্টর গুইতেরাজের লেখা La Mortalite des Eveques
    Latino-Americains aux XVIIe et XVIII Siecles." এই দ্বিতীয় প্রবন্ধটি ১৬০৪-১৮৭৬ এর মধ্যে দক্ষিণ আমেরিকার বিশপদের মৃত্যুর বিশদ হিসেব তৈরি করে ভ্যাটিকানের রেকর্ড থেকে। অ্যালবুয়ির আপত্তি মুলত এই ডেটার বিষয়েই।

    অ্যালবুয়ির সমালোচনা (Albouy, 2012)
    আচেমোগলুরা যে ৬৪ টা দেশের জন্য ডেটা ব্যবহার করেছেন তার মধ্যে ২৮ টি দেশের ডেটা সেই দেশ থেকেই পাওয়া গেছে, বাকি ৩৬ দেশের ডেটা সমধর্মী পরিবেশের ভিত্তিতে অন্য দেশের ডেটা থেকে ইমপিউট করা অর্থাৎ হিসেব করে বের করা। কিন্তু ইম্পিউট করার পদ্ধতিটি কী? এই পদ্ধতিতে নানা রকম এড-হক পদ্ধতির ব্যবহার করেছেন। যেমন মালিকে খুব বেশি একটি মৃত্যুহার দেওয়া হয়েছে (২৯৪০) যা আসলে ১৮৭৮ এর একটি এপিডেমিকের সময়কার মৃত্যুহার। আবার নাইজারের জন্য প্রদত্ত মৃত্যুহার ৪০০ যা এসেছে কার্টিনের হাউট-সেনেগাল-নাইজার টেবিল (১৮৮০-১৮৮৩) থেকে কিন্তু এই অঞ্চলের মধ্যে নাইজার এবং মালি উভয়ই পড়ত। তাহলে মালি আর নাইজারকে আলাদা মান দেওয়ার কারণ পরিষ্কার করে লেখা নেই। একই ভাবে বারকিনা- ফাসো, ক্যামেরুন, গ্যাবন, আঙ্গোলা আর উগান্ডার জন্য মৃত্যুহার ধরা হয়েছে ২৮০ (১৮৮৩-৮৪) যা কিন্তু এসেছে কার্টিনের সাউথ সুদান টেবিল থেকে। কিন্তু উপরোক্ত দেশ গুলি ভৌগোলিক ভাবে অনেক ছড়ানো ছিটানো এবং তদুপরি, মালিও সাউথ সুদান অঞ্চলে পড়ত সেই সময়। তাহলে এই দেশগুলির রোগ পরিবেশ একই ছিল কিন্তু মালি এবং বারকিনা ফাসোর ছিল না এই অনুমানের ভিত্তি কি?
      দক্ষিণ আমেরিকার ডেটা এসেছিল গুইতারেজের কাজ থেকে। সেখানে দেখা যাচ্ছে মৃত্যুহার হিসেব করা হয়েছে  তিনটি অঞ্চল থেকে যেখানে ২৪, ২৮.৫ এবং ৩০.৫ বিশপ ছিলেন ১০ বছরের গড়ে। তার মধ্যে মারা যান যথাক্রমে ৪,৫ এবং ১০ জন। অর্থাৎ, এই তিন অঞ্চলে মৃত্যুহার (প্রতি হাজারে এক বছরে) দাঁড়ায় ১৬.৭, ১৭.৫ এবং ৩২.৮। অ্যালবুয়ি অন্য ঐতিহাসিক সোর্স উল্লেখ করে জানাচ্ছেন যে ঐ সময় সুইডেনে সমবয়স্কদের মধ্যে মৃতুহার ছিল ১৮.৩২, ইংল্যান্ডের ব্যারাকে থাকা সৈন্যদের মধ্যে ১৫.৩ এবং ফ্রান্সের ব্যারাকে থাকা সৈন্যদের মধ্যে ২০.১৭। কিন্তু আচেমোগলুরা বেঞ্চমার্কিং এর জন্য এই ডেটা কে ৪.২৫ দিয়ে গুণ করেন কারণ মেক্সিকোতে ১৮৬২ থেকে ১৮৬৩ তে প্রতি ১০০০ জনে ৭১ জন মারা যান অর্থাৎ বিশপ মৃত্যুহার এর থেকে যা ৪.২৫ গুন বেশি। আচেমোগলুরা ধরে নিচ্ছেন সব জায়গায় বিশপ এবং সৈন্যদের মৃতুহার এর অনুপাত সমান। অ্যালবুয়ি দেখালেন এই অনুপাত ০.৯৮ থেকে ১০.৮০ পর্যন্ত হতে পারে অঞ্চল ভেদে। আরেকটা বড় সমস্যা হল প্রাথমিক ঔপনিবেশিকরা এসেছিলেন পঞ্চদশ, ষোড়শ বা সপ্তদশ শতকে। কিন্তু যে মৃত্যুহার ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলি ঊনবিংশ শতকে।
