এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  স্বাস্থ্য

  • HIV /AIDS  Act, ২০১৭ ও কিছু  কথা 

    Jaydip লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | স্বাস্থ্য | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১১২৮ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • ২০০৬ সাল। দূর্গা পুজোর অষ্টমী। তখন আমি পুরুষদেহী হয়েও যারা পুরুষ দেহের প্রতি শারীরিক ও মানসিক আকর্ষণ বোধ করেন তাদের খুঁজে বার করে তাদের এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য সচেতন করার কাজ করছে এমন এক সংগঠনে কাজ করছি। কিছুদিন আগেই জানতে পেরেছিল আমার শরীরে এইচআইভি সংক্রমণ হয়েছে। বাড়ির কাছের কোনো এক দুর্গাপুজোর সংগঠকরা সামাজিক দ্বায়বদ্ধতা থেকে আয়োজন করলেন এইচআইভি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আমার খুব একজন কাছের মানুষ জানালেন, সেই অনুষ্ঠানে এইচআইভি এডস নিয়ে আমাকে বলতে হবে। স্বাভাবিক ভাবেই "সম্মতি" দিয়েছিলাম। অবাক হলাম যখন অনুষ্ঠানে আমাকে তিনি পরিচয় করালেন এমন ভাবে যাতে করে আমার এইচআইভি-র কথা জানাজানি হয়ে গেল। ফলস্বরূপ বন্ধুদের আড্ডায় কখনও কখনও ব্রাত্যও হতে হয়েছে। স্বাভাবিক ভবেই এমন হতে পারে জানলে সম্মত হতাম না হয়তো এইচআইভি নিয়ে অমন টেকনিক্যাল আলোচনাতে অংশ নিতে। 

    তারপর থেকে বহু সময় নানানজনের বদান্যতায় আমার এইচআইভি সংক্রমণের কথা জানাজানি হয়েছে। এমনকি আমার বাড়ির লোককেও জানানো হয়েছে আমার সম্মতি ছাড়া। যতবার এমন ঘটনা ঘটেছে মন খারাপ হয়েছে রাগ হয়েছে অথচ কোনও আইনি ব্যবস্হা নিতে না পারায় গুমরেছি। আর বারবার মনে করেছি, আমার এইচআইভি থাকা ও সে নিয়ে কথা বলা আমার ব্যক্তিগত অধিকার  হওয়া উচিত। গোপনীয়তা ভঙ্গের শাস্তি দেওয়ার মত কোনও আইন কেন নেই। 

    কয়েকজন শুভানুধ্যায়ীদের নিরন্তর প্রচেষ্টা ও পাশে থাকা নিজের আত্মপ্রত্যয়ে সেসব কাটিয়ে উঠেছি। নিজেই আজ নিজের এইচআইভি নিয়ে ভালো থাকার কথা মানুষকে জানাই। মানুষকে সচেতন করে তোলার চেষ্টা করি এইচআইভি নিয়ে ভ্রান্তধারণা যাতে তাঁরা কাটিয়ে ওঠেন। 

    বহু প্রতীক্ষার পর যখন ২০১৭ তে এসে এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তিদের মানবাধিকার রক্ষার জন্য তৈরী হওয়া এইচআইভি ও এইডস আইন ২০১৭ পাশ হল, তখন আনন্দিত হয়েছি। এই আইন সারা দেশে ১০ই সেপ্টেম্বর ২০১৮ থেকে কার্যকর করা শুরু হয়ে গেছে।

    চলুন সংক্ষেপে জেনে নিই কি বলছে এই আইন... 