     কিন্তু এর থেকেও বড় সমস্যা লুলিয়ে আছে অন্য জায়গায়। সৈন্যদের যে মৃত্যুর তথ্য নেওয়া হয়েছে তার মতে অস্ত্রাঘাতে মৃত্যুর তথ্য নেই, আছে রোগে মৃত্যুর হিসেব। কিন্তু তার মধ্যেও দুরকম হিসেব আছে – ক্যাম্পেন বা যুদ্ধযাত্রার সময় থাকার সময় মৃত্যু এবং ব্যারাকে থাকার সময় মৃত্যু। কার্টিন দেখিয়েছেন ক্যাম্পেন চলাকালীন মৃত্যুহার ব্যারাকে মৃত্যুহারের তুলনায় ১০০ শতাংশ বেশি ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে, ২০০ শতাংশ বেশি পেটের রোগে মৃত্যুর ক্ষেত্রে এবং ৬০০ শতাংশ বেশি টাইফয়েডের ক্ষেত্রে। অ্যালবুয়ির অভিযোগ ছিল আচেমোগলুরা গরিব দেশগুলোর জন্য ক্যাম্পেনে মৃত্যুহার এবং বড়লোক দেশগুলির জন্য ব্যারাকে মৃত্যুহার ব্যবহার করেছেন যা প্রাপ্ত ফলাফলকে প্রস্তাবিত প্রতিপাদ্যের দিকে বায়াস করেছে। যেমন আমেরিকা ও কানাডার জন্য মৃত্যুহার ধরা হয়েছিল ব্যারাক মৃত্যুহার যা আমেরিকান গৃহযুদ্ধ চলাকালীন মৃত্যুহারের থেকে এবং প্রাথমিক ঔপনিবেশিকদের মৃত্যুহারের থেকে বেশ কম। এটি কিন্তু বেশ সিরিয়াস একটি অভিযোগ। এছাড়া এই ডেটার ব্যবহার আরো নানা রকম বক্তব্য আছে যা পাঠক পড়ে নিতে পারেন।
    আচেমোগলুদের উত্তর (Acemoglu et al., 2012)
    অ্যালবুয়ির মূল বক্তব্য ছিল যে যদি প্রত্যক্ষ ডেটা নেই এমন দেশদের বাদ দেওয়া যায় এবং ক্যাম্পেন না ব্যারাক এর হার তার একটা ডামি ভেরিয়েবল রিগ্রেসন এ ঢোকানো যায় তাহলে অনেক ফলাফলই আর পাওয়া যায় না। আচেমোগলুরা ডেটা বাদ দেওয়ার পদ্ধতি মানেন নি কারণ তাহলে স্যাম্পেল সাইজ খুব ছোট হয়ে যায়। তার বদলে তাঁরা বেশ কিছু রোবাস্টনেস চেক করার কথা বলেন। আচেমোগলুরা পালটা দাবি জানান যে অ্যালবুয়ি যে রেজাল্ট পাচ্ছেন তা মুলত গাম্বিয়ার কারণে যেটি একটি আউটলায়ার। তাঁরা দেখান যে গাম্বিয়াকে যাদি বাদ দেওয়া হয় তাহলে অ্যালবুয়ির কথামত স্যাম্পল ছোট করলেও রেজাল্ট থাকে। তাঁরা আরো অভিযোগ করেন যে অ্যালবুয়ি শুধুমাত্র ২৫০ এর নিচের মৃত্যহারের দেশগুলি নিচ্ছেন এবং তারও কোন কারণ নেই। কিন্তু যেটা তাঁরা মানতে চাননি সেটা হল ক্যাম্পেন এবং ব্যারাকে মৃত্যুহার আলাদা। আমার মতে এই জায়গাটা আচেমোগলুদের কাজের অ্যাকিলিস হিল অর্থাৎ সমস্যার জায়গা।