    এই আইন অনুসারে এইচআইভি আক্রান্ত ও প্রভাবিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বৈষম্য, বিদ্বেষ বা হিংসা ছড়ালে ৩ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড এবং ১ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে বলা হয়েছে।

    এই আইনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে এইচআইভি র কারণে কারও কর্মের অধিকার, কারও শিক্ষার অধিকার, কারও সম্পত্তির  অধিকার, কারও চিকিৎসার অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা যাবে না। 

    কেবলমাত্র শাস্তিজ্ঞাপন এই আইনের উদ্দেশ্য নয়, বরং সংশোধনাত্মক লক্ষ্য নিয়ে এই আইন প্রণয়ন হয়েছে। এর কারনে, এই আইনে দন্ডনীয় বিধানের সংখ্যা সীমিত।

    সংশোধনাত্মক বিষয়গুলির মধ্যে অন্যতম হল অপকর্ম বা অন্যায় কাজের সংশোধন এবং অন্যায়কারীকে পুনরায় অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখা, নিয়ম লঙ্ঘনকারীকে পরামর্শদান এবং তাদেরকে সেবামূলক সংস্থা বা সমাজের কল্যানমুলক কাজে সংযুক্ত করা।

    এই আইনের উদ্দেশ্য হল সাধারণ মানুষের এইচআইভি আক্রান্ত মানুষদের প্রতি আচরণগত পরিবর্তন আনা এবং একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী করা।

    আইনটির মাধ্যমে যে যে সুরক্ষা পাওয়া যাবে ...

    - এইচআইভি সম্পর্কিত অপবাদ ও বৈষম্যের সমাধান করা 
    - বিভিন্ন পরিষেবাগুলি পাওয়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী করা 
    - এইচআইভি সংক্রামিত এবং এইচআইভি প্রভাবিত মানুষের অধিকার সুরক্ষিত করা 
    - এইচআইভি আক্রান্তদের বিনামূল্যে রোগ নির্ণয়ের সুবিধা এবং বিনামূল্যে ART প্রদান সুনিশ্চিত করা
    - পেশাগত কারনে স্বাস্থ্যকর্মীদের এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রতিরোধ করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে সুরক্ষিত করা
    - অভিযোগের ক্ষেত্রে তার প্রতিকারের ব্যবস্থা শক্তিশালী করা

    এই আইনের সেকশন ৩ অনুসারে 

    এইচআইভি সংক্রামিত ও প্রভাবিত ব্যক্তিদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষিত করতে নির্ধারিত নিয়ম অনুসারে লোকপাল হিসাবে আমাদের রাজ্যের প্রত্যেক জেলায় জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিককে নিয়োজিত করাও হয়েছে।

    আইন অনুসারে লোকপাল আইনভঙ্গের (মূলতঃ বৈষম্যমূলক আচরণ) কোনো অভিযোগ পেলে অভিযোগ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাঁকে অভিযোগটির নিষ্পত্তি করতে হবে। চিকিৎসাজনিত আপদকালিন পরিস্থিতিতে বৈষম্যমূলক কোনো অভিযোগ পেলে লোকপাল ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিষয়টির নিস্পত্তি করবেন। রাজ্য সরকারের কাছে প্রত্যেক ৬মাস অন্তর লোকপাল রিপোর্ট জমা করবেন।

    লোকপালের আদেশ অমান্য করলে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। আইন অনুসারে এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সমস্ত তথ্য গোপনীয়তার সাথে রক্ষা করা উচিত। এই গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হলে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।

    এক্ষেত্রে অভিযোগকারিকে নিজের বয়ানে লিখিত অভিযোগ করার কথা বলা হযেছে। যদি ব্যক্তি নিজে লিখতে সক্ষম না হন, তবে তাঁর বয়ানে অন্য কেউ লিখলেও অভিযোগপত্রে নিজে স্বাক্ষর করা আবশ্যিক।

    আইনের সেকশন ৪ অনুসারে

    কোনো সুরক্ষিত ব্যক্তির (এইচআইভি আক্রান্ত বা প্রভাবিত) বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রচার করার উদ্দেশ্যে বা বিশেষ কোনও উদ্দেশ্যে কথ্য বা লিখিত শব্দের মাধ্যমে বা ইশারা ইঙ্গিতের মাধ্যমে ঘৃণা বা বৈষম্যমূলক আচরণের প্রকাশ করা, তার এইচআইভি জনিত কোনো তথ্য প্রদর্শন করা প্রকাশ করা, প্রচার করা, এমনকি কোনও দৃশ্যমান বিষয় উপস্থাপনা করা, সম্প্রচার করা, বিজ্ঞাপন দেওয়া যাতে এইচ আই ভি আক্রান্ত বা প্রভাবিত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে ঘৃণার উদ্রেক ঘটতে পারে তেমন কোনো কাজকর্ম এই আইনের আওতায় নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হয়েছে।

    আইনের ৫, ৬ ও ৭ নং সেকশন-এ বলা হয়েছে 

    - এইচআইভি পরীক্ষার পূর্বে যথাযথভাবে অবশ্যই অবহিত করে সম্মতিগ্রহণ করতে হবে।

    - এইচআইভি পরীক্ষা বা চিকিত্সা করার জন্য অবহিত হয়ে/ জেনে বুঝে সম্মতিপ্রদান প্রয়োজন।

    - শুধুমাত্র বিশেষ কিছু পরিস্থিতি ছাড়া সবক্ষেত্রেই সম্যকভাবে জানিয়েই কারও এইচআইভি পরীক্ষা করা সম্ভব।

    (ব্যাতিক্রমী পরিস্থিতিগুলো যেমন - যেখানে আদালত নির্ধারণ করছে/ মহামারী সংক্রান্ত  সামাজিক -গবেষণার উদ্দেশ্যে যেখানে এইচআইভি পরীক্ষার জন্য পরিচয় প্রয়োজনীয় নয়, যা কোনও ব্যক্তির এইচআইভি অবস্থা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে নয়/ যে কোন লাইসেন্সকৃত ব্লাড ব্যাঙ্কে স্ক্রীনিং এর উদ্দেশ্যে)

    এই আইনটির সেকশন ৮-এ বলা  রয়েছে

    কোন ব্যক্তির অবহিত সম্মতি (informed consent)  ছাড়া এইচআইভি জনিত ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করতে কিংবা প্রকাশ করতে বাধ্য করা যাবে না। আদালতের আদেশনামা ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে তার এইচআইভি জনিত তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য করা যাবে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ন্যায়বিচারের স্বার্থে প্রয়োজন হলে আদালত-এর আদেশনামা অনুসারে এই ধরনের তথ্যের প্রকাশ আদালতে করা যেতে পারে।

    চিকিৎসার স্বার্থে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী যারা তার চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত (চিকিৎসক বা কাউন্সেলর) তাদের মধ্যে করা যেতে পারে।

    আইনের সেকশন ৯ অনুসারে

    শুধু মাত্র একজন চিকিৎসক বা  কাউন্সেলর যদি মনে করেন এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির যৌন সঙ্গী এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছেন এবং সেই ব্যক্তি তার সঙ্গীকে বিষয়টি অবগত করেননি তখন তিনি সেই ব্যক্তিকে কাউন্সেলিং করে  সঙ্গীকে অবগত করতে উৎসাহ প্রদান করতে পারেন।

    কাউন্সেলিং এর সময় মহিলাদের ক্ষেত্রে তার সন্তান, তার আত্মীয় বা তার কাছের কেউ এই  তথ্য জানতে পারলে  তাকে পরিত্যাগ বা তার সাথে সহিংস ক্রিয়াকলাপ করতে পারে যা মহিলার শারীরিক বা মানসিক স্বাস্থ্য বা নিরাপত্তার উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, সেই যুক্তিসঙ্গত আশংকা মাথায় রাখা কর্তব্য।

    সেকশন ১৩, ১৪ তে আরো বলা  রয়েছে

    কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার এইচআইভি বা এইডসের সংক্রমন রোধের জন্য প্রয়োজনীয় এবং সমীচীন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