    আমার কথাটি ফুরোলো
    আগের লেখায় দুটি জায়গা নিয়ে লিখি নি লেখাটি অনেক বড় হয়ে যাচ্ছিল বলে। আশা করি, আচেমোগলুদের কাজের ফাঁকফোকর সম্পর্কে একটা ধারণ দেওয়া গেল টেকনিক্যালিটি যথাসম্ভব এড়িয়ে। কেউ চাইলে মূল পেপারগুলি পড়ে দেখতে পারেন। এখানে একটা কথা বলে নিই। আচেমোগলুদের এই সব সমস্যা আছে মানে নয় তাঁদের কাজের কোন মূল্য নেই। এরকম কোন গবেষণা নেই যা সর্বশক্তিমান (এমনকি মার্ক্সবাদও নয়) যা শেষ কথা বলে দেয়। শেষ কথা শুধু ধর্মবিশ্বাসে থাকে, জ্ঞানচর্চায় নয়।  যেকোন গবেষণা যে ফাঁক রেখে যায় সেখান থেকে নতুন গবেষণা জন্ম নেয় -- এভাবেই জ্ঞান এগোয়। এর মধ্যে কোন কোন গবেষণা বড় লাফ দেয় – তারা পুরস্কৃত হয়, তাদের নিয়ে লোকে কথা বলে। সব থেকে বড় কথা এই ধরণের গবেষণা নতুন গবেষণা ক্ষেত্রের জমি তৈরি করে। আচেমোগলুদের গবেষণা এই গোত্রীয়, তারা বড় প্রশ্নদের সামনে তুলে আনে যাতে পরবর্তী প্রজন্ম সেই সব উত্তর খোঁজার কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এই যাবতীয় আলোচনা, সমালোচনার শেষে এই মূল বিষয়টি মাথায় রাখা জরুরি।
     
     
    তথ্যসূত্রঃ
    Acemoglu, D., Johnson, S., 2005. Unbundling institutions. J. Polit. Econ. 113, 949–995.
    Acemoglu, D., Johnson, S., Robinson, J.A., 2012. The Colonial Origins of Comparative Development: An Empirical Investigation: Reply. Am. Econ. Rev. 102, 3077–3110. https://doi.org/10.1257/aer.102.6.3077
    Albouy, D.Y., 2012. The Colonial Origins of Comparative Development: An Empirical Investigation: Comment. Am. Econ. Rev. 102, 3059–3076. https://doi.org/10.1257/aer.102.6.3059
    Chakraborty, T., Mukherjee, A., Saha, S., Shukla, D., 2023. Caste, courts and business. J. Econ. Behav. Organ. 212, 333–365. https://doi.org/10.1016/j.jebo.2023.05.037
    Munshi, K., 2014. Community Networks and the Process of Development. J. Econ. Perspect. 28, 49–76. https://doi.org/10.1257/jep.28.4.49

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    দ্বিতীয় পর্ব
  • প্রবন্ধ | ১৬ নভেম্বর ২০২৪ | ৪৮ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
    আরও পড়ুন
    বটগাছ - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় প্রতিক্রিয়া দিন