    অ্যান্টি-রেট্রোভাইরাল থেরাপি এবং সুযোগ সন্ধানী সংক্রমনের চিকিৎসার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করবে।

    এইচআইভি সম্পর্কিত সকল তথ্য গোপনীয়তার সাথে রক্ষা করতে হবে।

    সেকশন ১৯, ২০, ২১ অনুসারে

    প্রতিটি প্রতিষ্ঠান অভিযোগের প্রতিকারের জন্য ১০০ জনেরও বেশি কর্মী আছেন এমন প্রতিষ্ঠান এবং স্বাস্থ্যপরিষেবা ক্ষেত্রে ২০ জনের বেশি কর্মী আছেন এমন প্রতিষ্ঠানে একজন করে কমপ্লেইন অফিসার নিয়োজিত থাকবেন।

    কমপ্লেইন অফিসার স্বাস্থ্য পরিষেবায় নিয়োজিত প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এবং যেখানে কর্মীদের পেশাগত কারণে এইচআইভি সংক্রমণের সম্ভাবনা আছে, তার পরিবেশকে এইচআইভি থেকে সুরক্ষিত করবেন। এই উদ্দেশ্যে, এই প্রতিষ্ঠানগুলি সার্বজনীন সুরক্ষা ও পোস্ট এক্সপোসার প্রোফাইল্যাকসিস (বা আকস্মিক ভাবে এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধে) ওষুধের ব্যবস্থা এবং এই সম্পর্কে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে।

    তিনি প্রতিষ্ঠানে এই আইনের বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগগুলি নিষ্পত্তি করবেন।

    সেকশন ২২ অনুসারে

    সরকারকে এইচআইভি প্রতিরোধ এবং নিরাপদ অভ্যাস সম্পর্কিত তথ্য, শিক্ষা ও বার্তার প্রসার ও প্রচার এবং কাউন্সেলিং বা পরামর্শ দানের ব্যবস্থা করতে হবে। 
    কন্ডোম এবং অন্যান্য সুরক্ষিত যৌনজীবন পালনের সামগ্রীর যথাযথ ব্যবস্থা এবং সুরক্ষিত যৌন আচরণ বিধির প্রসার করতে হবে।

    ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য গ্রহণের অভ্যাসকে খাওয়ার দ্রব্যে পরিবর্তিত করে এইচআইভি সংক্রমণের সম্ভাবনা কমানো জন্য ব্যবস্হা নেওয়া ও ইনজেকশনের থেকে সুরক্ষিত রাখার সঠিক ব্যবস্থার প্রচার করতে বলা হয়েছে। 

    সেকশন ২৯ এ 

    প্রতিটি সংরক্ষিত ব্যক্তির (এইচআইভি আক্রান্ত ও প্রভাবিত) তার পরিবারের সাথে একই বাড়িতে বসবাসের অধিকার থাকবে। যৌথ বাড়ির কোনো অংশ এবং বাসস্থান থেকে বাদ না যাওয়ার অধিকার থাকবে। এবং এক সাথে থাকতে গিয়ে বাড়ির সমস্ত  সুবিধাগুলি অ-বৈষম্যমূলক পদ্ধতিতে উপভোগ করার এবং ব্যবহার করার অধিকার সুনিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। 

    সেকশন ৩২ অনুযায়ী

    মাতা পিতার এইচআইভি সংক্রমণের জন্য প্রভাবিত শিশুর সম্পত্তির উত্তরাধিকার সুরক্ষিত করা এবং বয়োঃজ্যেষ্ঠ ভাই বোনকে (১৮ বছরের কম কিন্তু  ১২ বছরের বেশি) সেই শিশুর অভিভাবকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। 

    সেকশন ৩৪ ও সেকশন ৩৫-এ বলা হয়েছে

    আদালতে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করার সময় আবেদনকারীর পরিচয় গোপন করে মামলার নথিতে ছদ্মনাম ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে।

    আদালত এইচআইভি আক্রান্ত অভিযোগকারীর অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আবেদনটি বিবেচনা করবে এবং রক্ষণাবেক্ষণের যে কোন আদেশ দেওয়ার সময়, আবেদনকারীর চিকিৎসা ব্যায় বহন করা এবং অন্যান্য এইচআইভি-সম্পর্কিত খরচের বিষয় বিবেচনা করবে। 

    আজ যখন ২০২৩-এ এসে কদিন আগেই দুজন এইচআইভি আক্রান্ত মানুষের বিয়ের ভিডিও সহ তাদের ছবি ও সাক্ষাৎকার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হতে দেখি তখন অনেকের মতোই আনন্দিত হই। ওনাদের সাহসিকতায় আপ্লুত হই। মনে হয় এইচআইভি নিয়ে অমূলক ধারণা কাটাতে ওনাদের এই পদক্ষেপ জরুরি। 

    মনে হয়েছিল সমাজ অনেকটা এগিয়েছে। ভুল ভাঙলো তার কদিন বাদের অন্য একটি খবরে। খবরে প্রকাশিত বিয়ের পাঁচ দিনের মধ্যেই নামলো দম্পতির জীবনে দুর্যোগ। এইচআইভি আছে জানতে পেরে Mr.X কে  ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হলো কর্মক্ষেত্র থেকে।
    অদ্ভুত বিষয় হলো খবরে প্রকাশ কর্মক্ষেত্রটি নাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান !!!
    সময়ের অপেক্ষা  ভদ্রলোক চাকরি খোয়ালেন কিনা দেখার। 

    সাধারণ সামাজিক মেলামেশায় এইচআইভি ছড়ায় না। শুধুমাত্র চারটি মাধ্যমেই HIV জীবানু একজন মানুষের শরীর থেকে আর একজন মানুষের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে...

    ১. অপরিশোধিত সূঁচ বা সিরিন্জ ব্যবহারে
    ২. অপরীক্ষিত রক্ত বা রক্তজাত পদার্থের আাদানপ্রদানে
    ৩. অসুরক্ষিত বা বিনা কন্ডোমে প্রবেশমূলক যৌন সঙ্গমে (unprotected sexual intercourse)
    ৪. HIV আক্রান্ত গর্ভবতী মা থেকে ভবিষ্যৎ সন্তানের
    এছাড়া আর কোনওভাবেই HIV সংক্রমিত হয় না।

    HIV আছে এমন কারও সাথে সামাজিক মেলামেশায়, এমনকি মশা মাছি হাঁচিকাশির মাধ্যমেও না।
    দাড়ি কামানোর ব্লেড থেকেও না। (এক্ষেত্রে ত্বকের সংক্রমণ কিংবা হেপাটাইটিস বি/সি হতে পারে)
     
    যদিও সরকারের তরফে এইচআইভি ও এডস আইন নিয়ে বিভিন্ন স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ চলছে।

    এরপরেও শুধুমাত্র এইচআইভি থাকার কারনে একজন ব্যক্তির ওপর এমন অবমাননার লজ্জাজনক! মনে হচ্ছে আইন আছে সেটা ক'জন জানি আর জানলেও সেটার সুবিধা নিতে আমরা কতটা প্রস্তুত !!!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১১২৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • যোষিতা | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০২:২৩516630
  • খুবই জরুরি তথ্যপূর্ণ লেখা। ভালোবাসা জেনো জয়দীপ।
  • kk | 2601:14a:500:e780:bc16:4258:e854:***:*** | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৩:৪২516631
  • এই লেখার জন্য জয়দীপকে ধন্যবাদ।
  • ইন্দ্রাণী | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৪:০৪516632
  • খুব গুরুত্বপূর্ণ লেখা। শেয়ার করব।
    অনেক ধন্যবাদ, জয়দীপ।
  • Amit tor friend (RBU) | 2409:4060:10:959e::2443:***:*** | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:১৪516654
  • Treatment procedure ta likhbi erpor.Thank you friend...
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন